হ্যাঁ, আমারও সেই মনে করার স্বাধীনতা আছে। আপনাদের অনেক ইন্টারপ্রিটেশনকে আমি স্রেফ ওঁচা মনে করি। আর এখানে আমি কারও দয়ায় খেলতে আসিনি। সেটা কেউ বা কেউ কেউ মনে করলে সেটাও ওঁচাস্য ওঁচা ইন্টারপ্রিটেশন।
হ্যাঁ, আপনার অনেক ইন্টারপ্রিটেশনকেই ভুল মনে করি। বা কোন লেখা পড়ে সেখান থেকে কী বোঝা যাচ্ছে বা কোন ব্যক্তির কাজকে কীভাবে দেখছেন, সেসব নিয়ে আপনার মত।
তবে আপনার লেখা পড়ে বুঝতে পারি, সেইসব ভুল মত বলে যা মনে করি সেগুলো শুধু আপনারই নয়, আরো অনেকেই একমত সেগুলোর সাথে। পরের দিনের গসিপ ওয়ালারা।
এর মধ্যে আবার প্রতিষ্ঠান-্প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা-হেজিমনির বদহজম এনে ফেললে মুশকিল, বা "আমাকে এখানে খেলতে দেওয়া হচ্ছে না" সুলভ কথা।
মনে করার কি আর শেষ আছে! আর কে না জানে এই মনে করায় গুরুর পুরনো বাসিন্দারাই একমাত্র আদি প্রতিষ্ঠান ও তাঁহাদের কোনও শাখা নাই!! কারণ এ জিনিস তাঁরা পচুন্দো করেন না!!!
অলৌকিক ভাবে যা বলা হচ্ছে, সেসব আমি যে লেখার কথা বললাম সেখানে আছে, চায়ের দোকান, ধর্ম-মা, সবার সামনে আবার অনুরোধ করা ইত্যাদি। সুধীরবাবুকে সন্দেহ করার কথাও আছে। ১২০৯ সংখ্যাটা।
আপনার তোলা লেখাটায় পুরো ঘটনাটা ছোট করে লেখা হয়েছে।
ঐ লেখা দিয়ে সুধীরবাবুর লোক ঠকানো যারা খুঁজে পাচ্ছেন, আমি সেটা সর্বৈব ভুল মনে করি। তারা বাচ্চা বা বুড়ো প্রফেসর হলেও, গুরুর প্রগাঢ় লেখককুল হলেও।
দিতে বাধ্য হলাম। গুরুর প্রগাঢ় পণ্ডিতদের সুধীর চক্কোত্তির লেখাপত্তর সম্পর্কে জ্ঞান সম্যক জানার পরে।
সাহেবধনীদের খোঁজে চলে গেলাম তাঁদের গুরুপাট নদিয়া জেলার চাপড়া থানার অন্তর্গত বৃত্তিহুদা নামের এক প্রায় অগম্য গ্রামে। স্রেফ পায়ে-হাঁটা, নোংরা, পূতিগন্ধময় এবং জলাঙ্গী নদীর ধার ঘেঁষে চলা কঠিন সেই পথ। খেটে খাওয়া মানুষজন, কয়েক ঘর তাঁতি, বেশ ক’টি গোপবংশীয় পরিবার ও গরিব মুসলমানদের আবাস। কিন্তু গানে গানে মুখরিত। সে সব গান লিখে গেছেন জনৈক কুবির গোঁসাই আর তাঁর শিষ্য যাদুবিন্দু গোঁসাই। শত শত গান, সেই গানের খাতা হাতে নাড়াচাড়া করতে পারা যাবে, পড়া যাবে, কিন্তু কপি করা যাবে না। টানা পাঁচ বছর মাঝে মাঝেই সেই অজ বৃত্তিহুদা গাঁয়ে যাই আর ফিরে আসি। কুবিরগীতির হাতে-লেখা ১২০৯ গানের পাণ্ডুলিপি পড়ি, লোভী চোখে তাকাই, টের পাই বারান্দা থেকে জানলা দিয়ে নজর রাখছে খর চোখ। যাদুবিন্দুর বাস্তুভিটে ছিল বর্ধমানের পাঁচলখি গাঁয়ে। কবে মরে হেজে গিয়েছেন, এখন রয়েছেন মরা গরিব বংশধরেরা। যাদুবিন্দু নামটা জোড়কলম। বিন্দু তাঁর সাধনসঙ্গিনীর নাম। গানে পড়লাম— যাদু বিন্দু এঁরাই দুজনা/ পাঁচলখি গাঁয় তার ঠিকানা। তাঁর গানও জোগাড় হল। অলৌকিক ভাবে পাঁচ বছর পরে কুবিরের খাতাও হাতে এল। পেয়ে গেলাম সাধনভজনের গোপন পুঁথি, মন্তরতন্তর, কবচ তাবিজের সংকেত। এ বার তাই কোমর বেঁধে লিখতে বসে গেলাম ‘সাহেবধনী সম্প্রদায় তাদের গান’। একটানা লেখা হয়ে গেল। অভিনব ঘটনা তো বটেই— সম্পূর্ণ অজানা এক জগৎ, বিচিত্র তাঁদের বিশ্বাস আর ধরনধারণ। হিন্দু-মুসলমানে ভেদ নেই। জাতপাত বর্ণবিভেদ যাঁদের অচেনা। কেমন অনায়াসে তাঁরা গেয়ে ওঠেন— আল্লা আলজিহ্বায় থাকেন আপ্তসুখে/ কৃষ্ণ থাকেন টাকরাতে। আবার: পিতা আল্লা মাতা আহ্লাদিনী/ মর্ম বোঝা হল ভার। এমন সম্মেলনকামী অপরূপ বিশ্বাসের অণুবিশ্বের বার্তা কি আমার কলমেই তবে বাঙালি প্রথম জানবে?
হে হে। এর জন্য নাকি বাংলার অধ্যাপকদের কুচ্ছোর শরণাপন্ন হতে হয়! মরি মরি।
আপনাকে বেসলেস নিন্দে মন্দ থেকে বিরত করতে পারলে আমি পার নিন্দে মন্দ চারানা পাবো।
উফ্ফ, ১৩৮৬। ১৩৭৬ নয়। সম্বিৎবাবু যেমন বললেন।
কারিগর থেকে ২০১২ সালে প্রকাশিত "মানিনী রূপমতী কুবির গোঁসাই" বইতে বিশদে বর্ণনা আছে। খাতাটি ছিল রামপ্রসাদ ঘোষের কাছে, তার বাবার কপি করা, মূল খাতার নকল। দু-চারটে গান টোকা যেতে পারে কিন্তু "খাতা চাইবেন না। ওটা দেওয়া হবে না", রামপ্রসাদবাবু সেরকমই বলেছিলেন। সুশান্ত কর্মকারের ছিল চায়ের দোকান, ঐ গ্রামেই, সুধীরবাবুর যাতায়াত তিনি দেখতেন, কথাও বলতেন। তিন বছর ধরে এরকম চলে, তার পরে সুশান্ত কর্মকারই হঠাৎ করে একদিন সুধীরবাবু আর রামপ্রসাদ ঘোষকে ডেকে খাতাটি দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তার আগে সেই দোকানে অন্য যারা বসে ছিল তাদের সামনে সুশান্তবাবুকে খাতাটি পাওয়ার জন্য আবার অনুরোধ করতে হয়। করার পরে রামপ্রসাদকে ডেকে সুশান্ত কর্মকার খাতাটি দেওয়ার কথা বলেন। সুশান্তবাবুর স্ত্রী ছিলেন রামপ্রসাদের ধর্ম-মা, "সেই সুবাদে আমি বাবা। এসব আপনাদের শহরে পাবেন না। এ হল ভাবের ব্যাপার", এরকমই সুশান্তবাবু বলেছিলেন।
অলৌকিক কথাটি আমার ধারণা খাতাটি এইভাবে পাওয়ার জন্যই ব্যবহার করা হয়েছে, এই লেখায় নয়, অন্য কোন লেখায় হয়ত। এবং এই দু'জনের উল্লেখই সাহেবধনীদের নিয়ে বইয়ের স্বীকৃতিতে লেখা আছে আর ঐ ঘটনার প্রায় তিরিশ বছর পরে আমি যে লেখাটি বলছি সেটি প্রকাশিত হয়, যাতে বিস্তৃত বিবরণ থাকে।
খর নজর রাখা হলেও সেটা করা হয়েছিল কারণ শহর থেকে একজন শিক্ষিত ভদ্রলোক গেছেন কুবির গোঁসাইয়ের খাতার খোঁজে, সবাই তটষ্থ ও সাবধানী আর "শহুরে মানুষদের মতিগতি বোঝা কঠিন। গান নিয়ে কোথাও বেচে নিশ্চয় অনেক টাকা পাবে" এরকমই ছিল তাদের মনোভাব। সন্দেহটা সুধীরবাবুকে শুধু নয়, শহুরে মানুষদেরই, তাদের জীবন আর ধর্মের কারণেই।
খাতাটি দেওয়ার সময়ে রামপ্রসাদ বলেন "যান মশাই, এতদিনে সময় হয়েছে তাই খাতাখানা পেয়ে গেলেন। আপনাকে এতদিন ধরে একটু বাজিয়ে নিলাম আর কী।
এই আমার মিলিয়ে দেখা। এই পুরো ঘটনায় খাতা চুরি খুঁজে পেলে তাদের গোয়েন্দাগিরিকে সন্দেহ করতে হয়। বা মানতে হয়, তাঁরা গসিপ করতে বা গালি দিতেই তৈরী, ঘটনাগুলো না জেনে বা না পড়ে। যা বুঝছি, গভঃ কলেজের প্রফেসরদের এখন সেটাই কাজ।
(কার্তিক লাহিড়ীর লেখাটা ১৯৮০ বলেছিলাম মনে হয়, ১৩৭৬-র সংখ্যা, কমলকুমার মারা যাওয়ার পরে প্রকাশিত হয়।)
বইকত, কার্তিক লাহিড়ির "চিত্রসংগীতস্থাপত্যময় অন্তর্জলী যাত্রা" বেরিয়েছিল শারদীয় ১৩৮৬-র এক্ষণে। আমার কাছে পত্রিকাটা নেই।
তার আগে ওটা যে 'বেসলেস' সেটা তো প্রমাণ কত্তে হয়! এক সিএস ছাড়া তো আর খাটাখাটনির রাস্তার ধারপাশে যাননি, নিননিছা থেকে কুচ্ছো গাচ্ছেন শুধু!!
"আপনারা সব গেরামভারি চালে তাঁকে নিয়ে আলোচনা করছেন যে সেই তখন থেকে মারা যাওয়ার পরের দিনই... ঘ্যানঘ্যান করছেন? নাকি এখানে সবাই নিক্তি মেপে কথা বলার জন্য বিখ্যাত? নাকি সৌমিত্রের গান স্যালুট নিয়ে বলা জায়েজ যেহেতু তাতে মমব্যানের আদ্যশ্রাদ্ধ করা যায়? আপনার এহেন আপত্তির কারণটা ঠিক কী বলেন দিকি?"
কারণ তো অনেক। এ ই যেমন গুরুচন্ডালি কর্তৃপক্ষ এই মাত্র গোপনে জানালেন আপনাকে বেসলেস নিন্দে মন্দ থেকে বিরত করতে পারলে আমি পার নিন্দে মন্দ চারানা পাবো।
খ, এটা মাইরি অন্তত আপনার থেকে আশা করিনি। এখানে কি সুধীরবাবুর শোকসভা বসেছে আর আপনারা সব গেরামভারি চালে তাঁকে নিয়ে আলোচনা করছেন যে সেই তখন থেকে মারা যাওয়ার পরের দিনই... ঘ্যানঘ্যান করছেন? নাকি এখানে সবাই নিক্তি মেপে কথা বলার জন্য বিখ্যাত? নাকি সৌমিত্রের গান স্যালুট নিয়ে বলা জায়েজ যেহেতু তাতে মমব্যানের আদ্যশ্রাদ্ধ করা যায়? আপনার এহেন আপত্তির কারণটা ঠিক কী বলেন দিকি?
সিএস, 'তিন' বছর নয় 'পাঁচ' বছর। সেই খাতা 'কপি করা নিষেধ'। যাতে কেউ কপি না করতে পারে সেই বিষয়ে আড়াল থেকে 'খর নজর' রাখা। তারপরে হঠাৎই 'অলৌকিক' উপায়ে সেই খাতা হস্তগত হওয়া। এগুলো আগে মিলিয়ে দেখুন।
দুঃখিত ১৩৮০ এক্ষণের শারদ সংখ্যাটি আছে যেখানে অশনি সংকেতের চিত্রনাট্য ছাপা হয়েছিল, কার্তিক লাহিড়ী সেখানে নেই।
দারুন। লিটেরালি গরু রচনা দিয়ে শুরু করতে পেরেছো।
নিজের পজিশনকে তক্কটক্কে পোক্ত রাখার জন্য অন্যের ডকুমেন্টেশন সম্পর্কে ঠিকঠাক ফার্স্ট হ্যান্ড জ্ঞান লাভ করাই আমার পজিশন।
কেমন দিলাম? :-))))
তোমার সে সম্পর্কে রাজনৈতিক পজিশন কি? ডকুমেন্টেশন তো গোলাপ ফুল নয়।
আরএসএস কে সুন্দর কই নাই, তাদের ডকুমেন্টেশন'কে ভালো বলিয়াছি। গোহত্যা বন্ধের আন্দোলনের ডকুমেন্টেশন গুলো খুবই ভালো। :-)))
লেখো পি এন কে সি:-)))))) আমার জ্বালায় যদি নন কমিটাল ফুসু ফুসু থেকে সরো , বাংলা সাহিত্যে আমার একটা অবদান থাকবে :-)))))) এলেকে ভুল পথে নিয়ে যেয়ো না, ঐ নির্জন পথে সুন্দর আর এস এস আছে :-)))))))
যত সালা আজে বাজে দিকে ঝোঁক।
কিন্তু অনিরুদ্ধ লাহিড়ীর ঢংএ লেখা পিএনপিসি ও অ্যানেকডোট আমার খুবই পচ্ছন্দের বিষয়। ও জিনিস না থাকলে আড্ডা জিনিসটাই আলুনি লাগে। হানুদার জ্বালাতে বাধ্য হয়েই আত্মজীবনী লিখতে হবে দেখছি।
আ ক বা,
পৃথ্বী শ আর কবে রান করবে?
স্যান্ডি ১৭ ডিসে ৫টা ৪৩-এর জন্য অনেক ধন্যবাদ। গ্যালন গ্যালন একোয়া রিজিয়া হোক আপনার -- যাতে দুনিয়ার সব সোনা সকলের নজর এড়িয়ে নিজের করে রাখতে পারেন।
বাটা নয়, ডাটা কারপেন্ট্রি, :-)
@a, আপনি চাইলে সফটওয়্যার বা বাটা কারপেনট্রি দেখতে পারেন (হয়ত জানেন)
লেসন গুলো বাংলায় ট্রানসলেট করা যায় অবশ্য।
https://twitter.com/RexChapman/status/1338637597892112385?s=09
আজ এইটা নতুন দেখলাম।
ধরুন বারুইপুরে https://ashanet.org/project/?pid=1018 বা https://ashanet.org/project/?pid=756 এবং সেখান থেকে গড়িয়া বা কলকাতায় আসা সম্ভব না, তাই অনলাইন রিসোর্স খুঁজছি। পছন্দমত জিনিস হতে পয়্সা দিতে আপত্তি নেই, ঠিকঠাক জিনিস সব বিনিপয়্সায় দিতে হলে ডেভেলেপারের চলবে কী করে? যদি জানেন কেউ আগ্রহী তো যোগাযোগ করিয়ে দেবেন?
বাংলায় প্রোগ্রামিং শেখার ভালো (ফ্রী) অনলাইন রিসোর্স আছে? ধরুন একটু গ্রামের দিকে যেখানে হাতে ধরে "কম্পিউটার" দেখিয়ে দেবার লোক নেই। কোনো রকমে একটা পুরোনো ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ যোগাড় হয়েছে এই পর্যন্ত। সেখানে মেয়েদের ট্র্রেনিং দেওয়ার মত রিসোর্স পাওয়া যাবে? এই রকম মেয়েরা - ক্লাস এইট বা আর একটু বড় https://atlanta.ashanet.org/our-projects/
আমার একটা বদভ্যাস হল আমি নিজে নিজে অনেক ট্রেনিংকরি আর সেই দিয়ে এই প্রোজেক্ট সেই প্রোজেক্ট ঘুরে সংসার চালাই:--) কিন্তু মেয়েকে সামান্য কোডিং শেখাতে গিয়ে দেখলাম অসম্ভব বাজে পড়ানো হয় স্কুলে এবং নিজের ট্যালেন্ট আগ্রহ ছাড়া ধারণা ভালো হয় না। এবং এই সাহায্য টা অনলাইনে লোকে পেলে ভালো ই হয় তবে মা অবস্থা বাংলা ব্যাপারটা ই উঠে না যায়
ই-বই এর যে সহায়ক মূল্য, সেখানে যা খুশি ডোনেট করা যায়। সেটা এককালীন। অন্যগুলো মাসিক সাবস্ক্রিপশনের জন্য।