এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • দিল্লির দাঙ্গা, আইওয়াশ, আসলে লক্ষ্য বাংলা?

    Suvendu Debnath লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০১ মার্চ ২০২০ | ৭২৫৬ বার পঠিত
  • কাল একটা নাম প্রকাশ হতেই রে রে করে তেড়ে এসেছিল কিছু চাড্ডি, সে আসবেই জানা কথা। কেউ কেউ তো প্রমাণ না দিয়ে লিখেছি বলে পুলিশ টুলিশের ভয়ও দেখালো। তা সে দেখাক গে। কি আর করা যাবে। ধরে ফরে নিয়ে গেলে কদিন বিনি পয়সায় লপসি খাওয়া যাবে। কিন্তু একটা প্রশ্ন, নাম ভুল, নামের মধ্যে আমরা হিন্দুত্ব খোঁজার চেষ্টা করছি সেসব মেনে নিলাম। কিন্তু প্রশ্নটা হলো ঠিক নির্বাচনের পরপরই দিল্লির এই দাঙ্গা কেনো? আর দাঙ্গাই যদি হলো তাহলে বেছে বেছে ইস্ট দিল্লিতে কেনো? ইস্ট দিল্লির চেয়ে অনেক বেশি মুসলমান দিল্লির অন্যান্য অংশে আছে, সবচেয়ে বড়ো কথা শাহিনবাগেও হতে পারত দাঙ্গা, কিন্তু না হলো ইস্ট দিল্লিতেই। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, ভোট পরপরই দাঙ্গা কেন? দাঙ্গার কারণ আদৌ দিল্লি তো, দাঙ্গার মোড়কে আসল লক্ষ্যটা পশ্চিমবঙ্গ নয়ত? একটু খতিয়ে দেখা যাক না হয়।

    দিল্লির যে অংশটায় দাঙ্গা লেগেছে অর্থাৎ, সীলমপুর, শাহদারা বা শাদরা, খেজুরি, ভজনপুরা, মৌজপুর, গান্ধীনগর, এই পুরো অঞ্চলটা হলো উত্তরপ্রদেশ সীমান্ত। অর্থাৎ যাতায়াতের সুবিধা খুব সহজ। এক স্টেট থেকে মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে সহজেই ঢুকে পড়া যাবে ভিন রাজ্যে। এ তো গেলো ঢোকা বেরনোর রাস্তা, কিন্তু দাঙ্গার কারণটা কী?

    হিসেবের কচকচানি

    লালকেল্লার শেষ প্রান্ত থেকে আপ টু আনন্দবিহার, গাজিয়াবাদ বর্ডার, সীমাপুরী ওদিকে দিল্লির আইটিও ব্রিজ ক্রস করার পর সীমাপুরি বর্ডার পর্যন্ত এই বিস্তৃর্ন এলাকার নাম ইস্ট দিল্লি বা ট্রান্স যমুনা বা লোকাল ভাষায় যমনা পার। ২০১১ এর সেনসাস অনুযায়ী এখানকার জনসংখ্যা ১৭.০৯ লাখ অর্থাৎ পুরো মহারাষ্ট্রের টোটাল জনসংখ্যার ১৬.১৮ শতাংশ মানুষ এখানে বাস করেন। ২০০১ সেনসাসের সময় ছিল জনসংখ্যা ছিল ১৪.৬৪ লক্ষ অর্থাৎ মহারাষ্ট্রের জনসংখ্যার ১০.১৯ শতাংশ। ২০১১য় ইস্ট দিল্লির জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭.০৯ লাখ। ১৯৯১ এর রেকর্ড অনুযায়ী ৪৩.০৬ শতাংশ বেড়েছে এবং ২০১৯ পর্যন্ত মোটামুটি দাঁড়িয়েছে ২২ লাখে। ১৯৬৭তে ইস্ট দিল্লি লোকসভা গঠিত হওয়ার পর প্রথম বিধায়ক হন হরদয়াল দেবগন ভারতীয় জনসংঘের প্রার্থী হিসেবে। তারপর থেকে কখনো কংগ্রেস কখনো বিজেপি। তবে বিজেপিই বেশিরভাগ জিতেছে এখান থেকে। মাঝে কংগ্রেসের অরবিন্দর সিং লাভলি এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের ভাই সন্দীপ দীক্ষিত এটিকে কংগ্রেসের গড় হিসেবে তৈরি করলেও টেকেনি বেশিদিন। ২০১৪ হাতছাড়া হয়ে যায়। এখন এখানকার সাংসদ ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর।
    দিল্লির সবচেয়ে ঘিঞ্জি এলাকা এবং জনবহুল এলাকা এই পূর্ব দিল্লি। এর মধ্যে প্রায় ২২ শতাংশ বাসিন্দা বাঙালি সরকারীভাবে। বেসরকারীভাবে সংখ্যাটা আরো বেশি। এর মধ্যে ১৬ শতাংশ বাঙালি মুসলমান। একদিকে আইটিওর পর থেকে লক্ষ্মীনগর, পটপড় গঞ্জ, করকডুমা হয়ে ওদিকে শকরপুর, প্রীত বিহার, জগতপুরী, লাল কোয়ার্টার, কৃষ্ণানগর হয়ে গান্ধী নগর পর্যন্ত, অন্যদিকে আইএসবিটি থেকে শুরু করে যমুনাপার, শাস্ত্রী পার্ক, সীলমপুর, খেজুরি খাস,মৌজপুর, শাহদরা, ওয়েলকাম দিলশাদ গার্ডেন, হয়ে আনন্দবিহার, সীমাপুরী বর্ডার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা জুড়ে এই বাঙালিদের বাস। এদের কাজ মুলত এক্সপোর্ট ফ্যাক্টরি অর্থাৎ জামা কাপড়ের ফ্যাক্টরিতে কাজ নয়ত সোনা রূপোর গয়না বানানো। আর এই বাঙালিদের পড়ার জন্য দিল্লির সবচেয়ে পুরোনো বাঙালি স্কুল কিন্তু আইএসবিটিতেই রয়েছে। একটা কথা এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো (দিল্লির বাঙালিদের গায়ে লাগতে পারে), সিআর পার্ক, সফদরজঙ্গ, বসন্ত কুঞ্জ, বসন্ত বিহার, গোবিন্দপুরী, কালকাজি হয়ে বদরপুর বর্ডার পর্যন্ত যে বাঙালির বাস, তারা কিন্তু সরাসরি উদ্বাস্তু হয়ে আসা এবং পুনর্বাসন পাওয়া বাঙালি। বাংলার সঙ্গে এদের যোগাযোগ ক্ষীণ, শুধু মাত্র আত্মীয়দের সঙ্গে। কিন্তু এই পূর্ব দিল্লির ক্ষেত্রে তা নয়। এরা ক্রমাগত পশ্চিমবঙ্গ থেকে কারিগর হিসেবে আসছে, নিয়মিত বাড়িতে যাতায়াত করে, টাকা পাঠায়, বলা ভালো একদম কাজের সূত্রে তারা এখানে, এবং নিয়মিত কারিগর সাপ্লাইয়ের চেনটা চলেই আসছে। ওদিকে করোল বাগ আর চাঁদনি চক ধরছি না, ওখানে শুধুই সোনারূপোর কারিগর আছে। এ তো গেলো হিসেব নিকেশের কচকচানি। এবার একটা গল্প শোনা যাক, একটা ছোকরা গল্প।

    ছোকরা গল্প

    আমাদের বাংলা ভাষায় যেমন ছেলে ছোকরা শব্দটি আছে, এটা কিন্তু সেই ছোকরা নয়। এখানে এক্সপোর্ট লাইন বা জামাকাপড়ের ফ্যাক্টরি বা সোনা রূপোর কাজে ছোকরা শব্দটির অর্থ হলো বিনি মাইনেতে শুধু খাওয়া পড়া হিসেবে নিয়ে যাওয়া খিদমতগার বা হেল্পার। পশ্চিমবঙ্গের, হুগলী, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, উত্তর ২৪ পরগণা, বীরভূম, এবং সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম গুলো থেকেই কারিগরের দিল্লি যায়। এবার কারিগর হওয়ার প্রথম প্রসেস হলো ছোকরা। ধরুন কোনো এক গ্রামের কেউ দিল্লিতে এসে এক্সপোর্ট ফ্যাক্টরি বা সোনা রূপোর কারিগর হয়েছে। এবার সে যখন বছরান্তে বাড়ি যায়, তখন গ্রামের বহু মানুষ আসে তার বাড়িতে তদ্বির করবে। যাতে সেই কারিগর তাদের ছেলেদের কাজ শেখাতে নিয়ে যায়। ছোকরার বয়স হতে হবে ১৫র নীচে। মূলত ১০ থেকে ১৩ বছর বয়েসী বাচ্চা ছেলেই আদর্শ ছোকরা হতে পারে। চুক্তি হয় তাকে টিকিট কেটে খরচা করে নিয়ে যাবে বড়ো কারিগর। ২ বছর পর্যন্ত বাড়ি আসতে পারবে না সেই ছোকরা (বাড়ি গেলে তার কাজে মন লাগবে না, মানিয়ে নিতে পারবে না ওই অস্বাস্থ্যকর কাজের শিডিউল আর পরিবেশে, বাড়ির জন্য মন কেমন করবে তাই), তবে বাড়ির লোক ফোন করতে পারে মালিকের ফোনে। এছাড়াও সপ্তাহে ৫০ টাকা করে পাবে, তাতে তার চুল কাটা, সাবান শ্যাম্পু ইত্যাদি এবং সকালের ব্রেকফাস্ট (চলতি ভাষায় নাস্তা)। এছাড়াও দু বেলা খেতে পাবে, বছরে দু বার জামা কাপড় পাবে এবং ছোটো খাটো রোগ বিসুখের দায় ওই বড়ো কারিগরের। ২ বছর পর প্রথমবার বাড়ি যেতে পারবে সে, মালিকের টাকায়, তখন তাকে মালিক জুতো জামা, অ্যাটাচি কেস সব কিনে দেবে, এবং বাড়ির লোকেদের জন্য কিছু উপহার সামগ্রি এবং কিছু টাকা হাতে দেবে সেই সঙ্গে দেবে যাওয়া আসার টাকা। এবার ছোকরার কাজ কি? প্রথম এক বছর মালিকের অর্থাৎ যে তাকে নিয়ে গিয়েছিল তার হাত পা টেপা, মালিকের অন্যান্য কারিগরদের খিদমত খাটা, রান্না করা (মালিকের আন্ডারে প্রায় ১০ ১২ ফুরনের কারিগর বা মাইনের কারিগর আছে তাদের), কারেন্ট চলে গেলে মালিককে হাওয়া করা, সুতো এগিয়ে দেওয়া বা কাজের যন্ত্রপাতি এগিয়ে দেওয়া, জামা কাপড় কাচা ইত্যাদি। ভুল হলেই জুটবে চড়চাপড়, এমনকী বিড়ি সিগারেটের ছ্যাঁকা অব্ধি। যদি ওই যন্ত্রণা সহ্য করেও কেউ টিকে যায় (বেশিরভাগই টিকে যায় কারণে এদের কই মাছের প্রাণ, মরে হাতে গোনা কয়েকজন বা বড়ো সড়ো অসুখে পড়ে), তাহলে পরের বছর সে মূল কাজে হাত দিতে পারে। অর্থাৎ বাকি এক বছর সে অল্পস্বল্প সেলাই শিখবে, ববিনে সুতো ভরবে, মালিক যখন ঘুমোবে তখন বেকার টুকরো কাপড়ে সেলাই করা শিখবে। সোনা রূপোর কারিগর হলে, প্রথমে চুঙ্গি কাটা, (হালকা সূক্ষ্ম টেন্সারের মতো ব্লেড নিয়ে মোটা মোটা তামার পাত প্রথমে গোল করা তারপর চার মাথা বের করে কাটা, কলেট (বড়ো চুঙ্গি) পোড়ানো এবং গোল করা, স্লেটে কালো মোম লেপা, তার উপর মালিক ডিজাইন ছাপ মেরে দিলে সেই কলেট, চুঙ্গি, তামার ডাঁট, ইত্যাদি দিয়ে সেই ডিজাইন অনুযায়ী স্লেটে বসানো। এবং তারপর হয়ে গেলে তার উপর প্ল্যাস্টার প্যারি্স গুলে দেওয়া, ডিজাইন সমেত সেই প্ল্যাস্টার অফ প্যারিস শুকিয়ে তোলা, তারিপর অ্যাসিড জল দেওয়া এবং ফিটকিরি দেওয়া যাতে সন্ধ্যেবেলা হলে মালিক দুপুরের ঘুম ঘুমিয়ে উঠে সেই ডিজাইন ঝালাই করতে পারে পান দিয়ে (ঝালাই করতে লাগে)। এরপর ৬ মাসে পরে নিজেই নানা ডামি ডিজাইন করে ঝালাই করতে হবে, যাতে ঝালাই করতে গেলে পান সুক্ষ্মভাবে লাগে বোঝা না যায় অর্থাৎ ঝালাইয়ে হাত পাকাতে। ২ বছরের মাথায় সে মোটামুটি এই কাজে দক্ষ হয়ে যায়। এবার আসি এদের খাবার দাবারে। সকালের নাস্তায় বাঙালি দোকান থেকে ওজনে ছেঁড়া পরোটা ১০০ গ্রাম সঙ্গে ঘুঘনি, বা মুড়ি ঘুগনি, বা পকোড়া মুড়ি। দুপুর ৩টে নাগাদ ভাত ডাল সবজি। সন্ধেতেও একই টিফিন, আর রাতেও একই ডিনার। সপ্তাহে একদিন ডিম, একদিন মাছ একদিন মাংস। নইলে বেশিরভাগই সোয়াবিনের তরকারি। দু বছর পর কাজ শিখে গেলে বাড়ি ঘুরে এসে সে হয়ে যাবে ফুরন বা মাস মাইনের কারিগর। এত কাজের উপর এত মাইনে। বাড়ি থেকে ফিরে এসে বছর দেড়েক সে মাস মাইনের কারিগর থাকবে, তারপর সেও কারিগর হয়ে যাবে, তারও ছোকরা আনার অধিকার জন্মে যাবে, সেও হয়ে যাবে একধরনের সেমি মালিক। এইভাবেই চেন সিস্টেম চলে আসছে কি জামা কাপড়ের ফ্যাক্টরি কি সোনারূপোর কাজের ক্ষেত্রে। জামা কাপড়ের ফ্যাক্টর বা তামার গয়নার কাজের চেয়েও মারাত্মক হলো সোনার কাজ। ছোকরা হোক বা মালিক, হাগতে গেলেও আগে একটা বালতিতে হাত ধুতে হবে। যতবার সিট ছেড়ে উঠবে ততবার হাত ধুতে হবে। মালিক চুল কাটবে সেলুনে, কিন্তু ছোকরাদের চুল মালিক নিজেই কাটবে। সবার জামা প্যান্ট কাজের আলাদা সেগুলো ধোয়া যাবে না। বছরান্তে ওই চুল, ছোকরা এবং কারিগরদের বিছানা পত্তর, ওই হাগার জল , হাত ধোয়ার জল এবং কাজের জামাকাপড় বিক্রি হবে। প্রত্যেকের জল আলাদা। কারণ সোনার গুড়ো। ওই থেকে যা পাওয়া যাবে তা যার জিনিস তার, শুধু ছোকরার বেলায় তা মালিকের। কোনো কোনো মালিক হয়ত ওই জল বিক্রি করে ২০টা ৫০টা টাকা দয়া করে ছোকরাকে দিয়ে দেয় কখনো কখনো।
    আমার বাবা ছিলেন এক সময় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের নামকরা ঠিকাদার। সেই বাবাই যখন ব্যবসায় মার খেয়ে হতাশায় ডুবতে ডুবতে ৫০ বছর বয়েসে দিল্লি চলে যান, তখন এমনই এক তামার জুয়েলারির মালিকের কাছে কাজ নেন ম্যানেজার হিসেবে। পরে তিনি কাজ বুঝে নিয়ে কিছু টাকা দিয়ে নিজেই কারিগর জোগাড় করে ব্যবসায় নামেন। যদিও আজো তিনি নিজে বানাতে পারেন না কোনো গয়না। আমি ১৯৯৯ সালে যখন পাকাপাকিভাবে দিল্লি যাই এই বাবার কাছেই প্রথম ছোকরা দেখি। আমাকেও থাকতে হত সেই ছোকরাদের সঙ্গে। ব্যক্তিগত সেই যন্ত্রণার কাহিনী এখানে বলতে চাইনা। এবার কারিগরের বাসস্থানের একটু পরিচয় দেওয়া যাক। শুয়োরের খোলের মতো একটা ঘর ভাড়া নেওয়া, তাতে দরজা একটা, জানলা নেই। সারাদিন বাল্বের হলুদ আলো জ্বালা, বাকি আলোবাতাস আসে না। বেশ কয়েকজন কারিগর এবং ছোকরা সব মিলিয়ে প্রায় ১৪ ১৫ জন ওই রুমে থাকে। গরম লাগলে ছাদে জল ঢেলে ছাদ ঠাণ্ডা করে তাতে শোয়া, সকাল ৬টায় উঠে পড়া, রাত ৩টেয় শুতে যাওয়া। এই হলো জীবন চর্চা। আপনারা ভাবছেন এই ছোকরা গল্প কেনো দিলাম এতক্ষণ। বলি তাহলে

    দিল্লির দাঙ্গার লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ নয়ত?

    আগেই বলেছি পূর্ব দিল্লিতে ২২ শতাংশ বাঙালি যার ১৬ শতাংশ মুসলমান। এই হিন্দু মুসলমান দুই সম্প্রদায়েরই ২০ শতাংশ এই এক্সপোর্ট বা সোনারূপোর কারিগর। এরা এমন অঞ্চল থেকে আসে, যারা এক সময় প্রচন্ড দারিদ্র দেখেছে, এমনকী এদের বাবা মায়েরা এদের একবেলা খেতেও দিতে পারত না। এদের সঙ্গে কাটিয়েছি বলেই বলছি প্রমানও রয়েছে। গ্রামে থাকতে সকাল ৬টায় উঠে এরা যেত জন খাটতে, সেখানেই পেত মুড়ি খেতে, কিংবা দুপুরে চারটি ভাত। ফলে এরা যখন দিল্লিতে আসত শত কষ্টেও ওই চারবেলা ভালোমন্দর (ওগুলোই ওদের কাছে বিরিয়ানীর সমান) জন্যই টিকে যেত, নইলে একবেলা না খেয়ে থাকতে হত গ্রামে। এমনকী অনেককে দেখেছি তাদের মাত্র এক জোড়া জামা প্যান্ট তাও জোড়া তালি দেওয়া। এবার যারা কারিগর হয়ে যায়, তারা বাড়ির মালিকের সাহায্যে, ইলেকট্রিক বিল ইত্যাদি দেখিয়ে ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড ইত্যাদি তৈরি করে ফেলে। অর্থাৎ ভ্যালিড ভোটার। এবং এদের পাঠানো টাকায় ওই গ্রামগুলো আর্থিক কাঠামো অনেকটাই নির্ভরশীল। যাদের বাড়ি ঘর দোর ছিল না, এই কাজ করে তারা পাকা বাড়ি করেছে, ইলেক্ট্রিক লাইন নিয়েছে, দিল্লি থেকে টিভি কিনে নিয়ে গেছে এসব আমার স্বচক্ষে দেখা, আপনারাও নিজেরা খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। পরবর্তীতে তাদের জামা কাপড়, সেন্ট মাখার বহর দেখলে চোখ কপালে ওঠে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এসবের সঙ্গে দাঙ্গার কী সম্পর্ক? ভেবে দেখুন পূর্ব দিল্লি বিজেপির কব্জায়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ তেমনভাবে নয়। আগেও দেখেছি এবারও দেখেছি, আরএসএসের পূর্ব দিল্লি শাখার লোকজন মাসে অন্তত তিনবার হানা দেয় এই ফ্যাক্টরিগুলোতে। ধমকাতে, যেনো ভোট তাদের পক্ষে যায়। এবং এই অ্যাশো আরাম, এবং পরিবারের সারভাইভালের জন্য এরা ভোটও দেয় তাদের। আরএসএসে লক্ষ্য মূলত মুসলিম ভোটার, কারণ হিন্দু ভোটারদের ভোট নিয়ে তারা চিন্তিত নয়। এবার যদি গ্রাম বাংলা দখল করতে হয়, তাহলে দাঙ্গা লাগাও, ভয় দেখাও, কান টানলে মাথা আসবেই। অর্থাৎ তোমার দূর্বল জায়গায় আঘাত করো, তুমি মাথা নত করবেই। কলকাতায় শহুরে বিজেপির চেয়ে গ্রাম বাংলায় বিজেপির রমরমা এই কারণেই। অর্থাৎ এখানে ভোট দিলে দিল্লিতে আমার ছেলেপুলেরা শান্তিতে থাকবে, অর্থের যোগান আসবে, সুখে থাকবে পরিবার, আবার ওই অর্থ কষ্টের নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে না।
    একবার ভেবে দেখুন তো এত বড়ো শাহিনবাগ রইল, ওদিকে ফরিদাবাদ, ওখলা, এদিকে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ, চাঁদনি চক, দরিয়াগঞ্জ, সদর বাজার, ফতে পুরি মুসলমান কি কম পড়িল দিল্লিতে যে বেছে বেছে পূর্ব দিল্লিতেই করতে হল দাঙ্গা? করতে হলো কারণ সারা দেশ এই মুহূর্তে, সিএএ, এনআরসি নিয়ে ক্ষুব্ধ, শাহিনবাগ তো প্রতীক হয়ে উঠেছে বিরোধিতার, এদিকে দাঙ্গা করলে তীর ঘুরবে বিজেপির দিকে, সহানুভূতির আবেগটা যাবে বিজেপির বিপক্ষে। তাই শাহিনবাগ যেমন আছে তেমন থাকল, পুলিশ রইল হাতের মুঠোয় বাকি দিল্লিও থাকল সেফ অ্যাণ্ড কুল। মাঝখান থেকে কানহাইয়ার পুরোনো কেস রিওপেন হলো। সব মিলিয়ে জগাখিচুড়ি, এদিকটা তলিয়ে ভাবার উপায় নেই। এক দীর্ঘদিনের পরিচিত আমার পাশের বাড়িতে থাকা ফ্যাক্টরি মালিকের সঙ্গে দেখা হয়েছিল এবারের দিল্লি সফরে। কথা বলতে বলতে জানাল (নাম নিচ্ছি না সঙ্গত কারণেই), দাদা কি করব জানিনা, ওদিকে বাড়িতে বলছে, বিজেপির লোকজন এসে ধমকেছে, তাদের দলে নাম লেখাতে বলেছে, বলো তো এদিকে কাজ করব না ওদিকে দেখব। কতদিন দিল্লি থাকতে পারব জানি না, বাড়ি ফিরলেও তো ছাড়া পাব না। এদিকে আমার প্রায় ৫০জন কারিগর, তাদের ছোকরা ফুরনের কারিগর সব মিলিয়ে ১৫০ জন আমার দিকে তাকিয়ে আছে, কী করব বলো দেখি”। জবাব দিতে পারিনি তাকে। সত্যিই তো কী করবে সে? এখান থেকে যেতে হলে সে একা নয় দেড়শোটা পরিবার গ্রাম বাংলার না খেয়ে মরবে, এরকম কত দেড়শো পরিবার সারা পূর্ব দিল্লি জুড়ে। একটা পরিসংখ্যান বলছে শুধু গান্ধীনগরের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ এবং এই জনসংখ্যার ২২ শতাংশই মুসলিম যারা এই জামা কাপড়ের ফ্যাক্টরিতে কাজ করে।
    ভেবে দেখুন শাহিনবাগ আন্দোলন চলছে সেই ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে, শুধু শাহিনবাগ কেনো কলকাতার পার্ক সার্কাস সহ সারা দেশেই চলছে এই সিএএ, এনপিআর, এনআরসি বিরোধী আন্দোলন, কিন্তু দাঙ্গা একমাত্র কেনো হলো পূর্ব দিল্লিতে, তাও এমন একটা ব্যবসায়িক জায়গায়, এবং যে জায়গাটা বর্ডার লাগোয়া। লক্ষ্যটা তাহলে কী দিল্লি নয়? কারণ দিল্লিতে সত্যি বলতে কী এই মুহূর্তে দাঙ্গা হওয়ার কোনো ভ্যালিড রিজন নেই। পশ্চিমবঙ্গের যে কটি জায়গায় সম্প্রতি দাঙ্গা হয়েছে, তা দমন করা গেছে ব্যপক ক্ষয় ক্ষতি না করেই। তাই সম্পূর্ণ একটা অন্য মোড়কে দিল্লিতে দাঙ্গা করা হলো। যাতে আসল কারণ গুলিয়ে যায়। নিজে গিয়ে, কলকাতা থেকে ফোনে কথা বলে সাংবাদিক হিসেবে নয় একজন মানুষ হিসেবে এই তথ্য ধরা পড়েছে আমার চোখে। হ্যাঁ সাংবাদিক হিসেবে চোখটা ছিল হয়ত, কথা বের করার ক্ষমতাটা ছিল। আমার সঙ্গেই ট্রেনে ফিরেছে কাটোয়ার প্রায় ৫০জন মুসলিম কারিগর, দিল্লি একটু ঠাণ্ডা হলে তারা ফিরে যাবে ফের। ২৮ তারিখের বিকানের শিয়ালদহ, ভায়া দিল্লি দুরন্ত এক্সপ্রেসের কামরায় কামরায় এই দৃশ্য দেখেছি, বক্তব্য মোটামুটি এক। আর অর্থের যোগান বন্ধ হলে কিন্তু এই গ্রাম গুলো আতান্তরে পড়বে। মনে করে দেখুন কয়েক বছর আগে ঠিক এমনটাই ঘটিয়েছিল শিবসেনা মহারাষ্ট্রে, বাঙালি আর বিহারী খেদাও। কিছুটা সফল হলেও পুরোপুরি পারেনি শিবসেনা। বিজেপি অনেক বড়ো পরিকল্পনা করে এগিয়েছে। কারণ সহজে এদিকে চোখ যাবে না কোনো মিডিয়া বা বিরোধী পক্ষের নেতার। যদি না কেউ এইসব অঞ্চলে বসবাস করে, এই সব কারিগরদের সঙ্গে ওঠাবসা করে। আমি জানি না, হয়ত আমি ভুলও হতে পারি, কিন্তু তবু তবু এর বাইরে এই মুহূর্তে এটা ছাড়া ভোটের পরপরই দিল্লিতে দাঙ্গা হওয়ার আর কোনো কারণ চোখে পড়ছে না আমার। গান্ধী নগরের চাঁদ মহল্লা, শান্তি মহল্লা, রাজগড়, সুভাষ রোড, রাম নগর, অমর মহল্লা, কৈলাশ নগর, নানক বস্তি, ওল্ড সীলমপুর ভিলেজ, সুভাষ মহল্লা, অজিত নগর, ধর্মপুরা (এখানেই আমার বাড়ি), জৈন মহল্লা, নেহেরু গলি, কৃষ্ণা নগর, লাল কোয়ার্টার, ঝিল, পায়ে হেঁটে ঘুরলে ৩ ৪ দিনে কভার করা যায়। লক্ষ্য লক্ষ্য বাঙালি এক একটা কামরা ভাড়া করে হয় এক্সপোর্টের ফ্যাক্টরি নয়ত সোনারূপোর কাজ করে চলেছে। এশিয়ার সবচেয়ে বড়ো কাপড়ের মার্কেটের লাইফ লাইন এই বাঙালিরা, আর এই গান্ধীনগর অনেক বড়ো লাইফ লাইন পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম এবং সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির অর্থনীতির। আর এখানেই ঘা দিতে চাইছে বিজেপি। প্রত্যেকটা ঘুঁটি সাজানো, দিল্লির নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ, ট্র্যাম্পের ভারতে আগমন, শাহিনবাগকে প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে মাঝের পাতায় নিয়ে যাওয়া, দাঙ্গার প্রথম পাতায় জায়গা করে নেওয়া, কানহাইয়ার কেস রিওপেন, আর তো কোনো কারণ নেই। ঠিক যেভাবে গুজরাটের দাঙ্গাও হয়েছিল মূলত ব্যবসায়ীক এবং বর্ডার এলাকা জুড়ে। এই কারণটাকে আমি অন্তত উড়িয়ে দিতে পারছি না, হয়ত অন্য কারণ আছে কিন্তু মনে হয় না তা খুব একটা ভ্যালিড একটা দাঙ্গা লাগানোর জন্য, কারণ ভোটের ফল প্রকাশের পর এখন আর কোনো কারণ থাকতে পারে না। ভাবুন বাঙালি সাবধান হোন এখনো সময় আছে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০১ মার্চ ২০২০ | ৭২৫৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পারমিতা দত্ত। | 162.158.***.*** | ০১ মার্চ ২০২০ ১১:১৬91160
  • লেখাটা সবার পড়া দরকার।
  • প্রতিভা | 162.158.***.*** | ০১ মার্চ ২০২০ ১১:২৮91161
  • লেখাটা ভালো। বিশেষ করে ছোকরা গল্পের অংশটুকু। কিন্তু বাঙালিকে টার্গেট করতে হলে দিল্লিতে দাঙ্গা এটা আমার একটু ফার ফেচড মনে হল। বাঙালিকে সর্বত্র সব রকমে টার্গেট করা হচ্ছে। আর হিন্দু রাষ্ট্র হলে সংখ্যাগুরুর তাগদ কতো বেড়ে যাবে সেটা দেখানো আরো জরুরি মোটিভ বলে মনে হয়েছে আমার।
  • রৌহিন | ০১ মার্চ ২০২০ ১১:৫১91163
  • পুরো এন আর সি - সি এ এ প্রক্রিয়ার মূল টার্গেট বাঙালিই এটা নিয়ে খুব একটা দ্বিমতের অবকাশ আছে বলে মনে হয় না। দিল্লীতে বাঙালি মানেই লোকের সন্দেহ সে বাংলাদেশী - হিন্দু মুসলমান যাই হোক না কেন। এবং এদের কেউ পছন্দ করে না, বিশ্বাস করে না। ফলে দাঙ্গা (বা জেনোসাইড, যাই হোক) এই অঞ্চলেই হবে এটাই এক্সপেক্টেড। আলাদা করে বাংলা টার্গেট করে হবার প্রয়োজন নেই - বাঙালি টার্গেট। বাংলা ভাষা টার্গেট।

  • PM | 162.158.***.*** | ০১ মার্চ ২০২০ ১৩:২১91167
  • আমার কাছে একটা জিনিষ খুব ঈ কনফিউসিং লাগে।

    বাংলা থেকে বাঙালী শ্রমিক যায় দিল্লি , মহারাষ্ট্র, কেরল এমনকি কাশ্মীর ও

    ওদিকে বাঙ্গলায় সব কারখানায় ( কাপড়, জুট ইত্যাদি) ৭০% শ্রমীক অবাঙ্গালী। রিষরায় আদিত্য বিড়লার কারখানা এখন পঃ্বঃ এর সবচেয়ে বড় বেসরকারী এম্প্লোয়মেন্ট দেয়। প্রয় ৬০০০ শ্রমীক স্থায়ী অস্থায়ী মিলিয়ে। ওখানে ইউপির বহু ফোরম্যান কে দেখেছি মাসে ৫০-৬০ হাজার কামাতে ওভারটাইম সমেত। এদিকে বাঙ্গালী রা ভিনদেশে যায় বিনে পয়্সায় বা নামমাত্র পয়সায় মজুরী খাটতে।

    কেরল পান্জাব ( বাঙ্গলাদেশি রাও) থেকে গুচ্ছ শ্রমীক মিডল ইস্ট এ যায়। অনেক বেশী টাকা রোজগার করে। আর ওদের রাজ্যে গিয়ে বাংগালী রা বেগার খাটে।

    এর রহস্য কি ?
  • জয়ন্ত ভট্টাচার্য | 162.158.***.*** | ০১ মার্চ ২০২০ ১৯:৩১91171
  • যথেষ্ট ভাবানোর মতো ভালো লেখা। কিছু বিষয় আমি জানতামই না। ভাবিও নি।

    আমি অন্য একটা প্রেক্ষিত থেকে দিল্লির দাঙ্গা বোঝার চেষ্টা করছি। লেখা হলে দেবো।
  • হরিদাস পাল | 162.158.***.*** | ০১ মার্চ ২০২০ ২৩:২১91175
  • এটা তো শুধু দ্বিতীয় পর্বটা। গোটাটা একবারে পোস্ট করার ব্যবস্থা করা গেলে ভালো হতো না?
  • বিপ্লব রহমান | ০২ মার্চ ২০২০ ০৭:১৯91179
  • দিল্লির আগুন বাংলায় এলে  দেবালয়ও পুড়বে। 

    ছোকরার গল্প সামন্ত যুগের গোর্কির ছেলেবেলা মনে করায়।      

  • রাজকুমার রায়চৌধুরী | 162.158.***.*** | ০২ মার্চ ২০২০ ১২:০০91200
  • Rajkumar Raychaudhuri | ০২ মার্চ ২০২০ ১৪:৩২91201
  • পরের অংশ কবে?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন