বাণী ... ...
বাণী ... ...
ভাবনা ... ...
নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর যাবতীয় দায় মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সদ্য তৃণমূলত্যাগী তাঁর দুই প্রাক্তন সতীর্থ শিশির অধিকারী এবং শুভেন্দু অধিকারীর উপরে চাপালেন।প্রকাশ্য জনসভায় মমতা বললেন, সেদিন নন্দীগ্রামের ভিতরে পুলিশ ঢোকে এবং অথ্যাচার করে, গুলি চালায় শুভেন্দু আর শিশিরেরই নির্দেশে। ... ...
গত ২০১১ সালে বামফ্রন্ট হেরে যায়। কেন হেরে যায়, তার চর্বিতচর্বণ না করে, যে নেতিবাচক ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেতেন, তারপরের সময়কাল গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এক ভয়ঙ্কর মুষল পর্বের কাল। বালির বাঁধের মতো ভেঙে পড়তে থাকে বামপন্থী দলগুলির সংগঠন। বামফ্রন্টের শেষ পনের আঠারো বছরে শরিক দলগুলিকে মাথা তুলতে না দেওয়ার যে প্রবণতা অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল, তার ফলশ্রুতিতে দুই দিনাজপুর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার বাসন্তী, গোসাবা, মুর্শিদাবাদে আরএসপি প্রায় হারিয়ে যেতে বসে। যদিও মুর্শিদাবাদে আরএসপি নিজের তৈরি স্বখাত সলিলে অনেকটাই নিজেরা ডুবেছে। আজ যে অধীররঞ্জন চৌধুরী কংগ্রেসের নেতা, তিনি তো আরএসপির দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্টি। আরএসপি এই অধীরবাবুকে তৈরি করেছিল সিপিআই(এম)কে শায়েস্তা করতে, যেমন করেছিল কলকাতায় পরেশ পালকে। ফরোয়ার্ড ব্লকের অশোক ঘোষ তাঁর বিশেষ পছন্দের অপরাজিতা গোপ্পীকে রাজনীতিতে তুলে ধরতে একদিকে কমল গুহকে উত্তরবঙ্গে চাপে রেখেছিলেন, অপরদিকে সিপিআই(এম)কে শায়েস্তা করতে এই কমল গুহকেই মাথায় তুলেছিলেন। ... ...
দূরদর্শনের দিলীপ পাল, মন্দিরা পালেদের বাড়ি থেকে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আর তাঁর পত্নী সুরাইয়া ইলিয়াস যাচ্ছেন বালিগঞ্জ ফাঁড়িতে অন্নদাশঙ্কর রায়ের বাড়িতে। সময়টা নয়ের দশকের মাঝামাঝি। একটা মিনি বাসের সাওয়ারি হয়েছেন তাঁরা। তখনো 'খোয়াবনামা' বই আকারে প্রকাশিত হয় নি। বাংলাদেশের ছোটখাট কয়েকটি পত্র পত্রিকায় ইতিউতি বেরিয়েছে। যাঁদের বাংলাদেশের সঙ্গে খুব নিবিড় সংযোগ নেই, তাঁদের পক্ষে সেই লেখা পড়বার সুযোগ ঘটে নি। কারন, পশ্চিমবঙ্গ তো কোন ছাড়, বাংলাদেশের ও সেইসময়ের নামীদামী পত্রপত্রিকাগুলির তাঁকে ঘিরে খুব একটা আগ্রহ ছিল না। ইলিয়াস লেখার নেশাতে লিখে যেতেন। বাজার চলতি লেখক হওয়ার কোনো নেশাই তাঁর কোনো কালে ছিল না। আর রাজনৈতিক অবস্থান ও ছিল একটু অতি বামঝোঁক সম্পন্ন। ... ...
ঘরে আগুন লাগাবার যাবতীয় ষড়যন্ত্র করে, আগুন লাগার পর প্রতিবেশির সহানুভূতি কুড়োনোর কৌশল নিয়েছেন মমতা। রামকাহিনির নায়কের রাজনীতিকরণ কেন বাজপেয়ী জামানাতে সাড়ে ছয় বছর চুপ করে সহ্য করেছিলেন মমতা? তিনি যখন বাজপেয়ীর ক্যাবিনেটে শোভাবর্ধন করছিলেন, তখন আরএসএস-বিজেপি দশরথনন্দনকে তাঁদের রাজনৈতিক শ্লোগান করে গুজরাটে যখন মুসলমানের মুন্ড নিয়ে গেন্ডুয়া খেলেছিল, তখন কোথায় ছিল মমতার প্রতিবাদ? ... ...
আমায় চিঠি দিও মালতীপাটপুরের ঠিকানায়, ওড্রদেশের বালির গায়ে লেগে থাকা লোনা জল, একটা জমিয়ে রেখো আমাকে দাফনই করো বা পুড়িয়েই দাও, তার আগে শেষবার শুদ্ধ করার তাগিদে -- লোনা হাওয়া আমার সয়ে গেছে। ... ...
শীতের শুরুতেই বেশ ভালো ট্যাংড়া মাছ পেলাম ভাইয়ের কাছে। ভাই। নামটা তার পোষাকি, না নিকনেম - জানি না। জানার চেষ্টাও করি নি কখনো। মাছওয়ালা। ভাটপাড়ার ধুনি মুখুজ্জের রোয়াকে বসে মাছ বেচে। ট্যাংড়া মাছ দেখলেই আমি বড্ড স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি। শীতের বড়ো তেলালো ট্যাংড়া বড্ড ভালোবাসতেন জ্যোতিবাবু। নৈহাটি বাজারের সুকুমারদার কাছে একটা সময় ছিল, যখন শীতে বড় ট্যাংড়া আসলেই তা থেকে খানকতক যেত ইন্দিরা ভবনে। ... ...
আরএসএস তার হাজার রকমের সহযোগী সংগঠন এবং রাজনৈতিক অঙ্গ বিজেপিকে নিয়ে '৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে। বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তুপ ঘিরে হিন্দু সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদি শিবিরের যে কাঙ্খিত অভিষ্পা ছিল, সেটি দেশের সর্বোচ্চ আদালত, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে তারা পেয়ে গেছে। গোটা বিশ্বের মতোই, আমাদের দেশ, ভারত যখন কোভিড ১৯ জনিত অতিমারীতে জর্জরিত, তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তুপের উপর তথাকথিত রামমন্দিরের ভিত স্থাপন করেছেন। আরএসএসের রাজনৈতিক কর্মসূচি 'সাম্প্রদায়িকতা'-র পূর্ণাঙ্গ প্রয়োগের পথে এই ভাবে দেশের সরকার আত্মনিয়োগ করেছে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানকে সম্পূর্ণ বুড়ো আঙুল দেখিয়ে খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বাবরি মসজিদের ধ্বংসস্তুপের উপর এই তথাকথিত রামমন্দিরের ভিতপুজো আমাদের দেশকে সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদের এক ভয়ঙ্কর যুগের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে। ... ...