এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • ছোটগল্প - সরিতার ছাদ

    Suman Mukherjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৮১ বার পঠিত
  • সরিতার পাগুলো কার্নিশের শ্যাওলার মধ্যে কিছু খুঁজছিলো। পায়ের চাপে চেপ্টে গিয়ে ঘন সবুজ থেকে ফ্যাকাশে সবুজ হয়ে যাচ্ছিল শ্যাওলার স্তর। আর কার্নিশ খুঁজছিলো সরিতার ফ্রকের ভেতর শ্যাওলা-ধওলা আকাশ। কতক্ষন? অনেকক্ষন। যতক্ষণ ধরে ঠাম্মা ছাদে উঠতে দেখলেই সাবধান করতো আমাদের, ততক্ষণ। কার্নিশের আশে পাশে যেতে বারণ করতো, মাথা নাড়তো আর চাবির গোছাটা দুলতো। এখন যেমন সরিতার অস্থির পাদুটো। পায়ের ধাক্কায় লিন্টেল থেকে গোত্তা খেয়ে দুলে দুলে নিচে পড়লো একটা মরচে ধরা পেরেক। যেখানে পড়লো সেই রাস্তা থেকে ডান দিকে গেলে গলি। তার ভেতর কুন্ডুদের বাড়ির বড় গেটের সামনে আমাদের পাড়ার নতুন পাগলী। "রুম ঝুম ঝুম ঝুম, রুম ঝুম ঝুম, শুকনো পাতার নূপুর পায়ে..." গাইতে গাইতে দুলছিলো। ওদিকে দুপুরের হাওয়া জলবসন্ত নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে পাগলীকে নাচতে দেখে থমকে গেলো। পথ ভুলে উড়ে এলো আমাদের ছাদের দিকে। সেখানে সরিতা পাখি হওয়ার অনায়াস চেষ্টা করছে এখন। ওর হাতের লোম, শরীরের ওজন, পায়ের নখ সব পরীক্ষা করলো হাওয়া। তারপর ফেল করিয়ে দিয়ে ওকে ইগনোর করে চলে গেলো চার্চের বড় নিম গাছের দিকে। একটা চিকুর রেখা তৈরী হলো সরিতার বিনুনি থেকে নিমগাছে কাকের সারি পর্যন্ত। রেখাটা মিলিয়ে যেতেই সরিতা ছাদের পরিধির একটা বাহু শেষ করে দ্বিতীয় বাহুর দিকে পা বাড়ালো। আর আমি সিঁড়ি ঘরের দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে সিঁটিয়ে রইলাম। মনে হচ্ছিল যেন 'নেমে আয়' বলে ডাকতে গেলে যে কম্পাঙ্কের সৃষ্টি হবে তাতে সরিতার পা টলে যাবার মারাত্মক সম্ভাবনা।

    এসব এডভেঞ্চারের কথা জানতে পারলে মা'র বকুনি বেশি মারাত্মক নাকি সরিতার মাথা থেঁতলে যাওয়াটা! আপাতত ঠিক করলাম ধমকানিটাই ভয়ানক। সরিতা আত্মহত্যা করতে পারে আবার নাও পারে। ওটা আমার নাগালের বাইরে। দেশ ছেড়ে, বাপ্-মা ছেড়ে এতদূরে চলে আসাটা দুঃখের, সেটা 'ছুটি-ছুটি'-তে 'বাড়ি থেকে পালিয়ে' দেখে জেনেছিলাম। যেরকম প্রতিদিন কত গাড়ি আমাদের বাড়ির লাগোয়া পেট্রল পাম্পে আসে আর পালিয়ে যায়। দুঃখ থেকে সুখের দিকে যায়!

    সরিতার দিকে চোখ গেল গাড়ির হর্ন শুনে। কয়েকটা চড়াই উড়ে গেলো পাম্পের অগ্নিকোণে দাঁড়িয়ে থাকা শিরীষ গাছ থেকে। সরিতার রোমাঞ্চক ছবির ব্যাকড্রপ তৈরি হল।

    মনে পড়ল ঐ শিরীষ গাছটাও আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলো। আগুন লাগিয়েছিল ডালে। বজ্রপাত হয়েছিল। কিন্তু শেষমেষ কাঠবেড়ালী, শালিক, চড়াই সংসার সামলে শিরীষ এখন মৃত্যুবিপ্রতীপ। পেরেছিলো বড়জেঠু, ফুসফুসের কোষগুলোর অবাধ্য মিউটেশন মেনে নিতে পারেনি। রাগী ছিল, একগুঁয়ে ছিল। কেমো দিয়ে বিদ্রোহ দমন করতে না পেরে ফুসফুসে, মস্তিষ্কে অক্সিজেন পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিলো।

    শিরীষশীর্ষ থেকে যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো কংক্রিটস্থানে অক্সিজেন পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল, জানতাম। পৌঁছেও গিয়েছিলো সেদিন বড়জেঠুর কাছে। কিন্তু দড়ির চাপে আলজিভের থেকে বেশি এগোতে পারেনি। শিরীষও কষ্ট পেয়েছিল।

    'এই মেয়ে, নাম। যা ভেতরে যা। কার্নিশে উঠেছে? সাহস কত!' শুনে নেমে পড়লো সরিতা। আকস্মিক ক্লাইম্যাক্স। আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। আওয়াজটা শতু কাকার, শতপতি ঘোষ। বাড়ির পাশের পাম্পে তেল দেয়। লম্বা মুখ, ছোট গোঁফ। আমার গজায়নি তখন, অনেক দেরি। এডভেঞ্চার বলতে, ফ্রানসিস, টিনটিন, কাকাবাবু এসব বুঝতাম। আর চোখের সামনে এডভেঞ্চার দেখলাম সরিতার সান্নিধ্যে। ধমক খেয়ে ওর চোখে মুখে রোদ ছাড়াও অন্য কিছু ছিলো। এখন হলে অনায়াসেই 'সোয়েগার' বলে দেওয়া চলতো সেই সুপক্ক অভিব্যক্তিকে।
    -

    পড়ে পড়ে মার খাচ্ছিল ছোটকা দোকানের সামনে, চেন দিয়ে মারছিলো, চাপ চাপ রক্ত, এধার ওধার। জানলা দিয়ে দেখা যাচ্ছিলো। একটা দুটো বুড়ির চুল, শিমূল গাছ থেকে নেমে বার্ধক্য-উড়ানে যাচ্ছিলো জানলার বাইরে, সরিতা হাত বাড়িয়ে একটাকে ধরে ফেললো আরেকটা গেল ছাদের কার্নিশের দিকে। কার্নিশের মুকুট মত অংশের চূড়া থেকে সোজা নিচে মাটির দিকে নেমে গেলে যে জায়গাটা, ঠিক সেখানেই পড়ে ছিল ছোটকা। ছাত্র পরিষদের ছেলেরা ঘিরে ছিল, সংঘবদ্ধ আক্রমণ, চেন-হকি চালানোর অধিকার, হিংসার প্রতি গভীর প্রেম নিয়ে ঘিরে ছিল। কলেজের ভোটে হাত গলানোর সাজা দিচ্ছিলো। মজা চাখাচ্ছিলো।

    ওরা চলে যাবার পর মা ছুটে গিয়ে নিয়ে এল ছোটকাকে ধরে ধরে। মা, ছিল এই ঘরের বীরপুরুষ। এখন আর্থারাইটিশ-নারী। সরিতা আর মা মিলে রক্তের মুখোমুখি হল। দুজন নারীর শ্যেনদৃষ্টির সামনে কোয়াগুলেশন শুরু হয়ে গেল। ঠাম্মার কান্নাও। আমরা জানলা ছেড়ে নড়লাম না। সরিতা এখন ব্যস্ত। এরপরের বুড়ির চুলটা তাই আমাকেই ধরতে হবে।

    এই ঘটনার পর বেশকিছুদিন ছাদের দরজা বন্ধ ছিল। তারপর সরস্বতী পুজোর মওকায় খুলে গেলো দরজাটা, ঠাম্মা খুললো কি! হয়তোবা..

    "এগুলা কি রোকম গান?" মিচেল হোস্টেলের সরস্বতী পুজোর রবীন্দ্রসংগীত সম্পর্কে সরিতার মন্তব্য। "তুমাদের গানগুলা শুনলে নিঁদ আসে"। আমি বিগ বাবলের ৱ্যাপার খুলে সাবধানে ভেতরের কমিক স্ট্রিপ বার করতে করতে ভাবছিলাম কবিগুরুর অপমানের বদলা নেওয়া যাবে কি! যাচ্ছিলো না। আমারও মাঝে মাঝে ওরকমই লাগে। "হিন্দি গান চালায় না ইখানে?" "চালায়, চালায়, সন্ধ্যের দিকে চালায়, এখন সকালে বাংলা গান চালাতে হয়"। সূর্য ডোবা আর ওঠার সাথে আমাদের বারোয়ারি পুজোর গানের ভাষা পরিবর্তনের ডায়ালেক্ট সরিতাকে বোঝানো আমার বস্ কি বাত নহি। তখনও "উলালা উলালা উলালা রে.. " এসে বসেনি "পাগলা হাওয়ার" আগে। বিষাদে সরিতা তাই সাজন সিনেমার মাধুরী দীক্ষিত হয়ে গেল, আর রবিঠাকুর.. সঞ্জয় দত্ত।

    আমি নেমে এলাম। স্কুলে ঠাকুর দেখতে যেতে হবে। সরিতা রয়ে গেল। সূর্যটাকে নামিয়ে হিন্দি গানের মজলিশ তৈরী করার অভিপ্রায়।
    -
    বাবার হাত ওপরে উঠছিলো আর নেমে আসছিলো সরিতার পিঠের দিকে। ওর ফ্রকের পেছনে কাঁধের কাছে ইউ কাট। সেখানে ফুটকি ফুটকি ফুটে আছে ঘামের অসংখ্য সন্তান সন্ততি। সরিতা উচ্চারণ করে উঠতে পারছিলো না যন্ত্রণার শব্দগুলো। বাবা সেদিন ভুলে গিয়েছিল শান্তশিষ্ট থাকার ব্যকরণ! আমি সিঁড়ি ঘরে লুকিয়ে এই দৃশ্যমালা শেষ হবার অপেক্ষা করছিলাম। ফুঁপিয়ে কান্না শুনতে পেয়ে নেমে এলাম। দিদি, সরিতাকে ভোলাতে গেল, সরিতা ছিটকে সরে গেল। তারপর ছাদের দিকে ছুটলো চোখ মুছতে মুছতে। পিঠের লাল দাগ থেকে ফুটে উঠছিল ডানার অবয়ব। আমার আর দিদির কারোর সাহস হলো না সেই ফিনিক্স পাখির দিকে যেতে।

    দিদি কানে ফিসফিসিয়ে বললো "মা নাটকের রিহার্সালে গেছে সঞ্জয় কাকুর সাথে। সেটা দেখে সরিতা কিসব বলছিলো, বাবা শুনতে পেয়ে ভীষণ রেগে গিয়ে মারতে লাগলো।"

    সেইসব দিনগুলোয় মা'র রিহার্সাল লেগে থাকতো প্রায়দিনই । রুটি তরকারি করে, গা ধুয়ে, রেডি হয়ে বেরোনো। কেউ না কেউ নিতে আসতো বাইকে করে মাকে। রিহার্সালের জন্য। সঞ্জয় কাকুই বেশি। রবীন্দ্রভবনে স্টেজ রিহার্সাল হয়ে গেলে মঞ্চস্থ হত। টিকিট বিক্রি হত পুশ করে। ক্লাবের সদস্য-কলাকুশলীদের দায়িত্বে দশটা-পঞ্চাশটা টিকিট। আমি, দিদি, বাবা যেতাম মায়ের পাস-এ, মায়ের পাশে। গ্রিন রুম থেকে মায়ের সিন্ অনুযায়ী কস্টিউম এগিয়ে দেওয়া আর তার ফাঁকে ফাঁকে নাটক দেখার ।

    সরিতা এসব দেখেছিল অন্য চোখে। নদীর ভেতর থেকে মানুষকে যেমন ঘোলা দেখায়, তেমন করে। খিদের রাতে ওর বাবার সারা শরীরে মদের গন্ধ যেমন করে নাকে ঠোক্কর দিত, তেমন করে। মালিকের বাড়ি থেকে কাজ করে ফিরে মা যেমন করে গালাগাল দিত, তেমন করে। আশিকি দেখে এসে কুমার সিং যেমন করে বিচি চুলকোতে চুলকোতে সিটি দিত তেমন চোখেই দেখেছিল সরিতা।

    মা ফিরে এলে তুমুল ঝগড়া হলো বাবার সাথে। সরিতা জানলো না যে ওর দেখাটা মার খাবার সময় পিঠ থেকে হাতের যোগাযোগে বাবার চোখে পৌঁছে গেছে। বাবা দেখলো মা'র ফিরে আসা। বাবা দেখলো সন্ধ্যের অলুক্ষনে বেগুনী রং। বাবা দেখলো সঞ্জয় কাকুর বাইক। বাবা দেখলো রবীন্দ্রভবনের ব্যাভিচার। রুটি তরকারি পড়ে পড়ে রাতের মত বাসী হয়ে গেল। আমি দিদি ঘুমিয়ে পড়লাম। সরিতা ছাদ থেকে নেমে এসে সঅব রুটি তরকারি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
    -

    হড়াঙ করে টিনের বাক্সটা খুলে ফেলতেই দেখা গেলো ভেতরে সরিতার নিজের বাড়ি থেকে আনা দুটো ফ্রক। একটা কেরোসিন রঙের আরেকটা রোদে পোড়া জবা ফুল। দিদির পুরোনো জামা আরো দুটো, ববি প্রিন্ট। সব রাখা আছে গুছিয়ে। বাটি সাবানের প্রান্তিক গন্ধমাখা। সেসব সরিয়ে টাকার খোঁজ শুরু হল। মাস ফুরোলে যেসব টাকা সরিতার হাতে দিত মা।

    ঘুম থেকে উঠে বাবা দেখেছিল সরিতার বিছানায় সরিতা নেই। খয়েরি রং করা কাঠের দরজার খিল তার ঠেকনা ছেড়ে দেওয়াল ধরে ঝুলে আছে। বাবা উঠোনে, বাগানে খুঁজে পায়নি সরিতাকে। দিদি উঠে পড়েছিল। আমি শুনতে পেয়ে বিছানা ছেড়ে ছাদে ছুটলাম। পেলাম না। ততক্ষনে পেটের ভেতর নড়ে উঠলো সকালের বেগ। নেমে এলাম ছুটে। বাথরুমে ঢুকে বসে বসেই শুনতে পাচ্ছিলাম। ছোটঘরের ভেতর থেকে মা চিৎকার করছে, ওপর থেকে কাকুরা ছুটে নামছে, বাবার সাথে কিসব কথা বলছে, আবার ওপরে উঠছে। 'পুলিশ', 'কেস', 'চিঠি' এসব শব্দগুলোও ঝুলতে লাগলো খয়েরি-কালো ঝুলের মত। মাকড়সার আশেপাশে নড়তে লাগলো সকালের হাওয়ায়।

    বাথরুমের সিমেন্ট ওঠা দেওয়ালে অগুনতি অবয়ব। তারই মধ্যে ছাদের কার্নিশের ডিজাইন ফুটে আছে টুকরো টুকরো আলোয়। সব সারা করে ছুটলাম। প্রথমে আটটা-আটটা ষোলোটা তারপর হলঘরের গলি পেরিয়ে নটা-নটা আঠেরোটা সিঁড়ি পেরিয়ে ছাদের আলোয় চোখে ধাঁধা লেগে গেলো।

    দেখলাম কার্নিশ, দেখলাম সানসেট। দৃষ্টি গড়িয়ে গড়িয়ে ছাদের গা বেয়ে নিচে রাস্তায় নেমে যেতে লাগলো বারবার। কোথাও নেই। মা বাবা সেজকাকুকে দেখলাম স্কুটার চেপে কোথায় গেলো। ওদের ধাওয়া করে শেষপর্যন্ত চোখ যতদূর গেলো ততদূরে নিম গাছটার গোড়া ঝিমোচ্ছিলো। সকালে কাকেদের আসরে বিরক্ত হচ্ছিলো খতরনাক। তাতে কাকদের কি! ওদের মধ্যে একটা কাক আমাদের ছাদের দিকে তাকিয়ে আছে, স্থির। তার মাথার দিকে কালো পালকগুলো জড়ো হয়ে রয়েছে অদ্ভুতভাবে। যেমন করে থাকতো সরিতার মাথার বিনুনি। কালো রঙের পালক। তার ওপরে, অনেক ওপরে সাদা মেঘ। সরিতার ফ্রকের ভেতর থেকে, শ্যাওলা ধরা আকাশ থেকে নেমে আসা মেঘ। কার্নিশের পেডেস্টাল থেকে সরিতার উড়তে চাওয়ার সাক্ষী মেঘ। তারাই ঘুরে ফিরে ভাসছে ওদিকে। গল্প বানাচ্ছে, শোনাচ্ছে নিজেদের মধ্যে। সরিতার গল্প!
    - -
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 172.58.***.*** | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:১৭540963
  • অত্যন্ত ভালো লাগলো এই লেখাটা। কিছু লাইন -- "কতক্ষন? অনেকক্ষন। যতক্ষণ ধরে ঠাম্মা ছাদে উঠতে দেখলেই সাবধান করতো আমাদের, ততক্ষণ।"
     
    "কিন্তু দড়ির চাপে আলজিভের থেকে বেশি এগোতে পারেনি। শিরীষও কষ্ট পেয়েছিল।"
     
    "সরিতা এসব দেখেছিল অন্য চোখে। নদীর ভেতর থেকে মানুষকে যেমন ঘোলা দেখায়, তেমন করে।" -- ফিরে ফিরে পড়তে হয়। ডিস্ট্র্যাকশনের দুনিয়ার মধ্যে এগুলো বসে ভাবতে বাধ্য করে।
     
    এই স্তবকটা -- "ওদের মধ্যে একটা কাক আমাদের ছাদের দিকে তাকিয়ে আছে, স্থির। তার মাথার দিকে কালো পালকগুলো জড়ো হয়ে রয়েছে অদ্ভুতভাবে। যেমন করে থাকতো সরিতার মাথার বিনুনি। কালো রঙের পালক। তার ওপরে, অনেক ওপরে সাদা মেঘ।" -- পড়ে  'গ্রিফ ইজ দ্য থিং উইথ ফেদার্স' মনে পড়লো, ম্যাক্স পোর্টারের।
    সুমন, আপনার আরো লেখা পড়তে চাই।
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:১০540964
  • মাঝে মাঝে একটি-দুটি গল্পের দেখা মেলে যা একবার পড়ে আবার পড়ি আমি, এবার শেষ থেকে শুরু করে‌। এ গল্প এইভাবে পড়লাম। আরও আসুক এমন গল্প।
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০০:১১540965
  • বড়ো ভালো লাগল। বড়ো ভালো। এরকম গল্প বহুদিন পর একটা দুটো পড়ি। পরিবেশটা যেন ছুঁয়ে দেখলাম, বাসি রুটির বিষণ্নতা এসে আমাকেও গ্রাস করল, শিরীষ গাছের পাতার স্তব্ধতা যেন এসে ধাক্কা দিল। আরো লিখতে থাকুন।
     
    আরেকটা কথা বলার, কেকের মতো নিবিষ্ট পাঠক পাওয়াও গুরুর সৌভাগ্য, এরকম ভাবে স্তবক গুলোকে তুলে ধরেন, অন্তর্লীন কথাকে সামনে নিয়ে আসেন, অনবদ্য। একটা বুক রিভিউ সিরিজ লিখুন কেকে, এ আমার আবদার। 
  • Suman Mukherjee | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৫০540969
  • অত্যন্ত পছন্দের kk, অমিতাভ বাবু, রমিত বাবু আপনাদের মন্তব্য পড়ে অসাধারণ অনুভূতি হলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাদের।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন