পাতা ১৬৮ ১ ) আমরা জীবদ্দশায় যা জমা করে যাব, সেটাই ফিল্মের মত role হয়ে যাবে।২ ) আমাদের দেহটা একটা নতুন পুকুরের মত। নতুন পুকুরে যেমন আপনার থেকেই শ্যাওলা গাছ হয়, মশা-ব্যাঙ ইত্যাদি এসে যায় তেমনি এই দেহে আগে থেকে কোনও রোগ থাকে না – বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নানান উপসর্গ দেখা যায়।৩ ) কচ্ছপ সাধারণত জলে থাকে কিন্তু ডিম পাড়ে ডাঙ্গায় এবং পরে বালি দিয়ে ঢেকে দেয়। জলে এসে সে ডিমের দিকে তাকিয়ে থাকে তবে বাচ্চা হয়। যদি কোন জেলে ঐ কচ্ছপটাকে ধরে নিয়ে যায় তবে সেই ডিম থেকে বাচ্চা হয় না। মায়ের দৃষ্টি যদি এত প্রখর হয় তবে গোবিন্দের কৃপাদৃষ্টি ... ...
পাতা ১১০ ১ ) পৃথিবীর মধ্যে আশ্চর্য জিনিস কী ? আমি মরব কিন্তু এখন নয়। কী ভাবে ? তখন বলে, ভালোভাবে মরবে।শ্রীমদ্ভগবদগীতা ১৮শ অধ্যায়: মোক্ষযোগশ্লোক ৬১ - ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি । / ভ্রাময়ন্ সর্বভূতানি যন্ত্রারূঢ়ানি মায়য়া।হে অর্জুন ! পরমেশ্বর ভগবান সমস্ত জীবের হৃদয়ে অবস্থান করছেন এবং সমস্ত জীবকে দেহরূপ যন্ত্রে আহরণ করিয়ে মায়ার দ্বারা ভ্রমণ করান। প্রতি প্রাণীর হৃদয়ে ঈশ্বরের বাস। কাজেই সকল জীবের দুঃখ-যন্ত্রণার ভার নেবার যদি আন্তরিক ভাবে সচেষ্ট হন তবেই ক্রমানয়ে পৌঁছে জাবেন চির শান্তির আলয়ে।২ ) গুরুর কাজ শিষ্যকে বিদ্যাদান করা। তিনি যদি বিদ্যান না হন, তবে কী দান করবেন তিনি ? আবার শিষ্য অনুপযুক্ত ... ...
পাতা ৩৮, তারিখ – ০৪.৯.২০১৩ ১) এই দিন চলিয়া যাইবে, ক্ষণকাল পরে রবে মাত্র কর্মফল চিরদিন তরে। এই দিনটা আর আসবে না।মানুষ তার জীবনে যত দুঃখ কষ্ট পায় সব তার নিজের কর্মফলের জন্য। সাধুসঙ্গ করলে তার কর্মফল নিশ্চয়ই ভালো হবে নতুবা অসৎসঙ্গ করলে তাকে ভুগতেই হবে। যারা সৎসঙ্গ করেন ভগবান তাদের দুঃখকষ্ট দিয়ে ঠিক নিজের মতো করেন।২) এক ভক্ত ঘাস কাটতে কাটতে কাস্তের দ্বারা তার হাত কেটে রক্ত বের হয়। ভক্তটি ভাবলেন নিশ্চয়ই উনি এমন কোনও অপরাধ করেছেন যার জন্য রক্তপাত হল। তিনি গুরুর কাছে যান। গুরু বলেন এই ঘাসে কিছুক্ষণ আগে এক বিষধর সাপ ছিল। সেই সাপের হাত থেকে ... ...
ভূমিকা – ছোটকাকুর ঘর থেকে পাওয়া যায় ৩৬৪ পাতার হাতে লেখা একটি পাণ্ডুলিপি। ছোটকাকি এই অমুল্য সম্পদ আমার হাতে তুলে দেন। কয়েকপাতা পড়েছি। কী অসামান্য প্রতিভা ছিল ওনার। আমরা কেউ’ই এর হদিশ পাইনি ওনার জীবদ্দশায়। কত সহজ, সরল ভাষায় উনি ওনার মনের কথা ব্যক্ত করেছেন। চেষ্টা করব ওনার লেখার অংশগুলি তুলে ধরতে, ধীরে ধীরে।পাতা ৬৭, তারিখ – ১৬.৪.২০১৪ ১) একটা কথা প্রায়ই মনে হয়, পৃথিবীতে আমার সময় তো কিছু জানিনি তবে যেতে যখন হবেই তবে আর tension করে লাভ কী।২) নিয়মের কোনও প্রয়োজন হয় না, ভাবটাই হচ্ছে আসল অর্থাৎ ভক্তি, শ্রদ্ধা। অন্তরের সঙ্গে করছে কি না, নাকি দায়সারা করে করছে। পঞ্চপ্রদীপের ... ...
মনে পড়ে যায় শৈশবের সেই দিনগুলি, আমার উমা দিদির আঙুল ধরে হেঁটে যাওয়া এক মণ্ডপ থেকে আরেক মণ্ডপে পায়ের ফোস্কা নিয়ে, কিন্তু মুখে লেগে থাকত কিছু হয়নি অভিনয়ের প্রলেপ। তবে ফিরতে হোতো উমা দিদির ঘাড়ে চেপেই, ফাঁকি কি দেওয়া যায় উমা দিদির চোখকে। মনের আলমারিতে নাড়া দিয়ে স্মৃতির দুয়ারে ভেসে আসে সেই ছোটবেলার দুষ্টুমির কথা - অঞ্জলির ফুল ছুঁড়ে দেওয়ার কথা, শিউলির পাপড়ির লেখা সেই মেঘবালিকার হলুদ্রাভ পিঠে লেগে থাকার কথা, পিছন ফিরে সেই আড়চোখে তার মিষ্টি চাউনির কথা।মনে পড়ে শরতের ঘুঘু ডাকা দুপুরের একফালি নরম রোদে বসে, মায়ের পাকা চুলে বিলি কাটতে কাটতে দিদি মিঠে বুলিতে শোনাত পুস্পাঞ্জলি, ভোগের খিচুড়ি ... ...
যেখানেই থাকুক, দুর্গাপুজোর সময় পলাশ ঠিক চলে আসে তাদের বসতবাড়িতে। সেই ১৯৫৪ সালে পলাশের দাদুভাই শুরু করেছিলেন উমা'মায়ের সপরিবারে আমন্ত্রণ ওনার বসতবাড়ির পুজোমণ্ডপে, স্বপ্নাদেশ পেয়ে - আজও তা অব্যাহত ৬৯ বছর ধরে। দাদুভাইয়ের এক ভোরের স্বপ্নে দেখা দিলেন স্বয়ং উমা'মা। ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন সবার মাঝে কয়েকদিন কাটিয়ে যাওয়ার।আমাদের ঠাকুমা কিংবা মা-কাকিমা-পিসিমাকে 'দুর্গা-মা' উচ্চারণের অধিক 'উমা' উচ্চারণ করতে শুনেছি। এই 'উমা' যেন মা-কাকিমা-পিসিমাদের কাছে অনেক বেশি ঘরের মেয়ে কিম্বা মা হয়ে উঠেছেন। আর কোনো দেবদেবীকে বোধহয় এমন পারিবারিক হয়ে যেতে দেখিনি। 'উমা' যেন আমাদের ঘরের মেয়ে কিংবা মা, তাঁকে দেখে অনেক বেশি আপনার মনে হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯২৯ সালে মহালয়ার দিনেই ‘পথের ... ...
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ই মে, ১৮৬১ – ৭ই আগস্ট, ১৯৪১) / (২৫ বৈশাখ, ১২৬৮ – ২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাঁকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তাঁর জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তাঁর সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। আমরা প্রায় সকলেই অবহিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছদ্মনাম 'ভানুসিংহ ঠাকুর' ৷ কিন্তু তিনি বাল্যে ও কৈশোরে যে আরও আটটি ছদ্মনামে ... ...
'তুমি এবার যখন কলেজের হোস্টেলে যাওয়ার জন্য বেরোলে, তোমার মুখটা খুব শুকনো দেখাচ্ছিলো। প্রত্যেকবার হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরার জন্য দমদমের বাড়ি থেকে ট্যাক্সি নিয়ে যাও। এবার তোমার মায়ের থেকে ট্যাক্সি ভাড়া নিলে না। জানালে ১১-এ বাসে করে চলে যাবে। ১৪ টাকা ট্যাক্সি ভাড়া বাঁচানোর জন্য বাড়ি থেকে নির্ধারিত বেরোনোর সময়ের এক ঘন্টা আগেই বেরিয়ে গেলে। তুমি কোনো চিন্তা কোরো না। আমাদের ঠিক চলে যাবে। তোমাকে প্রত্যেক মাসে হোস্টেল এবং অন্যান্য খরচ বাবদ ৩০০ টাকা পাঠিয়ে দেব, কোনো অসুবিধা হবে না। সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা যখন কোনো দোষ করিনি, সাসপেনশন অর্ডার খুব শীঘ্র'ই তুলে নেবে। তুমি এই নিয়ে একদম ভাবনা-চিন্তা কোরো ... ...
করোনা মহামারিকালে যখন জীবনযাপন ধীরেধীরে স্বাভাবিকের দিকে এগোচ্ছিল, স্কুল-কলেজ-অফিস-সিনেমা হল খুলতে আরম্ভ করেছিল, বাচ্চারা শুরু করেছিল যাওয়া মাঠে-ঘাটে খেলতে; ঠিক সেই সময়ই আবার করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশংকায় ঝুপ করে সব আবার বন্ধ হতে শুরু করেছে। আবার প্রায় ঘরবন্দি অবস্থা সকলের। আবার নানারকম বিধি-নিষেধের আরোপ : সপ্তাহে তিনদিন বাজার খুলবে, সিনেমাহল-জিম-পার্লার থাকবে বন্ধ, স্কুল-কলেজ আবার সব বন্ধ, লোকাল ট্রেন চলবে কমসংখ্যক এবং রাত ১০টা পর্যন্ত - এইরকম সব মিনি লকডাউন স্বরূপ নানারকম নিয়ম-বিধি-নিষেধ। ... ...
অনুগল্প - ১ সবার উপরে মানুষ সত্যসজল অফিস যাওয়ার সময় বলে যায় তাপসীকে, যদি সম্ভব হয় একবার ব্যাংকে যেতে আজ। ব্যাংকের ম্যানেজার ত্রিদিব মুখার্জীর সাথে দেখা করতে। সজল একটা ফিক্সড ডিপোজিটের জন্য আবেদন পত্র জমা দিয়েছে, তাপসীকে সই করতে হবে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সামনে। তাপসীর কাজ আর শেষ হয় না সংসারের। সেই সকালে উঠে তাড়াহুড়ো করে সজলের জন্য কিছু রান্না করে অফিসে পাঠানো, বড় মেয়ে বুলি'র জন্য কিছু জলখাবার। ... ...