সতী : শেষ পর্ব
প্ৰসেনজিৎ বসু
[ ঠিক এই সময়েই, বাংলার ঘোরেই কিনা কে জানে, বিরু বলেই ফেলল কথাটা। "একবার চান্স নিয়ে দেখবি ?" ]
-- "যাঃ ! পাগল নাকি শালা ! পাড়ার ব্যাপার। জানাজানি হলে কেলো হয়ে যাবে।"
--"কেলো করতে আছেটা কে বে ? তিনকুলে কেউ আসে ? একা মাল। তিনজনের ঠাপ খেলে বাপ বলার জোর থাকবে না।"
--"ঠাপের লোভ দেখাস না ওয়াড়া। একেই চড়ে আছে। ভালমন্দ করে দেব কিছু একটা।"
--"ভালমন্দ করতেই তো বলছি শালা। তিনজন আছি। ঠিক সাল্টে নেব। কী ? ঠিক কিনা ?"
প্রথমে ... ...
সতী : প্রথম পর্ব
প্রসেনজিৎ বসু
মেয়েটা মাসতিনেক হল এসেছে এই পাড়ায়।
মেয়ে ? এই হয়েছে শালা এক মুশকিল ! বিয়ের পর মেয়েরা বউ হয়, কিন্তু ডিভোর্সের পর তারা কি বউই থাকে ? নাকি ফের মেয়ে বনে যায় ? জল জমে বরফ হয়। বরফ গললে আবার জল। কিন্তু এক্ষেত্রে ? ডিভোর্সি মহিলারা ঠিক কী শালা ? কুমারী নয়, কারণ ফুলশয্যা হয়ে গেছে। সধবা নয়, কারণ বর্তমানে বর নেই। আবার বিধবাও নয়, কারণ বর মরেনি। তাহলে ? ধ্যার ওয়াড়া ! ছেলেদের নিয়ে এসব ঝামেলা নেই। ছেলে ছেলেই। জল-বরফ-বাষ্প কিস্যু নয়। ছেলে।
তো কথা হচ্ছিল এ ... ...
কৃত্যা : তৃতীয় পর্ব
প্রসেনজিৎ বসু
[পাণ্ডবগণ অধোনেত্রে নীরব এবং ধৃতরাষ্ট্র অন্ধনেত্রে সরব -- এমন সময়ে দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রাঞ্চল ধরে সজোরে টান দেন।]
প্রবল উল্লাসধ্বনির মাঝে প্রথমে কিছুই বোঝা যায় না। পৈশাচিক আমোদে সভা তখন মত্ত। আঁচল খসে যায়, কিন্তু দ্রৌপদীর স্কন্ধদেশ অনাবৃত হতে-হতেও যেন হয় না। কিন্তু সভার প্রত্যন্ত এক কোণ থেকে একটি মর্মান্তিক আর্তনাদ ওঠে, যা বিপুল হর্ষধ্বনির মাঝে কারুর শ্রুতিগোচর হয় না। মত্ত জনতা লক্ষই করে না, দুঃসহ নামক এক কৌরবভ্রাতা রক্তাক্ত দেহে সভাকক্ষে ... ...
কৃত্যা : দ্বিতীয় পর্ব
প্রসেনজিৎ বসু
বাস্তবিকই রাজবধূর কেশাকর্ষণ ! বলপ্রয়োগ ! অন্যান্য সভাসদদের সানন্দ উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, ঠিক সেই সময়ে প্রচণ্ড এক চরণবিক্ষেপের সঙ্গে দ্বারপ্রান্তে দেখা যায় উজ্জ্বল শ্যামবর্ণা এক নারীকে।
দৃপ্ত ভঙ্গিতে দণ্ডায়মানা। আকুলিত কুন্তলরাশি বিবরবিমুক্ত সর্পকুলের মতো ছড়িয়ে রয়েছে পৃষ্ঠে ও বাহুতে । পূর্ণযৌবনধন্য দেহখানি বেষ্টন করে রেখেছে একটিমাত্র পীত বসন যা দেখে সহসা বিভ্রম জাগে। কৃষ্ণবর্ণ ভস্মের কাজ পীত বর্ণের অগ্নিকে আচ্ছাদিত করা। এখানে বিপরীত ধর্ম প্র ... ...
কৃত্যা : প্রথম পর্ব
প্রসেনজিৎ বসু
যুধিষ্ঠির ক্লেশকম্পিত কণ্ঠে বললেন, "যিনি আকুঞ্চিত নীলকুন্তলা, মল্লিকামুখী, পদ্মনেত্রী ও পদ্মগন্ধা, যিনি মেষপালিকার ন্যায় শেষে নিদ্রিতা ও অগ্রে জাগ্রতা, সেই শ্রীলক্ষণা দ্রৌপদীকে পণ রাখলাম।"
দ্যূতসভা চাঞ্চল্যবিক্ষুব্ধ হল। এ এক অভিনব ঘটনা বটে ! ইতোপূর্বে পতিকর্তৃক পত্নীপীড়ন, পত্নীদান, পত্নীপরিত্যাগ, পত্নীহত্যা ইত্যাদি বহুবিধ কর্ণরোচক সংবাদ প্রাপ্ত হওয়া গেছে। কিন্তু পতিকর্তৃক পত্নীকে দ্যূতের পণরূপে বিঘোষণা -- এটি প্রথম ! প্রকাশ্যে সকলেই উদ্বেগে ... ...
বেশ্যাদ্বার (দ্বিতীয় পর্ব)
প্রসেনজিৎ বসু
"কেন !? কেন এখন সমুদ্রলঙ্ঘন আর সম্ভব নয় ঋক্ষরাজ ?" রাম ও হনুমানের যৌথ প্রশ্নে জাম্বুবান বলতে শুরু করেন -- "প্রভু রঘুবীর ! অবধান করুন। দেবীপূজার লগ্ন ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। আপনার বিজয়কামনায় দেবগণও নিজ-নিজ লোকে দুর্গারাধনারত, যাতে সকলের মিলিত প্রার্থনায় মহেশ্বরী আশু প্রসন্না হন। বরুণদেবও যথারীতি সমুদ্রগর্ভে দেবীপূজা করছেন। এমতাবস্থায় হনুমান যদি সমুদ্র ডিঙোতে যায়, তাহলে তা দেবীমণ্ডপ-লঙ্ঘনের মহাপাপে পরিণত হবে। চণ্ডিকা অবধারিতভাবেই কুপিতা হয়ে হ ... ...
বেশ্যাদ্বার (প্রথম পর্ব)
প্রসেনজিৎ বসু
রামচন্দ্র দুর্গাপুজো করছেন। রাবণবধের জন্য। বানরসেনা নানা জায়গা থেকে পুজোর বিপুল সামগ্রী জোগাড় করে এনেছে। রঘুবীর পুজো শুরু করেছেন। ষষ্ঠীর বোধন হয়ে গেছে। চলছে সপ্তমীর মহাস্নান। দেবীস্বরূপা সুসজ্জিতা নবপত্রিকাকে একেকটি মন্ত্রে একেকটি দ্রব্য দিয়ে স্নান করাচ্ছেন রাম। নদীজলে, শঙ্খজলে, গঙ্গাজলে স্নান হল। উষ্ণজলে, গন্ধজলে, শুদ্ধজলে স্নান হল। কুশজলে, পুষ্পজলে, ফলজলে স্নান হল। শিশিরজলে, সাগরজলে,ওষধিজলে স্নান হল। তীর্থজলে, বৃষ্টিজলে, ঝর্ণাজলে স্নান হল। ... ...