aranya | 2601:84:4600:5410:8962:3631:116d:af5d | ০৮ নভেম্বর ২০২১ ২০:২৯
প্রশ্ন টা দেখলাম।
আমি দু টো খেপে এই বিষয়ে মন্তব্য করেছিলাম।
শাহবাগ আন্দোলনের সময়ে। আর একটা কোন এক বা দুটো টই তে রিসেন্টলি।
বিষয়টা সর্বধর্ম সমন্বয়ের নানা ভারসন (ভারতের সাংবিধানিক আদর্শ , পশ্চিমী সরকারী মালটিকালচরালিজম) , আরেকটা হল, পোলিটিকাল আর রিলিজিয়াস স্পেসের কমপ্লিট সেপারেশন এর আদর্শ (ফ্রান্স , পুরোনো সোভিয়েত রিপাবলিক গুলি) ও তার নানা ভারসন (ইংল্যান্ড, আমেরিকা, পুরোনো টার্কি, ইজিপ্ট, বাংলাদেশ) । এর মধ্যে ইংল্যান্ড আর আমেরিকায় জটিলতা হল, সরকারী কাজকর্মের রিচুয়ালে আমাদের দেশের মতই ক্রিশ্চিয়ানিটির বিভিন্ন ডিসপোজিশন সম্পৃক্ত, আবার রুল অফ ল থাকার কারণে নানা রিড্রেসাল মডেল ও আছে। আর সরকারী ভাবে ইংল্যান্ডে একটা সার্কুলার রেফারেন্সিং আছে, চার্চ অফ ইংল্যান্ডের আশীর্ব্বাদ না হলে রাজা বা প্রধানমন্ত্রী কোনটা হওয়াই কঠিন, কিন্তু উল্টো দিকে পোলিটিকাল এবং ইকোনোমিক এসটাবলিশমেন্ট এর আশীর্ব্বাদ ছাড়া চার্চ অফ ইংল্যান্ডের অপারেট করাই মুশকিল। কিন্তু ডিবেটের আগুপিছু আছে।
চার্চ অফ ইংল্যান্ডের মধ্যে গে আর মহিলা পুরোহিত দের নিয়ে বিতর্কে খোদ ইংল্যান্ডের চার্চের পজিশন প্রোগ্রেসিভ, যুদ্ধ বিরোধিতার প্রশ্নে খুব ই প্রোগ্রেসিভ কিন্তু অশক্ত। অন্য দিকে তার পুরোনো কলোনী গুলির ব্ল্যাক চার্চ গুলি গে প্রিস্ট মহিলা প্রিস্ট মানে না। সুতোরাং সমস্যাটা আমাদের দেশের মত, পুরোনো কলোনিয়াল মাস্টার রা শুয়োরের বাছ্চা হওয়া সত্ত্বেও তাদের কাছে সামাজিক বিষয়ে প্রগতিশীলতার জ্ঞান নিতে হয়, মার্কসিস্ট বা সাধারণ প্রগতিশীল রা এটা তাত্ত্বিক ভাবে এবং প্র্যাকটিকালি স্বীকার করে সাধারণ ভাবে, অন্যদিকে পোস্ট মডার্নিস্ট রা এটা তাত্তইক ভাবে বিরোধিতা করলেও, ব্যক্তিগত স্পেসে এটা স্বীকার করে ইত্যাদি নানা জটিলতা। খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই অর্ক ইসলাম, ক্রিশ্চিয়ানিটি, কলোনি সব আঙিনাতেই আছে। tআয়ান হ্রিসি আলি বলে একজন ডাচ ব্ল্যাক মহিলার লেখা আছে, আমাদের তসলিমার মত পজিশন, পড়ে দেখতে পারেন।
এবং এই দুইয়ের মাঝে নানা মেজরিটারিয়ানিজম এর ফলে নানা রকম ডিস্টোপিয়া (ইজরায়েল , রাশিয়া, হাংগারি, পোল্যান্ড, নাইজেরিয়া, সমসাময়িক ভারত) বা মোটামুটি ওয়ার্কিং মডেল (পাকিস্তান, ইরান,নতুন টার্কি, ইন্দোনেশিয়া, জাপান)। আর আউটরাইট মেজরিটারিয়ান বা জোচ্চোর সোসাইটি আর সরকার, যেমন চীন কে বাদ রেখে বলছি।
এবার পুরোনো , নতুন এই দুটো শব্দ আমি ব্যবহার করেছি , এই ভাবে, যে আগে প্রগতিশীল রাজনীতি কম্প্লিট সেপারেশন এর দিকে ঢলে ছিল, ফ্রান্স , সোভিয়েত ইত্যাদি মডেল ছিল। কামাল পাশার তুরস্ক, আনোয়ার সাদাত এর ইজিপ্ট এই সব মডেল অ্যাডোপ্ট করেছিল। মার্ক্স এর উক্তিটির অপিয়াম অফ পিপল এর অংশটার উপরে এম্ফাসিস বেশি ছিল, আরেকটা দিক ও ছিল, ইউরোপীয় ইতিহাস চর্চায় শুধু মার্ক্স বাদীরাই না, দক্ষিন পন্থী সেকুলার রাও, এনলাইটেনমেন্ট পিরিয়ড, ক্যাপিটালিস্ট ট্রান্সফর্মেশন এর পিরিয়ড কে, মধ্যযুগের থেকে প্রগতিশীল হিসেবে দেখেছিলেন।
নতুন বলতে, যেটা, সেটা হল, সত্তর দশক থেকে ইন্টারেস্টিংলি ফ্রান্স, ইটালি, ইজিপ্ট ইত্যাদি তেই ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে জখন নতুন করে ইতিহাস চর্চা শুরু হয়, তখন দেখা যায়, ক্রিশ্চিয়ানিটি এবং ইসলাম এর দুটোর মধ্যেই আভ্যন্তরীন ডিবেটে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যেইই সেকুলার জ্ঞানচর্চা হচ্ছে (হেরেটিক দের চার্চের মধ্যেকার স্বাধীন্চেতা বলা হচ্ছে, প্লাস রিফর্মেশন এর নামে চার্চ ও ভেঙেই যাচ্ছে ) , আর দুই রোমান সাম্রাজ্যের পতন থেকে রেনেসাঁ r মধ্যেকার অন্ধকার যুগ বলতে যেটাকে বোঝা হত, সেই সময়টা, পশ্চিমী সভ্যতার আদি উইসডম বলতে যে গ্রীক দর্শন চর্চা কে রাজনীতি চর্চা কে ধরা হয়, তার অনেকটা অনুবাদ ই হয়েছে আরবিক এ এবং প্রচুর বই পত্র বাগদাদ, সেভিয়া , দামাস্কাস এবং অটোমান লাব্রেরি গুলো তে পাওয়া যাচ্ছে, অর্থাৎইউরোপ যেটাকে জিহাদ আর অন্ধকার এর যুগ বলছিল, তখন ইউরোপ আর নিয়ার ইস্ট, ভূমধ্য সাগরীয় ইস্ট এবং ইথিয়োপিয়া ইত্যাদির মধ্যে এক্সচেঞ্জ বন্ধ কিছু হয় নি। তো ইতিহাস চর্চার এই ফাইন্ডিং গুলো ধর্মনিরপেক্ষতাকে ডিরেক্টলি প্রভাবিত করছে, এবং আউটরাইট রিলিজিয়ন আর স্টেট সেপারেশন এর একটা মডারেটেড ইনক্লুসিভ ফর্ম এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে, আর সাধারণ ভাবে এটাই রাজনৈতিক ষাট দশক পূর্ব মার্কসিস্ট দের দুর্বল করার একট পন্থা হিসেবেও আবিষ্কৃত হচ্ছে। পোল্যান্ডের সলিডারিটি মুভমেন্ট যেমন ভ্যাটিকান এর আশীর্ব্বাদ ইত্যাদি দিয়ে হচ্ছে, অর্থাত লোকে সোভিয়েট ডমিনেশন থেকে মুক্তি পাবার সময় ধর্মের স্বাভীনতার বিষয়টাকে গুরুত্ত্ব দিচ্ছে, আন্না আখতামোভা ইত্যাদির কবিতা নতুন করে ৮০স e ছাপা হচ্ছে, আপনার দেশ পত্রিকায়, শুভরঞ্জন দাশগুপ্ত, আগেই তো কতো বলিচি গোছের অনুবাদ ছাপাচ্ছেন। :-)))) উদ্দেশ্য স্থানীয় মার্ক্সবাদীদের এম্ব্যারাস করা। আর লাতিন আমেরিকা তে লিবারেশন থিয়োলোজি খুব পপুলার হচ্ছে (১৯৭৯ r নিকারাগুয়া বিপ্লব) , কারণ আর কিছুই না, এক ধরণের চার্চ গড়ে উঠছে, যারা অর্থনীতি ও রাজনীতির প্রশ্নে সম্পূর্ণ বামপন্থী।
এবার ইতিহাস জিনিসটা তো আর ঐতিহাসিক এর মডেলে আর রাজনৈতিক কর্মীর ইচ্ছা অনুযায়ী চলে না। পাকিস্তান আর বাংলাদেশে, বিশেষতঃ বাংলাদেশে কম্প্লিট সেপারেশন এর পক্ষেই শিক্ষিত প্রগতিশীল দের অপিনিয়ন। কারণ দেশকে ধর্মের হাত থেকে বাঁচাতে না পারলে সিভিল ওয়ারে ফাইনাল পরাজয় ঘটবে। অন্য দিকে বামপন্থীরা আশির দশক অব্দি দ্বিধা বিভক্ত ছিলেন। ভাসানি রা ধর্ম কে , পোলিটিকাল মোবিলাইজেশন এর অংশ মনে করতেন, ক্রিশ্চিয়ান লিবারেশন থিয়োলোজিস্ট দের মত করে। অন্য বামপন্থীরা ওয়ার্কার্স পার্টির লোকেরা , তাঁদের পপুলারিটি বাড়ে কমে, তারা ধর্ম বিশ্বাস আচার ইত্যাদি কে রাজ্নৈতিক প্রচার ও রাজনৈতিক প্র্যাকটিস থেকে দূরে রাখতে চান। ইত্যাদি।
এখন আর ডিটেলে করতে পারছিনা, এর চেয়ে সংক্ষেপে এটা হবে না। আমি পাওয়ার পয়েন্ট দিয়া ইতিহাস পড়তে জানি না। আর আপনি তো আবার এই বিষয়ে হয়তো এখানে ছাড়া কোথাও রেফারেন্স দিয়ে দিলেও পড়াশুনো করবেন কিনা জানিনা, আনন্দমেলা বা পরবাসে এগুলি বেরোনোর চান্স ও কম , এমনকি কষ্ট করে আমার আর কেসির মধ্যে আলোচনা এই বিষয়ে যা হয়েছে তা মনেও করতে পারবেন না :-))))))) তাই আদা খ্যাঁচড়া বক্তব্য দিয়া কি লাভ জানাও নাই। শুধু শুধু লোকে উত্তেজনার চোটে ভারবাল ডায়রিয়া ইত্যাদি বলে গাল দেবে ঃ-))))তো দিলে দেবে, তাতে বাল :-)))))