মনের টান থাকলেই ফোনে পেয়ে যাবি : সুব্রত ঘোষ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৫ জুন ২০১৭ | ১০৬৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
হঠাৎই অফিসের কাজে জাপান চলে গেলাম। গৌতমদা বলল – এই যে তুই জাপান চলে যাচ্ছিস ... আমিও ইউরোপ চলে যাবো ভাবছি। খুব ভালোবাসতো আমাকে, আর আমিও। জাপানে পৌঁছে একদিন ফোন করলাম। গৌতমদা প্রচণ্ড এক্সাইটেড আমার ফোন পেয়ে, বলল – সুব্রত, উফফ তুই কীভাবে বরফের মধ্যে ঘুরছিস ভাবতে পারছিনা! আচ্ছা শোন, এপ্রিলের ১৭ তারিখে যাদবপুর এ কনসার্ট আছে। চলে আসিস”। আমার যাওয়ারও কথা ছিল সেই সময় দেশে, তা কোনও কারণে পিছিয়ে গেলো। মিস করলাম কনসার্টটা। একটু খটকা লেগেছিলো, কী ব্যপার, ছন্দপতন হচ্ছে নাকি! আগে গৌতমদা বললে শত বাধা সত্ত্বেও অফিস কাটিয়ে ঠিক হাজির হয়ে যেতাম। শুধু যেতাম বললে ভুল হবে, এরকম হতো যে, হঠাৎই খেয়াল করতাম গৌতমদার সাথে ট্যাক্সি করে কনসার্ট করতে যাচ্ছি,আর, ফিরতাম এক সপ্তাহ পর। যাই হোক, সেবার দেশে ফেরার পর, সল্ট লেকে BE park এ গান আড্ডা হল আবার।আমি জাপান থেকে গৌতমদার জন্য একটা Pan flute কিনে এনেছিলাম (সেটা আজ ও আছে গৌতমদার ঘরে সাজানো), বলল যে নেক্সট অ্যালবামে ওটা ইউজ করবে। গৌতমদা was gifted in such a way যে কোন মিউজিকাল ইন্সট্রুমেন্ট প্রথম বার তুলে নিয়েই বাজাতে পারত। আর একসেট বিদেশি গিটারের স্ট্রিং। তা গৌতমদার তখন কোন গিটারই নেই! আসলে একটা করে গিটার কিনত আর গিটার শিখতে সদ্যআগ্রহী কাউকে দিয়ে দিত, তো বলল ঠিক আছে আরেকটা গিটার কিনবে কয়েকদিনের মধ্যেই, তারপর স্ট্রিংগুলো লাগাবে। সেই দিন আমাদের গান স্বাভাবিক ভাবেই চলল প্রায় রাত দুটো অবধি। যেমন চলত আর কী! তারপর আমরা আমদের এক বন্ধুর গাড়ি করে ট্যাক্সি ধরিয়ে দিলাম ফুলবাগান থেকে। বিদায় জানানোর আগে আমরা সেই প্রথম দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরলাম। বোধ হয় আমি পরের দিনই জাপান চলে যাবো সেই জন্যেই হয়তো। বসন্তকালের সেই রাতে হুল্লোড় করতে করতে আমরা ফিরে এলাম, আর গৌতমদার ট্যাক্সি আস্তে আস্তে সেই ধূসর রাত্রে মিলিয়ে গেলো...