জল,জল : সোমনাথ দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ২১ এপ্রিল ২০০৭ | ১৩৮০ বার পঠিত
এ দেশের মায়ের নাম নদী, বাপের নাম গদি। যুগে যুগে চারণ কবি গান গেয়েছেন - "রাম তেরি গঙ্গা ময়লী হো গয়ি-ই-ই-ই-"" আর তাতে রামের বয়ে গেছে। তিনি কি আর গঙ্গার জলে কুলকুচি করতে যাবেন? "বাঙালী লেখক" সন্দীপন লিখেছিলেন দেশের সত্তর ভাগ লোক যে জল পান করে তাতে ওদের অন্তত: একবার ছোঁচাতে রাজি হওয়া উচিত - বা, এই রকম কিছু। ""বা-লে""র কথায় কান দিতে হলে অবশ্য মাথার দুদিকে দুটো কান থাকা আশু প্রয়োজন, আর কে না জানে গদিতে বসার প্রাথমিক শর্ত ও-দুটোকে প্রবেশদ্বারের বাইরে রেখে আসা? কিন্তু মাইরি, বেঁচে থাকা ক্যান্টার করে দিল গ্লোবালাইজেশন আর তার মাসতুতো ভাই প্রাইভেটাইজেশন।
বর্ণাশ্রম : সোমনাথ দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ২০ এপ্রিল ২০০৭ | ১৩১৫ বার পঠিত
"আমরা সমাজটাকে চারটে ভাগে ভাগ করেছি।'' মার্ক্স এঙ্গেলস কি অপর গোলার্ধ কাঁপানো কোনো দেড়েল অর্থনীতিবিদ বা সমাজতাত্বিক নয়, এ ঘোষণা একটি প্রাইভেট সংস্থার প্যানেল রিসার্চ ফিল্ড সার্ভেয়ারের। ভারতবর্ষের জনসংখ্যার, একশ কোটি জনসংখ্যার, চারটি "SEC" অর্থাৎ "Social Economical Class"A, B, C, এবং D । অমর্ত্য সেন বিগলিত হবেন, মনমোহন সিং উৎফুল্ল ও আবুল কালাম মশাই আত্মহারা হয়ে পড়তে পারেন এমন সহজ সাধারণ আর্থসামাজিক পরিকাঠামো বিভাজনে এবং আমাদের দাবি ব্যপারটাকে অবিলম্বে পাঠক্রমের অন্তর্ভূক্ত করা হোক।
দুই বিন্দু জল : সোমনাথ দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ২০ এপ্রিল ২০০৭ | ১৪৫৩ বার পঠিত
আলপটকা বৃষ্টি হয়ে স্টার থিয়েটারে, অধুনা সিনেমা, দুফোঁটা জল ঢুকেছে বলে কত কথা! নাকি, সেখানে তখন মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ দিচ্ছিলেন। হাতিবাগানে তো আর প্রখর বর্ষাকালেও জল জমে না! গোমুখ্যু ইঞ্জিনিয়ার আর আকাট রাজমিস্ত্রির হাতে পড়েই নেথাৎ, আহা, অমন ঐতিহ্যঘৃতগন্ধী বিল্ডিংটা মবলগ চুলকে গেল গা! সাংস্কৃতিক শীর্ষনেতৃত্বের জমানায় তাই প্রকৃত কালপ্রিট ঢুঁড়ে, দামড়ে সিধে করার প্রেসকপি নোটিস গেছে বলে শোনা যায়। এসব শাক সরিয়ে শহর কলকাতার জলনিকাশী ব্যবস্থার কানকো উল্টে যাঁরা লাল না কালচে বিচারের বেহায়া আঁতলামো মারাচ্ছেন, তাদের জন্যে চালুনি ছাড়া অন্য কোনো নাম বরাদ্দ নেই।
থ্যাঙ্কিউ স্যার : সোমনাথ দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ২০ এপ্রিল ২০০৭ | ১২২৮ বার পঠিত
দ্যাখেন তো ওই বিষন্ন গ্লিসারিন জবজবে টিভি সিরিয়াল আর স্টেনগানের প্রদর্শণী কিছু ধ্বজামার্কা সিনেমা। কেন, কার্গিল ধামাকায় মিডিয়া যখন ধূপধুনো জ্বেলে "ওং মিলিটারায় নমস্তুতে" জপছিল তখন তো মশাই আপনি করজোড়ে নতজানু, পঞ্চপ্রদীপ জ্বেলে আরতি করতেও বাকি রাখেননি। স্কুলের কচিমাত্রেই তখন অনিবার্য স্লোগান : ভারতীয় সেনা, দেশপ্রেম আর বন্দেমাতরম। এই ক'বছরেই সব ভুলে সাফ! ক'টা পুলিশ ঠেঙিয়েছে বলে ছি ছি করছেন? আরে ছো:। পুলিশ কি একটা মানুষ হল? সহবতের একটা ক্র্যাশ কোর্স কলকাতা পুলিশে জন্যে যে অবিলম্বে দরকার সে কথা ভেবেছেন? বর্ষবরণের রাত।
বিজ্ঞানস্ট্যাম্প : সোমনাথ দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ২০ এপ্রিল ২০০৭ | ১৩৫৭ বার পঠিত
রিচার্ড লেয়ার্ড "হ্যাপিনেস" নামের একটা চোদ্দ অধ্যায়ের বই লিখে পেঙ্গুইন থেকে ছাপিয়েছেন বলে নয়, অনির্বাণ চাটুজ্জে সে বইয়ের রিভিউ লিখে এ সংখ্যার গায়েগতরে দেশ-টার দাম তিরিশ টাকা করার পথে সাহায্য করেছেন বলেও নয়, লেখাটায় উন্নয়ন আর জি.ডি.পি.র সঙ্গে সুখে থাকার গুরুচণ্ডা৯য় অসমীকরণের রাজনৈতিক ফোড়ন রিক্যাপিচুলেটেড বলেও নয়, "ব্রেন ফিজিওলজী", "ইলেকট্রোএনসেফ্যালোগ্রাম" আর "ব্রেন স্ক্যান" বিজ্ঞানস্ট্যাম্পগুলো মাঠে নেমেই কী-বোর্ড চুলকে দিল। অর্থনৈতিক গবেষণার প্যারামিটার নেওয়া হচ্ছে মানুষের ভালো থাকার বোধটিকে, এবং তা স্রেফ ডিক্লারেশন নির্ভর নয় আর, হাই ফাই যন্ত্রপাতি প্রমাণিত। অর্থাৎ প্রশ্নাতীত একটি থিওরাইজেশনের পথ তৈরি হচ্ছে।
গতি ও জাড্যধর্ম : সোমনাথ দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ২০ এপ্রিল ২০০৭ | ১২৯০ বার পঠিত
বাসে উঠলেও শোনা যাবে "পিছন দিকে এগিয়ে যান'। ফ্লুরোসেন্ট হাইলাইট : "এগিয়ে'। সমকালে যে শব্দটিতে, অনিচ্ছাতেও, "অগ্রগতি' আর "উন্নয়ন'-এর দিকে অবধার্য আঁকশিটান। আমরা কিন্তু আরো স্পেসিফিকালি, ফোকাস করব অন্য একটি রিলেটেড অংশশব্দ : "গতি' তে। যে গতি, পথ ফুরোবার পরেও জেগে থাকে, অনবধান অভ্যাসে। নিউটন "জাড্য' নাম দেন।
আমাকে চমকাও : সোমনাথ দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ২০ এপ্রিল ২০০৭ | ১৩৭৪ বার পঠিত
এ এক্কেবারে নতুন জিনিস হয়তো নয়, একটু তবু নতুনই বটে। অন্তত: আজ থেকে তিরিশ বছর আগে এরকমটা কেউ ভাবেনি। বা হয়তো ভেবেছে, জানতে পারেনি কেউ, ফলে বাজারে বিক্রি হয়নি, ইয়েস, যেটা নিয়ে আজ কথা বলতে চলেছি - মশা মারার র্যাকেট। দেখেছেন নিশ্চয়ই। আলবাৎ দেখেছেন। ব্যাডমিন্টন র্যাকেটের মতন দেখতে, শুধু একটা নাইলন স্ট্রিং লেয়ারের বদলে তিনটে মেটাল তারের লেয়ার থাকে। চার্জ দিয়ে রাখতে হয়। তারপর প্লাগ থেকে খুলে সুইচ অন করে, মশাকে ফেদার কর্ক ভেবে লাগাও ব্যাকহ্যাণ্ড ফোরহ্যাণ্ড স্ট্রোক। মশার বডি, মেটাল তার স্পর্শ করলেই স্পার্ক। প্রথমে পিট্পিট্ করে, তারপর তারে আটকে যাওয়া মশাটার থেকে - একটু কাছ থেকে দেখলে ভালো বোঝা যায় - খানিক ধোঁয়া বেরোয়। তারপর ফট্ করে জোরে আওয়াজ হয়, আলোসহ। এই সময় পোড়া গন্ধটা পাওয়া যায় মশাটার থেকে। সারা ঘরে গন্ধ হয়ে যায়। আড়াই হাজার ভোল্ট কারেন্ট মশাটার গায়ে ঢুকে গেছে, তাই, মশাটা মারা যায়। অবভিয়াসলি, এবং সন্দেহাতিত ভাবে।