
বাংলা ভাষার কয়েকটা ওয়েবিনার দেখলাম। কোথাও কেউ পুরো বাংলা বলতে পারে না। পরিভাষা-টাষা নয়, এমনি একটা গোটা বাক্য বলতে গিয়ে অ্যান্ড, সো, এইসব ইংলিশ বলছে লোকজন। পণ্ডিত লোক সব। তাঁরা ইংলিশ শব্দ উচ্চারণের সময়ে এমন মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব আরোপ করছেন যাতে পাক্কা ইঙ্গ-মার্কিন হয়। সব মিলিয়ে এক দিকে হাসি পাচ্ছে বটে, কিন্তু বিষণ্ণও লাগে।
এদিকে গর্গ তো খালি হিন্দির বিরুদ্ধে, ইংলিশ সাম্রাজ্যের সূর্য যে সর্বার্থে মধ্যগগনে, সে ব্যাপারে দৃষ্টিআকর্ষণ করলে, নিদারুণ যুক্তি দিচ্ছে।
বাংলাটা কীরকম ক্রমশ আলংকারিক ব্যাপার হয়ে যাবে মনে হয়। লোকজন আর্টিকেল আর ফিচার বুঝবে, প্রবন্ধ আর নিবন্ধ লিখবেই না মনে হয়।
একক | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:০৮97688যাঁরা বলচেন, মানে মিশ্র ভাষায়, নতুন না পুরোন? মানে, চলিত ভাষায় ইংরেজি মিশে থাকার একটা সমস্যা আছে অস্বীকার করার জায়গা নেই, হঠাত ওয়েবিনার করতে গেলে, আমার ও তাই হবে, যতই সতর্ক থাকি। যাঁরা অভিগ্য সেখানেও কি একই দোষ?
একক | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:১৬97689এই সময়ে, দু'জন মাত্র মানুষকে,শুনেচি আগাগোড়া বাংলায় বলতে। চন্দ্রিল ও চিন্ময় গুহ। চিন্ময়বাবু তার মধ্যে এক্টু বেশি স্টাইলবদ্ধ, চন্দ্রিল একদম স্বচ্ছন্দ বাংলা বলেন।
dc | 122.164.***.*** | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:৫০97693খেয়াল করে দেখলাম আমিও সবসময়েই বাংলা আর ইংরেজি মিশিয়ে বলি। মানে শুধু ওয়েবিনার না, এমনি কনভার্সেশানেও। আমার যেসব তামিল, তেলুগু, কন্নড়, হিন্দি ইত্যাদি বন্ধুরা আছে তারাও তাই করে।কিন্তু তাতে সমস্যা কিসের? একদম পিওর বাংলায় কথা বলতে হবে, এরকম দাবি করলে মুশকিল।
একদম খাঁটি বাংলায় কথা বলতেই হবে, এমন দাবিদাওয়া করে লাভ নেই। তবে সচেতন হব নাকি হব না, এইটে আমার জিজ্ঞাসা। যতটা ধ্যান সঠিক ইঙ্গ উচ্চারণের দিকে দেয়া হয়, তার কিছুটা ধ্যান দিলে অ্যান্ড, সো ইত্যাদি শব্দ পরিহার করা সম্ভব। এই উত্তরটা লিখতে গিয়ে, আমি সচেতন হয়ে পিওর এর বদলে খাঁটি শব্দটা ব্যবহার করলাম। কিন্তু এটাও ঘটনা যে, একক যেমন বলেছে, আমাকে ওয়েবিনার করতে বললে আমিও ওর চেয়ে বেশি ইংরেজি শব্দই ব্যবহার করব। সম্ভবত। এবার আমি যাঁদের ওয়েবিনারের কথা বলছিলাম, তাঁরা মূলত অধ্যাপনা করে থাকেন। তাঁদের নিয়মিত ক্লাস-টাস করানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাঁরাও যদি এইসব 'এক্সপ্রেশন' ব্যবহার করেন, তাহলে একটু শঙ্কার ব্যাপার হয়।
একক, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ও খুব স্বচ্ছন্দ বাংলা বলেন।
-- | 182.76.***.*** | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১২:২৯97698তাড়াতাড়ি লিখতে হলে তুমিও মনোযোগ না লিখে ধ্যান লিখছ। আমরা ধর দিনে দশবারো চোদ্দ ঘন্টা কসমোপলিটন পরিমণ্ডলে অফিস কলিগদের সাথে বা বিদেশি ক্লায়েন্টদের সাথে ভাটাচ্ছি। প্রথম এক্সপ্রেশনটা ইংরিজিতে আসাটাই তো স্বাভাবিক। চন্দ্রিল সঞ্জয়দার ক্ষেত্রে এই কাজের ক্ষেত্রগুলো তো অ্যাডভান্টেজ। এবার লিখতে গেলে তাও একটু সময় নিয়ে ভেবে বাংলা শব্দটা খুঁজে নিয়ে লেখা যায়,কিন্তু বলার সময় ইম্মেডিয়েট একস্প্রেশনটাকেই লুফে নিয়ে এগোতে হবে সময় নেওয়া মানেই ব্যপারটা গেঁজে যাবে।
বিগত দশকের শুরুতে লিখেছিলাম- https://bangalnama.wordpress.com/2010/02/21/banglabhasha-2010/
আমি কি মনোযোগই লিখতে চেয়েছিলাম! আমি নিশ্চিত নই। ধ্যান শব্দটা কিন্তু হিন্দি শব্দ নয়। হিন্দিতে কিছু তৎসম শব্দ অধিক ব্যবহৃত বলে সেগুলো পরিহার করার আমি মোটেও পক্ষপাতী নই। এমনকী বাংলায় প্রবেশ করে আসা হিন্দি শব্দ ব্যবহারেও আমার ছুঁৎমার্গ তত নেই। সেটা আমি ভাষার চলমানতার অঙ্গীভূতই মনে করি।
যেমন হিন্দি বলে অনেকেই লাগু শব্দের ব্যবহার নিয়ে খুব আপত্তি প্রকাশ করেন। আমি নিজে লাগু শব্দ ব্যবহার করি, করবও। আবার কেন কী টাইপের শব্দবন্ধ ব্যবহার করতে দেখলেই বোর্ডে নাম লিখে গর্গ ঠাকুরের কাছে বলব নিল ডাউন করিয়ে দিতে।
একক | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:২৪97701সোমনাথের লেখাটা ভালো লাগল। অনেক গুলো আলচনার পরিসর আচে। যেমন
" আজকের লেখকরা ট্রমা, চ্যাটরুম, রিসেশন, হায়ারিং এন্ড ফায়ারিং, অনসাইট, এলজিবিটি-কে বাংলা অক্ষরে লিখবার সময়ে দু’বার ভাবেন না, অভিধানে মাথা ঠোকেন না অধিবিদ্যা জাতীয় পরিভাষা খুঁজে পেতে।
একক | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:২৮97702তবে হ্যাঁ, লেখার বা বলার সময় "সো ", " হেন্স", 'লাইক" এসব পরিহারের চেষটা করি।
dc | 122.164.***.*** | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:৩৪97703আমার মনে হয় এগুলো যার যার নিজের ওপরেই ছেড়ে দেওয়া ভালো। কেউ হয়তো এক্সট্রা পাকামো করে সো অ্যান্ড গুঁজে দেন, কেউ ওভাবেই কথা বলতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন, কেউ আবার বিশুদ্ধ বাংলায় কথা বলে আরাম পান। পসন্দ আপনা আপনা আর কি।
তাপস যে মনোযোগ বাড়াবার কথা বলেছে সেটাকে আমি সমর্থন করি। সম্পূর্ণ ইংরিজি বা অন্যভাষার শব্দবর্জিত শব্দ / বাক্যই শুধু বলব এটা খুব চাপের - মস্নে অসম্ভব না হয়তো, কিন্তু সর্বক্ষণ খেয়াল রাখতে হলে কথার স্বতঃস্ফূর্ততা নষ্ট হবার সম্ভাবনা। আমার মতে যেসব শব্দ স্বাভাবিকভাবে আসছে (টেবিল চেয়ারের মত আত্তীকৃত শব্দের কথা বলছি না) সেগুলো আটকানোর চেষ্টা করে লাভ নেই। কিছু মিশ্রণ অত্যন্ত দৃষ্টিকটূ এবং শ্রুতিকটূ। সমস্যা হল কটূত্ব ব্যক্তিনির্ভর - ফলে আমার কানে যেটা কটূ শোনায় সেটা আরেকজনের কানে স্বাভাবিক লাগতেই পারে। ফলে নিজের কাছে সৎ থাকা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু কেউ নিজের কাছে সৎ থাকছে কি না বা তার নিজস্ব সততার সংজ্ঞাটা কী সেও তো আমাদের বোঝার উপায় নেই। তবুও চাইলে ওই তাপস বর্ণিত "অ্যান্ড", " সো", "আই থিঙ্ক", " শীট", "ফাক" জাতীয় অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার এড়িয়ে চলা যায়। আর যেটা করা যায়, সেটা হচ্ছে আরেকজন এসব বলে গেলে তাকে নিয়ে খিল্লি। যদি বেশী লোক খিল্লি করেন তবে যারা বলেন তারা একটু বুঝে বলবেন। যদি বেশী লোক যারা খিল্লি করছে তাদের নিয়েই খিল্লি করেন তবে যারা বলেন তাদেরটাই আইনসিদ্ধ, মানে গোদা বাংলায় যাকে লেজিটিমেট বলে আর কি, তাই হয়ে যাবে।
"খিল্লি" কি বাংলা শব্দ?
একক | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:৪০97706ওহ ফাক বলা ছেড়ে দিতে পারি। বাপি ও মাম্মাম লালিতরা তখন " গাঁড় মেরেচে! " শুনে, বস্তির ছেলে ভেবে তেড়ে আসবেন না ত? বস্তির ছেলে ভাবা নিয়েও ডন্ট গিভ আ ফাক থুড়ি বাল্টা ছেঁড়া যায় ; কিন্তু তেড়ে এলে অন্যরকম ভাবতেই হবে, কারন যতই হোক, উই গট টু ফাক এরাউন্ড থুড়ি চুদিয়ে বেড়াতে হয়, থ্রু দিস ভদ্রলোক ক্লাস, আর বান্ধবীকে " ফাক অফ " বল্লে তবু মডিউলেটেড কন্ঠে " ওশোভ্য" শুনতে হয় বা তাও হয়না, " তরে আমি সুদি নাহ " বলে, শুখা শুখা পারভার্ট শোনা এই প্রৌঢ় বয়েসে বেশ চাপের ঃঃ(((
একক, অনসাইট বলো বা অফসাইড এগুলো পরিভাষা। নিউজরুম বা ব্রেকিং নিউজ ধরনের। কিন্তু অধিবিদ্যাকে সেখানে ফেলা উচিত কিনা, সেটা নিয়ে আমার ধন্দ আছে। মেটাফিজিক্সের বাংলা অধিবিদ্যা, এমপিরিসিজমের বাংলা অভিজ্ঞতাবাদ, মায় পলিটিক্সের বাংলা রাজনীতি, এসব ব্যবহার করা হয় বটে, কিন্তু বড় বেশি অর্থসংকোচন বটেই, এমনকি, অর্থান্তরও ঘটে যায় বলে মনে হয়।
পশ্চিমা মডার্নিটি আর ভারতীয় আধুনিকতার ধারণাও এক নয়।
ডিসি, ছেড়ে তো দেয়াই আছে। তবে মনে হয়, পছন্দ তো ওরকম নিরালম্ব বায়ুভূত নয়, সে পছন্দের রাজনীতি/সমাজনীতি আছে। সেগুলো নিয়ে আলোচনা বা তার সূত্রপাত আর কী!
সোমনাথ, জনপ্রিয়তার নিরিখে নয়, তবে বাংলা ভাষায় সমকালীনতাকে ঢুকিয়ে দেয়ার জন্য, অজিত চৌধুরী ও দীপংকর দাস/ত্রিদিব সেনগুপ্তকে সেলাম করা উচিত। লেখাটা বেশ ভাল।
রৌহীন, খিল্লি করলে কিছু উপকার হয়? বা নেমিং শেমিং করলে?