
আমি কোনও নির্ভুল পূর্বাভাস মনে করতে পারছি না। সাধারণত দেখা যায় বিজয়ীরাই সব চেয়ে বেশি বিস্মিত বোধ করেন। ১৯৬৯এ আইরিশ নাট্যকার স্যামুয়েল বেকেটকে যখন পুরস্কার প্রাপ্তির কথা জানান হয় তিনি ভয়ে আর্তনাদ করে ওঠেন, “হায়, ঈশ্বর, এ কি সর্বনাশ হল!” ১৯৭১এ পাবলো নেরুদা সুইডিশ অ্যাকাডেমির গোপন সূত্র মারফত খবরটা প্রচারিত হওয়ার তিন দিন আগে সেটা জেনে গেছিলেন। পরের দিন রাতে তিনি প্যারিসে বন্ধুদের নৈশাহারে আমন্ত্রণ করলেন, যেখানে তিনি তখন চিলের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। আমরা বুঝেই উঠতে পারলাম না যে আয়োজনটা কিসের জন্য যতক্ষণ না সান্ধ্য পত্রিকায় খবরটা দেখলাম। “ছাপার অক্ষরে না দেখলে আমি কোনও কিছু বিশ্বাস করি না,”, অপরাজেয় হাসির ধুম তুলে তিনি পরে আমাদের ঘটনাটা জানান। ... ...

কিন্তু, আমরা দেখি আকাদেমির সদস্যদের মধ্যে ভাষাবিদ কেউই নেই। সকলেই প্রায় সাহিত্যিক, কয়েকজন আমলা বা প্রকাশক এবং সাহিত্যিকদের মধ্যেও মাত্র একজন এইমুহূর্তে সরাসরি অধ্যাপনার সঙ্গে জড়িত। অর্থাৎ, ভাষাচর্চার লোক প্রায় কেউই নেই। সাহিত্যিকরা ভাষাকে দিশা দেখাতে পারেন, কিন্তু ভাষার সংস্কার বিশারদদের কাজ। এবং বাংলাভাষা যেহেতু বহুভাষার থেকে পুষ্টিগ্রহণ করে, বিবিধ ভাষার এক্সপার্টদের আকাদেমির প্রথমসারির নিয়ামকের ভূমিকায় থাকার দরকার তা নেই। তাহলে কারা আছেন? যাঁরা আছেন, তাঁরা সকলেই প্রায় সাহিত্যিক, তদুপরি তাঁরা সকলেই শাসকদলের ঘনিষ্ঠ। আকাদেমির চেয়ারম্যান বাংলার বিশিষ্ট নাট্যকার, কিন্তু তিনি তো মন্ত্রীও। তিনি নিরলসভাবে রাজনীতিটিও করেন। আকাদেমির আরেকজন প্রভাবশালী সদস্যের কথা এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, তিনি কবি। ২০১৩ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান, উৎপলকুমার বসু তখনও সাহিত্য আকাদেমি পান নি। ... ...

যে কোনও সময়কালে, যে কোনও প্রেক্ষাপটে সত্যিকারের প্রেম বা ট্রু লাভ সবসময় লারজার দ্যান লাইফ। নাহলে সেটা প্রেমই নয়, সম্পর্কের সমঝোতা মাত্র। ওয়েব সিরিজের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমে, প্রেম যদি এভাবে, এত ঠুনকো হয়ে ধরা দেয়, তবে তা দুশ্চিন্তার। ... ...

এই রকম এক স্বপ্নের মানুষের সঙ্গেও নৈকট্য হয়; এবং তা ঘটল আমার জীবনে, পরিণত বয়সে, চল্লিশ পার করে। বারুইপুরের কাছে, অন্তরা সাইকিয়াট্রিক সেন্টারের – এস্থেটিক থেরাপি ইউনিটের সঙ্গে যুক্ত থাকার কাজে। এখানকার রোগীদের জন্য আমি এক ধরণের শুশ্রূষা পদ্ধতি শুরু করি, রবীন্দ্রনাথের গান ও নাচের মাধ্যমে। ক্রমে তা একটি নিয়মিত বিভাগ হয়ে দাঁড়ায় – নান্দনিক শুশ্রূষা বা Aesthetic Therapy Unit হিসেবে। ... ...

‘না বলা বাণী’র মাঝে শুধু কিছু অনুভূতির প্রকাশ-ক্রমাগত আবেগের অনুপম বর্ণচ্ছটা ছড়িয়ে পড়ে চোখের ভাষায়, মুখের অবয়বে, আকারে ইঙ্গিতে, চালচলনে, দেহ ভঙ্গিমায়; আর এইসব মনোভাবের (অ্যাটিটিউড) অন্তর্নিহিত ছন্দোবদ্ধ প্রকাশই হল নির্বাক অভিনয়ের (বা প্যানটোমাইমে’র) রূপ রস আর ছন্দ! ... ...