এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  ভ্রমণ  ঘুমক্কড়

  • পায়ের তলায় সর্ষেঃ মিশর

    Shuchismita
    ভ্রমণ | ঘুমক্কড় | ১৫ মে ২০২২ | ১৯১৭ বার পঠিত
  • মিশরের ডায়েরিসমূহ
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Shuchismita | 41.33.***.*** | ১৫ মে ২০২২ ২২:৩০736694
  • ১৩ই মে, ২০২২
     
    মিশর চলেছি। ২০২২ সালটা একাধিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ। একশো বছর আগে হাওয়ার্ড কার্টারের নেতৃত্বে আবিষ্কার হয় তুতেনখামেনের সমাধি। সাড়ে তিন হাজার বছর - যে যীশুখ্রীষ্টের জন্ম দিয়ে আমরা সময়ের হিসেব করি - সেই যীশুর জন্মেরও দেড় হাজার বছর আগে মিশরের মানুষ মাটির তলার এই কক্ষে তাদের রাজাকে সমাধিস্থ করেছিল। মৃত্যুর পরের জীবনের পাথেয় হিসেবে সঙ্গে দিয়েছিল চোখ ধাঁধানো ঐশ্বর্য। কিশোর রাজা তুতেনখামেনের সোনার মুখোশের ছবি দেখেছিলাম আনন্দমেলার প্রচ্ছদে। কৈশোরের সেই দিনটা থেকে আমি মিশর যেতে চেয়েছি। বিদেশ ভ্রমণের মত টাকা রোজগার করতে পারা মাত্র প্রথম সুযোগেই চলে গেছিলাম ২০০৭ সালে - পনেরো বছর আগে। তারপর এবছর আবার। মিঠুনের সাথে সংসারের দশ বছর পূর্ণ হতে কয়েক মাস বাকি। যা কিছু প্রিয় তা ভাগ করে নিতে আর দেরি করা উচিৎ নয়। মে মাসের গরমেই তাই চলেছি মিশর। 

    গত পনেরো বছরে তুতেনখামেনের সমাধি বিষয়েও কিছু চাঞ্চল্যকর নতুন গবেষণা হয়ে গেছে। সংক্ষেপে সে গল্প করা নেহাৎ অপ্রাসঙ্গিক হবে না। রাজাদের মধ্যে যেমন তুতেনখামেন, মিশরের রাণীদের মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে বিখ্যাত নেফারতিতি। এদের চেয়ে অনেক প্রভাবশালী নারী-পুরুষ প্রাচীন মিশরে ছিল। কিন্তু বিশ শতকের পপ কালচারে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে এরাই। তুতানখামেনের সোনার মুখোশ, নেফারতিতির আবক্ষ মূর্তি - এই দুটি সম্ভবত সবচেয়ে পরিচিত প্রাচীন মিশরীয় শিল্পের নিদর্শন।

    নেফারতিতি নামের অর্থ beauty has arrived. বাংলায় কি বলবো? সৌন্দর্যসম্ভবা? সম্পর্কে ইনি খুব সম্ভব তুতেনখামেনের সৎ  মা এবং নিশ্চিত ভাবেই শাশুড়ি। মিশরে ভাই বোনের বিয়ে বহুল প্রচলিত ছিল। নেফারতিতির স্বামীর নাম চতুর্থ আমেনহোতেপ। আমরা সবাই জানি প্রাচীন  মিশরীয়রা হিন্দুদের মতোই মূর্তিপুজো করত এবং হিন্দুদের মতোই তাদের তেত্রিশ কোটি দেবতাও ছিল। সেই দেবতাদের রাজার নাম আমুন। প্রাচীন মিশরের রাজধানী থিবসে আমুনের বিশাল মন্দির। এখন সেই শহরের নাম লুক্সর। প্রত্নতাত্ত্বিকরা মাটি খুঁড়ে আমুনের মন্দির বের করেছেন। কার্নাক মন্দির এর নাম। আগেরবারে দেখেছিলাম এই মন্দিরের ওপরে তৈরি হয়েছে ক্যাথিড্রাল। তার ওপর মসজিদ। প্রাচীন মিশরে আমুন ছাড়াও আরও অনেক দেবতার পুজো হত এই মন্দিরে। 

    তেত্রিশ কোটি দেবতার রমরমার কারণে স্বভাবতই পুরোহিতদের খুব দাপট ছিল। চতুর্থ আমেনহোতেপ রাজা হওয়ার বছর পাঁচেকের মধ্যে হঠাত করে ঘোষণা করলেন - এত দেবদেবীর পুজো করা চলবে না। দেবতা একজনই - সূর্য দেবতা - আতেন। শুধু আতেনেরই পুজো হবে এবার থেকে। এই বলে থিবসের মন্দির বন্ধ করে দিয়ে রাজধানী গুটিয়ে নিয়ে চলে গেলেন উত্তরে আমারনায়। সেখানে আতেনের মন্দির তৈরি হল। চতুর্থ আমেনহোতেপ নিজের নাম নিলেন আখেনআতেন অর্থাৎ আতেনের প্রতিনিধি। এই ঘটনা সম্ভবত মানব সভ্যতার ইতিহাসে প্রথম একেশ্বরবাদের সূচনা। যদিও ঈশ্বর এখানে বিমূর্ত নয়। রীতিমত মূর্তিপুজোর নিয়ম মেনেই সূর্যপুজো হতে লাগলো। 

    পাটরাণী নেফারতিতি যথেষ্ট প্রভাবশালী। কার্নাকের মন্দিরে আখেনআতেনের যত ছবি আছে নেফারতিতির ছবি তার চেয়ে বেশি। রাণীর ভূমিকাতে তো বটেই, এমনকি যেসব কাজ শুধুমাত্র ফারাওয়ের করার কথা তেমন কাজেও নেফারতিতির ছবি পাওয়া গেছে। একটা উদাহরণ দিলে স্পষ্ট হবে। সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগে মিশরের প্রাচীনতম ফারাও থেকে শুরু করে অপেক্ষাকৃত আধুনিক আখেনআতেনের যুগেও খুব প্রচলিত একটা ছবি হল ফারাও একজন শত্রুর চুলের মুঠি ধরে ডাঙস জাতীয় একটা অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় বাড়ি মারতে উদ্যত। বোঝাই যাচ্ছে ফারাও কত শক্তিশালী সেটা প্রচার করতে এমন ছবি আঁকা হত। নেফারতিতির ছবিও পাওয়া গেছে এমন ভঙ্গিমায়। এমনকি অনেক ইজিপ্টোলজিস্ট মনে করেন আখেনআতেনের রাজত্বের শেষের দিকে নেফারতিতি কো-রিজেন্ট অর্থাৎ সহ-রাষ্ট্রাধিপতি ছিলেন। 

    আখেনআতেনের মৃত্যুর কিছুদিনের মধ্যেই পুরোহিত গোষ্ঠী শক্তিশালী হয়ে ওঠে। আতেনের পুজো বন্ধ হয়ে আবার তেত্রিশ কোটি দেবতার পুজো শুরু হয়। রাজধানী ফিরে আসে আমারনা থেকে থিবসে। এই টালমাটাল কয়েক বছর তিনজন ফারাওয়ের নাম পাওয়া যাচ্ছে। স্মেনখকারে, নেফারনেফারুআতেন এবং সবশেষে আমার বাল্যপ্রেম তুতেনখামেন। স্মেনখকারে এবং নেফারনেফারুআতেন দুজনেরই রাজত্বকালের মেয়াদ মোটে একবছর করে। সেটা আশ্চর্য কিছু নয়। ইতিহাসের টালমাটাল সময়ে এর চেয়েও কম মেয়াদের রাজা সাজা আমরা দেখেছি। কিন্তু রাণী? যতই আমরা বলি না কেন, প্রাচীন ভারতে বা প্রাচীন মিশরে, বা প্রাচীন হ্যানোত্যানোতে নারী-পুরুষের মর্যাদা সমান ছিল, আসলে তো তা ছিল না। প্রাচীন মিশরের তিনহাজার বছরের ইতিহাসে হাতে গোনা জনা চার পাঁচ মহিলা ফারাও পাওয়া যায়।  এদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হাতশেপসুত। একুশ বছরের রাজত্বকাল, দুটি যুদ্ধজয়। অনেক মহিলার নাম পাওয়া যায় যারা অত্যন্ত প্রভাবশালী ছিলেন। কিন্তু ফারাও হওয়া সম্ভব হয়নি। এদের প্র-...-প্র-নাতিনীদেরও একই ভবিতব্য মুঘল অন্তঃপুরে। ইজিপ্টোলজিস্টরা বলছেন, আখেনআতেনের পরে ঐ যে এক বছরের জন্য ফারাও হয়েছিল  নেফারনেফারুআতেন - সে ঐ হাতেগোনা মহিলা ফারাওদের একজন। 

    আখেনআতেন ও নেফারতিতির ছয় মেয়ে। তাদের একজনের নাম মেরিতাতেন। বহুদিন পর্যন্ত ভাবা হত আখেনআতেনের পরের ফারাও স্মেনখকারে মেরিতাতেনের স্বামী  এবং তার পরের জন নেফারনেফারুআতেন আসলে মেরিতাতেন। তুতেনখামেন সম্ভবত আখেনআতেনের অন্য স্ত্রীর সন্তান। মনে করা হত  নেফারতিতি আখেনআতেনের অনেক আগেই মারা গেছেন। ২০১২ সালে একটা ফলক পাওয়া গেল যাতে দেখা যাচ্ছে আখেনআতেনের মৃত্যুর আগের বছরেও নেফারতিতি আগের মত পরাক্রমেই বেঁচে আছেন। শুধু তাই নয়, তাকে উল্লেখ করা হচ্ছে নেফারনেফারুআতেন নেফারতিতি নামে। তবে কি নেফারতিতিই আতেন ও আমুনের দ্বন্দের টালমাটাল সময়ের একবছরের ফারাও? প্রাচীন পৃথিবীর হাতে গোনা মহিলা রাষ্ট্রনায়কদের একজন?

    শুধু এখানেই শেষ নয়। ২০১৫ সালে ব্রিটিশ আর্কিওলজিস্ট নিকোলাস রিভস মনে করছেন তুতেনখামেনের সমাধির মধ্যে একটা গুপ্ত কক্ষে আছে নেফারতিতির সমাধি এবং তুতেনখামেনের সমাধিতে পাওয়া অতুলনীয় ঐশ্বর্যের অনেকটাই আসলে নেফারতিতির জন্য বানানো। তুতেনখামেনের সমাধি বেশ ছোটো। ইনি যেহেতু খুব উল্লেখযোগ্য রাজা ছিলেন না, তাই এটা হয়ত স্বাভাবিক। রিভসের অনুমান এই সমাধি আসলে অনেকটা বড়। তুতেনখামেনের সমাধির দেওয়ালে যে অসামান্য ছবি দেখলে মনে হয় ছবির বুঝি এখনো রং শুকোয় নি, সেই দেওয়ালের পিছনে আছে গুপ্ত কক্ষ। সেখানে সমাধিস্থ নেফারতিতি। চারটি টিম ঐ দেওয়ালে জিপিআর সার্ভে করেছে। ঐক্যমত্যে পৌঁছানো যায়নি। রিভস বলছেন তুতেনখামেনের বিখ্যাত সোনার মুখোশে অন্য একটি নাম মুছে তুতেনখামেনের নাম লেখা হয়েছে। সেই অন্য নামটি একটি উপাধি যেটা নেফারতিতি ব্যবহার করতেন যখন তিনি সহ-রাষ্ট্রাধিপতি ছিলেন। 

    সাড়ে তিন হাজার বছর আগে মিশরের রাজপরিবারে কি নাটকের অভিনয় হয়েছিল তা নিশ্চিত ভাবে জানতে হয়ত আরও কিছু ফলক আবিষ্কার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যদি গুপ্ত সমাধিকক্ষ পাওয়া যায়, যদি নেফারতিতির মমি আবিষ্কার হয়, হয়ত নতুন কোনো তত্ত্ব তৈরি হবে৷ আপাতত জানা গেছে, তুতেনখামেনের আমলেই আতেন যুগের সব নিদর্শন মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। নেফারতিতি ও ফারাও নেফারনেফারুআতেন যদি সত্যিই অভিন্ন ব্যক্তি হন, তবে মৃত্যুর পর তাঁকে ফারাওয়ের সম্মানে সমাধিস্থ না করা এবং তাঁর জন্য বানানো সমাধিসামগ্রী তুতেনখামেনের জন্য ব্যবহার হওয়া খুব একটা সুদূরকল্পনা নয়। অন্য মহিলা ফারাও হাতশেপসুতের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে তাঁর মৃত্যুর পর শিলালিপি থেকে নাম মুছে দেওয়া হয়েছে। 

