এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • সংরক্ষণ সম্পর্কে কিছু কথা (চতুর্থ পর্ব) 

    Swapan Kumar Mandal লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৮ নভেম্বর ২০২১ | ৭৫৫ বার পঠিত
  • জ্যোতিরাও ফুলে তাঁর লেখা গুলামগিরিতে, বহিরাগত আর্যরা কীভাবে শাসক হয়ে উঠে ছলে বলে কূটকৌশলে অনার্য ভূমিপুত্রদের অর্থনৈতিকভাবে অবদমিত করে রেখেছে সেটা বলেন। ঘৃণ্য জাতিভেদ প্রথা, উঁচু নীচু ভেদ, অস্পৃশ্যতা ইত্যাদি সেই কূট কৌশলেরই অঙ্গ।

    জ্যোতিরাও ফুলে ১৮৯০ সালে মারা যান। আর ১৮৯৭ সালে সাবিত্রী বাঈ ফুলে, বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত রুগীদের সেবা করতে গিয়ে প্লেগের শিকার হন।

    জ্যোতিরাও-সাবিত্রী-ফতিমা এঁদের লিগ্যাসিকে বহন করে আরও এগিয়ে নিয়ে যান ছত্রপতি শাহু। ১৮৯৪ থেকে ১৯২২ পর্যন্ত শাহু মহারাজ কোলাপুরে রাজত্ব করেন। তিনিই প্রথম নীচু বর্গের জন্য শতকরা ৫০ ভাগ সংরক্ষণ চালু করেন, চাকুরি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে একজন শাসক ঐ সব অত্যাচারিত, নিপীড়িত মানুষের জন্য যা করেছেন তা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। অবশ্য, তাঁর এই কাজের জন্য ভীষণ বিরোধিতা শুরু হয়। এই কাজের বিরোধিতা করেছিলেন জাস্টিস গোবিন্দ রানাডে, বালগঙ্গাধর তিলক ও গোপালকৃষ্ণ গোখলের মতন সব বিখ্যাত মানুষেরা। ছত্রপতি শাহু উচ্চ বর্ণের সব বাধা অতিক্রম করে, বহুজন সমাজের মানুষদের অন্ধকার থেকে আলোয় আসার পথ নিশ্চিত করেন। ছত্রপতি শাহু মহারাজকে মানুষ মনে রাখবে আরো একটি কারণে। তিনি রাজ্যে সর্বপ্রথম দেবদাসী প্রথার অবসান ঘটান এবং তিনি বিধবা বিবাহের সমর্থনে আইন করেন।

    এই রকম এক যুগসন্ধিক্ষণে ছত্রপতি শাহু পরিচিত হন বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকরের সাথে। ভীমরাও আম্বেদকর তখন বোম্বের সিডেনহাম কলেজের পলিটিক্যাল সায়েন্সের প্রফেসর। ছত্রপতি শাহুর জহুরী চোখ চিনে নিল ইতিহাসের এক নায়ককে যাঁর নেতৃত্বে পরবর্তী কালে ভারতের সংবিধান রচনা হবে। তবে সেটা ঘটতে অনেক দেরি আছে।

    এই দুই নক্ষত্রের মিলনের ফলে ভারতের অস্পৃশ্যদের কি কি উপকার হল দেখি।

    সেই সময় ১৯১৯ সালে আম্বেদকর অস্পৃশ্য/দলিত দের মুখপত্র বের চেষ্টা করছিলেন। ছত্রপতি শাহু ২৫০০ টাকা খরচ করে আম্বেদকরের সেই সুপ্ত বাসনাকে রূপ দিলেন। আম্বেদকর ১৯২০ সালের জানুয়ারিতে সেই পাক্ষিক পত্রিকা ‘মূকনায়ক' প্রকাশিত করলেন। ১৯২০ সালের মার্চ মাসে এই দুই নক্ষত্র মিলে অস্পৃশ্য/দলিত-দের উন্নতিকল্পে একটি সভার আয়োজন করেন। সেই সভায় ছত্রপতি আম্বেদকরের পরিচয় দেন দলিতদের উদ্ধারকারী হিসাবে।

    আম্বেদকর উচ্চশিক্ষার জন্য লণ্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ছত্রপতি শাহু। ছত্রপতি শাহু মহারাজের দেহাবসান ঘটে ১৯২২ সালে।

    ১৯২৩ সালে আম্বেদকর লন্ডন থেকে ফিরে আসেন। তিনি বোম্বেতে ব্যারিস্টার হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং দলিত/অস্পৃশ্য-দের অবস্থার উন্নতি করার জন্য পূর্ণোদ্যমে চেষ্টা করেন। তিনি দলিতদের জন্য ওয়েলফেয়ার কমিটি ও এডুকেশন সোসাইটি গড়ে তোলেন। দলিতদের আত্মসম্মানবোধ জাগানোর চেষ্টা করেছেন। দলিতদের প্রতি তাঁর বিখ্যাত উক্তি হল "EDUCATE, AGITATE, ORGANISE"

    (ক্রমশ)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • b | 14.139.***.*** | ১৮ নভেম্বর ২০২১ ১৫:১৫501280
  • পড়ছি। আরেকটু বড় করে লিখুন। 
  • Swapan Kumar Mandal | ১৯ নভেম্বর ২০২১ ২১:৫৩501323
  • আসলে, শারীরিক ভাবে বড়ো লেখা আমার পক্ষে অসুবিধাজনক। কিছু মনে করবেন না। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি প্রতিক্রিয়া দিন