এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • মার্কিন মুলুকে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা

    PRABIRJIT SARKAR লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৬ নভেম্বর ২০২৪ | ৯১ বার পঠিত
  • মার্কিম মুলুকে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতার ওপর রম্য রচনা

    #আপনা_টাইম_আয়েগা
    #মানস_দে

    সারা বিশ্ব নাকি তাকিয়ে আছে মার্কিন মুলুকে কে আসে - সুন্দরী কমলা না বৃদ্ধ দোলন। সে যেই আসুক অনেকের মতো আমিও গেছি ভোট দিতে। না আছে লাইন, না আছে পুলিশ, না আছে পার্টির পোলিং এজেন্ট। ভাবলাম ভুল জায়গায় এসেছি। চলে যাবার আগে জিজ্ঞেস করলাম

     - দাদা ভোটটা কোথায় হচ্ছে?  

    - এখানেই।

    আমি আবার লাইন না থাকলে বুঝতে পারি না কোথায় দাঁড়াতে হবে। আমি বলতে যাচ্ছিলাম - দূর মশায় আমাদের দেশে এজেন্ট থাকে, পুলিশ থাকে, লাইন থাকে বুঝতে কিচ্ছু অসুবিধা হয় না। সবাই কত সাহায্য করে। বাড়িতে টোটো আসে নিতে। আগের রাতে মাংস টাংস খাওয়ায়। এখানে তো কিছুই নেই। শুধু শোনা কোথায় বিশ্বাস করে ভোট দিতে এসেছি। দেখে বিশ্বাসই হচ্ছে না যে ভোট হচ্ছে। কিছু বললাম না। অনেকটা ইংরেজিতে বলতে হবে বলে স্রেফ চেপে গেলাম। 

    সে যাই হোক আমাকে একজন একটা হলের মধ্যে ঢুকিয়ে দিল। দেখি চার পাঁচজন লোক বসে আছে। কুল কাল। আমাকে বললো ড্রাইভিং লাইসেন্স দাও। আমি দিলাম। তারপর কি সব করে ক্রেডিট কার্ডের মতো একটা কার্ড দিল। আমি ভাবলাম কিছু টাকা পয়সা নিশ্চয় আছে এই কার্ডে। ভোটার আগে টাকা দেওয়াই তো দস্তুর। আমি ওটা নিয়ে চলে আসতে যাচ্ছিলাম, একজন বলল কি হলো ভোট না দিয়ে কোথায় চলে যাচ্ছ? তারপর হটাৎ করে একটা কিয়স্কের সামনে দাঁড় করিয়ে দিল।

    আমি কার্ডটা ঢোকাতেই দেখি এ তো ব্যালট নয়, রীতিমত কোয়েসচেন পেপার। বেশ কয়েকটা বুঝতে পারলাম কি বলতে চাইছে। আমি এতদিন জানতাম দুজন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। কিন্তু কোয়েসচেন পেপারে দেখলাম আরো নাম আছে। সে যাই হোক স্ক্রল করে নিচে আসছি আর দেখছি অনেক প্রশ্নের উত্তর অজানা, বুঝতেই পারছি না কি উত্তর হবে। হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ অমুক ডিস্ট্রিক্ট , তমুক ডিস্ট্রিক। আমার মনে হলো ঠিক মতো প্রিপেয়ার করে আসা হয়নি। আমাদের দেশে বলে দেয় কোন অপশন সিলেক্ট করতে হবে। ভাগ্য ভালো থাকলে অন্য কেউ পরীক্ষাও দিয়ে দেয়। তাই কোন চাপ থাকে না। এখানে নো হেল্প মাইরি। যাই হোক কয়েকটা জায়গায় দেখলাম একটাই মাত্র অপশন। জানিনা কেন ওটা দিয়েছে। কনফিডেন্টলি সেখানে ক্লিক করে দিলাম। তারপর দেখলাম কাউন্টির জন্যে আবার কিছু প্রশ্ন। ক্লাসে এগুলো নিয়ে কোন আলোচনাই হয়নি। শেষের প্রশ্নগুলো আউট অফ সিলেবাস ছিল আমি সিওর। সংবিধান সংশোধনের ওপর  ইয়েস-নো অপসন। পুরোটা মাথার ওপর দিয়ে বেরিয়ে গেল। আমি জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিলাম কোন নেগেটিভ মার্কিং আছে কি না। কাউকে পেলাম না। সামনে, পেছনে, পাশে সবাই দেখলাম এক মনে পরীক্ষা দিচ্ছে। তাই কিছু উত্তর দিলাম কিছু ছেড়ে দিলাম। 

    শেষমেশ প্রিন্ট করে অভ্যাস বসত মুড়তে যাব। আমাকে একজন বললো - হেই মুড়ো না। এখানে ঢুকিয়ে দাও। বড় ট্র্যাশ কানের মতো একটা জায়গায় ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছি কখন আঙুলে কালি লাগাবে। আমাকে একজন জিজ্ঞেস করল কেন দাঁড়িয়ে আছি। আমি জিজ্ঞেস করলাম - নো ইন্ক্ ইন ফিঙ্গার? ও শুনলো নো ইন্ক্ ইন প্রিন্টার। তারপর চেঁচিয়ে বাকিদের বললো - হেই, নো ইন্ক্ ইন প্রিন্টার। আমি আম্পায়ার যেভাবে আউট দেখায় সেই ভাবে আঙ্গুল দেখিয়ে বললাম - দেয়ার ইজ ইন্ক্ ইন প্রিন্টার বাট নট ইন মাই ফিঙ্গার। একজন ভারতীয় ছিল যারা ভোট পরিচালনা করছিল। ও বললো - "ইয়ার আম্রিগা বহুত কঞ্জুস দেশ হ্যায়। ইঁহা ভোট মে কুছ নেহি মিলতা হ্যায়। কালি ভি নেহি।" কি আর করা যাবে। মনে মনে ভাবলাম - ঠিক আছে। অকৃতজ্ঞ। ফ্রীতেই ভোটটা নিয়ে নিল। আপনা টাইম ভি আয়েগা।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত প্রতিক্রিয়া দিন