    এসব বিচার করে আধুনিক যুগটাকেই এখনো পর্যন্ত মন্দের ভালো লাগে। প্রাচীন ও মধ্যযুগের পাঁচহাজার বছরের ইতিহাসে যদি বা কিছু মেয়ে পড়াশোনা শিখেছে, অর্থ উপার্জন করেছে বা নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা সমাজের মূল স্রোতে মিশেছে এমনটা বলা যায় না। গত পঞ্চাশ বছরে সেই তুলনায় মেয়েদের প্রতিনিধিত্ব বেশি এবং তা সমাদৃতও হয়। আখেনআতেনের মৃত্যুর পর নেফারতিতির জীবন কী নাটকীয় মোড় নিয়েছিল তা এক্ষুনি জানা যাচ্ছে না। তবে কৈশোরে যে সোনার মুখোশ দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম এবং যার সামনে না দাঁড়ানো পর্যন্ত থামতে পারিনি, তার পিছনের মুখটা হয়ত কোনো মেয়ের ছিল ভেবে অদ্ভুৎ রোমাঞ্চ হচ্ছে৷ মেয়েদের তো খুব বেশি সুযোগ আসে না এমন রাজাগজার ভূমিকায় ইতিহাসে নাম তোলার। হয়ত আমার জীবদ্দশায় মুখোশের রহস্য উন্মোচন হবে না। কিন্তু নিশ্চিত ভাবেই পাঁচহাজার বছর পথ চলে আমরা এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছি যখন মহিলা রাষ্ট্রনায়ককে ধামাচাপা না দিয়ে, তাকে খুঁজে বার করার জন্য পৃথিবী প্রস্তুত হয়েছে। এই পরিবর্তন আমায় তৃপ্ত করে।
     
  • Ranjan Roy | ১৫ মে ২০২২ ২২:৫২736695
  • আমেন!!
  • Shuchismita | 172.58.***.*** | ১৬ মে ২০২২ ১৭:৪৮736707
  • ১৪ই মে, ২০২২
     
    এয়ারপোর্ট থেকে বাইরে বেরোতেই ফাল্গুন মাসের মত উতল হাওয়া। মে মাসের মিশরে এমন হাওয়া কে আশা করেছিল! পনেরো বছর আগে মিশর এসে প্রথম সন্ধ্যাতেই পিরামিডের লাইট এন্ড সাউণ্ড শো দেখেছিলাম। আমার প্রথম পিরামিড দর্শন রাত্রি বেলা নিয়ন আলোয়। প্রথম দেখা বলেই হয়ত অভিঘাত খুব তীব্র ছিল। চাইলাম মিঠুনকেও ঐ অভিজ্ঞতাটা দিতে। হোটেলে ঢুকে মুখে-চোখে জল দিয়েই বেরিয়ে পড়লাম লাইট এন্ড সাউণ্ড দেখতে। পনেরো বছর আগের মিশর ভ্রমণ ছিল আমার প্রথম আর্কিওলজিকাল ট্যুর। এর মধ্যে চোখ বুড়ো হয়ে গেছে। মিঠুনও একাধিক আর্কিওলজিকাল ট্যুর করে ফেলেছে। লাইট এন্ড সাউণ্ডএর লাইট ভালো লাগলেও সাথের বক্তৃতা মেলোড্রামাটিক গ্যাদগ্যাদে লাগল। মিঠুনেরও একই অবস্থা বুঝতে পারছি। বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতা কি চিরতরে হারিয়ে ফেললাম! বেশ মন খারাপ লাগছিল। হঠাত দেখি স্ফিংক্সএর মাথায় কালো ধোঁয়া কুন্ডলী পাকাচ্ছে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই চোখে মুখে বালি এসে লাগলো। একটা ছোটখাটো বালিঝড়ের মধ্যে মিনিট পাঁচেক রইলাম আমরা। সামনে আলোকিত তিন পিরামিড সমেত স্ফিংক্স।এমনটা তো দেখবো ভাবিনি কখনো। এবার সত্যিই মনে হল কি ভাগ্য আমার! পাঁচ হাজার বছর ধরে কত মানুষ পিরামিড দেখেছে! তাদের মধ্যে পৃথিবী জয় করে বেড়ানো অভিযাত্রী যেমন আছে, সাধারণ মানুষও তো আছে অগুণতি! তাদের ভীড়ে আমরাও রইলাম।
     
     
     
     
  • aranya | 2601:84:4600:5410:4944:26e4:73f0:***:*** | ১৬ মে ২০২২ ২০:৫০736727
  • দারুণ। কী যে যেতে ইচ্ছে করে, এই সব জায়গায় 
  • dc | 182.65.***.*** | ১৬ মে ২০২২ ২০:৫৮736729
  • অরণ্যদা, একদম! মানুষের আয়ু হওয়া উচিত দুশো বছর, তার মধ্যে একশো বছর শুধু নানান দেশ আর জায়গা ঘুরে বেড়ানোর জন্য বরাদ্দ রাখা উচিত। 
  • aranya | 2601:84:4600:5410:3410:1974:1aad:***:*** | ১৬ মে ২০২২ ২১:৫৬736737
  • যা বলেছ, নাথিং লাইক ট্রাভেল @ডিসি 
  • বকলমে | 2405:201:8005:9947:4d33:8c0d:1ffb:***:*** | ১৭ মে ২০২২ ১১:৫৫736767
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:b0d9:dffb:bf89:***:*** | ১৭ মে ২০২২ ১৯:৪৩736786
  • এই ত্তো, আমি ঠিক এটাই বলতে যাচ্ছিলাম যে দু একটা ছবি দেখতে পাবো না? লেখাটাও আগ্রহ নিয়ে পড়ছি। চলুক।
  • Kuntala Lahiri-Dutt | ১৮ মে ২০২২ ১৩:০৯736848
  • শুরুতেই ইতিহাস দিয়ে জমিয়ে দিয়েছেন। সত্যিই এখনই আমরা মেয়েরা বোধহয় আগের চেয়ে একটু হলেও ভালো আছি।
  • ৠৡ | 103.76.***.*** | ১৯ মে ২০২২ ০০:২৮736862
  • কদিনের ট্যুর প্ল্যান? 
    পনের বছর আগের সেই ট্রাভেলগ ওয়ার্ডে কপি করে অফিস কলিগ দাদাকে দিতে সে সেই রেফারেন্স নিয়ে মিশরের ট্রাভেল এজেন্টের সাথে আইটিনারি ঠিক করে ঘুরে এসেছিল (হুচির সাথে বোধহয় যোগাযোগও করেছিল)। আমারও একটা প্ল্যান বানানো ছিল এক্সেলে আর সেটা এখনও মাঝেমাঝে বের করে দেখি। 
    আর এই লিংক এর নিচে ডানদিকের ছবিটায় ক্লিক করে সেই যে হুব্বা হয়ে গেছিলাম সেই ঘোর এখনো কাটেনি। 
  • r2h | 134.238.***.*** | ২৫ মে ২০২২ ১৮:১১737123
  • এদের নামগুলো মজার। জড়িয়ে গিয়ে হাপুসহুপুশ, এখনতখন - এইরকম সব হয়ে যায়।

    কিন্তু তারপর কী হল?
  • Shuchismita | 24.53.***.*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:০১739125
  • বেশির ভাগ প্যাগান সংস্কৃতিতেই আকাশের দেবতা পুরুষ এবং পৃথিবী নারী। আকাশ থেকে বৃষ্টি নেমে ভূমিকে গর্ভবতী করে। কিন্তু মিশর তো মরুভূমির দেশ। এখানে বৃষ্টি হয় না। প্রতিবছর নীলনদের বন্যা দুই তীরে পলি ফেলে যায়। সেই ঊর্বর জমিতে মিশরের চাষী শস্য ফলায়। মিশরের পুরাণে তাই বৃষ্টির কোনো ভূমিকা নেই এবং ফলস্বরূপ আকাশের দেবতা একজন নারী। সেই দেবীর নাম নুত। ভূমির দেবতা পুরুষ। তার নাম গেব। নুতের দেহ নক্ষত্রখচিত। প্রতিদিন ভোরে নুতের গর্ভ হতে সূর্যদেবতা রা-এর জন্ম হয়। মাতেত নামের এক নৌকোয় চেপে ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত রা-এর আকাশ পরিক্রমা চলে। মাঝ আকাশে এসে নৌকো বদলে যায়। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যে নৌকো চলে তার নাম সেকতেত। তারপর নুত রা-কে গিলে নেয়। আবার পরদিন ভোরে রা-এর জন্ম হয়। পুরাণের এই ছবিটা ভ্যালি অফ কিংসে চতুর্থ রামেসিসের সমাধির ছাদে আঁকা আছে। পনেরো বছর আগে দেখে গভীর ভাবে মনে গেঁথে গেছিল। রং এত উজ্জ্বল, গল্পটা এত অনবদ্য যে ভ্যালি অফ কিংসের কথা ভাবলেই গত পনেরো বছরে আমার এই ছবিটা মনে পড়েছে। তখন তো ছবি তুলতে দিত না। এবারে দেখছি মোবাইল ক্যামেরার দৌলতে সিকিউরিটির হাতে দু-পাঁচ টাকা গুঁজে দিলেই ছবি তোলা যাচ্ছে। ভ্যালি অফ কিংস যেতে এখনো দু'দিন বাকি আছে। আজ গেছিলাম একটা প্যাপিরাস ফ্যাক্টরিতে। এরা প্যাপিরাসের নরম কান্ড হতে কাগজ তৈরির পদ্ধতি দেখিয়ে দেয়। ওদের জিগ্যেস করলাম নুত আর রা-এর ছবিটা আছে কিনা। ছিল ওদের কাছে। এই হল আজকের সওদা।  
     
  • Shuchismita | 24.53.***.*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:০৫739126
  • আগেরবারে আমার সাকারা যাওয়া হয় নি। গিজার থেকে তিরিশ কিলোমিটার দূরে সাকারা। এই চত্বরে অসংখ্য পিরামিড আছে। খুফুর পিরামিডের মত অত বড় নয়। তবে এই চত্বরের কিছু পিরামিড খুফুর পিরামিডের চেয়েও প্রাচীন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ফারাও জোসারের স্টেপ পিরামিড। সাতাশশো খ্রীস্টপূর্বাব্দে তৈরি। অর্থাৎ খুফুর পিরামিডের চেয়েও দুশো বছরের পুরনো। এই পিরামিডের আর্কিটেক্টের নাম ইমহোতেপ। তখনও পিরামিড তৈরীর কৌশল সম্পূর্ণ আয়ত্বে আসেনি। স্টেপ পিরামিডে ছয়টি বেদী একটার ওপর একটি দাঁড়িয়ে আছে। সবচেয়ে নিচের ধাপটা সবচেয়ে বড়। তারপর থেকে প্রতিটি ধাপ তার নিচেরটির চেয়ে ছোট। এইভাবে পিরামিডের আকার নিয়েছে। গিজার পিরামিডগুলো বর্তমান কায়রো শহরের মধ্যেই। পিরামিডের পাশ দিয়েই হাইওয়ে চলে গেছে। সেখানে সর্বক্ষণ গাড়ি চলছে। সাকারা কিন্তু খুব নিরিবিলি। যেদিকেই তাকানো হোক দূরে দূরে পিরামিড দেখা যায়। কোনো কোনোটা ভাঙা। কিছু আছে বেশ আস্ত। পরিস্কার দিন ছিল। আমরা সাকারা চত্বর থেকে গিজার পিরামিডগুলোও দেখতে পেলাম। সাকারায় সবচেয়ে অভিভূত করল দুটো জিনিস। স্টেপ পিরামিডটা পাথরের দেওয়াল দিয়ে ঘেরা ছিল। সেই দেওয়াল থেকে ভিতরের মূল চত্বরে যে পথ গেছে সেই পথের দুই ধারে পাথরের থাম আছে। তাদের গায়ে হাত দিয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম। এত মসৃণ হাত পিছলে যায়! কি করে কোনো যন্ত্র ছাড়া এই পালিশ সম্ভব হয়েছিল কে জানে! দ্বিতীয় যেটার কথা বলব সেটা হল পিরামিডের বাইরে একটা ছোট্ট পাথরের ঘর। ঘরটা একটু হেলানো। মাটির সাথে দশ ডিগ্রি মত (চোখের আন্দাজ) কোণ করে আছে। ঘরের উত্তর দিকের দেওয়ালে দুটো ফুটো। সেই ফুটোয় চোখ রাখলে দেখা যায় ঘরের মধ্যে ফারাও জোসরের একটা মূর্তি আছে। সেই মূর্তির দুই চোখ এই ফুটো দুটোর সাথে সরলরেখায়। মূর্তির যদি সত্যি করে দৃষ্টিশক্তি থাকে, তবে সে ঐ ফুটো দিয়ে ধ্রুবতারা দেখতে পাবে। ধ্রুবতারা যেহেতু কখনো অস্ত যায় না তাই প্রাচীন মিশরীয়রা তাকে অমরত্বের প্রতীক মানতো। মৃত্যুর পরে ফারাও তাঁর একলা ঘরে বসে ধ্রুবতারার দিকে চেয়ে অমর হয়ে রইবেন। রোম্যান্সের রাজা যদি কিছু থাকে তবে তা বুঝি এই। তার সাথে পাল্লা দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং।
     
  • &/ | 151.14.***.*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:২৫739127
  • আরে!!! এই তো সেই ইমহোটেপের জায়গা !!!!!লেখো লেখো লেখো খুব সুন্দর  
  • Shuchismita | 24.53.***.*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:২৬739130
  • ২০০৭ এর মিশর ভ্রমণের সময় আমি প্রথম হাতশেপসুতের নাম শুনি। সেবারে গাইড ছিল ভিভিয়ান নামের একটি মেয়ে। মিশরের এই ব্যতিক্রমী মহিলা ফারাওয়ের গল্প বলেছিল সে। রাজা-রানীদের গল্প আমরা ছোট থেকেই অনেক পড়ি। কিন্তু রাজ্য শাসন করছে এমন রানীর উপস্থিতি ইতিহাসের বইতে খুবই কম। রূপকথার গল্পে তো আরোই অমিল। আধুনিক যুগে বেশ কিছু মহিলা রাষ্ট্রাধিপতি আমরা পেয়েছি। প্রাচীন ও মধ্যযুগে মহিলা রাষ্ট্রাধিপতি একেবারেই নেই এমন নয়। কিন্তু সাধারণত তাদের দেখা পাওয়া যায় যখন পুরুষ রাজা কোনো সাবালক পুত্রসন্তান না রেখে মারা যায়।সেই সঙ্কটের মূহুর্তে মহিলা রাষ্ট্রাধিপতি হাল ধরে এবং হয় সে রাজ্যরক্ষায় ব্যর্থ হয় অথবা কিছুদিন পরে পুরুষ উত্তরাধিকারী সাবালক হয়ে রাজ্যভার গ্রহণ করে। অর্থাৎ সাধারণ ভাবে মহিলা রাষ্ট্রাধিপতির কাজ হল দুজন পুরুষ রাজার রাজত্বকালের মাঝের স্বল্পস্থায়ী শূন্যস্থান পূরণ করা। এখানেই হাতশেপসুত অনন্য৷ আজ থেকে সাড়ে তিন হাজার বছর আগে এই মহিলাকে আমরা দেখছি একুশ বছর দক্ষতার সাথে রাজত্ব করতে। এই রাজত্বকাল প্রাচীন মিশরের ইতিহাসের স্বর্ণযুগ বলা চলে। বিদেশে বাণিজ্য, অসংখ্য সৌধ নির্মাণ এবং খুব সম্ভবত দুটি যুদ্ধজয় হয়েছে এই সময়ে। প্রাচীন ও মধ্যযুগে এর সাথে তুলনীয় আর কোনো মহিলা নেতৃত্ব আমার জানা নেই।

    এবার দেখা যাক সারা পৃথিবী যে ভূমিকায় একজন পুরুষকে দেখতে অভ্যস্ত সেখানে হাতশেপসুতের ঠাঁই হল কিভাবে। হাতশেপসুতের বাবার নাম প্রথম থুথমোস। তিনি খুব বীর রাজা ছিলেন শোনা যায়। পাটরাণী আহমোসের সাথে তাঁর কয়েকটি সন্তান হয়েছিল। এদের মধ্যে দুটি পুত্রসন্তানও ছিল। কিন্তু তারা ছোটবেলায় মারা যায়। পড়ে রইল মেয়ে সন্তান হাতশেপসুত। কিন্তু তার তো সিংহাসন পাওয়ার নিয়ম নেই। থুথমোসের অন্য একজন রাণীর একটি ছেলে ছিল। তার সাথে হাতশেপসুতের বিয়ে দিয়ে সেই ছেলেকে রাজা করা হল। এর নাম হল দ্বিতীয় থুথমোস। দুঃখের বিষয় দ্বিতীয় থুথমোস আয়ুষ্কাল ছিল খুব কম। হাতশেপসুত ও দ্বিতীয় থুথমোসের নেফেরুরে নামে একটি মেয়ে হল। অন্য একজন রাণীর সাথে একটি পুত্রসন্তান হল। তার নাম দেওয়া হল তৃতীয় থুথমোস। এর পরেই দ্বিতীয় থুথমোস মারা গেলেন। এই অবস্থায় শিশু তৃতীয় থুথমোসের অভিভাবক ও সহরাষ্ট্রাধিপতি হিসেবে হাতশেপসুতকে প্রথম সিংহাসনে বসতে দেখা যাচ্ছে। এ পর্যন্ত গল্পটা বেশ সাদামাটা। অনুরূপ পরিস্থিতিতে এর আগেও মহিলারা রাজ্যভার নিয়েছে, পরেও নেবে। রাজত্বের সপ্তম বছরে একটা ঘটনা ঘটল যা আগে ঘটেনি। এই বছরে পাওয়া একটা মূর্তিতে হাতশেপসুতকে দেখা যাচ্ছে পুরুষ ফারাও রূপে। মাথায় ফারাওয়ের মুকুট, স্তনাভাস নেই, এমনকি থুতনিতে নকল দাড়ি।

    কিভাবে জানা যাচ্ছে এটা হাতশেপসুতের মূর্তি? এখানে মনে রাখতে হবে প্রাচীন মিশরীয়রা প্রতিটি কাজ করত পরকালের কথা ভেবে। জীবৎকালের প্রতিটি কীর্তির বর্ণনা তারা রেখে যেত ছবি বা ভাস্কর্যের মাধ্যমে। চিনতে যাতে অসুবিধে না হয় তাই মূর্তির গায়ে বা ছবির নিচে খোদাই করা থাকতো তাদের নাম। ক্যাপসুল আকৃতির এই নামের ফলকগুলোকে বলে কার্তুস। কথাটা কার্তুজ থেকেই এসেছে। প্রথম যুগের ইজিপ্টোলজিস্টদের মধ্যে কোনো ফরাসী ছিলেন। তিনি এই নামটা দিয়ে থাকবেন। মোদ্দা কথা হল মূর্তির গায়ের কার্তুস থেকে জানা গেছে রাজত্বের সপ্তম বছর বা তার আগে থেকে হাতশেপসুত পুরুষ ফারাওদের মত করে নিজের প্রতিকৃতি গড়াতে থাকেন। একক সার্বভৌম শাসকের উপযোগী উপাধিও নেন। তবে তিনি যে সর্বনামগুলো ব্যবহার করেছেন তা স্ত্রীলিঙ্গবাচক।

    কি কারণে হাতশেপসুত রাণীর ভূমিকা ছেড়ে ফারাও হলেন তা সঠিক জানা যাচ্ছে না। হতে পারে ক্ষমতালোভী ছিলেন। তবে সৎ ছেলে তৃতীয় থুথমোসকে কিন্তু তিনি হত্যা করলেন না বা নির্বাসন দিলেন না। থুথমোস তখনও বেশ ছোট। বড় হয়ে উঠে সে একজন বড় যোদ্ধা হল। সেও তার সৎ মায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল না। এভাবে প্রায় কুড়ি বছর কাটার পর মধ্য চল্লিশে হাতশেপসুতের মৃত্যু হয় এবং তারপর তৃতীয় থুথমোস ফারাও হলেন। হাতশেপসুতের মমি এখনো আবিষ্কার হয়নি। দেহ খুঁজে পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে, তবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল এমন কোনো ইঙ্গিত নেই।
    হাতশেপসুতের রাজত্বকাল সফল বহির্বাণিজ্যের জন্য বিখ্যাত। সেকালের পুন্ট, বর্তমান ইরিট্রিয়া থেকে প্রচুর মূল্যবান জিনিসপত্র, পশুপাখী, মায় জিরাফ এসেছিল - এই ছবি রয়েছে হাতশেপসুতের তৈরি করা একটি মন্দিরের দেওয়ালে। আমরা সেই ছবি দেখলাম। ম্লান হয়ে এসেছে বলে ক্যামেরায় ওঠেনি, কিন্তু খালি চোখে বোঝা যায়। সূর্য দেবতা আমুন রা-এর উদ্দেশ্যে নিবেদিত বিশাল কার্ণাক মন্দিরে হাতশেপসুতের উৎসর্গ করা দুটি একশো ফুট উঁচু ওবেলিস্ক আছে। তার একটি ভেঙে গেছে। অন্যটি আমরা এবারে দেখে এলাম। নজর এড়ালো না সেই ওবেলিস্কের চারদিকে ভাঙা পাথরের দেওয়াল। ভিভিয়ান বলেছিল হাতশেপসুতের ওবেলিস্ক পাথর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। পরে কোনো ভূমিকম্পে সেই দেওয়াল ভেঙে পড়ে ভিতরের ওবেলিস্ক বেরিয়ে আসে। পুন্টের ছবি সমৃদ্ধ হাতশেপসুতের মন্দিরে দেখেছি হাতশেপসুতের নামের কার্তুস মুছে দেওয়া হয়েছে। ওই মন্দিরে তৃতীয় থুথমোসের ছবি আছে, কিন্তু হাতশেপসুতের কোনো ছবি নেই। যেখানে থাকার কথা সেই জায়গা ফাঁকা। হাতশেপসুতের বানানো অন্য একটি মন্দিরে শুনেছি হাতশেপসুতের ছবি মুছে অন্য এক ফারাও প্রথম সেতির ছবি আঁকা হয়েছে। সেই মন্দিরে আমরা যাইনি।
    নাম মুছে দিলে কি করে জানা গেল এই মন্দিরগুলো হাতশেপসুতের? আসলে মোছার কাজটা খুব ভালো ভাবে করা হয়নি। মন্দিরের বাইরের দিকের ছবি বা কার্তুস মোছা হয়েছে। মূর্তি ভাঙা হয়েছে। কিন্তু ভিতরের দেওয়ালে মোছা হয়নি। অনেক সময় নাম মুছে কোনো পুরুষ ফারাওয়ের নাম লেখা হয়েছে, কিন্তু সর্বনাম রয়ে গেছে স্ত্রীলিঙ্গবাচক। রাণী অবস্থার কোনো চিহ্নই মোছা হয়নি। উনিশ শতকের ইজিপ্টোলজিতে হাতশেপসুত ছিল একটা ধাঁধা। আস্তে আস্তে তার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। এখনো সবটা জানা যায় না।

    কে করল এই কাজ? কেন করল? প্রথম দিকে ইজিপ্টোলজিস্টরা মনে করতেন সিংহাসন হারানোর জ্বালায় তৃতীয় থুথমোস এই কাজ করেছেন। কিন্তু এই কারণটা খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ হাতশেপসুতের রাজত্বকালের শেষদিকে থুথমোস প্রাপ্তবয়স্ক এবং কীর্তিমান যোদ্ধা। কিন্তু তিনি বিদ্রোহ করেছিলেন এমন খবর নেই। উপরন্তু এইসব ছবি/কার্তুস মোছা, মূর্তি ভাঙার ঘটনা ঘটেছে থুথমোসের রাজ্যলাভের কুড়ি বছরের মাথায়। যদি প্রতিহিংসার বশে ভাঙা হত তাহলে এতখানি অপেক্ষা করার মানে হয় না। তৃতীয় থুথমোসের রাজত্বের শেষদিকে যে সময়ে এই ভাঙাচোরা চলেছে তখন সহরাষ্ট্রাধিপতি যুবরাজ দ্বিতীয় আমেনহোতেপ। এই যুবরাজও পাটরাণীর সন্তান নন। অতএব সিংহাসনে এনার অবিসংবাদিত অধিকার নেই। ঠিক কি কারণে বাপ-ব্যাটায় হাতশেপসুতকে মুছে দিতে চাইলেন তা নিয়ে কিছু জল্পনা আছে।

    কেউ কেউ বলেন তৃতীয় থুথমোস প্রতিষ্ঠা করতে চাইছিলেন তিনি তাঁর বাবার থেকে সরাসরি উত্তরাধিকার পেয়েছেন। মাঝখানে কেউ ছিল না। এর ফলে নিশ্চিত করা যাবে যে হাতশেপসুতের মা আহমোসের বংশের কোনো অধিকার নেই সিংহাসনে। তবে আহমোসের দিক থেকে কোনো ভয় ছিল এমন প্রমাণিত নয়।
     
    অন্য যে কারণটি এখন মোটামুটি মানা হয় সেটা হল স্রেফ মেয়ে বলেই হাতশেপসুতকে মুছে দেওয়া হয়েছিল। এর আগে যে মহিলা ফারাওদের নজির আছে তাঁরা সংকটকালে ফারাও হয়েছিলেন পুরুষ উত্তরাধিকারী পাওয়া যাচ্ছিল না বলে। সোবেকনেফেরু নামে এক মহিলা ফারাওএর নাম পাওয়া যাচ্ছে যিনি চারবছর ফারাও ছিলেন খুব টালমাটাল অবস্থায়। তাঁর শাসনকালেই সেই রাজবংশ শেষ হয়ে যায়। সোবেকনেফেরুকে তাই "আহা একা মেয়েমানুষ, পেরে ওঠে নি" বলে করুণা করা যায়। হাতশেপসুত কিন্তু অত্যন্ত সাফল্যের সাথে দীর্ঘ একুশ বছর দায়িত্ব সামলালেন। প্রমাণ হয়ে গেল মহিলা ফারাও দিয়েও কাজ চলতে পারে। ফলত সিংহাসনের দাবীদার বেড়ে গেল। সেই কারণেই খুব সম্ভব হাতশেপসুতের সব চিহ্ন মানুষের চোখের সামনে থেকে মুছে ফেলার প্রয়োজন পড়ল। এছাড়াও দেখা যাচ্ছে তৃতীয় থুথমোসের ছেলে এই দ্বিতীয় আমেনহোতেপ তার রাণীদের নাম কোথাও লিখতে দেয়নি যেটা মিশরের রাজপরিবারে একটা ব্যাতিক্রম বলা চলে। ফারাও না হতে পারলেও মিশরের রাজবধুরা অত্যন্ত ক্ষমতাশালী ছিল। তাদের উপাধি ছিল "আমুনের স্ত্রী"। দ্বিতীয় আমেনহোতেপ তার স্ত্রীকে এই উপাধি নিতে দেয়নি। এর থেকে মনে হয় দ্বিতীয় আমেনহোতেপ ক্ষমতাশালী মহিলাদের নিয়ে খুব একটা স্বস্তিতে ছিল না এবং হাতশেপসুতের উদাহরণ ছড়িয়ে পড়ুক এমনটা সে চায়নি।

    এসব তো গেল ইতিহাসের কথা। এই একবিংশ শতকে এসে পনেরো বছরের ব্যবধানে আমি হাতশেপসুত নিয়ে নানারকমের মতামত শুনলাম। সংক্ষেপে সেই গল্প বলে লেখা শেষ করি। পনেরো বছর আগের ভিভিয়ান ছিল হাতশেপসুতের মুগ্ধ ভক্ত। ওর গল্প শুনেই হাতশেপসুত সম্পর্কে আমার আগ্রহ জন্মায়। এবারের মিশর ভ্রমণে আমরা এক একটা অংশে এক একজন গাইড পেয়েছি। হাতশেপসুতের মন্দির দেখার দিন গাইড ছিল ওয়েইস (অর্থঃ নিশাচর)। হাতশেপসুতের নাম মুছে ফেলা হয়েছে এই নিদর্শন সে আমাদের দেখালো। কিন্তু কে এই নাম মুছেছে তা নিয়ে কিছু বলতে রাজি হল না। খুব দৃঢ়তার সাথে জানালো তৃতীয় থুথমোস এ কাজ করতে পারে না। হয়ত অনেক পরের কোনো রাজার কাজ। তার মোটিভ কি? এ বিষয়ে ওয়েইস নীরব। ইজিপ্সিয়ান মিউজিয়াম দেখার দিন গাইড ছিল আব্দুল ওয়াহিব। সে বলল তৃতীয় থুথমোসই মুছেছে। তবে মুছবে না-ই বা কেন? হাতশেপসুত চক্রান্ত করে ভুলিয়ে ভালিয়ে সিংহাসনে বসেছিল। এমনটা হওয়াই তো স্বাভাবিক।

    আমার ব্যক্তিগত মত তৃতীয় থুথমোস খারাপ লোক ছিল না। তার হাতে সামরিক শক্তি থাকা সত্ত্বেও সে হাতশেপসুতকে ক্ষমতাচ্যুত করেনি। হাতশেপসুত মারা যাওয়ার পরের কুড়ি বছরেও সে কোনোরকম প্রতিহিংসাপরায়ণতা দেখিয়েছে এমন প্রমাণ নেই। সমস্যা হয়েছে তারপর। যখন থুথমোসের পাটরাণী এবং তার গর্ভজাত সাবালক পুত্রসন্তান দুজনেই মারা যায়। তখন যুবরাজ হল অন্য রাণীর সন্তান দ্বিতীয় আমেনহোতেপ। সিংহাসনে তার জন্মগত অধিকার নেই। যদিও তার কোনো উচ্চাকাঙ্খী বোনের খবর আমরা পাচ্ছি না, একথা অনুমান করতে কষ্ট হয় না যে সে সিংহাসন সংক্রান্ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিল। তাই হাতশেপসুতকে মুছে ফেলা। পৃথিবীর ইতিহাসে পরবর্তী সাড়ে তিন হাজার বছরে মহিলা রাষ্ট্রাধিপতি এল মূলত শূন্যস্থান পূরণ করতে। যদি হাতশেপসুতের নাম হারিয়ে না যেত, যদি তা আরও অনেক মেয়েকে অনুপ্রেরণা যোগাত একক নেতৃত্ব দেওয়ার, হয়ত পৃথিবীর ইতিহাস অন্যরকম হতে পারতো।

    (এই পোস্টের ছবিটি ইজিপ্সিয়ান মিউজিয়ামে হাতশেপসুতের ভগ্নমূর্তি। নকল দাড়ি লক্ষ্যণীয়।
    হাতশেপসুত সংক্রান্ত আরও কিছু ছবি একে একে আসবে)
     
  • Shuchismita | 24.53.***.*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:২৭739131
  • হাতশেপসুতের মন্দিরের গর্ভগৃহের ছবি। ডানদিকে তৃতীয় থুথমোসকে দেখা যাচ্ছে দেবতাকে অর্ঘ্য দিতে। বামদিকের ছবি উধাও।
  • Shuchismita | 24.53.***.*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:৩০739132
  • হাতশেপসুতের মন্দিরে ডানদিকের কার্তুসে তৃতীয় থুথমোসের নাম রয়েছে, বাম দিকের কার্তুস থেকে হাতশেপসুতের নাম মুছে দেওয়া হয়েছে।
     
     
    হাতশেপসুতের মন্দিরের দেওয়ালে তৃতীয় থুথমোসের ছবি। ছবির নিচে দুইসারি কার্তুস। বামদিকে হাতশেপসুতের নামের কার্তুস মুছে দেওয়া হয়েছে। ডানদিকের কার্তুসে তৃতীয় থুথমোসের নাম।
     
  • Shuchismita | 24.53.***.*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:৩১739133
  • হাতশেপসুতের মন্দিরের দেওয়ালে পুন্টের সাথে বাণিজ্যের ছবি। জুম করলে লম্বা গলার জিরাফ দেখা যাবে।
     
  • Shuchismita | 24.53.***.*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:৩৪739134
  • হাতশেপসুতের তিনতলা মন্দির। নিখুঁত পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণ এক্সিস। ছবিতে যে খোপ খোপ অংশটা দেখা যাচ্ছে ওগুলো খিলান। খিলানের পিছনে বারান্দা। খিলানের গায়ে এবং বারান্দার দেওয়ালে অনেক ছবি আছে। সিলিং নীল রঙের। তাতে তারা আঁকা।
     
  • Shuchismita | 24.53.***.*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:৩৫739135
  • হাতশেপসুতের মন্দিরের বাইরে সারি দেওয়া স্ফিংক্স ছিল। তার একটি। স্ফিংক্সএর মুখ হাতশেপসুতের আদলে গড়া।
     
  • Shuchismita | 24.53.***.*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:৩৫739136
  • কার্ণাক মন্দিরে হাতশেপসুতের ওবেলিস্ক পাথরের দেওয়াল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছিল। তার ভগ্নাবশেষ।
     
  • পাঠক | 173.49.***.*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:৫৩739137
  •  
    এই তো ফের এসেছে 
    মিসোচ্ছিলাম এইটে 
  • r2h | 192.139.***.*** | ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২৩:০৫739138
  • বাঃ, এই লেখাটা আবার শুরু হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম।
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ১৫ আগস্ট ২০২৩ ১২:০৬740515
  • এইটে পড়ে আমরাও মিশর যাব ভাবছি। কিন্তু শুধুই কি কায়রো? অন্যান্য জায়গাগুলোর গল্প কোথায়? 
  • | ১৫ আগস্ট ২০২৩ ১৪:৩২740519
  • আপনি এক্সপ্্লোরার শিবাজীর ভ্লগ দেখতে পারেন।  ইউটিউবে এক্সপ্লোরার শিবাজী মিশর সিরিজ লিখে সারচ করলেই পাবেন। অনেকগুলো জায়গা খরচখরচাসহ দেওয়া আছে।  
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ১৫ আগস্ট ২০২৩ ১৭:৪২740535
  • এক্সপ্লোরার শিবাজি দেখা হয়ে গেছে। পৃত্থ্বীজিৎ এবং শিবাজি মিশর ঘুরল, কিন্তু ওদের প্রাইস ট্যাগ আমার সঙ্গে মিলবে না। এখান থেকে যেটাই বুক করব সমান্য হলেও দামি হবে।
    দুই, ওরা ক্রুজে করে লাক্সর থেকে ঘোরাঘুরি করেছে। কিছুটা কায়রো, কিছুটা আলেক্সান্দ্রিয়া।
    আমরা একমাসের কমে ঘুরব না। সমস্ত ট্রেনের টিকিট হোক বা ক্রুজের, ফরেনারদের জন্য দাম দশগুণেরো বেশি তো বটেই, সেইসঙ্গে সরাসরি ড্লারে কিনতে হয়। তাতে অসুবিধে কখনো আছে কখনও নেই।
    চার পাঁচদিনের নাইল ক্রুজ বড়ই বেদনার। বড্ড নিয়ম মেনে চলতে হবে।
    আমরা যাবো প্রথমে কায়রো, তারপরে সুয়েজ বা পোর্ট সয়িদ (সুয়েজকানাল দেখার জন্য), তারপরে আসওয়ান, লেক নাসার ও পার্শ্ববর্তী জায়গা, আবু সিম্বেল টিম্বেল, আসওয়ান থেকে ঘুরে ঘুরে কার্নাক, ভ্যালি অফ রাজা রাণী, ইত্যাদি যতটুকু ইচ্ছে করবে, তারপরে লাক্সরে থেকে আরো কিছুটা। সেখান থেকে হুরগাদা। রেডসীর ধারে, সেখানেও কয়েকটা দিন। সেখান থেকে শার্ম এল শেইখে যাবার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু হয়ত যাব না। ওদিকটায় ঝামেলা হয়, সিনাই মরুভূমিও নিরাপদ নয়। তারপর ওখান থেকে কায়রো, সেখান থেকে আলেকসান্দ্রিয়াতে কটা দিন। ভূমধ্য সাগরের তীরে কিছুদিন কাটিয়ে ফের কায়রো, গিজা ইত্যাদি, পিরামিড টিরামিড, বাজার, মানুষ।
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ১৬ আগস্ট ২০২৩ ১৭:১১740565
  • এটা জবরদস্ত!  অনেক থ্যাংক্স। 
  • যোষিতা | 194.56.***.*** | ১৬ আগস্ট ২০২৩ ১৮:০২740568
  • ডান! থ্যাংকু! 
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন