২৫শে বৈশাখ এবং ২২শে শ্রাবণ কি মনে রাখেন ৮ই অক্টোবর কিংবা ৬ই সেপ্টেম্বরের কথা? আলাউদ্দিন খাঁ। যাঁর হাতে তৈরি হয়েছিলেন অগণিত সংগীতশিল্পী।
আমি ২৫শে বৈশাখ বা ২২শে শ্রাবণকে একেবারেই ভুলতে বলছি না। বরং মনে রেখেই বলছি– ২২শে শ্রাবণ একটা মিথ্যে দিন, কারণ রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু হয়নি। বরং রবীন্দ্রনাথ প্রতিনিয়ত সমাজের হাতে খুন হন।
আজকের সমাজ তো রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির থেকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বড়ো দুঃশ্চিন্তা করেন। তাঁর বৌদিকে নিয়ে বেশি ভাবেন। তাঁর রচনাগুলো ক’জন পড়েন? রবীন্দ্রনাথের বৌদিকে নিয়ে কে কি লিখলেন সেটায় বিশ্বাসী, সেটাই পড়েন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের রচনাবলী তাঁদের কাছে বদহজম।
আলাউদ্দিন খাঁর হাতে তৈরি বাঁশির ঈশ্বর পান্নালাল ঘোষের কথা আমরা মনে রাখি না। অনেক বড়ো বড়ো সিনেমার পরিচালক আছেন। অথচ, পান্নালাল ঘোষকে নিয়ে কোনো ডকুমেন্টারি পর্যন্ত বের করতে পারেননি! অন্যদিকে কারা যেন এখনো চাইছেন স্কুল পাঠ্য বই এর সিলেবাস থেকে রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিতে?
শুধুমাত্র রবীন্দ্রনাথের গানই পছন্দ করেন এমন রবীন্দ্রনাথের দাঁড়ির এঁটুলিও আমি দেখেছি। তাঁদের রবীন্দ্রনাথের কোনো গানের একটা লাইন ব্যাখ্যা করতে বললে মনে হয় অসুস্থ হয়ে পড়লেন! এ বিষয়ে আমিও সব গানের ব্যাখ্যা দিতে পারবো না।
তাঁর গানের সুরগুলো নিয়ে ছেলেখেলা হচ্ছে না? গানটাকে প্রাণ দেয় যে সুর তা তো গানের শ্বাসপ্রশ্বাস। যা না থাকলে গান মৃত। আর ২৫শে বৈশাখ বা ২২শে শ্রাবণ এলেই মেয়েরা শাড়ীতে ছেলেরা পাঞ্জাবিতে কিসের ঘ্যানঘ্যান করেন? ২২শে শ্রাবন এলেই কান্নামুখি গানে মঞ্চ ভাসান কেন? রবীন্দ্রনাথ কি এগুলই চেয়েছিলেন? রবীন্দ্রনাথ গানকে সমাজের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যেতে বলেছিলেন, কিন্তু তাঁর গান নিয়ে আঁতলামি করতে বলেছিলেন কোথাও?
—সুবিমল