গল্প নম্বর :- ১০
ছেলের হাতে বাবা খুন।
গল্পকার :- শংকর হালদার শৈলবালা।
(কবিতা দিবস ও কবির ভাবনা ২২ যৌথ কবিতা সংকলনের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।)
◆ রচনার শ্রেণী :- সামাজিক অবক্ষয় ও শিক্ষামূলক বাস্তব অনুগল্প।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
◆ ভোর বেলা প্রতিবেশী কান্নার আওয়াজ শুনে মহাদেবের ঘুম ভেঙ্গে যায়। আওয়াজ লক্ষ করে এগিয়ে গিয়ে জানতে পারে কর্মকার বাড়ির বয়স্ক সজল কর্মকার গামছা গলায় দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
◆ মৃতের একজন ছেলে আর দুটি মেয়ে। ছেলে ঘরের নাতি নাতনি নিয়ে দুঃখের সংসার। ছেলে বৌমা মৃতের খেতে পড়তে দেয়নি, এই নিয়ে অনেক বার গ্রামের মেম্বার সহ কয়েকজন ব্যক্তি কর্মকারের বাড়িতে মিটিং হয়েছে। মৃতের ছেলেকে পাড়া প্রতিবেশী গণ তার বাবাকে খেতে দেওয়ার জন্য প্রথমে অনুরোধ করে কিন্তু রাজি না হওয়ায় হুমকি দিয়ে থাকে, তবুও কোন কাজ হয়নি।
◆ সজল কর্মকার মহাশয়ের যতদিন শরীরে জোর ছিল, ততদিন লোহা পিটিয়ে দা, কুড়াল ও কাঁচি ইত্যাদি তৈরি করে নিজের জীবন নির্বাহ করতেন। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে ছেলে বৌমার কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। সজল বাবুর তৈরি পাকা বাড়িতে থাকার কোন অধিকার ছিল না। পাশে থাকা জরাজীর্ণ ভাঙা ঘরে একা বাস করতো। খাওয়া দাওয়া হোটেলে চলতো।
◆ সজল বাবুর একমাত্র ছেলে তড়িঘড়ি করে লাশ শ্মশানে নিয়ে যায়। কয়েক জন প্রতিবেশীর মাধ্যমে চিতায় উঠানোর তড়িঘড়ি ব্যবস্থা চলতে থাকে।
◆ সজল বাবুর আত্মহত্যার চিহ্ন দেখে পাড়ার লোকের সন্দেহ হয়। মৃতের ছেলে বৌমা কে জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন সঠিক উত্তর পাওয়া যায় না। বরং প্রতিবেশীদের উপর উল্টোপাল্টা কথাবার্তা বলতে শুরু করে।
◆ প্রতিবেশীর মধ্যে থেকে তৎক্ষণাৎ পাড়ায় থাকা সহযোগী পুলিশকে ফোন করে জানিয়ে দেয়। কিছু সময়ের মধ্যেই থানার পুলিশ শ্মশানে এসে হাজির হয়। সেই মুহূর্তে সজল কর্মকারের লাশ জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য তার ছেলে আগুন হাতে নিয়ে ঘুরতে থাকে।
◆ পুলিশ তাৎক্ষণিক মৃতের ছেলেকে বাধা দান করে এবং লাশকে পোসমাডাম করার জন্য ডোমকে নির্দেশ দেন। পুলিশ তার ছেলে বৌমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়ে যায়।
◆ পুলিশ ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ভয় দেখিয়ে সজল কর্মকারের ছেলে-বৌমা কে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তার বাবার হত্যা করার ঘটনা বিস্তারিত ভাবে জানায়।
◆ স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলিত হয়ে তার বাবাকে হত্যা করার পর, গামছা গলায় বেঁধে দেওয়া হয়। অসুস্থ বাবাকে দেখাশোনা করতে করতে নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
◆ পোস্টমাডাম রিপোর্ট অনুসারে হত্যার মামলা দায়ের করে দুজনকে কোর্টে চালান করে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
◆ রচনাকাল :- ২৩/০৭/২১ সাল। দত্তপুলিয়া যুব গোষ্ঠী ক্লাব,নদীয়া।
◆ সংশোধনের তারিখ :- ১০ আগস্ট ২০২৩ সালে। কবি ও সাহিত্যিক দীনবন্ধু সরকারের বাড়ি, বগুলা, নদীয়া।
----------------------------------------------------------
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।