সত্যি, চা য়ের কথা বলতে গেলে একটা অন্য রকমের জগতের কথা পাড়তে হয়!
অনেকটা ওয়াইনের মতন, এবং একটি ব্যাপারে চা ও ওয়াইনের মধ্যে "মিল" রয়েছে। ওয়াইন যেমন ক্যাথলিক যাজকদের হাত ধরে নানান রকম দীর্ঘ পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গড়ে উঠেছে, চাও সেইরকম প্রাচ্যে বা এশিয়ায় বৌদ্ধ সংঘে গড়ে উঠেছে | পরে কোন সময় ওয়াইন নিয়ে আলোচনা করা যাবে না হয়, আপাতত চা কফিতে সীমাবদ্ধ থাকা যাক, :-),
এক কাজ করা যাক, চাজিউললুন নামে চা আর ওয়াইনের একটি পারস্পরিক আলাপ আলোচনা বা বলা যাক, বিতর্ক পড়াই আপনাদের, :-)
বিতর্কটি অবশ্যই কিছুটা ধর্মীয়, সে বুঝে নিতে হবে, তবে সে কথা থাক। লেখাটি দ্বাদশ শতাব্দীতে চীনের দুনহুয়াং প্রদেশে একটি গুহায় নাকি পাওয়া যায়। ভারি মনোজ্ঞ সে আলোচনা, এখানে তার লিঙ্ক:
kk,, "কি নন-ডেয়ারী কিছু দিয়ে সাবস্টিট্যুট করেন? কোকোনাট কনডেন্সড মিল্ক বা ওট মিল্ক?"
আমি চা বা কফিতে একেবারেই "দুধ" জাতীয় কিছু দিই না, তার অবশ্য একটা কারণ আমি "পশুজাত দুধ" মানুষের পান করা ব্যাপারটারই বিরোধী । তবে কখনো সখনো খুব ইচ্ছে করলে ব্যারিস্টা গ্রেড ওট মিল্ক দিই, বা কোকোনাট মিল্ক (যদিও আমাদের সাবেক নারকেলের দুধের সঙ্গে এর কোন সম্বন্ধ নেই, :-)) | আমার এমনিতেও xanthan মেশানো কোন ড্রিংক না-পসন্দ।
s একটা খুব দামী কথা লিখলেন, "টি ব্যাগে অনেক ফরএভার কেমিকাল থাকে। তাই টি ব্যাগের ব্যাবহার কমাতে চেষ্টা করছি। "
টি ব্যাগ যাচ্ছেতাই জিনিস, ও যত কম ব্যবহার করা যায় ততই মঙ্গল। বেসিকালি এক চা চামচে চা দেবে, তাতে রাজ্যের দড়িসুতো, কাগজ কেমিকাল লাগিয়ে বিতিকিচ্ছিরি ব্যাপার স্যাপার, :-), তার ওপর ভযানক ক্ষতিকারক ( Plastic Teabags Release Billions of Microparticles and Nanoparticles into Tea,
https://pubs.acs.org/doi/10.1021/acs.est.9b02540 ), তা সে এক রকম (আপনি বলত পারেন সব টি ব্যাগ একরকম ক্ষতিকারক নয়, সেও ঠিক, তবে সব টি ব্যাগ একই রকম অখাদ্য)
সে তো একটা দিক।
টি ব্যাগ বলুন বা স্ট্রেনারের একটা অন্য সমস্যা আছে। আপনি যদি লুজ চা পাতা কাপে বা টিপটে (যে ধরণের টিপটে মেশ স্ট্রেনার একেবারেই নেই বা টিপটের ভেতর বরাবর চারপাশে বা তলায় বিছোন আছে), চা পাতা ফেলে তার ওপর গরম জল ঢেলে (সরাসরি চা পাতার ওপর নয়, টিপটের "দেওয়াল বরাবর জল ঢালতে হবে) চা খান, সে এক রকম। কিন্তু স্ট্রেনার বা স্টীপার জাতীয় কিছুতে চা পাতা রেখে ভিজিয়ে চা করার সমস্যা হচ্ছে, শুকনো চায়ের পাতা জল পেয়ে ফুলে ওঠার পর বাড়বার জায়গা পায় না। যার জন্য তার স্বাদ অন্য রকমের হয়, ব্যাপারটা বিশেষ করে জাপানী সেনচা বা গ্রীণ টিতে দেখা যায়, বহু লোককে জানি গ্রীণ টির নাম শুনলে নাক সিঁটকোন, তার একটা কারণ হতে পারে এরা "টি ব্যাগে" গ্রীণ টি খেয়ে অভ্যস্ত, সে গ্রীণ টি অতি অখাদ্য বস্তু! অথচ সেনচা, বুজিচা, বা gyukuro জাপানী চা'র তুল্য স্বর্গীয় স্বাদের চা খুব কম আছে। বা "মাচা" (matcha) পাউডার | একটু তরিবৎ করে করতে হয় বটে, তবে অপূর্ব তার স্বাদ! মা'চা পাউডার অবশ্য রান্নাতেও ব্যবহার করা যায়।
অনেকে ছাঁকনিতে শুকনো চা পাতা রেখে জল ঢেলে চা করেন, সে এক রকম, তাতে ছাঁকনির সাইজ অনুযায়ী চা পাতা গুলো কিছুটা বাড়বার জায়গা পায়। সেটা বরং ভাল।
স্ট্রেনার বা টি ব্যাগে সে ব্যাপারটা একেবারেই সম্ভব নয়, যার জন্য চায়ের আসল স্বাদ পাওয়া যায় না।