গল্প নম্বর :- ৯
প্রতিবাদী ছাত্র।
লেখক :- শংকর হালদার শৈলবালা।
◆ রচনার শ্রেণী :- সামাজিক ঐতিহাসিক বড় গল্প । ছাত্রদের উপর শিক্ষকগণ শাসনের নাম করে ভীষণ ভাবে মারপিট করে অত্যাচারের প্রতিবাদের কাহিনী। ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
◆ ব্যস্ততম এক শহরে পথ চলতি মানুষ গুলো হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে পড়ে আর কৌতুহল নিয়ে একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে, শহরের মাঝে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান গেটের সামনে বহু মানুষের জমায়েত কেন!
◆ বয়স্ক করিম চৌধুরী কৌতুহলবশত এক পা দু'পা করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে, চারিদিকে তাকিয়ে কিছুই দেখতে না পেয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক যুবক কে বলে :- ভাতিজা; এখানে কি হয়েছে! বহু মানুষের সমাগম।
◆ যুবক পরিতোষ বলে :- কাকাবাবু; দুই ছাত্রের মধ্যে মারামারি হয়েছে।
◆ করিম চাচা বলেন :- দুই ছাত্রের নাম কি?
◆ যুবক পরিতোষ বলে :- নদীর ওপারের নীলকান্ত পাল আর এপারের আলমগীর সেখ। দুজনে দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। লাঠি সোটা নিয়ে পিঠাপিঠি হয়েছে। নীলকান্ত কিন্তু আলমগীরের মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করে দিয়েছে। কয়েকজন মাস্টার মশাই হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। এখনো রাস্তায় তাজা রক্তের দাগ হয়েছে।
◆ করিম চাচা বলেন :- নীলকান্তের বাবা একজন সমাজের ভালো মানুষ আর তাকে এলাকার মানুষ যথেষ্ট সম্মান করে আর তার ছেলে মস্তানি করে, মদ্যপান ও বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়া পান করে টাকা নষ্ট করে। অসৎ ছেলেদের সাথে মিশে অসামাজিক হয়ে উঠেছে, মনের মধ্যে বিশ্বের বদমাইশি বুদ্ধি ভরা।
◆ যুবক পরিতোষ বলে :- নীলকান্তের কয়েক জন হিন্দু ও মুসলিম যুবকদের নিয়ে একটি দল করেছে কিন্তু আলমগীর ওদের দলের একজন সদস্য।
◆ মধ্য বয়স্ক সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন :- হয়তো ওদের নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কোন ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে।
◆ করিম চাচা বলেন :- গত বছর একবার ওদের দুর্গা পুজোর বিসর্জনের দিনে নীলকান্ত নদীর পানির মধ্যে নৌকার উপর মারামারি করে, সে এক বিশাল ভয়ানক কান্ড ঘটে যায়। নৌকাডুবি হয়ে অনেকেই মরার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিল। সেই গন্ডগোলের মধ্যে ও নৌকা ভ্রমণের নৌকার মধ্যে আমাদের মুসলিম যুবকরা ছিল।
◆ নুরুল ইসলাম হাত উঁচু করে ক্রোধের সাথে বলেন :- আরো শয়তান বিচ্ছু তোদের পুজো আর তোরা যদি মারামারি ও অশান্তি করিস, তাহলে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষগুলো কি করবে?
◆ অল্প বয়সের এক যুবক আবিদ খান চিৎকার করে বলে :- মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বাস করে কিন্তু এত সাহস কখনোই ভালো না। যেকোনো মুহূর্তে বিপদের সম্মুখীন হতে হবে।
◆ নুরুল ইসলাম বলে :- হিন্দু-মুসলমানের গন্ডগোল বাধলে তো মুসলমানদের দোষারোপ করবে কারণ এই জেলার মধ্যে হিন্দুরা সংখ্যালঘু।
◆ করিম চাচা বলেন :- থানা পুলিশ হয়ে কয়েক দিন থানাতে নীলকান্ত কে আটকিয়ে রেখে ছিল। তাও কিন্তু ছেলেটার কোন শিক্ষা হয়নি, কত বার যে জেল হাজতে গিয়েছে।
◆ এলাকার তরুণ সাংবাদিক সমীর সরকার বলে :- দেশের শাসক দলের রাজনৈতিক নেতারা আবার মুক্ত করে নিয়ে এসেছে কিন্তু রাজনীতিক নেতাদের জন্যই দেশের যুবসমাজ অধঃপতনে দিকে অগ্রসর হচ্ছে ।
◆ যুবক পরিতোষ বলে :- দেখুন; এ বার কি হয়! জল কোন দিকে গড়াই।
◆ করিম চাচা বলেন :- আমার ছেলে তো নীলকান্তের বড় প্রশংসা করে বলে, সমাজসেবক পরোপকারী। ওই তো তার নমুনা নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছি। নীলকান্ত হারামজাদা কোথায়! পালিয়ে গেছে নাকি? কিন্তু আসল ঘটনা কি ঘটেছে! আমাকে জানতেই হবে।
◆ যুবক অনিল বলে :- না; পালাতে পারেনি। গন্ডগোলের সময় আমি এখানে উপস্থিত ছিলাম। নীলকান্ত কিন্তু আলমগীর সেখ কে মারতে মারতে বলছিল, বিনা কারণে পন্ডিত (হরকান্ত ভট্টাচার্য) স্যার কে দিয়ে বেতের লাঠির মার খাওয়ালি কিন্তু তোকে না মারলে তো আমার শরীরের যন্ত্রণা যাবে না। বলতে বলতে চোঁখ কান বন্ধ করে লাঠি দিয়ে মারতে থাকে।
◆ করিম চাচা বলেন :- তাহলে হয়তো আলমগীরের কোন দোষ নিশ্চয়ই আছে।
আব্দুল হামিদ বলে :- আমি যতদূর জানি নীলকান্ত বিনা কারণে কারো সাথে অশান্তি ঝগড়া করে না।
◆ যুবক পরিতোষ বলে :- তুই তো ওর বন্ধু না।
আব্দুল হামিদ বলে :- নীলকান্ত আমার বন্ধু না হলেও পরম বন্ধু। আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়লে পাড়ার কেউ না গেলেও নীলকান্ত হাসপাতালে গিয়েছিল এবং যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিল।
◆ যুবক পরিতোষ বলে :- সেই সময়ে স্যারেরা এসে নীলকান্ত কে ধরে টানতে টানতে স্কুলের অফিস রুমে নিয়ে যায়। অফিস রুমের মধ্যে কি হচ্ছে জানি না! কিন্তু স্কুল আজকের মতো ছুটি দিয়ে দিয়েছে।
◆ করিম চাচা বলেন :- লাঠি কোথায় পেলে, সাথে করে নিয়ে এসেছিল কি?
◆ যুবক আবিদ খান আঙ্গুল উচু করে দেখিয়ে বলে :- আরো চাচা; ঐ ব্যাংকের পিছনের দিকে সাহা বাবুদের পরিত্যক্ত বাগান হয়েছে। ঐ বাগানের মধ্যে লাঠি চাকু থাকে আর মাঝখানে পরিস্কার করে রাতে গাঁজা, মদ্যপান আর বিড়ির ধোঁয়ায় পূর্ণিমার রাত কে অমাবস্যার রাত মনে হবে।
◆ করিম চাচা বলেন :- যায় দেখি স্কুলের অফিস রুমের দিকে, আমাকে ঘটনাটি জানতে হবে।
◆ নীলকান্ত কে অফিস রুমের মধ্যে সব মাষ্টার গণ ঘিরে ধরে রেখেছে। কোন কোন মাষ্টার নতুন বেত নিয়ে অবাধ্য ছাত্র কে পেটানোর জন্য তৈরি হয়ে আছে । আর পন্ডিত মাস্টার হরকান্ত ভট্টাচার্য মোটা মোটা দেখে চার খানা বেত একত্র করে সুযোগের অপেক্ষায় আছে।
◆ এক মাস্টার মহাশয় ধৈর্য রাখতে না পেরে বেত তুলে নীলকান্ত কে মারতে উদ্যত হয়। সেই মুহূর্তে নীলকান্ত লাফ দিয়ে মাস্টার মশাইয়ের হাতের কব্জি চেপে ধরে এক হাত দিয়ে অন্য হাত দিয়ে বেত ধরে জোরে টান দিতেই বেত নীলকান্তের হাতে চলে আসে।
◆ তারপর মাস্টার মশাই কে ছেড়ে দিয়ে বেত নিয়ে তার মাথার উপর দিয়ে লাঠি খেলার মতো করে কয়েক পাক ঘুরিয়ে নেয়।
◆ নীলকান্ত চিৎকার করে উঠে বলে :- আপনারা কেউ দয়া করে আমার গায়ে বেত চালাবেন না। আমি কিন্তু বর্তমানে বিচার অধীন অপরাধী। এই মুহূর্তে বেত চালালে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে আর আপনাদের সম্মান নষ্ট হতে পারে।
আগে আমার আর পন্ডিত মাস্টারের মধ্যে হওয়া গন্ডগোলের সূত্রপাতের সমস্যা গুলো শুনুন, তারপর বিচার হবে। আর বিচারে যদি অপরাধী হয় তাহলে মনে মতো বেত মেরে আমার দেহ ক্ষত বিক্ষত করে দেবেন তবুও কিছু বলবো না।
◆ নীলকান্ত যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে ধীরে ধীরে প্রধান মাস্টারের রুমে ঢুকে বেঞ্চের উপর বসে পড়ে বলে :- পন্ডিত মশাই যা পিটিয়েছে তাতে ছয় মাস যন্ত্রণা থাকবো কিন্তু সমস্যার সমাধান করুন।
◆ প্রধান মাস্টার মধ্য বয়স্ক আজিজুল হক সাহেব বলেন :- কেন! তুই দুষ্টুমি করিস বাপ।
◆ নীলকান্ত বলে :- স্যার; টাকা দেন যন্ত্রণার ঔষধ আনতে হবে, আমি নিয়ে আসছি। দেন না স্যার। বলে যন্ত্রণায় ছটফট করে কান্নাকাটি করতে থাকে।
◆ রুমের মধ্যে উপস্থিত অন্য মাষ্টার গণ বলেন :- স্যার; ওকে যেতে দেবেন না, ধূর্ত শেয়ালের মতো পালিয়ে যাবে।
◆ প্রধান মাস্টার মশাই ৫০ টাকা নীলকান্তের হাতে দিয়ে বলেন :- মাস্টার মশাই আপনারা চুপ করুন। নীলকান্ত ঔষধ নিয়ে তাড়াতাড়ি আয়।
◆ নীলকান্ত দলের ছেলেরা স্কুলের অফিসের বাইরে ২৩ থেকে ২৫ জন অপেক্ষা করে আছে।
◆ নীলকান্ত এক জন ছেলে কে ডেকে তার হাতে টাকা দিয়ে বলে :- রুটি, মিষ্টি আর ঔষধ নিয়ে আয় কিন্তু তাড়াতাড়ি আসবি।
◆ উক্ত ছাত্র বলে :- এই টাকায় এত জিনিস হবে না, আরো টাকা দাও দাদা ।
◆ নীলকান্ত বলে :- না হয়, তোদের পকেট থেকে দিয়ে নিয়ে আয়। তাও না থাকলে বন্ধু তাপসের দোকানে গিয়ে আমার কথা বল।
◆ সুবোধ মাস্টার মশাই ছাত্রদের সমস্যা দেখে পকেট থেকে ত্রিশ টাকা দিয়ে বলেন :- ঔষধ ও খাবার নিয়ে আয়।
◆ কিছু সময়ের মধ্যেই তার ঔষধ ও খাবার চলে আসে। মাস্টার রুমে বসে খাবার ও ওষুধ সেবন করে জল পান করে। তারপর ধীরে ধীরে প্রধান মাস্টারের রুমে ঢুকে বেঞ্চের উপর বসে পড়ে।
◆ প্রধান মাস্টার মশাই বললেন :- তোর বন্ধু আলমগীর কে মারলি কেন?
◆ নীলকান্ত বলে :- মাস্টার মশাই; যা বলবে সত্য বলবে কিন্তু মিথ্যা বলবে না। পন্ডিত মাস্টার মহাশয়ের কাছে আমার প্রতি আলমগীর, আনোয়ারের সিনেমা হলে "জঙ্গল কি লাভ" হিন্দি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি দেখার অভিযোগ করেছে।
◆ গতকাল বুধবার আমি নাকি টিফিনের সময়ে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে শহরের সিনেমা হলে হিন্দি সিনেমা দেখতে গিয়ে ছিলাম। আমি স্বীকার করছি যে সিনেমা দেখা আমার নেশা আছে। গতকাল আমি মধ্যাহ্নের খাবারের অবসর (টিফিন পিরিয়ডের) সময়ে কিন্তু সিনেমা দেখতে যায়নি। প্রয়োজনে মধ্যাহ্নের খাবারের অবসর সময়ের পরের ক্লাসের মাস্টার মশাইয়ের কাছে জিজ্ঞাসা করুন।
বরুণ মাস্টারমশাই বলেন :- নীলকান্ত ঘটনার দিন আমার ক্লাস করেছে।
◆ নীলকান্ত বলে :- স্যার; আজ পন্ডিত মাস্টার মশাইয়ের ক্লাস চলাকালীন সময়ে আলমগীর আমার বিরুদ্ধে উক্ত অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু পন্ডিত মাস্টার উক্ত অভিযোগের বিষয়ে কোন তদন্ত করে না। আমাকে কোন কিছু জিজ্ঞাসাবাদ না করেই কিন্তু আমার ওপর এলোপাতাড়ি ভাবে বেতের লাঠি চালাতে শুরু করে।
◆ নীলকান্ত কয়েক মিনিট চুপচাপ থাকার পর বলে :- আসলে পন্ডিত মাস্টার কানে কালা। আলমগীর বলেছে এক রকম আর মাস্টার শুনেছেন অন্যরকম। বিচার না করে আমাকে আঘাত করার কারণ হচ্ছে আমি তো অনেক দোষে দোষী হয়ে আছি। আমার শরীরে সাইনবোর্ড লাগানো আছে। এই জন্য দোষ না করলেও কিন্তু আমাকে দোষী সাব্যস্ত করে সবাই সাজা দিতে থাকে।
◆ পন্ডিত মাস্টার উত্তেজিত হয়ে বলেন :- আমি কানে কালা,দেখাচ্ছি তোর মজা।
◆ প্রধান মাস্টার মশায় পন্ডিত মাস্টারের উদ্দেশ্য করে বলেন :- চুপ করুন আপনি। নীলকান্ত তারপর কি হল?
◆ নীলকান্ত বলে :- আমি বার বার বলেছিলাম, আমি হিন্দি সিনেমা দেখতে যায়নি। আপনি খোঁজ নিয়ে দেখুন বর্তমান বাংলা ছবি দেখানো হচ্ছে। কে কার কথা শোনে, থানায় অনেক দিন পর চোর ধরা পড়লে যেমন মারে ঠিক সেই ভাবে পন্ডিত মাস্টার চোঁখ কান বন্ধ করে মরতে থাকে।
◆ পন্ডিত মাস্টার আমার প্রতিবেশী সকাল বেলা তার স্ত্রীর সাথে ভীষণভাবে ঝগড়া অশান্তি হয়েছে, সেই স্ত্রীর উপরের রাগ কিন্তু আমাকে আঘাত করে করে মিটিয়েছেন। মাস্টার মশাইয়ের স্ত্রী কিন্তু আমাকে ভীষণ স্নেহ করেন। এই ঘটনা শোনার পরে আজ আরও অশান্তি বিশাল আকারে রূপ ধারণ করবে।
◆ পন্ডিত মাস্টার বলেন :- নীলকান্ত একদম বাজে কথা বলবে না। এই অবাঞ্ছিত কথাবার্তা বলার কারণে জন্যই তুই মার খাস।
◆ প্রধান মাস্টার মশাই বলেন :- মাস্টার মশায় চুপ করুন। আমাকে ঘটনা কি বুঝতে দেবেন তো, কার দোষ তা পরে বিচার হবে।
◆ নীলকান্ত বলে :- অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করতে গেলেই নীলকান্ত খারাপ কিন্তু তেল মাখিয়ে অন্যায়কে সমর্থন করলে ভালো ছেলে। শিক্ষকরা, ছাত্রদের শিক্ষাদানের নাম করে- নিজের ইচ্ছা মতো পেটানো, তাতে দোষ নেই কেন?
◆ শিক্ষকরা সবাই কিন্তু সরকারের বেতনভুক্ত কর্মচারী আর তাদের কাজ ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা দান করা কিন্তু অমানবিক ভাবে অত্যাচার করে ছাত্রদের দেহের চামড়া তুলে নেওয়া এ কোন শিক্ষা ব্যবস্থা।
◆ বিংশ শতাব্দীর আশির দশকে পৌছিয়ে আমরা শিক্ষাকে নিয়ে ভীষণভাবে গৌরব বোধ করি। কিন্তু শিক্ষকদের উপর আঘাত করলাম কেন! জানতে চাইলে না?
◆ প্রধান মাস্টার মশাই বলেন :- নীলকান্ত ; তুমি বলে যাও আমি শুনছি।
◆ নীলকান্ত টেবিল থেকে জলের গ্লাস নিয়ে জল পান করে বলে :- অতীতের কথা গুলো , হয়তো আপনাদের মনে নেই।
বেশি দিনের ঘটনা নয় কিন্তু সাত মাস আগে এই স্কুলে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এই স্কুলের সমগ্র শিক্ষকদের কঠিন হৃদয়ের মাঝে সেই ঘটনার কোন রেখাপাত করেনি।
আমার সহপাঠী দশম শ্রেণীর ছাত্র সাইফুল ইসলাম। আরবি শিক্ষক আতিয়ার রহমানের আরবি শিক্ষা ক্লাসে বলেছিল :- আরবি পড়তে ভালো লাগে না। আমি মাতৃভাষা বাংলা ঠিক মতো জানি না। আরবি ইসলাম ধর্মীয় বিদেশি আরব দেশের ভাষা কিন্তু বাঙালি ছেলেদের পড়ে লাভ কি ?
বরংচ বাংলা ভাষায় ইসলাম ধর্মীয় সম্পর্কে জানলে, অনেক কিছু শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জন করতে পারবো।
◆ শিক্ষক আতিয়ার রহমান উত্তেজিত হয়ে, মৌলবাদী সন্ত্রাসী ব্যক্তিদের মতো বিধর্মী কাফের কে বিনাশ করার জন্য শয়তানের মত হয়ে এলোপাতাড়িভাবে সাইফুল কে পেটাতে শুরু করেন। তাহলে ইসলাম ধর্মকে রক্ষা করার এটাই মূল অস্ত্র।
সেই মুহূর্তে যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে সাইফুল চোখ গেল চোখ গেল বলে চিৎকার করতে থাকে, তবুও নিষ্ঠুর হৃদয়ের আরবি শিক্ষক পেটানো বন্ধ করেনি।
আরবি শিক্ষকের ভাষায় সাইফুল নাকি ইসলামকে অবমাননা করে কাফের হয়ে গিয়েছে। ইসলাম তো শান্তির ধর্ম তাহলে ইসলাম নাম করে মানুষকে পিটিয়ে খুন করতে চেয়েছিলেন কেন? সেই মুহূর্তে সাইফুলকে নিয়ে কোনো প্রতিবাদ হয়নি বা আপনারা তার কোন সঠিক বিচার করেননি।
আমি বিধর্মী হিন্দু হয়েও, ইসলাম সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি, ইসলাম ধর্মের অবমাননা আমার বন্ধু কখনো করেনি বরং ইসলামকে নিজের মাতৃভাষায় জানতে চেয়েছে তাকে সম্মানের আসনে বসাতে চেয়েছিল।
◆ আরবি শিক্ষকের কারণে সাইফুলের চোখের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সঠিক চিকিৎসার অভাবে ধীরে ধীরে চোখের সমস্যা বেড়ে চলেছে , হয়তো ভবিষ্যতে অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
◆ দিন আনা দিন খাওয়া দারিদ্র্য বাবা-মা সন্তানকে বাঁচানোর জন্য কিন্তু সব কিছু হারিয়ে ভিখারীর দশা হয়েছে। এক ছেলের উপর অমানবিক অত্যাচার হওয়ার কারণে তাদের অন্যান্য ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু আপনার মুসলিম সমাজ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি বরং উল্টো তাদের উপর কাফের তকমা লাগানো হয়েছে।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে কিন্তু ধর্মের শাসক বা ধার্মিক হওয়া যায় না। তার জন্য হৃদয়ে আল্লাহর সৃষ্টি মানুষকে ভালোবাসা ও মানবতা বোধ রাখতে হবে।
সমাজের গরীব মানুষ বলে আরবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারে নাই। আপনাদের বহুবার সাইফুলের সমস্যার কথা জানিয়েছি কিন্তু কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
আপনারা তো মাস গেলে সরকারি টাকা পেয়ে যাচ্ছেন কিন্তু দারিদ্র্য ছাত্রদের কথা ভেবেছেন কখনো ?
সাইফুলের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কে, আপনারা নষ্ট করে দিয়েছে। আপনাদের মত বর্বর শিক্ষকের হাজার হাজার ধিক্কার জানায় ।
◆ প্রধান মাস্টার মশাই বলেন :- নীলকান্ত; আজকের ঘটনা বিবরণ দাও। সাইফুলের প্রতি আমরা সত্যিই অন্যায় করেছি কিন্তু তার বিষয়টি নিয়ে আমাদের সবাইকে ভাবতে হবে।
◆ নীলকান্ত বলে :- পন্ডিত মাস্টারমশাই আমার নামে আপনার কাছে শিক্ষকের মারার অভিযোগ করেছেন। সেই মুহূর্তে আমি আর যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে কিন্তু মাস্টার মশায় কে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। হয়ত মাস্টার মশাইয়ের দেহে আঘাত লেগেছে কিন্তু বিচ্ছিন্ন ঘটনার জন্য মাস্টারমশাই এর কাছে মাফ চাচ্ছি।
সবাই আমার দোষ খোঁজে কিন্তু আজকের গন্ডগোলের জন্য বলবে একমাত্র পন্ডিত মাস্টার মহাশয় দায়ী।
◆ ছাত্রদের বেত মারা বন্ধ করুন, না হলে এক দিন বিপদে পড়বেন। আমার মত শয়তান কখন কি করে বসবে তার কিন্তু ঠিক নেই।
◆ আমাদের ভালোর জন্য আপনারা চেষ্টা করছেন কিন্তু এইভাবে ছাত্রদের উপর অত্যাচার না করে, অন্যভাবে শাসন করতে পারেন। চোখ দেখে যদি ভয় না পায়, তাহলে বেতের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ভয় পাওয়ানো যাই না।
আপনাদের ছাত্র পেটানোর কাজ বাংলার সরকার দেয়নি, ছাত্র ছাত্রীদের লেখা পড়া শিক্ষা দেওয়া আপনাদের প্রধান কাজ ।
◆ এক মাস্টার মশাই বলেন :- অন্যায় করলে পেটাবে না।
◆ নীলকান্ত বলে :- ছাত্রদের আপনারা অভিভাবক হিসেবে শাসন করতেই পারেন কিন্তু মন মানসিকতা হারিয়ে অমানবিকভাবে অত্যাচার করে নয়। আপনার বাড়িতে ছেলে মেয়ে আছে। তাদের কে আগে পিটিয়ে হাত ঠিক করুন, কত টা পেটাবেন পরের ছেলে কে । নিশ্চয়ই ছেলে-মেয়েদের মারধর করার পর অনুভব করতে পারবেন।
◆ আতিয়ার রহমান মাষ্টার বলেন :- নীলকান্ত অতিরিক্ত বাজে কথা বলছিস।
◆ নীলকান্ত তার সামনের চেয়ারে বসে থাকা আতিয়ার রহমান মাষ্টারের দিকে তাকিয়ে বলে :- আপনি; তো স্কুলের মধ্যে ছাত্রদের কাছে লাফানো মাস্টার নামে খ্যাতি অর্জন করেছেন। ক্লাস রুমে গিয়ে চেয়ার থাকতে লাফ দিয়ে হনুমানের মতো টেবিলে উঠে বসেন কেন?
◆ মৌলভী স্যার বলেন :- নীলকান্ত; ভীষণ ভাবে মাস্টার গণ কে অপমান করছিস। ধৈর্যের সীমা হারিয়ে যাচ্ছে।
◆ মৌলভী আনসার আলী খান মাস্টারের দিকে তাকিয়ে নীলকান্ত বলে :- আপনি তো; আর একজন খ্যাতিসম্পন্ন মাস্টারমশাই, কারণে অকারণে ছাত্রদের সামনের দিকে প্যান্টের মধ্যে হাত ডুকিয়ে দিয়ে টানাটানি করার মাস্টার। আপনার অভিনব কায়দা সত্যিই মজার বিষয় কিন্তু আমরাও খুব মজা পায়।
◆ অনীশ পাল মাস্টার মশাই বলেন :- নীলকান্ত; তোর তো অনেক দোষ, তুই আবার মাস্টারদের দোষ খুঁজে বের করেছিস।
◆ নীলকান্ত বলে :- আপনি তো আরেক মহান প্রেমিক মাস্টার। আপনার চরিত্রের ইতিহাস একজন শিশু জানে। ছেলেদের স্কুলে চাকরি দিয়ে সরকার নিশ্চয়ই ভীষণ ভুল করেছেন।
এই স্কুলের মাস্টারের কার কেমন চরিত্র তা কিন্তু আমার জানা আছে। বেশি আমাকে নিয়ে ঘাটাঘাটি করবেন না, তাহলে সবকিছু প্রকাশ্যে চলে আসবে।
যত দোষ ছাত্রদের কিন্তু মাস্টার গণের কোন দোষ নেই। যদি মাস্টারের চরিত্র খারাপ হয় তাহলে ছাত্ররা আপনাদের কাছ থেকে কি শিক্ষা লাভ করবে!
◆ এই স্কুলের দ্বিতীয় প্রধান মাস্টার মশাই বলেন :- নীলকান্ত চুপ কর বাবা। অনেক হয়েছে আর কারোর ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে হবে না।
তারপর প্রধান মাস্টারমশাইয়ের দিকে তাকিয়ে বলেন, মাস্টার মশাই যা করবেন তাড়াতাড়ি করে নীলকান্ত কে বিদায় করুন। না হলে নীলকান্ত আমাদের সবাইকে পাগল বানিয়ে ছাড়বে।
◆ নীলকান্ত প্রধান মাস্টার দিকে তাকিয়ে বলে :- মাস্টার মশাই; আপনার বিচার রায় ঘোষণা করুন। আজকের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যদি সবাই মিলে আমাকে আবার মারধর করেন, তাহলে কিন্তু নতুন করে আবার একজন ছাত্রের জীবনে সন্ত্রাসের পথে যেতে বাধ্য হবে। আমি কোন অন্যায় করিনি।
◆ প্রধান মাস্টার মহাশয় বলেন :- আজকের ঘটনার জন্য পন্ডিত মাষ্টারকে দোষী সাব্যস্ত করা হলো। তারপর পন্ডিত মাস্টারের দিকে তাকিয়ে বলেন, আপনি ছাত্রদের এভাবে আর পেটাবেন না। আপনার বিরুদ্ধে ছাত্রদের কাছে থেকে বহুবার নালিশ এসেছে। ছাত্রদের শাসন করুন কিন্তু নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে নয়।
আপনি নিজেই দেখুন। নীলকান্ত কে কিভাবে মেরেছেন! মারতে মারতে তার জামা পর্যন্ত ছিঁড়ে গেছে কিন্তু ছাত্রদের প্রতি একটু মায়া, দয়া, সহানুভূতি ও মানবতা দেখান। আপনার পাড়ার ছেলে যদি রাগের বশবর্তী হয়ে কিছু করে বসে তার দায়ভার কে নেবে?
◆ প্রধান মাস্টার মশাই চেয়ার থেকে উঠে ঘুরে নীলকান্ত কাছে গিয়ে পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে বললেন, বাপ; বাড়ি চলে যা আর এরকম করিস না! লেখাপড়ায় মন দে।
◆ নীলকান্ত সুযোগ পেয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে পন্ডিত মাস্টারের কাছে গিয়ে আবদার করে মাথা নিচু করে বলে :- জ্যাঠামশাই; আমার চিকিৎসার টাকা দেন।
◆ পন্ডিত মাস্টার বলেন :- কত টাকা দিতে হবে।
◆ নীলকান্ত বলে :- কমপক্ষে হাজার টাকা তো দেবেন। আমার শরীরের এক্সরে করে পরীক্ষা করে দেখতে হবে হাড়গোড় ভেঙে গেল কিনা! যদি আরও বেশি টাকা লাগে তাহলে আবার আপনার কাছে হাত পাতবো।
◆ অন্যান্য মাস্টার মশাইয়েরা নীলকান্তকে সমর্থন করে পন্ডিত মাষ্টারের উদ্দেশ্যে বলেন :- মাস্টারমশাই দিয়ে দেন ঝামেলা বিদায় হোক।
না হলে আবার কোন বিপদে ফেলে দেবে।
◆ মাস্টার গণের চুপচাপ থাকতে দেখে নীলকান্ত উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে, মরে গেলাম রে মরে গেলাম রে কি ব্যথা বলে চিৎকার করে বেঞ্চের উপর বসে পড়ে বলে :- পন্ডিত মাস্টারের গায়ে কি জোর রে বাবা! একদম নড়তে চড়তে পাচ্ছিনা।
◆ প্রধান মাস্টার বলেন :- কি হলো নীলকান্ত! আবার বসে পড়লে।
◆ নীলকান্ত যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে বলে :- মাস্টারমশাই খুব যন্ত্রণা হচ্ছে টাকা দেন, ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে বাড়ি যেতে হবে। বাড়িতে গিয়ে আবার বাবার সাথে কি অশান্তি হয়? তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন।
◆ প্রধান মাস্টার মশাই তার কাছে যা ছিল তা নীলকান্তের হাতে দিয়ে বলেন তাড়াতাড়ি ঔষধ কিনে নে। তারপর উপস্থিত মাস্টারবানের উদ্দেশ্যে প্রধান মাস্টার বলেন, আজ পন্ডিত স্যারের বিপদ হয়েছে কিন্তু আগামীকাল আমাদের হতে পারে। তাই সবাই মিলে মানবিক দিক দিয়ে নীলকান্ত কে চিকিৎসার সাহায্য করা আমাদের উচিত।
◆ যা কাছে যা টাকা ছিল সবাই নীলকান্তের হাতে দিতে শুরু করে ।
◆ নীলকান্ত টাকা গোনা শেষ করে বলে :- মাত্র ৮০০ টাকা হয়েছে কিন্তু এখনো ২০০ টাকা বাকি আছে। তারপর পন্ডিত মাস্টারের দিকে তাকিয়ে বলে, তাহলে বাড়িতে গিয়ে বড়মার কাছ থেকে ২০০ টাকা নিয়ে আসব। নীলকান্ত রুমের মধ্যে হাঁটু গেড়ে বসে সবার উদ্দেশ্যে প্রণাম ও সালাম জানিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে সোজা হাঁটতে শুরু করে।
◆ মাস্টার মশারা ভাবে কি বিপদেই না পড়েছিলাম! আপদ বিদায় হয়েছে তো বেঁচে গেলাম।
◆ নীলকান্ত চলতে চলতে ভাবে দশে মিলে করি কাজ কিন্তু হার জিত নাহি লাজ। নীলকান্তের লজ্জা ঘেন্না ভয় কিছু নাই। ছোট বেলা থেকেই পিটানী খেতে খেতে অভ্যাস হয়ে গেছে। বন্ধু আলমগীরের বাড়িতে গিয়ে দেখা করতে হবে।
◆ নীলকান্তের চলার ভঙ্গি দেখে রাস্তার লোকজন বিরাট অপরাধীদের ভাবে তাকিয়ে দেখতে থাকে।
◆ আলমগীরের মা নীলকান্ত কে সংরক্ষিত বাড়ির মধ্যে আসতে দেখা মাত্রই রেগে উঠে বিভিন্ন কথা বলতে থাকে।
◆ আলমগীরের বাবা ঘর থেকে বের হয়ে আলমগীরের মা কে বলেন :- খামাখা ছেলেটার উপর বকাবকি করে কোন লাভ আছে, দেখো তোমার ছেলেকে দেখতে বাড়িতে চলে এসেছে।
◆ নীলকান্ত বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে আলমগীর আলমগীর বলে ডাকতে থাকে।
◆ আলমগীরের বাবা তার ছেলেকে ডেকে দুই বন্ধুর সাথে হাত মিলিয়ে দেয়।
◆ আলমগীরের বাবা নীলকান্ত করুন অবস্থা দেখে বলে :- এ কি অবস্থা হয়েছে তো? বলে তার ডাক্তারখানা থেকে ঔষধ ও ব্যান্ডেজ নিয়ে এসে ক্ষতস্থানে যত্ন করে ঔষধ লাগাতে থাকে।
◆ নীলকান্ত নির্লজ্জের মত আলমগীরের মায়ের কাছে গিয়ে বলে :- চাচি; খুব খিদে পেয়েছে, ভাত খেতে দাও।
◆ আলমগীরের মা চুপচাপ থাকার জন্য নীলকান্ত পা জড়িয়ে ধরে বলে :- চাচি; আর কোনদিন এরকম হবে না মাফ করে দাও। আলমগীর তো আমার বন্ধু।
◆ আলমগীরের বাবা বলেন :- আলমগীরের মা; মান অভিমানের পালা শেষ করে আর ছেলেটার খেতে দাও।
◆ নীলকান্ত হাজার টাকা নিয়ে বন্ধু সাইফুলের বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের হাতে টাকা দেয়।
------------------------------------~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
◆ রচনা কাল :- ২৭ শে জুলাই ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে।
শ্রী শ্রী মা সেবাশ্রম। দোলন ঘাটা, খাটুরা, মাঝদিয়া, নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ।
◆ সংশোধনের তারিখ :- ৯ আগস্ট ২০২৩ সালে। দত্তপুলিয়া যুব গোষ্ঠী ক্লাব, নদীয়া।
----------------------------------------------------------
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।