এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • কর কমানোর সুলুকসন্ধান- ১

    Swati
    অন্যান্য | ৩০ জুলাই ২০১৭ | ১৩০৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • swati | 69.9.***.*** | ৩০ জুলাই ২০১৭ ২৩:২৪368392
  • জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহান্ত। হায়রে কালিদাসের কাল তো আর নেই যে সবাই সারাক্ষণ ‘কস্‌চিত কান্তা বিরহগুরূণা’র রসে ডুবে থাকবে। অথবা শুধুই নতুন নতুন বর্ষামঙ্গল কাব্য রচনা করবে। আজকাল কবিদের জীবনেও তুচ্ছ বৈষয়িক কাজকর্ম থাকে। তার মধ্যে একটি আয়করের হিসেব দাখিল। ‘বাকী রাখা খাজনা, মোটে ভালো কাজ না’ – এতো সবাই জানেন। আর সেই খাজনা জমা দেওয়ার কাজটা শুরু হয়েছে অনেক আগেই। সেপ্টেম্বরে, ডিসেম্বরে, মার্চে তিন দফায় আগাম কর জমা দিতে হয়েছে। তারপরেও যে কর বাকী থাকল, তার হিসেবনিকেশ করে যা বাড়তি হল, সেটা জমা দিতে হবে সেলফ- অ্যাসেসমেনট ট্যাক্স হিসেবে। আর তারপর জমা দিতে হবে রিটার্ন।

    এই রিটার্ন জমা দেওয়া নিয়েই আজ সুমির দ্বারস্থ হয়েছে আনুস্কা। আনুস্কা সুমির প্রতিবেশী অনন্যা- অমিতের মেয়ে। ছোট্ট থেকেই এই মেয়েটিকে বড় হতে দেখেছে সুমি। আর এক অর্থে ওর আজকের সমস্যাটার পিছনে সুমির খানিকটা কালো হাত আছে। আসলে আনুস্কা আঠারো পুরেছে বছর দুয়েক হল। এখন স্কুলের গণ্ডী পেরিয়ে এসে বেসরকারী কলেজে ডাক্তারি পড়ছে। ওর কলেজের ফিস বাবদে বছরে মোটা টাকা গুণতে হয় অনন্যা- অমিতকে। সেই টাকাটা প্রথমে অমিতের নামে ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখা ছিল। সুদ বাবদ যা মিলছিল, তা অমিতের হাতে করযোগ্য হচ্ছিল। সুমির পরামর্শে সেই টাকাটা আনুস্কার অ্যাকাউন্‌টে পাঠিয়ে আনুস্কার নামে ফিক্সড ডিপোজিট করা হয়েছিল। ভারতীয় আয়কর আইনে, বছরে অনাত্মীয়দের থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া পঞ্চাশ হাজার টাকা অবধি আয়কর মুক্ত। কিন্তু আত্মীয়দের থেকে উপহার পেলে, যে কোন পরিমাণ টাকাই করমুক্ত। এই হিসেবে বাবা-মার থেকে পূর্ণ বয়স্ক সন্তান যে টাকা উপহার পাবে, তা তার হাতে করমুক্ত। যদিও সে টাকার থেকে যা আয় হবে, তা করের আওতায় পরবে। আনুস্কার যেহেতু কোন নিয়মিত আয় নেই, তাই তার আয় বলতে শুধু এই টাকার থেকে পাওয়া সুদ। এবার মোট আয় যতদিন না করযোগ্য আয়ের আওতায় না পৌছায়, ততদিন নিশ্চিন্ত। অমিতের কর-বাবদ দায়ভারও খানিকটা কমল। এমনকি আনুস্কার সুদের থেকে হওয়া আয় করযোগ্য আয়ের মাত্রা ছাড়ালেও ব্যাপারটা সামগ্রিক ভাবে লাভজনক। একটু দেখে নেওয়া যাক-

    ধরা যাক, আনুস্কার চার বছরের কলেজের ফিস ৩৬ লাখ টাকা। হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করার খরচ, বছরে দুবার বাড়ি আসার খরচ, বইপত্র সব মিলিয়ে আরও বছরে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। অর্থাৎ সর্বমোট চার বছরে খরচ ছেচল্লিশ লাখ টাকা।

    জমার পরিমাণ৪৬00000
    মেয়াদী জমার সুদের হার৬.৫%
    বার্ষিক সুদ (প্রায়)299000
    অমিতের হাতে করের পরিমাণ100752
    আনুস্কার হাতে করের পরিমাণ5047
    করের তফাতজনিত সঞ্চয়95705
    এই সুবিধাটি তখনই পাওয়া যাবে যখন সন্তান পূর্ণবয়স্ক অথচ তার তেমন আয় নেই বা আয় থাকলেও সে আয়করের নিচের দিকের স্ল্যাবে আছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানকে দেওয়া টাকায় কিন্তু এ সুবিধা নেই। কারণ সেখানে সাধারণতঃ সুদের আয় বাবা বা মার হাতে করযোগ্য। ট্রাস্ট বানিয়ে অফেরতযোগ্য ভাবে দিলে অবশ্য হয়, তবে প্রক্রিয়াটি জটিল।

    তবে যেহেতু আনুস্কার হাতে আসা সুদের পরিমাণ করযোগ্য, তাই ব্যাঙ্ক থেকে টিডিএস কেটেছে অনেক টাকা। সেই টাকা ফেরত পাওয়ার জন্যে এবার রিটার্ন জমা দেওয়া প্রয়োজন। অমিত আনুস্কাকে দায়িত্ব দিয়েছে নিজের রিটার্ন নিজে ভরার। অমিতের মতে এও অর্থনৈতিক স্বাধীনতার এক অত্যাবশ্যক অঙ্গ। অবশ্য আনুস্কাকে একটু লোভও দেখাতে হয়েছে। যে টাকাটা ফেরত পাওয়া যাবে, তার থেকে আনুস্কা নিজের পছন্দ মত মোবাইল কিনতে পারবে। সেই জন্য আজ আনুস্কা সুমির কাছে এসেছে। সুমির সাহায্যে আইটিআর-১ নামিয়ে তাতে দরকারী তথ্য পুরে পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ করতে বেশি সময় লাগলো না। শুধু নিজের আধার নম্বর, ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর, আইএফএসসি কোড আর ব্যাঙ্কের ইন্টারেস্ট সার্টিফিকেটটি লাগলো কাজে। ব্যস আনুস্কা ভারি খুশি! পছন্দের মোবাইল ফোনটি হাতে আসতে আর বেশি দেরী নেই।

    নিজে নিজে ইনকাম ট্যাক্সের রিটার্ন ভরা বিশেষ কঠিন কাজ না। নিজের প্রয়োজনমত আইটিআর ফর্ম টি নামিয়ে সঠিক তথ্য পুরণ করলেই হল। তবে প্রত্যেক বছর নতুন ফর্ম বেরোয়, তাই ঠিক অর্থ বর্ষের ফর্মটি নামান প্রয়োজন। আর বিভিন্ন করছাড়ের ধারা সম্বন্ধে একটু ওয়াকিবহাল হওয়া দরকার। আর ফর্মটি ভরার আগে জোগাড় করে নিতে হবে ফর্ম ১৬ এবং সারা বছরের যাবতীয় সঞ্চয়ের ও দানের হিসেব। যদি সেই সঙ্গে সারা বছরে কোন শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ড বিক্রি করা হয়ে থাকে তাহলে তার ক্যাপিটাল গেন সারটিফিকেট। এই নিয়ে লেগে পড়লেই হবে। তবে যে কোন তথ্য বা করের হিসেবের প্রয়োজনে incometaxindia.gov.in লিঙ্কটি দেখে নেওয়া উচিত।

    Disclaimer – মতামত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার থেকে বলা। ব্লগারের এ বিষয়ে কোন professional যোগ্যতা নেই।

    ( অন্তঃকথন - অনেকে জানেন, আমার বাংলায় personal finance বিষয়ে একটি ব্লগ আছে, https://elomelothoughts.wordpress.com ঠিকানায় । এটি সেখানে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি লেখা। )
  • | ৩১ জুলাই ২০১৭ ০৮:২৯368394
  • বাহ বাহ। ইন্টারেস্টিং।
    বাংলায় এই নিয়ে খুব একটা ব্লগ দেখি নি।
    ভাল্লাগলো
  • Du | 57.184.***.*** | ৩১ জুলাই ২০১৭ ০৯:০৮368395
  • ভালো সাইট তো ।
  • b | 135.2.***.*** | ৩১ জুলাই ২০১৭ ১০:৩৬368396
  • সিয়াচেনে সৈন্যরা দাঁড়িয়ে আছে আর আপনারা কর কম দিতে চান? ছিঃ।
  • dc | 132.174.***.*** | ৩১ জুলাই ২০১৭ ১১:১০368397
  • এ বছরের কর তো দেওয়া হয়েই গেল! চুপি চুপি সামনের বছর কর কমানোর কিছু উপায় বলুন (সিয়াচেনেরে সৈন্যরা যেন জানতে না পায়)
  • sm | 52.***.*** | ৩১ জুলাই ২০১৭ ১৪:০২368398
  • ভোর পেট নাও খাই,
    রাজকর দেওয়া চাই-
  • Arpan | 24.195.***.*** | ৩১ জুলাই ২০১৭ ১৪:৩২368399
  • পরের বছর তো বর্ধিত কর দিতে হতে পারে, ডোকলামেও এখন সেনারা দাঁড়িয়ে আছে।
  • Swati | 52.***.*** | ৩১ জুলাই ২০১৭ ২০:২৯368401
  • এসব শুনে তো সেই যুদ্ধু যুদ্ধু হুংকার মনে পড়ে গেল! শুধু তো দেখছি সমুদ্রের দিকটা ফাঁকা আছে, তবে কি একটা নৌকো কেনা উচিত? "চাচা আপন প্রাণ বাঁচা "তে কাজে লাগবে ....
  • Swati | 52.***.*** | ৩১ জুলাই ২০১৭ ২০:২৯368400
  • এসব শুনে তো সেই যুদ্ধু যুদ্ধু হুংকার মনে পড়ে গেল! শুধু তো দেখছি সমুদ্রের দিকটা ফাঁকা আছে, তবে কি একটা নৌকো কেনা উচিত? "চাচা আপন প্রাণ বাঁচা "তে কাজে লাগবে ....
  • swati | 52.***.*** | ৩১ জুলাই ২০১৭ ২০:৩১368393
  • Du, দ অনেক ধন্যবাদ
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন