ঊষালগ্নে রাতের অন্ধকার কেটে আলোর রঙ ছড়িয়ে পড়ে ধীরে ধীরে। শুরু হয় আর একটা নতুন দিনের। আর একটা নতুন ভোরের। অন্ধকারের পর নতুন সূচনার প্রতীক ই ভোর। ১৯৯৭ সাল। ক্লাস এইটে পড়ি। সেজো মাসির সবে বিয়ে হয়েছে। মাসি অষ্টমঙ্গলায় মামাবাড়িতে এসেছে। আমরা সবাই গেছি সেখানে। মা যেহেতু বড়, মায়ের বিশেষ ভূমিকা। সব আত্মীয়স্বজন এসেছে। সারাদিন বেশ হই হুল্লোড়। সন্ধ্যের ... ...
জীবনের থেকে বড় ক্যানভাস আর তো কিছু নেই। এর মধ্যেই আছে সমস্ত সত্য, তা সুখের হোক, দুঃখের হোক বা নির্মম। সেই পথ পেরোতে হবে। বছর পাঁচেক বয়সে ভাড়া বাড়ি ছেড়ে মা বাবা দিদিদের সাথে চলে এসেছিলাম নিজেদের বাড়িতে। আসার সময় বেশ বুঝেছিলাম নিজেদের বাড়ি বিষয়টা বেশ স্পেশাল। এখন বুঝি সম্ভ্রমের। তবে সেই বয়সে এই স্থানান্তর মনে রাখার আরও কিছু কারণ ছিল। প্রথম কারণ কারেন্ট। নতুন বাড়িতে এসে কারেন্ট ছিল না বেশ কয়েকমাস। নতুন কানেকশন পেতে সেরকমই সময় লাগত তখন। তিনটে বাচ্চা নিয়ে মা বাবার অসহায় অবস্থা। দ্বিতীয় কারন পরিবেশ। আগে ছিলাম টাউনশিপ এর প্ল্যানড ... ...
তীব্র দহনে গা, হাত, পা যখন চিরবির করছে সূর্যের প্রখর তাপ মাথায় নিয়ে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার উদ্দেশ্যে অটোয় উঠে বসলাম। কতক্ষনে তা ভরবে জানি না। ছ জনের গুনতি শেষ হলে তবে ড্রাইভার অটোর চাবি ঘোরাবে। একজন দুজন সবে এসেছে। সকলেরই গলদঘর্ম ... ...
মুহুর্তরাই আসল। এক একটা মুহুর্ত প্রজাপতির জাল দিয়ে ধরতে পারলেই রঙিন হয়ে উঠবে তারা। সেগুলোই জুড়ে জুড়ে একদিন স্মৃতিরাই হয়ে যাবে জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম। এই ছিল সত্যি, ভেলকিবাজিতে তাই হয়ে গেল চরম মিথ্যা, ডাহা ছেলেখেলা। সত্যর চাদর গায়ে দিয়ে মিথ্যে কখন সব কিছুর ওপর থেকে বিশ্বাসকে শুষে নিয়ে চলে যাবে ধরা যাবে না। তাই একটা ঘটনা, সুন্দর ঘটনা ... ...
বটতলায় বসে আছে ছেলেটা। দূর থেকে দেখছে অখিল সেই থেকে একটু যেন আনমোনা। দেখতে ভারী সুন্দর। সাইকেলে করে কাপড় ফেরি করে ঘুরে ঘুরে ও। দুপুর দিকটায় এখানে এসে রোজ বসে। আগে কখনো দেখে নি ছেলেটাকে। সেই থেকে গভীর ভাবে কি যেন ভাবছে। এই নির্জনতায় কিছু শোনার চেষ্টা করছে হয়তো ... ...
অন্ধকারে হাতড়ে হাতড় চলিতেছিল অবিনাশ। চলিতে তাকে হবেই। সামনের দিকে। থামিবার অথবা পিছনদিকে হাঁটিবার আর কোনো উপায় তার নেই। কতদূর আসিয়াছে অথবা আর কতদূর তাকে যাইতে হইবে তাহার অজানা। এভাবে চলিতে চলিতে রাত, দিন কোনোকিছুই ঠাহর হয় না। রাস্তা এত পিছল, এত বন্ধুর এবং ততধিক অজানা। অনিশ্চয়তা যেন তাহার আমৃত্যু সঙ্গী হইল। ফেলে আসা জীবন তাহার কাছে পূর্বজন্মের মত ঠেকে। তা লইয়া আর সে ভাবে না। শুধু ছেলেটার মুখ ভাসিয়া উঠে বারবার। তাকে না হইলে যে তাহার চলে না। ... ...
হ্যাঁ অনেক অপেক্ষা করার পর বুঝলাম এবং এই সিদ্ধান্তে এলাম যে এখনো উচ্চশিক্ষিত মহলে, যারা অনেক ক্ষেত্রে মানুষ গড়ার কারিগর সেখানেও অর্থ, সামাজিক অবস্থানই মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কের মাপকাঠি। এবং যদি কোথাও এর অন্যথা হয় তবে সমাজ সংস্কারকরা নিজ উদ্যোগে তা সুন্দর শুধরে দেন। তাকে যেমন আমরা পুতুল সাজাই। কোনটার পাশে কোনটাকে মানাবে। কোনটা কে দিয়েছিল। তাঁর এসে দেখলে কেমন লাগবে। তাঁর দেওয়া পুতুল কেমন আছে। দামী পুতুল ভঙ্গুর ... ...
পুলু কাকিমা দুপুরে ভাত খেয়ে সবে গোপাল জর্দা দেওয়া পানটা মুখে পুরেছে, ওমনি মেনি কোত্থেকে এসে বসল নিঃশব্দে। হাওয়ার সাথে মিশে আসে ও। মুখটা বেঁকিয়ে বলল ম্যাগো, কি জোলো দুধ, ছ্যা ছ্যা, মুখটা তেতো হয়ে গেল। দত্ত গিন্নীর গলায় দেখে এলাম একটা মটর হার, নিজের গলায় মটর হার আর এদিকে আধবাটি দুধ দেয় অর্ধেক জল মিশিয়ে। এই কথাটাই পুলু কাকিমার কানে লাগল খট্ করে। আফসোসের গলায় বলল তোকে কত বার বারণ ... ...
বড্ড বড় বড় কথা বলে। যেন সবজান্তা। আসলে ভিতরটা ফাঁপা হলে আওয়াজ বেশী হয়। ইত্যাদি ইত্যাদি। এরকম কথাতো একজনকে আর একজনের সম্বন্ধে বলতে শুনি। নিজেও হয়তো কখনো বলেছি। এখন যত বয়স বাড়ছে ততই সবকিছু যাচাই করার অভ্যেস বাড়ছে। সবসময় ঠিকঠাক পারছি না যদিও। ওই সবেতেই মধ্যবিত্ত আর কি। তা এমন একজন বড় বড় কথা বলা (আমার মনে হয়েছে) মানুষের সাথে আলাপ হল। দেখলাম ভদ্রলোকের সব ব্যাপারে কথা বলার আগ্ৰহ। আমি আবার মাঝে মধ্যে ভালো শ্রোতা হয়ে উঠি। তো ভদ্রলোকের কথা শুনতে শুনতে বুঝলাম সব বিষয়টা যে খুব ভাল জানেন তা নয় কিন্তু যে কোনো বিষয় বেশ সুন্দর কথা বলে যেতে পারেন। তার মানে গল্প করতে ভালো বাসেন। কিন্তু ব্যাপার ... ...
অনাদি পরম যত্নে হাত বোলাচ্ছিল ওর সাধের ফুল গাছ গুলোতে।ওর নিজের।নিজের পরিশ্রমের,ভালবাসা দিয়ে গড়া।আজ ওরা কথা বলে।কেউ বা সদ্য জন্ম নেবে।ভীষন ভালবাসে ও এই গাছ গুলো কে।গাছেদের ছাড়া কোথাও গিয়ে ওর শান্তি নেই।ফলে একা একা ব্যাচেলর হলেও খুব বেশীদিনের জন্য ও কোথাও যায়না।আত্মীয়স্বজন রা হাসাহাসি করে।বিরক্ত তো হয়ই ... ...