প্রশ্নোত্তরে পাওয়ার গ্রিড, ভাঙড়ের গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের পটভূমিতে : শমীক সরকার ও পিনাকী মিত্র
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৮ জানুয়ারি ২০১৭ | ৮৫৫২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৮২
যেভাবে বারবার 'পরিবেশ, বাস্তুতন্ত্র ধ্বংসকারী' ইত্যাদি হালকাভাবে বলে দেওয়া হচ্ছে – সেটাও খুব তথ্যের ওপর দাঁড়িয়ে নেই। পাওয়ার গ্রিডের বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি রয়েছে, ডিটেলে ক্ষতির পরিমাণ লিপিবদ্ধও করা আছে। সেগুলো মূলতঃ যখন টাওয়ার বসানো আর তার লাগানো হচ্ছে, সেই সময়কার এককালীন ক্ষয়ক্ষতি। কিন্তু কোথাও এমন উদাহরণ নেই যে চাষের জমির ওপর দিয়ে হাই ভোল্টেজ লাইন গেলে সেখানে আর চাষ করা যায় না। বা ফসলের উৎপাদন মারাত্মক ব্যহত হয়, মাছ মরে যায় – ইত্যাদি ইত্যাদি। বরং এই অভিযোগগুলোর স্বপক্ষে একটাও প্রামাণ্য কেস স্টাডি নেই। সায়েন্টিফিক কমিউনিটির (যারা বিজ্ঞান গবেষণার কাজ করে) মধ্যে এরকম কোনো কনসেন্সাস বা ঐক্যমত্য তো দূরস্থান, 'একাংশের মধ্যে সিরিয়াস কনসার্ন' – এরকম কিছুও শোনা যায় না । গোটা পৃথিবীজুড়ে লক্ষ লক্ষ কিলোমিটার ব্যাপী হাই ভোল্টেজ ট্রান্সমিশন লাইন আছে। চাষের জমি, পুকুর, ভেড়ি – এসবের ওপর দিয়েই আছে বহু দশক ধরে। চাষ, মাছের ভেড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে – এরকম অভিযোগ শোনা যায়নি। সত্যিই যদি যেত, যদি একটা অঞ্চলেরও বাস্তুতন্ত্র পরিবর্তিত হয়ে থাকতো গত পঞ্চাশ বছরে, তাহলে সেটার প্রমাণ থাকতো চোখের সামনেই। সেটা একটা উদাহরণ হয়ে যেত। কিন্তু শুধু অনুমানের ওপর ভিত্তি করে আমরা একটা প্রযুক্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। তবে আমাদের চোখ কান সবসময় খোলা রাখা উচিৎ। পৃথিবীতে চাকা আবিষ্কারের সময় থেকে শুরু করে আজ অব্দি একটাও এমন প্রযুক্তি বোধহয় নেই যার কোনো পরিবেশগত কুপ্রভাব নেই। আর বিজ্ঞান, প্রযুক্তি – এই কথাগুলো শুনলেই সেগুলোকে অন্ধভাবে ভক্তি শ্রদ্ধা করারও কিছু নেই। ভবিষ্যতে যদি কোনো ক্ষতি সত্যিই চোখে পড়ে সেগুলোকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়েই দেখতে হবে।
ভাঙড় চুক্তি এবং ভাঙড় আন্দোলনঃ একটি বস্তুনিষ্ঠ মূল্যায়ন প্রচেষ্টা (প্রথম পর্ব) : পিনাকী মিত্র
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৫ আগস্ট ২০১৮ | ২০৩৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১
সবকটা বিষয়কে মাথায় রাখলে আন্দোলনের অতি বড় সমালোচকও মানতে বাধ্য হবেন এই চুক্তিকে গ্রামবাসীরা যদি 'জয়' বলে মনে করেন তাহলে তাঁরা খুব ভুল কিছু করবেন না। অলীক চক্রবর্তী যদি তর্কের খাতিরে সরকারের কাছে সম্পূর্ণ বিকিয়ে গিয়েও থাকেন এবং বিকিয়ে গিয়েও গ্রামবাসীকে এইরকম একটি লিখিত চুক্তি আদায় করে দিতে পারেন, যা কিনা এযাবৎকালের কোনও গণ আন্দোলনে ঘটে নি, তাহলেও তাঁকে গ্রামবাসীরা মাথায় তুলে কেন রাখবেন না তা পরিষ্কার নয়।
উল্টোদিকে সরকার বা পিজিসিআইএলের দিক থেকে দেখলেও এই চুক্তি যথেষ্ট ইতিবাচকই। একটা সাবস্টেশন এবং সংলগ্ন লাইনগুলো অতখানি তৈরী হয়ে যাওয়ার পর যদি পরিকল্পনা বাতিল করতে হত, তাতে শুধু যে বিশাল আর্থিক ক্ষতি হত তাই নয়, সারা ভারত জুড়েই গ্রিডকে শক্তিশালী করার যে প্রক্রিয়া চলছে তা অনেকখানি ধাক্কা খেত। ২২০ কেভির যে লাইনগুলো ভাঙড় থেকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ পরিবহন নিগম (WBSETCL) টানবে সেগুলো অতি অব্শ্যই নিকটবর্তী এবং একটু দূরবর্তী অঞ্চলের সাধারণ মানুষের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের সাথে যুক্ত। সেগুলি না হলে সেই প্রক্রিয়াও ভালোরকম ব্যহত হত। গ্রিড সংযুক্তিকরণের জন্য যে ১৬ টি লাইনের পরিকল্পনা ছিল তার মধ্যে যেগুলো চুক্তি মোতাবেক বাতিল হল, সেগুলোকে পিজিসিআইএলকে অন্যভাবে পরিকল্পনা করতে হবে।
প্রসঙ্গ সি পি আই এম ঃ কিছু ভাবনা : পিনাকী মিত্র
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৪ মে ২০০৯ | ১১৬৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
অত:পর লোকসভা নির্বাচনেও পর্যুদস্ত সি পি এম। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ধাক্কা এবং তজ্জনিত "আত্মসমীক্ষা'র পর্ব শেষ করে, শরিকি অনৈক্যের ফুটিফাটাগুলোয় প্রেমের প্রলেপ লাগিয়ে, ন্যানো বিদায় এবং বিমানবাবুর মানুষের কাছে বারংবার ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশকে পাথেয় করে সি পি এমের মধ্যে যখন ফিরে আসছিল পঞ্চায়েতপূর্ব সেই আত্মবিশ্বাস,তাপসী মালিকের সিডি থেকে শুরু করে সুবোধ সরকারের টিভি শো, বুদ্ধবাবুর প্রকাশ্য ভাষণ থেকে শুরু করে অশোকবাবুর নেপথ্য ভাষণ - সবেতেই যখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল '৭০ এর অমিতাভসুলভ সেই যোশ, ঠিক তখনই "কোথা হইতে কি হইয়া গেল, সি পি এম লোকসভা নির্বাচনে ধরাশায়ী হইয়া গেল'।