এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পদবী , বদল এবং....যত্ত ঝামেলা

    swati
    অন্যান্য | ১৫ এপ্রিল ২০১৭ | ১২০৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • swati | 127.194.***.*** | ১৫ এপ্রিল ২০১৭ ২৩:০০366122
  • নরেন্দ্র মোদি এক মন্তব্য করেছেন.কাগজে পড়লাম, তিনি দাবী করেছেন, এখন থেকে আর মেয়েদের বিয়ের পরে পাসপোর্টে পদবী বদল বাধ্যতামূলক নয়. এবং যখারীতি তাই নিয়ে সোরগোল শুরু হয়েছে. একদল বলছেন এরকম কোন নিয়ম কোনকালেই ছিল না, তাহলে উনি আর নতুন কি বললেন? আর একদল এককাঠি এগিয়ে মোদিজি কে ভারতীয় মেয়েদের পরিত্রাতা হিসেবে দেখছে. .... যত সবার মতামত পরছি, কেমন যেন কোখাও মেয়ে হিসেবে একটা টান ধরছে. তাই একটু লিখতে ইচ্ছে হল.

    আমার পারিবারিক চৌহদ্দীতে যত মেয়ে চোখে পড়ে, সবাই বেশ স্বামীর পদবীতেই খুশি. তাই আমারও সেটাই হওয়া উচিত ছিল হয়তো. কিন্তু বাদ সাধলেন ড্যফনে দ্যু মারিয়ার. ক্লাস সেভেনে বা এইটে ঠিক মনে নেই, হাতে এসেছিল রেবেকা. গোটা বইটা পড়ে ওঁর চরিত্র গড়ে তোলা, লেখার মুন্সিয়ানা সব কিছুর উপরে মনে ধরল রেবেকার স্টাইলাইজ নাম লেখা. তারপর অনেক মকসো করে একটা কায়দা করে বেঁকিয়ে R লেখা রপ্ত করলাম. পদবীর প্রথম অক্ষর. তারপর তাই জুড়ে তৈরী হল একটি কায়দার সই. .... বিয়ের পরে যখন প্রথম পদবী বদলের কথা হল, আমার প্রথম আপত্তি হল এখানেই. সেই কিশোরীবেলার থেকে চেষ্টা করে করে এতদিনে যাকে আয়ত্ত্ব করেছি, তাকে এককথায় বাদ দিয়ে দিতে হবে? শুধু বিয়ে করছি বলে?

    না ক্ষোভ পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঠিক না। কারণ বেশ ভাল করে জানতাম , আমিও আমার বাবার পদবীই নিয়ে চলি, মোটেই মার টা ব্যবহার করি না. ... আর তাছাড়া পদবীর কোন একসময়ে হয়তো কোন যৌক্তিকতা ছিল, যখন পদবী মানুষের সামাজিক অবস্থান নির্নয় করতো. আজকে আর তার আর যৌক্তিকতা আমি তো দেখি না।

    তাই আমার আপত্তিটা একটু ভিন্ন ছিল। আমার যাবতীয় মাসলমেমরি এতদিনে যা তৈরী হয়েছে নিজের নাম একভাবে বলে, একভাবে সই করে, কানে শোনার যে অভ্যস্ত আরাম, তাকে শুধু আমাকেই ছাড়তে হবে কেন? বিয়ে করে তো কোন অপরাধ করি নি যে আমাকেই আমার কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে? উত্তরটা আজো খুঁজছি....

    প্রাকটিক্যাল যে সমস্যাটা অর্থাৎ বিবাহ নামক পদ্মপাতায় জল বিষয়টি, যিনি আজ আছেন তো কাল নাই সে ভাবনাটাও মুখে না বললেও মনের কোণে কি আর ছিল না? তবে অনেক কিছু মনে ভাহলেও মুখে বলতে নেই।

    ক্রমে ক্রমে আর একটু বয়সে ছোট মেয়েদের সঙ্গে যখন আলাপ হল, দেখলাম কলকাতা শহরে বিয়ের পরে পদবী না বদলানটা চালু হয়ে গেছে. কিন্তু কেমন যেন সন্দেহ হয়, সে শুধুই সমাজের উপরের দিকে. নীচের দিকে কি আজো সেটা সচল হয়েছে? তাহলে আজো গ্রামের দিকের সদ্য বিয়ে হওয়া তরুণীকে ( নাকি কিশোরীই বলব) নাম লিখতে বললে একবার লিখে ফেলে আবার জিভ কেটে পদবী পালটাতে হয় কেন?

    সত্যি কথা বলতে কি আমার অভিজ্ঞতায় বলে এই যে পদবী নিয়ে মাসল ফোলান এতে শাসনযন্ত্রের কোনই অংশ নেই, বিলকুল নেই. পুরোটাই সামাজিক. ... আর সমস্যা শুধু যে পারিবারিক বৃত্তে তা তো নয়. চাকরীর মত ফর্মাল . জায়গাতেও মানুষ নির্দিষ্ট আইনের অভাবে নিজের মত করে নিয়ম তৈরী করে নেয়. এবং সেই নিজস্ব interpretation ই যত গোল বাধায়।

    এই পটভূমিকাতেই মোদির এই কথাটা আমাকে আশান্বিত করেছে। মফস্বল শহরের কোন ছেলের বাবা হয়ত কাগজে খবরটা পড়ে গিন্নিকে ডেকে শোনাবেন, কি সব হচ্ছে যে আজকাল! ...তারপর ছেলের বিয়ে দিয়ে বৌ আনবেন ঘরে. বৌ যখন বিএ পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ করতে যাবে, তখন যদি মুখ ফুটে বলে ওঠে, আমি কিন্তু আগের পদবীই লিখব, তখন অন্তত তাকে নিচে কাঁটা উপরে কাঁটা দিয়ে পুঁতে দেবার হুকুম হবে না, সবাই "আজকালকার মেয়েদের যত নষ্টামো" বলে গজর গজর করেই ক্ষান্ত দেবেন. সরকারই তো লাই দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলছে ...তার জন্যেই তো এতটা বাড়তে পারে ওরা ...

    আইন , সে তো চিরকালই তামাশা মাত্র..
  • s | 60.158.***.*** | ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৬:০৪366123
  • বাহ। সুন্দর।
  • swati | 113.197.***.*** | ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ২৩:৫৬366124
  • ধন্যবাদ.
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন