সারা দিন-রাত ওদের কানাকানি, ফিসফাস, টুপ টাপ, ঝির ঝির..দিনের আলো, রাতের অন্ধকার.. নদী, গাছপালা, পোকা, পাখিদের মগ্ন আলাপন.. শব্দে, নিঃশব্দে। শুনতে কি পাও !..
সারারাত ধরে ফুল ফুটিয়েছে হিজল বন। মৃদু সুগন্ধে, চাঁদের আলোয়, হিজল বনে গোলাপি মায়া।
ফুলে ফুলে ভরা হিজল বনে, গভীর রাতে কাদের আসা-যাওয়া !.. ওদের গায়ে, চাঁদের আলোর জামা, চিকচিকে চোখে তারাদের মায়া, হাতে জাদুদন্ড, পিঠে রুপোলি তারে বোনা ডানা।
সারারাত ধরে ফুলের বনে, ওদের মায়ার খেলা।
ওরা কি ফুলকুমারী !..
রাত শেষ হতে বুঝি বাকি নেই আর.. ঝরে পড়লো হিজল ফুলেদের আহ্লাদ, বনে বনে। সবুজ ঘাসের ওপর ঝরে পড়লো গোলাপি আহ্লাদ। বিছিয়ে গেল বনময়। সুগন্ধে ম'ম করে উঠলো হিজলের বন।
ভোরের হাওয়ায় হিজল বনে, হাওয়ার মাতামাতি।
ছোট্ট কাঠঠোকরা - কুকু, বনটিঁয়া - বিবি, দুর্গা টুনটুনি- টুংলি, হিজলের ডালে ডালে বসে মুমু দোয়েলের গান শুনছিল।
ভোরের হাওয়ায় মুমু র গান, হিজলের বন পেরিয়ে, বগতৌড়া গ্রাম পেরিয়ে, শাল নদীর বুকে ছড়িয়ে গেল।
হিজলের বনে আনন্দের হাট বসে গেল। সেখানে, দক্ষিণের হাওয়া এলো, অনেক অনেক পাখি এলো, শাল নদীর জল এলো, বন ময়ূর, জল পিপি, সোনালী ফড়িং, চিকচিকে পোকারা এলো, এক সমুদ্র বাতাস এলো।
অনেক অনেক কথা হলো, ঝির ঝির হাসি হলো, ঢলো ঢলো আলাপ হলো, টুপটুপে অভিমান ঝরে পড়লো আর আনন্দের বন্যা বইলো।
হিজল বনের মুমুর গান শুনে অনেক অনেক আলোতে ভরিয়ে সূয্যি মামার ঘুম ভাঙলো।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।