এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • কালিম্পং

    S
    অন্যান্য | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | ৭১০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • S | 194.167.***.*** | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২২:৫১371550
  • বানাম ভূল হলে নীজ গুউনে মাপ কড়ে দেবেন।
  • S | 194.167.***.*** | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২২:৫৮371561
  • এইবারের শীতে কোথায় যাবো ঠিক করে উঠতে পারছিলাম না। এখানেও অনেককে জিগিয়েছিলাম। সুন্দরব্ন আর বোলপুরের কথাই মাথায় আসছিলো। কিন্তু সুন্দরবনে মশার কামড়ের ভয়ে বাদ গেলো। বোলপুরের ট্রেনের টিকিটও কাটা হয়ে গেছিলো। কিন্তু ভালো হোটেলে ভালো ঘর নেই। পৌষ মেলার পর পর জায়্গাটা নাকি খুব নোংরা থাকে। ফলে সেটাও বাদ।

    এরপরে পস্চিমবঙ্গ টুরিজমের ওয়েবসাইটে গিয়ে চেক করলে লাগলাম সরকারি বাংলোগুলোতে যদি ফাঁকা পাওয়া যায়। পছন্দসই জায়্গা গুলোতে ফাঁকা নেই। তা ডেটটা একটু পিছোতে দেখি অনেক গুলো ফাঁকা হয়ে গেছে। ঠিক করলাম কালিম্পং যাবো। ৭ থেকে ১১। বুক করে ফেললাম মর্গান হাউসের সবথেকে ভালো ঘরটা। সাড়ে তিন হাজার পার ডে প্লাস জিএসটি আর সার্ভিস চার্জ (পরে দিতে হবে)।

    সময় নেই। তাই ঠিক করলাম যে প্লেনেই যাবো। প্লেনের টিকিট খুব সস্তা। দুজনের যাতায়াত নিয়ে নয় হাজার মতন পরলো।
  • S | 194.167.***.*** | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২৩:১৬371563
  • দুজনের দুটো ছোটো সুটকেস হয়েছে। আর হাতে একটা স্কুল ব্যাগ। কিন্তু ৭ তারিখ সকালে ছাই ট্যাক্সি পাইনা। ভাবছি বাসে করে চলে যাবো কিনা। ওলা উবার অ্যাপ না থাকলে কি অবস্থা হয় দেখলাম। শেষে একটা পেলাম। তিনি রাজারহাট দিয়ে হুস হাস করে নিয়ে গেলেন। সময় ছিলোনা।

    ফ্লাইট সময়মতনই ছাড়লো। ৫০ মিনিটের মতন ফ্লাইট টাইম। খুব সুন্দর ছোট একটা এয়ারপোর্ট বাগডোগরা। নেমে ব্যাগপত্তর নিয়ে ভাবছি কি করে যাবো। দেখি বেঙ্গল টুরিজমের একটা ছোট্ট অফিস। সেখানে একটা সুন্দরী পাহাড়ী মেয়ে বসে আছে। তাকে অনেক প্রশ্ন করলাম। সে শান্ত মাথায় হেসে হেসে সব প্রশ্নের উত্তর দিলো। অনেক থ্যান্কু বলে টলে বেড়িয়ে এলাম।

    বেড়োতেই একগাদা গাড়ির লোক ছেয়ে ধরলো। প্রচুর ডিমরালাইজ করার চেস্টা করাতে দেখলাম হালকা হলো। একটা বাস এসে দাঁড়িয়েছে ততক্ষনে। জিজ্ঞাস করলাম যে পাণী টান্কি যাবে কিনা? সেখান থেকে শেয়ারে গাড়ি পাওয়া যায় কালিম্পং যাওয়ার। ১৬ টাকা ভাড়া নিলো। এই বাসে অনেক টুরিস্ট যায়। ফলে অনায়াসে আপনার মালপত্তর রাখতে পারবেন।

    যেতে যেতে দেখলাম শিলিগুড়ি অনেক বড় শহর হয়ে গেছে এখন। আমি প্রায় ১৭ বছর পরে এলাম। সিটি সেন্টার, মাল্টিপ্লেক্স, বড় হোটেল, হাউজিং কম্প্লেক্স সব হয়েছে। রাস্তা ঘাটও মন্দ না। বাসের বাকি আরোহিরাই আমাকে বলে দিলো কোথায় কখন নামতে হবে, এখন দরজার দিকে এগিয়ে যান। এতো হেল্প আজকাল এয়ারহোস্টেসরাও করেনা। নামার আগে বলে দিলো যে একটা রিস্কা নিয়ে পাণী টান্কি চলে যান।

    রিক্সা একটা ততক্ষণাত পেয়েও গেলাম। বললো ২০ টাকা নেবে। উঠে পরলাম। পৌঁছে দিলো। অনেকটা রাস্তা। দুজন লোক। টুরিস্ট। দুটো ব্যাগও আছে। ৫০ চাইলেও অবাক হতাম না। তাকে ২৫ দেওয়াতে তিনি খুব খুশি হলেন।
  • S | 194.167.***.*** | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২৩:২৬371564
  • দেখছি একটা চেয়ার টেবিল বসিয়ে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কোয়ালিস জাতীয় গাড়িতে চেপে চুপে লোক নিচ্ছে। আমাকে অ্যাডভাইস করলো যে সামনের তিনজনের সীট (ড্রাইভারের পাশে তিনজন কি করে বসে কে জানে?) বুক করে নিন। দুজনে আরামে যেতে পারবেন। মোট ৪৫০ দিন। দিলাম।

    জিজ্ঞেস করলাম এখানে বাথরুম আছে কিনা। বললো যেটা ছিলো সেটা এখন বন্ধ। সেরেছে এতোটা রাস্তা ইসে মানে। এদিকে খিদেও পেয়েছে খুব। ঐ টিকিট কাউন্টারের (টেবিলে) পিছনেই এক সর্দার্জীর দোকান ছিলো। সেখান থেকে ভেজ মোমো (চিকেন নেই), চিপস, আর কোল্ড ড্রিন্ক্স কিনলাম। যাত্রা শুরু হলো।

    দেখি একটা বাচ্চা পাহাড়ী ছেলে গাড়ি চালাচ্ছে। একটু পরে একটা পেট্রোল পাম্পে দাঁড় করিয়ে বলে আপনাদের কার যেন বাথরুম পেয়েছিলো, এখানে চলে যান। আমিও এই সুযোগে আমার ২০০০ টাকার নোট ঐ ড্রাইভার ছেলেটাকে দিয়েই ভাঙিয়ে নেওয়ালাম।

    এইবারে ননস্টপ যাত্রা শুরু হলো। ওদিকের রাস্তাটা খুব সুন্দর। যত দুরে যাই, তত ভালো লাগে। পাহাড়, পাসে তিস্তা, সবুজ। তিস্তার জল এখন কম। এমনিতেই শীতকাল, তার উপরে দুটো বাঁধ দিয়ে ইলেকট্রিসিটি তৈরী হচ্ছে। আর বসতি বেড়েছে, নোংরাও করেছে লোকে। নইলে আরো সুন্দর লাগতো।

    মোমোটা দারুন ছিলো। বিশেষ করে চাটনীটা।
  • S | 194.167.***.*** | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২৩:৩৭371565
  • কালিম্পং এখন আলাদা জেলা। একটা জায়্গায় এসে কালিম্পং যেতে গেলে রাস্তাটা ঘুরে যায়। পাহাড়ের উপরে উঠতে হয়। সেইখান থেকে চারপাসটা অসাধারণ সুন্দর হয়ে যায়।

    এর পরে রাস্তায় লোকে একে একে নামতে লাগলো। সবাই নেমে যাওয়ার পরে, ড্রাইভার ছেলেটি মুখ খুললো। বললো কোথায় যাবেন আপনারা? বললাম মর্গান হাউস। বললো সেতো কালিম্পং থেকেও তিন চার কিলোমিটার উপরে। কি করে যাবো? গাড়ি নিয়ে নেবেন। তুমি যাবে? যাবো, কিন্তু ২০০ দিতে হবে। আমরা রাজি।

    কালিম্পং শহর খুব ঘিন্জি। রাস্তা খুব ছোটো। আর প্রচুর গাড়ি। সেটা পার করে গাড়ি উপরে উঠতে লাগলো। ড্রাইভারের নাম ওসন। সেই বললো যে মর্গান হাউস খুব ভালো।

    আসলে মর্গান হাউস যে জায়্গায় তার নাম হলো দুরপীন। এটা একটা ক্যান্টনমেন্ট। মিলিটারির লোকজন আর কম্পাউন্ড চারপাশে। কালিম্পং দুটো পাহার মিলে হয়েছে। দুরপীন দারা আর ডেলো।

    মর্গান হাউসে পৌঁছে মাল নামিয়ে টাকা নিয়ে ওসন ভাই চলে গেলো। এর মধ্যে কথা হয়ে গেছে যে সেই আমাদেরকে কাল সাইট সিয়িঙ্গ করাবে। লাভা, লোলেগাঁও, ডেলো। রিশপের রাস্তা খারাপ, অতেব ওটা বাদ।

    এই প্রথম একটা হোতেল দেখলাম যেটা সাইটে দেওয়া ছবির মতনই সুন্দর।
  • S | 194.167.***.*** | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২৩:৪৬371566
  • দেখলাম আমরাই একমাত্র হোটেলে আছি। অন্য সবকটা ঘরের চাবি ঝুলছে। সই সাবুদ, আইডি দেখানোর পরে ঘরে নিয়ে গেলো। সে এক বিশাল বড় ঘর। বাথরুমও বিশাল। ঐ এক ঘর আর বাথরুমের এরিয়ায় আজকাল কোলকাতায় অনায়াসে টুবিহেইচকে ফ্ল্যাট নেমে যায়।

    তখনও বিকেল বেলা। ফোন করে বললাম যে কোনও খাবার পাওয়া যাবে কিনা। বললো চিকেন ফ্রাই দেবো? বললাম বাইরের লনে ছাতার তলায় দিয়ে দেও। দিলো। খাবার মোটামুটি। বললো ডিনারের অর্ডার এখনই দিয়ে দিতে। আটটা থেকে সাড়ে আটটায় ডিনার। দিলাম অর্ডার। খেয়ে একটু সান্ধ্য ভ্রমণে বেড়োলাম আসে পাশে। মনোরম জায়্গা। সামনে একটা গল্ফ কোর্স, মিলিটারিদের। রাস্তাটা ক্রমশ উপরে উঠে গেছে।

    ফিরে এলাম। সন্ধ্যে হতেই শীতটা জাঁকিয়ে বসছে। বড় বড় জানলা। বন্ধ করলেও শীত ঢোকে। হিটারটা ছোটো। আটটা পরে ডাইনিঙ্গ হলে গেলাম। সেতো সাহেবি ব্যাপার স্যাপার। আমাদের দুজনকে সার্ভ করলেন তিনজন মিলে। আপ্যায়নের ত্রুটি নেই। এইবারে খাওয়াটা বেটার লাগলো। ইন্ডিয়ান মেনু থেকে দিয়েছিলাম।

    ঘরে এসে একটু টিভি দেখে ঘুমিয়ে পড়লাম। কি শীতরে বাবা।
  • S | 194.167.***.*** | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২৩:৫৭371567
  • পরেরদিন সকালে ওসন ভাই ফোন করে কনফার্ম করে নিলো যে যাবো কিনা। বললাম ৯ টা নাগাদ এসো। জানলার পর্দা সরাতেই দেখলাম কাঞ্চনজঙ্ঘা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তখনো অনেক কুয়াশা। ফলে হালকা করে দেখা যাচ্ছে।

    ৯ টা নাগাদ ব্রেকফাস্ট করতে গেলাম। এটার অর্ডার আগেরদিন রাত্রে দিয়ে দিতে হয়। আমি করলাম পুরি সবজি। আরেকজন করলেন টোস্ট অমলেট। সে এক্কেবারে রয়াল ব্যাপার স্যাপার। ব্রেকফাস্ট উইথ টি কম্পলিমেটারি। খুব ভালো বানায়। বাকি খাবারের দামও রিজনেবল, ভালো পরিমাণে দেয়, অত ভালো সার্ভিস কোলকাতায় কোনও রেস্তোরায় আজকাল আর পাওয়া যায়্না।

    খেয়ে দেয়ে বেড়িয়ে গেলাম। প্রথমে গেলাম লোলেগাঁও। সত্যিই একটা ছোট্টো গ্রাম। একটা হ্যাঙ্গিঙ্গ ব্রিজ আছে। তেমন কিছু না হলেও খুব মজার জিনিস এটা। অনেকটা ধরে দড়ি আর কাঠ দিয়ে একটা ব্রিজ তৈরে করে রেখেছে। টিকিট দিয়ে ঢুকতে হয়। গেলাম সেখানে। সেটা হয়ে গেলে, একটা খোলা জায়্গা আছে সেখানে বসে মোমো খেলাম। সামনে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় সেখান থেকে। জল, কোল্ড ড্রিন্কস, আর চীপস নিয়ে নিলাম সঙ্গে। ওসন ভাই দেখি ওয়াই ওয়াই খেলো, বললাম সেটার দামও আমিই দিচ্ছি।
  • S | 194.167.***.*** | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২৩:৫৯371568
  • আমার নিজের তোলা ছবির থেকেও ইন্টারেনেটে পাওয়া ছবিগুলো অনেক বেটার তাই সেটাই দিচ্ছি।

    হ্যাঙ্গিঙ্গ ব্রিজঃ


    এখানেই মোমো খেতে খেতে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখুনঃ
  • S | 194.167.***.*** | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:১৮371569
  • এখানে দুটো ব্যাপার বলার দরকার। এক, আশে পাশের সীনারি যাস্ট অসাধারণ। এতো ন্যাচারালি বিউটিফুল জায়্গা খুব কম দেখেছি। দুই, রাস্তা জঘণ্য। বড় গাড়ি ছিলো বলেই বেঁচে গেছি। ওসন ভাই দেখলাম অরিজিত সিংএর খুব বড় ফ্যান। আমরাও। শুধু তারই গান ছেড়ে গেলো পুরো রাস্তায়। খারাপ রাস্তার কষ্টটা অনেক কমে গেলো। নিজেও দেখলাম আশে পাশের সীনারি এন্জয় করছে।

    লোলেগাঁও থেকে গেলাম লাভাতে। সেখানে একটা বিশাল বড় বুদ্ধিস্ট মনাস্ট্রি আছে। সত্যিই দেখার মতন। লাভা মনাস্ট্রি দিয়ে গুগলে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। ছবির মতনই সুন্দর সেই জায়্গা আর মনাস্ট্রি।

    এর পরে নেমে আসছি। এক জায়্গায় দেখলাম দুটো দোকান আছে। খিদেও পেয়েছে। আমার সঙ্গের জন বললেন যে এখানে গাড়িটা দাঁড় করাও, কিছু খেয়ে নিই। আমরা তিন প্লেট মোমো আর ওসন ভাই এক বাটি থুকপা অর্ডার করলো। এটা একজন বইনীর দোকান। তিনিই চালান তার এক বোনকে নিয়ে। এই বইনী দেখি স্পষ্ট বাংলা বলেন বাকিরা কিন্তু হিন্দি বলে।

    খাওয়ার মধ্যেই ওসন ভাই সেই বইনি আর একজন ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করাতে তার বললো যে রিষপ মোটে ১৫ মিনিটের রাস্তা এখান থেকে। বইনিও আমাকে আড়াল করে বলে দিলেন যে না যাওয়ার কোনও কারণ নেই। একটু খানি, আর গাড়ি যাচ্ছে। খাওয়ার পরে দেখি ওসন ভাই নিজেই রিষপের দিকে গাড়ি ঘোড়ালো। রিষপও একটা ছোট সুন্দর গ্রাম। কিছু লজ হোটেল রয়েছে। কিন্তু এইসব জায়্গায় খাওয়া দাওয়া নিয়ে অসুবিধে হতে পারে। তাই যাওয়ার আগে একটু জেনে নেবেন। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা আরো স্পষ্ট দেখা যায়।

    সেখান থেকে নেমে এসে গেলাম ডেলোতে। বেলা পড়ে আসছে। ডেলোতে এসে দেখলাম এখানে প্যারাগ্লাইডিঙ্গ হয়। ঘোড়া চড়া যায়। পয়স দিয়ে ছবি তোলা যায়। ডেলোতেও একটা অসাধারণ সুন্দর হোতেল আছে, কিন্তু সেটা বুক করতে গেলে কোলকাতায় গোর্খাল্যান্ডের অফিসে যেতে হবে। ডেলোতে এসে এই প্রথম মনে হলো যে এখানকার লোকজন সুবিধের নয়, ধান্দাবাজ। ডেলো কালিম্পংএর সবথেকে উঁচু জায়্গা। এখান থেকে পাহার আরো ভালো, বড়, আর কাছে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু লোকজন প্রচুর।

    শুনেছিলাম এই ডেলো রিসর্টেই নাকি চীট ফান্ড মালিক আর তিনোর ইসেদের মিটিঙ্গ হয়েছিলো।
  • S | 194.167.***.*** | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৩০371551
  • মর্গান হাউসে ফিরে এসে মর্গান হাউসের চারপাশটাই একটু ঘুরে দেখলাম। নীচে একটা লাউন্জ রয়েছে। সেখানে দেখলাম অনেক সেলিব্রিটিদের হাতে লেখা সংশাপত্র। তাতে দেখলাম উত্তম কুমার আর সুপ্রিয়া দেবীরও একটা লেখা আছে। তাঁরা ছিলেন আমাদের ঘরেই। জ্জিও। নিজেকে উত্তম কুমার ভাববো?

    কয়েকটা কথা এখানে বলে দিই। এইযে এতো জায়্গায় আজকে ঘুড়লাম। কোথাও বেশি দাম নেয়্না। পাহাড়ী জায়্গা হলেও চিপস আর কোলড ড্রিন্কসের যা দাম হয় সেই দামই নেয়। আপনাকে টুরিস্ট দেখে কেউ বেশি দাম চায়্না। মোমো, থুকপা, ওয়াই ওয়াই সবেরই দাম খুব কম। এখানকার মোমোর তুলনা হয়্না।

    আরেকটা হলো শীতটা পড়ে ঠিক সন্ধ্যে হওয়ার পরে। আর থাকে রাত ১০ অবধি। তারপরে অনেকটা কমে আসে। সেটা খাওয়ার জন্য নাকি সত্যিই কমে যায়, নকি শরীর ঐ শীতে অভ্যস্থ্য হয়ে যায় সঠিক বলতে পারবোনা।

    মার্গান হাউসের তুলনা নেই। আরেকটু বড় হীটার আর আরেকটু ভালো গিজার দিলে কোনও অসুবিধেই হওয়ার কথা নয়। থাকতে গেলে এখানেই থাকবেন। আর এই ১ নম্বর ঘরটাতেই (এখন নাম্বার হয়েছে ১০১)। মর্গান হাউসের সবথেকে ভালো হলো এখানকার কর্মচারিরা। মনেই হয়্না এরা সরকারি চাকুরে। দেশ বিদেশের হোটেল কর্মচারিদের শেখা উচিত কি করে গেস্টদের টেক কেয়ার করতে হয়। এরা সৎ, কর্মঠ, হেল্পফুল, বিনয়ী, ততপর, বুদ্ধিমান আর কি চাই? আমাদের যেরকম করে রাখলো তাতে আমার মনে হচ্ছিলো যে এরা বোধয় আমাকে কোনও কেউকেটা ভেবেছে। হ্যা হ্যা।
  • S | 194.167.***.*** | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৪৪371552
  • ১ নম্বর ঘরের মহিমা বুঝলাম পরেরদিন সকালে। পর্দা সড়িয়ে দিতেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে আশে পাশের অনেকগুলো চুড়া সমেত। আজ আকাশ পরিষ্কার। এই কারণেই এসেছিলাম।

    এই দুদিন হোটেলেই ছিলাম। লনে বসে, টেরাসে রোদ পুহিয়ে কাটিয়ে দিলাম। শুধু চান বাথরুম করতে ঘরে যাচ্ছিলাম। ঐ টেরাসেই খাওয়ার দিয়ে যাচ্ছে। এরা ইন্ডিয়ান মেনুই ভালো বানায়। ঝাল আর নুন খুব দেয়। কম করে দিতে বললে তাই করবে।

    কালিম্পং বাজারে গেছিলাম। আচার, জ্যাম, জেলি, শাল, স্টোল, শীতবস্ত্র, লেবু এইসব কিনলাম। কি সুন্দর বাজার। ভাইব্র্যান্ট ইকনমি। প্রচুর লেন দেন হচ্ছে। এখানকার লোকেরা ভালো খেয়ে পড়ে স্টাইলে থাকে। সবকটি ছেলে মেয়েকে দেখলাম ভালো জামা কাপড় পরে আছে। সুন্দর জামা, জুতো, টুপি। দেখতেও ভালো এখানকার লোকেদের। তেমনি ভালো ব্যবহার।

    এক দোকানদারকে জিগাতে তিনি নিয়ে গেলেন গ্রামের দিকে একটা ছোট্ট ঘরে মোমো খাওয়াতে। একটা ছোট্ট বস্তির মতন বাড়ির সামনের দুটো ঘরে রেস্তোরা চলছে, আর পিছনের বেডরুমে মোমো তৈরী হচ্ছে। সঙ্গের ছেলেটি আর পাশে বসে থাকা স্কুলে পড়া লাজুক দুটো মেয়েও বললো যে অন্যান্য দিন এখানে বাইরে লাইন পড়ে, অর্ডার দিতে হয় আগে থেকে। প্রথমে একটা সুপ দিলো ফ্রিতে। আর তার সাথে মোমো। সঙ্গে বিশাল ঝাল একটা চাটনী। আমরা দু প্লেট করে খেলাম। বুঝলাম এইটাই এই এলাকার সবথেকে নামি মোমোর দোকান।

    আরেকদিন হেঁটে গেছিলাম দুরপীন দারা পাহাড়ের একদম উপরে একটা মনাস্ট্রিতে। সেটাও দেখার মতন মসাস্ট্রি। ছোটো, সুন্দর, ছিমছাম।
  • avi | 57.***.*** | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৬:০৬371553
  • দারুণ হচ্ছে।
  • pi | 57.15.***.*** | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৭:১০371554
  • বাঃ
  • dc | 116.203.***.*** | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৭:২৫371555
  • খুব ভাল্লেগেছে। ঘোরাঘুরির গল্প সবসময়েই পড়তে ভাল্লাগে।
  • dc | 116.203.***.*** | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৭:৪৪371556
  • S এর লেখাটা হয়ে গেলে আমার একটা ঘুরতে যাবার গল্প লিখব ভাবছি।
  • dd | 193.82.***.*** | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৮:২৫371557
  • ঈশেনেরও রয়েছে একটা ভ্রমনকাহিনী। খুবি রোমাঞ্চকর।

    কিন্তু খুঁজে পাওয়া মুষ্কিল।
  • S | 194.167.***.*** | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৯:৩৭371558
  • না তেমন খুবেকটা বেশি লেখার নেই।

    গুরুঙ্গের উপরে বেশিরভাগ লোকই চটে আছে। ফেরার দিন যে নতুন ড্রাইভারকে পেয়েছিলাম (তিনি সবজান্তা - সিরিয়ার যুদ্ধ নিয়েও আমার সাথে আলোচনা করলেন) তিনিই বললেন যে এই মুহুর্তে ২০% লোকের সাপোর্ট আছে গুরুঙ্গের। তাঁর মতে গুরুঙ্গ প্রচুর পয়সা খেয়েছে, তাই এখন অডিট হতে দেখলেই ঝামেলা বাধাচ্ছে, বন্ধ ডাকছে। আগেরবার ১০৭ দিনের বন্ধের পরে যেদিন খুললো সেদিন সেই ড্রাইভারের কাছে মোটে ৫০ টাকা পরে আছে। সাধারণ লোক খুব ভুগেছে শেষ বার। এরা সকলেই আলাদা রাজ্য চায় আলাদা জাতের হিসাবে। বাঙালীদের সাথে কোনও মিল নেই ওঁদের। সক্কলে দিদি আর মোদি - দুজনের উপরেই নাখুশ।

    রাস্তা ঘাটের উন্নতি এখনই করা উচিৎ। কাজ চলছে কিছু কিছু যায়্গায়। বিশেষ করে শিলিগুড়ি থেকে পাহাড়ে যাওয়ার রাস্তায়। কিন্তু কালিম্পংএর অবস্থা খুব খারাপ। রাস্তা ভেঙ্গে চুরে গেছে। লোকে পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকে কখন একটা গাড়ি এসে তুলে নিয়ে যাবে। পাবলিক ট্রান্সপোর্টের কোনও উপায়ই নেই। এখানকার রাস্তা ঘাটের উন্নতি করা এখনই দরকার। সেটার জন্য কেন্দ্রিয় ফান্ডও চাই। কারণ এই রাস্তা ব্যবহার করে সৈন্যবাহিনী। ডোকালাম থেকে কালিম্পংএর দুরত্ব দুঘন্টা মতন। এইখানেই বোধয় প্রথম বাঁধা পাবে চীনা সৈন্য যদি ডোকালাম দিয়ে ঢোকে। অতেব অনেক বেশি ইনভেস্টমেন্ট চাই স্ট্র্যাটেজিক কারণেই।

    কালিম্পং যাওয়ার আসল সময় হলো নভেম্বর আর এপ্রিল। নভেম্বরে খুব ভালো ভিউ পাওয়া যায়। এপ্রিলে খুব ভালো ফুল রডোডেনড্রন দেখা যায়। সেফুলের খুশবুতে নাকি পুরো পাহাড় মেতে থাকে। আর তখন লাভা থেকে একটু হেঁটে গেলে নেওরা ভ্যালি আর চাঙ্গি ওয়াটারফল যাওয়া যায়। সেখানে এক বছর আগেও বাঘ পাওয়া গেছে। একদল বরযাত্রি সেই পথ দিয়ে যেতে যেতে দেখে বাঘ পথের ধারে শুয়ে রোদ পোহাচ্ছে। আর দেখা যায় রেড পান্ডা।
  • শঙ্খ | 126.206.***.*** | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৬:৫৩371559
  • দারুন হচ্ছে।
  • aranya | 83.197.***.*** | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১০:১৮371560
  • ভাল লাগল
  • b | 24.139.***.*** | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২২:০৫371562
  • এত খুঁটিনাটি দেওয়া ভ্রমণ কাহিনী খুবই কম পড়েছি। দেশে বিদেশের প্রথম লাইনটা মনে করিয়ে দিলো, যেখানে লেখক শার্টের দাম অবধি মনে রেখেছিলেন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন