এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • ছোটগল্পঃ মামার কীর্তি

    Sagarmay Mandal লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৮ মার্চ ২০২৫ | ৩২০ বার পঠিত
  • মামার কীর্তি
    সাগরময় মণ্ডল

    সুন্দরবন লাগোয়া প্রত্যন্ত গ্রামে বেড়ে ওঠা ভগীরথ রেলের চাকরি পেয়ে কোলকাতার হেডঅফিসে জয়েন করে। তারপর মাস তিনেকের একটা ট্রেনিং পর্ব চুকিয়ে পোস্টিং পেল বারানসীর রেল কারখানার অফিসে। অফিসটা  শহর থেকে অনেকটা দূরে। রেল কলোনির মধ্যে। চারিদিক পাঁচিল ঘেরা, সুন্দর করে সাজানো গোছানো কলোনি। চওড়া রাস্তার ধারে ছোটবড়, একতলা-দুতলা নানান টাইপের কোয়ার্টার। বাংলোও আছে অনেক। বাংলো এবং কোয়ার্টারগুলো সুন্দর পাতাবাহারি গাছ অথবা ছোট ছোট ফুলগাছের পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। সামনে বাগান করার জন্য ফাঁকা জায়গা। বাংলোর ক্ষেত্রে বাগানের জায়গা অনেক বড়। প্রতিটি বাগানে নানারকম মরশুমি ফুলের বাহারি সম্ভার। সে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। কলোনির ভিতরে আছে হাসপাতাল, সিনেমা হল, সুইমিং পুল, বাজার, স্কুল, এমন কি গলফ খেলার মাঠও। আর এ সবকে একসঙ্গে জুড়ে রেখেছে সদ্য নির্মিত কুচকুচে কালো রঙের মসৃণ পিচ রাস্তা। প্রথম নজরেই জায়গাটা ভগীরথের বেশ মনে ধরলো।

    মনে ধরলে কি হবে, চাকরিতে জয়েন করেই তো আর কোয়ার্টার পাওয়া যায় না। অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু তত দিন কোথাও থাকতে তো হবে। যেহেতু এটা রেল কলোনি, তাই প্রাইভেট বাড়িঘর নেই। সেগুলো সব শহরে। এই সমস্যার কথা ভগীরথ হেডঅফিসে বসেই শুনেছিল। সে সেখানকার সিনিয়র দাদাদের ধরে তাদের পরিচিত এক ভদ্রলোককে অনুরোধ  করেছিল যাতে তিনি ভগীরথের থাকার একটা ব্যবস্থা করে দেন। যত দিন  না সে কোয়ার্টার পাচ্ছে। ভদ্রলোক চেষ্টা-চরিত্র করে মিশ্রজির তিন কামরার কোয়ার্টারের একটা কামরা সাব-লেটে নিয়ে ভগীরথের থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। মিশ্রজি কোয়ার্টারে স্ত্রী আর এক কন্যাকে নিয়ে থাকেন। সবগুলো ঘর তার কাজে লাগে না, তাই রাজি হয়ে গেছেন। অনেকেই এরকম করেন। কোয়ার্টারটা অফিসের বেশ কাছেই।

    মিশ্রজির বাড়িতে বেশ কাটছে ভগীরথের। মিশ্রজির বাড়িতে ভাল-মন্দ কিছু রান্না হলে মিশ্রগিন্নি তা ভগীরথকে না দিয়ে খান না। ভগীরথও বিনিময়ে যেমন পারে করে। তবে সব থেকে যেটা উল্লেখযোগ্য তা হোল ভগীরথ মিশ্রজির মেয়ে সরিতাকে পড়া দেখিয়ে দেয়। সে এবার ইন্টার পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়েছে। এতে মিশ্রজির পরিবারের কাছে ভগীরথের কদর বেশ বেড়েছে। কারণ এই রেল কলোনিতে ভালো প্রাইভেট টিউটরের খুব অভাব। আর এ তো হাতে চাঁদ পাওয়া। ভাড়াটে নিজেই টিউটর। অফিস টাইমের আগে পরে ভগীরথ খুব একটা বাইরে বেরোয় না। পাড়া প্রতিবেশীদের খবর অনুসারে সে নাকি সরিতাকে পড়াতেই ব্যস্ত থাকে। হোম ওয়ার্ক করে দেওয়া, পড়া বুঝিয়ে দেওয়া সবই ভগীরথ করে দেয়। আর কি করে কে জানে।

    দিনে দিনে ভগীরথ আর সরিতাকে জড়িয়ে প্রথমে আড়ালে আবডালে, পরে প্রকাশ্যে নানারকম মুখরোচক গুজব ঘুরতে থাকে। কলোনিতে সবাই সবাইকে চেনে বলে গুজব ছড়াতে দেরি হয় না। গুজবটা একদিন অফিসেও এসে পৌছল। অফিসের বন্ধুরা ব্যাপারটা কি জানতে চাইলে ভগীরথ বলে
    - ছাড়তো, যত সব বাজে কথা। ওসব কথার কোন মুল্য নেই। সে ব্যাপারটাকে উড়িয়ে দেয়। বেশি চাপাচাপি করলে বলে, কারো কথায় তার কিছু যায় আসে না। কিন্তু কখনও গুজবটাকে সরাসরি অস্বীকারও করে না।

    দেখতে দেখতে দু বছর পার হয়ে গেল। এবার হেডঅফিসে ফিরে যেতে হবে। আরও কয়েকজনের অর্ডার এসেছিল এবং তারা অর্ডার অনুযায়ী বারানসী থেকে রিলিজ হয়ে চলেও যায়। গোল বাধে ভগীরথকে নিয়ে। মিশ্রজি ভগীরথের কয়েযকজন কলিগকে বোঝায় যে ভগীরথ আর তার মেয়েকে নিয়ে যে রটনা রটেছে, তাতে ভগীরথ চলে গেলে তার মেয়ের আর বিয়ে হবে না। তাই ভগীরথকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে আগে তাদের বিয়ে দিতে হবে। তারপর রিলিজ। একবার বারানসী থেকে চলে গেলে ভগীরথের আর নাগাল পাওয়া যাবে না। সব দিক বিবেচনা করে কলিগরা বলেন
    - ঠিক আছে আপনি ভগীরথকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করুন, আমরা দেখছি কি করে ওকে আরও কিছুদিন এখানে আটকে রাখা যায়। বিয়ের কথায় ভগীরথ তো বেঁকে বসেছে। তার ব্যক্তব্য মিশ্রজির মেয়ের সঙ্গে তার এমন কোন সম্পর্ক গড়ে ওঠে নি, যাতে তাকে বিয়ে করতে সে বাধ্য। তাকে রিলিজ না করা হলে সে আইনের সাহায্য নেবে। মিশ্রজিও নাছোর বান্দা। তিনি সেখানকার পুরনো লোক, অনেক তার জানাশোনা। ভগীরথের অফিসের অনেকেই তার খুব কাছের লোক। অনেক ধরাধরি করে ভগীরথের ট্রান্সফার কিছু দিনের জন্য আটকে গেল। মিশ্রজি আপ্রান চেষ্টা করতে থাকেন ভগীরথকে রাজি করানোর। কিন্তু কোন ফল হয় না। কলিগদেরকে দিয়ে বোঝান। তাও বিফলে যায়। বেশি চাপাচাপিতে ভগীরথ সরিতার সঙ্গে সম্পর্কের কথা আস্বীকার করে। এই রহস্যময় এবং তমসাছন্ন ব্যাপারটা কিছুলোক তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে। তারা আপন কল্পলোকে নিজের নিজের মত করে গল্প সাজিয়ে নিয়ে বিভোর হয়ে থাকে অনভিপ্রেত কুটকাচালিতে। কেউ কেউ ভগীরথকে উস্কানিও দেয়। বিরক্ত ভগীরথ মিশ্রাজির কোয়ার্টার ছেড়ে অন্য একটা মেসে উঠে গেছে। বলা যায় না কখন কি ঘটিয়ে দেয়। সাবধানের মার নেই।

    আরও দু মাস কেটে গেল। কোন সমাধান নেই। অফিসের বড়বাবুর চোখেও ঘুম নেই। একই অর্ডারের সবাই ট্রান্সফার হয়ে গেল, শুধু ভগীরথ ছাড়া। হেডঅফিস এবার তাকেই না ট্রান্সফার করে দেয়। তিনিও ভগীরথকে বলেছেন কেসটা তাড়াতাড়ি মিটিয়ে নিতে। ভগীরথও তাই চাই, কিন্তু তার হাতে কিছু নেই। সে হপ্তা খানেকের ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে গেল। সবাই ভাবল সে নিশ্চয় ব্যাপারটা নিয়ে বাড়িতে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফিরবে।

    ছুটি কাটিয়ে ভগীরথ যথা সময়ে অফিসে জয়েন করলো। তবে এবার সে একা আসে নি। সঙ্গে এসেছেন তার এক দূর সম্পর্কের মামা। তিনি এসে যদি কিছু একটা হিল্লে করতে পারেন এই আশায়। কথাবার্তায় বোঝা গেল মামার উপরে ভগীরথের অগাধ বিশ্বাস। সে অসাধ্য সাধন করতে পারে।

    মামা বারানসী এসে গোধুলিয়া মোড়ের কাছে একটা হোটেলে উঠেছেন। এসেই তিনি চাউর করে দিলেন যে তিনি ভাগ্নের বিয়ের ব্যবস্থা পাকা করতে এসেছেন। বিয়ে দিয়ে তিনি ভাগ্নেকে নিয়ে কোলকাতায় ফিরবেন। যারা ভগীরথ আর সরিতার রোমান্স নিতে ক্কল্পনার জগতে ভাসছিল তারা একটু হকচকিয়ে গেল। এটা কেমন হোল! যে ভগীরথ বিয়ে করবে না বলে ধনুকভাঙ্গা পণ করেছিল, মামার কথার জাদুকাঠির ছোঁয়ায় সে রাতারাতি মত পাল্টে ফেললো! তার মানে মিশ্রজি যেটা ভেবেছিলেন সেটাই ঠিক। তলায় তলায় দুজনের গভীর প্রেম ছিল। বাইরের লোকের কথা বাদ যাক। মিশ্রজিও খবরটা শুনে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তার গিন্নীর কানে কথাটা তুলতেই সে তো আনন্দের চোটে প্রায় কেঁদে ভাসিয়ে দিল। বজরংবলীর মন্দিরে ঘটা করে পুজো দেবে বলে মানতও করে ফেললো দুম করে। তবে সরিতার প্রতিক্রিয়া কিছু জানা যায় নি। সে আগেও চুপচাপ ছিল, এখনও তাই।

    খবরটা শোনার পরের দিন সকালে মিশ্রজি দৌড়লেন মামার হোটেলে। আলাপ করলেন। তারপর খুব বিনয় সহকারে মামাকে আমন্ত্রণ জানালেন তার রেলের কোয়ার্টারে। মামাও এককথায় রাজি হয়ে গেলেন। আর হবেন নাই বা কেন, তিনি তো এই জন্যই বারানসীতে এসেছেন। ঠিক হোল ওই দিন সন্ধ্যায় মামা মিশ্রজির বাসায় আসবেন। ভগীরথও সঙ্গে থাকবে। মিশ্রজি চাইলে তার পক্ষের লোকজনকে ডাকতে পারেন। সেখানেই বিয়ের কথাবার্তা পাকা করা হবে।

    সন্ধ্যাবেলা আটজন লোক নিয়ে বসলো বিয়ের কথাবার্তার আসর। ভগীরথের পক্ষে সে, মামা আর এক বন্ধু। মিশ্রজির পক্ষে মিশ্রজি, একজন আত্মীয়, একজন প্রতিবেশী আর দুজন ভগীরথের অফিস কলিগ। এই দুজনই বাঙালি এবং ভগীরথের ট্রান্সফার আটকানোর প্রধান কারিগর। আজ তাদের জেতার দিন, তারা  খুব খুশি। হাবভাবে সেটা স্পষ্ট জানান দিচ্ছে যে তারা না থাকলে মিশ্রজির মেয়ের বিয়েই হতো না। মিশ্রজি আপ্যায়নের জন্য সরবত, চা, নিমকি, সামসা, বালুসাই আর গুলাব-জামুনের আয়োজন করেছেন। শুরু হলো কথাবার্তা। মামাই সূত্রপাত করলেন। বললেন যে হিন্দি তার আসে না, তিনি যা বলার বাংলায় বলবেন। এতে ভুল বোঝাবুঝির আশঙ্কা থাকবে না। মিশ্রজিও মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়ে বললেন
    - কোই প্রবলেম নেহি। মুঝে বাঙ্গালা সমঝমে আতা হ্যাঁয়। বোলনা নেহি আতা। বাঙালি দাদালোগতো হ্যাঁয়, কোই প্রবলেম নেহি হোগা। আপ বোলিয়ে।
    - থাঙ্ক ইউ। আপনারা তো আমার ভাগ্নেকে সবাই চেনেন, জানেন। তাই তো?
    - জরুর। ভগীরথকো সব লোগ জানতে হ্যাঁয়। আপ চাহে তো মেরা লেড়কিকে সাথ বাত কর শকতে, উনকো ইহা বুলাকে দেখ ভি শকতে হ্যাঁয়। মিশ্রজি বললেন।
    - নেহি নেহি। উসকা কোই জরুরত নেহি। ভাগ্নে পছন্দ করে থাকলে সেটাই ফাইনাল। আরে বাবা, বিয়ের পর সংসার তো ওরাই করবে। নাকি? মামা বললেন।
    - তব তো বাঁতে আগে বারহ্না চাহিয়ে।
    বাকিরাও সায় দিলেন সেই ভালো, সেই ভালো বলে । শুভস্য শীঘ্রম। বললেন কলিগরা। তাদের আর ত্বর সইছে না। বিয়েটা কোনমতে দিয়ে দিতে পারলে তারা মিশ্রজি এবং কলোনির লোকদের কাছে হিরো হয়ে যাবে। এমনই মনোভাব।

    মামা এবার শুরু করলেন,
    - দেখুন, আপনার মেয়ে আমার ভাগ্নেকে ভালোবাসে কিনা আমি জানিনা। আপনারা জানতে পারেন। তবে ভাগ্নের সঙ্গে কথা বলে আমি যা বুঝেছি তাতে ওদের সম্পর্ক বিয়ে করার জায়গায় পৌঁছয় নি। তবে আপনারা যখন বলছেন, রিলিজ হতে দিচ্ছেন না, তখন বুঝতে হবে আপনারা চাইছেন ওদের বিয়েটা হোক।
    - হ্যাঁ, আমরা সবাই তাই চাই। বললেন মিশ্রজির পক্ষের লোকেরা। মামা আবার শুরু করলেন
    - আচ্ছা ঠিক আছে। আমাদেরও কোথাও না কোথাও ছেলের বিয়ে তো দিতে হবে। তা সেটা এখানে হলেই বা ক্ষতি কি? শুনেছি আপনার মেয়েও লেখা পড়াতে বেশ ভালো।
    - হ্যাঁ, হ্যাঁ। ও তো ইন্টার পাস দিয়া। আভি কালেজ মে থার্ড ইয়ার চল রহি হ্যায়। মিশ্রজি বললেন।
    - খুব ভালো কথা। ছেলের বাবা-মার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, আসলে ওনারাই আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন ছেলের বিয়ের কথা ফাইনাল করার জন্য। ওনাদের দুজনেরই শরীরের অবস্থা ভালো নয়। ভালো থাকলে তেনারাই এখানে আসতেন।
    - এখানে আসতে পারলে তো ভালোই হতো। ভগীরথের এক কলিগ বললেন।
    - ভালো আর হোল কোই? আমার জামাইবাবু, মানে ভগীরথের বাবা, কোমড়ের ব্যাথায় ঠিক মতো চলাফেরাও করতে পারে না। জমি-জমা যা আছে তাও দেখে উঠতে পারে না। ছেলে বাইরে চাকরি করছে। সাহায্য করার কেউ নেই। মায়েরও বাতের ব্যথা। এই ভালো তো এই খারাপ।
    - তাহলে তো ওনাদের খুব অসুবিধা বলুন। অন্য কলিগ বলে উঠলো।
    - হ্যাঁ, সেই জন্যই তো ওনারা তাড়াতাড়ি ছেলের বিয়ে দিয়ে ঘরে বৌ আনতে চান। তা না হলে ওনাদের দেখভাল করার কেউ নেই।
    - ইসকা মতলব শাদীকে বাদ মেরা লেড়কিকো গাঁও মে রহেনা পরেগা?
    - অবশ্যই। তা না হলে শ্বশুর শাশুড়ির সেবা করবে কে? সেই জন্যই তো ছেলের বিয়ে দেওয়া। এর মধ্যে অন্যায় কি আছে? বলুন আপনারা।

    কেউ কোন কথা বলে না। মামা সবার মুখের দিকে চেয়ে দেখে আবার বলতে শুরু করলেন,
    - আরও দুএকটা কথা পরিস্কার করে বলে নেওয়া দরকার। যাতে পরে যেন আবার কোন অপ্রীতিকর কোন প্রশ্ন না ওঠে। ভগীরথদের বাড়ি সুন্দরবন লাগোয়া একটি গ্রামে। গ্রামের রাস্তাঘাট ভালো নয়। ইলেক্ট্রিসিটির পোল বসানো আছে, কিন্তু লাইন প্রায় থাকে না বললেই চলে। বাড়িতে টয়লেট একটা আছে তবে তা না থাকার সামিল।
    - মানে?
    - মানে, সরকার থেকে সব বাড়িতেই পাতকুয়োর বেড় দিয়ে চেম্বার করে টয়লেট বানিয়ে দিয়েছে বটে, তবে সেটা ব্যবহার করার অযোগ্য।
    - ওটাকে বাদ দিয়ে একটা ভালো করে বানিয়ে নিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়।
    - সে বানানো তো যেতেই পারে। কিন্তু সমস্যা হোল ওই দক্ষিণরায়কে নিয়ে। সে যে রাত-বিরেতে কখন কোথায় উদয় হবে কেউ জানে না। তাকে নিয়েই যত ভয়।
    - দক্ষিণরায় কৌন হ্যাঁয়? কয়ি গুন্ডা-বদমাশ-মস্তান তো নেহি? ফুট কাটলেন মিশ্রজির প্রতিবেশী।
    মামা একটু হেসে নিয়ে বললেন
    - মস্তান! তা বলতে পারেন। তাকে না মেনে উপায় নেই। সকাল বিকেল তাকে স্মরণ করেই তো আমরা বেঁচে আছি।
    - প্রতিবাদ নেহি করতে আপলোগ? প্রতিবেশী ভদ্রলোক আবার বললেন।
    - প্রতিবাদ আর কে করবে? ওনাকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমাদেরকে পুজো-আর্চা পর্যন্ত করতে হয়।
    - এক গুন্ডা মস্তানকো আপ পূজা করতে হ্যাঁয়! কিউ? মিশ্রজির আত্মীয় জিজ্ঞেসা করলেন।
    - আমি জানতাম এই প্রশ্নগুলো আপনারা তুলবেন, আর তোলাটাও খুব স্বাভাবিক। তাই আমি খবরের কাগজের কিছু কাটিং সঙ্গে এনেছি। এগুলো দেখুন।
    এই কথাগুলো বলে মামাবাবু ব্যাগ থেকে কিছু পেপার কাটিং বের করে সবার হাতে হাতে দিলেন। সবাই উৎসাহ নিয়ে নিজের হাতেরটাতো পড়লই, পাশের লোকের হাতেরটাও পড়ে নিল। একজন বলে উঠলো
    - আরে এতো সব বাঘের ছবি। কোনটাতে বাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে, কোনটাতে গরু ছাগল টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আবার কোনটাতে মানুষ মেরে খাচ্ছে। এ দিয়ে কি হবে?
    মামাবাবু ঠাণ্ডা মাথায় বললেন,
    - এই হচ্ছে আমাদের দক্ষিণরায় । তার হাত থেকে বাঁচতে তার পুজো-আর্চা করা ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই। আপনারা যে রিপোর্ট গুলো পড়লেন, তা সব আমাদের এলাকার। আমাদের কত পরিচিত মানুষ জনকে যে বাঘে টেনে নিয়ে গেছে। গোয়াল ঘর থেকে ছাগল, বাছুরও টেনে নিয়ে চলে যায়। আর উঠোনের টয়লেটের কথা বলছিলেন না, ওখানেও তেনারা লুকিয়ে থাকেন। তাই ওগুলো তালা বন্ধ করে রাখা হয়। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে সকাল বিকেল মেয়েরা দল বেঁধে ফাঁকা মাঠেই যায়। যাতে করে দক্ষিণরায় আশেপাশে থাকলে নজরে পড়ে। ঝোপঝাড় থেকে লাফিয়ে আক্রমণ করতে না পারে।

    কথাগুলো শুনে মিশ্রজি ঘামতে শুরু করেছেন। এ তিনি কি করছেন? কোথায় তিনি তার মেয়ের বিয়ের সম্বন্ধ পাকা করতে যাচ্ছেন! না না, ওখানে বিয়ে হলে তার মেয়ে মারা পড়ে যাবে। তিনি নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে কিছু বলতে যাবেন এমন সময় পাশের ঘর থেকে একটা বাচ্চা ছেলে এসে মিশ্রজিকে খরর দিল যে তাকে ভিতরে ডাকছে। মিশ্রজি সবার কাছে অনুমতি নিয়ে ভিতরে গেলেন। বসার ঘরে তখন পিন-ড্রপ সাইলেন্স। সবাই একে অপরের মুখ চাওয়া-চাওয়ি করছেন। মামাবাবু একবার ভগীরথের মুখের দিকে চাইলেন। তার মুখ থমথম করছে। এবার মামাবাবু টেবিলের উপরে রাখা জলের গ্লাস থেকে ঢকঢক করে জল পান করে ‘ঠক’ করে গ্লাসটা টেবিলে রাখলেন। সেই ‘ঠক’ করে রাখার শব্দও যেন সকল মৌনতাকে সচকিত করে অন্তঃপুরের দেওয়ালে ধাক্কা খেল। ঘটনার অভিঘাতে সবাই এতটাই বিব্রত যে প্লেটের সাজানো খাবার খেতেও তারা ভুলে গেল। কিছুক্ষণ পড়ে মিশ্রজি আবার বসার ঘরে এলেন। তাকে দেখে খুব বিধ্বস্ত আর ম্রিয়মান দেখাচ্ছে। তিনি কোনমতে তার আগের জায়গায় ধপ করে বসে পড়ে মামাবাবুর দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন,
    - আপ বলতে হ্যাঁয় অগর শাদী হোগা তো, শাদীকে বাদ লেড়কী কো ওই সোন্দরবন কা পাশ গাঁওমে যা কর রহেনে পরেগা? দুশরা কোই সোচ নেহি?
    - আপনি ঠিক শুনেছেন। বিয়ের পর আপনার মেয়েকে ওই গ্রামেই থাকতে হবে। দ্বিতীয় কোন অপশন নেই। সে তো আবার শহরে থেকে মানুষ হয়েছে। সে কি ওই পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারবে? তার উপরে আবার ওই দক্ষিণরায়ের ভয়। স্থানীয় মেয়েরা জানে, কি ভাবে সতর্ক থাকতে হয়। কিন্ত আপনার মেয়ে তো কিছুই জানে না। জানি না ভবিষ্যতে কি আছে কপালে।
    - ওহি তো সোচ রহাহু। মালুম নেহি, মেরা লেড়কিকো ললাট মে কিয়া লিখা হ্যাঁয়। আপলোক বলিয়ে মুঝে কিয়া করনা চাহিয়ে? মিশ্রজি তার সঙ্গের লোকদের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বললেন। তার চোখে আশাভঙ্গের তীব্র যন্ত্রণা, জল হয়ে টলটল করছে। যে কোন সময় তা বাঁধ ভেঙে নীচে গরিয়ে পড়বে। তীরে এসে তরী ডোবার ভয়ে তিনি আতঙ্কিত। তিনি একটু সাহারা খুঁজছেন। কিন্তু না, তার পক্ষের লোকজনের কেউ সাহারা দিতে এগিয়ে এলো না। একজন মিনমিন করে বলল,
    - মিশ্রিজি, আপকা লেড়কী, আপকো হি ডিসিশন লেনা পরেগা। হামলোগ কুছ নেহি বল পায়েঙ্গে, কিউকি, ভবিষ্য মে থোরা গড়বড় হোগা তো, হাম মুশিবত মে ফাঁস জায়েঙ্গে। আপ বলে থে, হাম লেড়কাকো শাদীকে লিয়ে মানা লিয়া। আব যো করনা হ্যাঁয়, বোলনা হ্যাঁয় ও আপকো করনা, বোলনা পরেগা।  

    মিশ্রজির খড়কুটো ধরে বাঁচার শেষ সম্বলটুকুও এক ঝটকায় হাতের বাইরে চলে গেল। তার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেল। যাদের ভরসায় সে এতদিন লড়াই করে এলো, সেই সহযোদ্ধারা পাশ থেকে সরে দাঁড়ানোয় আসহায় আত্মসমর্পণ করা ছাড়া আর কোন উপায় রইল না। ছলছল চোখে তিনি মামাবাবুর হাত ধরে বললেন,
    - আপকো বহুত বহুত সুক্রিয়া জী, যো শাদীকে পহেলে আপ সবকুছ বাতা দিয়া। আগর বাদ মে পাতা চল যাতা তো হাম কুছ নেহি করপাতে। আপ আপনা ভাঞ্জেকো লে যাইয়ে, দুশরা কোই লেড়কিকে সাথ শাদী রচাইয়ে, হাম কুছ নেহি বলেঙ্গে। ম্যায় ভি দুশরা কোই লেড়কা ঢুঁর লুঙ্গা। অগর আচ্ছা লেড়কা নেহি মিলেগা তো ও কুঁওয়ারী রহে জায়েগি। তব ভি হাম এ শাদী নেহি দে পায়েঙ্গে।
    মিশ্রজি হাওহাও করে কাঁদতে লাগলেন। সবাই চুপচাপ ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

    রাস্তায় যেতে যেতে মামাবাবু ভগীরথকে ডেকে ফিস ফিস করে বললেন,
    - কি ভাগ্নে, কি বলেছিলাম। বিয়ে ভেঙে দেব বলে তোমার বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়েছি, বিয়ে ভেঙে দিলাম। আমি আমার কথা রেখেছি। কাল তাড়াতাড়ি অফিস থেকে রিলিজ অর্ডার নিয়ে নাও। আমরা রাতের ট্রেনে কোলকাতা ফিরবো। তারপর ঘরের ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে দিয়ে আমি বাড়ি যাবো।
    ভগীরথ কোন উত্তর করে না। নিশি পাওয়া মানুষের মতো সে মামাবাবুর পাশে পাশে হাঁটতে থাকে। কোথায় যাচ্ছে, কেন যাচ্ছে, কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। মামাবাবু হঠাৎ রাস্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে পরে ভগীরথের কাঁধ ধরে ঝাঁকুনি দেয়। ভগীরথ আঁতকে ওঠে।
    - এতো কথা বলছি, কোন উত্তর দিচ্ছ না যে।
    - না, মানে…
    - মানে মানে কি? এ্যাঁ..
    - মানে…
    ভগীরথের অন্যমনস্কতা এবং ভাবাতুর হয়ে ওঠা মামাবাবুর কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেললো। তিনি অনুমান করতে পারলেন কোথাও বড় ভুল হয়ে যাচ্ছে। তিনি ভগীরথকে জিজ্ঞাসা করলেন
    - ব্যাপারটা যা ঘটে গেল তা তোমার ভালো লাগছে না, না?
    - না।
    - সেটা বললেই তো হয়। দেখো, এই মেয়ের সঙ্গে তোমার বিয়ে যাতে না হয়, তার জন্য তোমার বাবা আমাকে পঁচিশ হাজার টাকা দেবে বলেছে। পাঁচ হাজার অলরেডি দিয়ে দিয়েছে যাতায়াত আর হোটেল খরচ বাবদ। বাকিটা বাড়ি ফিরলেই পেয়ে যাবো।
    - টাকাটা আমি যদি আপনাকে দিই?
    - তুমি? কেন দেবে?
    - মানে. যদি..
    - যদি বিয়েটা না ভেঙে জোড়া লাগিয়ে দিই। তাই তো?
    - আজ্ঞে।
    - দেখ ভগীরথ, তুমি বড্ড সেকেলে ছেলে। মনের কথা স্পষ্ট করে বলতে শেখনি। হ্যাঁ, আর একটা কথা। আমি কথা বলার ফাঁকে মেয়েটিকে দেখেছি। খুব সরল, সাধাসিধে মেয়ে। আমার স্থির বিশ্বাস, এ বিয়ে ভেঙে গেলে ও মেয়ে আর কাউকে বিয়ে করবে না। সারা জীবন তোমার জন্য কষ্ট পাবে। মিশ্রজিও ভীষণ ভদ্রলোক। খুব নিরীহ মানুষ। মেয়েঅন্ত প্রাণ। মেয়ের ইচ্ছের দাম দিতে তোমার বাড়ির বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজনও বোধ করেন নি। কারণ উনি তোমাকে চিনতেন। তুমি তার বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে পারোনি বা দাও নি, সেটা অন্য বিষয়। তবে বিয়ে হলে খারাপ হবে না। তোমরা সুখী হবে। পারলে বিয়ের পর এখানেই থেকে যাও। কি সুন্দর জায়গা! আমিও মাঝে মাঝে আসতে পারবো।
    - বাবাকে কি বলবেন?
    - ও তুমি আমার উপরে ছেড়ে দাও। সাত ঘাটের জল খাওয়া মানুষ আমি। চাইলে অন্যকেও চৌদ্দ ঘাটের জল খাওয়াতে পারি। ও নিয়ে ভেব না।
    - তাহলে যা ভালো বুঝবেন তাই করুন।
    - এই তো ভালো ছেলের মতো কথা। তুমি বন্ধুর সঙ্গে মেসে চলে যাও। তোমাকে আর ওদের বাসায় যেতে হবে না। আমি একাই যাচ্ছি। ও হো হো.. প্লেট ভর্তি গুলাব জামুন গুলো একটাও মুখে দেওয়া হয় নি। দেখিগে সব আবার ফেলে দিল কিনা।
    ভগীরথ পিছন ফিরে বলল
    - মামাবাবু, ওখানে গিয়ে আবার-
    না না, গুলাব জামুন ছাড়া মিশ্রজির কাছ থেকে আর কিছু চাইব না। আর হ্যাঁ, তুমি যে টাকাটা আমাকে দেব বললে ওটাও দিতে হবে না। ওটা দিয়ে তোমরা হানিমুনে যেও। পাগল ছেলে।
    মিশ্রজির বাড়ি ফেরত যাবার পথে মামাবাবুর মনটা গেয়ে উঠলো, লোকের ঘর ভেঙে ভেঙে মনটার উপর পাথর চাপা পড়ে গেছে। আজ সুযোগ যখন পেয়েছি, একটা ভালো কাজ করে পাথরটাকে সরিয়ে দিয়ে প্রানভরে নির্মল বাতাস বুকে ভরে নেব।

    সমাপ্ত
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Kajal | 2409:40e0:102b:99c2:8000::***:*** | ২৯ মার্চ ২০২৫ ০৭:১০541971
  • খুব সুন্দর 
  • Ranjan Roy | ২৯ মার্চ ২০২৫ ০৭:৪৬541972
  • একেবারে "ঠক"!
     
    আরও হোক।
  • প্রদীপ দাশগুপ্ত | 45.112.***.*** | ২৯ মার্চ ২০২৫ ১৬:২৫541977
  • ঝরঝরে লেখা অথচ বাঁধন একেবারে শক্তপোক্ত। খুব ভালো লাগল। আশা করি মিশ্রজী র মেয়ে বিয়ের পর সুখী হয়েছে।
  • sourav sinha | ২৯ মার্চ ২০২৫ ২৩:২১541985
  • ভালো লাগলো 
  • Mohan lal Chakraborty | 2405:201:8012:a04a:58c0:49d2:6872:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৫ ০৮:১৫541991
  • দারুন সুন্দর। খুব ভালো লাগলো।
  • উত্তম কুমার ভৌমিক। | 2409:4060:2112:61d5:75fa:1f90:38f5:***:*** | ৩০ মার্চ ২০২৫ ১২:৩৩541999
  • সাগর খুব ভালো লাগলো।
  • niranjan chakraborty | ০১ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৩৯542042
  • সুপ্রভাত।
    গল্প টা পড়েছি। খুব ভালো হয়েছে সন্দেহ নেই। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন