বুড়োদের "আজাইরা প্যাচাল" পারা অভ্যেস। এটাই এ বিষয়ে আমার শেষ পোস্টঃ
উইলকিন্সের বইয়ের কভারের ফটো দেখুন। বইয়ের নাম দি ভাগবাত -গীতা,
কোথাও মহাভারতের থেকে তুলে আনা বলা হয়নি। অর্থাৎ উনিও ওটিকে স্বতন্ত্র বই মনে করছেন।
অপু,
"সরল" বলেছিলাম, "সংক্ষিপ্ত" বলিনি তো! ঃ)))
ও আচ্ছা, ইপেপারেও আছে তাহলে!
দমদি, ছাপা কাগজে আছে, অনলাইনে বোধয় নেই।
এলেবেলে,
আপনার এবং অরিনের সূত্র ধরে দেখা যাচ্ছে উইলকিন্স বেনারসের পণ্ডিতসমাজের কাছে সংস্কৃত শিখতে গিয়েছিলেন। ঠিক কথা। তার কয়েকশ বছর আগে শংকর সনাতন হিন্দুধর্মের স্ট্রাকচার বেঁধে দিয়ে ভারতের চার দিশায় চারটে মঠ প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং দশনামী সম্প্রদায় (পুরী, গিরি ইত্যাদি) তৈরি করেছেন। কোর্স হিসেবে তিন প্রস্থান ( উপনিষদ, ব্রহ্মসূত্র ও গীতা) নির্ধারিত করেছেন এবং প্রত্যেকটির নিজস্ব ভাষ্য রচনা করেছেন। তাহলে উইল্কিন্স বেনারসের পন্ডিতদের কাছে বা কাশীনাথ ভটাচার্য্যের কাছে কোন গীতা পড়েছিলেন যার থেকে ইংরেজি অনুবাদ?
হুতো,
ফার্সি ছিল দরবারের ভাষা, তাই চাকরিজীবিদের (প্রশাসন এবং রেভিনিউ) শিখতে হত। যেমন আজকাল সবাই ইংরেজি শেখে। তাই সবচেয়ে বেশি ফার্সিনবীশ হত কায়স্থরা। ওদের খেতাব হত " মুন্সী", যেমন সংস্কৃত জানলে "পন্ডিত"। লেখক প্রেমচান্দের মুন্সী খেতাবও ওই সূত্রে।
আমজনতার দৈনন্দিন জীবনের পূজোয়াচ্চা ধর্মকর্মে ( হিন্দুর দশকর্ম) সংস্কৃতের প্রভাব, বুঝে বা না বুঝে। রামমোহনের সময় ইংরেজি স্কুল বা কলেজ ক'টা? আর চতুষ্পাঠী টোল বা পাঠশালা কটা?
রামমোহনের বক্তব্য থেকে কি দাঁড়াল? সেই সময়ের ব্যাপক বাঙালীরা 'সংস্কৃত' খুব কঠিন বোলে উইলকিন্সের ইংরেজি অনুবাদ থেকে গীতা পড়ল? জগদীশ ঘোষের গীতা দেখুন বা গীতা প্রেসের গীতা--বাংলা হরফে বা দেবনাগরী লিপিতে-- সেই সাতশো সংস্কৃত শ্লোক। এঁরা উইলকিন্স সায়েবের সৌজন্যে গীতাজ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছিলেন মনে হয় ?
"উইলকিন্স সাহেব কাদের কাদের কাছ থেকে 'নিম্বার্ক এর গীতাত্ব প্রকাশিকা, মাধব আচার্য্য গীতা ভাষ্য,অভিনব গুপ্তের গীতার্থ সমগ্র' সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞানলাভ করেছিলেন যাতে তিনি অনুবাদের কাজে হাত দিতে সাহসী হন।"
চারলস উইলকিনস সাহেবের কৃতিত্বের আগে যে আরো একজনের কৃতিত্ব রয়ে যাচ্ছে, :-),
"Kasinatha was known to the Orientalists of Calcutta before Wilkins moved to Benares. He had already supplied Sanskrit manuscripts to Halhed. In a later document Kasinatha himself describes Wilkins’s initial contact with him in Benares:
I beg further to say that Mr. Charles Wilkins came to Benares in order to study the Sastras. He sent for many learned Pandits and requested them to teach him the subject. Some of them did not agree to take up the work while others failed to do it efficiently. Mr. Wilkins then summoned me for a purpose. By the grace of God I taught him the subject within a short time"
(সূত্র: Davis, R. H. (2015). Wilkins, Kasinatha, Hastings, and the First English Bhagavad Gītā. International Journal of Hindu Studies, 19 (1–2), 39–57. https://www.academia.edu/15282813/Wilkins_Kasinatha_Hastings_and_the_First_English_Bhagavad_Gita)
কাশীনাথ ভটচায্যি কি সেই জন?
অরিন,
আপনার দৌলতে অমন সুন্দর লোককথা এবং গুরুর ভাটের সৌজন্যে সুকুমার রায় পড়া হল। বন্ধ ঘরে মনটা ভালো হয়ে গেল। নিউজিল্যান্ড সম্বন্ধে ছবি দেখে মনে হয় খুব সুন্দর দেশ। পাহাড় সমুদ্র বন --একাকার। আমার তেলেগু বন্ধুরা বলে ওদের অনেকে নাকি ওখানে বাসা বেঁধেছে।
হুতো ও এলেবেল,
আমার বক্তব্য খুব সরলঃ
১ আজ থেকে দেড় দুশো বছর আগে বঙ্গে আধুনিক শিক্ষার হার ছিল নগণ্য; ওটা নিঃসন্দেহে ইংরেজের হাত ধরে এসেছে।
২ কিন্তু তার মানে এই নয় যে ছাপা বইয়ের আগে হাতে লেখা পুঁথির প্রচলন ছিল না । বা দেশি শিক্ষা ব্যবস্থা বলে কিছু ছিল না।
৩ সেটুকু অবশ্যই সংস্কৃত ঘেঁষা, বাঙলা ভাষার সবে চোখ ফুটেছে।
৪ শিক্ষিত বইপড়নেওলা বুদ্ধিজীবি সব যুগেই জনসংখ্যার ক্ষুদ্র অংশ, তখন ছিল ভগ্নাংশ।
৫ তার মধ্যে সংস্কৃত জানা লোক বেশি, ইংরেজি জানা কম। কারণ ইংরেজি শিক্ষা মাত্র শুরু হয়েছে, সবার নাগালে নেই।
৬ রামায়ণ-মহাভারতের গল্প এবং গীতার কিছু কিছু শ্লোক পন্ডিতদের মাধ্যমে লোকে জেনেছে। অর্থাৎ গীতার নাম কেউ শোনেনি--এমন নয় ।
৭ স্বতন্ত্র মূল গ্রন্থ থাকলে তবেই তার ভাষ্য ,টীকা (ভাষ্যের ব্যাখ্যা) এবং দীপিকার ( টীকার ব্যাখ্যা) প্রশ্ন ওঠে।
৮ আজও শংকরের মূল সাতশো শ্লোকের গীতা ও তার ভাষ্য এবং তার উপর আনন্দগিরির টীকা এবং রামানুজ শ্রীধর আচার্য্যদের পালটা ভাষ্য উপলব্ধ। এগুলি সাতশো থেকে একহাজার সালের বেশি পুরনো। সমস্ত বাঙলা গীতা এগুলোর কোন একটাকে ভিত্তি করেই। সেই সাতশো শ্লোক।
৯ এসব ছেড়ে দিই। উইলকিন্সের ইংরেজি অনুবাদ থেকে বাঙালী কি করে সংস্কৃত পদ্যে লেখা গীতার স্বাদ পেল বা তার সঙ্গে পরিচিত হল?
বৈশাখ মাসে দুজনের দেখা হয়েছিল। পরিচয় হতে হতে জষ্ঠি হয়ে গেল। কিন্তু তারপর আর কিছুই হচ্ছে না - আষাঢ়ে কী হতে পারে তাই নিয়ে ভয়ে মরছে - এই রকম একটা খাজা গপ্প নিয়ে গান হলে তাকে আমরা আচাভুয়া বলতাম। এখন দেখছি এর আরো গভীর ব্যঞ্জনা আছে। শ্যামের বাঁশী শুনেও রাধা কেন মুখ ফিরিয়ে চলে যাবে অথবা ও কেন এত সুন্দরী হবে এসব গভীরতর ব্যাখ্যাও এই শব্দের দ্বারা পাওয়া যেতে পারে হয়তো।
*সমগ্রহ
** almost
//পরবর্তী কালে,নিম্বার্ক এর গীতাত্ব প্রকাশিকা, মাধব আচার্য্য গীতা ভাষ্য,অভিনব গুপ্তের গীতার্থ সমগ্রহ।সবকটিতেই গীতা শব্দ বন্ধের উল্লেখ আছে।এগুলো সব কিছুই উইলকিন্স সাহেবের জন্মের কয়েক শত বছর আগের রচনা।
উনি এসব গুলো থেকেই ইংলিশে ভগবত গীতা ট্রান্সলেট করেছেন।//
এই আচাভুয়া দাবিটা প্রতিষ্ঠা করার আগে এই বিষয়দুটোতে যথেষ্ট প্রমাণ হাজির করতে হবে ---
১. উইলকিন্সের সংস্কৃত চর্চার ইতিহাস।
২. উইলকিন্স সাহেব কাদের কাদের কাছ থেকে 'নিম্বার্ক এর গীতাত্ব প্রকাশিকা, মাধব আচার্য্য গীতা ভাষ্য,অভিনব গুপ্তের গীতার্থ সমগ্র' সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞানলাভ করেছিলেন যাতে তিনি অনুবাদের কাজে হাত দিতে সাহসী হন।
প্রসঙ্গত, এখানে রামমোহনের সংস্কৃত ভাষা নিয়ে একটি ছোট্ট মন্তব্য থাকল - The Sangscrit language, so difficult that alomost a life time is necessary for its perfect acquisition....
রামমোহনে আপত্তি থাকলে জানাবেন, বিদ্যাসাগরের বক্তব্যও দেওয়া যাবে
আজ্জো, তোমাদের মেয়রের বিরুদ্ধে গভর্নর কেস ঠুকেছেন! কেন সব খুলবে না বলে! আজব দেশ এক