এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

  • রাষ্ট্র এবং বিজ্ঞান চেতনাঃ কিছু প্রশ্ন

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৭০৫ বার পঠিত
  • একশ’ দশ বছরের পুরনো ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশন স্থগিত!

    গৌরচন্দ্রিকা

    খবরে প্রকাশ, এ’বছর ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশন হচ্ছে না। সাধারণতঃ এই অধিবেশন প্রতিবছর ৩ থেকে ৭ জানুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। তার কারণ আয়োজক সংস্থা ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশন (ICA) এবং অর্থের প্রধান যোগানদার ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (DST) মধ্যে বনিবনা না হওয়া [1]

    এই ঘটনা বা দুর্ঘটনাটি অভুতপূর্ব। কেননা, কোভিডের দুটো বছর ছাড়া জন্মলগ্ন থেকে কখনও বার্ষিক অধিবেশনটি বন্ধ বা স্থগিত হয় নি। প্রথম অধিবেশন হয়েছিল ১৯১৪ সালে, শেষ বা ১০৮ তম অধিবেশন ২০২৩ সালে।

    ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস শুরু হয়েছিল ব্রিটিশ ভারতে, ১৯১৪ সালে, দু’জন কেমিস্ট্রির অধ্যাপক সাইমনসেন এবং ম্যাকমেহনের উদ্যোগে। উদ্দেশ্য ছিল ভারতে বিজ্ঞানের গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বৃটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অফ সায়েন্সের আদলে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। প্রথম অধিবেশনের সময় সদস্য  সংখ্যা ছিল ১০৫ এবং পেপার পড়া হয়েছিল ৩৫টি। বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ৪০,০০০ ছাড়িয়েছে।

    তার বার্ষিক অধিবেশন হত প্রতিবছর, একত্রিত হতেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা বৈজ্ঞানিক ও ছাত্রের দল। প্রতিনিধিরা আসতেন দেশের বৈজ্ঞানিক গবেষণার নামীদামী কেন্দ্র এবং ল্যাবরেটরি থেকে। পড়া হত নতুন নতুন পেপার, হত বিতর্ক। জমে উঠত সম্মেলন এবং অনুষ্ঠানের বাইরে চা-কফির কাপ হাতে নিজেদের মধ্যে হত অনেক রিসার্চের খবরের আদান-প্রদান। সে’ও কম মূল্যবান নয়।

    দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রতি বছর সম্মেলনের প্লেনারি সেশনের উদ্বোধন করতেন। বিশেষ রিসার্চ পেপারকে স্বীকৃতি দিয়ে পুরস্কৃত করা হত।

    এই অধিবেশন ছিল একটা প্ল্যাটফর্ম যেখানে বিজ্ঞানের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কযুক্ত বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা, মতামত বিনিময় করতে পারতেন।

    কেন এই বিবাদ?

    গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (DST) আর্থিক অনিয়মিততার (financial irregularities) অভিযোগে ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশনকে (ICA) আর্থিক সাহায্য দেওয়া বন্ধ করে দেয়। সায়েন্স কংগ্রেস এই অভিযোগ অস্বীকার করে তীব্র প্রতিবাদ করে এবং ভারত সরকারের নির্দেশকে – সরকারি ফান্ড বিজ্ঞান কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কিত কোন বিষয়ে খরচ করা যাবে না— আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছে। মামলাটি এখন আদালতে বিচারাধীন।

    কিন্তু এর ফলে বন্ধ হয়ে গেল বিজ্ঞান কংগ্রেসের অধিবেশন — এটাই আফশোস। প্রশ্ন হচ্ছে বিজ্ঞান চর্চা এবং রিসার্চের সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং তার গুণাগুণ (কোয়ালিটি) নিয়ে কতটা চিন্তিত ভারত সরকার?

    এর দুটি দিক।

    এক, রিসার্চে আর্থিক সহায়তা এবং পরিকাঠমোর প্রসার করা;
    দুই, উচ্চমানের গবেষণা পত্র প্রকাশ এবং পিয়ার রিভিউ (দেশে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে) করানোর জন্য গাইডলাইন এবং দেখভাল (মনিটরিং)।

    প্রথমে বিত্তীয় কাঠামোর কথা।

    গত বছর (২০২৩ সালে)  ভারত সরকার দেশের বৈজ্ঞানিক প্রগতির উন্নতির জন্যে ন্যাশনাল সায়েন্টিফিক ফাউন্ডেশন (এন আর এফ) নামে একটি সংস্থা গঠনের জন্য বিল পাশ করে। কিন্তু এ’বছর গত ফেব্রুয়ারি মাসে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশ করার সময় বিত্তমন্ত্রী ওই সংস্থার জন্য বাজেটে কত ধার্য করা হয়েছে সে নিয়ে কিছুই বলেননি। তাছাড়া সেই সংস্থার কাজ কতখানি এগুলো সে নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকার মুখ খুলছেন না।

    বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক ‘ডাউন টু আর্থ’ পত্রিকার সঙ্গে আলোচনায় এ’নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন [2]

    চিন্তার কারণগুলো একাধিক।

    (১) আটমাস হয়ে গেল, এখনও প্রস্তাবিত সংস্থাটির যোজনার স্তর থেকে বেরিয়ে প্রশাসনিক কাঠামোর চেহারা দেখা যাচ্ছে না।

    (২) এই প্রস্তাবটি প্রথম শোনা গিয়েছিল   ২০২০ সালে, জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়নের সময়। বলা হয়েছিল ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশনের  (এন আর এফ) লক্ষ্য হল বৈজ্ঞানিক রিসার্চের ব্যাপারে বিভিন্ন ফান্ডিং এজেন্সিগুলোকে (যেমন ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, অ্যাটমিক এনার্জি, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ এবং ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশন) বন্ধ করে ভারত সরকারের রিসার্চের জন্য ফান্ডিংকে কেন্দ্রীকৃত করা।

    (৩) কেন্দ্রীয় বাজেট (২০২১-২২) ঘোষণা করেছিল যে এন আর এফের জন্য আগামী পাঁচ বছরে ৫০,০০০ কোটি টাকা বিত্তপোষণের জন্য আলাদা করে রাখা হবে। কিন্তু পরের বছর বাজেটে এর জন্য রাখা হল মাত্র এক লাখ!  তারপর ২০২৩-২৪ সালের কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটে এন আর এফের জন্য ২০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হল। কিন্তু সেটা অল্পদিনেই সংশোধিত হয়ে ২৫৮.৬০ কোটি হয়ে গেল।

    তারপর, জুন ২০২৩ এ কেন্দ্রীয় সরকার এন আর এফের বিল পাস করল। কিন্তু এ’বছর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন এ’নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করছেন না।

    এবার কথা বলা যাক ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসে ইদানীং কালে পঠিত  গবেষণা পত্রের গুণমান নিয়ে।

    কারণ সমস্যা শুধু ফান্ডিং নয়, বাস্তবে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারাকে কাজেকর্মে কতখানি গুরুত্ব দেওয়া হয়?

    নিন্দুকেরা প্রশ্ন তুলেছেন যেভাবে শাসক দলের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা পাবলিক ফোরামে বিজ্ঞান বিরোধী কথাবার্তা জোর গলায় বলেন তার ফলে জনগণমনে বৈজ্ঞানিক চেতনার কী অবস্থা হয়? তার কিছু নমুনা পেশ করছি।

    • গোমূত্র থেকে ক্যান্সারের ওষুধ

    বিজেপি’র ভোপালের সাংসদ প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর (যাঁর বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের মালেগাঁও বিস্ফোরণে সংলিপ্ত থাকার মামলা মুম্বাইয়ের আদালতে বিচারাধীন) এপ্রিল ২০১৯এ ইন্ডিয়া টুডে’কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে দাবি করেন যে  গরুর দুধ, গোবর এবং গোমূত্র থেকে তৈরি ওষুধে তাঁর ব্রেস্ট ক্যান্সার সেরে গেছে। ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা তাঁর এই দাবিকে পুরোপুরি নস্যাৎ করেছেন। [3]

    •  উনি  আরও বলেছেন যে গরুর গায়ে হাত বোলালে রক্তচাপ কমে যায়।
     
    ২০১৯শে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৬তম অধিবেশনে কিছু তথাকথিত রিসার্চ পেপার পড়া  হয় যাদের বক্তব্য প্রাচীন কালে হিন্দুরা স্টেম সেল রিসার্চ এবং টেস্ট টিউব বেবি জননের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন। প্রমাণ হিসেবে তাঁরা উল্লেখ করেন মহাভারতে গান্ধারীর গর্ভ থেকে ১০০ কৌরবের জন্ম হওয়া।

    অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপকুলপতি জি নাগেশ্বর রাও বলেন — এর থেকে প্রমাণ হয় কয়েক হাজার বছর আগেই ভারত বিজ্ঞান চর্চায় অনেক এগিয়ে ছিল।

    কিন্তু বিজ্ঞান চর্চার আমলে বুক ফুলিয়ে অপবিজ্ঞানের চর্চা কবে থেকে শুরু হল? কবে থেকে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের মত এক নামজাদা অখিল ভারতীয় স্তরের প্ল্যাটফর্মে বৈজ্ঞানিক গবেষণার স্বীকৃত পদ্ধতি এবং সম্বন্ধিত জার্ণালে রিভিউয়ের প্রচলিত মাপকাঠি এড়িয়ে গিয়ে প্রাচীন সভ্যতার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণার নামে যা খুশি  বলা শুরু হল।

    আমরা খেয়াল করেছি যে সালটি ২০১৪ এবং তারপর থেকে এই জাতীয় কথাবার্তা ও দাবির বহর বেড়েই চলল।

    আমরা স্বল্প পরিসরে সন তারিখ দিয়ে কয়েকটি মাত্র উল্লেখ করছি।

    অপবিজ্ঞানের দাবির উদাহরণ

    • গণেশ এবং প্লাস্টিক সার্জারি

    ২০১৪ সালের অক্টোবর মাস। গুজরাতের ডাকসাইটে মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদী মাত্র কয়েকমাস আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। মুম্বাইয়ে চিকিৎসক এবং অন্য পেশার লোকজনের এক সমাবেশে তিনি দাবি করেন যে প্রাচীন ভারতে প্লাস্টিক সার্জারি প্রচলিত ছিল। উনি বলেন, “সেই যুগের চিকিৎসাবিজ্ঞানে অভুতপূর্ব অগ্রগতির জন্যে আমাদের  গর্ববোধ করা উচিত”। উনি আরও যোগ করলেন যে আমরা গণেশকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করি। ‘সেই যুগে নিশ্চয়ই কোন প্লাস্টিক সার্জন ছিল যে হাতির মাথা মানবদেহে সার্জারি করে জুড়ে দিয়েছিল। এইভাবে প্রাচীন কালেই প্লাস্টিক সার্জারি শুরু হয়ে গিয়েছিল’।

    বিজ্ঞান এবং জ্যোতিষ

    প্রধানমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যের পরে দু’মাস কেটেছে। সংসদে বিতর্কের জবাব দিতে উঠেছেন মানব সংসাধন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল ‘নিঃশংক। উনি জোর গলায় বললেন — বিজ্ঞান হার মেনেছে জ্যোতিষশাস্ত্রের কাছে। জ্যোতিষ হল অনেক বড় বিজ্ঞান, আসল বিজ্ঞান। বলতে গেলে জ্যোতিষশাস্ত্রের স্থান বিজ্ঞানের চেয়ে অনেক উঁচুতে। আমাদের উচিত এর প্রচার প্রসারে সহায়তা করা। উনি এটাও দাবি করলেন যে এক লক্ষ বছর আগে কোন ঋষি ভারতে নিউক্লিয়ার পরীক্ষা করেছিলেন।

    এরোপ্লেনের নিয়ম লিখেছেন ঋষি

    আরও একমাস কেটে গেল। জানুয়ারি ২০১৫তে মুম্বাইয়ে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০২তম অধিবেশন হচ্ছে। সেখানে জনৈক অবসরপ্রাপ্ত পাইলট, ক্যাপ্টেন আনন্দ বোড়স, একটি পেপার  পড়লেন যার সার কোথা হচ্ছে ঋষি ভরদ্বাজ ৭০০০ বর্ষ আগে এরোপ্লেন আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি এমনকি পাইলটদের কল্যাণের কথা ভেবে তাদের ভোজনের তালিকাও বানিয়ে দিয়েছিলেন — গরু, মোষ এবং ভেড়ার দুধ! ওঁর আরও দাবি যে তখন পাইলটদের যেসব পোশাক পরতে হত তা’ তৈরি হয়ত জলের তলায় জন্মানো উদ্ভিদের আঁশ থেকে। এখানেই শেষ নয়, ওনার দাবি হাজার হাজার বছর আগে ভারতে গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে ভ্রমণের বিমান ছিল এবং তার রাডার আজকের তলায় অনেক উন্নত ছিল।

    গোমূত্র থেকে সোনা

    জুন ২০১৬, গুজরাতের জুনাগড়ের কৃষি বিশ্বাবিদ্যালয় দাবি করল যে তারা গীর এলাকার ৪০০ গরুর চোনা’র স্যাম্পল ল্যাবরেটরিতে বিশ্লেষণ করে তাতে সোনা পেয়েছে। হিসেবটা হচ্ছে প্রতি এক লিটার গোমূত্রে ৩ থেকে ১০ মিলিগ্রাম সোনা! তার মানে ৪০০ গরুর চোনা থেকে তিন বা চার কিলোগ্রাম সোনা! মার দিয়া কেল্লা!

    আবার গোমূত্রে ৫১০০টি যৌগ উপাদান রয়েছে যার মধ্যে ৩৮৮টির ভেষজ মূল্য রয়েছে। নিউজ ১৮ চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে জনৈক বিজ্ঞানী ডক্টর বি এ গোলাকিয়া বলেন—সোনার পরিমাণ ও গুণবত্তা নির্ভর করে গরুর বয়স কত এবং তাকে কী ভোজন দেওয়া হচ্ছে - তার উপর। সকালের গোমূত্রের চেয়ে সন্ধ্যেবেলার চোনায় সোনার পরিমাণ বেশি আর সবচেয়ে ভাল কোয়ালিটির সোনা পাওয়া যায় কচি বাছুরের চোনায়। তবে দ্য ওয়্যার নামের একটি চ্যানেলে বৈজ্ঞানিকেরা খোলসা করলেন যে গরুর শরীরে কোন ধাতুর সংশ্লেষণ সম্ভব নয়, সোনার মত দামি ধাতুর কথা না ধরলেই ভাল।

    --- আমাদের চিন্তা, খনি থেকে সোনা না তুলে কেন গরুর চোনা থেকে সোনা বানিয়ে দেশের স্বর্ণভান্ডার তৈরির গ্যারান্টিড্‌ প্রকল্প শুরু হচ্ছে না? এভাবে নিয়মিত সোনা মজুদ করতে পারলে দেশের মুদ্রামান আন্তর্জাতিক বাজারে বাহরিন সৌদি আরবের দিনারের সঙ্গে পাল্লা দেবে।

    যজ্ঞে পরিবেশ শুদ্ধ হয়ঃ

    অক্টোবর ২০১৬। কয়েকজন ভারতীয় পুরোহিত জাপানের রাজধানী টোকিওতে গিয়ে বৈদিক শাস্ত্রমতে যজ্ঞ করলেন। উদ্দেশ্য — বিষাক্ত বাতাবরণ এবং পরিবেশের শুদ্ধিকরণ। এই যজ্ঞ করার গোদা বাংলায় মানে হল কাঠে আগুন দেওয়া এবং তাতে ঘি ঢেলে পোড়ানো। কিন্তু এতে তো ধোঁয়া এবং কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়বে। তাতে পরিবেশ শুদ্ধ হবার জায়গায়  আরও বিষাক্ত হবে না? তাতে কি? মার্চ ২০১৮ সালে উত্তর প্রদেশের মীরাটে পরিবেশ শোধনের জন্য এক মহাযজ্ঞের আয়োজন হল। এবং তাতে ৩৫০ জন পুরোহিত অংশগ্রহণ করে ৫০ মেট্রিক টন আমকাঠ পোড়ালেন। পরিবেশ শুদ্ধ হল।

    ময়ুরের কান্নায় ময়ুরীর পেটে ডিম!

    মার্চ ২০১৭। রাজস্থান হাইকোর্টের বিচারক মহেশ চন্দ্র শর্মা বললেন — ময়ুরের কখনও যৌনমিলন হয় না। তাহলে ময়ুরীর ডিম পাড়ার ব্যাপারটা? জাস্টিস শর্মার মতে ময়ুর হল আজীবন ব্রহ্মচারী। তার চোখের জল গিলে ফেললে ময়ুরীর পেটে ডিম হয়।  ময়ুরের চরিত্রের কারণেই ভগবান কৃষ্ণ তাঁর চূড়ায় শিখিপাখা ধারণ করেছেন। বিচারক শর্মাজী এইসব বলেন একটি বিচারে আদালতে বসে রায় দেবার সময়। সেই রায়ে উনি গোরুকে রাষ্ট্রীয় পশু ঘোষণা করার সুপারিশ করেন।

    ডারউইনের ভুল

    এল জানুয়ারি ২০১৮। বিজেপি সরকারের মানব সংসাধন বিভাগের রাজ্যমন্ত্রী সত্যপাল সিং বললেন –‘ ডারউইনের তত্ত্বটি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ভুল’। উনি তখন আসামের একটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করছিলেন। সেখানে উনি বললেন যে ওনার কাছে ১০ থেকে ১৫ জন এমন সব বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিকের নামের সূচি রয়েছে যাঁরা একবাক্যে বলেছেন—বিবর্তনবাদের পক্ষে আজও কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি। এই ব্যাপারটা স্কুলের পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। 

    উনি এটাও বলেছেন যে যবে থেকে ধরায় মানব  এসেছে তখন থেকে তারা মানুষই রয়ে গেছে। বনমানুষ থেকে মানুষে রূপান্তর হতে কে দেখেছে? আমাদের প্রাচীন সভ্যতায় বা পূর্বপুরুষদের কথায় বা পুঁথিতে কেউ বনমানুষ থেকে মানুষে রূপান্তরের কাহিনী লিখে যাননি।

    বৈদিক তত্ত্ব এবং আপেক্ষিকতা

    মার্চ ২০১৮। ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৫তম অধিবেশন। তার উদবোধন করতে গিয়ে তৎকালীন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডক্টর হর্ষবর্ধন বললেন--   বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিক স্টিফেন হকিং বলেছেন যে হিন্দুদের বেদে এমন একটি থিওরি আছে যা আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার তত্ত্বকে মাৎ দিয়েছে। 

    প্রসঙ্গতঃ করোনা-১৯ মহামারীর সময় বাবা রামদেব যখন টিভির সামনে বসে দাবি করছিলেন যে উনি করোনিল নামে কোভিডের ওষুধ তৈরি করেছেন -- যা ১০০% রোগীকে সাতদিনে সারিয়ে দিয়েছে — তখন তাঁর পাশে বসে মৃদু হেসে পরোক্ষে সমর্থন  করছিলেন ডঃ হর্ষবর্ধন, তখন উনি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

    ইদানীং সুপ্রীম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বাবা রামদেবকে তুলোধোনা করে বলেছে — গোটা দেশকে বোকা বানানো হয়েছিল এবং এতে সরকার কোন বাধা দেয়নি। মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।

    প্রাচীন ভারতে ইন্টারনেট

    এপ্রিল ২০১৮। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের উল্লেখ করে  দাবি করলেন যে বহুসহস্র বছর পূর্বে প্রাচীন ভারতে অন্তর্জাল (ইন্টারনেট) আবিষ্কৃত হয়েছিল। অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রকে সঞ্জয় তাঁর পাশে বসে বহু যোজন দূরে ঘটমান কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পুংখানপুংখ ধারাভাষ্য (রানিং কমেন্টারি) দিচ্ছিলেন। এর থেকে প্রমাণ হয় যে তখন অন্তর্জাল (ইন্টারনেট) এবং উপগ্রহ প্রযুক্তি (স্যাটেলাইট টেকনোলজি) ভারতে উপলব্ধ ছিল।

    ডাইনোসর ব্রহ্মার আবিষ্কার

    পরের বছর -- জানুয়ারি ২০১৯। ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৬তম অধিবেশন। সেখানে মঞ্চ থেকে একটি রিসার্চ পেপার পড়লেন পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটির অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর আশু খোসলা। উনি আবার পেশাদার ভূবিজ্ঞানী। ওঁর রিসার্চের দাবি — হিন্দু দেবতা ব্রহ্মা হলেন ডাইনোসরের প্রথম আবিষ্কারক। উনি আরও বললেন যে “রাজসৌর” নামে একটি ডাইনোসরের জন্ম ভারতেই হয়েছিল।

    এর প্রমাণ? সে তো প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্র ঘাঁটলেই পাওয়া যাবে — উনি প্রবল আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বললেন।

    প্রাচীন ভারতে গাইডেড মিসাইল

    ভগবান বিষ্ণু কি যুদ্ধে “গাইডেড মিসাইল” ব্যবহার করতেন? ২০১৯ সালে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৬তম অধিবেশনে মঞ্চ থেকে অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপকুলপতি জি নাগেশ্বর রাও জানালেন — হ্যাঁ, সেই শস্ত্রটির নাম বিষ্ণুচক্র (সুদর্শন?)। সেটার প্রযুক্তি এতটাই উন্নত যে ওটি লক্ষ্যবস্তুকে ধাওয়া করে তাঁকে খতম করে তবে, ব্যুমেরাং এর মত, ভগবান বিষ্ণুর কাছে ফিরে আসত।

    এরপর কংগ্রেসের আয়োজক বৈজ্ঞানিকেরা এ’ধরণের পেপার থেকে নিজের দূরত্ব বজায় রাখা শুরু করেন।

    উপসংহার

    ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশন একটি স্বতন্ত্র সংস্থা, ভারত সরকারের কোন বিভাগ নয়। কাজেই বিজ্ঞান কংগ্রেসের থীম, কে কে পেপার পড়বেন এসব নির্ধারণে সরকারের কোন ভূমিকা থাকার কথা নয়। তাহলে এই ধরণের অপ-বিজ্ঞানের প্রচার বা  কথিত রিসার্চ পেপার এই মঞ্চ থেকে কী করে পড়া হয়?

    তবে মনে রাখতে হবে সায়েন্স কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশনের কাজকর্ম ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিশেষ আর্থিক সহায়তায় চলে। এই আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের শিক্ষা ও অন্যান্য মন্ত্রীরা উপস্থিত হন। কাজেই সম্মেলনের রিসার্চ পেপারের মান পড়লে বা উদ্ভট কিছু দাবি হলে সরকারের দিকে আঙুল ওঠা স্বাভাবিক।

    কিছুদিন ধরেই ভারত সরকার এই সংস্থার কাজ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে চাইছিল। এটা ইউপিএ -২ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী কপিল সিব্বলও ভেবেছিলেন, কিন্তু এতে বিজ্ঞান বিরোধিতার ছাপ লাগার ভয়ে পিছিয়ে আসেন। [4] ইদানীং এর অধিবেশনের প্লেনারি সেশনে প্রধানমন্ত্রীকেও দেখা যায়নি।

    দেখা যাচ্ছে, বিজ্ঞান কংগ্রেসের অবনতি শুরু হয়েছে এক দশক আগে থেকেই। প্রখ্যাত বৈজ্ঞানিকদের বদলে রাম-শ্যাম-যদু এসে পেপার পড়ছেন এবং প্রাচীন সভ্যতার বৈজ্ঞানিক ঐতিহ্যের নামে যা খুশি দাবি করছেন। ফলে দেশের প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিকেরা এই অধিবেশনকে এড়িয়ে চলছিলেন।

    লক্ষণীয়, যে সরকারি বিভাগ এবং ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের মধ্যে বিবাদ এবং মামলা আদালত পর্যন্ত গড়ানোর পেছনে কোন বৈজ্ঞানিক চেতনা প্রসার, রিসার্চ পেপারের গুণমান ইত্যাদি নিয়ে মতভেদ – এসব নেই। ব্যাপারটা শুদ্ধ আর্থিক ক্ষমতার লড়াই। বিজ্ঞান কংগ্রেসের কর্তৃপক্ষ চেয়েছিলেন এবারের অধিবেশন পাঞ্জাবের ফাগওয়ারায় প্রাইভেট সেক্টরের লাভলি ইউনিভার্সিটিতে হোক। গতবারও ওখানেই হয়েছিল। লাভলি ইউনিভার্সিটি খরচা করতে রাজি ছিল। স্পষ্টতই তাতে ওদের ভাল শো-কেসিং হবে।

    কিন্তু তাহলে ভারত সরকারের সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণ কিছু আলগা হয়ে যেত। এই লড়াই কেজো লড়াই, সরকার চাইছে অধিক নিয়ন্ত্রণ।

    একইভাবে ললিত কলা অ্যাকাডেমির তিনবছরের জন্য নিযুক্ত চেয়ারম্যান গ্রাফিক আর্টিস্ট শ্রী নাগদাসের সঙ্গেও বিবাদ শুরু হয়েছে এবং তাঁর প্রশাসনিক ও বিত্তীয় ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

    সেক্রেটারি রণজিত কুমার  বর্মা বলেছিলেন -- জানুয়ারিতে বার্ষিক অধিবেশন স্থগিত হওয়া দুর্ভাগ্যজনক, কিন্তু এই আর্থিক বছরে ৩১ মার্চের আগে কনফারেন্স হবেই। আশা রাখি, প্রধানমন্ত্রী এতে অংশগ্রহণ করবেন।

    দেখা গেল সেটা হয়নি। আবার জনৈক সরকারি আধিকারিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন বিজ্ঞান কংগ্রেসকে আর্থিক সহায়তা দেয়া ফের শুরু হবে। আগামী ২০২৫ সালের বার্ষিক  অধিবেশনের জন্য কথাবার্তা চলছে।

    ভাল কথা। কিন্তু অধিবেশনের গুণমান ফিরিয়ে আনার জন্য কোন স্পষ্ট রণনীতি বা গাইডলাইন কবে শোনা যাবে? এনিয়ে সরকার বা ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেস কোন চিন্তাভাবনা করছেন কি?

    ==================================================================

    [1] ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ৪ জানুয়ারি, ২০২৪।
    [2] ডাউন টু আর্থ; ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪।
    [3] Caravan, 26th June, 2019
    [4] ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ৪ জানুয়ারি, ২০২৪।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অরিন | 119.224.***.*** | ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৪৭742895
  • রঞ্জনবাবু, 
    এবারের বিজ্ঞান কংগ্রেস না হয়ে একদিক থেকে ভালই হয়েছে মনে হয়। আপনি লেখেননি, তবে কয়েক বছর আগে ব্রিটিশ নোবেল জয়ী ভেঙ্কটরমণ রামকৃষ্ণণ বিজ্ঞান কংগ্রেসে আমন্ত্রিত ছিলেন, পেপার যা পেশ করা হচ্ছিল দেখেশুনে ভদ্রলোক আর কখনো বিজ্ঞান কংগ্রেসে আসবেন না বলে স্থির করেন। 
    আরেকটা খারাপ ট্রেণ্ড, ভারতের বহু গবেষণাপত্র প্রকাশের পর বাতিল হয়ে যাচ্ছে, ভারত থেকে গবেষণা পত্র retraction, এর রেট অনেকটাই বেশী। 
    একদিকে বিজ্ঞান চেতনা এবং বিজ্ঞান বিষয়ক ভাবনা চিন্তার অবনতি, অন্য দিকে যা লেখা হচ্ছে তার মান নীচু, এই অবস্থায় ভারতীয় বিজ্ঞান গবেষণা নিয়ে ভবিষ্যত খুব উজ্জ্বল মনে করার কারণ নেই। এর পর ফাণ্ডিং কমলে অবস্থা ক্রমশ সঙ্গীন হবে।
  • অরিন | 119.224.***.*** | ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৫০742896
  • এটা দেখুন,
    "The increase in retractions raises concerns over research quality as well as the wastage of scientific resources, which is especially pressing considering the present environment of scarce funding. The problem of retractions due to reasons such as plagiarism, duplicate publication, authorship issues, and, ethical issues as well as post-retraction citations can be mitigated by educating and raising awareness on publication ethics and responsible research conduct of researchers and journal publishers. Retractions due to fabrication, falsification, and fake peer reviews are more challenging to difficult to address and require further research for the identification of effective solutions."
     
  • রঞ্জন | 110.227.***.*** | ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৪১742898
  • অরিনদা,
    একদম। খাঁটি কথা। নেচার পত্রিকার লিংক সেভ  করে রাখলাণ।
    এই লেখাকে সংশোধন করে তাতে যোগ করব।
  • রঞ্জন | 2402:e280:3d02:20a:46ab:e3d3:5698:***:*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৫২742900
  • অরিনদা ও অমিতাভবাবুকে পাঠপ্রতিক্রিয়া দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ 
  • kk | 172.58.***.*** | ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৪৯742901
  • এই লেখা, আর তারপরের আলোচনা খুব ভালো লেগেছে। কয়েকজনের সাথে শেয়ার করলাম।
  • Ranjan Roy | ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৪১742911
  • ্ধন্যবাদ কেকে। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন