এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষেঃ কাশ্মীর

    Tim
    অন্যান্য | ৩০ জুলাই ২০১৮ | ৪৫২৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • I | ***:*** | ৩০ আগস্ট ২০১৮ ১৬:১৮377163
  • হুচিকে ক।
  • সিকি | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:১৫377164
  • ও টিমি ও হুচি, কই গেলি রে সব?
  • hu | 174.102.***.*** | ১৮ মে ২০২০ ০৭:৪০731436
  • আরুগ্রামে আমরা ছিলাম বিলালভাইয়ের আতিথ্যে। রজত সব ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। পহেলগাম থেকে বারো কিমি দূরে ছোট্ট গ্রাম আরু। বিলালভাই এর গেস্টহাউস মিল্কি ওয়ের সামনেই বিস্তীর্ণ সবুজ উপত্যকা। ঘন পাইন বনের ওপাশে বরফে মোড়া পাহাড়চুড়ো। তিরতির করে বয়ে চলে আরু নদী। বিলাল ভাইয়ের দাদা ফৈয়জ ভাইকে মাইক্রফট হোমসের মত দেখতে। শার্লক হোমসের দাদাকে আমি দেখিনি, কিন্তু বর্ণনা পড়ে মনে হয় তিনি নিশ্চয়ই এমনই লম্বা, এমনই খাড়া নাক তাঁর, এমনই ক্ষুরধার দৃষ্টি। গেস্ট হাউসের কাঁচ ঢাকা বারান্দা থেকেই ইশকুলটা দেখা যায়। গ্রামের একমাত্র ইশকুল। ফৈয়জ ভাই বললেন টিফিনের ছুটির সময় মাস্টারমশাইয়ের সাথে দেখা করা যাবে। ইশকুলে সাকুল্যে চারজন শিক্ষক। দুইজন হিন্দি, উর্দু পড়ান। বাকি দুজন ইতিহাস, ভূগোল। বিজ্ঞান, অঙ্ক, ইংরিজি পড়ানোর কেউ নেই। ছেলেমেয়েরা কিন্তু দিব্যি বুদ্ধিমান। ছেলেরা মোটামুটি সকলেই লেখাপড়ার পাশাপাশি ট্যুরিস্ট সিজনে ঘোড়া ধরে। শুনে শুনেই চমৎকার ইংরিজি শিখে নিয়েছে। মাস্টারমশাই বললেন, কদিন আগে এক রিটায়ার্ড জেনারেল বেড়াতে এসেছেন। তাঁর ঘোড়া ধরেছে একটি বুদ্ধিদীপ্ত সপ্রতিভ ছেলে। জেনারেল রীতিমত অভিভূত হয়ে তার কথা জিগ্যেস করছেন গ্রামে। জানা গেল সে ছেলে পহেলগাম তফশিলে বোর্ডের পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে।
    - ওরা কি আর পড়াশোনা করতে চায় না?
    - বাবা-মায়ে ভয় পায় শহরের কলেজে পাঠাতে। রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে যদি! ছেলেটাই যদি আর না থাকে!
    আর মেয়েগুলো? ঘরের কাজ করছে। সেলাই করছে। দরদাম করে কাশ্মীরী হ্যান্ডলুম কিনে আনছে ট্যুরিস্ট। কলেজে যাচ্ছে কয়েকজন। গেলেই তো হল না। দুমদাম কার্ফিউ জারি হয়। পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। বছরের পর বছর নষ্ট হয়।

    সন্ধ্যেবেলা ট্যুরিস্টদের প্রকোপ কমলে গেস্ট হাউসের সামনে উপত্যকায় ছেলেগুলো ক্রিকেট খেলে। আমি আর মিঠুন একপাশে দাঁড়িয়ে দেখি। মিঠুনের হাত-পা নিশপিশ করে। আমি বলি - তোর খেলতে ইচ্ছে হচ্ছে? সে হাসে - না না, দেখতেই ভালো লাগছে। একদিন বেলা প্রায় মরে এসেছে। এমন সময় একটা ট্যুরিস্ট বাস এসে দাঁড়ায়। সবাই নামেও না বাস থেকে। মহিলারা বিলাল ভাইয়ের পারিবারিক শালের দোকানে ঢুকে যান। পুরুষেরা সেলফি তোলেন। একজন ভদ্রলোক ইন্ডিজিনাস একটিভিটিতে অংশ নিতে এগিয়ে আসেন।
    - তুমলোগ ক্রিকেট খেল রাহে হো? হাম ভি খেলেগা। ব্যাট দো মুঝে। দেখতে হ্যায় কওন মুঝে বোল্ড কর পায়েগা।
    ছেলেগুলো মুখ চাওয়াচাওয়ি করে ব্যাট দেয়। এক বলেই বোল্ড।
    - ঠিক হ্যায়, অর এক বার।
    আবার বোল্ড। তিন নম্বরটা ঠেকায়। তারপর আবার।
    - হা হা! গুড জব। আচ্ছা লাগা তুমসে মিলকে। আচ্ছা, ইধার আও। এক ফটো লে লে? আচ্ছা, ওর এক ফটো। ব্যাট দো মুঝে। বহুত আচ্ছা!
    এরপর ভদ্রলোকের খেয়াল হয় পাশেই উত্তরাধিকারী দাঁড়িয়ে। সুতরাং তাঁর ছেলেকেও ব্যাট করতে দিতে হয় যতক্ষণ না বাঁধিয়ে রাখার মত ছবি উঠছে। এইসব করতে করতে পাহাড়ে অন্ধকার হয়ে আসে। ছেলেগুলো খেলা গুটিয়ে ঘোড়া নিয়ে বাড়ির পথ ধরে। ওদিকে মহিলাদের দোকান থেকে বার করতে হাঁকডাক শুরু হয়। আকাশছোঁয়া বরফচুড়োয় ঘেরা ওই বিস্তৃত উপত্যকায় দাঁড়িয়ে আমাদের দুই শহুরে মানুষের খুব লজ্জা লাগে। আমরা প্রাণপনে শতাব্দীপ্রাচীন মহাকারুণিক মানবাত্নার ক্ষমাভিক্ষা করতে থাকি।

  • hu | 174.102.***.*** | ১৮ মে ২০২০ ০৭:৪২731437
  • ছবি কি করে দিতে হয় সেটা কেউ মনে করিয়ে দিলে ছবি লাগাতে পারি। গুরুর নতুন এডিটর বিচ্ছিরি হয়েছে। পনেরো বছর ধরে w দিয়ে ব-্ফলা দিই। সেটা উঠিয়ে দিলে কেন?
  • ছবি | 49.37.***.*** | ১৮ মে ২০২০ ১০:৩৯731441
  • পোস্টইমেজ বা আইমাগুর ওসব কোথাও একট তুলে, শেষে jpg বা যেকোন ইমেজ ফর্ম্যাট এক্সটেনশন আছে ঐ ইউআরেলটা (পোস্ট ইমেজের শেয়ারে অপশনে যেটা ডাইরেক্ট লিংক বলে দেখায়) দিলেই ছবি চলে আসবে। গুচ লেআউটে কৌণিক বন্ধনীর মধ্যে দিতে হবে সে তো আমরা সবাই জানি, গুগ্ল লেআউটেও তাই, না হলে পুরোটা ঠিক রেখে শেষে ডট জপগ বা পনগ এইসব করে দেবে।
  • hu | 174.102.***.*** | ১৯ মে ২০২০ ০৯:৫২731462
  • hu | 174.102.***.*** | ১৯ মে ২০২০ ০৯:৫৫731464
  • আরু ভ্যালি থেকে লিডারওয়াট ট্রেক করা হবে ঠিক হল। বারো কিলোমিটার ওয়ান ওয়ে। আমার দমের যা অবস্থা তাতে ঘোড়া নিতেই হবে। মিঠুন সিদ্ধান্তে আসার আগে সাতশো চল্লিশ বার মত পাল্টে অবশেষে ঘোষণা করল ওর জন্যও ঘোড়া থাকুক একটা। মূলত হেঁটেই যাবে। দরকার হলে ঘোড়ায় চড়বে। প্রথমে ঠিক ছিল শুধু ঘোড়ার মালিক যাবে সাথে। রমজান মাস চলছে। বিলাল ভাই রোজা রাখছেন। আমাদের সাথে চব্বিশ কিলোমিটার পাহাড় টপকাতে বলতে মায়া হল। বিলাল ভাই অবশ্য উপোসকে আমল দিলেন না। বললেন সকালে যদি মনে হয় আমি গেলে সুবিধে হবে তাহলে চলে যাবো। সেদিন রাতে এক বিদেশি ট্যুরিস্টের গল্প হচ্ছিল। বিলাল ভাই মানা করেন ট্যুরিস্টদের একা ঘুরতে যেতে। যদি বা কেউ যায় তাকে পই পই করে বলা হয় কতক্ষণ আলো থাকবে তার হিসেব কষে যতটা দূরত্ব তার অর্ধেক সময়ে যাওয়া যায় তার বেশি না যেতে। কিন্তু এডভেঞ্চার প্রিয় বিদেশি ট্যুরিস্ট নিষেধ না মেনে বেরিয়ে গেছে। নদীর ধার দিয়ে পথ। দেখে সোজা সরলই মনে হয়। এক জায়গায় দুইটি নদী পরস্পরকে ছুঁয়ে আলাদা হয়ে গেছে। পথিকের ঠাহর হয় নি কার সাথে গেলে আস্তানায় ফেরা যাবে। শেষ বিকেলে যখন বুঝেছে পথ খুঁজে পাওয়ার আশা নেই, আশ্রয় নিয়েছে একটা গুহায়। এদিকে বিলালরা তাকে ফিরতে না দেখে গভীর রাত পর্যন্ত উপত্যকার আনাচে-কানাচে বিস্তর খোঁজাখুঁজি করেছেন। পরের দিন ভোরেও আরেকদল খুঁজতে বেরিয়েছে। এমন সময় সেই লোক নিজেই ফিরেছে ক্লান্ত দেহে। তারপর থেকে বিলালের তরফে খুব কড়াকড়ি। আমরা অবশ্য নেহাৎই সাদামাটা বাঙালি ট্যুরিস্ট। আমি তো তিন পা হেঁটেই পথের ধারে বসে হা হা করে শ্বাস নেওয়া ট্যুরিস্ট। পরের দিন সকালে ট্র‍্যায়াল দিতে গিয়ে দেখা গেল ঘোড়াদের মধ্যে বিশেষ সদ্ভাব নেই। একজন যেদিকে যায় অন্যজন তার উল্টোদিকে যাবেই। আমরা কেউই ঘোড়া চালাতে জানি না। যদি দুজনেই ঘোড়া চাপি একজন মালিকের পক্ষে দুই ঘোড়াকে সামাল দেওয়া মুশকিল। বিলাল বললে, চলুন তবে আমিও যাই। একটি ঘোড়ায় আমি, লাগাম ধরে ঘোড়াওলা। অন্য ঘোড়াটি আপন খেয়ালে অখাদ্য কুখাদ্য খেতে খেতে চলছে। বিলাল আর মিঠুন পদব্রজে। যাত্রা শুরু হল।

    প্রথম চড়াইটা ওঠার পরে মখমলি সবুজ উপত্যকা। ঘোড়া থেকে নেমে পায়ে হাঁটি। ছোট ছোট সাদা ফুল ফুটে রয়েছে। বাম পাশে লিডার নদী। সামনে রূপোলী পাহাড়। এমন জায়গায় থেকে যাওয়ার যোগ্যতা এক কালে ছিল, যখন বাবা-মার সাথে মাসখানেক কাটিয়ে দিতাম ছোটনাগপুরের গ্রামগুলোতে। এখন থাকতে চাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না, যতটুকু পারি শুষে নিই। প্রায় শতখানেক ভেড়া নিয়ে পশুপালকের দল আমাদের পার হয়ে যায়। ভেড়াদের গায়ে লাল ছাপ দেওয়া। বিলালকে জিগ্যেস করি, গ্রীষ্মের শেষে এদের সব গুণে ফেরত নেবে? বিলাল চোখ টিপে বলে, মাংস খাওয়ার ইচ্ছে হলে একটা-দুটো হারিয়েও যেতে পারে।

    আবার চড়াই আসে। হেঁটে উঠব পণ করে অর্ধেক গিয়ে আর পারি না। ঘোড়া নিতে হয়। একটা লোক বাচ্চা কোলে নিয়ে হাঁটছিল। সাথে জনা তিনেক মহিলা। তাদের মাথায় ভারী বোঝা। পেছন পেছন চলছে একপাল ভেড়া। ঘোড়াওলা আমাদের সাথে হিন্দী বলে। নিজেদের মধ্যে পাহাড়ি। আমি তার কিচ্ছু বুঝি না। জানা গেল এরা পশুপালক গুজ্জর। পরের চড়াইটা উঠে এদের ঘর আছে। সেখানেই চলেছে। বাচ্চাটা অসুস্থ। লোকটা তাই তাকে কোলে নিয়েছে। আমাদের একটা ঘোড়া খালিই যাচ্ছিল। সে তাতে বাচ্চা নিয়ে বসে গেল। একটা বড়সড় দল হয়ে গেল আমাদের। যেন তীর্থযাত্রী।

    ছবিতে যে ঘরখানা দেখা যাচ্ছে সেটা পশুপালকদের আস্তানা। আমরা ঘোড়া ছেড়ে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিলাম গাছের তলায়। পাথরের ওপর বাচ্চাকে শুইয়ে দিয়ে ওরা সংসার সাজাতে শুরু করে দিল। আগের বছরের ফেলে যাওয়া ঘর। একটু মেরামতি লাগবে। সূর্য তখনও মধ্যগগন ছাড়ায় নি। হয়ে যাবে সব অন্ধকার নামার আগেই। বয়স্ক মহিলাটি পুঁটলি খুলে বাসনপত্র বার করতে থাকেন। অল্পবয়েসী মেয়ে দুটি দৌড়ে গিয়ে নদী থেকে জল নিয়ে আসে। বাসন ধুয়ে সকালের রেঁধে আনা ভাত আর একটা ঝোল বেড়ে দেয় থালায় থালায়। ঘোড়াওলা ওদের সাথে বসে যায়। বিলালের রোজা। আমরা খাবো কিনা জিগ্যেস করতে কিছু না ভেবেই না বলে দিই। বলেই আপসোস হয়। লিডার নদীর পাশে পাথরের চৌকিতে বসে ঝোল ভাত খাওয়ার কপাল আর কি হবে জীবনে!

  • hu | 174.102.***.*** | ১৯ মে ২০২০ ০৯:৫৬731465
  • b | 14.139.***.*** | ১৯ মে ২০২০ ১৮:৪৭731468
  • আরু আমারও পাগল করা সুন্দর লেগেছিলো।পহলগাম গুলমার্গ ভর্তি ঘোড়ার নাদির গন্ধ।
  • $%^&*( | 49.37.***.*** | ১৯ মে ২০২০ ১৯:৫৩731469
  • এই টইটা আবার শুরু হয়ে খুব ভালো হলো। চলতে থাকুক।
  • hu | 174.102.***.*** | ১৯ মে ২০২০ ২২:৫৬731471
  • আলতাফ ভাই অটোওয়ালাকে বলে রেখেছিলাম একদিন আমাদের শ্রীনগরের মসজিদগুলো ঘুরিয়ে দেখাতে হবে। ভদ্রলোক তো খুব রাজি। কিন্তু আমরা যা যা দেখতে চাই সেগুলোর সবকটা তাঁর সিলেবাসে পড়ছে না।
    "গর ফিরদৌস বর রুয়ে জমিন অস্ত
    হামিন অস্ত, হামিন অস্ত, হামিন অস্ত"
    (পৃথিবীতে স্বর্গ যদি কোথাও থাকে, তা এখানেই, এখানেই, এখানেই)
    মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর কাশ্মীরে এসে এই লাইন ক'টি উচ্চারণ করেছিলেন জানা যায়। নাতি দারা শিকোও কাশ্মীরের প্রেমে মজেছিলেন। একথা আমরা অনেকেই জানি দারা শিকোর সুফি ইসলামের প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল। কাশ্মীর বহুদিন ধরেই সুফি সাধনার পীঠস্থান। মিয়াঁ মীর নামে এক সুফি সাধক কাশ্মীরে থাকতেন। দারা শিকোর ইচ্ছে হল তাঁর সাথে দেখা করার। কিন্তু দারা কাশ্মীরে আসার আগেই মিয়াঁ মীরের দেহান্ত হল। মিয়াঁর এক শিষ্য তাঁর উত্তরসুরী হলেন। নাম মোল্লা শাহ বদকশী। আখুন্দ শাহ নামেও তিনি পরিচিত ছিলেন। দারা কাশ্মীরে এসে তাঁর কাছে নাড়া বাঁধলেন। ডাল লেকের পশ্চিম তীরে হরি পর্বতের পাদদেশে একটি মসজিদ তৈরী হল আখুন্দ শাহের নামে। এই মসজিদটি যে এখন পরিত্যক্ত তা আমাদের জানা ছিল। কিন্তু এটাও শুনেছিলাম আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া মসজিদের সংস্কার শুরু করেছে। আমাদের আশা ছিল একবার শ্রীনগরে গিয়ে পড়লে নিশ্চয়ই মসজিদটার খোঁজ পাওয়া যাবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল লাল চকের হোটেল ম্যানেজার বা অটোচালক আলতাফ ভাই এই মসজিদের নাম শোনে নি। আলতাফ ভাইই তখন বুদ্ধি দিলেন - আপনারা তো আরও মসজিদ ঘুরবেন। সেসব মসজিদের বুর্জুগরা নিশ্চয়ই এই মসজিদের খোঁজ দিতে পারবেন। কথাটা মনে ধরল। লিস্টের অন্য নামগুলো মেলে ধরলাম আলতাফ ভাইয়ের সামনে।

    পুরনো শ্রীনগরের মসজিদগুলোর অনেকগুলোই কাঠের তৈরী। পাহাড়ী জায়গায় এমন হওয়াই স্বাভাবিক। মসজিদগুলোর আকার প্যাগোডার মত। উত্তর-্পশ্চিম ভারতে বৌদ্ধপ্রভাবের জন্য এমনটা হতে পারে। আমার যদিও পড়াশোনা করা হয়নি এ নিয়ে। এমনই একটা মসজিদ খাজা বাজার নকশাবন্দ (বা নকশাবন্দ সাহিব)। প্রায় ছশো বছরের পুরোনো মসজিদ। নবী মহম্মদের চুল নাকি প্রথমে এখানেই আনা হয়। কিন্তু বাজারের মধ্যে ছোট মসজিদে দর্শনার্থীদের ভীড় সামাল দেওয়া যাচ্ছিল না। তখন ডাল লেকের ধারে ফাঁকা জায়্গায় হজরতবাল মসজিদ তৈরী করে নবীর দেহাংশ সেখানে স্থানান্তরিত করা হয়। হজরতবাল এখন শ্রীনগরের সবচেয়ে বিখ্যাত মসজিদ। ট্যুরিস্টদের ভীড় মূলত সেখানেই হয়। নকশাবন্দ মসজিদের ভিতরে অপূর্ব পেপার ম্যাশের কাজ আছে। আরেকজন সুফি সাধক শাহ হামদিন ১৩৯৫ সালে পারস্য থেকে কাশ্মীরে আসেন। পেপার ম্যাশে শিল্পটি তাঁর সাথেই ভারতে আসে বলে অনুমান করা হয়। শ্রীনগরে শাহ-এ-হামদিন মসজিদ পেপার ম্যাশের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। তবে নকশাবন্দ সাহিবও কম যায় না। আমার অবশ্য দেখার সৌভাগ্য হল না। মসজিদের ভেতর মেয়েরা ঢুকতে পারবে না। মিঠুনকে ওরা যত্ন করে দেখিয়ে দিলেন। তখনই আলাপ হল পীর সাহেবের সাথে। আখুন্দ শাহ বলতেই তিনি বুঝে গেলেন। অটোওয়ালা আলতাফ ভাইকে বলে দিলেন কিভাবে যেতে হবে। নিজের ফোন নাম্বারও দিয়ে দিলেন আমাদের দরকার হলে ব্যবহার করার জন্য।

    আলতাফ ভাই ভারী খুশি হয়ে বললেন - মাখদুম সাহিব যাবেন আগে বললেই হত! ওখানে আমারও একটা কাজ আছে। সেরে নেব।
    খানিক ভেবে বুঝতে পারলাম আখুন্দ সাহিবের মসজিদটা মাখদুম সাহিবের লাগোয়া। মাখদুম সাহিব শ্রীনগরের খুবই জাগ্রত মসজিদ। এটাও একজন সুফি সাধকের নামে। স্থানীয় লোকজন তাদের হাজারো সমস্যায় এই মসজিদে এসে প্রতিকার খোঁজে। আলতাফ ভাইয়ের দরকারটাও সেই গোত্রের মনে হয়। আমরা আর মাখদুম সাহিবে ঢুকলাম না। পাশ দিয়েই সিঁড়ি উঠে গেছে ওপরে যেখানে ASI একটা ভাঙা মসজিদ মেরামত করছে। ছেলেপিলেরা হাওয়া খেতে সেখানে যায় বটে। ভক্তরা ওঠে না।

    আমরা উঠে দেখলাম চিনার গাছের তলায় ফ্যাকাশে হলুদ পাথরের মসজিদ। খুব বেশি বড় না। মাঝারি একহারা বাড়ি। ভাঙা থামের কিছু টুকরো পড়ে আছে সামনের চত্ত্বরে। তবে পরিত্যক্ত হলেও বেশ পরিস্কার। দুটি ছোট ছেলে পাঁচিলে বসে নিচের শ্রীনগর শহর দেখছিল। আমাদের দেখে ঘুরে তাকালো। আমরা ওদের হাত নেড়ে মসজিদের সিঁড়িতে বসলাম কিছুক্ষণ। দরজা বন্ধ। ভেতরে যাওয়ার উপায় নেই। দরজার ফুটোয় চোখ রেখে ভিতরে কি আছে দেখে এলাম। ভারী শান্তির পরিবেশ। মিঠুন বলল, চল পিছনে কি আছে দেখে আসি। ভাঙা পাথরের টুকরো পেরিয়ে পিছনে যাওয়া হল। এদিকটা একেবারেই পরিচর্যাহীন। গোটা তিনেক ছেলে গুলতানি মারছিল। আমরা ছবি-টবি তুলে আবার সামনের দিকে ফিরে এলাম।

    ততক্ষণে আরও দুটো ছেলে হাজির হয়েছে চিনার গাছের নীচে। ওদের সাথে একটু গল্প করে ফিরে আসছি, এমন সময় এক মাঝবয়েসী ভদ্রলোককে দেখা গেল এদিকেই আসছেন। আমরা কোথা থেকে আসছি জানতে চাইলেন। বললাম এই মসজিদের কথা পড়েছি, খুব ভালো লেগেছে এখানে এসে।
    মিঠুন বলল - মসজিদের ভিতরে বোধহয় ঢোকা যায় না, তাই না?
    উনি বললেন - না, মসজিদ তো বন্ধ আছে।
    তারপর কি ভেবে জিগ্যেস করলেন - আপনারা ভিতরে যেতে চান?
    - যেতে পারলে তো খুবই ভালো হয়।
    - আচ্ছা, একটু দাঁড়ান, আমি চাবি নিয়ে আসছি।

    আমরা তো ভাবিইনি ভিতরে ঢুকতে পাবো। ছেলেদুটোও আমাদের সাথে চলল। খুবই সাদামাটা বাহুল্যবর্জিত মসজিদ। ভদ্রলোক বললেন, ভিতরের দেওয়ালে দামী পাথর বসানো ছিল। সে সত্যিও হতে পারে, মিথ্যেও হতে পারে। প্রশস্ত উঠোনটা থেকে আকাশ দেখতে ভারী ভালো লাগল। উঠোনের তিনদিকে কয়েকটি ঘর। অন্ধকার বটে, তবে ঝাঁটপাট দেওয়া। মূল দরজার মাথায় উর্দুতে কিছু লেখা। আমরা পড়তে পারি নি। আওরঙ্গজেব দারাকে হত্যা করলেও আখুন্দ শাহের গায়ে হাত দেন নি। তিনি শ্রীনগর থেকে লাহোর চলে যান এবং সেখানেই মারা যান।

    দারা শিকোকে কি ভারতের শেষ স্বপ্নালু যুবরাজ বলা যায়? শাসক হিসেবে দারা কতখানি দক্ষতা দেখাতে পারতেন জানি না, তবে তাঁর বিদ্যোৎসাহিতা, সৌন্দর্যবোধ, মুক্তচিন্তার যে বিবরণ পাই তাতে মুগ্ধ হতে হয়। এই পোস্টটি লেখার সময় খুঁজে পেলাম আখুন্দ শাহ দারা শিকোর সাথে প্রথম দেখা হওয়ার পর বলেছিলেন
    "নাই চিরাগিস্ত দারিন খানা-ই ভিরনা-ই মা
    রোশন আজ আতিশ-ই ইশক-ই তু-শুদাহ খানা-ই মা"
    (আমাদের এই বিজন ঘরে বাতি নেই
    তোমার প্রেমের আগুনে এই ঘর ভাস্বর)
    রাজপরিবারে এসব ভাবের কথা কি মানায়? চিনার পাতা চুঁইয়ে পড়া ঐশ্বরিক রোদের নিচে হলুদ পাথরের বেদীই তাঁর উপযুক্ত স্থান।

  • hu | 174.102.***.*** | ১৯ মে ২০২০ ২২:৫৭731472
  • hu | 174.102.***.*** | ১৯ মে ২০২০ ২২:৫৮731473
  • hu | 174.102.***.*** | ১৯ মে ২০২০ ২২:৫৮731474
  • | ১৯ মে ২০২০ ২৩:৩৬731476
  • ও এটা এখানেও দিয়েছ। ভাল হল একসাথে পড়তে সুবিধে হয়।
  • Tim | 174.102.***.*** | ২০ মে ২০২০ ০০:২২731477
  • আরুর স্কুল সম্পর্কিত আরো দুয়েকটা কথা এখানে বলে রাখি। বিলালদের মিল্কি ওয়ের উল্টোদিকেই স্কুলবাড়ি। আমার ইচ্ছে ছিলো যদি জানা যায় এরকম একটা স্কুলে কীভাবে লেখাপড়া চলছে। মূলতঃ ইচ্ছেটা ছিলো একটু মিলিয়ে দেখার, রাজনৈতিক অস্থিরতাজনিত কারণ ছাড়াও আর কী সমস্যা আছে বলে ওখানকার শিক্ষকেরা মনে করেন। ইচ্ছে ছিলো, কিন্তু দ্বিধাও ছিলো বিস্তর। এরকম আলটপকা গিয়ে কথা বলতে চাওয়া যায় কিনা বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু ভাগ্যক্রমে সুযোগ এসে গেল। কথায় কথায় জানা গেল বিলালের দাদা ফৈয়াজ ঐ গ্রামের কৃতি সন্তান। তৎকালীন জম্মু কাশ্মীরের কোন একজন মন্ত্রীর ভাইপো ফৈয়াজের ক্লাসমেট ছিলো। ঐ অঞ্চলের সমৃদ্ধির জন্য, ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধের জন্য ফৈয়াজের কিছু অবদান আছে বলে মনে হলো, ফলে মানুষ তার কথা শোনে। পরে আমরা জেনেছিলাম বিলালদের বাবাও ঐ অঞ্চলে খুব প্রভাবশালী মানুষ ছিলেন। যাই হোক, মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। আমি স্কুল সম্পর্কে ফৈয়াজকে নানারকম প্রশ্ন করে জানতে পারি যে ফৈয়াজের নিজের ছেলে মেয়ে দুজনেই ওখানে পড়ে। আরো জানতে পারি যে স্কুলে ঠিকমত শিক্ষক নেই, নানা সমস্যা আছে। আমি একসময় স্কুলে পড়াতাম এবং এই বিষয়ে আরেকটু জানতে চাই -- এইসব বলায় ফৈয়াজভাই বলেন যে তিনি ওখানকার একজন শিক্ষককে চেনেন। ওখানে গিয়ে তাঁর নাম বললেই কথা বলা যাবে। একটু পরেই দুপুরের খাবার ঘন্টা পড়বে, তখন তিনি অনায়াসেই কথা বলতে পারবেন।

    একটু পরে ঘন্টার আওয়াজ শুনে আমি পায়ে পায়ে রওনা দিই, একাই। স্কুলের বাইরে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে উঁকিঝুঁকি মেরে এমন কাউকে দেখা যায়্না যাকে জিগ্যেস করা যায় ঐ শিক্ষকের কথা। বাচ্চারা কৌতুকভরে দেখে যায়, কেউ হাতটাত নাড়ে। স্কুলবাড়ির সামনের উঠোন, দরজা হাট করে খোলা -- ঢুকতে তবু সঙ্কোচ হতে থাকে, পরিষ্কার মনে হয় অনধিকার প্রবেশ হচ্ছে হয়ত। চলেই আসছিলাম, ফেরার পথে দেখি যে শিক্ষকের খোঁজে এসেছি তিনি একটা উঠোনের এক পাশে একটি গাছের নিচে বসে, সামনে জনা দুই কিশোর ছাত্র। ফৈয়াজভাই দূর থেকেই চিনিয়ে দিয়েছিলেন কে সেই শিক্ষক। উঠোনে তখন ছাত্রছাত্রীদের ঢল নেমেছে। তাদেরই একজন ছিটকে আমার কাছাকাছি চলে এসেছে দেখে মরিয়া হয়ে জিগ্যেস করি অমুক স্যারের খোঁজে এসেছি। শুনেই ভদ্রলোক এসে আমার সাথে দেখা করেন, ফৈয়াজের নাম শুনে আমায় ভেতরে ডেকে নেন।

    আমরা সেই গাছের নিচে গিয়েই বসি। তিনি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আমার কাছে জানেন আমি কে কী করি এবং কেন স্কুল নিয়ে আগ্রহী। আমি বুঝতে পারিনা তিনি আমায় বিশ্বাস করবেন কিনা, এবং আমার দ্বারা তাঁর কোন ক্ষতি হতে পারে কিনা। তবু যথাসম্ভব বলি যে এই বিষয়ে আমি একটি প্রতিবেদন লিখতে চাই ভবিষ্যতে। ভদ্রলোক এই সময় খুবই মুশকিলে পড়েন। একদিকে তিনি প্রবলভাবেই চান যে স্কুলের সমস্যাগুলো নিয়ে লেখা হোক, অন্যদিকে তাঁর নাম কাগজে বেরোলে তাঁর বিপদ হবে --- তো দোটানায় কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে তিনি বলেন যে স্কুলের নামধাম আর কোথায় অবস্থিত সেসব বলা যাবেনা কোন কাগজের প্রতিবেদনে। সাধারণভাবে কাশ্মীরের প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলের সমস্যা হিসেবে লেখা যেতে পারে। এর পরের প্রায় ঘন্টা দেড়েক সময় নিয়ে তিনি আমায় ঘুরে ঘুরে স্কুলটা আমাকে দেখান, যা পরের পোস্টে লিখছি।
  • Tim | 174.102.***.*** | ২০ মে ২০২০ ০১:১২731478
  • শিক্ষকের নাম, ধরে নেওয়া যাক তারিক। তারিক প্রথমেই বলেন তিনি হিন্দি ও ঊর্দূর শিক্ষক, স্কুলে আরো জনা তিন শিক্ষক আছেন, তাঁরাও হিন্দি, উর্দূ, ইতিহাস ও ভূগোল পড়ান। ইংরেজি, অঙ্ক আর বিজ্ঞানের কোন শিক্ষক নেই। স্কুলে মাধ্যমিক অবধি পড়াশুনো হয়, ক্লাস টেনের পর বোর্ডের পরীক্ষা, যেমনটা বাকি সর্বত্র নিয়ম। হিউম্যানিটিজের এই শিক্ষকেরাই খানিক পড়াশুনো করে অঙ্ক বিজ্ঞান এইসব দেখানোর চেষ্টা করেন, তবে তাতে খুব একটা সুবিধে হয় না। স্কুলে তিনটে ঘর। প্রতি ঘরে দুটো তিনটে করে ক্লাস বসে। ছাত্রছাত্রী সংখ্যা যা তাতে মোটের ওপর কুলিয়ে যায়। সবার জন্য বেঞ্চ নেই, নিচের ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা মেঝেতে চাটাই পেতে বসে। সম্প্রতি একটা ক্লাসে তিন চারটে বেঞ্চ আসায় তারিক খুবই উচ্ছ্বসিত দেখা গেল। ঘরগুলো সেই সময় ফাঁকা, শুধু মেঝেতে সারসার পলিব্যাগ বা বিবর্ণ স্কুলব্যাগ পড়ে ছিলো, বাচ্ছারা সবাই বাইরে। কেউ খেলছে, বেশিরভাগই বসে গল্প করছে। এদের ছুটোছুটি করার সম্ভবত তেমন তাগিদ নেই, রমজান চলছে বলে উপোস।

    তারিক ঘুরিয়ে দেখান সব। বাচ্চাদের আঁকা ছবি দেওয়ালে সেলোটেপ দিয়ে লাগানো হয়েছে, কোথাও ইংরেজি আলফাবেট কেটে কেটে আটকানো। টীচার্স রুম কাম লাইব্রেরি কাম কম্পিউটার রুম (যদিও কম্পিউটার নেই) কাম স্টোরেজ কাম অফিস ঘরটায় তখন সহকারি প্রধান শিক্ষক বসে বসে হিসেব পরীক্ষা করছিলেন। শুনলাম স্টাফ নেই তাই অফিশিয়াল কাজ অ্যাক্টিং প্রধান শিক্ষক (তারিক) এবং সহকারি প্রধানকেই করতে হয়। অন্য শিক্ষকেরা পালা করে খাবার জল ভরে আনেন, বাচ্চাদের ছোটখাটো অসুবিধে হলে দেখেন প্রায় সবাই ভাগ করে।

    স্কুলটি পহলগাঁও থেকে মিনিট কুড়ির পথ, খাড়া চড়াই পেরোতে হয়। তারিক বলছিলেন যাতায়াতের অসুবিধের কথা। তিনি ও তাঁর পরিবার পহল্গাঁও থাকেন। শীতকালে খুবই অসিবিধে হয়। একবার স্কুলে এসে দুদিন ফিরতে পারেননি লাগাতার তুষারপাতের জন্য। ঐ খোলা ঝরঝরে স্কুলবাড়িতে প্রচন্ড ঠান্ডায় কাটিয়ে বেঁচে থাকা হয়ত ওঁদের পক্ষেই সম্ভব।

    সেইখানেই স্থানীয় বাচ্চাদের পড়াশুনো নিয়ে কথায় তারিক বলেন বোর্ডের পরীক্ষায় এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কেউ কেউ ভালো ফল করে, কিন্তু তারপর তাদের পড়াশুনো আর এগোয় না। এর অনেক কারণ আছে। কাশ্মীরের ছেলে মেয়েরা যত বড়ো হয় ততই তাদের চোখে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের ওপর চলে আসা অন্যায়গুলো ধরা পড়তে শুরু করে। ফলে তার্দের অনেকেই স্কুল পেরিয়ে কলেজ যেতে না যেতেই সরকারবিরোধী রাজনৈতিক কর্মসূচীতে জড়িয়ে পড়ে। এবং এরপর তাদের হয় জেল জরিমানা হয়, নয় এনকাউন্টার হয়। তাই অভিভাবকেরা অনেকেই চান না তাঁদের ছেলেমেয়ে গ্রাম থেকে শহরে গিয়ে পড়ুক। আরু থেকে বেরিয়ে আরো পড়াশুনো করতে হলে যেতে হবে প্রথমে পহলগাঁও, তারপরেই অনন্তনাগ। (অনন্তনাগে বছরের বেশিরভাগ সময় জুড়ে খন্ডযুদ্ধ চলে সেনা ও আধা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে নানা সেপারিটিস্ট ফ্যাকশনের। ২০১৮ সালে আমরা যখন অনন্তনাগ পার হই, গোটা এলাকা অসম্ভব অস্থির, একদিন বাদে বাদেই কার্ফিউ হচ্ছে, কয়েকদিন আগেই একটা সংঘর্ষ হয়ে গেছে বলে এমনকি আমাদের অনেকে ট্যুরের ঐ অংশ বাতিল করতেও বলেছিলো)।

    উচ্চশিক্ষার পথ যখন এইরকম কণ্টকাকীর্ণ, তখন মেধাবী ছেলেমেয়েরা স্থানীয় ব্যবসায় লেগে যাবে এতে আর আশ্চর্য কী। তাই টেন পাশ করে বা না করেই ছেলেরা ঘোড়াওয়ালা হয়ে যায়, দড়ি ধরে দিনে দি তিনজন ট্যুরিস্টকে "আরু ভ্যালি" দেখিয়ে আনাই তাদের কাজ। মেয়েরা সম্ভবত বেশি করে ঘরকন্যায় জুতে যায় বিয়ে টিয়ে হয়ে।

    তারিকের খুব ইচ্ছে ছিলো এইসব যেন কোন প্রচার ভালো এমন কোনো সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে বেরোয়, অবশ্যই তার নাম প্রকাশ না করে। যদি কোনভাবে আরো কিছু বসার জায়গা, ভালো বই খাতা, সর্বোপরি দু তিনজন শিক্ষক পাওয়া যায় যাঁরা ইংরেজি অঙ্ক এবং বিজ্ঞান পড়াতে পারবেন। ইতিমধ্যে কাশ্মীরকে আরো ভেঙে দেওয়া হয়েছে, ৩৭০ তুলে দেওয়ার পরের অভিঘাতে গোটা কাশ্মীরই এখন আমাদের কাছে অস্পষ্ট ও ক্রমশই আরো দূরের, কাজেই তারিক যা চেয়েছিলেন তা এখন আদৌ কোন কাজে লাগবে কিনা আমার জানা নেই।
  • hu | 174.102.***.*** | ২০ মে ২০২০ ০১:২০731479
  • Tim | 174.102.***.*** | ২০ মে ২০২০ ০১:৪৬731480
  • টীকাঃ পহলগাঁও থেকে আরু গাড়িতে কুড়ি মিনিটের পথ, হেঁটে ঘন্টা দুয়েক লাগে। তারিকরা হেঁটেই যাওয়া আসা করেন।
  • i | 220.245.***.*** | ২০ মে ২০২০ ১৭:২২731498
  • পড়ছি-

    মিঠুনের 'কাশ্মীর -রাজনৈতিক অস্থিরতা, গণতন্ত্র ও জনমত', হৃদয় কউল ভারতী সম্পাদিত সাম্প্রতিক কাশ্মীরি ছোটো গল্প ( সাহিত্য অকাদেমি)আর অদ্বয় চৌধুরী, অভিষেক ঝার সম্পাদনায় ' কাশ' ( বৈভাষিক) আর মিনিস্ট্রি অফ আটমোস্ট হ্যাপিনেস মিলিয়ে একটা কিছু টিখবার ইচ্ছে হয়েছিল একসময়-

    দেখা যাক।
  • Tim | 2607:fcc8:ec45:b800:6d4e:d250:f138:***:*** | ২১ মে ২০২০ ০০:৪৩731501
  • ২০১৮ সালের কাশ্মীর ট্রিপের একেবারে শেষদিনের কথা। ভেরিনাগ থেকে যেতে হবে জম্মু, গিয়ে ট্রেন ধরতে হবে। অনেকদিন ধরেই ইচ্ছে ছিলো কাশ্মীরের স্থানীয় পরিবহণ ব্যবস্থা কেমন সেই বিষয়ে একটু ধারণা তৈরী করা। একেবারে শেষের সেদিনের আগে সে সুযোগ তৈরী হয়নি। ঠিক হলো তড়িঘড়ি জম্মু গিয়ে যখন কোন লাভ নেই (বিকেলেই ট্রেন), অতএব রয়েসয়ে শেয়ারের জিপে করে যাওয়া হোক। টানা গেলে পাঁচ ছয় ঘন্টা, ভেঙে ভেঙে গেলে কত আর হবে, সাত ঘন্টাই লাগুক।

    ভোরবেলা উঠে বাক্স ঘাড়ে জিপ স্ট্যান্ডে এলাম। নড়বড়ে সুমোর মাথায় বাক্স বেঁধে দিলো হেল্পার, দিয়ে জনা বারো লোক নিয়ে ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে নদীর ধার পাহাড়ের গা বেয়ে হেভি স্পিডে, অনেকটা অনুসন্ধান ছবিতে অমিতাভ বচ্চনের তাড়া খেয়ে আমজাদ খানের জিপ যেভাবে চলছিলো, সেভাবে চলতে থাকলো। প্রতি মুহূর্তেই মনে হতে থাকলো বাক্সটা বোধহয় পড়ে গেল, এমনকি একবার যেন আওয়াজও পেলাম। সে যাই হোক, অনতিবিলম্বেই এসে গেল বানিহাল, এখানে আমাদের গাড়ি বদলাতে হবে। শেয়ারের জিপেই আবার ওঠার কথা ছিলো, কিন্তু দেখা গেল সামনেই একখান পেল্লায় বাস দাঁড়িয়ে গাঁক গাঁক করে লোক ডাকছে।

    আমি কিছু বলার আগেই তিতুম, "এইত্তো বাস, এই বাস জম্মু জায়েগা? এক্সপ্রেস হ্যায়? "ইত্যাদি বলে ছুটে গেল। দেখলাম ভাড়াও বেশ কম, জানলার ধারে সিটও আছে। অগত্যা উঠে বসলাম। কন্ডাক্টার আরো মিনিট কুড়ি দাঁড়িয়ে, এই ছেড়ে দিলাম, আর দাঁড়াবো না কিন্তু, এখনও সময় আছে এইরকম সব নানাবিধ অভিনয় করে টরে (অবশ্য এর মধ্যে অনেকক্ষণ কেটে গেছে তিতুমের বাথরুম খুঁজে পেতে) অবশেষে রওনা দিলো। প্রথম মিনিট চল্লিশেক বাস চমৎকার চললো, তারপর ক্রমশই একটা দুটো করে স্টপেজ দিতে দিতে শেষে এমন একটা সময় এলো যখন বাসটা আক্ষরিক অর্থেই শর্ট রুটের বাস কলকাতায় যেভাবে চলে, সেভাবে চলতে শুরু করলো। ততক্ষণে আগের লোকজনও সব নেমে গেছে, একজন করে উঠছে বটে কিন্তু তারা কেউই বেশিদূর যাচ্ছেনা। কাজেই চিরবিক্ষুব্ধ ও প্রতিবাদী সত্ত্বা নিয়ে আমরা দুজনই খালি আপত্তি করে গেলাম। ততক্ষণে গরমও বেড়েছে বেজায়। শেষমেষ অবস্থা এমনই দাঁড়ালো যে এমনকি আমার ২০৮ আর কুঁদঘাট মিনি চড়া অভ্যস্ত মনেও বিরক্তিকর ঠেকতে লাগলো। বিদ্রোহ করে বললাম যে পয়সা ফেরত দাও আমরা নেমে যাবো। তাতে কন্ডাক্টার একটু তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে আবার গেটে গিয়ে দাঁড়ালো। এরপর বাস একটা ব্রেক নিলো, শিলিগুড়ি যাবার পথে যেমন রাতে কেষ্টনগর দাঁড়ায়, সেরকম। বাস স্ট্যান্ডের শুধ শাকাহারী দোকানে অখাদ্য সব মিষ্টি বিক্রি করছিলো, তার ভয়ানক কাটতি দেখে হতাশ হয়ে ঐই কিনে খেয়ে ফেল্লাম। তারপর আরো কতক্ষণ পরে বাস ছাড়লো, তারপর গরমে সেদ্ধ হতে হতে আর ভৈশ্নো দেবীর প্রভাবে চতুর্দিক নিরামিষে ছেয়ে যেতে দেখতে দেখতে কতক্ষণে জম্মু এলাম, কিছু মনে নেই। বোতলের জল এমন গরম যে কাপে ঢেলে টিব্যাগ ফেলে দিলে দিব্যি চা হবে। গরম বলে সে জল তিতুম গেলে নি, তার মধ্যে আবার পাকামি করে (পরে বলেছিলো আমায় রোদ থেকে বাঁচানোর জন্য) তার সিট জানলার ধারে, যেখানে অনেকক্ষণ ধরে রোদ পড়ছে। আমাদের কিনা রাস্তা দেখার ভারি শখ, তাই সে জানলা বন্ধ করা হয়নি। ও হ্যাঁ রাস্তায় দেখা গেল দাবানল। বাস এতই আস্তে চলছিলো যে বারকতক ভেবেচিন্তে শেষে একটা ছবি তুলেই ফেললাম।

    যাই হোক, জম্মু স্টেশন অবধি আমাদের বাস পৌঁছে দিতে পারে নি, বরং খানিকটা দূরে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়, অতবড় বাস নাকি ঢুকবে না। নেমেই তিতুম বললো শরীরটা সুবিধের ঠেকছেনা, হাঁটতে অসুবিধে হচ্ছে, কাছ দিয়ে একটা অটো যাচ্ছিলো, তাতে উঠে বাকি পথটা যাওয়া হলো। কিন্তু তখনও বুঝিনি দীর্ঘক্ষণ রোদে বসে থেকে, জল না খেয়ে মারাত্মক ডিহাইড্রেশন হয়ে গেছে ওর।

    স্টেশন চত্বরে ঢুকেই তিতুম হঠাৎ এলিয়ে বসে পড়লো। বললো জল খাবে। আমি দৌড়ে ঠান্ডা জলের বোতল এনে দিলাম, খেয়ে আরো দু পা এগিয়ে একটা দেওয়াল ধরে দাঁড়িয়ে তারপর আবার ল্যাগব্যাগ করে এলিয়ে পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেল। পড়ার ভঙ্গীটা অনেকটা পাতালঘর ছবিতে ঘুমপাড়ানি গান শুনে ন্যাপচা থেকে আসা ভিকের মত। দেখি জিভ জড়িয়ে যাচ্ছে। বোতলের বাকি জলটা মাথায় মুখে ঢেলে, অকালবৈধব্যের আশঙ্কা বুকে নিয়ে কোনমতে দৌড়ে গিয়ে আবার জল আনলাম, সঙ্গে ফলের রস।

    এরপরে আরো বহুক্ষনের চেষ্টায়, বিবিধ মানুষের দুর্ব্যবহার, এসি ওয়েটিং রুমের মেঝেতে গাদা মানুষের ভিড় ঠেলে (নন-এসি ওয়েটিং রুমেও গেছিলাম, সেখানে মেঝেতে বাথরুম ভাসানো জল এসে জমেছে), সর্বোপরি ভারতবর্ষ কীভাবে এখনও রাজাগজাদের জন্যেই রাখা আছে তা দেখে দুজনেই সুস্থ শরীরে ট্রেনে উঠেছিলাম সে আরেক গল্প।

  • Tim | 2607:fcc8:ec45:b800:6d4e:d250:f138:***:*** | ২১ মে ২০২০ ০০:৫২731502
  • স্কুলের কথাগুলো লেখা হয়ে যাওয়ায় একটানে বাকিটা লিখে ফেলতে হলো যাতে অন্তত খানিকটা হলেও ঘটনা পরম্পরা বুঝতে সুবিধে হয়। এর মধ্যে ভেরিনাগের কথা লেখা বাকি রয়ে গেল, সেও জুড়ে দেওয়া যাবে পরে। এই কমিক রিলিফের দরকার ছিলো, তাই এই অকিঞ্চিৎকর গল্পটাই আগে দিলাম।

    এরপর আমরা ফিরে যাব আবার পুরোনো পোস্টের সূত্রে, সেই দ্রাসের গল্পের পরের কথায়। দীর্ঘদিনের বিরতিতে যার খেই হারিয়ে গেছিলো। দ্রাসের পর কার্গিল, এল ও সি'র আসেপাশের অঞ্চলে একটা দিন কাটানো, অপূর্ব সুন্দর সাঙ্কো নদীর উপত্যকা ও মৈত্রেয় বুদ্ধমূর্তি, তারপর আবার শ্রীনগর ফিরে দুটো দিনে কী কী হলো সেসব কথায়। অজস্র কথা জমে রয়েছে আজ দুবছর, লেখা হচ্ছে না। সবই অসংলগ্ন প্রলাপের মত এলোমেলো অর্ডারে আসবে, কারণ স্মৃতি থেকে উদ্ধার করে করে লিখতে হচ্ছে, একেবারে হারিয়ে যাওয়ার আগে লিখে ফেলতে হচ্ছে। একরকম নোটবই বলতে পারেন। যাঁরা পড়ছেন তাঁদের জানি অসুবিধে হবে, আগেই ক্ষমা চেয়ে রাখলাম।
  • গবু | 2401:4900:3149:e42e:6c64:bff8:e1c:***:*** | ২১ মে ২০২০ ০২:১১731504
  • জেগেছে - বাঃ। পড়ছি।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন