এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • জাতীয় সঙ্গীত

    Hiren Singharay লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৭ জানুয়ারি ২০২১ | ১১০৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • জাতীয় সঙ্গীত একটি দেশের গরিমা বহন করে। আমাদের জাতীয় সঙ্গীতে আছে ভারতবর্ষের মানুষের প্রকৃতির পরিচয়।

    এমনটা তো হবার কথা যেমন জার্মান জাতীয় সঙ্গীত সে দেশের সীমানা নির্ণীত করে (আজকাল সেটা গাওয়া হয় না কারণ সীমানা বদলে গেছে!), একতা ও ন্যায়ের বন্দনা করে।

    অনেক দেশের জাতীয় সঙ্গীতে দেশ নয়, রাজা/রানির বন্দনা শোনা যায় – গড সেভ দি কিং/কুইন। সেটা তো যে কোনো দেশের রাজা/রানি হতে পারে! অসট্রো-হাঙ্গারিয়ান রাজত্বকালে তাঁদের জাতীয় সঙ্গীতে ঈশ্বরের কাছে আবেদন করা হয়েছে তিনি যেন সম্রাট ফ্রান্তস-কে রক্ষা করেন। দেশটার সম্বন্ধে দু চার কথা বলা নেই!

    ধরুন নেদারল্যান্ড বা হল্যান্ডের জাতীয় গাথা। সেখানে একবারও দেশের নাম করা হয় নি। গানটি হল্যান্ডের প্রথম রাজা ভিলহেলমের জবানিতে – তিনি বলছেন তাঁর ধমনিতে বইছে জার্মান রক্ত এবং তিনি সর্বদা স্পেনের রাজাকে সম্মান করেছেন (হল্যান্ড একদা স্পেনের উপনিবেশ ছিল)। ২০১০ সালে জোহানেসবুরগে হল্যান্ড বনাম স্পেনের বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখছিলাম। গানের ভেতরে হল্যান্ডের মানুষ স্পেনের রাজাকে নিবেদন করছে তাদের শ্রদ্ধা। স্পেন বিশ্ব বিজয়ী হল!

    স্পেনের জাতীয় সঙ্গীতে কোন কথা নেই। কেবল বাজনা বেজে যায় অনেকক্ষণ ধরে। একদা নাকি কিছু কথা ছিল সেগুলো বিতর্কিত বলে ছেঁটে দেয়া হয়েছে। সেখানে অবশ্য হল্যান্ড নিয়ে কিছু বলা হয় নি।

    ইতালিয়ান জাতীয় সঙ্গীতে অস্ট্রিয়া রাশিয়া ও পোল্যান্ডকে একহাত নেয়া হয়েছে অতীতের অপরাধের কারণে। কি ভাগ্যে সবাই ইতালিয়ান বোঝে না, নইলে রাশিয়া বা অস্ট্রিয়া বনাম ইতালি ফুটবল ম্যাচে গণ্ডগোল বাধত খেলা শুরু হবার আগেই !

    তুর্কীরা দীর্ঘদিন হাঙ্গেরি দখল করে বসেছিল। হাঙ্গেরিয়ানরা তার শোধ তুলেছে আপন জাতীয় সঙ্গীতে তুর্কীদের শাপ শাপান্ত করে। খেলার আগে যখন সে সঙ্গীত বাজে দু পক্ষ সশ্রদ্ধে সেটি শুনে যায়। কেউ ঝঞ্ঝাট বাধায় না।

    তুর্কীদের নিজস্ব জাতীয় সঙ্গীতে পশ্চিমী সভ্যতা ও তার কুফল সম্বন্ধে শ্রোতাদের অবহিত করা হয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলি বিনা বাক্যে শুনে যায় শান্তি বজায় থাকে।

    ফিনল্যান্ড আর এসটোনিয়া প্রতিবেশী দেশ একে অপরের ভাষা বোঝেন (দুনিয়ার আর কোন ভাষার সঙ্গে অবশ্য এ দুটো ভাষার বিন্দুমাত্র সাদৃশ্য নেই)। এই দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত একই সুরে গাওয়া হয়, কথা গুলো খানিকটা আলাদা।

    গড সেভ দি কিং/কুইনের সুরেই গাওয়া হয় লিখটেনস্টাইনের জাতীয় সঙ্গীত, রাইন নদীর উঁচুতে। ছোট দেশ লিখটেনস্টাইন তারা নাহয় তেমন কোন শঙ্কর-জয়কিশন বা সলিল চৌধুরী জোটাতে পারে নি কিন্তু এককালের মহাপরাক্রমশালী প্রাশিয়ার জাতীয় সঙ্গীতের সুরও ছিল গড সেভ দি কিং !

    অসট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সম্রাট ফ্রান্তসের সুস্বাস্থ্য কামনায় হ্যানডেল জাতীয় সঙ্গীতের সুর দিয়েছিলেন সত্তর বছর বাদে জার্মানি সেটিকে টুকে নিলো। ডয়েচলানড উইবার আলেসের আর গট এরহালটে ফ্রান্তস ডেন কাইজারের সুর একেবারে এক।

    আজকের গল্প এই অবদি !
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:c9c6:5d06:35eb:***:*** | ১০ নভেম্বর ২০২১ ১৮:০৩500985
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর তো ঐ কটা শব্দ জোর করে বাদ দেওয়ানো হয়েছে বলে শুনেছি জার্মানির জাতীয় সংগীত থেকে। সর্বশ্রেষ্ঠত্ব আর নেই গানে। আবার বায়রনের নিজস্ব জাতীয় সংগীত আছে!
  • :|: | 174.255.***.*** | ১১ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৫১500997
  • যা বুঝলুম, ভারতবর্ষ আর বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত দুটাই সেরা -- ভাবে ভাষায় এবং সুরে।
  • হীরেন সিংহরায় | ১১ নভেম্বর ২০২১ ০৭:০১500998
  • শ্রী সে 
    হফমান ফন ফালারসলেবেন ডয়েচলানড লিড লেখেন ১৮৪১ সালে । তখন জার্মানি বলে কোন দেশ নেই। সবে উত্তর জার্মান কনফেডারেশান গড়ে উঠেছে কিছু রাজ্য নিয়ে বাকিটায় অনেক রাজা অনেক জমিদার । হফমান সব যুযুধান রাজাকে মনে করিয়ে দিয়েছেন সবার উপরে জার্মানি ( ডয়েচলানড ডয়েচলানড উইবার আলেস )। লড়াই ঝগড়া ছেড়ে সেই দেশের কথা ভাবো । প্রথম স্তবকে দেশের সীমানা , শৌর্য , দ্বিতীয় স্তবকে জার্মান ওয়াইন , নারী , সঙ্গীত , আনুগত্য এবং তৃতীয় স্তবকে -যেটি হফমানের মূল মেসেজ- জার্মান ঐক্য , ন্যায় এবং স্বাধীনতা ( আইনিগকাইট উনড রেখট উনড ফ্রাইহাইট )। 
     
    সকল দেশের সেরা সে যে আমার জন্মভূমি বা সারে জাহান সে আচ্ছা এমন কথা হফমান বলেন নি । কারণ জার্মানির অস্তিত্ব অবধি ছিলো না ১৮৪১ সালে। সেটি স্বপ্ন মাত্র ।
     
    হফমানের  ডয়েচলানড ডয়েচলানড উইবার আলেস এর অর্থ  দেশটা  সবার উপরে । জমিদারি নয় ( ১৭০০র বেশি রাজা বা জমিদার তখন) 
     
    বাকি পৃথিবী অবিশ্যি এ গানের অন্য অর্থটি করে নিয়েছে - সবার উপরে জার্মানি। তাহার উপরে নাই ! এটি ঐতিহাসিক ভ্রান্তি । তাই ১৯৪৯ সালে জার্মান প্রজাতন্ত্র গঠনের সময়ে আদেনআউয়ার কোন চান্স নিলেন না । বললেন  ডয়েচলানড ডয়েচলানড উইবার আলেস কথা গুলো বাদ দিয়ে  একেবারে লাফ দিয়ে তৃতীয় স্তবকটি গাও! সেইটেই তো হফমানের অভীষ্ট ছিল !
     
    তথ্যের খাতিরে বলতে হয় পুরো জাতীয়  সঙ্গীত গাওয়া শুরু হয় নাৎসিরা ক্ষমতায় আসার অনেক আগে ভাইমার কালে ( ১৯২২ )। শেষ গাওয়া হয় ১৯৪৫। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন