এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • হাউ টু টেল আ শাটারড স্টোরি

    ইন্দ্রাণী লেখকের গ্রাহক হোন
    বইপত্তর | ০১ এপ্রিল ২০১৮ | ৪২৮২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ইন্দ্রাণী | ০১ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:৫৩375194

  • পাঠ

    ''নাম কী? বামুন জিগ্যেস করে।
    দুলালী মৃধা। অনিকেত বলে।
    দুলালী? বামুন ঠাকুর দেহটা নিরীক্ষণ করতে থাকে। আর একবার প্রশ্ন করে, দুলালী?'
    ......
    -মুখাগ্নি করবে কে?
    মন্টুকে দেখায় ওরা।...
    জল ছিটাও। বলো অপহতা সুরারক্ষাংসি বেদীসদঃ।
    ....
    -গোত্র কী?
    পঞ্চানন বলল, কচ্ছপ।
    -কচ্ছপ হয় না, কাশ্যপ।
    -বলো-কাশ্যপ গোত্রং প্রেতং দুলালী দেব্যাঃ এতত্তে তিলতন্ডুলোদকং তৃপ্যস্য।
    এসব কাজ-কর্মের পর পাটকাঠিতে আগুন ধরানো হল।
    বদু হঠাৎ একটু দূরে গিয়ে আকাশের দিকে তাকাল। দু হাত সামনের দিকে বাড়ানো। দোয়া চাওয়ার সময় যেমন করে। বামুনঠাকুর জ্বলন্ত পাটকাঠি মন্টুর হাতে দিয়ে বল মুখে ছোঁয়াও।
    ঠিক তক্ষুণি মন্টু ভীষণ জোরে 'মা, মা-মাগো ' বলে কেঁদে উঠল।
    মন্টু বলতে লাগল, বাবা গো, কতবার বলেছিলে 'মা' ডাক খোকা, আমাকে 'মা' ডাক।.... এখন তোমায় মা ডাকছি, তুমি তো শুনতে পাচ্ছ না।...
    -পড়ো-ওঁ দেবা দেবাশ্চাগ্নি মুখাঃ সর্বে হুতাশনং গৃহীত্বা এনং দহন্তু-
    ... মন্টু নিজস্ব দহনে কেঁদে যায়।
    মৃত্যুর আগে লিঙ্গ-ছিদ্রপথে ছদ্ম -ঋতুরক্ত দেখেছিল ও। এবার মাতৃডাক-ও পেল।
    শুনল না দুলালী।

    'One morning, while she read the newspaper alod to him, the old imam, who clearly hadn't been listening, asked-affecting a casual air-Is it true that even Hindus among you are buried, not cremated?
    Sensing trouble, she prevaricated. 'True? Is what true? What is Truth?'
    Unwilling to be deflected from his line of inquiry, the imam muttered a mechanical response. 'Such Khuda hai. Khuda hi Sach hai'....The sort of wisdom that was available on the backs of the painted trucks that roared down the highways. Then he narrowed his blindgreen eyes and asked in a slygreen whisper: 'Tell me, you people, when you die, where do they bury you? Who bathes your bodies? Who says the prayers?'
    ....
    Having wounded each other, thus, deeply, almost mortally, the two sat quietly side by side on someone's sunny grave, haemorrhaging. Eventually, it was Anjum who broke the silence.
    'You tell me', she said. 'You're the Imam Sahib, not me. Where do the old birds go to die? '
    *********************************************************
    হলদে গোলাপ; স্বপ্নময় চক্রবর্তী; দে'জ পাবলিশিং; প্রথম প্রকাশঃ জানুয়ারি ২০১৫, মাঘ ১৪২১।

    The ministry of utmost happiness; Arundhatee Roy; Hamish Hamilton-an imprint of Penguin Books;
    First Published 2017.
  • ইন্দ্রাণী | ০১ এপ্রিল ২০১৮ ১০:০১375195

  • হলদে গোলাপ

    ব্লার্বে যেমন আছে,এক কথায় , মানুষের লিঙ্গ পরিচয়ের সমস্যার আখ্যান 'হলদে গোলাপ'। গল্পের বুনোটে ইতিহাস, নৃ-বিজ্ঞান, সমাজতত্ত্ব, শারীর বিজ্ঞান, মনস্তত্ব, জেনেটিকস, মিথ, পুরাণকথা। প্রাসঙ্গিক তথ্য হিসেবে জানি লেখক তথ্য সংগ্রহ করেছেন ১৯৯৪-৯৫ থেকে, লেখা শুরু হয়েছে ২০১১য় সম্ভবতঃ।

    উপন্যাসে অজস্র চরিত্র, আখ্যান, চলতি রসিকতা, ইতিহাস, নৃ-বিজ্ঞান, সমাজতত্ত্ব, শারীর বিজ্ঞান, মনস্তত্ব, জেনেটিকস, মিথ, পুরাণকথা, বিষাদ, কান্না, ভালোবাসা। মূল চরিত্র অনিকেত আকাশবাণীর স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান বিষয়ের প্রযোজক- নানা অদ্ভূত কবিতা, সমস্যানিয়ে চিঠি আসে। যেমন প্রেমার্থ কবি নামে একজন বর্ধমানের ভাতার থেকে লেখেন,' তুমি নারী নিউটন ফেল আকর্ষকরণী/ তুমি নারী আলফা বিটা গামা গামিনী'; আবার কেউ লিখছেন, 'সুসংবাদ, আমি যদিও পুরুষ, তবুও গর্ভধারণ করিয়াছি। আমার এখন সাত মাস চলিতেছে। চালতার আচার খাইতেছি।'
    খবরের কাগজে পড়া যায়, বস্তাবন্দী কিশোরীর মৃত্যুর কারণ-স্তন বড় করার তেল কিনেছিল সে, দোকানদার ওকে বলেছিল, নিজে নিজে মাসাজ করে লাভ নেই- অতঃপর মেয়েটি সন্তানসম্ভবা হয়, হাতুড়ের কাছে গিয়ে মারা যায়।
    অতঃপর অনিকেত শুরু করে 'সন্ধিক্ষণ' অনুষ্ঠান-জীব জগতের বিবর্তন, কোষ, ক্রোমোজোম , জিন, প্রজনন প্রক্রিয়ার বিবর্তন, মানব দেহ ও প্রজনন অঙ্গ, যৌনতা সম্পর্কিত কুসংস্কার, স্বাস্থ্যবিধি, নানা প্রশ্নের উত্তর, সাক্ষাৎকার, বিশেষজ্ঞের মতামত। আরো চিঠি আসে, আরো নানা সমস্যা-'মহাশয়, আমি একজন পুরুষ, কিন্তু নিজের ওপর ঘৃণা হয়। কেবল মনে হয় আমি যদি মেয়ে হতাম, খুব ভালো হত'
    বা ' আমি হার পরেছিলাম বলে মা আমাকে মেরেছিল,। কিন্তু বাড়িতে গোপাল ঠাকুর আছ্হে। মা রোজ পুজো করে, গোপালকে সুন্দর করে সাজায়।...গোপালও তো ব্যাটাছেলে। গোপাল সাজলে দোষ হয় না, আমি সাজলে দোষ হবে কেন?'
    অনিকেত বহু জায়্গায় যায় তথ্যএর খোঁজে, চরিত্রের খোঁজে-কার্জন পার্ক, শিয়ালদা স্টেশন, মিডলটন রো র গার্ডেন রেস্তোঁরা, পায়রাডাঙার কতিপয় 'খৎনাকার', চেতলার হিজড়া ঠেক, বলরামবাটির হিজড়া মেলা,খাজাইতলা, এশিয়াটিক সোসাইটির একসিবিশনে বহুচেরা দেবীমূর্তি,ব্যাংককে বিবিসির ওয়ার্কশপ, পুরুলিয়ার কাঁদরবুরুর 'বৈশাখী পূর্ণিমার উৎসব, আবার রবীন্দ্রসদনে কবিতা উৎসব।।।নতুন সব শব্দ শেখে-'বাট্টু', 'ধুরানি', 'লিকম, 'আকুয়া',' ছিবড়ি', কত অজানা তথ্য- টার্নার সিনড্রোম, ক্লাইনেফেলটার সিনড্রোম, ৪৫ x, ৪৭xy, ৪৮xxxy, কিনসের স্কেল, এবং অজস্র মানুষ- দুলাল, মন্টু, দুলালের মা, বিকাশ, আইভি, মঞ্জু, পরিমল, চয়ন, শিকস্তি, নাগেশ্বরী, চাত্তারা, তৃপ্তি, সোমনাথ, অনিকেতের স্ত্রী শুক্লা। প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি চরিত্রর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে গল্প, ইতিহাস, হা হা কান্ন্না আর অনেকখানি অন্ধকার, ভয়- হয়ত নাগেশ্বরী এই ভয়কে ব্যাখ্যান করেন এভাবে, ... 'পাবলিককে ভয় দেখাবি কি দিয়ে? অন্ধকার গুহা দিয়ে। অন্ধকার গুহা দিয়ে। ঐ কিছু নেই কেই ওরা ভয় পায়'।
    ফ্যাক্ট আর ফিকশনের জোড়ের জায়গাগুলি হয়তো কোনো কোনো ক্ষেত্রে মিলেমিশে যায় নি, একটা মুহূর্তে, তথ্যের ভারে সামান্য ক্লান্তি এসেছিল-তখনি দুলাল মারা গেল আগুন জ্বালিয়ে আর এইভাবে লাইনগুলি এল-'' দুলালের প্রস্টেটের সংক্রমনটা বেড়ে রক্তক্ষরণ হয়, ওর লুপ্ত যৌনাঙ্গের ভিতরে, গোপনে থাকা মূত্রছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে আসে রক্ত। যেন এই রক্তস্রাবের জন্যই অপেক্ষা ছিল ওর। দুলাল ভাবল, ওর নারী হওয়া হয়ে গিয়েছে এতদিনে। জীবন পূর্ণ। এবার আগুন জ্বালো।'
    অনিকেতের নিজের জীবনও কাহিনীতে ঢুকে যায় অবশ্যম্ভাবী। বাল্যবন্ধু মঞ্জু আসে ওর জীবনে, নিজের ছেলের সমস্যা নিয়ে-পরিমল মঞ্জুর ছেলে, যে নিজেকে পরি ভাবে। অনিকেত জড়িয়ে পড়ে সম্পর্কে। প্রথম মিলনের সময়ে মঞ্জু উপুড় হয়ে শোয়। অনিকেত ভাবে, 'সো ইউ আর দ্য কালপ্রিট, তোর জন্যই ছেলে এমন হয়েছে। তোর একস ক্রোমোজোমের খেলায়?.. মঞ্জু কাতরে ওঠে।... বলে, ইশ , কী ভীষণ কষ্ট। কাঁদতে থাকে। ... বলে, ছেলেটা কতটা কষ্ট পায় সেটা দেখছিলাম রে ডাবু। ভীষণ কষ্ট। কেন ও এসব করে?'
    এ কাহিনী আপাত শেষ হয় পরি আর চয়নের মালাবদলে।
    'মালা বদল হয়। আকাশের মেঘে মেঘে বারতা আসে। পৃথিবীর দু কোটি ট্রানসেকসুয়াল এস এম এস পাঠায়... বাপি ছবি তোলে, নিনা হাততালি দেয়।
    অনিকেতের মনে হয় ঐ হাততালির সঙ্গে মিশছে আরও শত সহস্র হাতের তালি। চাত্তারা, ঝুমকো, ময়নারা সব ঠিকরি দিচ্ছে, ভেঁপু বাজাচ্ছে। পরির বাবার দু চোখে জল গড়াচ্ছে।....
    উলু দিলো চাত্তারা, ফুলি, ময়নারা... দুলালীও। উলু দিল কলাগাছ, জুইঁফুল, বাঁশের কুলো, নিভন্ত প্রদীপ''
  • ইন্দ্রাণী | ০১ এপ্রিল ২০১৮ ১০:৩১375196

  • মিনিস্ট্রি অফ আটমোস্ট হ্যাপিনেস

    ব্লার্ব অনুযায়ী , 'দ্য মিনিস্ট্রি অফ আটমোস্ট হ্যাপিনেস' এক লম্বা আখ্যান-পুরোনো দিল্লির ঘিঞ্জি বসতি থেকে এই কাহিনীর সুতো চলে গেছে বড় শহর ছাড়িয়ে , কাশ্মীরে, মধ্যপ্রদেশের জঙ্গলে যেখানে war is peace and peace is war।
    কাহিনীর অক্ষে অঞ্জুম-একদা আফতাব পরিচয় ছেড়ে যে এসেছিল খোয়াবগাহে। সেখানে তাকে নিম্মো গোরখপুরী বলে, Do you know, why God made Hijraas?....He decided to create something, a living creature that is incapable of happiness. so he made us.' নিম্মো আরো বলে, সাধারণ মানুষের দুঃখ কিসে জানো? এই ধরো জিনিসের দাম বাড়ল, বাচ্চাকাচ্চাদের স্কুলের অ্যাডমিশন, স্বামীর চড় চাপড়, অথবা বৌএর ছলনা, কিম্বা দাঙ্গা, হয়ত যুদ্ধ-এসবই তো থিতিয়ে যায় সময়ের সঙ্গে। But for us the price-rise, and school admissions, and beating husbands and cheating wives are all inside us. The war is inside us. Indo-pak is inside us. It will never settle . It will never settle down।
    এই খানেই সমস্ত কাহিনীর সুর বেঁধে দেওয়া। এ যেন অন্তহীন বিলাপ-বুক চাপড়ানো হাহাকার যেন-স্লো মোশনে সেই বিলাপ আমরা প্রত্যক্ষ করি কাহিনীর প্রতি লাইনে- কখনও অসংলগ্ন, কখনও কথা জড়িয়ে যায় কান্নায়, লালায়, আর রক্তে, আলজিভ দেখা যায়-কখনও তা অশ্রুত , কখনও পাগলের মত চিৎকার, কখনও ক্লান্তিতে স্বর নেমে যায়, কখ্নও তীব্র শ্লেষ, ঘুনঘুনে বিষাদ আর বুক চাপড়ানো। অজস্র চরিত্র এসেছে-তিলোত্তমা, নাগা, বিপ্লব, মুসা, অম্R্ক সিং, এক রহস্যময় শিশু উদয়া জেবেন, জয়নাব, সাদ্দাম হুসেইন, আজাদ ভারতীয়, এসেছে গুজরাট, যন্তর মন্তর, লাল কিল্লার লাইট অ্যান্ড সাউন্ড, পাগলি, কুকুরটা, রিগর মর্টিস হয়ে যাওয়া বন্ধ বন্ধ হাতের মুঠোয় মাটি আর হলুদ সর্ষে ফুল।

    সাদ্দাম হুসেইন আসলে দুলিচাঁদ। বাবা দয়াচাঁদ। ব্যবসা ছিল মৃত গবাদি পশুর চামড়াশোধন। দশেরার দিন ওরা মৃত গরু নিয়ে ফিরছিল-পুলিশ টাকা চেয়েছিল অনেক-অত টাকা না দিতে পারায় গো হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হল দয়াচাঁদ, থানা থেকে তাকে বের করে আনল জনতা-অতঃপর জয় শ্রীরাম, বন্দেমাতরম-বীভৎসভাবে খুন হ'ল দয়াচাঁদ। সমস্ত খুইয়ে পালাল দুলিচাঁদ। সাদ্দাম হয়ে গেল। পরে সে ফিরে গিয়েছিল বাবার মৃত্যুস্থলে-সেখানে এখন শপিং আর্কেড।
    This is his mazar, Anjum said.
    ......
    May be it's the whole world's mazar, Tilo thought, but didn't say. May be the mannequin-shoppers are ghosts trying to buy what no longer exists.
    ....
    I know a hindu prayer! Zainab said suddenly......And then, sitting at a table in a fast-food restaurant, as a missive of love to her late as well as future father-in-law, Zainab recited...
    Om bhur bhuvah svaha
    Tat savitir varenyam
    Bhargo devasya dhimahi
    Dhiyo yo nah prachodayat'

    তরুণ সেনানী মুরুগেশন-কাশ্মীরে পোস্টিং হওয়ার পর দেখে ফর্সা কাশ্মিরীদের পাশে ভারতীয় সেনারা সকলেই চামার। তার মৃত্যুর পরে কফিন নিয়ে যেতে হয় তার গ্রামে অচ্ছুতদের জন্য নির্দিষ্ট শ্মশানে, ভারতীয় আর্মি শহীদ স্মৃতিতে মুরুগেশনের মূর্তি স্থাপন করে তাঁর গ্রামে-তথাকথিত উচ্চ শ্রেণী ক্রমে হাওয়া করে দেয় তার রাইফেল, তারপর হাত, মাথা।'The headless statue remained at the entrance of the village. Though it no longer bore any likeness to the man it was supposed to commemorate, it turned out to be a more truthful emblem of the times than it would otherwise have been......In some countries, some soldiers die twice.'

    মিস জেবেন ১ আর তার মা মারা যায় এক সঙ্গে, এক বুলেটেই সম্ভবত। বাবাটি সন্তানের কবরে খোদাই করে দেন কটি লাইন- 'বাবা, গল্প বলো।' Tell me a story and can we cut the crap about the witch and the jungle? There wasn't a witch, and she didn't live in the jungle।

    উপদ্রুত কাশ্মীর। লাশের পর লাশ। সমাধির জমি অপ্রতুল। স্তরে স্তরে সাজানো হয় মৃতদেহ। যেমন টুরিস্টদের দোতলা বাস।

    এ কাহিনী এই ক্রন্দন শেষ হয় মিস উদয়া জেবেন ২ এর হিসিতে বিম্বিত রাতের আকাশ, তারা আর হাজার বছরের প্রাচীন শহরের প্রতিবিম্বে। গুবরে পোকা আকাশে হাওয়ায় ঠ্যাং তোলে আকাশ ধরবে বলে-to save the world in case the heavens fell'
  • ইন্দ্রাণী | ০১ এপ্রিল ২০১৮ ১০:৩৭375197

  • হাউ টু টেল আ শাটার্ড স্টোরি

    দুটি উপন্যাসেই কিচ্ছু ফেলা হয় নি। সমস্ত উপকরণ-যা প্রথাগত উপন্যাসের উপকরণ হতে পারে বলে ভাবাই যায় না -সব রয়েছে।

    হলদে গোলাপে অনিকেতের ফাইলের চিঠিপত্র, নোট, ইতিহাস, মিথ, পুরাণকথা, হ্যান্ডবিল, সিলেটের 'সুন্দরী কমলার ' আখ্যান, বররুচির 'উভয়সারিকা', অতীতের আলেকজান্দ্রিয়া বন্দরের ক্যাস্ট্রেশন থেকে হিজড়া খোলে ছিন্নি পর্যন্ত, বাকাবিল্লাহ , ফানাবিল্লাহ, স্কপ্টসি।
    যেমন 'প্রবর্তক' পত্রিকায় পরির কবিতা-
    'মা বোঝে না, কেউ বোঝে না
    কোথায় আমার আমি
    ব্যঙ্গ করে বলতে পারো
    তুইতো সমকামী।'

    আবার, প্রেমার্থ কবির কবিতা

    'তোমায় নিয়ে চাঁদে গেছি/ চাঁদেতে কম জি/ তোমায় আমি কাঁধে নিয়ে কেবল লাফাচ্ছি'

    পাশাপাশি যশোধরাও রয়েছেনঃ
    'সমুদ্রের তলে এই খেলা
    যাপনে যাপনে। জলে জল।
    আলাদা আলাদা করে কী করে সে
    বলে দেবে বলো
    কোনটা জননক্রিয়া, কোনটা প্রনয়
    কোনটা ছল।'

    অরুন্ধতীর উপন্যাসে রয়েছে, তিলোত্তমার নেওয়া নোট-তার মায়ের মৃত্যুশয্যার আপাত প্রলাপ-Mostly they were pure gibberish. Somehow the idea of dictating things, Tilo said, seemed to make her mother feel that she was still the captain of the ship, still in charge of something, and what calmed her down considerably.'
    রয়েছে The Reader's Digest Book of English Grammar and Comprehension for Very Young Children by S. tilottamaa-যাতে থাকে গুচ্ছের ক্লিপিং অণুগল্প, আর কিছু নিছকই ডায়ারি এন্ট্রি-
    দুটি উদাহরণঃ

    khaadijaa says...

    In kashmir when we wake up and say 'Good Morning' what we really mean is 'Good Mourning'


    Nothing

    I would like to write one of these sophisticated stories in which even though nothing much happens there's lot to write about. That can't be done in kashmir. It's not sophisticated , what happens here. There's too much blood for good literature.

    Q1. Why is it not sophisticated?
    Q2. What is the acceptable amount of blood for good literature?

    রয়েছে ওসিপ মান্দেলস্টামের কবিতা-
    A star melts, like salt, in the barrel
    And the freezing water is blacker,
    Death cleaner, misfortune saltier,
    And the earth more truthful, more awful.

    এভাবেই বুঝি লিখতে হয় আশ্চর্য বিলাপ

    How to tell a shattered story?
    By slowly becoming everybody.
    No
    By slowly becoming everything.'
  • ইন্দ্রাণী | ০১ এপ্রিল ২০১৮ ১০:৩৯375198

  • সাধারণ পাঠকের প্রতিক্রিয়া

    বাগানে জল দিতে দিতে একবার ঝড়ের মুখে পড়েছিলাম আচমকাই। বিকেলের রোদ, সামান্য মেঘ, সবুজ ঘাস, চেনা ফুল, ফল, টিয়াপাখি, ঝরা পাতা, আগাছা, জলঝারি। আকাশ কালো করে এলো। প্রথমে মেঘলা। তারপর কালো, তারপর নিকষ। তারপর মুহুর্মুহু বেগুণী বিদ্যুৎ। শুকনো পাতাগুলি দৌড়োতে শুরু করল রাস্তার এপার থেকে ওপার। কোথায় যেন কুকুর কেঁদে উঠল। পাখিরা আর কোথাও নেই । ধুলো, পাতা, ভাঙা ডাল ঘিরে ধরে আমাকে। জলের ফোঁটার এত জোর? নাকি শিলাবৃষ্টি? গাল কেটে যায়, চোখ মুখ বন্ধ ধুলোয়, চাবুকের মত গায়ে মুখে জল, পাতা। মাথার চুল বাইছে গাছ পিঁপড়ে, প্রজাপতিগুলি আমূল শুয়োপোকায় বদলে গিয়ে আমার কাঁধে ঘাড়ে। আকাশ খুলে গেছ্হে মাথার ওপর। স্বর্গ না কি নরক? হাওয়া উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে। এই তো বাড়ি, এই তো মালঞ্চঘেরা বাড়ি ছিল একটু আগেই, ঘোর আঁধারে হারিয়ে গেছে বাড়ি। ঝড়ের ব্যাদান মুখে এ এক অন্য পৃথিবী -পাখি নেই, ফুল নেই, মানুষ নেই, কূজনহীন কাননভূমি, দুয়ার দেওয়া সকল ঘরে। অসম্ভব খিদে পেল হঠাৎ-ঝড়ের খিদে। ঝড়ের দিকে মুখ করে, হাঁ করে ঝড় খেতে লাগলাম। ঝড়, ধুলো, জল, পাতা, শিলা, শুঁয়োপোকা, পিঁপড়ে এবং বজ্রমাণিক।
  • | ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:২৪375199
  • আঞ্জুমের কথা পড়তে গেলে 'হলদে গোলাপ' মনে আসা প্রায় অবধারিত, যাঁরা বইটি পড়েছেন। ইন্দ্রানীর লেখাটা অ্যাজ ইউজুয়াল অতি চমৎকার।

    মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপীনেস পুরো পড়ে বা আঞ্জুমকে গোটা বইজুড়ে ফলো করে মনে হয়েছে অরূন্ধতীর আঞ্জুমদের চেনাচিনি স্বপ্নময়ের মত অত গভীর নয়। খানিক আলগা আলগা খানিক শহুরে উচ্চবিত্তর এমপ্যাথেটিক দৃষ্টি দিয়ে দেখা ... বরং কাশ্মীরের চরিত্রগুলি অনেক যত্নে নির্মিত। অরূন্ধতীর গোটা বইটা আসলে কালেকশান অব নভেলাজ মনে হয়েছে আমার কাছে। কিছু কিছু জায়গায় অসম্ভব সুন্দর, যেমন মিস জাবিন-১ (নাকি জেবেন?) এর মৃত্যু ও শবযাত্রার অংশটা, প্রায় কবিতাই বলা যায়। কিছু কিছু একেবারেই উদ্দেশ্যহীন। যেমন এই টিলো চরিত্রটি। এর উপস্থিতি শুধুই কাশ্মীরের কথা, মুসাদের কথা বলার প্রয়োজনে, পিঙ্কি সোধীকে বা পিঙ্কি সোধীদের চেনানোর প্রয়োজনে। তো, সে ঠিক আছে। উপন্যাসে তো এরকম চরিত্র থাকেই যাহারা অপরাপর চরিত্রদিগকে প্রতিষ্ঠা করিবার নিমিত্ত নির্মিত। কিন্তু তাহলে এতবেশী জায়গা ওর প্রাপ্য হয় না আর কি।

    কথা ছিল সোসেন এটার বিস্তারিত রিভিউ লিখবে। কথা ছিল আমি বিস্তারিত রিব্যুটাল লিখব। কেউই কিস্যু লিখে উঠতে পারি নি। অথচ বেরোবার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আমরা কয়েকজন কাড়াকাড়ি করে পড়েছিলাম বইটা। ইন্দ্রানী লেখায় অন্তত আলোচনার একটা উদ্যোগ হল। অরো যাঁরা যাঁরা পড়েছেন নিজেদের ভাল মন্দলাগা অনুভব ইত্যাদি লিখলে পারেন।
  • i | 134.17.***.*** | ০২ এপ্রিল ২০১৮ ১১:৪১375200
  • আলোচনার জন্যই তো টই তে দিলাম। নয়তো বেশ করে গুছিয়ে সমাপ্ত লিখে লম্বা দাঁড়ি টেনে হরিদাস পালে দিতাম।

    দ খুব ভালো করল লিখে। দ র থেকে এবং আরো সকলের থেকে বড় বড় লেখা চাইছি।
    কাল খুব তাড়াহুড়োয় লেখা-আরো কিছু লেখা দরকার ছিল। এখন দ-র মন্তব্যর উত্তর হিসেবে লিখে দি।

    আমি আঞ্জুমের জন্য কিন্তু হলদে গোলাপ আর আটমোস্ট হ্যাপিনেসকে একসঙ্গে রাখি নি।মূল সুরটা আমার কাছে হাউ টু টেল আ শাটারড স্টোরি। এই খোলামকুচি জীবনের কাহিনী আমি কেমন করে লিখব? দুই লেখকই ভাঙাচোরা প্রান্তিক মানুষের গল্প লিখলেন আর উপকরণও অনেকটা এক। যেটা ৪ নম্বর পোস্টে খানিকটা লিখেছি। ঐ পোস্টে আরেকটু লিখলে হয়ত ভালো হত। তো সে যা হোক, আলোচনাই তো।
    অবশ্যই স্বপ্নময়ের লেখা অসম্ভব ফোকাসড। কাদের নিয়ে লিখছেন, কেন লিখছেন-খুব পরিষ্কার। তাই এত গভীরে।
    অরুন্ধতীর উপন্যাস একেবারেই তা নয়-আমার যেটা মনে হয়েছে, লিখেওছি-এ এক বিলাপ, হাহাকার-স্লো মোশনে দেখছি আর অশ্রু, ক্রোধ, খ্যাপামি, বুক চাপড়ানো খুব স্পষ্ট দেখছি। নিজের সন্তান, নিজের প্রেমিক, নিজের ঘরবাড়ি ছারখার হলে অসহায় মানুষ যা করে-গোটা উপন্যাসটা তাই। আমার দেশ, আমারই দেশের মানুষ, আমাদেরই সন্তান সন্ততি-খবরের কাগজ পড়ে এক এক দিন আমর মত গা বাঁচানো পাবলিকও এই ভাবে কাঁদে। বিলাপই যখন তার অসংলগ্নতা, অর্থহীনতা থাকবেই, খুব ফোকাসড তো সে হবে না। অন্যের কথা আসবে-হয়তো ঐ শোকে যার আপাত কোন ভূমিকাই নেই। দার্শনিকতাও থাকবে, খানিকটা কল্পনা।যা হয় নি, যা হতে পারত।
    মনে পড়ে, আমার পিসিমা, পিসেমশাইয়ের মৃত্যুর পর কাঅদতে কাঁদতে বলেছিলেন-আ লো, চশমাটা দিয়া দে। হ্যায় তো চোখে দ্যাখে না, ক্যামনে যাইব একা। এই সব...

    অরুন্ধতীর উপন্যাসে বাস্তব পরাবাস্তবের চলাচল আছে, স্বাভাবিকভাবেই স্বপ্নময়ে তা অনুপস্থিত। দার্শনিকতার কথা বলতে গিয়ে শেষ লাইনে ঐ ঠ্যাং ওল্টানো গুবরে আর খুকীর হিসিতে দিল্লির বিম্বিত হওয়া যেন এক মহাকাব্যের সমাপ্তি।
    দুই লেখার ভাষাও খুব খুব আলাদা স্বাভাবিকভাবেই। তবু কোনো কোনো জায়গায় স্বপ্নময়ে উঁকি দিয়েছেন অরুন্ধতী।
    যেমনঃ হলুদ গোলাপে একটি আত্মহত্যার ঘটনার পরে কাতর দম্পতি। সেইদিনই আবার নতুন স্যান্ডুইচ মেকার কেনা হয়েছে সংসারে। একই সঙ্গে আত্মহত্যার কথা আবার স্যান্ডুইচ মেকারে সংসারের সুবিধের কথা চলছে। অমোঘ লাইন-'একেই ঘরকন্না বলে। সুইসাইড ও স্যান্ডুইচ সব মিশে যায়।'

    দুই উপন্যাসের উপকরণগুলি আমাকে অবাক করেছে।কেই কিচ্ছু ফেলেন নি। কিচ্ছু না। খোলামকুচি জীবন লিখতে গেলে তবে কি খোলামকুচিই লাগে?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন