পুজো বললেই আমাদের কুঁজোর কথা মনে পড়ে। আকৃতি বললে গোবর গণেশ, প্রকৃতি বললে ল্যাবা কাত্তিক। আমরা লক্ষী বলতে ট্যারা বুঝি আর কলা বলতে বৌ। গনেশ প্রায়ই ওল্টায় বলে আমাদের ভবানী থাকেন ভাঁড়ে। বাজেটের এই হাল নিয়ে থিম-টিম আমাদের পোষাবেনা। তাই পুজো হলেই বা কি, পেরিয়ে গেলেই বা কি, আমাদের কোনো কোনো হেলদোল নেই। এবার আমাদের কোনো থিম নেই। ... ...
আঙুলের ছোঁয়া লাগছিল মুখে, কখনও চোখ, কখনও নাকের পাশে। আলগোছে। হাল্কা ছোঁয়া। অথচ শিরশির করছিল শরীর। সমস্ত শরীর। আঙুলের নখ ছুঁয়ে যাচ্ছিল কানের পাশের গাল। আলতো। চন্দনের ঘ্রাণ আসছিল। চোখ বুজে আসছিল কপালে ঈষৎ সূচালো কিছুর স্পর্শে । সে স্পর্শ যেন অবিচ্ছিন্ন তরঙ্গের মত কপালকে ছুঁয়ে যাচ্ছিল নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে। ও চোখ খুলতে চাইল। চোখের পাতা ভারি ঠেকল। সামনে দেখল হালকা কচি কলাপাতা রং, লাল পাড়ে ঘেরা। ... ...
বাতাসি জানে না আজ ফেব্রুয়ারি মাসের একুশ তারিখ। শীত সামান্য কমে আসার ফলে এখন সে তার ছেঁড়া পোশাকেও খুব ভোরে বেরোতে পারে। সে ঠিক করেছিল আজ নতুন বাড়িগুলোর পেছনের গলিতে যাবে। সে ঠিক জানে এখনও ওদের দলের কেউ ওখানে যায়নি। ... ...
ছোট্ট দুটো হলদে প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে এঘর থেকে ওঘর, ওঘর থেকে সেঘর। নদীর দিক থেকে হাওয়া আসছে। অশথ গাছের পাতায় আওয়াজ হচ্ছে ঝিরঝির ঝিরঝির। সামনের ঘাসছাড়া টুকরো মাঠটায় ধুলো উড়ে যাচ্ছে পাক খেয়ে। দোতলা বাড়িটা দাঁড়িয়ে আছে ভূতের মত। ... ...
স্বপ্নের মতো অন্তর্লীন কোন বিষণ্ন পৃথিবীর অধিবাসে সক্রীড়ক ক্লান্ত সময়। সে এক অনাদি নগরী ছিল। নগরী নয়। নগরপল্লী। টিলার পর্য্যঙ্কে স্থাপিত সুভিক্ষ নগরী। ভোগের, ব্যসনের, দ্যূতক্রীড়া ও অত্যুজ্জ্বল পানোৎসবের রাজধনী যে সুভিক্ষ নগরী, তারই বহির্রেখার অন্ধকারভাগে তার অবস্থান। তাই নগরী নয়, নগরতলি। লোকে ডাকে ধরন্ত পল্লী। ... ...
একটা লুক একটা বাসকোর ভিতরে ঢুইকা মরার প্র্যাকটিস করবার নুইছিল। এই সিন দেইখা একটা বিড়ালের বাচ্চা আইগিয়া আইয়া তারে কইল, তুমি মরবার চাউ ক্যা? লুকটা একটু ভুদাই হইল এবং কইল, তুই জানলি ক্যামনে? বিড়াল কয়, তুমার প্যাট্টিস দেইখাই বুজছি। ... ...
একটা বেওয়ারিশ কুকুরছানা, খুব বেশি হলে হয় তো কয়েক দিন বয়েস হবে, পৃথিবী সম্বন্ধে একেবারে অনভিজ্ঞ, ভরা মার্কেটের মাঝে ছোট্ট শরীরটা নিয়ে রাস্তা পার হতে যাচ্ছিল, আর দু'পা চলামাত্র হুড়মুড়িয়ে তার ওপর এসে পড়ল একটা সওয়ারি-বোঝাই রিকশা। পেছনের একটা চাকা চলে গেল কুকুরটার ঠিক গলার ওপর দিয়ে। একটা ক্ষীণ আওয়াজ বেরলো কি বেরলো না তার ছোট্ট গলাটা থেকে, সাথে সাথে বেরিয়ে এল তাজা লাল রক্ত। ছোটো শরীরটা ছটফটাতে লাগল তাতাপোড়া পিচের রাস্তার ওপর। ... ...
নীলের বাড়াবাড়িই। বাড়াবাড়ি তো সবই। বড়বড়ও। এক্স এক্স এল। এক্স এস খুঁজে পাওয়া দায়। আর এদিকে সব এক্সেস। যেদিকে তাকাও। উপরে তাকাও তো এক্সেল কাচা এক্সট্রা হোয়াইট মেঘ। মুখ তুলে তাকাও তো এক্সট্রা হোয়াইটেনিং টুথপেস্টচর্চিত স্মাইল। সামনে তাকাও তো সুপার স্বচ্ছ দরজা। দরজা যে আদৌ আছে তা-ই বোঝা দায়। প্রথম কদিন তো দুর্যোধনবাবুর ইন্দ্রপ্রস্থ ভ্রমণসমদশা। ... ...
এই ঢাকা তখন সেই ঢাকা ছিলো না। ফুলবাড়িয়াতে ছিলো রেল স্টেশন। রিকশাই ছিলো সর্বত্র জনপ্রিয় বাহন। ইপিআরটিসি'র লাল দোতলা বাস বিআরটিসি হইয়াছে মাত্র। বাবার হাত ধরিয়া সেই দোতলা বাসে চাপিয়া মিরপুর-ফুলবাড়িয়া ভ্রমণ করিয়া জীবনকে মনে হইয়াছিলো সার্থক। রমনা পার্কের দোলনায় আবার কবে চড়িবো, সেই ভাবনায় ছোট্ট শিশু মন কতই না রঙিন স্বপ্ন আঁকিয়াছিলো। ... ...
আমি শরৎ ভালোবাসি, অনেকে বলে শরৎকেই ভালোবাসি। জানালায় উঁকি মেরে অ্যাশট্রের গা ভরা রোদ, চারশো মিলিয়ন ইয়ার রোদও ভালোবাসি। একের পর এক ভালোবাসার ঝাপটায় তিনটে লাইনে পাঁচবার ভালোবাসি। ইয়ার এর কথায় মনে পড়ল অনেক ইয়ার ধরে আমি ইয়ারবাজ ছিলাম। ... ...
মা আসেন প্রতিবছর। মা জানতেও পারেন না দেশের কী অবস্থা, দশের কী হাল। তবুও দেশ ও দশ প্রতি অণুপল শুনতে থাকে মায়ের আগমনের প্রতিধ্বনি। এবার মা আসছেন বদলের বঙ্গে। সেটাই বড়কথা। মায়েরও হাওয়াবদল হবে আশা করা যায়। কিন্তু প্রতিবছরের মত বাজারের দাম বদলায়না। রাস্তাঘাট সারাই হয়না। রাজনীতির অশুভ আঁতাত, খরা-অতিবৃষ্টির টানাপোড়েনে রোগের হ্রাস-বৃদ্ধি, প্লাসটিক না পেপার, পরীক্ষার পাশফেল, রিসেশান-ইনফ্লেশান চাপানউতোর সবকিছু চাপা পড়ে যায় কৈলাশ এন্ড কোং দের আগমনে। ওবামা-ওসামার উত্থান-পতনে, বিস্ফোরণে, দু:খের যজ্ঞে আহুতি দেয় দেশবাসী। ... ...
উৎফুল্ল দ্বীপবাসী বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে সম্মিলিত কণ্ঠে "ধনধান্য পুষ্প ভরা' গানটি গাইতে থাকে। তাদের কার্যক্রমগুলোর মধ্যে একটি সাধারণ দ্বীপের সহজ সরল জীবন প্রকাশিত হয় কৃষিকাজ, নৌকা চালানো, খেলাধুলা, গেরস্থালি, উৎসব...। গান আর কার্যক্রমের মধ্যে পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠে তাদের সমৃদ্ধি আর সুখ-শান্তিতে বসবাসের চিহ্ন। গান গাইতে গাইতে সবাই বের হয়ে গেলে দেখা যায় এক জয়দীপ তার কয়েকটা অস্ত্রের মধ্যে একটা শান দিতে দিতে গানের একটা কলি গুনগুন করে গায় ... ...
ধরো তুমুল হাওয়া, যেন রূপবান বৃক্ষ বাড়ে / বিবিধ আত্মার মাঝে, রাতের সপ্তর্ষি দেখে তাকে / শূন্য ফ্রেমের ভিতরে - গলির ভেতরে গলি, স্থির ... ...
কেন বলো কেন হে অপ্রত্যাশিত,মুহুর্মুহু ঘন / জীবনযৌবন কেন করে তুললে জীবনো যৌবনো / বস্তিবাসী ঝ্যাং করে, গাড়িঘোড়া ক্রিইচ শব্দে থামি ... ...
তুমি কি আমার থেকে বৃষ্টি চাও? / চাও ভেজা? এফোঁড়-ওফোঁড়? / চাও তুমুল, ভিজে যাওয়া, চাও? / ... ...
আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, এখানে কিছুদিন আগে যুদ্ধ হয়ে গেছে: / সাঙ্ঘাতিক, নাতিদীর্ঘ, প্রয়োজনীয় যুদ্ধ । ... ...
বিকেলের দু:সহ আলো ফিরিয়ে দিয়েছে / পুরোনো বিষাদ, ভাঙা প্রাসাদের ঝরোকা খিলান - / প্রেতের পৃথিবী হাতছানি দিয়ে ডাকে। ... ...
আমার ঘুমের দেহ / ছুঁয়ে রেখো দশদিন / দশমাস . / # / অল্প অল্প রোদ দিও- / বৃষ্টি দিও মেপে মেপে মেঘ. / শিকড়ে বিনুনি বেঁধে- / নাম দিও আদুরে আরেক. / এভাবে অষ্টতর শত ... ... ...
জানিনা - একথা যদি শুরু হয় আমাদের সাম্প্রতিক কথপোকথনের হুঁশহীন রাত্রির শেষের যেসব অযৌক্তিক রাগানুরাগের আশনাই রঙীন রাখে এই তোমার-আমার মধ্যেকার হাওয়াবাতাসের / গতিমুখ সবটাই অকল্পনীয় ভাবতে বেশ শ্লাঘা হয় তোমার আমার মুখে বয়ে যেতে থাকে কিছু বিজলী রঙ ... ...
সবগুলো ট্রেন চলে যাচ্ছে- / হুইসেলকন্যা কই তুমি? / পাথুরে অরণ্য পেরিয়ে জীবন ছুটে যাচ্ছে / ভ্রান্ত গন্তব্যে, ... ...