এটা খুব মিস করছি। এই বাজারে চীনের পারস্পেক্টিভ কিছুই বুঝতে পারছি না।
Debbabur lekha khub miss korchi eei samaye. Amar nijer kichu boktobyo aache eei byapare. 1. Puro ghotona niye Dalai Lama puro puri chup. Emon ki Ladakh Bharat errabhichedyo ango eei jatiya kono comments o nei. Amar eei ta jante khub ichhe korche. Bondhura kichu bolben ki
Ami nije samprotik kale P. STOBEDAN eer lekha ekta boy te e bishoye kichu porechi.seI bishoy pore janabo
বাবারে! কাকা এই টইতেও ছড়িয়ে ছিলেন? আমেরিকা হোক বা চীন , কাকা র চেয়ে বেশি কেউ জানে না ।
বেদম যুদ্ধ শুরু হয়েছে। ৫জি, সেমিকন্ডাক্টর চিপ, রেয়ার আর্থ - নানান ফ্রন্টে যুদ্ধ হচ্ছে। আমেরিকার ভোটের বাজারে চীনের গুরুত্ব বিশাল এবার। ডেমোক্র্যাট ইস্তাহারেও চীন মিউজিকের রমরমা। শি-বিরোধী চীনা নেতৃত্ব হিসেবে দুএকটা নাম ভাসানো চলছে।
অবস্থা ভাল ঠেকছে না। বোমাই রক্ষা। খুব বেশি দূর যাবে না। কিন্তু বিজেপির পক্ষে মোদির প্রেস্টিজে এরকম একখানা কোঁতকা সামলানো মুশকিল।
চিনের সাথে ভারতের প্রায় পুরো সীমানাটাই দু'দেশের মাঝে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত নয়। অদূর ভবিষ্যতে হবারও কোন সম্ভাবনা নেই। সীমানাটার এক একটা অংশের এক এক রকম ইতিহাস এবং তজ্জনিত ভিন্ন ভিন্ন সার্কাস। অংশগুলোর ব্যাখ্যান সংক্ষেপে - পূর্ব থেকে পশ্চিম বরাবর -
১। অরুণাচল প্রদেশ সীমা। এখানে খাতায় একটা লাইন আছে - ম্যাকমোহন বাবু টেনেছিলেন। চিন সেটা স্বীকার করে না। কিন্তু ম্যাপটা দু'দেশের কাছেই আছে। এটা গুরুত্বপূর্ণ - কেন, সেটা স্পষ্ট হবে একটু নিচে।
২। ভুটান। এমনিতে ভুটানের সাথে চিনের সীমানা নিয়ে আমাদের মাথাব্যাথা থাকার কথা ছিল না। কিন্তু ভুটান ভারতের প্রোটেকটরেট। ফলে ভুটান-চিন সীমানাও ভারতের হিসেবে পড়ে। এই সীমাও নির্ধারিত নয়। দুই ডজন বার চিন-ভুটান-ভারত আলোচনার পরেও। ভুটান-চিন সীমার একেবারে পশ্চিম প্রান্তে হচ্ছে ডোকলাম এলাকা যাকে নিয়ে এই টইয়ের শুরু তিন বছর আগে।
৩। সিকিম। ভারত-চিনের মাঝে একমাত্র অংশ যেখানে সীমানা নির্ধারিত এবং জমিতেও মার্কামারা। থ্যাঙ্কু দিন ব্রিটিশদের। সিকিমের রাজাকে তিব্বতের নিয়ন্ত্রণ থেকে বের করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার পর তার হয়ে ব্রিটিশরা ১৮৯০ সালে চিনের সাথে সীমানাটা স্থির করে। ১৯৭৫ অবধি সিকিম ভারতের প্রোটেকটরেট ছিল লাইক ভুটান। তার পর তো ইন্দিরা গান্ধী গিলেই নেন। সিকিম সীমান্ত নির্ধারিত হলেও সিকিম-চিন-ভুটান তিন দেশের কোণার অংশটুকু নিয়ে মতভেদ আছে - ডোকলাম এলাকা।
৪। নেপাল। এই দেশটাকে 'প্রোটেক্ট' করার দায়িত্ব ভারতের নয়। নেপাল ভারত-চিনের মাঝে একমাত্র বাফার স্টেট। এখন অবশ্য নেপালের সাথেই লেগে গেছে। (এদের দ্বারা শালা হবে না। একটা মাত্র হিন্দু সংখ্যাগুরু দেশ। সেটাকেও নিজের দলে রাখতে পারল না।)
৫। উত্তরাখন্ড ও হিমাচল প্রদেশ। ছোটখাটো দু'একটা গুপি এখানেও আছে। বাদ দিন।
৬। লাদাখ। অনেক বড় এলাকা এবং অরুণাচল প্রদেশের মতন কোন ম্যাকমোহন লাইন নেই। তবে একখানা 'প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা' আছে। নিয়ন্ত্রণ রেখা তো পাকিস্তানের সাথেও আছে। তো তার ঘাড়ে আবার 'প্রকৃত' চাপানোর কি মানে? মানে বুঝতে গেলে আপনাকে ১৯৬২ সালে যেতে হবে। তা সেবারে ভারতকে চ্যাংদোলা করে ক্যালানোর পর চিনারা কিছু ডিসকাউন্টের অফার দিল - চিন অরুণাচল প্রদেশ প্রায় পুরোটাই নিজের দখল থেকে ছেড়ে দেবে এবং ম্যাকমোহন লাইনের পেছনে আবার ফেরত যাবে। এর বিনিময়ে ভারতকে আকসাই চিনের থেকে নিজের হাত গুটিয়ে রাখতে হবে।
নেহরু শুনে কেঁদে ফেললেন।
ডিসকাউন্ট বলছি কেন? ওয়েল আকসাই চিন ভারতের দখলে কখনই ছিল না। চিনের কাছেই ছিল ওটা। কিন্তু যুদ্ধে জিতে চিন অরুণাচল প্রদেশও নিজের হাতে নিয়ে নেয়। চাইলে তারা দুটোই রেখে দিতে পারত। কিন্তু চিন বলল ৫০-৫০ করো, আমরা অরুণাচল প্রদেশ ফেরত দিচ্ছি। তো এই হচ্ছে ডিসকাউন্ট।
নেহরুর পক্ষে মেনে নেওয়া জাস্ট সম্ভব হল না। তিনি বললেন দেখো আকসাই চিনের কিছুটা টুকরো আমরা যুদ্ধের আগে দখল করেছিলাম (ফরোয়ার্ড পলিসি), তা অরুণাচল প্রদেশের পাশাপাশি ঐটাও যদি ফেরত দাও তবে আমরা মেনে নিতে পারি। পুরো আকসাই চিন আর চাইবো না। তবে ঐটুকু চাই। চিন খচে গিয়ে বলল নির্লজ্জ বেহায়া মাইরি। তোমার এতটুকুও ক্ষমতা নেই যে যুদ্ধে হারার পর নিজের দেশের লোকের সামনে দাঁড়ানোর। শোনো, আমরা অরুণাচল প্রদেশ ছেড়ে দিচ্ছি। তোমরা আকসাই চিনের দিকে হাত বাড়াবে না। আর কোন পেঁয়াজি নয়। নেহরু ঘাড় গোঁজ করে রইলেন।
তো এই হচ্ছে 'প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার' উৎপত্তি। চিন পুরো আকসাই চিনের নিজের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে মনে করে - '৬২র যুদ্ধের পরের অবস্থা। ভারত মনে করে আকসাই চিনের একফালি অংশ তার নিয়ন্ত্রণে - যুদ্ধের আগের ঠিক অবস্থা। ঐ একফালি জমির উপর এই জোড়া নিয়ন্ত্রণে মরে পঞ্চা। যেমন ২০ জন গেল কিছুদিন আগে। অরুণাচল প্রদেশে এই উৎপাতটুকু অন্তত নেই।
দেব, আপনাকেই খুঁজছি। হাজার কিলোমিটার হাঁটা হয়ে গেল। প্রশ্ন বিচিত্রা নিয়ে বসে আছি, তাড়াতাড়ি লিখুন।
একটু আমেরিকা চীন ব্যাপারটা নিয়েও লিখবেন। তার পরে তাইওয়ান, ইরান ডিল, ইউরোপের অবস্থান, আসিয়ান, ফিলিপিন্স সব অপেক্ষমান। :)
'স্ট্র্যাটেজিক' - যে কোনো ভারতীয় পন্ডিতের ফেভারিট শব্দ। সিয়াচেন - একটা হিমবাহ - সে ও স্ট্র্যাটেজিক। ইরানের ছাবাহার বন্দর থেকে মধ্যএশিয়ায় পৌঁছোনোর আকাশকুসুম পরিকল্পনা, সে ও মারাত্মক স্ট্র্যাটেজিক। সেই কোন কারাকোরাম গিরিপথের সাইডে দেপসাং মরুভূমি, সেখানে কাল দুপুরে চিনাসেনারা হেগে দিয়ে গেছে - স্ট্র্যাটেজিক। এক হাজার বছর ধরে লড়াই-যুদ্ধের অভ্যাস না থাকলে যা হয় আর কি। সর্বত্রই আপনি স্ট্র্যাটেজির ভুত দেখবেন। সিয়াচেন পৃথিবীর সবথেকে অর্থহীন সেনানিবেশ। কোটি কোটি টাকা প্রতি বছর বরফে। কিছু বলতে যান - "জানিস ঐ চুলোর দুয়ার কতটা স্ট্র্যাটেজিক!" স্যার, ওটা একটা হিমবাহ ফর ক্রাইষ্টস সেক। গাড়ি তো দূর, হেঁটেই পেরোনো সম্ভব নয়। "না! আমরা ওটাকে দখলে না রাখতে পারলে পাকিস্তান নিয়ে নেবে" হ্যাঁ সেইটা বল। 'স্কোয়ার কিলোমিটার' - ভারতীয় পন্ডিতদের দ্বিতীয় ফেভারিট শব্দ।
এখন ব্যাপার হচ্ছে সবাই জানে চিনের সাথে সরাসরি লাগলে ভারত মাসখানেকের বেশি যুদ্ধে টিকবে না। দেশের ভেতরের রাজনীতিতে এটার ফল কি হতে পারে? ঠিক যেটা ভাবছেন, সেটাই। কংগ্রেস চেষ্টা করছে লেটস এগ অন মোদি টু গেট ইন এ রিয়েল ফাইট উইথ চায়না। যুদ্ধে হার লুকোনো কোনমতেই যাবে না। নেহেরু ২.০ করে দিতে পারলে কেল্লা ফতে। মোদি এতটা বোকা নন। সুতরাং যদি আশায় থাকেন যে একটা এসপার-ওসপার হয়ে যাবে - আনলাইকলি। কিন্তু কংগ্রেস চেষ্টা চালাচ্ছে। এবং যথারীতি, দা ওয়ার্ডস 'স্কোয়ার কিলোমিটার' আর আন্ডার লাইমলাইট।
"চিন আমাগো ১০০০ স্কোয়ার কিলোমিটার খাইয়া লইসে!" (আমার আন্দাজ - ১০০০ নয়, ৫০০-৬০০ স্কোয়ার কিলোমিটার - তিনটে কলকাতা শহর)
"তোর স্বর্গীয় দাদুটারে গিয়া ক। তহন তো ৩৮০০০ স্কোয়ার কিলোমিটার জমি খুইয়া বইস্যাসিলো।"
ঠিকই আছে। অওকাত যা, অওকাত তা। তবে মোদি > নেহেরু, অন্তত এখনো পর্যন্ত। চিনের সাথে সরাসরি লাগার ভুল উনি করছেন না। যা বুঝছি পরিস্থিতি এর মধ্যেই থিতিয়ে এসেছে। এইবারের শীতে লাদাখে সেনা থাকবে একটু বেশী সংখ্যায়। লোককে একটু না দেখালে চলবে না। শীতের পরে আস্তে আস্তে সরিয়ে নেবে। দি এন্ড।
--------------------------------------------------
একটা ভাজা বাদুর। কে ভেবেছিল সারা পৃথিবীর অর্থনীতির কোমর ভেঙ্গে দিতে জাস্ট এইটুকুই যথেষ্ঠ হবে? ফেব্রুয়ারি-মার্চে সবাই মুচকি হাসছিল। "হিহি, আর দেখতে হচ্ছে না। চিন এবারে গেলো। চেরনোবিল মোমেন্ট। বোকা কমিগুলোকে দেখো, জোর করে লোকগুলোকে ঘরে বন্দি করার চেষ্টা করছে। আরে ওভাবে আটকানো যায়! আমাদের হচ্ছে গণতন্ত্র, হুঁ হুঁ বাবা। মহামারি আটকাতে গণতন্ত্রের জুড়ি নেই। দেখ আমরা কিভাবে এটাকে আটকে দেবো। দেখে শেখ।"
"ডেমোক্রেসিস আর বেটার অ্যাট ফাইটিং আউটব্রেকস" - দি আটলান্টিক - ২৪শে ফেব্রুয়ারী।
উপস্।
স্পিকিং অফ সিয়াচেন - https://twitter.com/HartoshSinghBal/status/1308379044111618048
বলতে না বলতেই - "না! আমরা ওটাকে দখলে না রাখতে পারলে পাকিস্তান নিয়ে নেবে!"
বাকি চার প্রতিবেশীর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক চীনের সঙ্গে ক্যাঁচালের পরিপ্রেক্ষিতে কীভাবে প্রভাবিত হতে পারে, তাই নিয়ে আলোকপাত করুন না। বাংলাদেশে চীন মোটামুটি জনগণকে দেখিয়ে চলেছে ভারত বৃহৎ শক্তি হিসেবে কী কী সাহায্য করতে পারত। বার্মাকে ভারত আর চীন দুই দেশই তাঁবে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার হাতেও এখন প্রচুর অপশন। নেপালের ব্যাপারটা মোটের ওপর কি মিটে গেল?
বড় দেশের সাথে পুঁচকে প্রতিবেশীর ভাল সম্পর্কের সোজা উপায় হচ্ছে - দাদা, পয়সা ছাড়ুন। বিনিয়োগ এবং বাজার। সেই সঙ্গে সঙ্গে একটা বেশ মসৃণ ভিসা রেজিম। যাতে আপনার ছোট প্রতিবেশীর শিক্ষিত ছেলেমেয়েগুলো এদেশে করেকম্মে সেটল হতে পারে। অন্য কমজোরী দেশকে কবজায় রাখতে চান? শিক্ষিত লেয়ারটাকে টোপ দিন। (মনে আছে SS এই পয়েন্টটা তুলেছিলেন আগে। ঠিকই কথা।)
তবে শুধু পয়সায় হবে না। একটু আধটু ধমক চমকও দিতে হবে। মারপিটের কথা বলছি না। কান টানলে মাথা আসে। পয়সাটায় মারুন। পারলে ভিসার কোটাতেও। দেখবেন কেমন সুড়সুড় করে পথে এসে গেছে।
মুলো বনাম ডান্ডার এই যুগলবন্দি আপনাকে চালিয়ে যেতে হবে। শাসন এবং আদর - দু'য়ে মিলেই বাচ্চা মানুষ হয়। কিন্তু গার্জেন যদি নিজেই দুর্বল হয়? তার সবচেয়ে বাজে উদাহরণ হচ্ছে সিকিম। গিলেই ফেলতে হল। কিন্তু বাকিগুলোকে গিলে হজম করা কঠিন বা একেবারে অসম্ভব। হাতে অপশন বেশী নেই। আবার প্রতিবেশীগুলোও এক একটা নমুনা। শ্রীলঙ্কা এবং নেপাল, দু'টোই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে বসে আছে। সিংহলি বনাম তামিল এবং পাহাড়ি বনাম মদেশি। আর হবি তো হ, দু'টো সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠিই ভারতেও আছে। ম্যাচ আপনি অলরেডিই আদ্দেক হেরে বসে আছেন।
নেপালের সাথে ব্যাপারটা খুব বিচ্ছিরি হচ্ছে। এই দেশটার সাথে ভারতের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কোন কারণ ছিল না। জঘন্য ম্যানেজমেন্ট। আর ভারতের টেলিমিডিয়ার লোকজনের ধাতানি দরকার। হোয়্যাটস্যাপ গ্রুপে যে ভাষা চলে সে ভাষা আরেকটা দেশের সরকারের প্রতি প্রয়োগ হলে চলে না। রক্ষে একটাই। দেশটার ভারতকে ছাড়া চলবে না। হিমালয় টপকিয়ে চিনের ভেতর তিন হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে মাল আনা নেওয়া হয় না। সে যতই চিন পরিকাঠামো বানাক। একটু বুঝে সুঝে খেললে সম্পর্কটা আবার ঠিক করা কঠিন নয়। কিন্তু সাউথ ব্লকের ওপর ভরসা নেই।
শ্রীলঙ্কায় চিন একটা সমুদ্রবন্দর আর একটা বিমানবন্দর বানিয়েছে। দু'টোই মাছি তাড়াচ্ছে। রানওয়েতে ঘুঘু চরছে। পাঁচিলের বাইরে বুনো হাতি। কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগ দেখে মুগ্ধ। নেচার প্রিসার্ভ হো তো অ্যাইসা। কথা চলছে ভবিষ্যতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণার্থে বিমানবন্দর মডেলটার প্রয়োগ নিয়ে।
চিন অবশ্য দাঁওটা মেরেই দিল। সমুদ্রবন্দরটা লাভ না করায় শ্রীলঙ্কা ওটাকে ৯৯ বছরের লিজে চিনের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হল। ভারত মাঝখানে ঢুকেছিল বিমানবন্দরটা কিনবে বলে। ডিল হয়ে ওঠেনি। তবে নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা দেশ তিনটে নেহাতই ছোট এবং ভারতের একেবারে গায়ে। ইমপ্যাক্ট খুব বেশী হবে না, আশা করি।
বার্মা চালু জিনিস। নিজের ধান্দায় আছে। চিনকে যে বার্মা খুব একটা বিশ্বাস করে এমন নয়, কিন্তু আর অপশন কি? ভারতের থেকে বড় মাপের তো কিছু জুটছে না।
বাংলাদেশের সাথে মোটের ওপর সম্পর্কটা ঠিকই চলছে। মানে হিন্দু-মুসলিম অ্যাঙ্গেলটা মাথায় রেখে যতটুকু ভাল রাখা যায় আর কি। ছিটমহল বিনিময়, ভারতের বাজার এবং টুকটাক অনুদান মিলিয়ে চলে যাচ্ছিল। কিন্তু এই এনআরসির হুমকিতে জিনিসটা এবার খারাপের দিকে যাচ্ছে। তবে আমি মনে করিনা নিকট ভবিষ্যতে চিন বাংলাদেশে খুব একটা প্রভাব খাটাতে পারবে। ভাষা এবং আচারবিচারের বিরাট পার্থক্য। চিনের সফট পাওয়ার বাংলাদেশে কিছু নেই। রইল বাকি বাণিজ্য। তো চিন বেচতে আগ্রহী, কিনতে নয়। আর কিনবেটাই বা কি? বাংলাদেশ বেচার মতন একটা জিনিসই বানায় - জামা। সে চিন নিজেই বেচে। দেশটায় বিনিয়োগ পরিস্থিতিও খুব একটা উজ্জ্বল নয়। খালি জমি কম। মারাত্মক খেয়োখেয়ি। সব ভাগা নেওয়ার জন্য বসে আছে। বিদ্যুৎ কম। রাস্তা কম। পরিকাঠামো কম। আর দেশটার আমজনতা এখনও পুঁজির অপকারিতা নিয়ে রচনা লেখে। সে লেখ, কিন্তু একটা সরকারী বিদ্যুৎকেন্দ্রেও যদি লোকের প্রবল আপত্তি থাকে, তালে মুশকিল। (জিনিসগুলো চেনা চেনা ঠেকছে, জানি।)
মোটের উপর আমার যা চোখে পড়ছে, ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলো ভারতের মতই সমস্যায় ডুবে আছে। চিনের পক্ষে ম্যাজিক করা সম্ভব নয়। কিন্তু কম্পিটিশনটা রিলেটিভ। আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়ায় এই স্তরে নেমে খেলছে না। চিন বনাম ভারত। অন্য সব কিছু ছেড়ে দিলাম, এভাবে পয়সার বস্তা উপুড় করে দিলে এই দেশগুলো আস্তে আস্তে চিনের দিকে হেলবেই। বাংলাদেশ বা বার্মায় যে প্রোজেক্টটা এলঅ্যান্ডটি/রিলায়েন্স/টাটা করার সুযোগ পেতে পারত, সবই চিন খাচ্ছে এবং খাবে। আন্তর্জাতিক সাপ্লাই চেনের প্রতিটে ধাপেই চিন হাজির আর ভারত প্রতিযোগিতায় টিকছে না। ওভারশ্যাডো হয়ে আছে পুরো।
দেবদা, চিন ও আমেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ,হুয়াওয়ে ব্যান, ৫জি, ডিজিটাল কারেন্সি, কার্বন নিউট্রাল ২০৬০ নিয়ে লিখুন।
সাথে ইরানের সাথে চুক্তি, হংকং ও জিনজিয়াং এর সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, তাইওয়ানের সাথে সম্পর্ক, RCEP , কোয়াড নিয়েও লিখুন|
আবার ইউরোপের ফোকাস চীন থেকে খিলাফতের দিকে ঘুরে যাচ্ছে। আমেরিকার ভোটও হয়ে গেল। অস্ট্রেলিয়া চুপ ৪৮% চৈনিক রপ্তানী নিয়ে। ভারতও চীনা এফডিআই নিয়ে চাপে। চীন তো বাঁদিকে শেয়াল দেখে যাত্রা শুরু করেছিল দেখছি।
দেব আর একবার আসুন। অনেক কিছু ঘটছে তো। আমেরিকান বেল্ট রোড কেমন বাজারে কাটবে? চীনের আর্কটিক পলিসি ফিজিবল? ভারতের মিডিয়া খামোখা লাসা নিংচি বুলেট ট্রেন নিয়ে এমন লাফাচ্ছে, মনে হচ্ছে নিংচি যেন অরুণাচলের কোনো অখ্যাত গ্রাম।
এই লাসা নিয়েংচি নিয়ে আম্মো কৌতুহলী। পরিবেশের কতখানি সাড়ে চোদ্দটা বাজানো হল মূলিত সেটায় আগ্রহী।
ও চীনের হাতির পাল নিয়েও আগ্রহী
হাতির পাল আফটার অল চীনা হাতি তো, অভিজ্ঞতা থেকে জানে যে লং মার্চ না করলে পাত্তা মিলবে না। তাই.. তবে দক্ষিণে ঘুরে গেছে এই সপ্তাহে।
লাসা নিংচি রেলওয়ে হয়েছে লাসা-শিনিং রেলপথের মডেলে। ওটার ওপর সিজিটিএন ইত্যাদির ভালো ভালো ডকু রয়েছে। দেখতে তোফা লাগে। গুগল আর্থে খুব নিখুঁত ভাবে পুরো রাস্তা ফলো করা যায়। সিচুয়ান তিব্বত এক্সপ্রেসওয়ে আগে হয়েছে, রেলপথ পরে হচ্ছে। চিংঘাই তিব্বত পথে ঠিক উল্টো। গুগল আর্থে কতটা বানানো হয়েছে, কোথায় টানেল আছে, কোথায় ব্রিজের পিলার বসেছে শুধু - সবই দৃশ্যমান।
একটা প্রশ্ন হলো চীন কতদিন এভাবে পয়সার বস্তা উপুড় করে রাখতে পারবে বলে আপনার ধারণা। পাশাপাশি আফ্রিকা তেও বিপুল বিনিয়োগ করছে চীন। চীন আর আমেরিকার আগে যা সম্পর্ক ছিল আফ্রিকা ও চীনের তাই সম্পর্ক হবে। আফ্রিকা হবে mfg hub। আর চীন সেলার।
চীনের সবথেকে বড় দুর্বলতা হলো চীনের বিশ্বাস যোগ্যতা তলানিতে।
এই বিশ্বাসযোগ্যতা ব্যাপারটা একটু গোলমেলে। সাধারণ মানুষের কাছে, স্টেট ও মিডিয়ার কাছে, ইনভেস্টরদের কাছে এগুলো ভিন্ন ভিন্ন হয়। সর্বজনীন বিশ্বাসযোগ্যতা বোধ হয় পৃথিবীর কোনো দেশ কখনও দেখায় নি। তাও সবাই দিব্যি করেকম্মে খাচ্ছে।
আফ্রিকা তিরিশ বছর আগের চীন হবে বলে মনে হয় না। সেসময়ের চীনের তুলনায় আফ্রিকা অনেক বেশি হেটেরোজেনাস এবং আনস্টেবল। কয়েকটা দেশে কিছুটা হলেও হতে পারে। তানজানিয়া, জাম্বিয়া, অ্যাঙ্গোলা বা কেনিয়া। তাও যেকোনো জায়গায় একটা অভ্যন্তরীণ ঝামেলা লাগিয়ে দিতে পারলে সব উন্নতি এক লহমায় বিশ হাত জলে পড়বে।
তবে চীন পশ্চিমাংশের ইনফ্রা উন্নতি করতে পারলে ওই অংশই চীনের ইকোনোমিকে কিছুদিন টেনে দেবে। সিনজিয়াং, চিংঘাই বা তিব্বতের মিনারেল, এনার্জি ও ট্যুরিজম পোটেন্সিয়াল খুবই বেশি। সদ্য তাকলামাকানের তলায় ভালো পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ মিলেছে। বিশেষ করে ট্যুরিজম গত এক বছরে করোনার ধাক্কায় এসব দিকে বেড়েছে। সিচুয়ান তিব্বত হাই স্পিড রেলের সম্ভাব্য বাজেট থ্রী গর্জেস ড্যামের থেকেও বেশি। কিছু প্রাপ্তিযোগের প্রত্যাশা নিশ্চয় আছে। ওদের প্রচার মাধ্যমে এইসব জায়গার বিজ্ঞাপন অনেক বেশি চলছে দেখি।