নন্দিভৃঙ্গীরা বাড়ি পালিয়েছে। কৈলাশে তাই বাসন মেজে রান্না করে দিন কাটাচ্ছেন শিব। মা দূর্গার কতোগুলো হাত, হাত ধুয়ে স্যানেটাইজ করতেই সারাদিন চলে যায়। গনেশ বিপদে পড়েছে, তার জন্য কোন মাস্ক নেই, নাক ঢাকছে না। কার্তিকের সব ছুটি বাতিল, অক্সিজেন ঘাটতি মেটাতে তাকে তার সেনাবাহিনী নিয়ে তৈরি থাকতে হয়েছে। মা দূর্গার কত দুঃখ মেয়েদের অনেক দিন দেখতে পারছে না।
লক্ষ্মী শুনালাম একটু মোটা হয়েছে। নারায়ণ বলেছেন করোনা সময় ঘুমিয়ে কাটাবেন। তাই একার জন্য লক্ষী রান্না বান্না করেছেন না। হোম ডেলিভারিতে খাচ্ছেন, জাংক ফুড খেয়েই তিনি তাই মোটা হয়েছেন নিন্দুকেরা বলছেন। নারদ মনমরা হয়েই বসে আছে, খাওয়াদাওয়াও ছেড়ে দিয়েছে, লোকের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কান ভাঙানি না দিলে ওর পেটের ভাত হজম হয় না।
বুড়ো ব্রহ্মাকে নিয়ে নাজেহাল সরস্বতী, অতগুলো মুখ ধুয়ে দেওয়া, মাস্ক পড়ানো চাড্ডিখানি কথা নাকি? এদিকে সব পরীক্ষা স্থগিত করায়, তাঁর ফ্যান ফলোয়ার কমে যাচ্ছে। online class চালু হওয়ায় ভক্তরা ঠাকুরের সামনে ফোন রেখে ছিল। অথচ একটা গেম খেলতে পারছেন না দেবী, কত কষ্ট তার। সেলফিও তোলেন নি, মাস্ক পরে সেলফি তুলে কি লাভ।
কৃষ্ণ ও ইন্দ্র এর বিপদ অন্যখানে। অত গোপিনী, কিন্তু রাসলীলা বন্ধ। নাইট কার্ফু ত্রিদেবের নির্দেশে। ফলে ইন্দ্রর পাবে গিয়ে অপ্সরাদের সাথে ফস্টিনস্টি বন্ধ। রাধা অবশ্য অনেকদিন আগেই বলে দিয়েছেন, করোনা না মেটা অবধি জাপটা জাপটি চলবে না।
রাবণ বিক্ষোভ করছেন, তার দশটা মুখ, তাই তাকে অসুবিধাতে ফেলেতেই ষড়যন্ত্র করছে দেবতারা, করোনা টরোনা নাকি নেই। রাহু ব্যাটা তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে, ওর হাত নেই তাই হাতকড়া পরিয়ে বন্দিও করা যাবে না। ও সবাইকে বলে বেড়াচ্ছে যে এখন কোরান পড়লে করোনা হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন দেবতাদের নিজেদের মধ্যে কোন মিল নেই বলে, প্রতিবেশী কিংবা শত্রুর দেশগুলো এভাবে স্বর্গের শান্তিভঙ্গ করতে পারে।
যেমন জগন্নাথ প্রকাশ্যে নৃত্য করছে করোনা প্রসঙ্গে, কারণ তার হাত ধোয়ার বালাই নেই। শনিঠাকুর করোনা বিধি না মেনেই তাঁর মন্দিরগুলো খুলে রেখেছে, ছোট্ট মন্দির অত জন দেবদেবী নিয়ে আড্ডা মারা কি ভালো কাজ?
তবে রাম সত্যিই প্রশংসার পাত্র, রাজনৈতিক লোক, ৱ্যালি ট্যালি করতে হয় ওকে। যাই হোক এবার ওর জন্মদিনে কোন ৱ্যালি করেন নি উনি। হনুমান যদিও রাগে অভিমানে মুখ ফুলিয়়েবসে আছে।
সবচেয়ে ব্যস্ত যমরাজ আর চিত্রগুপ্ত, মাস ছয়েক কোন ছুটি নেই, ২৪×৭ কাজ। এদিকে কম্পিউটার হ্যাং হয়ে গেছে। যমদূতরা কাকে কাকে তুলতে হবে বুঝতে পারছেন না। মাস্ক পরা মানুষগুলোর মুখ চিনতে পারছেন না। যাইহোক যম একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন - মাস্ক নেই এমন কাউকে দেখতে পেলেই তুলে নিয়ে আয়। কারণ ওই ব্যাটাদের জন্য বৌএর সাথে দেখা করতে পারছি না ছয় মাস, দাড়ি মুখে বৌ না চিনতে পারলেই সর্বনাশ।