আজকে চোখে পড়ল, খবরের সাইটে, মিলান কুন্দেরা মারা গেছেন। গতকালের, ১১ই জুলাই তারিখ দেখছি।
১৯৯০ এর শেষের দিক থেকে মনে হয় বইগুলো পড়া শুরু করি, উপন্যাস সবকটিই ও উপন্যাস বা উপন্যসের আর্ট নিয়ে লেখা প্রবন্ধের বইগুলো।
নিজস্বতা বড় লেখকের গুণ যেহেতু, কুন্দেরা বড় লেখক।
অন্তত তিনটে উপন্যাসে (দ্য জোক, দ্য বুক অফ লাফটার অ্যাণ্ড ফরগেটিং, দ্য আনবিয়ারেবল লাইটনেস অফ বিয়ইং )এই নিজস্বতা ছড়িয়ে আছে।
নিজস্বতা শুধু এইজন্য নয় যে মানব অস্তিত্বের রহস্য আর চোরাফাঁদের অনুসন্ধান করেছেন অথবা ব্যক্তি জীবন আর ক্ষমতার মধ্যে সম্পর্কের কথা লিখেছেন, নিজস্বতা এই জন্যই যে এইসবই করে গেছেন লেখার প্রকরণ দিয়ে, চরিত্র -গল্প -ঘটনার পাশে লেখকের বক্তব্য বা ইতিহাস - দর্শনের আলোচনা করেছেন ।
গল্প বলেছেন কিন্তু ক্রমাগত ডাইগ্রেশন করেছেন, ভ্যারিয়েশন করেছেন, মন্তব্য করেছেন, লেখায় অনেক কিছু এনেছেন উদ্দেশ্য রেখেছেন লেখাগুলো যেন ভার-আক্রান্ত না হয়ে যায় ।
উপন্যাসের ক্ষমতা বিস্তৃত করেছেন।
রস সৃষ্টি করেছেন।
আর উপন্যাসের প্র্যাকটিশনার হিসেবে যখন উপন্যাস নিয়ে আলোচনা করেছেন, তখনও পাঠকের সাথে লেখার খেলা খেলেছেন। সুতো ছাড়া, গোটানো, মন্তব্য -প্রতি মন্তব্য ইত্যাদি।
উপন্যাস পড়ার নতুন দৃষ্টি দিতে পেরেছেন, ঔপন্যাসিক হিসেবেই।
উপন্যাসকেই হয়ত সবথেকে বেশী মূল্য দিয়েছেন, বিবিধ আর্টের মধ্যে এবং উপন্যাস যে ইউরোপে তৈরী হওয়া আর্টফর্মই সেই মত দিয়েছেন।
এবং, যারা পড়েছেন কুন্দেরার লেখাপত্র, সন্দেহাতীতভাবে তাদের মধ্যে লেখাগুলো সম্বন্ধে খুব ভালো স্মৃতি তৈরী করতে পেরেছেন।
(প্রসঙ্গতঃ, দ্য আনবিয়ারেবল লাইটনেস অফ বিয়ইং, বাংলা অনুবাদে হয় 'অস্তিত্বের অসহনীয় লঘুতা', বোধকরি এই বাংলা নামটি ইংরেজী নামটির চেয়ে ঢের বেশী আকর্ষণীয়, রহস্যময় । )
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।