অসংখ্য চিহ্ন, খুব স্পষ্টভাবে জানিয়ে রাখি এবড়োখেবড়ো টিবি ও অনাহারে মৃত্যুর কথা বলেছিল, ম্যালেরিয়া সম্পর্কে কিছুই বলে নাই।
এবারে আপনারা আলোচনা চালিয়ে যান।
আপনার কথায় বিস্তর ফ্যালাসি।নিজেই যখন বলেছেন ভ্যাকসিন নিয়ে আশাবাদী নন।আমার দাবী ছিল একটি কার্যকরী ভ্যাকসিন ও যুগান্তকারী নতুন ঔষধ।
আর মস্কুইটো বর্ন দিজিজ যখন,তখন স্প্রে করে,ড্রেনেজ সিস্টেম উন্নত করে,জলদি ঔষধ দিয়ে,র্যাদিকাল কিওর মেডিসিন এর প্রয়োগ করে সংক্রমণ কমিয়ে দেওয়া যায়।
কয়েজ দশক আগে,ভারতেই ব্যাপক হারে ডি ডি টি স্প্রে করেই ম্যালেরিয়া ব্যাপক কমিয়ে দেওয়া গেছিলো। বই পড়লেই জানতে পারবেন।বিরাট ব্যাপার নয়।আবার ফিরে এসেছে।
একটি খুব কার্যকরী ভ্যাকসিন থাকলে,এই ঝামেলা থাকে না।
যাঁরা শ্রেণিবৈষম্যকে ঘৃণা করেন , যাঁরা জাতিবৈষম্যের প্রতিকার চান, যাঁরা 'বর্ণবৈষম্য নিপাত যাক' ধ্বনি তোলেন।
''দলিত , পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়গুলোর জন্য বামেদের কুম্ভীরাশ্রু যদি এক জায়গায় জমা করা যেত তাহলে সম্ভবত ভূগর্ভস্থ জলের অপ্রতুলতার সমস্যা অনেকটাই প্রশমিত হত ।
চিন্তনে ও মননে মার্ক্সবাদপুষ্ট জাতি-বর্ণ বিদ্বেষের অবাধ সংরক্ষণ থাকলে বিস্মৃতি ঘটে বই কি। তাই একটু মনে করিয়ে দিতে চাই বাম আমলের কিছু কথা :
১) ১৬ অগাস্ট ১৯৯২ সাল তারিখে লোধাশবর আদিবাসী গোষ্ঠীর প্রথম স্নাতক চুনী কোটাল লাগাতার জাতিবিদ্বেষের শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন । কারণটা প্রধানত বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ববিভাগের ডাকসাইটে বামপন্থী অধ্যাপক ফাল্গুনী চক্রবর্তী তাঁকে ক্লাসে, সেমিনারে ‘অপরাধপ্রবণ জনগোষ্ঠীর’ সদস্য বলে ক্রমাগত অপদস্থ করছিলেন । প্রতিকার চেয়ে উপাচার্যের কাছেও দরবার করেছিলেন চুনী কোটাল । খুব স্বাভাবিক কারণেই লাভ কিছুই হয় নি । বর্তিকা পত্রিকায় প্রকাশিত ‘আত্মকথা: আমার কথা’ প্রবন্ধে ১৯৯০-এর জুন মাসে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত চুনী কোটাল লিখলেন তাঁর বঞ্চনাময় জীবনের আখ্যান: “কোন লগ্নে কোন তিথিতে যে এই মাটির পৃথিবীতে এসেছিলাম জানি না। নিশ্চয়ই সেই মুহূর্ত ভাল ছিল না। আর কিসের প্রয়োজনে যে আমাদের মত ছেলেমেয়েরা আসে তার উত্তর খুঁজে পাইনা।”
২) পশ্চিমবঙ্গ সরকার Scheduled Caste and Scheduled Tribe (Prevention of Atrocities) Act ১৯৮৯ অনুসারে ফাল্গুনী চক্রবর্তীকে কিন্তু শাস্তি দেওয়া হয়নি , বরং ১৯৯৫ সালে কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এস.এস. গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর রিপোর্টে জানান যে অধ্যাপকের ব্যবহার নাকি এমন কিছু অপমানজনক ছিল না যা চুনী কোটালকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিতে পারে। দূর্জনেরা বলেন যে জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায় নাকি তদন্তই করেননি , যে রিপোর্ট বাম প্রভাবিত WEBCUTA ওনাকে দিতেন , উনি সেটাকেই মার্ক্সের বাক্য ভেবে নিতেন ।
৩) ১৪ই নভেম্বর ২০০০ সাল তারিখে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা যায় যে হুগলি জেলার পড়শুরা অঞ্চলে এক তপশিলি স্কুলশিক্ষকের স্ত্রী শুভমা শীট কালী মন্দিরের ঘট স্পর্শ করায় মন্দির শুদ্ধিকরণের জন্য পূজো ইত্যাদির খরচ বাবদ ৮০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল । আর জরিমানার পরিমান আর নির্দেশ কার্যকর হয়েছিল সিপিআইএমের লোকাল কমিটি থেকে ।
৪) ১৯ নভেম্বর ২০০০ সাল তারিখে The Hindu পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী বাঁকুড়া জেলার বিরভামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্রাহ্মণ ছাত্ররা Integrated Child Development Scheme অর্ন্তগত মিড-ডে-মিল খেতে অস্বীকার করে কারণ তা ছোট জাতের মানুষের হাতের রান্না। অন্যান্য এলাকার অভিভাবকেরা জানান যে দরকার পড়লে তারা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাবেন না, কিন্তু নিচু জাতের ছেলেমেয়েদের পাশে বসে খাওয়া বা নিচু জাতের ছোঁয়া রান্না খাওয়াতে তাদের আপত্তি আছে। ঐ অভিভাবকদের নেতৃত্বে ছিলেন সিপিআইএমের একজন জেলা কমিটি সদস্য ।
৫) ১ নভেম্বর ২০০৪ সালে তারিখে আনন্দবাজার পত্রিকা অনুযায়ী এক ব্রাহ্মণ যুবক হাড়ি জাতির এক যুবতীকে প্রণয়-বিবাহ করলে তা সামাজিক স্বীকৃতি পায় না। তাঁরা রেললাইনে মাথা দিয়ে একসাথে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর পর এদের মৃতদেহ সরাতেও কেউ আসেনি। ঐ ব্রাহ্মণ ছেলেটি DYFI এর সদস্য ছিল ।
৬) ২৯ মার্চ ২০০৭ সাল তারিখে Times of India-তে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী মুর্শিদাবাদের লালবাগ মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডাঃ উজ্জ্বল বিশ্বাসের কাছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দিতে আসেন DYFI-এর Zonal Secretary পার্থ চক্রবর্তী । ডাঃ বিশ্বাস সৌজন্যবশতঃ পার্থবাবুকে চা খেতে অনুরোধ করায় তিনি জানান যে তপশিলি জাতির ব্যক্তির সঙ্গে একসাথে চা খেতে তিনি প্রস্তুত নন।
৭) ২৪ এপ্রিল ২০০৭ তারিখে আজকাল দৈনিক পত্রিকায় খবর অনুযায়ী হুগলি জেলার প্রহ্লাদ রায় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে B.Ed. বিভাগে লেকচারার পদে চাকরি পান। নিচু জাত বলে তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে দিয়েই গঙ্গাজল আনিয়ে তাঁকে স্নান করান শুদ্ধিকরণের জন্য। তবুও তাঁকে টিচার্সরুমের চেয়ারে বসতে না দেওয়ায় তিনি গ্রন্থাগারে বসেই সময় কাটান। দলের প্রত্যক্ষ মদতে ঘটনাটি ঘটলেও বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছিলেন যে অস্পৃশ্যতা দূরীকরণ সহজে সম্ভব নয়। ফলে এই ব্যাপারে কারুর বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ নেওয়া কার্যত অসম্ভব ।
৮) ১১ নভেম্বর ২০০৭ তারিখের The Statesman অনুযায়ী প্রতীচি ট্রাস্টের রিপোর্ট মোতাবেক আদিবাসী অধ্যুষিত মেদিনীপুর, বীরভূম, পুরুলিয়ায় অন্ত্যজ শ্রেণির বাচ্চাদের ক্লাসে বাধ্যতামূলকভাবে আলাদা বসতে হয়।
৯) ২রা মার্চ ২০১০ তারিখের Indian Express-এ প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ একমাত্র রাজ্য যেখানে বিধানসভায় উচ্চবর্ণের সদস্য ১৯৭২-এ ৩৮% থেকে ১৯৯৬তে মার্ক্সবাদের আলোকে আলোকিত হওয়ার দরুন বেড়ে দাঁড়ায় ৫০%এরও বেশিতে ।
৩৪ বছরের বাম শাসনকালে এইভাবেই তথাকথিত ব্রাহ্মণবাদ -মার্ক্সবাদ -লেনিনবাদ একসাথে হাতে হাত মিলিয়ে চলেছিল সর্বহারার শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ।
গরীবের অন্য অস্ত্র আছে।ভ্যাকসিন।ম্যালেরিয়া বা টিবি বা ডেঙ্গির কার্যকরী ভ্যাকসিন এসে গেলে,ঔষধ এর সেরকম প্রয়োজন পড়বে না।
মিজলস,পোলিও,জাপানিজ এন্সফেলাইটিস,হেপাটাইটিস বি,মেনিনজাইটিস,মাম্পস এগুলোর তো ভালো ও কার্যকরী ভ্যাকসিন বেরিয়েছে।তাই ঔষধ এর প্রয়োজনীয়তা কমছে।
সেই জন্যই তো বলা। জায়ান্ট ফার্মারা এসব গরীব দেশের রোগের রিসার্চে বেশি ইনভেস্ট করতে চায় না।
ট্রাম্প সাপোর্টার বলে ফেটটি লাগিয়ে ঘুরলে,বিপদ কমবে?
যদি না কমে,না বেরোনই ভালো।বন্দুক খুব খারাপ জিনিষ।কখন কি করে,কে জানে।