এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • অধ্যাপিকা, মার্সিডিজ ও অবক্ষয় সম্পর্কিত কিছু দুর্ভাবনা

    Abin Chakraborty লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৫ আগস্ট ২০২৪ | ১২০৩ বার পঠিত
  • কলেজ স্ট্রীটের এক নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ততোধিক নামী বিভাগের এক জনৈকা সহকারী অধ্যাপিকা সম্প্রতি একটি মার্সিডিজ গাড়ি কিনেছেন ও সে সম্পর্কে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন। সহকারী অধ্যাপকের কি করে মার্সিডিজ কেনার টাকা হয় এসব অবান্তর প্রশ্ন আমার নেই। কার কত ধনী বাবা, কাকা, বর, দাদা, দিদি, মা, মাসি আছে সে খোঁজ আমার নিতে যাওয়া অর্থহীন। কে কত ধনী পরিবারে জন্ম নিয়েছে সে বিচার ও অমূলক। প্রশ্ন হল একজন অধ্যাপিকা নিজের দামী গাড়ির ছবি ও লং ড্রাইভ এ যাওয়ার গল্প শুনিয়ে কি অর্জন করতে চাইছেন। এটা কি ছাত্রছাত্রী সহ অন্যান্য পরিচিতদেরকে আম্বানীদের কায়দায় নিজের ঐশ্বর্য প্রদর্শনের আরেক পন্থা? নিজের গাড়ি ও সেই সম্পর্কিত বিলাসবহুল জীবনের কাহিনী সমাজ মাধ্যমে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে যে পুরোনো Onida TV এর মত, প্রতিবেশীর ঈর্ষা ও মালিকের গর্ব সুলভ আত্মম্ভরিতার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে, এটা মোটামুটি তর্কের ঊর্ধ্বে। কিন্ত এহেন কাজ তো কত লোকেই করেন। অস্বস্তিটা কি সেখানে? না। অস্বস্তিটা কি ব্যক্তির কর্মপরিচয় সম্পর্কিত? অবশ্যই। কিন্ত শুধু কি তাই? না। সমস্যাটা এজন্যেও যে অধ্যাপিকা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত।

    আসলে আমরা ছোটবেলা থেকে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষকের একটা রূপকল্পের সাথে পরিচিত। এটা শুধু বাঙালি সেন্টিমেন্টের বিষয় নয়। কয়েকশ বছর আগে ইংরেজ কবি জিওফ্রে চসার ও দরিদ্র বিদ্বান ছাত্রের ছবি এঁকেছিলেন, যার যাবতীয় অর্থ বই কিনতেই ফুরিয়ে যায় এবং যার এক এবং একমাত্র আনন্দের বিষয় হল পড়া ও পড়ানো। দেনাগ্রস্ত মধু কবি বা দানের সাগর ঈশ্বরচন্দ্রের কথাও আমাদের স্মরণে থাকার কথা। মনে থাকার কথা উদয়ন পন্ডিতের কথাও। হীরা তার বিবেককে কিনতে পারেনি। কবি ও শিক্ষক জীবনানন্দ বা বিভূতিভূষণ কখনও ধনসম্পদের মুখ দেখেছিলেন? আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের গামছা পরে মুড়ি খাবার গল্প ও আমাদের জানা। প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষ তারকনাথ সেন, সুশোভন সরকার, যদুনাথ সরকার, রজতকান্ত রায় এবং আরো অনেক বিশিষ্ট বিদ্বান শিক্ষকদের জীবনচরিতে কখনোই স্থাবর অস্থাবর সম্পদ সম্পর্কিত কোন ঢক্কানিনাদ শোনা যায় নি। আমাদের শিক্ষক শিক্ষিকাদের জীবনও এই ধারা থেকে বিশেষ বিচ্যুত হতে দেখিনি। তাদের অনেকেই বহুদিন পর্যন্ত গণপরিবহনে যাতায়াত করেছেন। কেউ একটু বাড়ি গাড়ি করে ফেলতে পারলে তাদের কিঞ্চিৎ সঙ্কোচ ও অনুভব করতে দেখেছি। বর্তমান শিক্ষাজগতের নায়ক নায়িকারা এইসব পুরোনো ধ্যান ধারণা ফেলে এমন সগর্বে সমাজ মাধ্যমে সোচ্চার হয়ে এগিয়ে চলেছেন যে কোথায় একটা অস্বস্তি হয়। কনফুসিয়াস বলেছিলেন যে বৈষম্যময় সমাজে ধনী হওয়াটা কলঙ্কের। কোন শিক্ষক যদি সজ্ঞানে সেই কলঙ্কের ভাগীদার হন তাহলে আমরা কী করে ভাবব যে তিনি তাঁর ছাত্র ছাত্রীদের যথাযথ নৈতিক পথপ্রদর্শন করবেন? নাকি প্রদর্শনমুখী এই ভোগবাদী বাস্তবতাটাই স্বাভাবিক? মার্কিন মুলুকে প্রচলিত "flaunt it if you've got it" আদর্শটাই কি বাঙ্গালী সমাজ আত্মস্থ করে নিয়েছে? অন্নপূর্ণার প্রতি উচ্চারিত ঈশ্বরী পাটনীর সেই প্রার্থনার - "আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে" - মূলে থাকা বাহুল্য বর্জিত স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্যের যে মূল্যবোধ স্বাধীনতা - উত্তর যুগেও প্রকট ছিল, বিশ্বায়নের তিন দশক পরে তা হয়ত প্রায় অবলুপ্ত। সাথে এটাও প্রশ্ন, শিক্ষকরা কি আর নির্দিষ্ট মূল্যবোধের প্রতিভূ হিসেবে আদৌ সমাজে বিবেচিত হন? ছাত্রছাত্রীরা কি আদৌ শিক্ষকদের জীবনদর্শন বা জীবনযাপনের মধ্যে কোন ইপ্সিত গুণমানের আধার খুঁজে পায় বা পেতে চায়? সুনির্দিষ্ট উত্তর দেওয়া দুষ্কর। উত্তরগুলো সম্ভবত বিবিধ ও পরিবর্তনশীল। যে সমাজে উপাচার্য থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সবাই দুর্নীতির চক্রে আবদ্ধ, সেখানে এই অনিশ্চয়তা অনিবার্য।

    আরো এক ধরণের সমস্যা আছে। আমার পরিচিত এক ছাত্রীর বাবা তাদের ছেড়ে চলে গেছে বলে তাকে বিয়েবাড়িতে মেহেন্দির কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে হয়। অনেক সময় দুবেলা খাবার মত অর্থও তাদের থাকে না। বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নানাবিধ আর্থিক সমস্যায় আক্রান্ত আরো অনেক মানুষজন রয়েছে যারা নানা হতাশা ও আত্মগ্লানি অতিক্রম করে প্রচুর পরিশ্রম করে যাচ্ছে কোন চাকরি পাওয়ার সন্ধানে। একজন শিক্ষক যখন নিজের সম্পত্তি ও প্রাচুর্য সম্পর্কে সমাজ মাধ্যমে লেখালেখি করেন তখন কি সেটা বেকারী ও দারিদ্র্যে ক্লিষ্ট এই সমাজে এক ধরণের নির্মম পরিহাসে পরিণত হয় না? এহেন সহানুভূতিহীন পরিহাস কি কাম্য? কেউ বলতেই পারেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন আর্থিক অনটনের ছাত্র ছাত্রী পড়ে না। হতে পারে। ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ নেই বহুকাল। তবে আমাদের ছাত্রাবস্থায় হোস্টেলের ভেতরে ও বাইরে এমন অনেকেই থাকত যাদের যাতায়াতের খরচ বা রোজকার ভাত রুটির খরচার বাইরে কোন পয়সাই থাকতো না। এইসব তরুণ তরুণীরাই এককালে দিন বদলের স্বপ্ন দেখে কৃষক মজদুরদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাম্যবাদী সমাজের আকাঙ্খায় প্রাণ বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তাদের অনুপ্রেরণা ছিলেন তাদের শিক্ষকরাও। নকশাল আন্দোলনের বিস্তর ভুল ত্রুটি স্বত্বেও সমাজের অনুভূতির স্তরে, সচেতনতার স্তরে যে বিপুল প্রভাব তা রেখে গেছে তা অনস্বীকার্য। মার্সিডিজ কেন, সেই সারস্বত চর্চা ও সমাজ মন্থনের জগতে Benson and Hedges এর সিগারেটও ছিল না। সেই আদর্শ, আবেগ ও আন্দোলনের ভরকেন্দ্রে এইসব মার্সিডিজ বিলাসী মানুষজনের যাতায়াত সঞ্জয় সান্যাল জাতীয় আত্মবিস্মৃত ধনলোলুপ বাঙ্গালীর প্রশাসনিক উত্তরণের মতোই অসুস্থ ও পঙ্কিল।

    এই দেখনদারিতে ভরপুর গল্পে পাঠ্য বিষয়বস্তুর ও একটা ভূমিকা আছে। আমরা যারা ইংরেজি সাহিত্য পড়ার সুযোগ পেয়েছি তারা বারবার দেখেছি শেক্সপিয়ার এর নাটকে অর্থ, স্বর্ণ, মুনাফা ইত্যাদি সম্পর্কে ধারাবাহিক সতর্ক বার্তা। ধনসম্পদের লোভ কিভাবে পারিবারিক সম্পর্ক, সামাজিক ন্যায়, চারিত্রিক পবিত্রতা ইত্যাদি নষ্ট করে মানুষকে ক্রমশ অমানুষ করে তোলে তা শেক্সপিয়ার বারবার দেখিয়েছেন King Lear, Timon of Athens, Merchant of Venice ইত্যাদি নানা নাটকে। বেন জনসনের নাটকেও একই সমস্যার ব্যবচ্ছেদ পরিলক্ষিত হয়। শুধু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। Alexander Pope এর লেখা The Rape of the Lock নামক ব্যাঙ্গকবিতা, এলিয়ট এর The Wasteland বা R.K Narayan এর The Guide - সব ক্ষেত্রেই আমরা দেখি বিত্তের প্রাধান্য ও নৈতিক অবক্ষয়ের এক সমানুপাতিক চালচিত্র। আমার জীবনেই যদি বিত্ত ও তার পরিণতি এত প্রবল হয়ে ওঠে তাহলে এইসব লেখার নৈতিক সমালোচনা আমি নিজে কী করে অনুধাবন করব? কী করেই বা তা অন্যদের বোঝাবো? ম্যাথিউ আর্নল্ড তাঁর Culture and Anarchy গ্রন্থে সাহিত্য ও সাহিত্য সমালোচনাকে ক্ষয়িষ্ণু ধর্মীয় মূল্যবোধের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে এলিয়ট, লিওনেল ট্রিলিং, ফ্রাঙ্ক লিভিস, নরথ্রপ ফ্রাই সহ নানা তাত্ত্বিক ও সমালোচকদের আলোচনাতেও সাহিত্য ও সাহিত্য সমালোচনার এই সামাজিক ভূমিকার কথা উঠে এসেছে। এইসব দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্লেষণ সম্পর্কে বিবিধ মতবিরোধ ও আপত্তি থাকলেও সাহিত্য ও সাহিত্যচর্চার সাথে সমাজ, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কটি তাঁরা বিশদে ব্যাখ্যা করেছিলেন তা প্রণিধানযোগ্য। পরবর্তী কালে বিখ্যাত লেখক ও সমালোচক Terry Eagleton ও তাঁর "Literature and the Ethics of Reading" গ্রন্থে লিখেছেন যে "সাহিত্য নৈতিক বিশ্লেষণের একটি প্রকরণ, মানবিক অভিজ্ঞতার নৈতিক ক্ষেত্রসমূহের পর্যালোচনার এক বিশেষ পদ্ধতি"। যে শিক্ষকের নিজের নৈতিক আচরণের মধ্যে বিলাসিতার সম্পদ সম্পর্কিত আত্মশ্লাঘার আধিক্য রয়েছে সে সাহিত্যের বিষয়, চরিত্র বা আঙ্গিকের নৈতিক বিশ্লেষণ করবে কিসের ভিত্তিতে?

    হয়ত এই আলোচনা চূড়ান্ত নিষ্ফল। হয়ত এই লেখা হলো তিল কে তাল করার নামান্তর। তবু বেয়াড়া প্রশ্ন গুলো নিস্তার দেয়না। হয়ত এ একরকমের দুর্ভাগ্যজনক ডিরোজিয়ান উত্তরাধিকার। জানিনা। ইংরেজি সাহিত্য, প্রেসিডেন্সি ও শিক্ষকতার ত্রহ্যস্পর্শ কেমন যেন লিখিয়ে ছাড়ল।

    অনেক নিরুত্তর প্রশ্নের ঘনঘটায় শেষ করার আগে বলে রাখি মার্সিডিজ কিন্তু শুধু গাড়ি নয়। আমার বা আমার বন্ধুর কাছে মার্সিডিজ হল এডমন্ড দান্তের সেই অপরূপা প্রেমিকা যার কথা ভেবে জয়েসের কিশোর ডেডালাস ও দারিদ্র্য, জঞ্জাল ও তিক্ততার মাঝে আগামী অ্যাডভেঞ্চারের স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নালু মার্সিডিজ জয়েসের ক্ষয়িষ্ণু ডাবলিনে রাস্তার দেহব্যবসায়ী হয়ে পড়ে - এক পরিবর্তন যা অতীতের সারস্বত গৌরব থেকে বর্তমানের পঙ্কিল ও অবক্ষয়ের প্রতীক হয়ে ওঠে। আমরাও কি সেই ভাবে পিছনের দিকে এগিয়ে যাব? নাকি এডমন্ড দান্তের মত আশা ও অপেক্ষার অলিন্দে আত্মসমালোচনার সাহায্যে উত্তরণের স্বপ্ন দেখব? অতঃকিম।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • kk | 172.58.***.*** | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ১৯:২৬535896
  • বাহাত্তরের ১৮ঃ১২ র পোস্টের সাথে পুরোপুরি সহমত।
  • বাহাত্তর | 134.238.***.*** | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ১৯:৪৩535898
    • dc | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ১৮:২৭
    • ...একজন আছেন র২্হ নামে, তাঁর সাথে আমি প্রায়শই সহমত হই :-) 
     
    হ্যাঁ, সে তো বটেই, মনে হচ্ছিল এক নাম অনেকদিন হয়ে গেল, তাইঃ)
  • :|: | 174.25.***.*** | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ২০:০১535899
  • র২হ বা ৭২ -- এনার দেখছি ২-এর প্রতি সামান্য দুর্বলতা আছে। জন্মসূত্রে দ্বিতীয় বলেই কিনা কে জানে! রাশিবিজ্ঞানী কেউ দেখবেন নাকি? 
  • NRO | 165.124.***.*** | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ২০:০২535900
  • গাড়ি অধ্যাপিকা আর সোশ্যাল মিডিয়া ছেড়ে এবার লেখকের English lit rev এর সমালোচনায় আসি। আমার মনে হয়েছে লেখক totally confused. সম্ভবতঃ বাংলা মিডিয়ামে English lit পড়ার result. He mentioned works of some very famous writers spanning nearly five centuries - but they belonged to different times, different societies, their messages are different - basically, they belong to totally different genre. 

    Bottom line: Abin tried to put APPLES & NIPPLES together. From an academic point of view, it is a very poor piece of work. Next time try harder or else those famous professors that you mentioned will metaphorically turn in their graves reading it.
  • Abin Chakraborty | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ২০:৪৫535902
  • কারা যে আমার এই লেখা টাকে এত ফুটেজ দিলেন জানিনা। এই প্রথম একটা লেখার পাঠসংখ্যা ৫০০+ হয়ে গেল। বিস্তর ধন্যবাদ। কুরুচিকর ট্রোলিং ও হল। এটাও একটা নতুন প্রাপ্তি। জমে ক্ষীর পুরো।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:5560:e69d:ef83:***:*** | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ২০:৪৯535903
  • ফুটেজ বা পাঠসংখ্যা নিয়ে ভাববেন না। আপনি লিখেছেন, অনেকে পড়েছে, অনেকে কমেন্ট করেছে। এই তো হলো ব্যাপার :-)
  • hutum | 2001:67c:2628:647:d::***:*** | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ২০:৫৮535904
  • গুরুতে একটা অরিন ছিল, আরেকটা অবিন এসে জুটল। দুটাই ফুটো আঁতেল। 
     
    অবিনের মার্সেডিজ কেনার পয়সা নেই ? হিংসে করোনা, চেষ্টা করো, তোমারও হবে।
  • বাহাত্তর | 208.127.***.*** | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ২১:২০535905
  • অবিনবাবু, কুরুচিকর ট্রোলিং ইত্যাদি নিয়ে ভাববেন না (মানে না ভাবা ছাড়া উপায় নেই আরকি, নেসেসারি আপদ), কোন লেখা পাঠককে ইন্টারঅ্যাক্ট করতে উদ্বুদ্ধ করে সে তো গবেষণার বিষয়।

    শেষ অনুচ্ছেদটা ইন্টারেস্টিং। মার্সিডিজ প্রেমিকার মত - এমন কারো মনে হলে কিন্তু সে তার পথ ঠিক করেই নিয়েছে। সে অধ্যাপিকা মার্সিডিজ কিনুন বা গরুর গাড়ি চেপে ঘুরে বেড়ান নিরপেক্ষ ভাবে মার্সিডিজের দিকেই ছুটবে।

    স্বপ্ন, উত্তরণ, জেমস জয়েস - ইত্যাদি খুবই চমৎকার, কিন্তু সেক্ষত্রে মার্সিডিজ মালকিন অধ্যাপিকা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছেন বলে মনে হয়।

    সমষ্টিগত ভোগবাদ ও ব্যক্তিগত টানাপোড়েন - ইত্যাদি নিয়ে হয়তো বড় পরিসরে আপনি ধরতে পারেন বিষয়টা।

    অন্যদিকে, সারস্বত গৌরব জিনিসটা নিয়েও তর্ক চলতে পারে। বিদ্যালাভ ও বিদ্যাদান মহান কাজ। কিন্তু উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রটি কোনদিনই পুরোপুরি ইনক্লুসিভ না। এক সময় এই জায়গাটি সমাজের তথাকথিত উঁচুতলার জন্য সংরক্ষিত ছিল, শিক্ষাক্ষেত্রে ব্রাহ্মণ্যবাদ একটি অদৃশ্য হাতি। এই যুগেও এলিটিজম, স্নবারি, ফেভারিটিজম - এইসব নিয়ে অভিযোগ শুনি নানান জায়গায়।
    আর পাঁচটা জায়গার মতই আরকি। আশিজন নিরপেক্ষ, পনেরোজন ভালো, আর পাঁচজন খারাপ লোক দিয়ে তৈরি।
    বিদ্যাচর্চা গৌরবময়, তবে শিক্ষাদান যেহেতু ব্যক্তিসাপেক্ষ, তাই সাব্জেক্টিভ।
  • Abin Chakraborty | ০৬ আগস্ট ২০২৪ ২১:২৩535906
  • বাহাত্তর, আপনার সুচিন্তিত বক্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
  • Ranjan Roy | ০৭ আগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৩535944
  • অবিন,
    আরও লিখুন।
    বাহাত্তুরে আমি বাহাত্তরের সঙ্গে অনেকটাই একমত। 
    ট্রোলিং নিয়ে ভাববেন না।
    একটা  বাড়িতে ভালো বসার ঘর, শোয়ার ঘর, বাগান যেমন থাকে, একটা পায়খানাও থাকে।
  • Abin Chakraborty | ০৭ আগস্ট ২০২৪ ১৬:৩৫535961
  • ধন্যবাদ রঞ্জন রায়।
  • পদাতিক | 146.196.***.*** | ০৭ আগস্ট ২০২৪ ১৭:০০535962
  • জগদীশচন্দ্র বসু রোলস রোয়েস চড়তেন শুনেছি। কেউ এ ব্যাপারে কিছু জানেন ?
  • বাহাত্তর | 208.127.***.*** | ০৭ আগস্ট ২০২৪ ১৮:১৭535964
  • জগদীশ চন্দ্র বসু কোন গাড়িতে চড়তেন সেটা তো কোন কথা না, কথাটা হল বাড়ির সামনে 'আমি একটি রোলস রয়েস কিনিয়াছি, উহা চড়িতে বড় আরাম, আমি উহা চাপিয়া কলিকাতা হইতে শিয়ালদহ যাই' - এরকম নোটিশ লিখে রাখতেন কিনা, যাতে সতেরো হাজার অচেনা লোক পড়তে পারে।
    তুলনা বা উপমাটা ঠিক হলো না, কারন সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখা আর বাড়ির সামনে নোটিশ টাঙানোয় তফাত আছে।
    কিন্তু এর থেকে লাগসই আর কিছু পেলাম না।
  • . | 146.196.***.*** | ০৭ আগস্ট ২০২৪ ১৮:২৯535965
  • খোঁচাদাড়ি চপ্পল ছেঁড়াসুট গায়ে
    দরিদ্র অধ্যাপক মরে চিন্তায়
    মাথার বামদিক জ্ঞানে গিজগিজ
    ডানদিক স্বপ্নে দেখে মার্সিডিজ
    এ হিসেব কিভাবে মিলাইবে হায় !
  • dc | 2a02:26f7:d6c0:680d:0:15b9:4cd6:***:*** | ০৭ আগস্ট ২০২৪ ১৯:১৮535966
  • এহে বাহাত্তরের এই তুলনাটা একেবারেই জমলো না। সোশ্যাল মিডিয়া একেবারে আলাদা জন্তু। 
  • বাহাত্তর | 208.127.***.*** | ০৭ আগস্ট ২০২৪ ১৯:৫১535970
  • হ্যাঁ সত্যি, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যাপারটা একেবারেই ইউনিক।
  • &/ | 151.14.***.*** | ০৮ আগস্ট ২০২৪ ০৭:১৯535993
  • একসময়ে জগদীশচন্দ্রের একটি নৌকো ছিল। কলকাতার ঘাট থেকে নৌকো চালিয়ে তাঁকে চন্দননগরে নিয়ে যেতেন স্ত্রী অবলা নিজে। ভাবা যায়?
  • dc | 2a02:26f7:d6cc:680d:0:7496:cb72:***:*** | ০৮ আগস্ট ২০২৪ ০৮:৩৯535996
  • বাঃ এটা জানতাম না তো! ভারি ভালো লাগলো জেনে। 
  • dc | 2a02:26f7:d6cc:680d:0:7336:24ef:***:*** | ০৮ আগস্ট ২০২৪ ০৮:৪৩535997
  • তখন যদি ফেবু থাকতো তাহলে হয়তো অবলা দেবী একটা সেলফি তুলে পোস্ট করতেন, আর ক্যাপশানে লিখতেনঃ এনজয়ইং আ লেট ইভনিং বোট রাইড উইথ জগা :-)
  • &/ | 107.77.***.*** | ০৮ আগস্ট ২০২৪ ০৯:২২535998
  • And ফর্টিনাইন আদার্স   :)
  • lcm | ০৮ আগস্ট ২০২৪ ১১:৪৪536006
  • ফেসবুক খুব ভালো জিনিস। আগে লোকে বাড়িতে খেতে ডেকে, অনেক ভ্যানতারা করে, বিনয়ের অবতারের নানারকম পোষাক পাল্টাপাল্টি করে পরে, এক কাপ চা খাইয়ে, তারপরে নতুন মার্সিডিজের লম্বা বোরিং কাহিনি শোনাতো। এখন সোজা ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে দেয়। নো চাপ ফর দ্য টেকার্স।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন