এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • সাধন চট্টোপাধ্যায়ের 'কোনো একদিন' : কথাবৃত্তের নতুন সমীক্ষা

    PURUSATTAM SINGHA লেখকের গ্রাহক হোন
    ২০ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৮০ বার পঠিত
  • ‘কোনো একদিন’ : কথাবৃত্তের নতুন সমীক্ষা
    পুরুষোত্তম সিংহ

    বাংলা উপন্যাসের মোড় ঘুরিয়েছেন সাধন চট্টোপাধ্যায় ‘কোনো একদিন’ (২০২০) আখ্যানে। শুধু এ উপন্যাস নয় সাধন চট্টোপাধ্যায়ের সমস্ত উপন্যাসই সারাজীবনের পরীক্ষা নিরীক্ষার ফসল। খুব সচেতনভাবে বাংলা উপন্যাসের বলিষ্ট পাঠক হিসেবে তিনি উপন্যাসের জমি নির্মাণে পদার্পণ করেন। অস্তিত্বের বহু সংরূপময় সত্তাকে নির্ভেজাল আড্ডায় বসিয়ে দিয়ে জীবনের গভীর তলদেশের সংবাদ খুঁজতে অগ্রসর হয়েছেন ‘কোনো একদিন’ উপন্যাসে। আমিত্বের দ্বিরালাপে ছদ্মময় জীবনের সংযত-অসংযত পাঠের বিন্যস্ত-অবিন্যস্ত সজ্জা কেমন হতে পারে, ব্যক্তির সংরূপময় সত্তা ব্যক্তিকে কীভাবে আক্রমণ করে, দংশন করে, সঙ্গী হয়ে পথ চালায় তার বহুস্তরীয় ভাষ্য ‘কোনো একদিন’ আখ্যান। ইলিয়াসের ‘চিলেকোঠার সেপাই’ উপন্যাসে ওসমানের দুই সত্তা। রমানাথ রায়ের ‘আমি রমানাথ নই’ উপন্যাসে সত্তার স্বীকার-অস্বীকারের মধ্য দিয়ে খণ্ড সত্তা ও অখণ্ড সত্তার জটিল ভাষ্য নির্মিত হয়ে চলে। আলোচ্য উপন্যাসের গঠন সম্পর্কে লেখক নিজেই জানিয়েছেন—
    “এইভাবে ঠিক ঠিক এই ভঙ্গিতে সংলাপ গুছিয়ে যদি এগোই? শুরুটা এভাবে হলে কেমন হয়? নিজের সঙ্গে নিজের নিজেরই কথা? কিন্তু নিজ বলতে কোনো মানুষই তো আস্ত বিচ্ছিন্ন একটা ‘নিজ’ নয়। হরেক ভাবনার মানুষ, যুক্তি সাজিয়ে একজনের সত্তা হয়ে ভেতরে ঢুকে বসে আছে। একের মধ্যে বহু। বহু সত্তা, উপসত্তা, ঊর্ধতন বংশের সত্তা—সব কিছু মিলেমিশে, একটা মানুষের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকে। গোপনে, মাঝে-মধ্যে জেগে ওঠে। টের পাওয়া দুষ্কর। যেমন মোহনার জলে নদীর উৎসসত্তা গভীরে গুলে থাকে।”
    (কোনো একদিন, আজকাল, প্রথম প্রকাশ, ২০২০, পৃ. ০৯)

    আখ্যান চলেছে বৈঠকি রীতিতে। অবসরপ্রাপ্ত জটাশংকর চক্রবর্তীর নিকট আত্মীয় বন্ধু সুখেন, মুকুল। তাঁদের সঙ্গে জীবনের নানা ছকের গল্প করতে করতে আখ্যান এগিয়ে গেছে। মধ্যবিত্ত জীবন যেন কথাসাগর। হরেকরকম চাহনি, নজরদারি, চাহিদা, জটিলতা, মানসিক অস্থিরতা, প্রবণতা নিয়ে এক কথাসমুদ্র। সেই ভুবন ছেঁচে লেখক কিছু বাক্যালাপ সাজিয়ে দেন। জীবনের চলমানতার মধ্যে একাধিক ঢেউ এনে কথার পিঠে কথা বুনে সমাজ-রাজনীতি-সময়ের অশনি সংকেত ও সভ্যতার অগ্রগতির ভালোমন্দ বুনে বর্তমানকে উদ্ভাসিত করে চলেন।

    এই ন্যারেটিভ জটাশংকর কেন্দ্রিক। আসলে জটাশংকরের বিবিধ সত্তাকেন্দ্রিক। চেতন-অবচেতন-অর্ধচেতন, দৃশ্যজাল, ভাবমন্থন, অতীত-বর্তমানের পার্থক্য, সেতুবন্ধন মিলে জটাশংকর কথাজাল নির্মাণ করে চলেন। কথাবৃত্ত গড়ে তোলার এ এক নতুন ফ্রেম। বাস্তবের সমূহ সত্যই তার নিয়ন্ত্রক। একজন প্রৌঢ় কীভাবে জীবন অতিবাহিত করে, বাস্তবের বিবিধ সমস্যায় কীভাবে নাজেহাল হতে হয় এবং বাস্তবকে, বর্তমানের সমূহ সত্যকে সে কীভাবে প্রত্যক্ষ করে ও মনে কথার ঢেউ গড়ে ওঠে তার নিপুণ সমীক্ষা। ব্যক্তি নিজে নিজেই যেমন আত্মচরিত রচনা করে তেমনি ব্যক্তি একার্থে সমষ্টির অংশ। সেই সমষ্টি ব্যক্তিকে কীভাবে প্রত্যক্ষ করল, নিয়ন্ত্রণ করল, ছলনাজাল রচনা করল, বৃদ্ধ বলে ব্যঙ্গ করল তা ব্যক্তির চেতন-অবচেতনে নানা ছবি আঁকে—সেই দৃশ্যজাল এ আখ্যান। জটাশংকর অবসরপ্রাপ্ত পেনশন হোল্ডার। সময়ের অগাধ সরণি ধরে রাশি রাশি চিন্তামালা তাঁর মস্তিষ্কে কল্পনার ছবি আঁকে, বাস্তবকে প্রতীয়মান করে, বাস্তবের দৃঢ় সত্য, নষ্টবৃত্তান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলে। সেই সমূহ সত্য ধরেই আখ্যানে দিগন্তবিস্তারী কথাজাল নির্মিত হয়।

    ‘কোনো একদিন’ আখ্যান সভ্যতার চলমান ধারাপাত। ব্যক্তি আসলে সময়ের অংশ, সময়ের বিচূর্ণ রাশির নৃমুণ্ডমালা। ব্যক্তি সময়কে যেমন ভোগ করে তেমনি সময় ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে। বিংশ শতাব্দীর পৃথিবী ও একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবী পৃথক। বিশ্বায়ন, ভোগবাদ, বাজার অর্থনীতি, পুঁজিবাদ জীবনকে যেমন বদলে দিয়েছে তেমনি সময়ের আপেক্ষিক সত্য হয়ে উঠেছে। সময়ের অংশ হিসেবে ব্যক্তি সেই জীবনে ঢুকছে, উপভোগ করছে, নিয়ন্ত্রক-নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, প্রতারিত হয়ে নিজের জীবন সমীক্ষা করছে। একুশ শতকের পৃথিবী জটিল ব্যাধি আক্রান্ত অবসাদের ভুবন। ব্যক্তি নিজের কার্যকলাপ সম্পর্কে যেমন নিজেই সচেতন নয় তেমনি ব্যক্তি কীভাবে সময়ের নশ্বর সত্যে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে তা নিয়ে নিজেই দ্বিধান্বিত। বিংশ শতাব্দীর যৌবন অতিক্রান্ত মানুষ একুশ শতকে প্রৌঢ় বেলায় এসে জীবনের ছক মেলাতে পারে না। নিজেই সমীক্ষায় উপনীত হয়। নিজেই মস্তিষ্কে ঢেউ তুলছে, স্ত্রী-বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা, বিতর্কে অংশ নিচ্ছে, নিজেই জীবন সমীকরণ নিয়ে ভাবছে, বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। ‘কোনো একদিন’ আখ্যানের ছক বড় অদ্ভুত। স্মৃতি সত্তা ধরে বর্তমান রোমন্থন আবার বর্তমানকে পরিমাপ করতে অতীতে ফেরা। অতীতের অংশ দিয়ে বর্তমানকে নিবিড়ভাবে অবলোকন এবং বিচ্ছিন্ন অংশ থেকে সভ্যতার বিবর্তনশীল ধারাপাত গড়ে তোলা। সেখানে বহুরকম দৃশ্যজাল, কথা পরিসর গড়ে উঠছে। সেই বিচ্ছিন্ন সূত্রমালা, কথা নিকেতনের অনবরত ঢেউ খেলানো পালাবদল দ্রুত গতিতে যেমন চলমান তেমনি আখ্যানের নতুন ঢঙকে স্পষ্ট করে তোলে।

    ‘কোনো একদিন’ আখ্যান আসলে কথাবৃত্ত। ছকের মধ্যে বন্দি জীবনের ছকের বাইরে যাওয়া আবার পিছিয়ে আসা। ক্রমাগত কথা বলয় তৈরি করা। এ গদ্য প্রকৃত পক্ষে যুক্তি তর্কের। বক্তব্য ধরে এগিয়ে যাওয়া ও পিছিয়ে আসা আছে। গ্রহণ-প্রত্যাখ্যানের মধ্য দিয়ে ক্রমেই কথা পরিমণ্ডল এগিয়ে চলছে। মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে অভ্রান্ত যুক্তি ও বিপরীত পক্ষের তির্যক বানে পিছিয়ে এসে সংযত, সংবেদন হয়ে ওঠা এ গদ্যের চালিকা শক্তি। বাঙালি পুরুষ জানে হম্বিতম্বি দেখানো যায় কিন্তু নারী গর্জে উঠলে পিছিয়ে যেতে হয়—সাংসারিক স্থিরতা বজায় রাখতে। অসংখ্য ছোট ছোট বৃত্ত, কথা পরিমণ্ডলের মধ্য দিয়ে আখ্যান এগিয়ে গেছে। লেখক বিন্দু বিন্দু সত্যকে ধরতে চেয়েছেন। লেখকের লক্ষ সামগ্রিক জীবনের প্রতিচ্ছবি। একটা ক্ষুদ্র বৃত্তের মধ্যে কত কথা গড়ে উঠতে পারে, সেই সূত্র ধরে কথা কীভাবে প্রসারিত হয়ে বৃত্তকে প্রত্যাখ্যান করে আবার বৃত্তেই কীভাবে ফিরে আসতে পারে সেই শব্দছক বাংলা আখ্যানের কথাজালের অভিনব ঢঙ।

    কখনো ভাববাচ্যে, কখনো অধিক ক্রিয়াপদ ব্যবহারে, কখনো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাক্যে খুঁটিনাটি সত্য ধরে আখ্যান জীবন পরিক্রমা করে চলে। বৃত্তের সমগ্র অংশের বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে, ভালো-মন্দ, সংকট-সম্ভাবনার চিত্রকল্প গড়তে গড়তে বহমান সময়কে রূপায়িত করে চলেন। সময়ের গায়ে যত বিভঙ্গ জুড়ে থাকে তার আগাপাশতলা নথিনামা এ আখ্যান। শহর কীভাবে গড়ে ওঠে, কী কী থাকলে শহর সম্পূর্ণ হতে পারে, কোন কোন বৈশিষ্ট্যে শহরের সমগ্রতা ধরা দিতে পারে এমন বয়ানে গড়ে উঠেছে বারোতম পরিচ্ছেদ। সমস্ত পরিচ্ছদেই একাধিক বৃত্তে সময়কে তিনি ট্রিটমেন্ট করছেন। সময়ের টেম্পারমেন্টকে বুঝে নিচ্ছেন। অতীত-বর্তমানের সূত্র ধরে বহমান খাতের ভালো-মন্দ চিহ্নিতকরণের মধ্য দিয়ে সময়ের জালবিভাজিকাকে যেমন বুনন করছেন তেমনি সময়ের সন্তান মানুষের গ্রহণ-প্রত্যাখ্যানের ভাষা রচিত হচ্ছে।

    ‘কোনো একদিন’ আখ্যান জীবনের তাত্ত্বিক পরিসর। জীবন সম্পর্কে লেখকের দার্শনিক অভিজ্ঞান প্রতিফলিত হয়েছে বয়ানে। সামাজিক মানুষ, রাষ্ট্রের মানুষ, প্রশাসনের মানুষ, জনপদের মানুষ, মিথের মানুষ, সময়ের মানুষকে লেখক এইসব একক দিয়ে মাপছেন। বিপরীতও আছে। ব্যক্তির সত্তা এইসব এককগুলির ভূমিকা, কার্যকারিতা, ক্ষতিকারক প্রবণতা মেপে নিচ্ছে। এ এক অদ্ভুত উপস্থাপনভঙ্গি। দ্রুতগদ্যে সহজ সরল বিন্যাসে বিভঙ্গ নির্মাণ ও বৃত্ত গড়তে গড়তে, ভাঙতে ভাঙতে তা জীবনকে পরিমাপ করে চলেছে। এ যেন একার সঙ্গে একার খেলা। প্রতিটি একার মুখোমুখি একা। সচল আমি, বিভ্রান্ত আমি, যুক্তিশীল আমি, নিয়ন্ত্রক আমি, গতিশীল আমি যেন আমিত্বের বৃত্তে ঘোরাফেরা করছে। লেখক চরিত্রের অন্তঃসত্তাকে বিশ্লেষণ করেছেন এইভাবে—

    “পথ এবং আমি—দুই-ই কল্পনায় গোপনে একাকার হয়ে গেছি। পথ না থাকলে আমি পঙ্গু ভাবি নিজেকে। ‘আমি’ মানুষটা যে নানা ‘আমি’ দিয়ে গড়া। স্মৃতি, কৌতূহল কিংবা যেকোনো অনিশ্চয়তার প্রতি আমার টান—রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে তাই নানা ‘আমি’র পরস্পর খেলা করে; যুক্তি-তর্ক, কথা কাটাকাটির খেলা।”
    (তদেব, পৃ. ৬৭-৬৮)

    চরিত্রের সঙ্গে সংযুক্ত একাধিক সত্তা আখ্যানে এসেছে। চরিত্রের যাপিত উদ্ভাসনে, চলমান ক্রিয়ায় অস্তিত্ব প্রশ্ন তুলেছে, বাঁচার প্রক্রিয়া থেকে রসদ সংগ্রহ করেছে। ‘কোনো একদিন’ আখ্যানের যুক্তিশীল গদ্য এক ধাপে এগিয়ে গিয়ে দুই ধাপ পিছিয়ে এসেছে। চরিত্র নিজের ক্রিয়াকলাপ নিয়ে তর্কে যেমন অটল থাকেছে তেমনি ভিন্ন সত্তা ভুল ধরিয়ে দিচ্ছে। আবার সেখান থেকে কথামন্থন ক্রিয়া শুরু হচ্ছে।

    ‘কোনো একদিন’ আখ্যান আসলে যেকোনো মানুষেরই ন্যারেটিভ। জটাশংকর এখানে সহস্র মানুষের প্রতিনিধি। যেকোন অর্থবহ মানুষই প্রতিনিয়ত চিন্তা করে, মনে অজস্র ভাবনা উঁকি দেয়। অবসরপ্রাপ্ত হলে তো আরো ভাবনা মস্তিষ্কে গেঁড়ে বসে। কর্মহীন নিঃসঙ্গ মানুষের মনে নানা ধারণা যেমন উঁকি দেয় তেমনি সমস্ত ঘটনাকে সে বিশ্লেষণ করতে চায়, নির্মাণ করতে চায়। জীবনের অভিজ্ঞতায় পূর্ণ একজন ব্যক্তি জীবনকে পরিমাপ করতে চায়, জীবনের অতীত-বর্তমানের কার্যক্রিয়াকে সঠিক মাত্রাজ্ঞানকে বুঝে নিতে চায়। প্রশ্ন তোলে, ভুল-সঠিকের মাত্রা দিয়ে জীবন সমীক্ষা চালায়। জিজ্ঞাসার দ্বন্দ্বময় উপস্থাপন, ভুল-সঠিকের সম্ভাবনা, ভালো-মন্দ, সরলতা-জটিলতা সময়ের চলমানতা নানা বিভঙ্গে কেবলই খেলা করে, সেই শব্দতরঙ্গের লেখা ‘কোনো একদিন’ আখ্যান। আখ্যানের নাম ‘কোনো একদিন’ হলেও, লেখক স্বগতকথনে একদিনের আখ্যান বলে ঘোষণা করলেও এর ব্যাপ্তি জীবনের অনন্ত মায়ালোকে। মর্ত্যপৃথিবীর যাবতীয় রসদ ও রসাভাসকে ব্যক্তি পরিমাপ করছে। অথবা ব্যক্তিকে সামনে রেখে যাবতীয় সত্য ঘুরপাক খাচ্ছে। যা প্রশ্নময়, সমীক্ষা প্রবণ, বিশ্লেষণপূর্ণ ও প্রজ্ঞাময়। জীবনাভিজ্ঞতায় পূর্ণ দার্শনিক অভিলাষের নিগূঢ় অবগুণ্ঠন উন্মোচন।

    নাম, উপনাম, সর্বনাম, আমি, আমিত্ব, তুমি, তুমিত্ব, নির্বিঘ্ন আমি, নির্ঝঞ্ঝাট আমি, তুমুল আমি, নিস্তব্ধ-নির্বাক আমি, সাংসারিক আমি মিলে আখ্যান বিকশিত হয়ে চলে। জীবনচরিতের সঙ্গে সংযুক্ত একাধিক চরিত্রকে সত্তা নিজেই ডেকে আনে, ইন্ধন জোগায়, গল্পবলয় গড়ে তোলে। সেই গল্পবলয়ে সমাজ, রাষ্ট্র, সময়, প্রেম, আধিপত্য, দৈনিক বেচাকেনা, জীবনের ষোলোআনা কোনো কিছুই বাদ যায় না। বলা ভালো লেখক চরিত্রের আগাপাশতলা খনন করতে একাধিক ছোট ছোট বৃত্তকে টেনে আনেন। শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বাজার সমগ্র’ পড়লে বোঝা যাবে সময়ের আড়ালে কত রহস্য চাপা থাকে। কত গল্প গড়ে উঠতে পারে। শুধু তো রহস্য নয় লেখক কোন বীক্ষণে তা দেখছেন তাও বিবেচ্য। সাধন চট্টোপাধ্যায় জীবনের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ক্রিয়াকলাপের নানা বৃত্ত-উপবৃত্ত, বৃত্তের ভিতর বৃত্তকে খনন করে জীবনের বিন্যাসকে নানা কৌণিক বিন্দু থেকে সমীক্ষা করে চলেছেন। রামকুমার মুখোপাধ্যায় ‘দুখে কেওড়া’, ‘মিছিলের পরে’, ‘নবদীয় নঙ্গরচন্দ্র’তে কথাজালের অদ্ভুত সমীকরণ গড়ে তুলেছিলেন। শতদল মিত্র, লুৎফর রহমান বাস্তবের ভিতর অদৃশ্য বাস্তবকে টেনে হিচড়ে যেমন আনেন তেমনি পরিদৃশ্য বাস্তবকে কখনো রুক্ষভাবে, কখনো আলগা সমীকরণে ব্যক্ত করেন। সাধন চট্টোপাধ্যায় এ আখ্যানে একটিমাত্র চরিত্রকে সামনে রেখে তাঁর জিজ্ঞাসা, কৌতূহল, প্রশ্ন, সংশয়, সম্ভাবনা, সঙ্গতা-নিঃসঙ্গতার উপকণ্ঠে কথাকে কেবল জারণ করে চলেছেন। সন্দেহ নেই এ প্রবণতা বাংলা উপন্যাসে নিঃসন্দেহে নতুন। যদিও সাধন চট্টোপাধ্যায় সারাজীবনই বিবিধ আখ্যানে বাংলা উপন্যাসের বহুমুখী দিগন্তকে মেধাবী প্রয়াসে, নতুন আঙ্গিকে বলিষ্ট সমীকরণে জানান দিয়ে এসেছেন পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে।

    কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন—‘সে কেন জলের মতো ঘুরে-ঘুরে একা কথা কয়!’ হ্যাঁ মানুষ একাই কথা সমুদ্র। নিঃসঙ্গতা কাটাতে সঙ্গতা চায় আবার সঙ্গতার যন্ত্রণা, ক্লান্তি থেকে বাঁচতে নিঃসঙ্গতায় ফেরে। মানুষ যেমন ভয় সমুদ্র তেমনি দ্রোহ আত্মা। অন্যের সঙ্গে উচ্চারণশীল কথায় ভেসে গেলেও নিঃসঙ্গতায় নিজের মধ্যেই কথাকে জারণ করে। কখনো ভুল বোধ আক্রান্ত হয়ে বিকৃত মস্তিষ্কে প্রলাপ বকে। আবার নিঃসঙ্গতায় কথা নির্মাণ করে। সঙ্গতায় গিয়ে তা উগড়ে দেয়। কখনো উদাস বাউল হয়ে নিসর্গে বিচরণ করে। কিন্তু মধ্যবিত্ত শহুরে মানুষের তো সংকট, শূন্যতা নানাদিকে। সে নিজেই গণ্ডিবদ্ধ হয়ে কথা গড়ে, কথা ভাঙে, কথার বৃত্ত বানায়। অমর মিত্রের ‘রতনলাল ১৩৫০’ আখ্যানে দেখি বৃদ্ধ নিঃসঙ্গ রতনলাল কেবল কথা বানিয়ে চলে, মিথ্যা কথা বলে। বানিয়ে বানিয়ে সত্য-মিথ্যার আস্তরণ দিয়ে একটা চিত্রকল্প তৈরি করে। সাধন চট্টোপাধ্যায় ‘কোনো একদিন’ আখ্যানেও কথার সম্ভাবনার দুয়ার কতদূর যেতে পারে, মধ্যবিত্তের বাঁচার প্রকরণে কত কথা নির্মিত হতে পারে তার একটা জরুরি পাঠ গড়ে উঠেছে। বাংলা উপন্যাসের প্রত্যাখ্যানের ভাষার নতুন স্বর এখানে ঘোষিত হয়েছে।

    জটাশংকরের একটা গোপন ‘তুমি’ আছে। এই ‘তুমি’ প্রশ্ন করে। ভুল ধরিয়ে দেয়। আত্মজিজ্ঞাসায় উপনীত করে। ‘কোনো একদিন’ আখ্যান সমাজের উপরিতলে ও গভীরতলে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার বহুমুখী বিশ্লেষণাত্মক বিবরণ। একটি সত্তা তার সময়ের সমস্ত কিছুকে আত্মগত সমীকরণে রোমন্থন করে চলেছেন। সময়ের ভালোমন্দকে বিশ্লেষণ করে জীবনের নির্যাসকে খুঁজেছেন। সেখানে অসংখ্য দৃশ্যজাল গড়ে উঠছে, ভেঙে যাচ্ছে। এ যেন এক অচরিতার্থ মানসবীণা। ভ্রমণসংগীত। কালগহ্বরে ঘটে চলা ঘটনার রোমন্থন যার মধ্যে ব্যক্তি নিজেই ওতোপ্রোতভাবে জড়িত তার ফল্গুধারাকে বুনন করে চলা। বিচিত্র কথকতা, কোলাহলের সমষ্টি এ আখ্যান। সত্তাকে ধরে বহু চরিত্রের ক্ষণিক উদ্ভাসন সংগঠিত হচ্ছে, মিলিয়ে যাচ্ছে। কথা গড়ছে, প্রসারিত হচ্ছে, কথা ভাঙছে। কথাপালার দিগন্ত উন্মোচিত করে সময়ের চলমান সিঁড়ি আখ্যানের গোত্র নির্ধারক হয়ে উঠছে। সত্তা তো মানসলোকে নিত্য বিচরণ করে, সদা জাগ্রত। ঘুমন্ত অবস্থাতেও কিছু স্বপ্ন, কথা নির্মিত হয়। তেমনি সত্তার নিত্য পথচলায় কথাবৃত্ত গড়ে উঠছে। প্রাসঙ্গিক-অপ্রাসঙ্গিক, তর্ক-বিবাদ, রোমন্থন, বাদ-প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে কথাবৃত্তের রোমন্থন ‘কোনো একদিন’ আখ্যান।

    ‘কোনো একদিন’ আখ্যানের কেন্দ্রে যেহেতু একটি অস্তিত্ব বিরাজমান, তাই ঘটনার ক্রমপরিণতি খুব বেশি সচল নয়। একটি বৃত্তের মধ্যেই তা ঘুরপাক খেতে থাকে। সত্তা সত্তাকে প্রশ্ন করে, বিতর্ক করে। কখনো লেখক নামক সত্তার প্রচ্ছন্ন, কখনো প্রগাঢ় উপস্থিতি লক্ষণীয়। এ আখ্যান অনেকটা বৈঠকি ঢঙে লেখা। তরুণ কবি, গদ্যকার শতানীক রায় লিখেছিলেন ‘আমিও চলছি ঘরও চলছে’ গ্রন্থ। আমি আছি মানেই চিন্তা আছে। অস্তিত্ব সচল মানেই চিন্তা কার্যকর। সুচিন্তা, দুশ্চিন্তা, নিজেই নিজের যুক্তি খোঁজা, প্রতুত্তর দানের মধ্য দিয়ে বাক্যসরণি কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করে। ব্যক্তি এখানে চৈতন্যের একক। তিনি ভূমণ্ডলের সমস্ত সত্যকে, জীবনচক্রের সমস্ত ক্রিয়াকে নিজস্ব বীক্ষণে পরিমাপ করে নিচ্ছেন। ক্রমাগত প্রশ্ন, উত্তর-প্রতুত্তরের মধ্য দিয়ে একটা শব্দছক গড়ে উঠছে। যা সমাজ-সময়ের গভীর রহস্যকে যেমন চিহ্নিত করছে তেমনি সিস্টেম-রাজনীতির দংশনক্ষত অন্ধসজ্জাকে আক্রমণ করছে। সাধন চট্টোপাধ্যায় বাংলা কথাসাহিত্যের সেই লেখক যিনি সময়ের গূঢ়তত্ত্ব, পাশাখেলা ও অন্ধত্বের প্রলাপকে নানা বীক্ষণে, নানা বয়ানে চিহ্নিত করে এসেছেন পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে। সময়ের বিভঙ্গকে নানামাত্রায় খতিয়ে দেখার অভিলাষ, সময়ের মানুষকে নানা প্রকরণে গড়ার অভিপ্রায় ও ভোগবাদ-চাহিদা-সিস্টেম সহ প্রবণতার নানা বিন্যাসকে তলিয়ে দেখার বিশ্লেষণাত্মক প্রবণতা তাঁকে বাংলা কথাবৃত্তের গুরুত্বপূর্ণ লেখক হিসেবে পর্যবসিত করেছে সচেতন পাঠকের মনবীণায়।

    এ আখ্যান যেমন জটাশংকর চক্রবর্তীর তেমনি স্ত্রী বীণার। দাম্পত্য সম্পর্কে একে অপরে তো একসূত্রে বাঁধা। প্রৌঢ় সত্তা একে অপরকে আশ্রয় করে বাঁচছে। তেমনি স্মৃতি তো আসলে যাপিত সত্তার নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল। অবসর সময়ে তা কেবলই উদ্‌গিরণ হয়ে সত্তাকে ভ্রাম্যমাণ করে তোলে। সময়ের অনন্তধারাপাতকে ব্যক্ত করে চলে। বীণা ও জটাশংকর একে অপরকে আশ্রয় করে যেমন নিজেদের খনন করছেন তেমনি পারিপার্শ্বিক বৃত্তকে নির্মাণ করে চলছেন। এ গদ্যের বৈশিষ্ট্য হল অনবরত শাখা প্রশাখা গড়ে তোলা। চারিদিকে আলো ফেলা। অস্তিত্ব সমস্ত সত্যকে ধরে, সময়ের নথিনামাকে আলিঙ্গন দিয়ে সে যেমন নিজেকে জানান দিচ্ছে তেমনি সময়ের শরীরে লেগে থাকা ধুলোমাটি সোনার পরশ রতনের খোঁজ নিচ্ছে। এ আখ্যান প্রকৃতপক্ষে জীবন বিশ্লেষণ। এক দম্পত্তির একদিনের ঘটনা বিস্তারের মধ্যে তন্নতন্ন করে জীবনের অর্থ, অভিসম্পাত, কার্যকারিতা, বেঁচেবর্তে থাকার যাবতীয় রসদকে অভীক্ষামূলক দৃষ্টিতে নিরীক্ষণ করা। বলা ভালো লেখকের দার্শনিক মনন, জীবনবোধের চূড়ান্ত ভাববিন্যাস ও জীবনের বিবিধ কথনকে নানা অনুষঙ্গে জাড়িত করে ভালোমন্দের রূপচ্ছটাকে বহুমাত্রিক বয়ানে উদ্ভাসিত করার সমূহ প্রয়াস। সেই গদ্যে মণিমুক্তার মতো নানা হিরকদ্যুতি ছড়িয়ে আছে। গদ্যের রসাভাসে নানা চিত্রকল্প, যুক্তিতর্ক, চড়াই উতরাই রেখে জীবনের ভঙ্গিলতাকে যেমন সাযুজ্যে গড়েন তেমনি ক্ষণিক মুহূর্ত স্মৃতিতে কেমন প্রভাব ফেলে, তার ছাপ কীভাবে কার্যকারী হতে পারে এবং সেই অনুষঙ্গ ধরে কত অনুষঙ্গের জারণ হতে পারে তার বিশ্লেষণাত্মক বয়ান আখ্যানকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। বীণার বয়ানে জীবনের সত্য উদ্ভাসিত হয়—
    “কর্মজীবনে সে চাকরির ছোট্ট গণ্ডির মধ্যে খুবই সতীর্থপ্রিয় ছিল। শারীরিক খুঁত নিয়ে, অবহেলা ও করুণার ঝাপটায় টের পেয়েছে, জীবনে প্রকৃত শান্তির খোঁজ না বুঝতে পারলে, জীবনটা বড্ড কড়ায়ে ভাজা ভাজা এবং উদ্বেগ পুড়তে হয়। মুহূর্তে মুহূর্তে নির্যাতিত হবার ভয় থাকে। কারণ, মানুষের ভেতরটা, পৃথিবীর তিনভাগ জল একভাগ স্থলের মতো, তিনভাগ পশুত্ব, একভাগ দেবত্ব। মাটির মতো সহন ক্ষমতা অভ্যেস না করলে, পশুত্বের ঝড়-তুফান থেকে বেঁচা যায় না।” (তদেব, পৃ. ১৭৮)

    বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পাঁচুড়া ভ্রমণ, স্মৃতি, বিষাদ, ঝঞ্ঝাট, বদলে যাওয়া চিত্র মিলিয়ে জীবনসন্ধ্যার এক নাটকীয় ভাববিন্যাসের মেলবন্ধন পাই। আখ্যানের শেষদিকে পাঁচুড়া ভ্রমণ ও তৎসংলগ্ন কাহিনি বিস্তার কিছুটা খাপছাড়া হলেও আখ্যান চলেছে চিন্তারাজ্যের একাধিক স্তরে। পরস্পর সংলাপ, স্বগতকথন, বহুস্তরীয় ভাবনা বিস্তারে জীবনের ভিতর একাধিক জীবন আবিষ্কৃত হয়েছে। একটিমাত্র চরিত্রকে কেন্দ্রে রেখে কাহিনিকে কীভাবে ঘুরপাক খাওয়ানো যায় এবং ঘটনার কতস্তর নির্মিত হতে পারে তার দার্শনিক মননবীণায় ‘কোনো একদিন’ আখ্যান বাংলা উপন্যাসে একটি নতুন ধরনের সমীক্ষা।

    তারিখ : ০৭/০১/২০২৫
    পুরুষোত্তম সিংহ, ঘোষপাড়া, সুভাষগঞ্জ, রায়গঞ্জ, উত্তর দিনাজপুর। ৭৩৩১২৩। ৬২৯৭৪৫৮৫৯১।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাপাঙ্গুল | 182.69.***.*** | ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ০০:০৯540746
  • এই বইটা আগে পড়েছিলাম। পাঠ প্রতিক্রিয়া ভাল লাগল। জটাশঙ্করের পাশাপাশি তার মফস্বল শহরও বইতে এক চরিত্র।  
  • PURUSATTAM SINGHA | ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:১০540749
  • হ্যাঁ অবশ্যই। ভালো বলেছেন। ধন্যবাদ। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন