এক চিন্তাবিদের সংগ্রাম - জন ন্যাশ প্রসঙ্গে : প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৫ জুন ২০১৫ | ১১৯৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১
জন ন্যাশ সমাজবিজ্ঞানী ছিলেন না, অর্থনীতিবিদ-ও নন, তিনি গণিতজ্ঞ। কিন্তু সেই গণিতের ব্যবহারিক গুরুত্ব অপরিসীম, মুশকিলটা হল অধিকাংশ মানুষ এই ব্যবহারিক গুরুত্বটাকে মাপেন লাভ-ক্ষতির হিসাবে আর তাই মনে হয় ন্যাশ সাম্যাবস্থা একটা 'ইউটোপিয়ান কনসেপ্ট'। যারা সিলভিয়া নাসারের লেখা জীবনীটি পড়েছেন বা রাসেল ক্রো অভিনীত সিনেমাটি দেখেছেন তাঁদের জন ন্যাশের জীবনযুদ্ধ নিয়ে নতুন করে কিছু শোনানোর দরকার নেই। যারা পড়েন নি বা দেখেন নি তাঁরা গুগল বা উইকি সার্চ করতে পারেন 'জন ন্যাশ' বা 'আ বিউটিফুল মাইন্ড' শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করে। আমি কিন্তু জন ন্যাশের জীবনসংগ্রামের কথা নিয়ে কিছু লিখছি না, বুদ্ধিজীবী ন্যাশের দর্শন এবং চিন্তাধারাকে বিদ্বজনরা কি ভাবে ছুঁড়ে ফেলতে চেয়েছেন সে নিয়ে কিছু বলাই আমার উদ্দেশ্য
ফিফথ ডাইমেনসন এবং তারপর : প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ | ১১৮৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
আবার মই? কি বলি বলুন, স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে মই নিয়ে সে সময় ভারী উৎসাহ ছিল - সত্যজিত রায়ের ট্রেন যেমন অপু-দুর্গার কাছে বৃহত্তর পৃথিবীর প্রতীক হয়ে দেখা দিয়েছে সেরকম ভাবেই হয়ত ঊর্ধ্বগামী মই দেখলেই লোকে দো'তলা তিনতলা ছাড়িয়ে সোজা ছায়াপথের কথা ভাবতে শুরু করতেন। যাই হোক, এ মই নিয়ে এসেছিলেন ইংলিশ চিকিৎসক রবার্ট ফ্লাড। ফ্লাড অবশ্য শুধু চিকিৎসক নন - জ্যোতিষী, গণিতবিদ, অতিপ্রাকৃত-বিশারদ, একই অঙ্গে অনেক রূপ। ফ্লাডের তত্ত্ব অনুযায়ী মইয়ে উঠে গুনে গুনে ঠিক ন'টি সিঁড়ি চড়লেই আপনার আত্মা পৌঁছে যাবে সূক্ষ্মতর ব্রহ্মান্ডে, কিছু সময় বিশ্রাম, তারপর ফের পাশে রাখা দ্বিতীয় মই দিয়ে নেমে আসা। আবারো জগৎসংসারের ঠ্যালা সামলানোর পালা, তারপর ফের মইয়ে চড়া। ফ্লাডের যেহেতু অঙ্কে ছিল বিষম উৎসাহ, উনি দাবী করেছিলেন এই ন'টি স্টেপ নেহাত গাঁজাখুরি ব্যাপার নয়। রীতিমতন পাইথাগোরিয়ান গণিতের সাহায্য নিয়ে তৈরি হয়েছে এ মই, প্রতিটি সিঁড়ি কতটা চওড়া, কতটাই বা লম্বা সবেরই ফিরিস্তি দেওয়া যাবে অঙ্কের হিসাবে।
চলচ্চিত্রচঞ্চরী - দ্বিতীয় পর্ব : প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সিনেমা | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১১ | ১১৩৮ বার পঠিত
অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস ঘোষণার প্রাক্মুহূর্তে প্রকাশিত হল একটি বুলবুলভাজা, চলচ্চিত্রচঞ্চরী।
আগের কিস্তির সূত্র ধরে ফিরে আসি টলিউডে। লেখার একদম শেষের দিকে উল্লেখ করেছিলাম যে সত্তর দশকেও আমরা পেয়েছি "নিশিপদ্ম', "থানা থেকে আসছি', "এখানে পিঞ্জর', "ধন্যি মেয়ে'র মতন সিনেমা যেগুলি তথাকথিত আর্টহাউস্ ফিল্ম না হয়েও পেয়েছিল সমালোচকদের প্রশংসা এবং সাথে বক্স-অফিস সাফল্য। সত্তরের "এখানে পিঞ্জর' (প্রফুল্ল রায়), "শ্রীমান পৃথ্বীরাজ' (বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় ), আশির "দাদার কীর্তি'র (শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়) মতন প্রভূত জনপ্রিয় সিনেমাগুলি স্বনামধন্য সাহিত্যিকদের কালজয়ী ছোট গল্প বা উপন্যাস আবলম্বনে তৈরি । "নিশিপদ্ম' বা "ধন্যি মেয়ে'র চিত্রনাট্য তৈরি করেছিলেন অরবিন্দ মুখার্জ্জী যিনি নিজে সাহিত্যিক ছিলেন এবং "দেশ' বা "নবকল্লোল'এ তাঁর একাধিক ছোট গল্প প্রকাশিত হয়েছিল। সাহিত্যিকদের রূপোলী পর্দার জগতে বিচরণের যে ট্র্যাডিশন প্রেমেন্দ্র মিত্র-শৈলজানন্দরা তৈরি করে দিয়ে গেছিলেন, সত্তর-আশির দশকে সেটাই বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছিলেন অরবিন্দ। যাই হোক্, মূল প্রসঙ্গে ফিরি - বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগে অ্যাডাপ্টেড স্ক্রিনপ্লের-ই রমরমা, অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লে সেভাবে এল কই? সত্যজিৎ রায় থেকে তপন সিনহা, অগ্রদূত থেকে তরুণ মজুমদার - জনপ্রিয় সিনেমাগুলি প্রায় সব সময়েই অ্যাডাপ্টেড স্ক্রিনপ্লের ওপর তৈরি।
চলচ্চিত্রচঞ্চরী : প্রবীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সিনেমা | ১৫ জানুয়ারি ২০১১ | ৯৮৬ বার পঠিত
আঞ্চলিক চলচ্চিত্র জগতে মারাঠি সিনেমার ঘুরে দাঁড়ানো আমাদের কিছু শিক্ষা দিতে পারে হয়ত।যে সিনেমা ৩ কোটির ব্যবসা করছে স্থানীয় বক্সঅফিসে, সেটিই আবার প্রদর্শিত হচ্ছে বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভালে - সুখের কথা একাধিক মারাঠি সিনেমা এই গোত্রে পড়ে।লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হল প্রায় সব কটি সফল সিনেমারই একটি নির্দিষ্ট স্ট্র্যাটেজি আছে - "আউট অফ্ দ্য বক্স' কাহিনীসূত্রকে একটি সাবলীল চিত্রনাট্যে ফেলে ভীষণ ঘরোয়া একটি পটভূমিকায় উপস্থাপন করা।এর ফলে তথাকথিত "নেইভ' দর্শকদের সঙ্গেও পরিচালকের কোনো দূরত্ব তৈরী হয় না; প্রেক্ষাপটও এমন যে পেশাদার অভিনেতার অসংলগ্ন অভিনয়ের সুযোগই নেই। এমনই একটি সিনেমা হল "ভালু'(দ্য বুল্) - এই গল্পের প্রটাগোনিস্ট একটি ধর্মের ষাঁড় (আক্ষরিক অর্থেই); নিরুপদ্রব একটি গ্রামে (যেটি আসলে অচলায়তনের প্রতীক)এর উপস্থিতি ধুন্ধুমার কান্ড বাধিয়ে তোলে।গ্রামবাসী থেকে শহুরে সরকারী বড়কর্তা, যে গুঁতো খেয়েছে আর যে খায়নি, যে স্বচক্ষে দেখেছে অথবা যে শুধুই গুজব রটাচ্ছে সবাই এই উটকো ঝামেলায় বিব্রত।আপাততুচ্ছ একটি ঘটনা নিয়ে ক্ষমতার দ্বন্দ,রাজনীতি ও কুসংস্কার নিয়ে গ্রাম্য চাপানউতোর মুন্সিয়ানার সঙ্গে ফুটে ওঠে পর্দায়।মারাঠি দর্শকের গ্রহণক্ষমতা কত সে নিয়ে কোনো বক্তব্যপ্রকাশের অবকাশই থাকে না।