গত এক বছর হল আমরা গুহাচিত্রের মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গে কথা বলছি। আমরা মানে আমাদের পাড়ার লোকেরা। আমরা ফ্ল্যাটের দেয়ালে গুহাচিত্র আঁকছি। আমরা ছাদের জলের ট্যাঙ্কে গুহাচিত্র আঁকছি। আমরা সর্বত্র গুহাচিত্র আঁকছি।
এই গুহাচিত্র আঁকার সূচনাকালকে আমরা প্যালিওলিথিক যুগ নাম দিয়েছি। গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই ছিল প্যালিওলিথিক। তারপর মেসোলিথিক। এখন নিওলিথিক যুগ চলছে। এ যুগে আমরা আগের দুই যুগের চেয়ে বেশি উন্নত হয়েছি। আমরা আমাদের পাথরের হাতিয়ারকে আরও ধারাল করেছি। আমরা গুহাচিত্রের ভাষাকে আগের চেয়ে উন্নত ... ...
মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্ত্তী সারা জীবনভর একদণ্ড সুস্থির ছিল না - কেবলই খুরপি কিনিতেছে! তাহার বদ্ধমূল বিশ্বাস ছিল তাহার পিতামহ, প্রপিতামহ, তস্য পিতা, তস্য পিতা, তস্য পিতা কেহ না কেহ তাহার ভিটামাটির কোন এক স্থানে বহু-বহু বৎসর পূর্বে অনেকটা গুপ্তধন পুঁতিয়া রাখিয়া গিয়াছেন, সেইটের খোঁজ লইবার লগে সমস্তদিন সে মাটি খুঁড়িত। এইরূপ খুঁড়িতে গিয়া মৃত্যুঞ্জয়ের খুরপির পর খুরপি ক্ষইয়া এতটুকু হইয়া যাইত, তথাপি মৃত্যুঞ্জয় দমিত না। এক খুরপি ফেলিয়া দিয়া অন্য খুরপি লইত। কোন খুরপি একটুকু বাঁকিয়া গেলেই মৃত্যুঞ্জয় উহাকে ফেলিয় ... ...
কৌশিক একদিন সন্ধ্যেবেলা অফিস থেকে ফিরে এসে দেখল যে তার বাবা কুকুর হয়ে গেছে। শুভ্রা খিলখিল করে হেসে বলল, "এসো, এসো! তোমার জন্যেই ওয়েট করছিলাম। দ্যাখো, কী সুন্দর! আমাদের কতদিন ধরে একটা কুকুরের শখ ছিল না? এতদিনে সেটা মিটল।" বাবা বারান্দায় গলায় চেন দিয়ে বাঁধা ছিলেন৷ কৌশিককে দেখে মৃদু গররর করলেন, আর কিছু বললেন না। এঁটুলি মারতে লাগলেন। কৌশিক বলল, "এ তো দারুণ! কখন হল এটা?"
শুভ্রা খুশিতে ভাসতে ভাসতে বলল, "ঐ বিকেলের দিকে। বাবাকে চা দিলাম। খেলেন না। তারপর দেখলুম কুকুর ... ...
ছোটবেলা থেকেই ইতিহাসে আমার হেবি ভয় ছিল, চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশীর নাম শুনে ভাবতাম সিওর হয় ওর চুল ধরে কেউ টানত, নয় ও কারুর চুল ধরে টানত, তাই ঐরকম নাম। তার ওপরে বুদ্ধদেবের বংশপরিচয় আর সুকুমার রায় মাথায় মিলেমিশে এরকম একটা ছড়া হয়ে গেছিল -
শাক্যরাজা শুদ্ধোদন
সাতসকালে দিতেন ডন,
শ্যাম লাহিড়ী বনগ্রামের
কী যেন হয় গঙ্গারামের…
ইত্যাদি।
এর ওপরে আবার যখন জানলাম আমাদের ছবি বিশ্বাসের পূর্বপুরুষ ছিল গৌড়রাজ শশাঙ্ক, তখন পুরোই ঘেঁটে গেলাম। মানে 'সুদখোরের টাকায় আমার একমাত্র ... ...
ভোরবেলা সমুদ্রের ধারে বেড়াতে বেরিয়ে প্রদীপ্ত একটা বিশাল কাঁকড়া দেখেছে। একথা শুভম, অঙ্কিতা, সহেলিরা কেউই বিশ্বাস করতে চাইছে না। বিশাল মানে বিশাল। সেই অতিকায়, রাক্ষুসে কাঁকড়ার এক দাঁড়া থেকে আরেক দাঁড়ার বিস্তার প্রায় মাইলখানেক। মানে সেই গোটা কাঁকড়াটা প্রায় কয়েক কিলোমিটার লম্বা ও চওড়া। এত বড় কাঁকড়া হয় নাকি? প্রদীপ্ত বলছে হয়। কারণ সে নিজের চোখে দেখেছে। ভোরবেলা সে সমুদ্রের ধারে সূর্য ওঠা দেখতে গেছিল। তখনই সেই মহাজাগতিক কাঁকড়া মাইলখানেক দূরে সমুদ্রের মাঝখানে ভুউউস করে ভেসে ওঠে। সেই বিরাআআআট কাঁকড়ার দাঁ ... ...
সবাই জানে বাঙালী একসময়ে বাঘাড়ু ছিল। কারণ নবারুণ ভট্টাচার্য নিজে তাঁর বইয়ে সে কথা লিখে গিয়েছেন। বাঙালীদের মধ্যে প্রথম যিনি বাঘাড়ু হয়েছিলেন তাঁর নাম ছিল নরহরি দাস। তিনি সিংহের মামা ছিলেন। পঞ্চাশটি বাঘ ধরে তিনি রোজ যে ভয়ানক কান্ডটি করতেন তার কথা বাচ্চা বাচ্চা জানে। এরপরে সুরেশ বিশ্বাস নামে একজন বাঘেদের নিয়ে ছেলেখেলা দেখাতেন। বাঘেদের সঙ্গে বাঙালীদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। টিপু সুলতান নামেও একজন ছিলেন। তিনি বাঘ হয়ে দুরন্ত ব্রিটিশ সিংহদের টিপে টিপে মারতেন। যদিও তিনি বাঙালী ছিলেন না। বাঙালীরা সিংহদের ঠিক ... ...
“ত্র্যম্বকের ত্রিনয়ন ত্রিকাল ত্রিগুণ
শক্তিভেদে ব্যক্তিভেদ দ্বিগুণ বিগুণ।
বিবর্তন আবর্তন সম্বর্তন আদি
জীবশক্তি শিবশক্তি করে বিসম্বদী।
আকর্ষণ বিকর্ষণ পুরুষ প্রকৃতি
আণব চৌম্বকবলে আকৃতি বিকৃতি।
কুশাগ্রে প্রবহমান জীবাত্মবিদ্যুৎ
ধারণা পরমা শক্তি সেথায় উদ্ভূত।
ত্রয়ী শক্তি ত্রিস্বরূপে প্রপজ্ঞে প্রকট —
সংক্ষেপে বলিতে গেলে, হিং টিং ছট্।।”
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ওঁ স্বস্তি। এথে কলিযুগস্য পঞ্চসহস্র একশতবিংশতিবর্ষ গতে অথ চতুর্দ্দশশত চতুর্বিংশতি সংবৎসরে চ ... ...
এটা ২০৩৭ সাল। এবং অামেরিকার গ্লোবাল ডমিনেশন সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।
তবে সকলেই যে নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে গিয়েছে তা নয়। এ সম্পর্কে যথাসময়ে বলা যাবে। আপাতত শুধু এটুকু জানিয়ে রাখা যাচ্ছে যে আট দশক আগে গুয়াতেমালা-ফুয়াতেমালা, চিলি-ফিলি ও আরও যে কয়েকটি পোকামাকড়কে, যেমন কিউবা ও অ্যাঙ্গোলা, দু'আঙুলে ধরে টিপে ফাটিয়ে দেবার যে কর্মসূচী গ্রহণের মধ্যে দিয়ে ব্যাপারটা শুরু করা গেছিল তা এখন পরিপূর্ণ। এবং এই দীর্ঘ গুয়াতেমালা-পর্ব ও চিলি-পর্বের পরে অষ্টাদশ পর্ব সমাপ্ত করতে যথানিয়মেই আসে ইরাক ও আফগানিস্তান। এবং মা ... ...
২০১২ সালের ২১শে ডিসেম্বরের ঠিক আগে আগে যখন আর কয়েকদিনের মধ্যেই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে বলে চারদিকে তোলপাড় উঠেছিল, তখনও ঠিক এরকম করেই রোদের দিকে পিঠ করে শাল জড়িয়ে রাস্তার ধারে কাঠের বেঞ্চির ওপরে একটা ঠ্যাং মুড়ে বসে চুমুকে চুমুকে লাল চা খেত বাবুসোনা।
বাবুসোনার হেলদোল নেই। কানাঘুষোয় কথাটা তার কানে এসেছিল যদিও। কী সব সাল-তারিখের ব্যাপারস্যাপার - পৃথিবী নাকি গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে ধুলোয় মিশে যাবে ওই দিন - বাবুসোনা গা করেনি - আজকাল প্রায় কোনও ব্যাপারেই করে না আর - চা'টা শেষ করে সেদিনও হাতুড়িটা কাঁধে তুলে ন ... ...
আচ্ছা, দুরদর্শনের সেই লোগোটার কথা সবার মনে আছে কি? সেই যে এবড়ো-খেবড়ো পাতার মত দুটো জিনিস ঘুরতে ঘুরতে ক্রমে মসৃণ হয়ে গোল লোগোটা তৈরি হত অার ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতো "সারে জাঁহাসে অাচ্ছা" -র সেই অদ্ভুত টিউন? শুধু তিনটে চ্যানেল অাসতো তখন টিভিতে - DD1, DD2 অার DD7. প্রতি রবিবার বিকেল চারটেয় DD7 -এ দেখা দিতেন উত্তম-সুচিত্রা অার দাদু-ঠাকুমারা এসে বসতেন টিভির সামনে। মোবাইল তখনো সাম্রাজ্যবিস্তার করেনি, ফেসবুক তখন প্রায় science-fiction -এর পর্যায়ে পড়ে, Reality Show -এর কথা তখনো বাঙালি শোনেনি। তখন কালবৈশাখী হ ... ...