বদলে যাওয়া নন্দীগ্রামে : স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | খবর : টাটকা খবর | ১৫ মার্চ ২০২১ | ৪০২৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
শুভেন্দুর মূল তাস, যা বোঝা গেল দুইটি। এক, নন্দীগ্রামে মমতা বহিরাগত। দুই, সাম্প্রদায়িক বিভাজন। এই এলাকায় গত বছর দশেক ধরে আরএসএস-এর নানা সংগঠন তাদের প্রভাব বিস্তার করেছে। ফলে একটা 'মুসলিম আগ্রাসন' সংক্রান্ত টেনশন এমনিতেই আছে। শুভেন্দু অধিকারীর সাম্প্রতিক সব সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বক্তৃতা সেই আগুনকে আরও উস্কে দিয়েছে।
নন্দীগ্রামের জনবিন্যাসের অঙ্কে চোখ বোলালে দেখা যাচ্ছে ওখানে ৩০/৩৪ শতাংশ মুসলিম ভোট আছে বলে যে আলোচনা চলছে তা একটু বাড়াবাড়ি। নন্দীগ্রাম বিধানসভা গঠিত নন্দীগ্রাম ১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে। ২০১১-র জনগণনা অনুযায়ী এই দুই ব্লক মিলিয়ে মোট ৩৩১,০৫৪ জনসংখ্যার ২৪৪,৬৬৭ জন, অর্থাৎ ৭৩.৯৬% হিন্দু, এর মধ্যে ৫৪,৫০৩ (১৬.৪৬%) জন তপসিলি জাতি ভুক্ত। আর মুসলিম জনসংখ্যা ৮৫,৬৯৬, বা ২৫.৮৮%।
দেউচা-পাঁচামিঃ কিছু পর্যবেক্ষণ ও প্রশ্ন : স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ২১ মার্চ ২০২২ | ১৮২৪ বার পঠিত
ঘনঘন পট পরিবর্তন হচ্ছে দেউচা-পাঁচামিতে। গত বছর নভেম্বর ডিসেম্বর নাগাদ দু-তিনটি স্থানীয় ভাবে গড়ে ওঠা গণ কমিটির নেতৃত্বে আন্দোলন হচ্ছিল। ইতিমধ্যে, জানুয়ারিতে মূলত দেউচার বাইরে, রাজ্যের অন্যান্য এলাকায় উপস্থিত থাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংগঠন ও এনজিও, কিছু দেউচার স্থানীয় নেতৃত্বের সাথে মিলে, বীরভূম জমি, জীবন, জীবিকা ও পরিবেশ বাঁচাও মহাসভা গড়ে তোলে। পাল্টা, ওই সিঙ্গুরের ন্যানো বাঁচাও কমিটির মত-
টডের রাজস্থান ও বাঙালি হিন্দুর সাম্প্রদায়িকতাঃ একটি ঔপনিবেশিকতা বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গী : স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | পড়াবই : বই কথা কও | ০১ অক্টোবর ২০২৩ | ৩৭৬০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩০
১৯০২ এর সেপ্টেম্বরে, মৃত্যুর মাস তিনেক আগে, কাশ্মীরে থাকাকালীন,কর্নেল জেমস টডের ‘অ্যানালস অ্যান্ড অ্যানটিকুইটিস অফ রাজস্থান’ বইটি দেখে সহচরদের বিবেকানন্দ বলেছিলেন, “বাঙলার আধুনিক জাতীয় ভাবসমূহের দুই তৃতীয়াংশ এই বইখানি হইতে গৃহীত।”
ভুল কিছু বলেননি। রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে মাইকেল মধুসূদন, বঙ্কিমচন্দ্র হয়ে জ্যোতি-রবি-অবন ঠাকুর, কার কল্পনাকেই-বা প্রভাবিত করেনি টডের বই-এর মুসলমান শাসকদের বিরুদ্ধে রাজপুত পৌরুষ ও নারী সতীত্বের আপোষহীন লড়াইয়ের চিত্র? ‘কেতুনপুরে বকুল-বাগানে/কেসর খাঁয়ের খেলা হল সারা।/যে পথ দিয়ে পাঠান এসেছিল/সে পথ দিয়ে ফিরল নাকো তারা’ পড়েছি রবীন্দ্রনাথের ‘হোরিখেলা’ কবিতায়। “বিধর্মী শত্রু সোনার মন্দির চূর্ণ করে বল্লভীপুর ছারখার করে চলে গেল,” পড়েছি অবন ঠাকুরের রাজকাহিনীতে।
বাংলাদেশ অভ্যুত্থান ও পশ্চিমবঙ্গঃ ঠিক কি ঘটছে দু’পার বাংলায়? : স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | অপর বাংলা | ১১ আগস্ট ২০২৪ | ৩৪৬৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১২
ছাত্ররা আশাতীত সাফল্য দেখিয়েছে। তার পরেও দৃঢ়তা দেখিয়েছে। স্বৈরাচার না মৌলবাদ, এই প্রশ্নের বাইরে স্বৈরাচার ও মৌলবাদ উভয়কেই দূরে রাখার যে প্রকল্প তারা ঘোষণা করেছে, তার সাফল্যের ওপর শুধু বাংলাদেশ নয়, দুই বাংলার পারষ্পরিক সম্পর্কও নির্ভর করছে। এসবের সাথে তাঁরা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদেরও বিরোধিতা করতে পারবেন কিনা সেটা অনেক বড় প্রশ্ন হয়ে যায়। কিন্তু তাঁরা যদি ‘৭২-এর সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা আবার ফিরিয়ে আনতে পারেন, সেটাই হবে, আমার মতে, তাঁদের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এরকম কোনও উদ্দেশ্যের কথা অবশ্য তাঁরা এখনও ঘোষণা করেননি। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আরেকটা কাজ করতে পারেন। যখনই কেউ মুজিব মুর্তি ভাংচুরের প্রসঙ্গ তুলে বলতে আসবে মুসলমানদের দেশ বাংলাদেশ এত খারাপ যে জাতির জনককেও ছাড়ে না, তাঁকে আগে একবার জিজ্ঞেস করে নেবেনঃ “আর ভারতের জাতির জনকের হত্যা বিষয়ে তোমার/আপনার কি মত?” তাঁরা যদি গান্ধী হত্যার তীব্র নিন্দা না করেন, বুঝে যাবেন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর আঘাত নিয়ে তাঁদের কোনও মাথাব্যাথা নেই; না তাঁরা স্রেফ বাংলাদেশকে ব্যবহার করে এদেশের মাটিতে নিজেদের বিষবৃক্ষের ফসল তুলতে চাইছেন।