আরে হিউম্যান ইন্টার্যাকশন জিনিসটাই বালের। এটাকে এফিশিয়েন্ট করতে গেলে মেশিন লাগবে। অগমেন্টেড রিয়েলিটির মাধ্যমে ফ্রিডম ও সিকিউরিটি জিনিসদুটোকে ডিকাপল করার সময় এসে গেছে। লোকে নিজের নিজের ঘরে থেকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে আনলিমিটেড ফ্রিডম ভোগ করুক। কিন্তু একচুয়াল সোশ্যাল ইন্টার্যাকশন মনিটর করুক মেশিন। মানে ধরুন আমি আপনাকে তালের নাড়ু পাঠালুম। মেশিন ডিসাইড করবে সেটা একচুয়ালি আপনার কাছে যাবে কিনা।
স্তালিন ফালিন দরকার, নইলে কি আর হবে এসব? ন্যাকা কবির দল বসেই আছে ইনএফিশিয়েন্ট হিউম্যান ইন্টার্যাকশনে ইমোশন মাখিয়ে পদ্য লেখার জন্য। আধুনিক সমাজে প্রেমকে গ্লোরিফাই করে কোবতে লিখলেই আন্টার্কটিকা পাঠিয়ে দেওয়া উচিত।
ওসবে লাভ নেই। প্রাইভেসির কনসেপ্ট পুরো বদলে গেছে। প্রেম নামক হাজার বছরের পুরনো মডেলটা হাটিয়ে দিতে হবে। রাস্ট্রকে ফুল অ্যাকসেস দেওয়া হোক। জামাতিনের নভেলটার মত পার্টনার চুজ করবে সবাই। রাস্ট্রের অনুমতিতে সব ডকুমেন্টেড রেখে শোওয়া হোক। যেভাবে গুগল ইত্যাদির ওপর আমরা ভরসা রেখেছি, এক্ষেত্রেও তাই হোক। তারপর কমপ্লেন এলে রাস্ট্র দেখেশুনে ব্যবস্থা নেবে। আর রাস্ট্র কেম্ব্রিজ অ্যানালিটিকামার্কা কেস করলে মোমবাতি মিছিল ইত্যাদি বাওয়াল দেওয়া যাবে। এছাড়া কোন উপায় নেই। একমাত্র সঠিক অ্যালগোরিদমই আবালদের লাইনে আনতে পারে।
কারোর সাথে সেক্স করাতে সমস্যা নেই, কিন্তু তাকে ভালোবাসার আশ্বাস দিয়ে স্রেফ তার সাথে বারবার শারীরিক হতে চাওয়াতে সমস্যা আছে...
দুজনের ইচ্ছেতে সেক্সচ্যাট করা নিয়ে সমস্যা নেই, কিন্তু পরবর্তী কালে সম্পর্ক খারাপ হলে সেক্স চ্যাটের স্ক্রিনশট পোস্ট করাতে সমস্যা আছে...
নিজেদের ইচ্ছেতে নিজেদের ল্যাংটো ছবি পাঠানোতে সমস্যা নেই, কিন্তু সেই ছবি জাস্ট একজনের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে পরে ভাইরাল হয়ে যাওয়াতে সমস্যা আছে।
নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে চোদ্দ জনের সাথে শোয়াতে অসুবিধে নেই, কিন্তু একইসঙ্গে চোদ্দ জনের সাথে সম্পর্ক রেখে "ইটস মাই চয়েস" বলাতে অসুবিধে আছে....
কাউকে দেখে কাম জেগে ওঠাতে সমস্যা নেই, কিন্তু সেটাকে কন্ট্রোল না করতে পেরে বাসে ট্রেনে নিজের নিম্নাঙ্গ বা স্তন একজনের গায়ে ইচ্ছে করে ঠেকানোতে অসুবিধে আছে....
আমি কোনো পুরুষ বা নারীকে আলাদা করে খারাপ ভালো বলছি না, বরং সবাইকে এক ছাতার তলায় দাঁড় করিয়ে একটা কথা বলি, বয়স তো কম হলো না! প্রচুর প্রচুর ভুল করার পর এই বয়সে এসে এটুকু উপলব্ধি করেছি,
যৌনতা সুন্দর, প্রেম সুন্দর, কারোর শারীরিক সৌন্দর্যকে তার ইচ্ছেতে উপভোগ করাও সুন্দর কিন্তু সবকিছুর একটা আড়াল লাগে, একটা পর্দা লাগে....
যে পর্দার ভেতর স্রেফ দুটো মানুষ থাকবে, কোনো হিডেন ক্যামেরা বা ফোনের ক্যামেরা নয়। একটা নেভা নেভা আলো থাকবে, একটা বন্ধ দরজা থাকবে, যে দরজার ওপার থেকে এপারের কোনো দৃশ্য কোনোদিন কেউ দেখতে পাবে না....
খুব সহজ ভাষায় বলতে গেলে আমরা মানুষ, কুকুর তো নই। দুটো মানুষের ভেতর পর্দা থাকা দরকার, যে পর্দা সরে গেলে মানুষকে বড় কুৎসিত বিচ্ছিরি জঘন্য দেখায়....
সম্পর্ক থাক, বা না থাক, সম্পর্ক ভেঙে গেলে একটা মানুষকে সম্মান করতে পারুন বা নাই পারুন, মানুষ হয়ে একজন মানুষের প্রতি ন্যূনতম সম্মানটুকু রাখা দরকার। অন্তত নিজেদের ভেতর প্রাইভেসি টুকু মেন্টেন করা দরকার....
কিন্তু আসল প্রশ্ন হলো কজন এই প্রাইভেসি মেন্টেন করে! এমন দুটো সময় আসে প্রত্যেকের জীবনে, যখন নিজেকে কন্ট্রোল না করতে পারলে মানুষ আর মানুষ থাকে না, তার সমস্ত মনুষ্যত্ব হারায়ে ফেলে অতি ভয়ংকর কিছুতে পরিণত হয়, যাকে আটকানো যায় না....
এক হলো, যখন সে অতিরিক্ত ভালোবেসেও ভালোবাসা পায় না, রিজেক্টেড হয়। আর দুই হলো, বারবার ঠকে গিয়ে নিজের ভেতর যখন প্রতিশোধ নেয়ার ভাবনা তৈরি করে ফেলে....
তখন সে ভয়ংকর আত্ম অহংকারী হয়ে ওঠে, তার ঠিক ভুল বাস্তব অবাস্তব জ্ঞান থাকে না।
সবচেয়ে দামি একটা কথা বলি! বিশ্বাস বড় অসুন্দর হয়, বড় ঠুনকো জিনিস, এই আছে এই নেই! মানুষ বড় সস্তা! আচ্ছা বুকে হাত রেখে বলুন তো, আপনি নিজেকে সম্পূর্ণ চিনতে পেরেছেন?
আজকের সিচুয়েশন দাঁড়িয়ে আপনি যেভাবে কথা বলেন, দুই বছর পর কি আপনার ভেতর কোনো পরিবর্তন আসবে না? খুব বকবক করা আপনি হয়তো শান্ত হয়ে যেতে পারেন, কিংবা খুব শান্তশিষ্ঠ থাকা আপনি হয়তো দারুণ বকবক করতে শিখে যাবেন, লোক হাসাতে শিখে যাবেন....
মানুষ কোন অবস্থায় কিরকম রিয়াক্ট করবে কেউ জানে না! সে নিজেকেই ঠিক করে কোনোদিন চিনে উঠতে পারে না, তাহলে অন্য কাউকে চিনবে কিভাবে! আজীবনের মতো বিশ্বাস করবে কিভাবে!....
নিজের গোপন থেকে গোপন কথা বলার পর ভরসা রাখবে কিভাবে যে কেউ সেটা পাব্লিক করবে না? নিজেদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি একজনের কাছে সুরক্ষিত কতদিন থাকবে সেটা অন্যজন জানবে কিভাবে!....
এই এতকিছুর পরেও আমরা মানুষ, আমাদের বিশ্বাস করতে হয়, ভরসা রাখতে হয়, ঠকতেও জানতে হয়, ঠকাতেও জানতে হয়, অপমাম সইতেও জানতে হয়, অপমান করতেও শিখতে হয়....
তবে ওইযে বলেছিলাম আড়াল! সেই আড়াল টা যতবেশি রাখবেন তত বেশি সুস্থ স্বাভাবিক থাকবেন, এবং ঠকে যাবেন না খুব সহজে...
যত বেশি পর্দা সরাবেন, তত বেশি নগ্ন হবেন, প্রথমে আপনার পার্টনারের সামনে, তারপর বাইরের লোকের সামনে.....
নগ্ন অবশ্যই হবেন কাছের মানুষের সামনে! কোনও ক্যামেরার সামনে নগ্ন হওয়াতে সৌন্দর্য নেই, বরং উৎশৃঙ্খলতা আছে, স্বেচ্ছাচারিতা আছে.....
স্বাধীনতা সুন্দর, স্বেচ্ছাচারিতা নয়...
নিজেদের মধ্যে নগ্ন ছবি আদান প্রদানের সময় একবার অন্তত ভাবুন, ভালোবাসার মানুষের সুরক্ষা নষ্ট করে দিচ্ছেন না তো কোনোভাবে!....
নিজেও ভাবুন একবার, আজ যার সাথে সম্পর্ক আছে, কাল যদি সম্পর্ক নষ্ট হয়! তখন আপনার নগ্ন ছবি বা ভিডিও শেয়ার হয়ে ছড়িয়ে পড়বে না তো?
আর যারা অন্য কারোর মুখ কেটে অন্য কারোর উলঙ্গ ছবিতে ব্যবহার করে, তাদের আমি মানুষের পর্যায়ে ফেলি না, কাজেই ওদের নিয়ে কোনো কথা বলছি না....
যাকগে বাড়ি থাকুন, সেক্স করুন কিন্তু দুজনের ইচ্ছেতে, জোর করে নয়, সুস্থ থাকুন!....
অ্যাবিউস তো মানসিক সমস্যা থেকে করে। ইনফিরিওরিটি কম্পলেক্স থেকে করে। নিজের হেরে যাওয়া মেনে নিতে না পেরে আক্রোশ থেকে করে।
বাড়ির শিক্ষাও ওরকমই পেয়েছে, তাই জানে ওটাই ক্রোধ আক্রোশ প্রকাশের রাস্তা।
ও আচ্ছা। আমি বুঝতে পারি নি।
রগরগে কেন হবে?
রগরগে হবার ভয়েই তো ভিক্টিমরা কমপ্লেইন করতে গিয়ে পিছিয়ে আসে। অ্যাবিউসের কেসকে রগরগে মনে করাটা যতদিন না কমবে, ততদিন এর সমাধান নেই।
রেপসীন ওয়লা সিনেমা দেখতে যারা ভিড় করে সেক্স সীন এনজয় করতে, বা যারা দর্শক বাড়ানোর জন্য রগরগে দৃশ্য করে তোলে রেপসীনকে, তাদের এমপ্যাথি নেই, অ্যাপাথি আছে।
গোদরেজের ইস্কুলের বন্ধু (কেজি ওয়ান থেকে একসঙ্গে পড়েছে একই ক্লাসে একই সেকশনে) তাকে বহুবছর ধরে খুঁজছে। কীভাবে যোগাযোগ সম্ভব?
@dzh | 162.158.165.83 | ০৬ মে ২০২০ ১৮:১৩
হ্যাঁ ইনিই।
অসংখ্য ধন্যবাদ