এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়ের কাহিনিগুলো

    সৈকত
    অন্যান্য | ২৮ জুন ২০১৯ | ৪২২৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • ~ | ***:*** | ১৪ জুলাই ২০১৯ ২২:১৭383208
  • বাঃ সূচিপত্র কাজের হয়েছে। এবার জানার, কোন গল্প দারোগার দপ্তরের কোন সংখ্যায় বেরিয়েছিল, এবং প্রকশের সাল মাস দেওয়া আছে কিনা। archive এ রয়েছে এমন বহু গল্পই এই দুই সংকলনে নেই দেখছি।
  • সৈকত | ***:*** | ১৫ জুলাই ২০১৯ ১০:১৩383209
  • পুনশ্চর বইদুটোতে, প্রতি লেখার সাথে বাংলা মাস আর বছর দেওয়া আছে। নির্দিষ্ট ক'রে কোন বছরের দপ্তরে প্রকাশিত সেটা দেওয়া নেই, তবে মোটামুটি হিসেব করে নেওয়া যায়, ১২৯৯ কে দপ্তর শুরুর সাল ধরে।

    নেটে archive ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় আরো কিছু লেখা আছে, সেটা দেখেছি।
  • সৈকত | ***:*** | ১৫ জুলাই ২০১৯ ১৬:৫২383210
  • পূর্ণানন্দ ভক্ত এরকম একটা বিজ্ঞাপন দিয়েছিল যে সে অনেক কষ্ট করে চারটি বই ছাপাতে পেরেছে কিন্তু বিক্রী করতে পারবে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয় কারণ গবর্ণমেন্ট চেষ্টা করছে তাকে বিপদাপন্ন করতে। তাই কোন পাঠক বইগুলি পেতে চাইলে উপযুক্ত মূল্য দিয়ে তাদের শীঘ্রই গ্রাহক হতে হবে। বইগুলি ছিলঃ

    ১। রতিশাস্ত্র - মূল্য, ২ দুই টাকা
    ২। সম্ভোগ রত্নাকার - মূল্য, ৫ পাঁচ টাকা
    ৩। কামরত্ন - মূল্য, ২।।০ আড়াই টাকা
    ৪। লজ্জাতন্নেসা - মূল্য, ৮ আট টাকা

    এই পুস্তকগুলি নিতান্ত অশ্লীল এবং যে প্রকাশ করবে সে আইন অনুযায়ী দন্ডিত হবে কিন্তু তাও পূর্ণানন্দ এগুলো ছাপিয়ে বিক্রী চায় তার একটি পরিপ্রেক্ষিত আছে, যেটি এরকমঃ

    রেভারেন্ড জেমস লং - মিশনারী, শিক্ষাব্রতী, ভারত হিতৈষী - প্রথমে ১৮৫২ সালে শ্রীরামপুর প্রেস থেকে, পরে আরো বড় আকারে ১৮৫৫ সালে কলকাতার একটি প্রেস থেকে গত পঞ্চাশ বছরে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত বইয়ের একটি তালিকা প্রকাশ করেছিলেন (A Descriptive Catalogue of Bangali Works Containing a Classified List of Fourteen Hundred Bengali Books and Pamphlet ) । এদেশে ছাপাখানা আসার পর - ইংরেজরা যেমন ভেবেছিল - যে তার মাধ্যমে এদেশীয় মানুষের মধ্যে জ্ঞান বৃদ্ধি ঘটবে, সত্যি সেরকম ঘটছে কিনা, কিরকম বই ছাপা হচ্ছে সেটা জানা থাকলে ঐ ধারণাটি স্পষ্ট করে নেওয়া যাবে, বইয়ের জনপ্রিয়তা দিয়ে বুঝে নেওয়া যাবে সাধারণ লোকের চিন্তাভাবনাগুলো, তালিকাটি তৈরীর এটি একটি কারণ ছিল। আরও একটি কারণ ছিল যে জেমস লং মনে করতেন ইংরেজী শিক্ষা প্রচলিত হয়ে সেই শিক্ষায় শিক্ষিত নব্যশিক্ষিতরা যথেষ্ট পরিমানে বাংলায় লিখিত বইপত্র পড়ছে না; না পড়ার একটি কারণ তিনি মনে করেছিলেন যে বাঙালী শিক্ষিতরা জানেনা ঐসব বই কোথায় ছাপা হয়েছে বা কোথা থেকে পাওয়া যাবে, ফলতঃ এরকম একটি তালিকা প্রস্তুত করলে বইয়ের খোঁজ আরো সহজলভ্য হবে। ১৮৫৫ র তালিকাটিতে - যাতে প্রায় ১৪০০ টি বইয়ের খবর ছিল যা ভাগ করা হয়েছিল পঞ্জিকা, গণিত, জীবনী, ব্যকরণ, আইন, ইতিহাস, মুসলমান-বাংলা সাহিত্য, কাব্য ও নাটক প্রভৃতি নিয়ে তিতিশটির মতো বিভাগে - পরবর্তীকালে অতীব ঐতিহাসিক মূল্য পেয়েছে কারণ তালিকাটি থেকে জানা যেত উনিশ শতকের প্রথম পঞ্চাশ বছরের বইয়ের হিসেব এবং আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে যে এই তালিকাটি থেকে পাওয়া যেত কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত প্রেস সম্বন্ধীয় তথ্য যেখানে vernacular বা বাংলায় বই ছাপা হত। গঙ্গাকিশোর ভটাচার্য ১৮১৫ নাগাদ বটতলা অঞ্চলে যে প্রেসকার্যের শুরু করেছিলেন, রামমোহনও যার সাথে যুক্ত ছিলেন, সেই কাজের পূর্নতা দিয়েছিল জেমস লঙের এই তালিকাটি; কারণ আদত বটতলা অঞ্চল থেকে শুরু হয়েও প্রেসের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে প্রেসগুলি ছড়িয়ে পড়েছিল কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিন, বেশী করে যদিও উত্তর দিকেই এবং এই তালিকাটিকে ভিত্তি করে ঐসকল প্রেসের হদিশ পাওয়া যেত, তখনও এবং পরবর্তীতেও।

    তো, এই তালিকাটিতে জেমস লঙ অন্তত তিরিশটি মতো আদিরসাত্মক বইয়ের উল্লেখ করেছিলেন (যেমন, আদি রস, বেশ্যা রহস্য, হেমলতা রতিকান্ত, প্রেম বিলাস, রতি বিলাস, রসতরঙ্গিনী, শৃঙ্গার বিলাস ইত্যাদি) যেগুলো তাঁর মতে গদ্য বা পদ্যে লিখিত এবং ছাপাখানার দৌলতে যাদের একাধিক সংস্করণ বহুল প্রচারিত, কিন্তু এগুলি বিশেষরকমের ফরাসী বইয়ের মতই খুবই খারাপ (beastly equal to the worst of the French School)। মোটের ওপর কিন্তু বাংলা বইয়ের ছাপা নিয়ে, বিভিন্ন বিষয়ে বাংলা বইয়ের প্রসার নিয়ে জেমস লং সন্তুষ্টই হয়েছিলেন, ফলে আরো একটু পরে গিয়ে ১৮৫৯র রিপোর্টে দেশীয় ভাষায় শিক্ষার ব্যবস্থা নিয়ে তিনি জোরের সাথে সওয়াল করেন, যা নিয়ে কোম্পানী আমল থেকেই প্রশাসনের মধ্যে দ্বন্দ ছিল। কিন্তু জেমস লঙকে কিছু পরিমাণে যা বিরক্ত করেছিল - মিশনারী হিসেবে আরোই - সেটি ঐসকল অশ্লীল বইয়ের ছাপা ও প্রচুর প্রচার, জেমস লঙের তথ্য মতে ঐরকম কিছু বই অন্তত দশ-বিশ হাজার ছাপা ছিল, সবচেয়ে প্রচারিত বইটি যাতে 'নোংরা ছবি"-ও ছিল তার প্রচারসংখ্যা ছিল অন্তত তিরিশ হাজার ! সাধারণভাবে প্রেসকে নিয়ন্ত্রন করার ব্যাপারে জেমস লঙের কোনো ইচ্ছে ছিল না কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন যে গবর্ণমেন্ট নিয়ম করে অশ্লীল পুস্তক, ছবি ইত্যাদি ছাপা ও বিক্রী বন্ধ করুক। ফলতঃ ১৮৫৬ সালে নতুন আইন জারি হচ্ছে সেরকমের লেখাপত্র নিয়ন্ত্রনের জন্য (Obscene Books and Pictures Act,1856), সময়কালের হিসেবে যা মিলে যাচ্ছে ১৮৫৭-তে ইংল্যন্ডে চালু হওয়া একই উদ্দেশ্যসাধনের আইনের সাথে। লং জানতেন যে আইনের ভয় দেখিয়ে (১০০ টাকা জরিমানা এবং/অথবা তিন মাসের জেল) অশ্লীল বইয়ের প্রচার সম্পুর্ন বন্ধ করা যাবে না কিন্তু অন্য বিষয় সংক্রান্ত বইয়ের বৃদ্ধি এবং শাস্তির ভয়, এই দুইই মিলিয়েই হয়ত ঐরকম অশ্লীল লেখার প্রসারকে নিয়ন্ত্রন করবে।

    শ্লীল-অশ্লীল পাঠ্যবস্তু নিয়ে এই তর্কটি কিন্তু চলতেই থাকে লঙের কাজ পরবর্তী অন্তত বিশ-তিরিশ বছর ধরে খুব বেশী করে, ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল কাব্যের বিদ্যাসুন্দর অংশটি নিয়েও; জেমস লং ভারতচন্দ্রের কবিপ্রতিভার প্রশংসই করেছিলেন, বিদ্যাসুন্দরকে প্রেমের কাহিনি হিসেবে গণ্য করেও মন্তব্য করেছিলেন শরীরী ও যৌনগন্ধী বর্ণনার ব্যাপারে, একই রকমের মন্তব্য ছিল সমসাময়িক আরও কিছু মিশনারীদের মধ্যে (ব্যপটিস্ট মিশনের্রেভারেন্ড জে ওয়েঙ্গার) এবং শুধু মিশনারীরাই নয়, নব্যবঙ্গের তরুন বা ভাবুকরাও ঐ কাব্যটি নিয়ে ঠিক সমঝোতায় আসতে পারছিল না, প্যারীচাঁদ মিত্রর ভাই 'ইন্ডিয়ান মিরর' কাগজের প্রতিষ্ঠাতা কিশোরীচাঁদ মিত্র রামমোহনের জীবনী লিখতে উষ্মা প্রকাশ করছেন রামমোহন যে বিদ্যাসুন্দর পছন্দ করতেন সেই ব্যাপারে, বিদ্যাসাগরও ভারতচন্দ্রর লেখাকে পছন্দই করতেন, বিদ্যাসুন্দর সম্বন্ধে একটু পাশ কাটানো ভাব নিয়েই, আরও একটু এগিয়ে এসে কেশবচন্দ্র, রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন এবং আরো অন্যরা মিলে যখন ১৮৭০ সালী অশ্লীলতা নিবারণে সোসাইটি তৈরী করবেন তখনও অশ্লীল পুস্তকের ছাপা ও প্রসার নিয়ে মন্তব্য থাকবে, তেমনি বিদ্যাসুন্দরের প্রসঙ্গও এসে যাবে, মোটামুটি একই সময়ে ব্যঙ্গ পত্রিকা 'বসন্তক' এই শ্লীল-অশ্লীল বিতর্ক নিয়ে উদারপন্থীদের ব্যঙ্গই করবে 'অশ্লীলতা কথা আমরা আগে শুনি নাই' মন্তব্যর মাধ্যমে, বা বঙ্কিমচন্দ্রও দেশীয় সাহিত্য কিরকম হবে, তার গুণাগুণ ইত্যাদি নিয়ে যখন তুলনামূলক সাহিত্য সমালোচনার ধারাটি তৈরী করছেন তখনও বিদ্যাসুন্দর/ভারতচন্দ্রকে সরিয়ে রাখছেন না। তো অশ্লীল সাহিত্যের সূত্র ধরেই সমসাময়িক 'আধুনিক' সমাজ গড়ে ওঠার বা সেটি কীরকম হওয়া উচিত সেইসব সামাজিক 'আন্দোলন' চলতে থাকছে এবং একই সাথে বিবিধ বিধি-নিষেধ যে বাঙালী/দেশীয় রীতি ও ভাবের ওপর গবর্ণমেন্টের হস্তক্ষেপ সেই বক্তব্যও থাকছে।

    যদি অনুমান করি, পাঠককে 'অশ্লীল' পুস্তকের লোভ দেখিয়ে ঠকানোর কীর্তিটি পূর্ণানন্দ ১৮৮০ থেকে ১৮৯০ র মধ্যে কোনো সময়ে করছে, তাহলে তার পরিপ্রেক্ষিত হিসেবে জেমস লং-কৃত বইয়ের তালিকাটি, তৎপরবর্তী ১৮৫৬-র আইনটি এবং ঘোরতর সামাজিক আন্দোলন ও ঐরকমের লেখা নিয়ে সমাজের মনোভাব, সবই থেকে যায়। মজার কথা হল, পূর্নানন্দর লেখা চারটি বইয়ের মধ্যে দুটি বইয়ের নাম - রতিশাস্ত্র ও সম্ভোগ রত্নাকর - লং সাহেবের তালিকাতেও ছিল যার থেকে হয়ত অনুমান হয় যে পুর্ণানন্দ হয় ঐ তালিকাটি পড়েছিল অথবা ঐ বইদুটিও পড়েছিল এবং নামগুলিকে ব্যবহার করেছিল অথবা কিছুইনা, সম্পুর্ণ নিজের কল্পনা থেকে বইদুটির নাম বানিয়েছিল, প্রচলিত আরো বইয়ের অনুকরণে। পুর্ণানন্দ মন্তব্য করেছিল যে দেশীয় পাঠক শ্রেণীর এটাই দোষ যে তারা অশ্লীল পুস্তকের নামে শুনলে কান চাপা দেয় অথচ সুযোগ পেলে চারগুণ দাম দিয়ে সেই সব বই কিনে দরজা বন্ধ করে পড়তে তাদের আপত্তি থাকে না ! পুর্ণানন্দ, পাঠক আর সময়টাকে চিনত, নানারকম বিধি-নিষেধ চাপিয়েও যে যৌনগন্ধী বইয়ের ছাপা ও পড়া যে একেবারে নির্মূল করা যায়নি সে সেটা জানত বলেই সমসাময়িক পরিস্থিতি ও সমাজচলতি ইচ্ছেকে ব্যবহার করেছিল। কিন্তু এও কৌতুকের যে সে প্রথমেই বইগুলি লিখে ফেলেনি, শুধু বিঞ্জাপনটি তৈরী করেছিল এবং প্রধান একটি সংবাদ্পত্রে সেটি ছাপাতে চেয়েছিল। কিন্তু বিষয়বস্তু দেখে কাগজটি সেটি ছাপাতে না চাইলে সে আর একটি উপায় নেয়। হ্যান্ডবিল ছাপায়, কিছু হ্যন্ডবিলে এই চারটি বইয়ের নাম দেয় ও অন্য হ্যাণ্ডবিলে আইনমাফিক বইয়ের নাম, প্রথমভাগের হ্যান্ডবিলগুলোকে দেখালে কাগজের সম্পাদক রাজী হন সেগুলি তার কাগজের মধ্যে দিয়ে বিলি করতে, সেই মতো এক কর্মচারীকে নির্দেশও দেন। কিন্তু কাগজ ছাপিয়ে বিলি করার ব্যবস্থার সময়ে পুর্ণানন্দ কর্মচারীটিকে হ্যণ্ডবিলের যে বান্ডিলগুলি দেয় তার ওপরের দিকে অল্প কিছু 'ঠিক' হ্যণ্ডবিল রাখে এবং নী্চের দিকে ঐ চারটি বইয়ের বিজ্ঞাপনওয়ালা হ্যন্ডবিলগুলি। কর্মচারীটি নজর না দেওয়ায় পুর্ণানন্দের 'কাজের' বিজ্ঞাপনগুলি সংবাদপত্রের সাথে মফস্বলের দিকে বিলি হয়ে যায় !

    গ্রাহক হওয়ার প্রলোভন তৈরী করেছিল বলেই ক্রমশঃ তার নামে টাকা আসতে থাকে এবং সে সেই টাকা খরচ করতে থাকে অব্যশ্যই কোনরকমের বই না পাঠিয়ে কারণ কোনো বই তার কাছে ছিলই না। প্রথমে ভেবেছিল যে অশ্লীল বই সংক্রান্ত বিষয়টির কারণেই ঠকে গিয়েও কেউই সে ব্যাপারে নালিশ করবে না কিন্তু কিছু গ্রাহক অভিযোগ জানায় বই না পাওয়ার জন্য। মামলার তারিখ আসার আগে পুর্ণানন্দ অদ্ভুত উপায় অবলম্বন করে, সে চারটি গল্প লেখে যার মধ্যে অশ্লীলতার নামগন্ধও ছিল না এবং গল্পগুলিকে ঐ চারটি নামের মলাতের মধ্যে ঢুকিয়ে বই ছাপিয়ে গ্রাহকদের পাঠিয়ে দেয়। তারা বিশেষ কিছু করে উঠতে পারে না, শুধু পত্র মারফৎ তাকে গালি দিয়েছিল মাত্র ! ইতিমধ্যে পুলিশও বিজ্ঞাপনটির খোঁজ পেয়ে এবং এইরকম খবর পেয়েও যে পূর্নানন্দের বাড়ীতেই বইগুলি আছে, অশ্লীল বই প্রকাশ বিরুদ্ধ আইনটি ভাঙার জন্য তার নামে আদালতে মামলা করে। পূর্নানন্দ যথারীতি কোর্টে গিয়েও তার ঐ চারটি বইই দেখায়, যার নাম আর গল্পের মধ্যে কোনই মিল ছিল না। কোর্ট আইনতঃ কিছুই করে উঠতে পারে না এবং পূর্ণানন্দ সেযাত্রা মফস্বলের গ্রাহক আর ইংরেজ গবর্ণমেন্টের কোর্ট, দুইয়ের সাথেই জালিয়াতি করেও বিশেষ বিপদে পড়ে না !

    তো সব মিলিয়ে এইরকমই ঘটেছিল। সমাজিক সংঘ্টন আর আলোকপ্রাপ্তি ও তজ্জনিত দ্বন্দ, ইংরেজের আইন ও তার ব্যবহার, প্রচলিত ব্যবসা ও কাজ কারবার, সেইসবের তলায় তলায় পুর্ণানন্দের মত কোনো মানুষ - বাধ্যতঃই বা হয়ত অভাসবশেই - অর্থ রোজগারের উপায় হিসেবে অপরাধকেই ব্যবহার করে, খুব বেশী সেটি বাড়াতে থাকলে আইনের ছোঁয়া পেতে পেতে শেষ পর্যন্ত আইনের হাতেই বাঁধা পড়ে।
  • গোয়েন্দা | ***:*** | ১৭ জুলাই ২০১৯ ০১:৩৪383212
  • সি.সৈকত জানতে চেয়েছিলেন - "গোয়েন্দা মশাই, প্রথম বিজ্ঞাপনটি কোন সালের জানা আছে ? আমার ধারণা, অন্তত ১৩০৫/১৮৯৮-৯৯ এর, কারণ ৬ সংখ্যা দপ্তরের উল্লেখ করা হয়েছে। এর এক-দু বছরের মধ্যেই বাণীনাথ নন্দী বদলে গিয়ে নতুন প্রকাশক আসেন।"

    এর উত্তরে DSpace এর সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক একটা লিংক কপি হয়ে গেছিল কি করে কে জানে। যে বইটার পিছনে বিজ্ঞাপনটি ছিল, সেটা খুঁজে পাওয়া গেল।

    http://dspace.wbpublibnet.gov.in:8080/jspui/handle/10689/8230

    হ্যাঁ ১৩০৫।

    কিন্তু এইটে খুঁজতে গিয়ে অদ্ভুত একটা নতুন জিনিস চোখে পড়ল। যে বইয়ের পিছনে প্রিয়নাথ মুখুজ্জের বইয়ের এত ডিটেল অ্যাড রয়েছে সেটা সেই একই প্রকাশনার, অর্থাৎ বাণীনাথ নন্দীর সিকদারবাগান বান্ধব পুস্তকালয় ও সাধারণ পাঠাগার থেকে ১৩০৫ সালে প্রকাশিত কালীপদ মুখোপাধ্যায়ের সামাজিক উপন্যাস - "গৃহচিত্র"।

    কিন্তু কে এই কালীপদ মুখোপাধ্যায়?
    ১২৮১ সালে বাহুলীন তত্ত্ব নামে - A Treatise On Violin লেখেন ইনি।
    ১২৮৬ তে লিখেছেন 'ধনুর্ভঙ্গ পণ"
    ১২৯৭ সালে এঁর "লহরী' নামে কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ হয়। বিডন স্ত্রীট থেকে গিরিশচন্দ্র চক্রবর্তী কর্তৃক।
    ১৩০২ সালে কামিনী-কুমার বা প্রেমলীলা নামক বই বেরোয় আপার চিৎপুর রোড এর শান্তিরাম দে হাত দিয়ে।
    ১৩১০ সালে "বিদায়" - উপন্যাস প্রকাশ হয় বেঙ্গল মেডিকাল লাইব্রেরি থেকে গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় কর্তৃক।

    এবার এই সবগুলির লেখক কালীপদ মুখুজ্জে একই লোক কিনা সে আর আমাকে জিগাবেন না।

    সিকদারবাগান ইত্যাদি দেখে খুব ভাবতে ইচ্ছা করছিল প্রিয়নাথ বাবু এই নামে গোয়েন্দা কাহিনী ব্যতীত অন্য রকম লেখা ছাপাতেন। কারণ প্রিয়নাথবাবু (১৮৫৫-১৯১৭) "অভয়া' নামে একটি সামাজিক উপন্যাস লিখেছিলেন বলেও জানা গেছে ওই বিজ্ঞাপনেই। তবে সেটা একটু বেশিই কষ্ট কল্পিত হয়ে যাবে, কারণ প্রকাশকও এত বিভিন্ন। আর ১৯ বছর বয়সে ভায়োলিনের থিয়োরি বই লেখাও একটু শক্ত মতো ব্যাপার। তাইই ...

    যাইহোক অন্য প্রসঙ্গ ছেড়ে সি.সৈকত-এর দারোগার দপ্তরের পাঠপ্রতিক্রিয়ায় ফেরা যাক।
  • সৈকত | ***:*** | ১৭ জুলাই ২০১৯ ১৫:৫৮383213
  • জুয়াচোরদের কার্যপদ্ধতি নিয়ে প্রিয়্নাথ মুখোপাধ্যায়ের অন্তত দুটি কাহিনি আছে - একটি ১৩০৩/১৮৯৬-৯৭ সালে লেখা 'জুয়াচুরি (অর্থাৎ জুয়াচোরদিগের অত্যাশ্চর্য্য অভেদ্য কতিপয় কার্য্য-কৌশল !)' এবং পরেরটি ১৩০৫/১৮৯৮-৯৯ সালে লেখা 'চেনা দায় (অর্থাৎ কলিকাতার জুয়াচোরগণকে চেনা ভার !)। আগে মন্তব্য করেছিলাম যে প্রিয়নাথের এইসব কাহিনিগুলি লেখার একটি উদ্দেশ্য ছিল যে কলকাতায় বসবাসরত মানুষকে অথবা মফস্বল থেকে কর্মসূত্রে আগত লোকজনকে কলকাতায় অপরাধের ধরণ সম্বন্ধে জানিয়ে দেওয়া যাতে তারা সাবধান থাকে ও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এই দুটি লেখার উদ্দেশ্যও সেই ধরণের, জুয়াচুরির বিবিধ ঘটনার বর্গীকরণ ও তাদের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, যেমন ব্যবসার মাধ্যমে জুয়াচুরি, বিজ্ঞাপনে জুয়াচুরি, চাকরিতে জুয়াচুরি, বাড়ি মেরামতে জুয়াচুরি, বন্ধকে জুয়াচোর, বিক্রয়ে জুয়াচোর ইত্যাদি। এই ভাগগুলির মাধ্যমে কলকাতা শহরে প্রচলিত কিছু কারবার-ব্যবসার ধারণা যেমন করা যায় তেমনি এও বোঝা যায় যে ঐ কাজগুলির সাথেই কীভাবে বা লোক ঠকানো যুক্ত হয়ে যেত।

    কিন্তু কাহিনিদুটি শুধু এই কারণেই উল্লেখযোগ্য নয়, এই জন্যই আলাদা করে মনে থাকে যে যে ঘটনার ঠকানোর বর্ণনার বাইরে গিয়ে প্রিয়নাথ জুয়াচুরি সম্বন্ধে, বিশেষ করে সেটি কেন ঘটে বা তার বাড়বৃদ্ধি কেন হতো সে ব্যাপারে মন্তব্য করছেন, মন্তব্যগুলির মধ্যে সমসাময়িক লোক মতামতও মিশে থাকছে। প্রথম কাহিনিটিতে লিখছেন যে কলকাতা শহর 'ধনী, দরিদ্র, পন্ডিত, মূর্খ, সৎ, অসৎ, ধার্মিক, অধার্মিক' প্রভৃতি লোক দ্বারা পুর্ণ থাকলেও জুয়াচোরদের অত্যাচার ক্রমশঃই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণ পাশ্চাত্য সভ্যতা, কারণ সেই সভ্যতা অধিক পরিমাণে বিস্তৃতি পাওয়ার সাথে সাথেই মানুষজন নানা বিষয়ে বেশী করে মস্তিষ্ক পরিচালনায় সমর্থ হচ্ছে, ফলে যে যা কাজ করত সেই ব্যাপারেই নতুন বিষয়ের উদ্ভাবন ঘ্টাচ্ছেন - 'যিনি সাহিত্য লইয়া আছেন, তিনি সাহিত্যের উন্নতি করিতেছেন, যিনি বিজ্ঞান লইয়া আছেন তিনি সেই বিষয়ের নূতন কাণ্ড উদ্ভাবন করিতেছেন'। সেই রকমই 'যে সকল ব্যক্তি কেবল অসৎ উপায় অবলম্বনেই দিন যাপন করিয়া থাকে, তাহারা কি প্রকারে সেইসকল অসৎ কার্য্যের উন্নতি সাধন করিতে সমর্থ হয়, কেবল তাহারই চিন্তা করিতেছে'। এর সাথে এই কথা যুক্ত করছেন যে লোকজনের মত এটাই যে জুয়াচুরিজনিত অপরাধের জন্য ইংরেজ শাসনে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা থাকলেও, পুলিশ ঠিক করে সেইসব ঘটনার অনুসন্ধান করে না, ফলে অপরাধীরা শাস্তির ভয় পায় না এবং ঘটনাগুলি ঘটতে থাকে। এই মন্তব্যগুলির মধ্যে আমি একটু আইরনি খুঁজে পাই; অপরাধের কারণ সম্বন্ধে পুলিশ বিভাগের একজন কর্মচারী হয়ে যতখানি মন্তব্য করা যায় অথচ ইংরেজ সভ্যতা আর শাসনকেও এর সাথে যতখানি যুক্ত করা যায়, সেই ভারসাম্য রাখতে গিয়ে প্রিয়নাথকে একটু আইরনি বা স্বল্প শ্লেষের ব্যবহার করতে হচ্ছে, উপরন্তু সেগুলিও আবার লোক মতামতের আশ্রয় নিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে পরের লেখাটিতে, ১৩০৫-এর কাহিনিটিতে ইংরেজ সভ্যতাকে প্রায় সরাসরিই অপরাধের সাথে যুক্ত করছেন; লিখছেন যে দেশে যেভাবে চাকরির অবস্থা 'শোচনীয়' হয়ে উঠছে তার মধ্যে সহজে চাকরি লাভ সম্ভব নয়, কিছুটা যেন উৎকন্ঠিত যে পাশ্চাত্য সভ্যতা যেভাবে 'আমাদের' মধ্যে প্রবেশ করছে তার ফলে ক্রমে বিপর্যয়ও ঘটে যেতে পারে, কারণ হিসেবে বলছেন যে পাশ্চাত্য সভ্যতার ফলে কেউই আর অশিক্ষিত থাকতে চাইছে না কিন্তু লেখাপড়া পুরোপুরি শিখতে না পারুক ছোটবেলা থেকে অন্তত ইংরেজী স্কুলে ঢুকতে হচ্ছেই, যার ফলে তারা ক্রমশঃ জাতি ব্যবসা ত্যাগ করছে বা অন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের দিকেও যাচ্ছে না, সৌভাগ্যক্রমে যারা চাকরি পেয়ে যাচ্ছে তারা সংসার নির্বাহ করতে পারছে আর অন্যদের ক্রমশঃ অসৎ পথে যেতে হচ্ছে কারণ উদর-পুর্তি করতে হবে ! প্রিয়নাথ নিশ্চয় ইংরেজ শাসনের সমালোচক নন, কিন্তু মন্তব্যগুলির মধ্যে ঐ শাসনের মূল দিকগুলি ফুটে উঠছে যা নিয়ে সেই সময়ে বা পরেও অনেক কথাবার্তা হয়েছে, সমালোচনা বা সমাজবিবরণী হয়েছে - শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন, ফলতঃ মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন, পুরোন সমাজের পরিবর্তন বা ভেঙে যাওয়া অথচ সেসবই যে সবার কাছে খুব সুখকর হয়ে উঠছে না ইত্যাদি এবং সব মিলিয়ে অপরাধের সামাজিক কারণের ইঙ্গিত প্রিয়নাথের এই কাহিনিদুটির মধ্যে থেকে যাচ্ছে। উপরন্তু কাছেই 'তান্তিয়া ভীল' বইটি আছে বলেই লক্ষ্য করি যে প্রথমেই যে কবিতা উদ্ধৃত করা হয়েছে সেখানে মুক্ত জীবনকেই মূল্য দেওয়া হয়েছে, রাজসভা বা দেবালয়কে নস্যাৎ করা হয়েছে, এ যেন তান্তিয়ারই কথা; শেষে গিয়েও তান্তিয়ার বীরত্ব আর ক্ষমতার জন্যই তার জন্য অশ্রুপাত করা হয়েছে, যদিও সে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েছে। চরিত্রটিকে শুধু অপরাধীই হিসেবে দেখা হচ্ছে না বরং জীবনীটি লেখার মধ্যে দিয়ে যেন তান্তিয়ার বীরত্বর প্রতি সম্মানই দেওয়া হয়েছে, প্রিয়নাথ ইংরেজ শাসনের এক মূল স্তম্ভ পুলিশ বিভাগে দীর্ঘদিন চাকরি করেও, পরবর্তী কালে কাজের প্রশংসাস্বরূপ রায়বাহাদুর হয়েও সম্পূর্ন কলোনিয়ালিস্ট হয়ে যাচ্ছেন না, দীর্ঘদিন ধ'রে যারা অপরাধ করছে সেইসব 'দুর্ধর্ষ দস্যুদের' বোঝার জন্যই যেন তাদের জীবনী লিখে রাখছেন (অথবা মণিপুরের রাজা টিকেন্দ্রজিতের সাথে ইংরেজদের সংঘাতের বিবরণ), সব মিলিয়ে সসমসাময়িক আরও শিক্ষিত বাঙালীর মতই হয়ত বা তাঁর মধ্যেও একটা দ্বন্দ আর কনফিউশন থেকে যাচ্ছে। ফলে, দারোগার দপ্তরের কাহিনিগুলোতে অপরাধকে প্রিয়নাথ কীভাবে দেখছেন তার একটা আন্দাজ করা যায়; তিনটি ধরণ উঠে আসে, অপরাধের সামাজিক কারণের দিকে ইঙ্গিত বিশেষ করে বহুল প্রচলিত অপরাধ যেগুলো অনটনের জন্য ঘটে থাকে সেই সম্বন্ধয়ীয়, বিশেষ কিছু অপরাধীর অপরাধের কার্য-কারণ-পদ্ধতি ও তাদের মনকে জানার উদ্দেশ্য আর বেশ কিছু কাহিনিতে অপরাধ ও তদন্তের বিবরণ। কিন্তু এই সব বিষয়গুলি নিয়ে যখন কাহিনিগুলি লিখছেন তখন কিন্তু লেখা মারফৎ রোমাঞ্চ বা উত্তেজনা তৈরীর ইচ্ছেও একটা থাকছে, যেটা লেখার সূচনা থেকেই ঘটছে যেমন কাহিনিগুলির নামকরণের মধ্যে। লেখাগুলির শুধু শিরোনাম দিয়েই থেমে যাচ্ছেন না, অধিকাংশ গল্পেই শিরোনামের সাথে একটা বিস্ময়চিহ্নিত উপনামও যোগ করছেন, যেন তাঁর অভিজ্ঞতার রোমাঞ্চটা প্রথম থেকেই পাঠকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাইছেন ও কাহিনিগুলির দিকে প্রথম থেকেই পাঠকদের টেনে রাখতে চাইছেন। এটা শুধু ওনারই স্টাইল নিস্চয় নয়, সমসময়ে প্রচলিত লেখাপত্রে বা বেশ আগে থেকেই বটতলার বইতে, কেচ্ছা, প্রহসন ইত্যাদি ধরণের বইগুলিতেও কমবেশী একই পদ্ধতি থাকত।

    আরো একটি ব্যপার থাকে, যেটি কিছুটা জটিল কিন্তু সমসাময়িক সমাজের মনোভাবের সাথে মিলে যায়। বেশ কিছু কাহিনি আছে যেখানে নারীচরিত্ররাই প্রধান, হয় অপরাধী হিসেবে অথবা অপরাধের ভুক্তভোগী হিসেবে এবং যে কাহিনিগুলি প্রায় সবই অবৈধ সম্পর্ক অথবা বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক এবং অবশ্যই যা শরীর ও কামনা কেন্দ্রিক, পতিতা হয়ে যাওয়া বা 'ভদ্র' ঘরের মেয়েদের কেন্দ্রে রেখেই কাহিনির ঘটনাগুলি ঘটছে এবং এই রকমের কাহিনিগুলিতে অপরাধ বিষয়ে প্রিয়নাথ 'পাপের' প্রসঙ্গ আনছেন। অন্য অনেক কাহিনি অপরাধের দিক দিয়ে অদ্ভুত বা দুঃখেরও হতে পারে, কিন্তু পাপের প্রসঙ্গ নারীঘটিত কাহিনিগুলোর ক্ষেত্রেই সব থেকে বেশী করে আনা হচ্ছে। অথচ এইসব ঘটনারও যে একটা সামাজিক দিক থাকতে পারে, সেই দৃষ্টি বা বিশ্লেষন প্রিয়নাথের দিক দিয়ে কাহিনিগুলির মধ্যে থাকছে না (বরং অল্প কিছু ক্ষেত্রে রাগও প্রকাশ পাচ্ছে) আর না থাকার ফলে উনিশ শতকের পরিবার বা সমাজের যে অ্যাংজাইটি - মেয়েদের নিয়ে, তাদের আচরণকে নিয়ন্ত্রন করা নিয়ে - সেসবের চিহ্ন কাহিনিগুলিতে থাকছে। অপিচ, অপরাধীর মনকে জানা যে প্রিয়নাথের উদ্দেশ্য ছিল বলে মন্তব্য করেছিলাম যার আরও একটি উদাহরণ হল 'ডাক্তারবাবু' নামে দুই খন্ডের কাহিনিটি - যা প্রধান চরিত্রের বয়ানেই লেখা, অতএব তদন্তের কোন বিবরণ নেই এবং চরিত্রটির কথামতো এই বয়ানের উদ্দেশ্য হল 'যাঁহারা মানব-জীবন অধ্যয়ন করিতে চাহেন', তারা বয়ানটি পড়ে জানতে পারবেন কুচক্রে বা প্রলোভনে পড়ে কীভাবে কেউ এক্জন ভয়ানক অবস্থায় এসে পড়ে - যেটি অপরাধের পরিমাণে আর ঘটনাক্রমের কারণে আমার কাছে সবচেয়ে অ-বাস্তব ও অ-সম্ভব ঘটনার বিবরণ বলে মনে হয়েছে সেটিও যেন পাপের আওতায় পড়ে না, দুঃখরাশিরই কাহিনি শুধু।
  • সৈকত | ***:*** | ১৭ জুলাই ২০১৯ ১৭:০০383214
  • * দ্বিতীয় প্যারার প্রথম বাক্যঃ এই জন্যই আলাদা করে মনে থাকে যে বিবরণের বাইরে গিয়ে প্রিয়নাথ জুয়াচুরি সম্বন্ধে

    আরোও কিছু বানান ভুল ইত্যাদি থাকতে পারে।
  • গোয়েন্দা | ***:*** | ১৮ জুলাই ২০১৯ ২২:২৯383216
  • https://data.bl.uk/twocenturies-quarterlylists/?_ga=2.239555968.2076512163.1563468289-1131023042.1530473289

    এখানে ১৮৬৭ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত ভারতীয় ভাষায় ছাপা সমস্ত (মোটামুটি) বইয়ের লিস্ট রয়েছে। ডেসক্রিপটিভ ক্যাটালগ। সেখান থেকে প্রায় সমস্ত দারোগার দপ্তরের গল্পগুলোর নামের লিস্ট করা যাচ্ছে। শেষ হলে এখানে দিয়ে দেব। পুনশ্চর কালেকশনের ৯৯ টা গল্পের বাইরে প্রায় ৫২ টা মত গল্প archive.org তে রয়েছে, তা থেকে আরেকটা অনুরূপ খন্ড তৈরি হয়ে যাওয়া উচিত। বাকি খান পঞ্চাশ গল্পকে আসলেই দুষ্প্রাপ্য বলা উচিত। সেগুলো খুঁজে বের করা খানিক চ্যালেঞ্জ আজকের দিনে। দেখা যাক।

    কিন্তু মজার কথা প্রিয়নাথ মুখার্জির অন্যান্য নানা লেখার কথা জানা যাচ্ছে এই ক্যাটালগ থেকে।
  • গোয়েন্দা | ***:*** | ১৮ জুলাই ২০১৯ ২২:২৯383215
  • https://data.bl.uk/twocenturies-quarterlylists/?_ga=2.239555968.2076512163.1563468289-1131023042.1530473289

    এখানে ১৮৬৭ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত ভারতীয় ভাষায় ছাপা সমস্ত (মোটামুটি) বইয়ের লিস্ট রয়েছে। ডেসক্রিপটিভ ক্যাটালগ। সেখান থেকে প্রায় সমস্ত দারোগার দপ্তরের গল্পগুলোর নামের লিস্ট করা যাচ্ছে। শেষ হলে এখানে দিয়ে দেব। পুনশ্চর কালেকশনের ৯৯ টা গল্পের বাইরে প্রায় ৫২ টা মত গল্প archive.org তে রয়েছে, তা থেকে আরেকটা অনুরূপ খন্ড তৈরি হয়ে যাওয়া উচিত। বাকি খান পঞ্চাশ গল্পকে আসলেই দুষ্প্রাপ্য বলা উচিত। সেগুলো খুঁজে বের করা খানিক চ্যালেঞ্জ আজকের দিনে। দেখা যাক।

    কিন্তু মজার কথা প্রিয়নাথ মুখার্জির অন্যান্য নানা লেখার কথা জানা যাচ্ছে এই ক্যাটালগ থেকে।
  • গোয়েন্দা | 103.76.***.*** | ০৭ আগস্ট ২০২৩ ১৫:৪৯740491
  • ও: যে খবরটা এখানে দেওয়ার ছিল, কিন্তু হয়ে ওঠেনি, তা হল, এই টই সংক্রান্ত গোয়েন্দাগিরির ফলেই ২০২১ এর আগস্ট মাসে পুনশ্চ থেকে প্রকাশ করা গেছে দারোগার দপ্তরের তৃতীয় খণ্ড। সমস্ত গল্পগুলো আমিই যোগাড় করে ওদের দিই, যা আর্কাইভে ছিল কিন্তু প্রথম দুই খণ্ডে যায়নি। এছাড়া পাঁচ পৃষ্ঠার একটা নিবন্ধ " 'দারোগার দপ্তর' বিষয়ক গোয়েন্দাগিরি " এবং সেকালের, সেই সোয়া-শ বছর আগের, বেঙ্গল লাইব্রেরি ক্যাটালগ খুঁজে ২১৯টা দপ্তরের সূচি (১০টা দপ্তরের নাম পাওয়া যায়নি, এখনও খুঁজছি) তৈরি করতে পেরেছি, যা ঐ খণ্ডে ছাপা গেছে। প্রিয়নাথ জীবনীটাও আমার পাঠানো দপ্তরের থেকে নিয়েই আলাদা বই হিসেবে ছাপা হয়। 
     
    আরো এক খণ্ডের প্রস্তুতি চলছে। যোগাড় করাটা চ্যালেঞ্জ তো বটেই। দেখা যাক।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন