এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • আর্জিকরের দ্রোহ, নাকি গদির মোহ? 

    দধীচি মুনি লেখকের গ্রাহক হোন
    ২০ অক্টোবর ২০২৪ | ৬৫২ বার পঠিত | রেটিং ৪.৭ (৩ জন)
  • বাংলা কি ধ-র্ষ-ণে-র মুক্তাঞ্চল? তথ্য কী বলে?

    সারা ভারতে জনসংখ্যার হিসেবে রাজ্যপ্রতি ধ-র্ষ-ণে-র যা গড়, তার এত তৃতীয়াংশ ঘটে বাংলায়।তার মানে এই নয় যে ধর্ষণ এখানে ঘটেই না। অবশ্যই ঘটে। মাঝে মধ্যেই ঘটে। কিন্তু যা ঘটছে, তার আরও তিনগুণ ঘটলে সেটা সারা ভারতের গড়ের সমান বা কাছাকাছি হতে পারবে। আর একটা অক্ষে ভাবলে, বাংলার প্রতিটি লোকালয়ের মানুষ তার জীবদ্দশায় একটি বা দুটি ধ-র্ষ-ণ ঘটতে দেখে থাকতে পারেন। সেটাও কিন্তু হওয়া উচিত নয়। কিন্তু বিষয়টা যদি হয় আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলাকে ইচ্ছাকৃত ছোট করে দেখাবার, তবে অঙ্ক কষে দেখানো ছাড়া আর উপায় থাকে না।

    এবার প্রশ্ন আসতে পারে, তার মানে কি আর্জিকরের নোংরামিটিকে পরোক্ষে বর্ম দিতে চাইছি? যদি সে আক্রমণ আসে, তার উত্তরে বলব, আমার চাওয়া বা না চাওয়াতে এই বিষয়টির গুরুভার বিশেষ বদল হবার নয়। কারণ এটি ইতিমধ্যেই সাংবিধানিক বিচারপদ্ধতিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে। পেয়েছে, কারণ ভিকটিম চিকিৎসক। সিভিল তাই সোসাইটি নড়ে চড়ে বসেছেন। আর এরকম সরকারী হাসপাতালের মধ্যে এ হেন অঘটন ইতিমধ্যে বড় একটা ঘটে নি। রাষ্ট্র তাই একদম স্বাভাবিক প্রতিবর্ত দেখিয়েছে। অথচ, একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, জয়নগর আর নিউজ হেডলাইনে নেই। কেন নেই, সেখানেই রাজনীতি। আরেকটু ভেঙে বললে, ফ্যালাসি। আর সেখানটাতেই মূল খেলা।

    অনেকে বার বার অভিযোগ তুলছেন, একটা পক্ষ মমতা ব্যানার্জিকে ঢাকতে তার কীর্তি নরম করে দেখাতে চাইছেন। আমার যাবতীয় পোস্ট তো বাংলাতেই করে থাকি; তাই এক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে হয় আমার ভাষা স্বচ্ছ নয়, না হলে কিছু পাঠক আজকাল বাংলা পড়তে পারছেন না, অথবা, চাইছেন না। বস্তুত, প্রশাসনিক অপদার্থতাকে আড়াল করবার মত কোন অবকাশই এ ঘটনায় নেই। একজন সিভিক হাসপাতালময় যেখানে খুশি ঘুরছেন, লীলা করে বাড়ি ফিরে ঘুমিয়েও পড়ছেন, অথচ কেউ কিছু জানতে পারছে না, এর দায় শতকরা একশো ভাগ প্রশাসনের। মেয়েটির মা বাবাকে তিন ঘন্টা বসিয়ে রাখার মত ধৃষ্টতা, ন্যূনতম সংবেদ না দেখাবার মত অভদ্রতাও প্রশাসনের। সন্দীপ ঘোষের মত বিষকে এত কিছু হবার পরও বার না করে আরেক হাসপাতালে সরিয়ে দেওয়া এই ঘটনায় মমতা ব্যানার্জির অন্যতম আর প্রধান ভুল।এই অবধি একদম ঠিক। কিন্তু এক্ষেত্রে যা ঘটানো হয়েছে তা হল, আলাদা আলাদা করে ঘটা কিছু সত্যকে কল্পনা দিয়ে গেঁথে একটা বৃহত্তর সত্যের বুদবুদ তৈরী করার চেষ্টা এবং প্রচার। আর অনবরত, অবিরত অপপ্রচার। সাধারণ মানুষের আবেগের পুঁজিকে আশ্রয় করে এই প্রচার একটা পক্ষের নিছক অরাজনৈতিক বলে মনে হয় নি। আমার তো লাগেই নি।বরং মনে হয়েছে, ঘটিত ধর্ষণের অপরাধ যেমন রাষ্ট্রীয়, এই প্রচারিত আবেগকলও ঠিক ততটাই রাষ্টীয়। শুধু রাষ্ট্রের ফ্রেমটা আলাদা। এইটুকু ধরিয়ে দেবার চেষ্টা করার পর থেকেই শুরু হয় ট্রোল ট্যাকটিস। এই আমার প্রোফাইলেই আমার কলেজের এমন অনেকে ট্রোল করেছেন যাঁদের এটাও মনে ছিল না ট্রোলের বর্ম আমার কলেজ লাইফ থেকেই রয়েছে। এরা এককালে আমার তুলনায় কমনীয় আর মাংসল বুকে খামচি কেটে ট্রোল করতেন, তারপর রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া নিয়ে, সিগারেট মদ না খাওয়া নিয়ে, শেষে কলেজে নাটক করা নিয়ে আর তারও পর এদের ragging সংস্কৃতির বিরোধ করা নিয়ে করতেন। কাজেই এই সামান্য ট্রোল নিয়ে আমার বিহ্বল হবার কিছু ছিল না। হইও নি।এদের মলম এবং মালিশের পদ্ধতি আমি জানি। বরং আমি অতিশয় প্রীত যে এই এক সময়কার দাগী চতুষ্পদেরা আজকাল কনসেন্টকে এত গুরুত্ব দিয়ে দেখেন। তাদের এই উত্তরণেই আমি কৃতার্থ।

    সেজন্যেই প্রতিটি ফ্যাক্ট আর ন্যারেটিভকে এখানে ডিকোড করা দরকার, এমন বারে বারেই মনে হয়েছে।যেমন ন্যারেটিভ এক - পুলিশ প্রমাণ লোপাট করেছে। অথচ, যারা কোলকাতা পুলিশকে চেনেন, তারা জানেন সামাজিক ক্ষমতার পুঁজি না থাকলে পুলিশের ব্যবহার এই রকমই উদ্ধত আর অসভ্য। মেয়েটির বাবা মা যার সম্মুখীন হয়েছেন, মেসো পথ দুর্ঘটনায় চলে যাবার পর আমার ঘনিষ্ট বন্ধুর পুলিশের সাথে ডিলিংয়ের বয়ান একদম উনিশ বিশ। তাও, সেই বন্ধুটির সাথে তাদের কাউন্সিলার ছিলেন। তিনি নানান খাতে ঘুষের অঙ্ক কম করে দিতে সাহায্য করেছেন!

    অথচ, দেখানো হল, পুলিশ শুধু এই ঘটনাটিতেই এমন করছে। অর্থাৎ, গভীরে গুরতর কিছু রয়েছে। আমি তো বরং বলব এই কেসে কোলকাতা পুলিশ অনেক নরম ছিল। মেয়েটির বাবাকে কাজকর্ম করার জন্য টাকা দিতে গেছিল এমনও শুনছি। এতেও অনেকের সন্দেহ জেগেছে। তবে আমি এমনটাই হতে দেখেছি বরাবর, আর নিজেও পরিচিত কারো অঘটন ঘটলে হাতে নগদ আছে কিনা আগে প্রশ্ন করে থাকি, তাই সমস্যার বিশেষ কিছু পাই নি। কারণ মনে হয়, সহানুভূতি ইত্যাদির চাইতে ওটিই আগে প্রয়োজন।

    ন্যারেটিভ দুই - মমতা ব্যানার্জি দশ লক্ষ টাকা দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেয়েছেন। আমিও তাই বিশ্বাস করেছিলাম। পরে ভিডিও শুনে বুঝলাম, উনি ক্ষতিপুরণ দেবার কথা বলেছেন। এটা দেওয়া সরকারী কর্তব্য - বিশেষত যখন সরকারী হাসপাতালে অন ডিউটি এমন কিছু ঘটে। তবে বলেছেন খুব কেজো ভাবে।ওনার ভাষা এই রকমই। উনি তো আর এলিট নন! কিন্তু দুঃখজনক ভাবে, ওনার প্রভাবেই হয়তো, ফেসবুকীয় এলিটরা তাদের কথোপকথনে ও লেখনীতে এই ধরনের বাংলায় ক্রমশ অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। একাডেমিক বাংলা লিখলে তারা আর পড়ে বুঝে উঠতে পারছেন না!

    ন্যারেটিভ তিন - পিএম রিপোর্টের ভ্রান্তি এবং জোর করে দাহকার্য। পিএম নিয়ে নতুন করে লেখার কিছু নেই কারণ এটা সিবিআই বেশ কয়েকবার ক্রসচেক করিয়েছে ইতিমধ্যেই। এমন কী, পবিত্র জুনিয়ার ডাক্তাররাও যে পিএমে সন্তুষ্ট ছিলেন তার নথি ইতিমধ্যেই ভাইরাল। এতে ভুল আছে ধরে নিলে বুঝতে হবে এইমস থেকে শুরু করে রাষ্টীয় স্বাস্থ্য সংগঠন গভীর দুর্নীতিতে আচ্ছন্ন। সেক্ষেত্রে বিলেতে চিকিৎসা করানো ছাড়া আর উপায় থাকে না। আর তা না চাইলে, গোয়েন্দা গিন্নিদের হোয়াটসঅ্যাপ স্ক্রিপ্ট আরও যুক্তি সঙ্গত হওয়া দরকার।

    দাহকার্যের তাড়াহুড়ো হয়তো ঘটেছিল। পুলিশ আরও সময় দিতে পারত।দেওয়া উচিত ছিল।তারা পঁযতাল্লিশ মিনিট বাড়িতে শরীরটি রাখে। কথা হচ্ছে, এটাও তাদের স্বাভাবিক প্রতিবর্ত।যারা মর্গ থেকে পথ দুর্ঘটনায় মৃতের দেহ বার করতে পরিবারের থেকে টাকা চায়, তাদের এত বড় ঘটনায় কাজ শীঘ্র “সালটানো”র জন্য খুব গূঢ় অভিসন্ধি লাগে না!

    ন্যারেটিভ চার - ধ-র্ষ-ক একক না সঙ্ঘবদ্ধ? - এটা আমার এক্তিয়ার নয়। তবে এ মুহূর্তে এটুকু বলাই যায় যে কোলকাতা পুলিশ ঘটনার এক দিনের মধ্যে যা বলেছে সিবিআই চার্জশিটে তার বাইরে কিছুই বলে নি। সিবিআই নেহাৎ অকর্মণ্য তা বার বারই দেখা গেছে। এক্ষেত্রে তাই তাদের গণনা অব্যর্থ সেটা ভাবারও মানে নেই। পরবর্তী সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটের জন্য অপেক্ষা করা দরকার বলে মনে হয়।কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে, যারা ফেসবুকে বা পথে সিবিআইয়ে অনাস্থা প্রকাশ করছেন, তাদের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে সিবিআইয়ের চার্জশিটকে চ্যালেঞ্জ করেন নি। কোর্টও প্রশ্ন তোলেন নি। তাই, এই বিরোধের ভিত্তি আদৌ বিশ্বস্ত, নাকি তা শুধুই এনার্কি তৈরী করাবার হেতু আবেগকল তা ভেবে দেখার দরকার রয়েছে বলে আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়।

    এর বাইরে যা কিছু, তা প্রক্ষিপ্ত। তা নিয়ে আলোচনা করার মানে নেই। কিন্তু যা নিয়ে করার আছে, তা হল এই আবেগকল। প্রবাসী বাঙালি হিসেবে আমার পর্যবেক্ষণ, এই ঘটনা কানাডার নানা নিউজ চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে। এ নিয়ে বিদেশী এবং অবাঙালি ভারতীয়দের মধ্যেও বাংলা নিয়ে একটা নেগেটিভ ইমপ্রেশন তৈরী করা চলছে যার উদ্দেশ্য পুরোপুরি রাজনৈতিক। দুঃখজনক ভাবে, এক শ্রেণীর প্রবাসী বাঙালি ভদ্রলোকও অজান্তেই এই ফাঁদে পা দিচ্ছেন। এ কথা কিন্তু হোয়া আপডেট থেকে বলা নয়। যা লিখছি, বিগত কয়েকদিনের বেশ কয়েকটি পাবলিক গ্যাদারিং অ্যাটেন্ড করার অভিজ্ঞতা থেকে। ফ্রেমের ভিতর থেকে এমন অনেক কিছু বোঝা যায় না, যা বাইরে থেকে একই ফ্রেমের দিকে তাকালে ধরা যায়।

    সমস্যা এটাও যে, যে হারে এই ঘটনা ন্যাশনাল আর ইন্টারন্যাশনাল হাইলাইট পেয়েছে, সর্বভারতীয় কোন রাজনৈতিক দলের সাহায্য ছাড়া তা কার্যত অসম্ভব, এবং দীর্ঘ বছর ধরে বিধানসভায় কোন ভোট শেয়ার না রেখে আর সাংসদে প্রায় শূন্য রেখে সিপিআইএমের সে মেশিনারি থাকাও ইমপসিবল। তাই, ভাজপা এতে নেই বলে যে রটনা, তা বাস্তব নয়। সত্য এটাও যে কোলকাতায় তৃণমূলের ভোট যতটা কমেছে, প্রায় সমহারে বেড়েছে বিজেপির। সিপিএমের কিন্তু বাড়ে নি। বরং তথাকথিত লাল ওয়ার্ডগুলোতে বিজেপি বেশী, বা তৃণর চেয়ে সামান্য কম। সেজন্যেই “ওদের ঢুকতে দিচ্ছি না” বলে আশ্বস্ত করার পরেও লোকে গিয়ে দেখছে অনশন মঞ্চের একটু দূরে বসে লোকাল বিজেপি নেতা চা খাচ্ছেন, বা অনশনকারীরা রাজ্যপালের কাছে বিচার চাইছেন। তাই এই আবেগকলের মূল উদ্দেশ্য বিচার না তার চাইতে বেশী কিছু, আর অমিতবাবুকে কেন ছাব্বিশ পর্যন্ত হপ্তার পাঁচদিন করে বাংলায় থাকার স্ট্র্যাটেজি নিতে হচ্ছে, সেটাও একটু ভাবার বিষয় বলেই মনে হয়। পথেই এবার নামো সাথি প্রোফাইলে থাকলেই প্রামাণ্য রাজনৈতিক মতবাদ রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সমীকরণ এ মুহূর্তে ততটাও সরল নয়।

    এত কিছুর পরেও, আন্দোলন প্রয়োজন। মৌলবাদ ভাঙার, অনাচার রোধের প্রধানতম রাস্তা পাবলিক মুভমেন্ট।তবে আবেগে ভেসে তা করলে হিতে বিপরীত হবার সম্ভাবনা বেশী।বাংলার অবিজেপি লিবারাল জনগণের কাছে তাই একটাই অনুরোধ, অগ্রপশ্চাৎ দেখে, সাথি চিনে পথে নামুন। পাইরেটেড সাথি এই বাজারে নিতান্ত কম নয়। বরং, আপনারা যা ভাবেন, তার চাইতে অনেক অনেক অনেক বেশী।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:866:e352:5ad3:***:*** | ২০ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৪৩538686
  • এই লেখাটা বেশ লজিকাল মনে হলো, প্রায় পুরোটার সাথেই একমত। এই প্রসঙ্গে লিখি, ঐ ঘটনা ঘটার দুয়েকদিন পর আমি বাড়ির কাছে একটা হাসপাতালে গেছিলাম এইচবিওয়ান চেক করাতে (আমি চেন্নাইতে থাকি)। তিন মাস পরপর যাই, কাজেই নার্স আমাকে চেনেন। তো তিনি রক্ত নিতে নিতে বললেন, আপনাদের পবতে তো বিচ্ছিরি ঘটনা ঘটেছে! আমি বললাম হ্যাঁ, তারপর আরও দুয়েক কথার পর জিগ্যেস করলাম, আপনি কিভাবে জানতে পারলেন? উনি বললেন, হোয়াতে দেখেছি। এটা শুনে চমকে গেছিলাম, আর তখনই আইএসি মুভমেন্টের কথা মনে এসেছিল। এই ঘটনাটা যে ন্যাশানাল লেভেলে আইটি সেলের সাহায্য নিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই, আর প্রাথমিক সেন্সেশান তৈরি করার জন্য ১৫০ গ্রাম বীর্য বা গ্যাংরেপ ইত্যাদির সাহায্য নেওয়া হয়েছে তাতেও কোন সন্দেহ নেই। জুনিয়র ডাক্তাররা যে আন্দোলন করেছেন তা অত্যন্ত দরকারি ছিল, আর তাতে দুয়েকটা ভালো ফলও মিলেছে, কিন্তু এই আন্দোলন যে বিজেপি আর আইটি সেল তাদের স্বার্থে ব্যবহার করছে সেটা সবারই খেয়াল রাখা উচিত। 
  • পাঠক | 2401:4900:12c5:141e:40b9:a1ff:fe79:***:*** | ২০ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:২২538691
  • এটা বেশ যুক্তিযুক্ত লেখা আর সঠিক অবজার্ভেশন।
     
    বিজেপি ঢোকার ফলে সুপার ভাইরাল হওয়ার অনেক প্রমাণ আছে।  তবে অত দরকারও নেই, সেদিন শুভেন্দু নিজেই বলে দিয়েছেন। এখনো প্রতি প্রোগ্রামে দলের নির্দেশে কত লোক সাধারণ মানুষ হিসেবে যাচ্ছেন, সেটাও সেদিন এক বাইটে বলে ফেলেছেন।
     
    বিদেশের অংশে তো সিংহভাগ চাড্ডিরা। কিছু বামমনস্ক প্রগতিশীলদের ছুটকোছাটকা ছাড়া।  মজা হল ডান,  অতিডান, বাম, অতিবামের ন্যারেটিভ প্রায় এক। আর প্রায় সবের জন্ম ওই বীর্য থেকে। 
    ১৫০ গ্রাম বীর্য সেই অনুপাতেই ফেকের জন্ম দেবে, স্বাভাবিক।
  • ভিডিও | 110.225.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০২৪ ১১:২৩538695
  • কালনিমে | 103.244.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:১৫538702
  • আশ্চর্যজনক যে  সন্দেশখালির স্টিং ভিডিও র পরে আর কোন আপডেট পাওয়া গেলনা - না সিবিআই না জাতীয় মহিলা কমিশন না বিজেপি না আবাপ। কেউ কি বলতে পারবেন শেষ কি হয়েছিল? এর সঙ্গে আরজিকরের সরাসরি সম্পর্ক না থাকলেও পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের অবস্থা বুঝতে জানতে চাইছি। বারেবারেই প্রচার করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ মহিলাদের জন‍্য নিরাপদ নয় ।
  • সন্দীপ কুমার মিত্র | 103.67.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:০১538705
  •  কোলকাতা পুলিশের করনীয় কি সেটা তো সেদিন সন্দীপ ঘোস ঠিক করেছিল।  এখন সেটা ঠিক না ভুল সেটা বিচারাধীন বিষয়, আপনি বলছেন ঠিক। আপনাকে এটা কে বলল? নবান্ন থেকে? দাঁড়ান একটু ফোনের অডিও ক্লিপ গুলো ফরেনসিক হয়েছে। সেটা ঠিক, এবার ভিডিও গুলো আসছে। সবুর ধরুন। 
  • কালিদাস ঘোষ | 103.67.***.*** | ২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:১৬538708
  • পুলিসি তদন্তকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় | একটিকে বলা হয় Positive investigation আর একটিকে Negative investigation বলা হয় | পুলিস যখন তদন্ত চলা কালীন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য প্রমান যোগাড় করে যাতে প্রকৃত অপরাধী দের শাস্তি হয় তখন তাকে   Positive investigation বলা হয় | অন্যদিকে পুলিস যখন প্রকৃত অপরাধী বা অপরাধীদের নির্দোষ প্রমান করার জন্যে তদন্ত প্রক্রিয়া চালায় তখন তাকে Negative investigation বলা হয় | প্রশ্ন উঠতে পারে পুলিস তার Ethics এর বাইরে গিয়ে কেন Negative investigation করে | এর উত্তরে বলা যায় নেগেটিভ ইনভেষ্টিগেসনের অন্যতম কারণ হলো রাজনৈতিক চাপ এবং ঘুষের প্রতি অত্যধিক লোভ | আমি ধূপগুড়ীর আইসি থাকাকালীন কোর্টের আদেশে একটি কেসের Reinvestigation এর অর্ডার হয় এবং আমাকে Personally কেসটির নূতন করে তদন্ত করতে বলা হয় | কেসটি নূতন করে তদন্ত করতে গিয়ে দেখি যে একজন রাভা উপজাতির মহিলাকে এলাকার একজন সম্পন্ন পরিবারের যুবক ধর্ষণ করে খুন করেছিল | আমি সেই যুবকের বিরুদ্ধে খুন ধর্ষণ এবং তথ্য প্রমান লোপাট করার জন্যে চার্জশীট জমা দিই | আগের তদন্তকারী অফিসার এবং তৎকালীন ধূপগুড়ি থানার ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হয়েছিল | Positive investigation এর জন্যে সব থেকে বেশি প্রয়োজন হলো পুলিস অফিসারের সততা এবং রাজনৈতিক চাপ উপেক্ষা করে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার মতো দৃঢ় মানসিকতা |
    নেগেটিভ ইনভেস্টিগেসনের উদাহরণ হিসাবে আমি দুটি ঘটনার উল্লেখ করবো | প্রথমটি হলো কামদুনির ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা | একজন কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণ করার পর তাকে নৃশংস ভাবে খুন করে অভিযুক্তরা | পুলিস সেই কেসে তদন্ত করার পর চার্জশিট জমা দেয় | কলকাতা হাইকোর্টে সব অভিযুক্ত প্রমনাভাবে খালাস পেয়ে গেছে | রাজ্য সরকার যদিও চাপে পড়ে কলকাতা হাইকোর্টের রাযের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করেছে , কিন্তু তদন্ত যদি ত্রুটিপূর্ণ হয় তা হলে সুপ্রিম কোর্টেও কিছু হবে বলে মনে হয় না | অন্য যে মামলাটির কথা বলবো সেটি উত্তর প্রদেশের নয়ডা জেলার নিঠারি শহরের একটি বর্বরোচিত ঘটনা | এই ঘটনার সাধ্যে জড়িয়ে আছে অপহরণ খুন ধর্ষণ তথ্য প্রমান লোপাট এমন কী নরমংস খাওয়ার মতো ভয়ঙ্কর অভিযোগ | নয়ডার পুলিস মনিন্দার সিং পান্ধের নামে একজন বিত্তশালী ব্যবসায়ী এবং তার কর্মচারী সুরেন্দ্র কোলিকে গ্রেপ্তার করে এবং তদন্তের শেষে দুইজনের বিরুদ্ধেই চার্জশীট পেশ করে | নিম্ন আদালতে দুইজনেরই ফাঁসির আদেশ হয় | ওই রায়ের বিরুদ্ধে অভিযুক্তরা এলাহাবাদ হাইকোর্টে আপিল করে |শুনানির পর এলাহাবাদ হাইকোর্ট প্রধান আসামী মনিন্দার সিং পান্ধেরকে নির্দোষ বলে ঘোষনা করে এবং সুরেন্দ্র কোলির ফাঁসির পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেয় | একটা রোমহর্ষক মামলার এই রকম পরিনতি হলো কেন | হলো এই জন্যে যে , মামলাটি দাঁড়িয়েছিল সুরেন্দ্র কোলির স্বীকারোক্তির উপর | কিন্তু কোন অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি বা Confessional statement রেকর্ড করার আইনগ্রাহ্য কিছু পদ্ধতি আছে | সেই Legal process গুলো যদি যথাযথ ভাবে না মেনে অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি রেকর্ড করা হয় তা হলে আর সেই স্বীকারোক্তির Evidential value থাকে না | নিঠারি মামলাতে সেই ঘটনাই ঘটেছে | এই দুই রকম ইনভেস্টিগেসনের বাইরে আর এক ধরনের তদন্ত আছে যাকে বলা হয় Politically motivated investigation | তাপসী মালিকের কেসটির কথা মনে করুন | এই কেসে প্রথমে দেবু মালিককে গ্রেপ্তার করা হয় | দেবু মালিক সিবিআই এর কাছে স্বীকার করে যে , সে এবং তৎকালীন সিপিআইএমের সিঙ্গুর জোনাল কমিটির সেক্রেটারী কমরেড সুহৃদ দত্ত দুইজন মিলে তাপসী মালিককে ধর্ষণ করে খুন করেছে | দেবু মালিকের যে Judiciary Confessional statement নেওয়া হয় তা কলকাতায় নয় দিল্লিতে নেওয়া হয় | যে ম্যাজিস্ট্রেট এই জবানবন্দি নেন তিনি বাংলা ভাষা জানতেন না ,  আবার দেবু মালিক বাংলা ছাড়া অন্য কোন ভাষা জানতেন না | ফলে দোভাষির সাহায্য নিতে হয় | কিন্তু আদালত নির্দিষ্ট দোভাষির পরিবর্তে অন্য একজন দোভাষির সাহায্যে এবং তদন্তকারী অফিসারের উপস্হিতিতে দেবু মালিকেের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছিল যা Completely illegal | সেই জবানবন্দীর উপর নির্ভর করে কমরেড সুহৃদ দত্তকে গ্রেপ্তার করা হয় | এর পরের ইতিহাস আপনারা সবাই জানেন , কী ভাবে ষড়যন্ত্রমূলক রাজনীতি এবং একজন mostly corrupted সিবিআই অফিসারের মেলবন্ধনে একজন নিরাপরাধী মানুষকে পৃথিবী থেকে চলে যেতে হলো | ষড়যন্ত্রকারীদের একটাই উদ্দেশ্য ছিল সিপিআইএমকে কালিমালিপ্ত করা |  অসৎ পুলিস অফিসার আর ধান্দাবজ রাজনীতি একসাথে মিশে গেলে এই ধরনের তদন্তই হয় | বর্তমানে আমাদের রাজ্যে যে ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে সেই অভয়ার মামলাও রাজনীতিকদের মর্জিমাফিক সিবিআই তদন্ত করছে | সুপ্রিমকোর্টে সিবিআই মুখবন্ধ খামে তদন্তের অগ্রগতি সম্বন্ধে রিপোর্ট সাবমিট করেছে যা দেখে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা সিবিআই এর তদন্ত প্রক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন | আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে কলকাতা হাইকোর্টে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলীর এজলাসে চাকরি দুর্নীতির মামলাতেও সিবিআই মাঝে মাঝেই এই রকম মুখবন্ধ খামে Status Report submit করতো আর বিচারপতি সিবিআইএর তদন্তের প্রশংসা করতেন | তারপর কী হলো , কয়জন প্রভাবশালী এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে , কাকুর কণ্ঠস্বরের কথা কি এখনও সিবিআইয়ের মনে আছে , না তা ময়লা ফেলার বাস্কেটের মধ্যে চালান হয়ে গেছে | আমি নিশ্চিত যে , শেষপর্যন্ত অভয়ার মামলাও অন্ধকার কানা গলিতে হারিয়ে যাবে | যতদিন আমাদের দেশে ও রাজ্যে এই সমস্ত দুর্নীতিবাজ ধান্দাবাজ রাজনীতিকরা ক্ষমতায় থাকবে ততদিন সিবিআইও এই রকমের তদন্তই করবে |

    কালিদাস ঘোষ
    জলপাইগুড়ী
    ২০ ১০ ২০২৪
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:8d6f:9abd:f01c:***:*** | ২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৩২538709
  • কলকাতায় বসে জলপাইগুড়ি থেকে পোস্ট? কালিদাসের তো ক্যালি আছে দেখছি! 
  • PRABIRJIT SARKAR | ২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৫৩538715
  • কামদুনিতে যারা বিচার চেয়ে দৌড় করছিল প্রশাসন তাদের হেনস্থা করেছিল। তবু ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টে পব উকিল (ইচ্ছাকৃত ভাবে বলে মনে হয়) কেস ঘেঁটে দিয়েছিল। তাই সবাই মুক্ত।  আর জি করে তথ্য প্রমাণলোপ ডাক্তারদের আন্দোলন এসবের জন্য সারা বিশ্বে প্রচার পেয়েছে। স্থানীয় বাঙালিরা সোচ্চার হয়ে আরো প্রচার করেছে। আমার মনে হয়না কোন উদ্দেশ্য নিয়ে এসব করা হয়েছে। রেপ সারা বিশ্বে হয়।পিসির ভাষায় সর্দি কাশির মত স্বাভাবিক ঘটনা। এখানে বেশি হয় বলা যায় না।হয়তো কম ই হয় সারা ভারতের গড় থেকে। হাথরস-উন্নাও নিয়ে হৈ চৈ কম হয়নি। জয়নগর কৃষ্ণ নগর নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ওসব ক্ষেত্রে পুলিশ ধামা চাপা দিচ্ছে এমন শোনা যায়নি। সন্দেহভাজনরা গ্রেফতার হয়েছে। রাতারাতি চার্জশিট দিতে পারবে না। কেস আদালতে উঠবে। তারপর মিডিয়া কভার করবে। ওসব ক্ষেত্রে এখনই আন্দোলন করবার কথা ভাবা হচ্ছেনা। আর জি কর ইস্যু সারা ভারতের ডাক্তার নারসদের নাড়িয়ে দিয়েছে। অতএব বাইরে বাঙালি ওদের কাছে হ্যাটা খাবেই।
    তবে চাড্ডি বলে গালি খাব তাও বলি কামদুনি 'দুধেল গাই' তত্ব জোরদার করে। জয়নগর কেসে একই তত্ব খাটবে বলে সন্দেহ কারণ মূল বা একমাত্র অপরাধীর নাম মোস্তাকিন।গ্রামের মানুষ যেটুকু ফুঁসে উঠেছিল প্রশাসন আস্তে আস্তে সামলে নেবে।
  • সরকারি বেসরকারি | 2401:4900:7521:c5f:3886:f2ff:fe1a:***:*** | ২২ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৪৩538750
  • এই প্রশ্নগুলি এখানেও রইল।
     
     
    এই খবরগুলি সত্য?  বর্তমানে পড়ে ভুয়ো হতে পারে মনে হয়েছিল, কিন্তু কাল তো মুখ্যমন্ত্রীও বললেন আর জুনিয়্র ডাক্তাররা অস্বীকারও করলেন না!  স্বাস্থ্যসাথীতে বেসরকারির পিছনে এত খরচ বেশি যাওয়া তো একরকম, কিন্তু এগুলো তো পুরো বেআইনি। আর সরকারিতে কর্মবিরতি করে এইসব করে এঁরা সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি করতে চাইছেন?  এই খবর ভুল হলেই খুশি হব।
     
    ওদিকে অনেক  সিনিয়র সরকারি ডাক্তারও নন প্র‍্যাক্টিসিং আলাওয়েন্স নেওয়ার পরেও, অনুমতি না নিয়েই প্রাইভেটে কাজ করেন?  এগুলোও বে আইনি তো।
     
     স্পষ্টভাবে বললে, সিনিয়র রা মাইনের ২৫% নন প্রাক্টিসিং আলাওয়েন্স পান। সেটা না নিয়ে আবেদন করলে, মঞ্জুর হলে আইনিভাবেই বেসরকারি প্রাক্টিস করতে পারেন। সেই নিয়ে কিন্তু কথা হচ্ছেনা। হচ্ছে, যেগুলো আইনত অনুমোদিত নয়, তাই নিয়ে।  যেমন এই অনুমতি না নিয়ে, এন পি এ নেবার পরেও প্র‍্যাক্টিস চালানো বা জুনিয়্র ডাক্তারদের যেকোন অবস্থাতেই প্র‍্যাক্টিস।
    আরো কথা হচ্ছে, এইবার কর্মবিরতি চলাকালীন সরকারি হাস্পাতালে কাজ বন্ধ করে ( কিন্তু স্টাইপেন্ড নিয়ে),  বেসরকারিতে সেই সময় কাজ করে উপার্জন।  স্বাস্থ্যসাথী,যা সরকারিতে যেত তার সিংহভাগ বেসরকারি হাস্পাতালে যাওয়া, এবং বেসরকারি হাস্পাতালের মুনাফা আর ডাক্তারদের ভাগ দেওয়ার জন্য সরকারি টাকা এত বেশি খরচ হওয়া নিয়ে!  টাকার অংকটা দেখেছেন?  
    এই খবর সত্য হলে, এতো সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থা ধ্বংস করে বেসরকারিকে ( আর নিজেরদেরও)  পুষ্ট করা, তাও আবার সরকারি খরচে!  

     
    https://bartamanpatrika.com/kolkata/cid/12/detail-news/id/589876?fbclid=IwZXh0bgNhZW0CMTEAAR1v3yOygsnz1YAAKded4libGfMsNpGBqPW4YSgYvtbOyi8Bbgwdgap63Ns_aem_e3eksCoiZHmiUwX9uVHc5A
     
    কর্মবিরতি। প্রথমে পূর্ণ। তারপর আংশিক। সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দরজায় মোটামুটি তালা দিয়ে এভাবেই কাটল দুটো মাস। ধর্না, অবস্থান, বিক্ষোভ, আর অনশন। আগস্ট থেকে অক্টোবর—রাজ্যের গরিব ও নিম্নবিত্ত মানুষের ভোগান্তির টাইমলাইন। কিন্তু নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, ‘কর্মবিরতি’র এই অচলাবস্থা শুধু সরকারি ক্ষেত্রে। আন্দোলনের পথেঘাটে সুর চড়ানো বহু সরকারি ডাক্তারই কিন্তু ৯ আগস্ট থেকে ১৭ অক্টোবরের এই সময়সীমার মধ্যে চুটিয়ে প্র্যাকটিস চালিয়েছেন বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে। এমনই ৫৬৩ জন সরকারি সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারের তালিকা সংগ্রহ করেছে ‘বর্তমান’। তাতে সাফ দেখা যাচ্ছে, এই সময়সীমার মধ্যে তাঁরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ৭৩ হাজার ৯০৫টি কেস হ্যান্ডল করেছেন (রোগী দেখেছেন বা অস্ত্রোপচার করেছেন)। নজর করার মতো বিষয় হল, প্রায় ৭৪ হাজার এই ‘কেস’ শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসাথীর ক্ষেত্রে নথিভুক্ত হয়েছে। আর এর থেকে উল্লিখিত ৫৬৩ জন ‘এসআর’ (বন্ডের শর্তে নিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ) রোজগার করেছেন ৫৪ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা। গড় হিসেব প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। মনে রাখতে হবে, স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় নথিভুক্ত ‘কেস’ ছাড়াও তাঁরা রোগী দেখেছেন। পারিশ্রমিকও পেয়েছেন। একইসঙ্গে রয়েছে মাসে ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার টাকার সরকারি ভাতা, যা এমডি, এমএস পাশ করে সরকারি হাসপাতালে যোগ দেওয়ার পর তাঁরা পেয়ে থাকেন। তার হিসেব কিন্তু ৫৪ কোটি ৩৯ লক্ষের মধ্যে ধরা হয়নি।
    এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় দেড় হাজার সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার কাজ করেন। লাগাতার কর্মবিরতিতে গেলেও রাজ্যের কাছে তাঁরা কিন্তু ভাতা বন্ধের আবেদন জানাননি। উল্টে তাঁদের বড় একটা অংশ প্রাইভেটে চিকিৎসা চালিয়ে গিয়েছেন। ‘সমাজ সংস্কারক’দের একটা মুখ দেখা গিয়েছে আন্দোলন মঞ্চে, অবস্থানে, মিছিলে। আর একটা মুখ প্রাইভেট হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে। কারণ বেসরকারি ক্ষেত্রে লাগাতার অচলাবস্থা চলতে পারে না। টাকা দিয়ে চিকিৎসা করাতে গিয়ে অচলাবস্থা মানবেন না রোগীরা। তাই বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোম উপচে পড়েছে ‘আন্দোলনকারী’ বহু ডাক্তারের মহানুভবতায়। এমনকী উত্তরবঙ্গের ‘এসআর’ দক্ষিণবঙ্গের দূরবর্তী জেলার নার্সিংহোমে গিয়ে ‘কেস’ করে এসেছেন—এমন তথ্যও রয়েছে ‘বর্তমান’-এর কাছে। সেইবেলা কেন তাঁদের মনে হয়নি, ‘জাস্টিস’ চেয়ে কর্মবিরতির খাঁড়া শুধুমাত্র সরকারি হাসপাতালের গরিব রোগীদের উপর নামানো ঠিক হচ্ছে না? প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নার্সিংহোমে ইট পেতে বসাটা আন্দোলনের আদর্শ বিরোধী নয়! অথচ, এই পর্বে কলকাতা, জেলার শহর বা শহরতলির বড়-মেজ-ছোট এমন কোনও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান নেই, যেখানে সরকারি হাসপাতালের ‘প্রতিবাদী’দের একটা বড় অংশ প্র্যাকটিস করেননি। তাও আবার করেছেন যে স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রতি তাঁদের তীব্র ক্ষোভ, তাদেরই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে। উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই ৫৬৩ জন ‘এসআর’ কিন্তু জানেন, তাঁরা বাইরে প্র্যাকটিস করতেই পারেন না। মজার ব্যাপার, বহু ‘বিপ্লবী’ সিনিয়র ডাক্তার পরিচালিত প্রাইভেট নার্সিংহোম-হাসপাতালে তাঁরা কেস করে এসেছেন।
  • রঞ্জন | 2402:e280:3d02:20a:7962:ae4d:4ae:***:*** | ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৪০538762
  • লাইভ স্ট্রিমিংয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের লাভ হল কি?
    স্পষ্ট দেখলাম-- স্বাস্থ্যসাথী গুগলি তাঁরা খেলতে পারলেন না।
    বলতে পারলেন না -- এই তথ্য অসম্পূর্ণ,  বা একপেশে, আমাদের কাছে অন্য তথ্য আছে।
    সবাই নিরন্তর।  খারাপ লাগল।
     
    বরং সাধুবাদ দেব সেই মহিলা জুনিয়র  ডাক্তারকে যিনি মুখ্যমন্ত্রীর চোখে চোখ রেখে 'অভিযুক্ত' আর 'দোযী', অর্থাত accused  আর  guilty নিয়ে ভুলটি  ধরিয়ে দিলেন। 
    মমতা মানলেন না-- সেটা ওনার সমস্যা।
  • রঞ্জন | 2402:e280:3d02:20a:7962:ae4d:4ae:***:*** | ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৪১538763
  • *নিরুত্তর। 
  • PRABIRJIT SARKAR | ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৫৭538769
  • ওর ভুল ধরাটা দুঃসাহস। মেয়েটার ক্যারিয়ার বরবাদ। উনি ভুল বললে আলাপন প্রলাপন কেউ কিছু বলে না। নিজের কানে শুনলাম উনি বলছেন নির্যাতিতার ফাঁসি হোক আর সব সখীরা বলছে ফাঁসি হোক। পরে ভুল শুধরে বললেন ধর্ষিতার ফাঁসি হোক সবাই বলল হোক হোক।
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন