এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা   সমাজ

  • বর্তমান বাংলাদেশ 

    দীপ
    আলোচনা | সমাজ | ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | ৪১ বার পঠিত
  • বর্তমান বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করলেন সৌরদীপ চট্টোপাধ্যায়। মহাপণ্ডিতদের উদ্দেশ্যে নিবেদন করলাম।
    -------------------------------------------------------------------
     
    কথাটা একটু কানে লাগতে পারে। তবে খুব একটা অতিরঞ্জন নয় বোধ হয়। বিদেশনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, কূটনীতি এগুলো খুবই গোলমেলে ব্যাপার। এগুলো নিয়ে বিস্তর পড়াশুনো করতে হয়। লাগাতার চর্চা লাগে। অভিজ্ঞতা লাগে। কিন্তু এইসবের বাইরে আছে আমাদের প্রতিবেশী বাংলাদেশ। বস্তুত, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে জানতে বা বুঝতে গেলে মোটের ওপর চোখকান খোলা রাখলেই চলে। খুব বেশি ভারি ভারি চর্চার দরকার নেই। এই যে আজ বাংলাদেশ উত্তাল—এটা কিন্তু খুব অভাবনীয় কিছু নয়। এটা হওয়ারই ছিল। আওয়ামি সরকার পড়লেই যে মোটামুটি রাজশাহী থেকে চাটগাঁ অবধি সর্বস্তরে কট্টরপন্থীরা মাথাচাড়া দেবে, এটা আন্দাজ করতে খুব বেশি ইতিহাস-ভূগোল-রাষ্ট্রবিজ্ঞানের চর্চা না থাকলেও চলে। কারণ দেশটা বাংলাদেশ। সেখানে এটাই দস্তুর। হাসিনা-সরকারকে সরিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক, যুক্তিবাদী, গণতান্ত্রিক সরকারের চিন্তা করাটা মোটামুটি আকাশকুসুমের চাইতেও এককাঠি ওপরে। হাসিনা-সরকারের আমলেই কি এগুলো ছিল? পুরোপুরি নয়। কিন্তু তাও ওই, একটু-আধটু করে ছিল। মন্দের ভাল আরকি। কিন্তু এখন যেটা হয়েছে, সেটাকে মাৎস্যন্যায়ের সঙ্গে তুলনা করলেও কম বলা হয়। সবচেয়ে বড় কথা, এই মৌলবাদীদের উত্থান ভারত সরকারের পক্ষে এবং বিশেষ করে সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গ-ত্রিপুরা-অসম-মেঘালয়ের জন্য যথেষ্ট চিন্তার। 

    অথচ তারপরেও, খুব অদ্ভুত লাগত, যখন দেখতাম, বাংলাদেশের ঐ 'ছাত্র আন্দোলন' চলার সময় কলকাতার বেশ কিছু প্রগতিশীল, শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীদের দু'হাত তুলে ওই আন্দোলনকে 'দ্বিতীয় স্বাধীনতার লড়াই' ইত্যাদি বলে নেত্য করতে। এনারা ঠিক কোন রাস্তায় চিন্তা করেন, জানতে ইচ্ছে হয়। বাংলাদেশ-সম্পর্কে খুব অল্প ধারণা থাকলেই আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে কারা আছে জানতে পারা যায়। তারপরেও আওয়ামির অবর্তমানে ঠিক কোন পথে, কোন রাস্তায় এই বিচিত্র 'স্বাধীনতা' আসবে, কীভাবে তা দ্বিতীয়বার স্বাধীন করবে বাংলাদেশকে, এগুলো ব্রাহ্মীশাক, পাকা পেঁপে, কাঁচকলাসেদ্ধ ও প্রচুর ফলমূল খেয়েও বোঝা মুশকিলের। কিন্তু তাও তাঁরা ভেবেছিলেন। উদ্বাহু হয়ে নিয়মিত পোস্ট করতেন। কলকাতার বুদ্ধিজীবী মহলে ওই আন্দোলন নিয়ে যথেষ্ট আবেগ ছিল। তারপরে হাসিনা-সরকারের পতন হয়েছে। বাংলাদেশ জুড়ে কী চলেছে তা শ্যামলাল থেকে যদুলাল সবাই দেখেছে। সংখ্যালঘু হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানদের অস্তিত্বটাই বিপদের মুখে। যথারীতি, এপারেও এবার পাল্টা সাম্প্রদায়িক গলা চড়ানো বাড়ছে। 

    এই ঘটনার দায় অবশ্যই আওয়ামি নেতারা এড়াতে পারেন না। এরকম বাস্তব-বিচ্ছিন্ন হয়ে, নির্বাচন না করিয়ে দিনের পর দিন ক্ষমতা কুক্ষিগত করে না রাখলে অবস্থা এতটা চিকিৎসার বাইরে যেত না। কী হত, নির্বাচন করিয়ে, ক্ষমতা হারিয়ে একটা দফা বিরোধী আসনে থাকলে? হয়ত দেখা যেত বিএনপি ক্ষমতায় এসে নিজেরাই একটা পুরো দফা শেষ করতে পারত না। উল্টে আওয়ামিই আবার ক্ষমতায় আসত। বা সেটা না হলেও, এরকম নিশ্চিহ্ন তো হয়ে যেতে হত না! কিন্তু আপাতত যা চলছে, সর্বস্তরে এর প্রতিবাদ হওয়া দরকার। ইসকনের চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে সম্পূর্ণ ভুলভাল একটা অভিযোগে দেশদ্রোহিতার মামলা দেওয়া হয়েছে। হাসিনা-সরকারের পতনের পর থেকেই সারা বাংলাদেশ জুড়ে এরকম অজস্র, জলের মত মামলা দায়ের হয়েছে। যদ্দুর যা কানে আসছে, পুলিশ-প্রশাসন বলে প্রায় কিছুই নেই। প্রায় জোর যার মুলুক তার অবস্থা। জোর কাদের অবশ্যই বলার জন্য পুরস্কার নেই। আশার কথা যে, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পরে সারা পৃথিবী জুড়ে প্রতিবাদ হ'তে শুরু করেছে। এর সঙ্গে ইসকনের ভক্ত হওয়া বা না হওয়ার সম্পর্ক নেই। মৌলবাদের বিরুদ্ধে আর সংখ্যালঘুর অধিকারের পক্ষে থাকলে সবার আগে এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে গলা তোলা দরকার। একমাত্র আন্তর্জাতিক চাপ না তৈরি হলে এই অরাজকতা আর কোনওভাবেই আটকানো যাবে না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন