
সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোনবিহার নির্বাচনের একদম শেষ পর্বে এসে লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, বস্তুত তৃণমূলের সঙ্গে বাম জোটের খোলাখুলি প্রস্তাব দিয়ে ফেললেন।
বামরা বিহারে অসাধারণ ফলাফল করে ফেলেছে এমন নয়, তবে নিঃসন্দেহে কংগ্রেসের চেয়ে ভালো। সবচেয়ে এগিয়ে আছে সিপিআইএমএল লিবারেশন। এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের সাইটের খবর অনুযায়ী তারা ৯ টি আসনে জিতেছে এবং আরও ৩ টিতে এগিয়ে আছে। এই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে দীপঙ্কর স্পষ্ট করেই বলে দিলেন, যে, সর্বভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষিতে এবার পশ্চিমবঙ্গের বামদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তাদের অগ্রাধিকার কী? তৃণমূলের বিপক্ষে গিয়ে বিজেপির সুবিধে করা? নাকি বিজেপির বিরুদ্ধে গিয়ে তৃণমূলের হাত ধরা? শত্রুর বিচারে কংগ্রেস এবং তৃণমূল, দীপঙ্করের বিচারে বিজেপির কাছাকাছিও আসেনা, এই হল দীপঙ্করের মোদ্দা বক্তব্য। এবং সে কারণেই এদের সঙ্গে বামদের জোট করা উচিত।
পশ্চিমবঙ্গে বিগত লোকসভা নির্বাচনে বামদের বিপর্যয় হয়েছে। বাম ঘরানার ভোটের একটি বৃহদংশ বিজেপিতে চলে গেছে, ভোটের হিসেবে। সে নিয়ে প্রচুর সমালোচনাও হয়েছে। কিন্তু বাম নেতৃত্ব এবং কর্মীবৃন্দ সজোরে এর জবাবে বলে এসেছেন, যে, ওভাবে বাম-ভোট বলে কিছু হয়না। ভোট কারো সম্পত্তি নয়। উল্টোদিকে, যাঁরা সমালোচনা করেছেন, তাঁদের বক্তব্য হল, ভোটের রাজনীতিতে "বিশ্বস্ত ভোট" বা "ভোট ব্যাঙ্ক" বলে একটি বস্তু অবশ্যই হয়। বামদের সেই বিশ্বস্ত ভোটই গেছে বিজেপির দিকে। তার কারণ, বাম পার্টির নেতারা প্রচারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যতটা সরব, তার সামান্য ভগ্নাংশও বিজেপির বিরুদ্ধে নন। তাঁদের মূল আক্রমণ সর্বদা তৃণমূলের বিরুদ্ধেই। এই লাইন মূলত আত্মঘাতী। এই লাইন কর্মী এবং সমর্থকদের "শত্রুর শত্রু আমার মিত্র" লাইনে ভাবতে উৎসাহ জুগিয়েছে। একদা সমর্থকরা বিজেপিকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে অধিক কার্যকর ভেবে ভোট দিয়েছেন। এবং তার ফলেই এই বিপর্যয়।
এর জবাবে সিপিআইএম কর্মী সমর্থকরা, অন্তত আধা প্রকাশ্যে যেটা বলছেন, সেটাও এখানে প্রণিধানযোগ্য। পশ্চিমবঙ্গের ভোটের হিসেব বেশ জটিল। সিপিআইএম এর যে সাধারণ ভিত্তি, তার মূল সুরই হল তৃণমূল বিরোধিতা। তৃণমূলের প্রতি নরম এরকম কোনো সিপিআইএম সমর্থক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ঠিক এই পরিস্থিতিতে যদি সমর্থকদের চিন্তার উল্টোদিকে গিয়ে পার্টির নেতৃত্ব তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলান, তাহলে গণভিত্তি যেটুকু আছে, সেটুকুও পার্টিকে ছেড়ে চলে যাবে। গণভিত্তি খুঁজে নেবে তৃণমূলের বিরোধী শক্তিকে, ভোট দেবে তাকেই। অর্থাৎ শক্তিশালী হবে বিজেপিই। বিজেপির পাল থেকে হাওয়া কাড়তেই তাই বামদের তৃণমূল বিরোধিতা চালিয়ে যেতে হবে।
সমস্যা হল, এতদিন এই যুক্তিতে চলেও কিন্তু সিপিআইএম তার গণভিত্তি অটুট তো রাখতে পারেইনি। বরং তাতে বিপুল ধ্বস নেমেছে। তবুও এই লাইনটিই অনুসরণ করে যাওয়া হচ্ছে, এবং এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে তার খুব বেশি বিরোধিতা আসেনি। সিপিআইম এর যেটুকু গণভিত্তি এখনও আছে, তারা বিজেপির সর্বাত্মক বিরোধিতা করলে বাম ছেড়ে ডান দিকে চলে যাঅবে, এ আশঙ্কার আদৌ কি কোনো ভিত্তি আছে? নাকি আশু বিপদকে মাথায় রেখে সর্বাত্মক বিজেপি বিরোধিতা করলেই বামদের যেটুকু ভিত্তি আছে তা আরও শক্তপোক্ত হবে? এ নিয়ে অবশ্যই বিতর্ক হওয়া দরকার। বিহার নির্বাচনের পর বিষয়টিকে প্রকাশ্যে আনলেন দীপঙ্কর। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই জানা যাবে বিহারের অন্তিম ফলাফল। তারপর সমস্ত তাসই এসে যাবে টেবিলে। সেসব টেবিলের নিচে লুকিয়ে না ফেলে সমস্ত সম্ভাবনা, সমস্ত বিচার এবং সামগ্রিক বিতর্ক অবশ্যই প্রয়োজন।
সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় | ০১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৮:৫৫100822বাংলার জাতিয়তাবাদী শক্তিগুলি এখনও প্রান্তিক, কিন্তু বর্ধনশীল। সিপিএম এখনও তুলনায় বড়। যাদবপুরে তারা একটা বড় বইয়ের স্টল দেয়, গুরুর বইও রাখে। প্রচুর বিক্রি, বইয়ের দোকান হিসেবে সফল, কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে ক্ষয়িষ্ণু। তৃণমূলও কদ্দিন ভাইপোর হাতে টিকে থাকবে বলা মুশকিল। তাই এই দুর্দিনে বোধি, পিটি, অপর্ণা সেন, সুবোধ সরকার, সকলকে বাঙালি জাতিয়তাবাদের ছত্রছায়ায় এসে বিজেপি, তৃণমূল এবং কংগ্রেস বিরোধিতা করার জন্য সাদর আমন্ত্রণ। বঙ্গের লিবারেশনরাও আসুন। এদিকে আপনাদের পার্টি কাজের কাজ যেটা করেছে, সেটা হল আসামের এমপি সিটটি খোওয়ানো। সংসদের হিসেবে আপনারাও সব হারিয়েছেন, সিপিএমও। লিবারেশন করতে হলে বিহারে যান, এদিকে থাকলে আমাদের দলে ভিড়ে যান।
এইসব হাবিজাবি সর্বভারতীয় শক্তির সমস্যা হল, এরা প্রাণে ধরে কেন্দ্রীয় সরকার বা এন-আর-সি কিছুরই বিরোধিতা করতে পারেনা। আমাদের সঙ্গে এলে সেসবের সমস্যা নেই। পাঞ্জাবি পরে মালপোয়া খাওয়াকেও আমরা রাজনৈতিক কাজ বলব, আবার এনারসির বিরুদ্ধে মিছিলকেও। শান্তিনিকেতনে দোল খেলাও রাজনীতি, টিভি সিরিয়ালের বিরোধিতা করাও। তাই ওইসব হাবিজাবি পার্টি ছাড়ুন, ওরা আর সিপিএম কাল বিশ্রী সিমেন্ট, আজ আইপিএফ কাল এটিকে। ওসব গোল্লায় যাক, আপনারা বাংলা পক্ষ, রেজিমেন্ট, সংস্কৃতি মঞ্চ যেটা খুশি বেছে নিয়ে যোগ দিন। বাংলাদেশের ছাগু, পশ্চিমবঙ্গের চাড্ডি, আসামের অগপ-বিজেপি, মেঘালয়ের খাসি ছাত্র সংগঠন, আসুন সকলের মুখে আমরা নুড়ো জ্বেলে দিই।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 2405:201:8008:c01e:20b9:89c8:f348:***:*** | ০১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৯:২৫100824কি শয়তান ছেলে বাবা, সিরিয়াস কথা বলতে বলতে এমন একটা লাইন বলবে, হাসি পেয়ে কেউ আর কিসু মনে না রেখে টোটাল খিল্লি করবে :-)))))
তো সৈকত একটা কথ বল, তুই তাইলে দীপংকর দা কে সমর্থন করে প্রবন্ধটা লিখলি কেনো। তাইলে তো এত কথা হয় না। লিবারেশন তো বলে নি, তারা বাংলায় বাড়তে চায় না।
তোর বক্তব্যে দুটো জিনিস ক্লিয়ার, তোর বাংআলি ন্যাশনালিজম এর এজেন্ডার সবচেয়ে কাছে আছে তৃণমূল নিজেই, কারণ তাদের প্র্যাকটিকালি তাদের অ্যাম্বিশন রাজ্যের সীমাবদ্ধ। এবং সেটাই তাদের স্ট্রেংথ তোর যুক্তি অনুযায়ী। অন্যদিকে তাদের এই এজেন্ডা তোদের এজেন্ডার থেকেও কম স্কোপ, তোর একটা আসামের বাংআলি মুসলমান কে, মেঘালয়ের বাংআলি ভদ্রলোক দের, বাংলাদেশের বাংআলি হিন্দু কে, বাঁচানোর একটা দায় আছে, এবং সে কারণেই এজেন্ডা টি সেল্ফ কনফ্লিক্টিং। স্কোপ ছোটো করতে বলে তো পুরো ছোটো তো করতে পারছিশ না। সর্বভারতীয় খারাপ বোঝা গেল, কিন্তু সেই যুক্তি তে সর্ব পূর্ব ভারতীয় ও বাংলাদেশীয় এজেন্ডা তো শুধু পশ্চিমবংগে সীমাবদ্ধ রাজনৈতিক দৃষ্টিভংগী র থেকে খারাপ হওয়া উচিত।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত
ramit | 202.8.***.*** | ০১ ডিসেম্বর ২০২০ ২১:১০100833এটা দেখলাম কাল বাট কি ছিলো এটা, জাস্ট কি ছিলো ? পরে আবাপ ও দেখাচ্ছিল
S | 2a0b:f4c2:2::***:*** | ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৭:০৭100845কিযে বললো কিছুই তো বুঝলাম না।
Amit | 121.2.***.*** | ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৮:৫৬100849এই ন্যান যারা বামেদের কে আগ বাড়িয়ে চটিপিসির হাত ধরা উচিত বলে নাপাচ্ছিলেন তাদের জন্যে:
PT | 203.***.*** | ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ১০:০৪100853ওঃ, পারিনা, কাকা!! সক্কাল, সক্কাল...........what PT thinks today, Kaka thinks tomorrow!!
"রাজ্যে বাম-কংগ্রেস জোট তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপি-বিরোধী জোট গঠনের প্রস্তাব নাকচ করে ঘোষণা করেছে যে, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়া যায় না। বরং বিজেপি-বিরোধী সংগ্রামের পূর্বশর্ত হল তৃণমূল কংগ্রেসের মোকাবিলা করা।
আমি দৃঢ় ভাবে এই অবস্থানকে সমর্থন করি। "
https://www.anandabazar.com/editorial/path-of-opposing-fascism-1.1237192
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 49.37.***.*** | ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:৪৩100863
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 49.37.***.*** | ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:৪৩100864
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 49.37.***.*** | ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:৪৫100865দুটো মীম, তবে ঘরানা দুটি আলাদা বোঝার জন্য যথেষ্ট।
PT | 203.***.*** | ০৫ ডিসেম্বর ২০২০ ১১:৫০100953দোদুল্যমান TRS আর ভোট-্কাটা MIM-এর পিঠে চড়ে বিজেপির উত্থানঃ BJP leaps from 4 to 48 wards in Hyderabad polls.
এইটা বেস্ট ডায়লগ ছিল, এভার ...

বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 2405:201:8008:c01e:dd5:c18f:d62b:***:*** | ০৮ ডিসেম্বর ২০২০ ১০:৩৫101010কিন্তু এই মন্তব্য টা ফেয়ার। আমি সত্যি ই জানি না, আমাদের রাজ্যের ইলেকশনে কংগ্রেস কেন টি এম সি কে ছাড়লো। ২০০৮ থেকে টি এম সির সংগেই ছিল কংগ্রেস। রাহুল সোনিয়া আর রাজ্যসভা অ্যাম্বিশন ওয়ালা দের পক্ষে মমতার সঙ্গ ই বেস্ট।
সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় | ২৬ জুলাই ২০২৩ ০৮:৩৫521766