
শুভেন্দু অধিকারী আজ একটি ইন্টারেস্টিং কথা বলেছেন- তিনি আগে যে দল করতেন সেইটা নিষ্ঠার সঙ্গে করতেন বলে তখন বিজেপি হঠাও স্লোগান দিয়েছিলেন। আজ থেকে যে দল করবেন, সেটিও নিষ্ঠার সঙ্গে করবেন বলে তোলাবাজ ভাইপো হঠাও স্লোগান দিলেন। অর্থাৎ, দলের প্রয়োজনে যা দরকার, দল যে কাজ দেবে সেটা পেশাদারি দক্ষতায় করবেন। নিষ্ঠা, দক্ষতা দিয়ে দলের কাজ করা আসল। কিন্তু, কী কাজ করছেন সেইটি কি নয়? একবছর আগে সি এ এ বাতিল করো, এন আর সি বাতিল করো বলতেন, নিষ্ঠার সঙ্গে বলতেন, এমনভাবে বলতেন যে তাঁর স্লোগান শুনে নিজেদের কর্মীরা উদবুদ্ধ হবে, পথচলতি মানুষ নিজের অবস্থান পালটে ফেলবেন। আজ তিনি সেইভাবেই এন আর সি লাগু করো, সি এ এ বলবৎ থাকুক বলবেন? ভেবে দেখলে পেশাদার শুভেন্দুর কাছে এটি যেমন শ্লাঘার, ব্যক্তি শুভেন্দুর কাছে এটি হয়ত তত গৌরবের নয়। পথচলতি যে মানুষটা শুভেন্দুর স্লোগান বক্তৃতা শুনে কাল একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ্তিনি কিন্তু এরকম দুম করে নিজের বক্তব্য পালটে ফেলতে পারেন না। অন্ততঃ নিজের পরিমণ্ডলে সেটা এত সহজে গৃহীত হয় না। কিম্বা, শুভেন্দু অধিকারী খুব গুরুত্বপূর্ণভাবে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিভিন্ন কারিগরদের কথা বলেন, অথচ তিনি যে দলটা করছেন, সেইটা ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিরোধী ছিল। -- এইটা যে কোনো ব্যক্তির কাছে একটা সমস্যার জায়গা তো বটেই। সাধারণ মানুষ পেশাগতভাবেও এরকম কিছু করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করে না যা তাঁর নিজস্ব ইন্টিগ্রিটিকে প্রশ্নে ফেলে, পার্টি পলিটিক্সের লোকজন এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়ে যায়। আর, এইটা শুভেন্দু একা নন। দলবদল, এবং নতুন দলে এসে পেশাদারি দক্ষতায় পুরোনো পজিশনে খেলা, আগের দলের গোলে বল ঠেলা খুব বিরল নয়। আমাদের রাজ্যপাল ধনখর আগে কংগ্রেস করতেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প আগে ডেমোক্র্যাট ছিলেন, বিমল গুরুং আগে বিজেপির সঙ্গে ছিলেন। ইতিহাসেও বহু বহুবার এরকম হয়েছে। ছিলে কংগ্রেস হল মুসলিম লিগ তো স্বাধীনতার পূর্বপর্যায়ে খুব সাধারণ ব্যাপার।
দেখা যায়, ব্যক্তির নিজস্ব কিছু ইচ্ছে থাকে, সেটা কখনো তাঁর ভাবধারার সঙ্গে জড়িয়ে, কখনো তাঁর ব্যক্তিগত উন্নতির সঙ্গে জড়িয়ে, কখনও যে গোষ্ঠী বা যে আন্দোলনকে তাঁরা ধারণ করছেন তার বিকাশের সঙ্গে জড়িয়ে, যা আগের দলটিতে থেকে পূরণ হচ্ছে না, তাই নতুন দলে যাওয়া। কিন্তু, নতুন দলের একটা সামগ্রিক এজেন্ডা আছে, যা হয়ত, ঐ ব্যক্তির পুরোনো অবস্থানের অনেক কিছুর বিরোধী। ফলে তাঁকে দুম করে বিবিধ বিষয়ে নিজের অবস্থান পালটে ফেলতে হবে- এইটা সমস্যার। কিন্তু, এই সমস্যা পার্টি-পলিটিক্স নামক ব্যপারটারই। রাষ্ট্র পরিচালনের নীতি নিয়ে একটি পলিটিকাল পার্টি যেহেতু উঠে আসে, তাই তাকে বিভিন্ন বিষয়ে নিজের স্পষ্ট বক্তব্য রাখতে হয়। এইবার সেই পার্টিতে যোগ দিতে গেলে একজনকে পার্টির প্রায় সমস্ত বিষয় মেনে নিতে হয়। (নতুন দল করলে সমস্যা কিছু কমে, কিন্তু সেটা ব্যতিক্রম, আর ইউরোপ আমেরিকায় নতুন দল করা প্রায় গৃহযুদ্ধ করার মতন ব্যাপার)। আবার পার্টির ক্ষেত্রেও একজন ব্যক্তি সমস্যার। শুভেন্দু অধিকারীর নন্দীগ্রামের অর্জন তৃণমূলের অ্যাকাউন্টে গেছে, সেইটা অস্বীকার করা প্রায় কমিউনিস্ট পার্টির ট্রটস্কিকে অস্বীকার করার মতন কঠিন।
এইখানে আমরা দেখি, এই সমস্যাটা পার্টি-পলিটিক্স নামক ব্যাপারটারই। মানুষের আন্দোলন, অ্যাস্পিরেশন, পরিচিতি, ভাবধারা বিবিধ এবং অনেকক্ষেত্রে সেগুলো একটা লোককেই আলাদা আলাদা গোষ্ঠীতে ফেলে। সেখানে একটা পার্টিতে একজনকে ধারণ করা খুব কঠিন ব্যাপার। আবার পলিটিক্স যে পার্টি-নির্ভর, কর্মীরা নেতার ভরসায় জীবনপণ করছেন, কিন্তু নেতা নিজে পেশাদার- তিনি ভালো নিযুক্তি পেলে অন্যদিকে চলে যাবেন। এরকম নয়, যে আজকের সোশাল মিডিয়া আর চূড়ান্ত আপতিক মতপ্রকাশের অধিকারের যুগে এইটা উঠে আসছে। পলিটিক্সের এই সমস্যা আগেও অনেকবার মানুষ দেখতে পেয়েছে। বাংলার জাতীয় আন্দোলনের উন্মেষপর্বে একাধিক চিন্তাবিদ- স্বামী বিবেকানন্দ, ঋষি অরবিন্দ, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন কিম্বা রবীন্দ্রনাথ এই নিয়ে লিখেছেন। দেশের কথা প্রবন্ধে চিত্তরঞ্জন এই পলিটিক্স-কে বিদেশি জিনিস বলেছেন- খুব বিশদে লিখেছেন আইনসভার কার্যকলাপ কেন মানুষের নিজস্ব অ্যাস্পিরেশনকে ধরতে পারে না। অরবিন্দ তাঁদের গুপ্তসমিতির লড়াই ব্যর্থ কেন বোঝাতে বলেছেন, এটিও পলিটিক্স এবং এই পলিটিক্স ব্যপক মানুষের কাছে পৌঁছতে পারে না। পার্টি নিয়ে রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন ফর্মের লেখার কথা সর্বজনবিদিত। চিত্তরঞ্জন আর রবীন্দ্রনাথ, দুজনই এইটার একটা বিকল্প বলেছেন, যা হল সমাজকে শক্তিশালী করা যাতে রাষ্ট্রের পরিসর কমে আসে। সমাজ, এবং গ্রাম বা অন্য আঞ্চলিক ফর্মে তার ক্ষুদ্র ইউনিটগুলি নিজেদের বিভিন্ন অ্যাস্পিরেশন এবং সঙ্ঘাত রাষ্ট্রের মুখাপেক্ষী না হয়ে সমাধান করতে পারে, ফলে একটি রাষ্ট্রীয় পার্টির দরকার কমে আসে এবং পার্টির অ্যাসার্শন এবং পার্টিনেতৃত্বের পেশাদারদের বাদ দিয়ে মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই চলতে পারে। রবীন্দ্রনাথ একেই সমাজতন্ত্র বলেছেন। বলশেভিকরাও বিপ্লবের পরে সোভিয়েতকে ক্ষমতায়িত করে রাষ্ট্রের পরিসর কমাতে চেয়েছিল, যদিও পার্টির টিকে থাকার স্বার্থে তাদের পরবর্তীকালে সোভিয়েতের হাত থেকে ক্ষমতা কমিয়ে রাষ্ট্রের হাতে তুলে দিতে হয়।
সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় | ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ২১:৪৯101180ইউরোপ আমেরিকায় কিন্তু পার্টির ধরাবাঁধা এরকম কোনো অবস্থান থাকেনা।
ধরাবাঁধা অবস্থান মানে? জিওপি কনজার্ভেটিভ, ডেমরা লিবারেল -এরকম তো থাকেই
ধরাবাঁধা অবস্থান মানে? জিওপি কনজার্ভেটিভ, ডেমরা লিবারেল -এরকম তো থাকেই
সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় | ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:৪৮101185হ্যাঁ, কিন্তু বড় একটা স্পেকট্রামে। যেমন এবার বার্নি প্রার্থী হতে পারলে ডেমরা অনেকটা বাঁয়ে আসত। এখন বস্তুত সেন্টার রাইট।
আবার ট্রাম্প জেতায় জিওপি অনেক দক্ষিণে সরে গিয়েছিল। এতটা ডান আগে ছিলনা।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 202.142.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৮:৩৩101188হ্যাঁ , কিন্তু আমেরিকায় দুটি বই ল্যাজ না থাকার সমস্যা আছে , ব্রিটেনেও তাই , ক্যাপিটালিজম এর প্রয়োজনেই তাকে কন্টিনিউইটির উপরে জোর দিতে হয়েছে। এবং সেজন্য ই সেখানে এই মেজর পার্টির ফোরাম দখলের লড়াই চলে বিভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে। আমাদের এখানে বিভিন্ন জনতা দল, তৃণমূল , আপ, এআইডিএমকে, টিআর এস, জগন রা সম্পূর্ণ নতুন পারটি ক্ষমতায় এল খুব ই কমন। তাই আসপিরেশন এর জায়গা নেই বলে থিয়োরাইজ করে লাভ নেই।
দূর্বা মুখার্জী | 142.117.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৯:০০101189একটা দলের অনেক কিছুর সঙ্গে ব্যক্তির মতামত না মিলতে পারে, কিন্তু মূল চিন্তাধারার সঙ্গে তো অন্তত মিল থাকবে। তা না থাকলে রাজনীতিটা ধান্দাবাজি হয়ে যায়। মানে একজন বামপন্থী নেতা একটা বাম দল থেকে অন্য বাম দলে যেতে পারে, কিন্তু সম্পূর্ণ দক্ষিণপন্থী দলে কী করে যেতে পারে? এ আমার বোধের অতীত।
S | 2405:8100:8000:5ca1::6b6:***:*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৯:১২101190সব জায়্গায় আমেরিকার পলিটিক্স না ঢোকালেই খুশি হব, যদিও ট্রাম্পের উদাহরণটা বাজে হয়েছে। কারণ সব জায়্গার পলিটিকাল ডাইনামিক্স আলাদা।
কিন্তু পলিটিক্স ঠিক টিমবদলের মতন ব্যাপার নয়। যে লোকটা দুদিন আগে এনারসির বিরোধিতা করতেন, তিনিই আজকে এনারসি সমর্থন করছেন। তার মানে ১) তিনি আসলে জানেনই না যে কোনটা ভালো, ২) হি ডাজনট কেয়ার কোনটাতে মানুষের ভালো হবে, ৩) তার কোনও পলিসির প্রতি সমর্থন বা বিরোধিতার কোনই দাম নেই। আর এই তিনটে যোগ করলে যেটা হয় তা হল তিনি ওয়ার্থলেস পলিটিশিয়ান।
তাই সাধারণত লোকে অন্যসব কারণ দেখায়। দলটা দুর্নীতিতে ভরে গেছে, দলটা নিজের আদর্শ ত্যাগ করেছে, দলটা এক্জন বা একটা পরিবারের মালিকানায় চলে গেছে, দলের অমুক জিনিসটা আমি কিছুতেই মেনে নিচ্ছি না।
যতদুর মনে হচ্ছে শুভেন্দু ফিরে আসার অপশান খোলা রাখলো।
S | 2405:8100:8000:5ca1::c4:***:*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৯:১৬101191বিজেপি কিন্তু তিনোকে সেন্ট্রিস্ট রাইটিস্ট দল মনে করে।
আমার মনে হচ্ছে এই লেখাটিতে সোমনাথ অসাধারণ দক্ষতায় ব্যক্তি শুভেন্দু বা পার্টি তৃণমূলের সমস্যা ছাড়িয়ে একটি বড় কিন্তু গভীর পরিসরে আলোচনাটিকে নিয়ে গেছেন। তা' হল ব্যক্তিমানুষের চাহিদা ও আদর্শের সঙ্গে একটি দলের তাৎকালিক অবস্থানের সংঘাত।
এই যন্ত্রণায় কেউ দল ছাড়ে, বিপ্রতীপ অবস্থানে যায় বা সক্রিয় রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেয়। চিন-ভারত যুদ্ধের সময় কিছু কমিউনিস্ট নেতার এই সমস্যা হয়েছিল। একজনের কথা মনে পড়ছে -- কমঃ মণিকুন্তলা সেন। আরেকজন কাকদ্বীপ-তেভাগার অবিসংবাদী নেতা কংসারি হালদার।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 42.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ১১:২৫101193রঞ্জন দাকে গুরু র পাঠক লেখকের নতুন প্রজন্ম শুধু এই জন্যই মনে রাখলে দুঃখ পাব কারণ মনিকুন্তলা সেন আর কংসারি হালদার এর সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী র তুলনা করাটার মত বিচিত্র অবস্থান অকল্পনীয়।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 42.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ১২:০৯101194সোমনাথ ই বা কি ভেবে এই লেখাটি র অবতরণা করছেন বূঝতে পারছি না। লোকটি একটি ছোট থেকে বড় রেজিমেন্টের দলে গেছে। সমাজ সম্প্রসারণ করে রাষ্ট্রের ন্যুনতম সাংবিধানিক অধিকারে র কাঠামোটিকে রিগ্রেসিভ খাপ দিয়ে যারা দখল করার পথে এগিয়েছে তাদের দলে যোগ দিয়েছে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী জমিদার নন্দন সেটা কি করে এই জাতীয় ভাবনা চিন্তার প্রসঙ্গ আনে বুঝলাম ই না।
&/ | 151.14.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ১২:১৮101195অকল্পনীয়!!!! জাস্ট ভাবা যায় না। এ মানে কোনোভাবে ইয়েই করা যায় না।
রঞ্জনদা, জলি কাউলের আত্মজীবনী পড়লাম কিছুদিন আগে। এই পার্টি-পলিটিক্স ব্যাপারটার প্রবলেম খুবই বিশদে লিখেছেন। ব্যক্তিগত সম্পর্ক কীভাবে পার্টি নষ্ট করে দ্যায় সেটাও পাওয়া যায়।
বোধিদা, শুভেন্দু হাড় হারামজাদা সামন্তপুত্র এইসব ধরে নিলাম- আপনি এই দিকটা ভাবুন, একজন সাধারণ পার্টিকর্মী শুভেন্দুর নেতৃত্বে উদ্বুদ্ধ হয়ে খুব সৎ ভাবে একটা কজ-এর জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করল তৃণমূলের হয়ে, কদিন বাদে দেখল শুভেন্দু বিজেপিতে গিয়ে ঠিক অন্য কথা বলছেন। এরকম তো পার্টিব্যবস্থায় বহুবার হয়েছে, কমিউনিস্ট পার্টিগুলোও ব্যতিক্রম নয়।
এলেবেলে | 202.142.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:৪৯101203মুশকিলটা হচ্ছে যে শুভেন্দু নিজেই জানিয়েছেন গত ছ'বছর তিনি বিজেপির সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছিলেন। এখন এটা দলবদলের পরে বলছেন বলে সেটা নেহাতই অবিশ্বাস্য, তেমনটা মনে করার খুব জোরালো প্রমাণ এখনও অবধি পাওয়া যায়নি। নোটবন্দির সময়ে ভারতী ঘোষ ও শুভেন্দু মিলে কী কী কাজকম্মো করেছেন, সেটা অনেকেই জানেন। প্লাস নারদা-সারদা সংযোগ। যদি রেজ্জাক তিনোতে যেতে পারেন, সেই তুলনায় শুভেন্দু নেতা হিসেবে এবং দলটির প্রতিনিধি হিসেবে নেহাতই শিশু। জনগণ মানে অন্তত বাংলার জনগণ এবারে তাত্ত্বিক ক্যা-এনার্সি-রামমন্দির-প্যাটেলের মূর্তি ইত্যাদি প্রভৃতি বিবেচনা করে ভোট দেবেন না। কাজেই শুভেন্দু পাঁচদিন আগে কী বলেছিলেন আর পাঁচদিন পরে কী বলছেন, সেটাও কোনও ফ্যাক্টর হবে না। বরং বিজেপি সরকার ফর্ম করলে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। তখন রাজ্য দেখবেন মুকুল-শুভেন্দু। দিলীপরা চলে যাবেন কেন্দ্রে।
আর বাংলার রাজনীতিতে আয়ারাম-গয়ারাম নিয়ে খিল্লি করার দিন অনেক আগেই ফুরিয়েছে। এটাই দস্তুর এখন।
বাংলার মুসলমানের কাছে এন আর সি অবশ্যই বড় থ্রেট।
এলেবেলে | 202.142.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ২১:০০101205বাংলার নমশূদ্রদের কাছেও কম বড় থ্রেট নয়। কিন্তু সেই বিড়ালটিকে আপাতত ঝোলায় পুরে রাখা হবে।
কংগ্রেসকে আপনারা ৩০ বছর দেখেছেন-সিপিএমকে ৩৪ বছর- তিনোকে ১০ বছর, তাই অন্তত ৫টা বছরের জন্য আমাদের 'সেবা' করার সুযোগ দিন --- এটা বাংলার মানুষ ব্যাপক খেয়েছেন। দায়িত্ব নিয়ে বলছি।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 42.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ২১:৩৪101206"ব্যাপক খেয়েছেন", হ্যাঁ সেটাকে মাস্টারস্ট্রোক বললে মাথা নাড়বেন, না মিথ্যাচার আর ভয়ঙ্কর সম্ভাবনা হিসেবে ক্রমাগত প্রচার করে যাবেন সেটা অবশ্য লিবেরাল দের উপরে নির্ভর করছে।
নমঃশূদ্রদের কাছে নাগরিকত্ব খুব প্রয়োজনীয় ইস্যু। সিএএ-র উল্টোদিকে সেটা নিয়ে কংক্রিট বক্তব্য সিপিএম তৃণমূল কাউকে রাখতে দেখছি না।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 202.142.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ২২:১০101208সোমনাথ, দেখুন এতে অবাক হবার কিছু নেই , ফলওয়ার গান্ডু হলে সত্যি ই কিছু করার নেই। তার আত্মিক ক্রাইসিস সে হয় হয় নিজে সামলাবে , মতাদর্শগত ক্রাইসিস তাকেই সামলাতে হবে। মানুষের উপকারে লাগবে না ক্ষতি সাধন করবে ছোটো নেতাদের নিজেকেই ঠিক করতে হবে। আইডিওলোজিকাল মোবিলাইজেশন থাকবে। কোন পক্ষ গ্রহণ করবে, সেটা ইতিহাসের নিরীখে যথেষ্ট সুচিন্তিত হবে কিনা তাদের ব্যাপার। প্রতিষ্ঠানের দায় কম, তার কোন আত্মা আছে এরকম কোন খবর নেই। এই ধরেন আনন্দবাজার , ৪০ এর দশকে হিন্দু উচ্চবর্ণ জমিদারের পক্ষে, ৫০-৬০-৭০ দশকে সবচেয়ে রিয়াকশনারি শক্তি গুলোর সংগে থেকেছে, আর সেটার জাস্টিফিকেশন তৈরী করার সুযোগ পেয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে। ৭৭ er পরে সরকার বিরোধী হবার চেষ্টা করেছে রাজ্যে, কিন্তু খুব ফাটাফুটো রেকর্ড, মুর্খ এবং অতিচালাক বাম কিছু তাদের সংগে মিথোজীবি সম্পর্কে তৈরী করেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর রাজনীতির সবচেয়ে জনবিরোধী দিক গুলির প্রতি ই তাদের সবচেয়ে বেশি সমর্থন ছিল, স্ট্রাইক বিরোধিতা, অর্থনীতিতে ৯০ er পর থেকে বিগ ক্যাপিটালের মুখপত্র হিসেবে কাজ করেছে। এখন টেলিভিসন ও কাগজে বিজেপি সমর্থন, ইংরেজি কাগজে লিবেরালিজম, এটাই তাদের স্টেটেড পলিসি এবং গৃহীত অবস্থান এবং বিজনেস মডেল। ক্লিয়ারলি ইট ওয়ার্ক্স, সাফল্যের যে বড় জাস্টিফিকেশন সাংস্কৃতিক ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কি থাকতে পারে। কিন্তু ব্যক্তির এসব সুবিধে নেই, তার মরালিটির দায় তাকেই নিতে হবে। লোক কে কথা ন শোনাতে না পারলে কি আর করা যাবে , হ্যাঁ স্টোন ওয়াল্ড হবার অভিজ্ঞতা সেন্সিটিভ মানুষ মাত্রেই আছে, কিন্তু আমি সেন্সিটিভ বলে বিজেপি করলে সেটিকে ঢ্যামনামি বলা হবে, সংবেদনশীল ঢ্যামনামি এই আর কি।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 202.142.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ২২:২২101209বলা উচিত ছিল সরকার বিরোধী হতে পেরেছে, প্রতিষ্ঠান বিরোধী হওয়ার কোনো দায়, বা মানুষের কাজে লাগার দায় তাদের ছিল না। সেটা রাজনৈতিক কর্মীর না থাকাটাই আজকের রীতি, তবে আশা টা যেহেতু করা হচ্ছে তাই বলছি, সেই আত্মিক সংকট ব্যক্তিগত। কোন সংগঠনের পক্ষে সমস্ত সদস্যের সমস্ত অ্যাস্পিরেশন মেটাতে পারবে না। হ্যাঁ এটা বলা যায়, সব প্রতিষ্ঠান কিছু রাগবি বয় মারকা মালের হাতে চলে যায় (যাদের কে কপাল ভালো থাকলে মাঝে মাঝে কাঁচা দেবা ছাড় নিচু তলা লোকেরা বিশেষ কিসু করতে পরে না) , নতুবা সে সংগঠন, কাল্ট বা মেগালোম্যানিয়া নিরভরতা কাটাতে পারে না। কিন্তু তার রাজনইতিক , সামাজিক , ব্যাবসায়িক ভাগ নাই। মতাদর্শের ভাগ নাই।
এলেবেলে | 202.142.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ২২:৩৭101211"ব্যাপক খেয়েছেন", হ্যাঁ সেটাকে মাস্টারস্ট্রোক বললে মাথা নাড়বেন, না মিথ্যাচার আর ভয়ঙ্কর সম্ভাবনা হিসেবে ক্রমাগত প্রচার করে যাবেন সেটা অবশ্য লিবেরাল দের উপরে নির্ভর করছে।
খ, আপনার মনে হয় আমি সেই মাথা নাড়ার লোক? ক্যা নিয়ে যে লিফলেট বিলি করে? যে নিজের নাম ও পেশা গোপন না করে মফস্সলে থেকে বিজেপিবিরোধী লেখা লেখে একটার পর একটা? আমি স্রেফ গ্রাউন্ড রিয়্যালিটির কথাটা বলছি। বিশেষত বামদের দুজন যাওয়ায় এটার পালে আরও বাতাস লাগবে এবং তিনোদের লাইন লাগবে। না মিললে সবচেয়ে খুশি হব আমি নিজে।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 202.142.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ২২:৫০101212আমার সেটা আদৌ মনে হয় না, লিবেরাল দের ক্ষেত্রে দায়িত্ত্ব অনেকটা ই ব্যক্তিগত, সেটা বলেছি। ঘন ঘন চান্ক্য আর মাস্টারস্ট্রোক ইত্যাদি মুগ্ধ এপিথেট বাঙাঅলির প্রিয় প্রতিষ্ঠান গুলি দিয়েই থাকে, নানা কারণে, ব্যক্তি লিবেরাল দের সেই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে আর কি। ইতিহাস অনেক সময়ের আরাম দেয়, যখন প্রতিভাবানের আত্মিক সংকট এর পাবলিক চর্চা করার সুযোগ থাকে, এখন সে সময় সম্ভবত নয়।
মানুষ কে বোঝানোর দায় লিবেরাল ইন্টেলেকচুয়াল দের।
বোধিদা, " প্রতিষ্ঠানের দায় কম, তার কোন আত্মা আছে এরকম কোন খবর নেই।ঃ
আমি পার্টি সম্বন্ধেও এইটা বলছি। পার্টি-পলিটিক্সও একভাবে আত্মিকতাহীন কাঠামো, যার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র (বৃহত্তর প্রতিষ্ঠান নিজের মান্যতা বাড়িয়ে নেয়)। আগে দুই-পার্টি রাষ্ট্রের কথা হচ্ছিল, আপনি বললেন সেটা ক্যাপিটালিজমের নিজস্ব চলন। আমি বলছি পার্টি-পলিটিক্স জিনিসটাই ক্যাপিটালিজমের সাথে অঙ্গাঙ্গি জড়িয়ে থাকা ব্যাপার। প্রাক ক্যাপিটাল সমাজে পার্টির ভূমিকা কীরকম ছিল সেটা খুঁজে দেখার দরকার, কিন্তু আমরা নির্বাচন-পার্লামেন্ট দখল-রাষ্ট্রচালনার যে ছকটা দেখি, তা ক্যাপিটালিজমেরই ছক।
মাল্টিপার্টি সিস্টেম হয়ত কিছুটা তার থেকে অ্যাবরশন। আমার তো ভারতের পার্টিগুলিকে সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যের লিঙ্ক মনে হয়। পার্লামেন্টে আইন পাশ ও জনগণের সামাজিক চেতনা দুটোকে একসঙ্গে কিছুটা বহন করে। আর তাই পার্টি ভাঙে, আইডেন্টিটি মূলক পার্টি তৈরি হয়, ইত্যাসসি।
এলেবেলে | 202.142.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:১৪101214লিবেরালরা কাদের বোঝাবেন? তাঁদের সেই অবধি পৌঁছনোর পরিকাঠামো আছে? লোকে দেখছে সিপিএম থেকে লোকে বিজেপিতে যাচ্ছে, তিনো থেকে যাচ্ছে, এর পরে কংগ্রেস থেকেও যাবে - তার মানে কী দাঁড়ায়? মানে ভায়াবল অল্টারনেটিভই হোক বা যে আসে আসুক তিনো যাক মার্কা লাইনই হোক - ঘুরে ফিরে পাল্লা সেই বিজেপির দিকেই ঝুঁকে। প্লাস নতুন হুজুগ কেন্দ্রে-রাজ্যে এক সরকার একবার হোক না। তা তাঁরা কি ত্রিপুরা দেখতে পাচ্ছেন না। এঁদের কাছে লিবেরালদের গ্রহণযোগ্যতা আছে? থাকলে কতটা আছে?
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 42.***.*** | ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:২৩101215কিন্তু যে কোন পারটিকে আইসোলেট করলে, গোটা ব্যবস্থার মধ্যে তার ডেমোক্রাটিক আকাউন্টেবিলিটি তে প্রতিষ্ঠানের অন্তত খাতায় কলমে আছে তাকে দুর্বল করছেন। এনজিও , করপোরেট, মিলিটারি , সিকিউরিটি এস্টাবলিশমেন্ট, নিউ মেডিয়া যেগুলো নব্য ন্যাশনালিজমের আইকন তার প্রত্যেককে ই আলোচনায় আনা জরুরি, আকাউন্টেবেলিটি প্রশ্নে। আর টি আই শুধু সরকারি সংস্থায় কেন প্রযোজ্য হবে।
সিএস | 49.37.***.*** | ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:১১101216মোদীকে সুযোগ দিন বাংলার জন্য কিছু করার, সেটা বলা হবে। ক্রমশঃ মোদী বড় না মমতা বড়, প্রচার সেখানে যাবে।
সেন্ট্রাল স্কীম ভালো আর রাজ্য স্কীম কোরাপ্ট, সেই নিয়েও তর্ক ও প্রচার চলবে।
ক্যা নিয়ে কিছু একটা গাজর ঝোলানো চলবে, মুসলমান ভীতি নিয়ে যেখানে যতখানি দরকার সেরকম প্রচার চলবে।
আমার ধারণা, তিনোরা কী করেছে আর মোদী-বিজেপি কত কী করছে ও করবে,মূলতঃ ভোটটা সেই নিয়ে হবে। সেখানে শুভেন্দুর দলবদলের নৈতিকতা ইস্যু হবে কিনা সন্দেহ আছে।
মোদী কী ভুল কিছু করছে, তিনি কী কোরাপ্ট সেরকম চোখে পড়ার মতো প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। ডিমনির পরেও না, লকডাউনের পরেও নয়।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 42.***.*** | ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:১১101217বিজেপিকে ঠেকাতে না পারলে তাইলে আমরা কম্পলিসিট নতুবা বাজে লিবেরাল।
সিএস | 49.37.***.*** | ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:১৫101218প্রমাণ পাওয়া যায়নি সেটি আমার মত নয়, মোদী বিজেপির যে কোন ক্ষতি হয়নি, সেই দিক দিয়ে সিদ্ধান্তটি।
এলেবেলে | 202.142.***.*** | ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:১৫101219আপনারা লিবেরাল হিসেবে যার যার গোঁফে তা দিতে থাকুন আর নিজেদের ক্ষমতা সম্পর্কে নির্মোহ হতে শিখুন। বাংলার মানুষ ফেসবুকের পোস্ট আর ওয়েব ম্যাগাজিনের আলোচনা পড়ে ভোট দেন না - এটা যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন তত মঙ্গল।
বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 42.***.*** | ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:২৭101220ফ্যাসিজম কে কোরাপ্ট বলা হবে না বিশুদ্ধ ফ্যাসিজম বলা হবে , কোনটাবললে মোদীর পক্ষে সম্মানজনক বলে ধরা হবে বা বাংলার জনগনকে বোঝানো হবে বলা মুশকিল, এটুকু বলা যেতে পারে তার আমলে তার ফেভারিট ফ্যামিলি বিজনেস গুলি ফ্লারিশ করেছে, শূন্য অভিজ্ঞতা য় ডিফেন্স কনট্রাক্ট পাওয়া গেছে, বনদর রেলওয়ে এয়ারপোর্টে র দখল নিয়েছে প্রাইভেট প্লেয়ার রা তাদের ফেবার করে পলিসি বানানো হয়েছে। করোনার বছরে মন্দির, নতুন পার্লামেন্ট ভবন তৈরির পরিকল্পনা অনুমোদন পেয়েছে যখন পরিযায়ী শ্রমিকরা শুধু না হাজার হাজার লক্ষ শ্রমিক ব্যবসখয়ী সমস্যা য় অথচ তার ফেকু জীবনে ডিসট্রাকটিভ প্রচেষ্টাই জারি থাকবে, সবচেয়ে বড় কথা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হ ওয়া সত্ত্বেও তিনি কোন বিষয়েই ব্যক্তিগত ভাবে কখনোই দায়ী হবেননা এটা তাঁর নয় মেডিয়ার কৃতিত্ব। আমরা প্রতিমুহূর্তে সেই ন্যিরেটিভকে প্যাঁক না দিলে কিছু টা আমাদের দায়িত্ব।