এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • কল্প বিজ্ঞানের গুল্প

    PRABIRJIT SARKAR লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ৪১৯ বার পঠিত
  • করোনার যুগে ঘর বন্দী অবস্থায় ফেসবুকে লিখেছিলাম। মোবাইলে খুট খুট করে। হয়তো কেউ কেউ পড়েছেন।
    ------
    আন্ড্রোমেডা ছায়াপথ ঘুরে এলাম
    প্রবীরজিৎ সরকার

    ঘরের পাশের শিশির বিন্দু দেখা হল না। সারা বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ অদেখা রয়ে গেল। সেই আমি চললাম আমাদের এই ছায়াপথ মিল্কি ওয়ে ছাড়িয়ে পাশের আন্ড্রোমেডা ছায়া পথের একটা গ্রহে। চলে গেলাম না বলা ভাল ধরে নিয়ে গেল। ব্যাপারটা খুলে বলি।

    করোনার যুগে কোথাও বেড়াতে যাই না। আমার দৌড় গল্ফ গ্রিনের সেন্ট্রাল পার্ক আর আসেপাশের কয়েকটা নতুন গজিয়ে ওঠা ক্যাফে। রোজ বিকালে রোদ চলে গেলে বেরোই। কোনদিন শুধু হাঁটি। আমার আবার ওই পার্ক বেষ্টন করে দশ বিশ পাক দিতে ভালো লাগে না। অনেকেই দেয় -কেউ হেঁটে কেউ দৌড়ে কেউ বা অর্ধেক দৌড়ায় অর্ধেক হাঁটে। বেশির ভাগ মেয়ে শুধু পাক দিয়ে যায়। ভয় পায় হয়তো অন্য রাস্তায় যেতে। আমার একঘেয়ে লাগে তাই একটা পাক দিয়ে কফি শপ যাই। তারপর আরেকটা পাক দিয়ে বাড়ি ফিরি। প্রথম পাকের সময় যাদের দেখি কফি খেয়ে বিল মিটিয়ে পাক দিতে গিয়ে তাদেরই দেখি। দু চারটে মেয়ে যুবতী আর দেখনসই। এরা কেন জানি ঘড়ির কাঁটার উল্টো দিক থেকে পার্কটাকে বাইরে থেকে পাক দেয় আর আমি এদের উল্টোদিক থেকে পাক দি। তাই এক পাকে তিনবার করে দেখা হয়। এরাও আমায় দেখতে পায় কখনো না কখনো। খেয়াল করে এক ঝলক তাকায়। আমিও তাই করি। মনে মনে একেকজনের একেকটা নাম দিয়েছি। কেউ বেক্কুরা কেউ নাক মোটা কেউ বেটে সুন্দরী। এদের একজনের দৌড়ের ভঙ্গিটা আকর্ষণ করে। তাকে একদিন দেখতে না পেলে ভাবি আজ কেন আসেনি। এই ভাবেই মামুলী জীবন কাটাচ্ছি।

    সেদিন এই দৌড় সুন্দরীর দিকে চোখা চোখি হবা মাত্র একটা ভয়ঙ্কর আলোর ঝলকানি। মেয়েটা ভয়ে আমায় জাপটে ধরল। কিছু বোঝার আগেই আলোর বৃত্ত আমাকে জাস্ট শুষে নিল। সম্বিৎ ফিরে পেয়ে দেখলাম আমি অনেক উঁচুতে এক মহাকাশযানের মধ্যে। লম্বা নীল নীল মানুষের মত দেখতে কয়েকটা প্রাণী আমায় ঘিরে আছে। আমি কোনো দেশে গিয়ে সেখানকার মানুষের ভাষা না জানলে বাংলায় বলি। ওরা টুকটাক কথা বার্তা হাব ভাবে বুঝে যা উত্তর দেয় আমি বুঝি। ফুকো দেরিদার দুরূহ তত্ব এভাবে আলোচনা করা যায় না। কিন্তু দৈনন্দিন কাজ চলে। এদেরও সোজা বাংলায় বললাম, 'তোমরা আমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?' ওরা কোন এক অজানা ভাষায় যা বলল আমি ওদের ভাষা না জানলেও বুঝলাম কি বলছে। এরা একটা বিশাল স্ক্রিনে যা দেখালো তাতে বুঝলাম এরা পাশের গ্যালাক্সি থেকে এসেছে। আমাদের ভাষায় ওটাকে আন্ড্রোমেডা না কি যেন বলে। পৃথিবী থেকে কম করে পঁচিশ লক্ষ আলোক বর্ষ দূরে। মানে সেকেন্ডে এক লক্ষ ছিয়াশী হাজার মাইল বা তিন লক্ষের বেশি কিলো মিটার গতিতে- মানে যাকে বলে আলোর গতি-ছুটলে কম করে পঁচিশ লক্ষ বছর লাগবে পৌঁছাতে। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করিনি। অঙ্ক পারি না ভাল। ভাল অঙ্ক পারলে জ্যোতির্বিজ্ঞানী হতাম। অল্প অঙ্ক জানি তাই অর্থবিজ্ঞানী হবার চেষ্টা করেছি। সেখানেও এই অঙ্ক না জানার পঙ্কে পড়ে বেশি দূর এগোতে পারিনি।

    জ্যোতির্বিজ্ঞান বিশেষ না বুঝলেও দুটো জিনিস শুনেছিলাম। একটা গুরুদেব আইনস্টাইনের তত্ব: আলোর গতির বেশি গতিতে কোন বস্তু বা মহাকাশযান যেতে পারে না। আরেকটা তত্ব হল সময়ের আপেক্ষিকতা তত্ব। যে যত বেশি গতিবেগে যাবে তার সময় তত আস্তে এগোবে। সূর্যের পাশের তারার দেশে আলোর কাছাকাছি গতিতে ঘুরে ফিরে আসতে কারুর যদি দশ বছর কেটে যায় পৃথিবীতে এসে সে নাকি দেখবে কয়েক শ বছর কেটে গেছে। গীতায় এরকম কিছু পড়েছিলাম। বিপুল গতিতে ব্রহ্মান্ড ঘুরে বেড়ানো ব্রহ্মার কাছে নাকি এক পলক পৃথিবীর লক্ষ বছরের সমান বা ওরকম কিছু। যে বা যারা গীতা লিখেছেন তাদের এমন উন্নত কল্পনা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। এই তত্ত্বের কারণে নাকি যে সব অন্য গ্রহের মানুষ পৃথিবী ঘুরে গেছে পাঁচ কি সাত হাজার বছর আগে তারা আর আসেনি ফিরে। হয়তো তাদেরই ভগবান ভেবেছি যেমন দানিকেন বলে এক গালগল্প লেখক বলতেন। তারা হয়তো তাদের এক বছর পরে আসবে আর আমাদের লক্ষ বছর পেরিয়ে যাবে।

    বুঝলাম আমি যদি ফিরে আসি তখন আমার বউ বা মেয়েকে দেখতে পাব না। বউয়ের বানানো চা খেয়ে বেড়িয়েছি। কিন্তু মেয়ে থাকে বোস্টনে। তাকে বহুদিন দেখিনি। করোনার জন্য আসতে পারছে না। আমরা ও যেতে পারছি না। এখন অবস্থার উন্নতি হয়েছে। কিন্তু চাকরির ব্যস্ততা আছে। তাই জুলাইয়ে যখন আসবে তখন দেখা হবে। কিন্তু আমি তো চলেছি অন্য গ্যালাক্সিতে। আমি এদের বললাম আমায় নিয়ে যাচ্ছ ভাল। কিন্তু আমায় কয়েকটা জায়গায় পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও নিয়ে যাও। তোমাদের সভ্যতা অনেক উন্নত। তোমরা সব পারো। সত্যি ওরা যেকোন ভাষায় মনের আদান প্রদান করতে পারে। আমি আমার ভাষায় যা বলছি ওরা বুঝছে আর ওরা টুং টাং যা বলছে আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি। ভারতে এখন এপ্রিলের সন্ধ্যা ছ টা বোস্টনে সকাল সাড়ে আটটা। আমি নিজেকে দেখলাম মেয়ের ফ্ল্যাটের দরজায়। আমি না আমার হলোগ্রাম জানি না। কলিং বেল টিপতেই মেয়ে দরজা খুলে পাঁচন খাওয়া মুখে বলল,'তুমি? কী করে এলে? আজ সকালেও তো মা বলল না তুমি আমেরিকা আসছ ?' বললাম, 'ঘরে ঢুকতে দে। তারপর বলছি।'

    ঘরে ঢুকতেই ওর দুটো পোষা বিড়াল আমায় দেখে কেমন করতে লাগলো ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমরা পৃথিবীতে যা দেখি আর যা শব্দ শুনি তা আসলে পাঁচ শতাংশ বা তার কম। বেশির ভাগ অজানা থেকে যায়। বিড়ালদুটো হয়তো আমাদের না দেখা না শোনা কিছু দেখছে আর শুনছে। তাই ওরকম করছে। ভাবলাম সাহেবী কায়দায় মেয়েকে হাগ বা আলিঙ্গন করে চলে যাব। ও আমায় আমল না দিয়ে হোয়াটসআপ করে ওর মা মানে আমার বউকে ভিডিও কল করে বসল। ওর মা আমায় দেখতে পেয়ে কাঁদতে শুরু করল: 'নিশ্চয়ই তোর বাবা মরে প্রেতাত্মা হয়ে এসেছে।' আমি মেয়েকে একটা কথাই বলতে পারলাম: 'এলিয়েন এ্যাবডাকসান'। ও নিশ্চয়ই ওর মাকে বুঝিয়ে বলতে পারবে। খেদ রয়ে গেল, ওকে জড়িয়ে ধরে বোঝাতে পারলাম না আর আমিও বুঝলাম না আমার পার্থিব শরীর বোস্টন এসেছিল কলকাতা থেকে দশ মিনিটের মধ্যে না আমার আত্মা বা হোলোগ্রাম এসেছিল।

    ওদের তাড়া ছিল। মহাকাশযানে ওরা নিয়ে গেল। ওদের কী টেকনোলজি আর কীরকম দেখতে মহাকাশযান বুঝতে পারলাম না। ভিতর থেকে দেখলাম মার্কিন সেনার এফ ১৬ আমাদের মহাকাশযান লক্ষ্য করে মিসাইল ছুঁড়ছে আর ওগুলো উবে যাচ্ছে। একটা বিমানকেও উবে যেতে দেখলাম।

    কিছুক্ষন বাদে দেখি আমাদের ভারতের মুখ থুবড়ে পড়া চন্দ্রভেলার সামনে এসেছি। ইচ্ছা ছিল শুধু মেয়েকে নয় আমাদের বিজ্ঞানীদের ও জানিয়ে যাব আমি অন্য জগতে চলেছি। ফিরে এলে আমায় এরা গুলবাজ বা পাগল ভাববে না। তাই ওই চন্দ্রযানের ক্যামেরা খাড়া করে দাঁড়ালাম। আমি অবশ্য এসব যন্ত্রপাতির কিছু বুঝিনা। এই যন্ত্রের সৌর ব্যাটারি চলছে কিনা জানি না। জানার উপায় নেই চাঁদের ছবি আমার সেলফি সমেত ওরা পেল কিনা। একটা জিনিস খেয়াল করলাম এদের উন্নত টেকনোলজির জন্য আমার চার পাশে অদৃশ্য বলয় দিয়ে আমায় ঘিরে দিতে পেরেছে। তাই বেশ ঠান্ডা বোস্টনেও কলকাতার গরম কালের পোশাকে ঠান্ডা লাগেনি আর চাঁদেও শ্বাস কষ্ট বা ঠান্ডা লাগেনি। এখন হয়তো বিশ্বে হৈচৈ লেগেছে বোস্টনের আকাশে মহাজাগতিক লড়াই আর আমার সাধারণ পোশাকে চাঁদে নামা নিয়ে। আমি তো এসবের উর্ধে। ফেসবুকে আপডেট দেবার কথা মনে হয়েছে। এরা সব বুঝলেও এই ফেসবুক ব্যাপারটা জানে না। জানলে হয়তো আমার কামনা ধরতে পেরে কিছু একটা করত।

    আমার শেষ ইচ্ছা ছিল একটু মঙ্গলে নামা। যদি বেঁচে ফিরি আর ফেসবুকের বন্ধু বান্ধবীরা তখনো যদি বেঁচে থাকে বলতে পারব চাঁদ আর মঙ্গল ঘুরে এলাম। ওই অন্য ছায়াপথের গ্রহ ঘুরে এলাম বললে কী বুঝতে কী বুঝবে কে জানে!

    ওরা আমায় লাল পাথরের দেশ মঙ্গলে নামালো। আমি চারি দিক তাকিয়ে দেখে নিলাম। তারপর দ্রুত কয়েকটা পাথর সাজিয়ে আমার নামের আদ্য অক্ষর নিয়ে বড় করে লিখলাম PS । বাংলায় লিখলাম না, 'প্রস'। লিখতে হাঙ্গামা আর কথাটা কে যে কীভাবে নেবে! পৃথিবীতে যত এলিয়েন বা অন্য গ্রহের প্রাণী আসে তাদের নিয়ে সিনেমাতে দেখায় ওরা ইংরাজিতে কথা বলে। এরপর এটা দেখে সিনেমায় ইংরাজি ব্যবহার উৎসাহ পাবে।

    এরপর আর কোথাও থামা নেই। আমাদের যান থেকে বৃহস্পতি শনি ছাড়া আরো অনেক গ্রহ দেখলাম। কোনটা কি মাথায় ঢুকল না। তারপর বিশাল একটা ঘূর্ণির মত টানেল। এটাই কি ওয়ার্ম হোল? ওরা ওদের ভাষায় এরকম কিছুই হয়তো বলল। ওদের উন্নত সভ্যতা আর যোগাযোগ মাধ্যম। আমি যা ভাবি ওরা বুঝতে পারে। শুধু ফেসবুকের স্ট্যাটাস আপডেট বোঝেনি। আমি ওদের বেশির ভাগ চিন্তার কিছুই বুঝতে পারিনি। ওদের বললাম পৃথিবীতে এত লোক থাকতে এত পন্ডিত এত শিল্পী ছেড়ে আমায় নিয়ে যাচ্ছ কেন? আমায় choose করলে কি ভাবে! ওরা বলল তুমি খুব কল্পনা করতে পার। সেই ছোটবেলা থেকে অলীক কল্পনা করে চলেছ। আজো এত বছর পরে একটু ও কমেনি। আকাশের দিকে তাকিয়ে তোমার তারাদের দেশে ঘুরে যেতে তীব্র ইচ্ছা হত। এখনো তাই হয়। আমরা এমন কল্পনা বিলাসী একটাও দেখিনি। বুড়ো বয়সে লোকে হয় কিসব ধর্ম চিন্তা করে নয়ত শরীর নিয়ে ভাবে। অথবা কি পায়নি তার হিসাব মেলাতে ব্যস্ত থাকে। আমাদের যন্ত্রপাতি যখন এত উন্নত ছিল না তখনো তোমায় চিহ্নিত করতে পেরেছি। আর এখনো তোমায় চিহ্নিত করা হয়েছে। তোমার চির নবীন কল্পনার সঙ্গে আমাদের অনেক কিছু মিলে গেলে তুমি তাজ্জব বনে গুম মেরে যাবে না। তাই নিয়ে যাচ্ছি আমাদের দেশে।

    ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ছ টায় এসেছি। এখন বেশ কয়েক ঘন্টা কেটে গেছে মনে হচ্ছে। করোনার যুগ শুরু হবার পর ঘড়ি পরি না। মোবাইল দিয়ে দরকারে কাজ সারি। আমায় তুলে নিয়ে যাবার সময় আমি মোবাইলটা ইচ্ছে করে ফেলে দিয়েছিলাম। একটা ক্লু রেখে যাবার জন্য। কেউ না কেউ ওটা পাবে আর বউ যখন উদ্বিগ্ন হয়ে ফোন করবে খবর পাবে যে আমি বিবাগী হয়ে চলে যাই নি। ভাবছি খিদে পাচ্ছে না তো! আমি সাড়ে সাতটায় রাতের খাবার খাই আর দশটার মধ্যে শুয়ে পড়ি। ঘুম পাচ্ছে। ওদের একজন জানাল আমাদের খেতে লাগে না তোমারও লাগবে না। এখানকার আবহাওয়ার মধ্যেই পুষ্টি দেওয়া আছে। আমাদের খেতে হয় না জল পান করতে হয় না। আমরা হিসু বা পটি করি না। দরকার হয় না। তোমার দু একদিন দরকার হবে। এখানে একটা পাত্র দেব করবে। আমরা ওই নিয়ে গবেষণা করব। এখন ওই কোণে শুয়ে পড়। বললাম, 'তোমরা ঘুমোবে না?' ওরা বলল, 'আমাদের ঘুমোতে লাগে না। তোমায় ঘুম পারিয়ে আমরা কিছু এক্সপেরিমেন্ট করব।' শুনেই ভয়ে আমার হিসু আর পটি পেয়ে গেল। ওরা আমায় একটা চেয়ারে বসিয়ে এসব করিয়ে সব সংগ্রহ করল। তারপর আমায় ঘুম পাড়িয়ে দিল।

    কতক্ষন ঘুমালাম জানি না। আমার গায়ের পোশাক ওদের মত সাদা আলখাল্লা আর গায়ের রং হয়ে গেল ওদের মত নীল। আমার প্রাইভেট এরিয়া পাল্টে গেছে। সেখানে যৌনাঙ্গ নেই। পিছনে পায়ুদ্বার নেই। ওরা বলল এখন থেকে এসবের দরকার নেই। থাকলে অব্যবহৃত হয়ে থাকবে। ওসব থেকে শরীরের ক্ষতি হবে। মনে পড়ল বহুকাল আগে মানুষ যখন ছোটাছুটি করে শিকার করে জীবিকা অর্জন করত ওদের অনেক খেতে হত। সেই অভ্যাস বশে আমরা এ যুগে ঘরে বসে কোন কায়িক শ্রম ছাড়া ওই যুগের মত খেয়ে যাই আর মোটা হই। ডায়াবেটিস ফ্যাটি লিভার সমস্যা ওখান থেকে। তবে আমার প্রশ্ন হল নর নারীর মিলন আর বাচ্চা কি ভাবে হয়? ওরা বলল আমরা শুধুই ভালোবাসি আর আবেগে চুম্বন করি। জড়িয়ে ধরি। ওটাই আমাদের যৌন মিলন। তোমাদের ওই কুৎসিত যৌন মিলন আমাদের নেই। আমার মনে পড়ল ছোট বেলায় আমিও এমন চাইতাম। ওই যৌন মিলন সম্পর্কে বন্ধুদের কাছ থেকে যখন জানলাম আমার গা ঘিন ঘিন করে উঠেছিল। ভেবেছিলাম আমি শুধু চুমু খাব আর আলিঙ্গন করব ভালোবাসার মানুষ কে। পরে সবই করেছি।

    যা বুঝলাম এদের নারী পুরুষ নপুংসক বা হিজড়া নেই। একটাই সেক্স। তার মানে পিতৃতান্ত্রিক মাতৃতান্ত্রিক নারীবাদী বিবাদ নিপীড়ন কিছুই এই জগতে নেই। সবার গায়ের রং নীল রক্তও নীল। সবাই অভিজাত। শ্রেণীহীন শোষণহীন সমাজ। আমাদের সমাজে যৌনাঙ্গ না থাকলে তাদের মানুষ ভাবা হয়না। সমাজে ঠাঁই হয়না। স্কুলে কলেজে পড়ে না। ছোটবেলা থেকে এদের দিকে তাকিয়ে ভাবতাম এদের যৌনাঙ্গ নেই বলে কি ব্রেন নেই! ওটাই তো আসল জানি। এরা বিজ্ঞানী হতে কি পারবে না? ওরা বলল তোমার এই ভাবনার কথা আমরা জানি। এটা একটা বড় কারণ যার জন্য তোমায় নিয়ে এসেছি তোমাদের ভাষায় যাকে বলবে 'হিজড়ের দেশে'। ভিতরে প্রশ্ন রয়ে গেল বাচ্চা কি করে কার গর্ভে হয়। হঠাৎ ওরা খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ল। মনে হল এসে গেছি।

    ঠিক তাই। আমাদের মহাকাশযান একটা গ্রহে এসে পৌছাল। এটাই পৃথিবী থেকে পঁচিশ লক্ষ আলোক বর্ষ দূরের গ্রহ। মনে হল বেশ তাড়াতাড়ি এলাম। কলকাতা থেকে সরাসরি লন্ডন যেতে যা সময় লাগে মনে হল তাই লাগল। তাহলে আইনস্টাইনের তত্ব ঠিক নয়। আলোর গতির অনেক বেশি গতিতে চলতে এরা জানে। নাকি ওই ওয়ার্ম হোল দিয়ে বিশাল কোন শর্টকাট হয়। বর্তমান থেকে ভবিষ্যৎ চলে যাওয়া যায়। এসব আমার মাথায় ঢোকে না।

    এরা একটা অদ্ভুত কথা বলল। আমি বুঝলাম মাল্টিভার্স । এক ব্রহ্মাণ্ডের laws of ফিজিক্স অন্য ব্রহ্মাণ্ডে খাটে না। অমোঘ absolute তত্ব বলে কিছু হয় না। আমার মাথা ঘুলিয়ে গেল। বেশি বোঝার বুদ্ধি আমার নেই। এটুকু আশা হল এত আলোকবর্ষ দূরে এসে যদি পৃথিবীতে ফিরি চেনা শোনা অনেককেই দেখতে পাব।

    আমাদের মহাকাশযান ওই গ্রহের আকাশে চক্কর দিতে লাগলো। জানি না আমাদের বিজ্ঞানীরা এই গ্রহ খুঁজে পেয়ে কোন খটমটে নাম দিয়েছেন কিনা। এখানকার উনিসেক্স মানুষজন নীল তাই আমি নাম দিলাম নীলাঞ্জনা। এটা মেয়েদের নাম তাই চাইলে নীলাঞ্জন বলা যায়। নয়তো ক্লীব লিঙ্গ করে নীলাঞ্জনম বলা যেতে পারে। সংস্কৃত যেটুকু পড়েছি সেই মত 'ফলম ফলে ফলানি' ক্লীবলিঙ্গের শব্দরূপ নাকি ধাতুরুপ? উফ কবে পড়েছি সব গুলিয়ে গেছে।

    এই গ্রহের চারিদিকে কালো জলের সমুদ্র আর আকাশ ধবধবে সাদা। বেশ উজ্জ্বল। তিনটে নিয়ন বাতির মত 'সূর্য'। সমুদ্রের মাঝে মাঝে বেশ বড় অনেকগুলো দ্বীপ। ওগুলোই এক একটা দেশ। অনেক গাছ পালা। লাল নীল হলদে সবুজ নানা রঙের। খুব রঙিন সব কিছু। এখানে বৃষ্টি হয় না বরফ পড়ে না। ঘর বাড়ি লাগে না। তিনটে সূর্য এমন ভাবে থাকে যে পুরো গ্রহে একই রকম সমান দিন সমান রাত্রি। রাতে গাছগুলো এক রকম মায়াবী আলো ছড়ায় তাতে সর্বত্র জ্যোৎস্নার মত একটা আলো থাকে। এসবের পিছনে বিজ্ঞানটা কী আমি বোঝার চেষ্টা করিনি।

    ওই দ্বীপগুলির একটায় মহাকাশযান নামলো। অনেক নীল মানুষ নানা রঙের ফুলের স্তবক বানিয়ে স্বাগত জানালো। তারপর একটা রঙিন ছাতার তলায় নিয়ে এলো। আমার গা হাত পায় হাত বুলিয়ে কিসব পরীক্ষা নিরীক্ষা করল। আমায় বলল তুমি এখানে বাতাসে ভাসতে পারবে না। এখানে বাতাস বেশ ভারী। এখানকার মানুষজন হেঁটে বা দৌড়ে চলা ফেরা করতে পারে আবার একটা লাফ দিয়ে একটু উপরে উঠে উড়ে উড়ে সব জায়গায় যেতে পারে। ডানা লাগে না। হাত দিয়ে বাতাস কেটে চলে। বাতাসে অনেক চোরা স্রোত আছে। ওগুল কাজে লাগিয়ে অনেক দ্রুত বহু দূরে যেতে পারে।

    আমায় অনেকগুলো এই জগতের 'মানুষ' দেখিয়ে বলল এদের থেকে দুজন পছন্দ কর। ওরা তোমাকে সঙ্গ দেবে। ওদের পিঠে চেপে তুমি আকাশে উড়তে পারবে। আমার চোখে যাদের নাক মুখ চোখ দেহ ভাল লাগলো তাদের মধ্যে দুজনকে নিলাম। ওরা এসে আমায় আদর করল। চোখে চোখ নাকে নাক ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে আবেশ ভরা চুমু খেল। সব অনুভূতি হল মনে। পৃথিবীতে থাকতে কোন মনের মত মেয়ের সঙ্গে এমন করলে মন থেকে অনুভূতি দেহের বিশেষ অঙ্গে চলে যেত। সুযোগ থাকলে যৌন মিলন হতে পারত। এখানে পুরো ভালোবাসা বা ভালোলাগা শুধু মনে। পৃথিবীতে ভালোবাসা নিয়ে যত কাব্য সব তো মনের সঙ্গে মনের যোগ নিয়ে। শেষে দেহের মিলনে কুৎসিত আকার পায়।

    আবার প্রশ্ন জাগলো এদের সন্তান হয় কিভাবে? ওই অনুচর দুজন বলল এই চুমুর সময় দুজনে দুজনের মুখের ভিতরে জিব ঢোকালে অনেক সময় একজনের মুখে বা দুজনের মুখেই ভ্রূণ সৃষ্টি হয়। ওরা ভালোবাসার তীব্রতা বাড়লে বাচ্চা চায়। তখন ওদের গ্রহের মাটি দিয়ে বানানো বিশাল একটা জালা বানিয়ে সমুদ্রের জল ভরে তাতে এই ভ্রূণ রাখে। সেটাই এক সময় বেড়ে ওঠে। তখন যাদের বাচ্চা তারা কোলে নেয় আদর করে খেলে। আস্তে আস্তে সেটা পূর্ণ বয়স্ক 'মানুষ' হয়ে ওঠে। আমাদের পৃথিবীতে আমরা বাচ্চা চাই আর মেয়েরা কত যন্ত্রণা সয়ে বাচ্চা প্রসব করে। অনেক নারীবাদীরা তাই ক্ষেপে থাকে। বড়লোকের আদুরে মেয়েরা তাদের দেহের যন্ত্রপাতি ঠিক থাকলেও প্রসব যন্ত্রণা সহ্য করতে চায় না। তাই টাকা খরচ করে। কোন গরীব মেয়ে তার হয়ে যন্ত্রনা ভোগ করে। এখানে এসব নেই।

    এদের জীবন জীবিকার জন্য কোন লড়াই নেই। কোন মার দাঙ্গা নেই। ধর্ষণ নেই। আছে শুধু ভালোবাসা। এই জগতে আছে শুধু ওই মানুষ আর গাছ। এছাড়া কোন প্রাণী নেই। ফুড চেন নেই। নেই কোন খাদ্য খাদক সম্পর্ক। আমাদের পৃথিবী নাকি কোন এক সর্ব শক্তিমান ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন। আমরা তাকে না মানলে উনি রাগ করেন। কোন দূত পাঠিয়ে মারধর করেন, মেরেও ফেলেন। মরার পর নাকি নরকে নিয়ে যান। যারা ওই দূতের কথামত বা তার অনুপ্রেরণায় এসব খুন খারাপি করে তারা কোন এক সুখের স্বর্গে যান। ভাবি ওনার যদি এত ক্ষমতা তাহলে খাদ্য খাদক সম্পর্ক না গড়ে এমন ব্যবস্থা করতেন যাতে বাঘ হরিণ না শিকার করে অন্য ভাবে বেঁচে থাকতে পারতো। মানুষ ও হাওয়া থেকে পুষ্টি নিতে পারতো এই নীল জগতের মত। আমাদের মাছ মাংস খাওয়া নিয়ে ভেগানরা এত হৈ চৈ করতে পারত না।

    আমার দুই অনুচর নিয়ে দেশটা রোজ দেখতে বেরোতাম। আসে পাশে হেঁটে ঘুরলেও দূরে যেতাম একজনের পিঠে বসে উড়ে উড়ে। অন্যজন সঙ্গে যেত। মাঝ আকাশে বাহন বদল হত। আমি ওদের ভালবাসতাম ওরাও আমায় ভালবাসতো। ওরা ওদের ভাষায় গান শোনাত। সুরগুলো অপূর্ব। ভাষা না বুঝলেও কথায় ভালবাসার পরশ আছে বুঝতে পারতাম। পুরো দেশটায় ছোট ছোট পাহাড় অনেক ঝর্ণা নদী হয়ে সমুদ্রে মেশে। কয়েকটা উঁচু পাহাড় আছে আর সেগুলোর মাথা ধবধবে সাদা বরফে ঢাকা। আমার অনুচরদের সাহায্যে ওই পর্বত চূড়ায় বরফের দেশে যেতাম। ওরা একটা স্বচ্ছ আলোর জ্যাকেট পরিয়ে দিত। ঠান্ডা লাগতো না।

    সমুদ্রে আমার একা নামা বারণ। ওরা পিঠে করে নিয়ে যেত। জল মুখে দিয়ে দেখলাম নোনা নয় একটু কসা আর মিষ্টি ভাব। একদিন একটা অঘটন ঘটে গেল। ওরা সমুদ্রে ডুব দিল। আমি যে পিঠে বসে আছি সাঁতার জানি না ওদের খেয়াল ছিল না। মরেই যেতাম। কোথা থেকে কেউ এসে উড়িয়ে নিয়ে গেল। আমার অনুচররা খুব কষ্ট পেল। পরে দুজনে আমায় জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো। এদেশে সবাই হাসে গায়। এই প্রথম কাউকে কাঁদতে দেখলাম।

    রোজ রাতে চারিদিকে সবাই নাচ গান করে। আমি কিছু পারি না। ওরা পীড়াপীড়ি করাতে জনগণমন বেসুরে একটু গাইলাম। তাতেই ওরা উল্লসিত। অনেকেই একে তাকে আবেগঘন চুমু খেয়ে মনে হল বাচ্চা কামনা করছে। হঠাৎ একজন আমার সঙ্গে এমন শুরু করল। তার নাচ গান আমার ভাল লাগছিল। সবাই হা হা করে উঠল। জানি না এদেশে ভিনদেশির সঙ্গে মিলন নিষেধ আছে কিনা। যাই হোক ও মুখ চেপে কোথায় চলে গেল। মাটির জালায় ভ্রূণ রাখতে গেল কিনা কে জানে। আমার অনুচর দুজন বলল ওরা হা হা করে উঠেছিল আমার যদি কোন ক্ষতি হয় সেই ভেবে। বা আমার মুখে যদি ভ্রূণ হয় আর আমি গিলে ফেলি, কি হবে ওদের বিজ্ঞান জানে না।

    এরা সারাদিন ঘুরে বেড়ায় খেলা করে। নয়তো কোন গাছ তলায় বসে বা শুয়ে গল্প করে। সারা রাত নাচ গান করে। ঘুমিয়ে পড়েনা। কিন্তু দল বেঁধে শুয়ে থাকে অনেক সময়। ভাবছিলাম জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা করে কারা আর কখন করে।

    এক দল বিজ্ঞানী সকালে এলেন আমায় দেখতে। কাল রাতের ঘনিষ্ঠ চুমু খাবার জের। বকাবকি করতে আসেনি। আমার থুতু বা স্যালিভা টেস্ট করবে। শুনলাম একটা ভ্রূণ তৈরি হয়েছে অন্য জনের মুখে। সে বাচ্চা চায়। সেটা ঠিক কী হবে বুঝতে এই বিজ্ঞানীরা এসেছেন। এদের কাছ থেকে জানলাম নাচ গান ফুর্তি করার বাইরে কিছু লোকের বিজ্ঞান চর্চার ইচ্ছা হয়। পেটের দায়ে কেউ কিছু করে না। নিজের আগ্রহে সব করে। জন সংখ্যা নিজের মত বাড়ে বা কমে। এই বিজ্ঞানীরা বাতাসে আসঙ্গ লিপ্সা কোন নীল গাছের ফুলের রেনু ছড়িয়ে বাড়ায়। এক লাল গাছের ফুলের রেনু ছড়ালে কমে। কাল রাতে নীল ফুলের রেনু ছড়ানো হয়েছিল। তার ফল আমিও পেলাম। কোন রাষ্ট্র নেই। বিজ্ঞানীরা বসে সব ঠিক করে।

    আশেপাশের দেশে ওই দুই অনুচরের সাহায্যে উড়ে গেলাম। এই দেশগুলোর মধ্যে কোন যুদ্ধ নেই। সীমানা বিরোধ নেই। সমুদ্রই সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে। এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের ভাষা সংস্কৃতি আলাদা। কিন্তু এক দেশ অন্য দেশের ভাষা সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা করে। যৌথ ভাবে নাচ গান করে। এরকম সম্মেলন একেক সময় একেক দেশে হয়। সবাই আনন্দ করে। আমি কয়েকটা দেশে গেলাম ঘুরলাম। অনেকেই দেখতে এলো। আদর করল। চুমু খেল। দু চার জায়গায় ভ্রূণ তৈরির মত গভীর চুমুও কেউ কেউ খেল। এগুলোর মধ্যে একটুও জোরজবস্তি ছিল না। আমি কারুর প্রতি আকৃষ্ট হলে সেও যদি আকৃষ্ট হয় তখন দুজনের মনের ইচ্ছা দুজনে বুঝতে পারি। এই ভাবেই এই গ্রহে অনেকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়েছে। জানি না ঠিক মত এদের নীল বাচ্চা হয়েছে কিনা।

    আমাদের আমাদের 'উন্নত' সাদা মানুষরা কালো মানুষদের খাঁচায় পুরে টিকিট কেটে দেখিয়ে রোজগার করত। এখানে এসব নেই। আমায় নিয়ে অমন করতেই পারত। করে নি। এসব নোংরামি এই পৃথিবীতে নেই। যখন নিয়ে আসে তখন ভেবেছিলাম এরকম কিছু হতে পারে। আর আমায় ওদিন ধরে আনলেও বেশ কদিন আগে আকাশে একটা অজানা উজ্জ্বল বস্তু দেখে আমি মনে মনে বলেছিলাম আমায় নিয়ে যা। আর ভাল লাগেনা এই জীবন। তখন ওরাই এসেছিল। প্রস্তুতি ছিল না। তাই নেই নি।

    এখানকার কোন দেশেই ঝড় বৃষ্টি হয় না। তবে নানা হাওয়ার স্রোত আছে। সেগুলো ব্যবহার করে এরা দ্রুত উড়ে বেড়ায়। আমি দুই বাহন ছাড়া উড়তে পারি না। রাতে হীরার ছোট ছোট টুকরো ঝরে। সোনার রেনু ও ঝরে। সব দেশেই যার শখ হয় এগুলো দিয়ে কিংবা গাছের ফুল পাতা দিয়ে সাজগোজ করে। এক ধরণের গাছ এখানে খুব হয়। সুন্দর সাদা পাতলা খোলস ছাড়ে এই গাছ। সেটা দিয়েই এদের ওই আলখাল্লার মত পোশাক যে যার মত তৈরি করে।

    এদের বিজ্ঞানীদের জিগ্যেস করলাম এদের কোন বিবর্তন তত্ব আছে কিনা। বলল হাজার কোটি পার্থিব বছর আগে এরা এখান থেকে দশ হাজার আলোক বর্ষ দূরে একটা গ্রহে থাকত। ওখানকার নক্ষত্র নিভে যেতে থাকে তখন ওরা খুঁজে পেতে এই গ্রহের সন্ধান পায়। সবাই একেক করে এই গ্রহে চলে আসে। বললাম,'তোমরা পৃথিবী ছাড়া আর কোন গ্রহে দ্বিপদ উন্নত জন্তু দেখেছো?' ওরা বলল, 'প্রাণ কয়েক লক্ষ গ্রহে আছে। বেশির ভাগ খুব হিংস্র। দ্বিপদ জন্তু বা মানুষ তোমাদের আর আমাদের গ্রহে ছাড়া এখনো দেখিনি। তোমরা বিজ্ঞানে আমাদের চেয়ে পঞ্চাশ হাজার বছর পিছিয়ে আছো। নিজেদের মধ্যে মারামারি কর। তাও আবার ভগবানের নামে। আমরা অনেক খুঁজে দেখেছি স্বর্গ যদি কোথায় থাকে তা আমাদের গ্রহে। আমরাই স্বর্গের বাসিন্দা। তুমি এখানেই এসেছ। এখানে শুধুই ভাব ভালোবাসা তুমি দেখেছো নিশ্চয়ই। আমরা যে কেউ ভগবান রূপে দেখা দিয়ে তোমাদের পুজো পেতেই পারতাম। এতে আমাদের কি লাভ হত? তুমি চাইলে তোমায় দূত হিসাবে পাঠাতে পারি।'

    আমি বললাম, 'কোন অবতার কি আজ পর্যন্ত আসে নি পৃথিবীতে?' বিজ্ঞানীরা হা হা করে ওদের গ্রহ কাঁপিয়ে হাসল। বুঝলাম উত্তরটা কি। আমার শখ নেই ঈসা মুসা বা শাক্যমুনি হয়ে পৃথিবীর গর্দভগুলোর পুজো পাওয়া। আমায় দেশে অনেক ছাত্র ছাত্রী ভালবাসে। এটাই অনেক। হঠাৎ আমার দেশের জন্য মন কেমন করতে লাগল। ওরা বলল, 'যেদিন যেতে চাইবে পৌঁছে দেব। তোমায় নিয়ে আমাদের গবেষণা শেষ।' বললাম, 'কী সেই গবেষণা?' ওরা বলল, 'তোমার বডি তোমার বউ আঁকড়ে কান্না কাটি করছে। তুমি তোমাদের ডাক্তারদের মতে কোমায় আছো। তোমার দেহ থেকে আত্মা বা তোমার হলগ্রাম নিয়ে এসেছি। তুমি এখানে কয়েকজন বাচ্চার জন্ম দিতে পেরেছো ওই বায়বীয় অস্তিত্ব দিয়ে। বাচ্চারা এখানকার প্রাকৃতিক নিয়মে দ্রুত বেড়েছে। ওই দেখ খেলা করছে। এই গবেষণা ব্যবহার করে আমরা আমাদের আত্মা অন্য গ্রহে পাঠাব। আমরাই ব্রহ্মান্ডের মালিক হব।'
    আমি বাচ্চাগুলকে আদর করলাম। দেখলাম নীল রঙের আমার শৈশব খেলা করছে। আমি যেতে ইচ্ছা করা মাত্র বাড়ি ফিরে এলাম। মন সেকেন্ডে পঁচিশ লক্ষ আলোকবর্ষ যেতেই পারে। কোন মহাকাশ যান লাগেনি কারণ ওই নীল মানুষগুলো সঙ্গে আসেনি।

    বাড়িতে খাটে শুয়ে আছি। ধুপধুনো দেওয়া। আমি কাশতে লাগলাম। সেই দৌড়সুন্দরী চিৎকার করে বলে উঠলো, 'কাকীমা! শিগগির এসো। কাকু(!) জেগে উঠেছে।'

    বউ ভেউ করে কাঁদতে লাগলো আর বিলাপ করতে লাগলো,'ঠাকুর! এদ্দিনে দয়া হল?' উফ কতবার বলেছি বউকে, 'তোমায় কাঁদলে খুব বাজে লাগে দেখতে। শোনে না। যাও মুখ ধুয়ে টিপ পরে এসো।'

    দৌড় সুন্দরী যা বলল তাতে বুঝলাম, ওদিন বিকট শব্দে বাজ পড়েছিল। আমি তার আলোর ঝলকানি দেখে জ্ঞান হারিয়ে কোমায় চলে গেছিলাম। ওই আমার মোবাইলে বউয়ের কল পেয়ে রিকশা করে বাড়ি নিয়ে আসে। তারপর থেকে প্রায়ই আসে আর কাকিমার কাছে রান্না শেখে। খায়।

    বাড়িতে ডাক্তার এসে দেখে গেছিল। হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছিল। বউকে অনেক আগেই বলে রেখেছিলাম কোথাও নেবে না। সব জায়গায় বিনা চিকিৎসায় ফেলে রেখে করোনার টেস্ট করে। তারপর রুগী মেরে টাকা পেটে। বাঁচলে পঁচিশ লক্ষ টাকা বিল হবে মরলে হয়তো পনের লক্ষ। ব্যাংকে টাকা নেই। দেউলে হয়ে যাবে। আমার শেষ ইচ্ছা মনে করে তাই করেছিল। ভাগ্যিস। তাই দেহটা ঠিক ছিল। আমি আন্ড্রোমেডা ঘুরে আবার ফিরে এলাম । কেউ বিশ্বাস করবে না। পুরোনো কাগজ ঘেঁটে দেখলাম আমাদের দেশ থেকে পাঠানো চাঁদের ক্যামেরা কদিন সচল ছিল। আমার সেলফি ওঠেনি। ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিল ওদের চেষ্টায় ক্যামেরা সচল হয়ে ছবি পাঠাচ্ছে। অস্পষ্ট ছবি। একটা ভুতের মত কিছু দেখে ভেবেছে ক্যামেরায় ধুলো বালি দিয়ে এরকম কিছু উঠেছে।

    এখন টাকা জমাচ্ছি। মেয়ের কাছেও ডলার চেয়েছি। একটা খুব শক্তিশালী টেলিস্কোপ কিনব আর খুঁজব মঙ্গলে PS লেখাটা। খুঁজে পেলে এই গল্পটা বিশ্বাসযোগ্য হবে। গালগল্প থেকে ভ্রমণ কাহিনী হয়ে উঠবে।
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • MP | 2401:4900:7080:e913:7773:2663:17ae:***:*** | ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:২১540526
  • যথেষ্ট ভালো কল্পনাশক্তি আপনার l আরো লিখতে থাকুন l অভিনন্দন l 
  • PRABIRJIT SARKAR | ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:৫৫540528
  • গল্প পড়ে উৎসাহ দেবার জন্য অজস্র ধন্যবাদ!
  • PRABIRJIT SARKAR | ৩১ মে ২০২৫ ১৮:২৬731807
  • এই গল্পটা চ্যাটজিপ্ট দিয়ে অনুবাদ করালাম 
     
    Here is the English translation of the Bengali piece “আন্ড্রোমেডা ছায়াপথ ঘুরে এলাম” (A Trip Through the Andromeda Galaxy) by Prabirjit Sarkar:

    ---

    A Trip Through the Andromeda Galaxy
    Prabirjit Sarkar

    I didn’t get to see the dewdrops next to the house. Most countries in the world remain unseen. Yet, I ended up traveling beyond our galaxy, the Milky Way, to a planet in the neighboring Andromeda galaxy. Or rather, I didn’t go there—I was taken. Let me explain.

    In the COVID era, I stopped traveling. My outings were limited to the Central Park of Golf Green and a few newly sprouted cafes nearby. Every evening, once the sun had set, I’d go out—sometimes just to walk. But I didn’t enjoy walking round and round the park like many others. Some jog, some power-walk, some alternate between jogging and walking. Most of the women just circle the park, probably afraid to venture down other paths. I find it monotonous. So, I walk one loop, then head to a café. After coffee, I walk one more loop and head home.

    During my first loop, I often see a few stylish young women—some striking, some ordinary. I’ve given them nicknames: “Bucktooth Girl,” “Big-Nose,” “Petite Beauty.” One of them runs in a way that I find oddly captivating. On days she doesn’t appear, I wonder why. Life continued in this mundane rhythm.

    One day, just as my eyes met that runner’s, there was a blinding flash of light. The girl, frightened, clutched me. Before I could grasp what was happening, a circle of light sucked me in.

    I came to inside a spacecraft, surrounded by tall blue humanoid beings. Whenever I visit a foreign country where I don’t know the language, I speak in Bengali. These beings responded in their own way, but I could somehow understand them. Not enough to discuss Foucault or Derrida, but enough to get by.

    In plain Bengali, I asked, "Where are you taking me?"

    They showed me a giant screen indicating that they came from the neighboring galaxy, what we call Andromeda. It’s 2.5 million light-years from Earth. That is, even if one traveled at the speed of light—186,000 miles or over 300,000 kilometers per second—it would take at least 2.5 million years to reach. I never studied science deeply and was never good at math. If I were, perhaps I’d have become an astronomer. I tried economics instead, but poor math held me back.

    Still, I had heard of two concepts. One: Einstein’s theory that no object can exceed the speed of light. Two: the theory of relativity—that time slows down for those moving at high speed. So, someone might return from a journey near the speed of light after ten years, only to find centuries have passed on Earth.

    I recalled reading something similar in the Gita—that for Brahma, who roams the universe at immense speed, a moment equals a hundred thousand years on Earth. Perhaps the ancient authors had imagined such relativity. Because of this time dilation, aliens who visited Earth 5,000–7,000 years ago haven’t returned—they’d only experience a year while millennia passed here. Some thinkers like Deniken even suggested they were mistaken as gods.

    I realized that if I returned, I might not find my wife or daughter. My wife had just made me tea. My daughter lived in Boston, and I hadn’t seen her in a while due to COVID. Conditions had improved, and she was to visit in July. But now, I was off to another galaxy.

    I asked the beings to let me briefly visit a few places. Their technology could do anything. I told them, “Please, take me to see my daughter—even for five minutes.” They understood everything, even if they didn’t know Facebook or social media.

    It was 6:00 PM in India and 8:30 AM in Boston. Suddenly, I found myself at my daughter’s apartment door. Whether I was physically there or just a hologram, I don’t know. I rang the bell, and my daughter opened the door, spoon in hand. “Dad? How did you get here? Mom didn’t say you were coming!”

    I said, “Let me in, and I’ll explain.”

    Her two pet cats reacted strangely. I remembered we only perceive about 5% of reality—perhaps they could see or hear things we couldn’t. I wanted to give my daughter a hug, but she started a WhatsApp video call with her mom. My wife burst into tears: “Your father must be dead and appearing as a ghost!”

    I could only say one thing to my daughter: “Alien abduction.” I hoped she could explain to her mom. I regretted not hugging her and wasn’t sure whether my body had traveled or just my soul or hologram.

    The aliens were in a hurry. In the spacecraft, I saw U.S. F-16s firing missiles at us—missiles that simply vanished. I even saw one jet disappear. We then approached our own Chandrayaan moon lander, now dormant. I hoped that, if I appeared in its camera, scientists wouldn’t dismiss me as a ghost or glitch.

    Surprisingly, the aliens surrounded me with a protective field so I wasn’t cold on the Moon or Boston. I thought of posting on Facebook—but these beings didn’t know what Facebook was.

    Then I asked to land on Mars. I wanted to leave proof. I arranged some red stones into the initials "PS"—my name. I didn’t write it in Bengali, just "PS" in English, like in sci-fi movies. I hoped future telescopes might spot it.

    Then we saw many planets—Jupiter, Saturn, and others I couldn’t name. We entered a vast swirling tunnel. Was it a wormhole? Their advanced tech let them interpret my thoughts, though I understood little of theirs. I asked, “Why me? Of all people?” They said, “You’ve been dreaming wildly since childhood—of stars, space. You’ve never stopped. We’ve tracked you for ages. Your imagination matches ours.”

    I had left at 6:00 PM. Hours passed, but I had no idea how many. I hadn’t worn a watch since COVID began. I’d deliberately dropped my phone so someone would find it and know I hadn’t just disappeared.

    I felt no hunger or fatigue. One of them told me, “You won’t need to eat. The air here provides nourishment. You won’t need to excrete either. For the first few days, we’ll collect your waste for study.” I was terrified. They sat me in a chair, collected everything, then put me to sleep.

    When I awoke, I was wearing a white robe like theirs. My skin had turned blue, like theirs. My genitals and anus were gone. They said, “You don’t need these here. They’ll only decay unused.”

    I remembered, as a child, being disgusted when I first heard how human reproduction worked. I’d wanted only to kiss and hug someone I loved. Now that’s all they did here—kiss and embrace. They had no gender, no patriarchy, no oppression. Everyone was elite. A classless, exploitation-free society.

    Here, people didn’t reproduce through sex. They kissed, and sometimes a fetus formed in one or both mouths. They placed it in a clay vessel filled with seawater, and the baby grew there. No pain, no womb, no labor. Feminists would love it here.

    No one worked for survival. They lived for love and curiosity. Scientists used pollen from blue trees to increase libido, red ones to reduce it. No states, no borders, no wars.

    I traveled across this world with my two companions, flying on their backs. We grew close. I heard their songs—tender and moving, even though I couldn’t understand the words. In one moment, someone even kissed me deeply, perhaps forming a fetus. Scientists later said they’d track what became of it.

    They told me I was in a coma on Earth. They’d taken my soul or hologram. I’d fathered a few children here. Those children played nearby. “We’ll use this research to send our own kind to other worlds,” they said. “We will become masters of the universe.”

    Eventually, I wished to return. As soon as I thought it, I was home.

    I was lying on my bed, incense burning. I started coughing. The “runner beauty” screamed, “Auntie! Come quick! Uncle’s awake!”

    My wife cried, “Oh Lord! You’ve finally shown mercy!”

    I muttered, “You look terrible when you cry. Go wash your face and put on a bindi.”

    Apparently, I’d fainted from a lightning strike that day. The runner had found my phone ringing with my wife’s call and brought me home. A doctor had visited. I had told my wife not to hospitalize me—too expensive, often fatal. They’d honored my wish.

    I had returned from Andromeda. No one would believe me. I searched old news—ISRO’s moon cameras had resumed briefly. One image showed something like a ghost. They thought it was dust.

    Now I’m saving up. I asked my daughter for dollars too. I want to buy a powerful telescope. I’ll look for the letters “PS” on Mars. If I find them, maybe this won’t just be a fantasy. Maybe it will become a story of cosmic travel.

    ---

    Let me know if you'd like a shortened version 
  • কালনিমে | 103.244.***.*** | ৩১ মে ২০২৫ ২০:১৪731808
  • ভালোই - খানিকটা Kurt Vonnegut er 2BR02B র মত মিল পেলাম 
  • PRABIRJIT SARKAR | ৩১ মে ২০২৫ ২০:১৮731809
  • পড়িনি ওই গল্প নাম ও শুনিনি। মিলটা কাকতলীয়।
  • কালনিমে | 2402:3a80:4304:a45e:444a:5d73:aadf:***:*** | ০১ জুন ২০২৫ ১০:৩৮731820
  • আমি মিল এর কথাই বলেছি - আপনার লেখা টাকে inspired বলিনি
  • PRABIRJIT SARKAR | ০১ জুন ২০২৫ ২০:২৩731830
  • চ্যাট জিপিটি তে ইংরেজি অনুবাদ পুরো আসেনি। বেশ কিছু অংশ বাদ গেছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি প্রতিক্রিয়া দিন