এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  সমাজ

  • মনুষ্যত্ববোধের শিক্ষক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

    দেবশঙ্কর সমাজদার
    আলোচনা | সমাজ | ০৬ আগস্ট ২০২১ | ১১১৮ বার পঠিত
  • একটি ঘটনার উল্লেখ করে লেখাটি শুরু করি
    ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তখন ৫০ টাকা বেতনে চাকরি করছেন, সে সময় সংস্কৃত কলেজে ব্যাকরণের অধ্যাপক পদ খালি হল। সে পদের বেতন ছিল ৯০ টাকা। সংস্কৃত কলেজ কতৃপক্ষ ঈশ্বরচন্দ্রকে অনুরোধ করল সেই পদটি নেওয়ার জন্য। বলাবাহুল্য বিদ্যাসাগর সেই সময়ে সেই পদে উপযুক্ত মানুষ ছিলেন। কিন্তু তিনি রাজী হলেন না। তাঁর মনে পড়ল তারানাথ তর্কবাচস্পতি মহাশয় অত্যন্ত আর্থিক দূরাবস্থায় আছেন। এই ৯০ টাকা বেতনের চাকরিটা তাঁর দরকার। তারানাথের বাড়ি ছিলো কালনায়। কলকাতা থেকে পায়ে হেঁটে বিদ্যাসাগর কালনায় পৌঁছোন এবং তারানাথকে ৯০ টাকা বেতনের এই আকর্ষণীয় চাকরি নিতে অনুরোধ করেন। বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে তারানাথ বলেছিলেন, তুমি মানুষ না ঈশ্বর? তারানাথের করা এই প্রশ্ন আমাদেরও - ইনি কি সত্যিই মানুষ না ঈশ্বর? এই তারানাথ পরবর্তী কালে বিদ্যাসাগরের সমাজসংষ্কারমূলক কাজে, বিদ্যাসাগরের বিরোধিতা করেছিলেন। জীবনের শেষ দিকে কেন বিদ্যাসাগর ভদ্রলোকদের সান্নিধ্য ত্যাগ করে আদিবাসীদের সাথে থাকতেন তার পিছনে অসংখ্য অসংখ্য অকৃতজ্ঞতার ঘটনার মধ্যে এই ঘটনাও ছিল।
     
    বিধবা বিবাহ ও বিদ্যাসাগর
     
    ১৮৫৬ সালে তিনি বিধবা বিবাহ প্রবর্তন করেন। এই সমাজসংষ্কার করতে গিয়ে তাঁকে সমাজের সর্বস্তর থেকে বিরোধিতা, এমনকি জীবনের ঝুঁকি নিতে হয়। তবু তাঁকে দমানো যায় নি। কিন্তু এই আইন প্রবর্তন করাতেই থেমে না থেকে তিনি ১৮৫৬ থেকে ১৮৬৭ - এই ১১ বছরে ৬০টি বিধবাবিবাহ নিজের খরচে দেন। এতে তাঁর ৮২০০০ টাকা ব্যয় হয়। বিরাট ঋণ হয়ে যায়। তাঁর এত ঋণ হয়ে গেছে শুনে একটি কমিটি গঠন করে কিছু লোক সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলার উপক্রম করলে তিনি তাদের তা করতে কড়া ভাবে নিষেধ করেন। নিজেকে তিনি নিজেই ঋণমুক্ত করেন। এরপর তিনি লক্ষ্য করেন সে সময়ে পুরুষের বহুবিবাহের চল থাকায় বহু পুরুষ এক স্ত্রী থাকা সত্বেও একজন বিধবা বা কুমারীকে বিয়ে করছে। এর পরেই বিদ্যাসাগর পুরুষের বহু বিবাহ ও নারীর বাল্য বিবাহের বিরূদ্ধে আত্মনিয়োগ করেন।
     
    মাইকেল ও বিদ্যাসাগর
     
    সুদূর ভার্সাই-এ থাকা মাইকেল মধুসূদন চূড়ান্ত অর্থকষ্ট ও বিরাট ঋণগ্রস্ত হয়ে সাহায্যের জন্য যাদের চিঠি দিয়েছিলেন, একমাত্র সাহায্য এসেছিল বিদ্যাসাগরের কাছ থেকে। নিজে ঋণ করে মাইকেলকে এক বিরাট পরিমাণ অর্থ বিদ্যাসাগর না পাঠালে মাইকেলকে বিদেশের মাটিতে চূড়ান্ত অপমান ও কারাবাস ভোগ করতে হত।
     
    নারী শিক্ষা ও বিদ্যাসাগর
     
    ১৮৫৭ থেকে ১৮৫৮ - এক বছরে বিদ্যাসাগর নারীদের জন্য ৩৪টি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। স্কুলের গাড়ি গিয়ে বালিকাদের বাড়ি থেকে তুলে আনত, আবার স্কুল শেষে আবার বাড়িতে পৌঁছে দিত। স্কুল তৈরী, শিক্ষকদের বেতন, আসবারপত্র, বই কেনা যাবতীয় খরচ বহন করতেন বিদ্যাসাগর। সারাজীবন তিনি নারীদের জন্য স্কুল তৈরী ও সেই সব স্কুলের যাবতীয় খরচ বহন করে গেছেন।
     
    দয়ার সাগর
     
    তাঁর অসংখ্য দানের কথা, বহু ঘটনা প্রকাশ্যে আসে নি। কারণ অকৃতজ্ঞ অসংখ্য মানুষ বিদ্যাসাগরের কাছ থেকে উপকার পেয়ে সে সব কাউকে বলা তো দূর কথা, বিদ্যাসাগরের ক্ষতি করেছেন। সারাজীবন বিদ্যাসাগর হিন্দু, মুসলমান, উচ্চ, নীচ এসব বিভেদ না করে পীড়িত মানুষের সেবা করেছেন। অসংখ্য কলেরা রোগীকে পথ থেকে তুলে এনে তাঁদের সেবা করেছেন। ১৮৬৬ সালে ভয়ানক মন্বন্তরের সময় অন্নসত্র খুলে তিনি বহুদিন ধরে অসংখ্য অসংখ্য ক্ষুধায় পীড়িত মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেন। এসময় তিনি অকাতরে অর্থ ব্যয় করেন। ১৮৬৯ সালে ম্যালেরিয়া জ্বরের (সে সময় একে বর্ধমান জ্বর বলা হত কারণ বর্ধমান জেলায় প্রথম এটি শুরু হয়) ভয়াবহতার সময় বিদ্যাসাগর বহু দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন, তিনি বহু মানুষের জীবন বাঁচান। অসংখ্য মানুষ তাঁকে ঠকিয়েছে। ছেলের পড়াশোনা, মেয়ের বিয়ে, সাংসারিক দুর্দশা এসব কথা বলে অসংখ্য লোক বিদ্যাসাগরের কাছ থেকে টাকা, পয়সা নিয়ে তা অপব্যয় করেছে। এসব প্রতারণা বার বার হয়েছে, তবু তিনি শিবজ্ঞানে জীবসেবা বন্ধ করেন নি।
     
    আত্মসম্মান বোধ ও বিদ্যাসাগর
     
    আলু পটল বেচব, তবু যে চাকরিতে সম্মান নেই তা করব না। বিদ্যাসাগর একবার বলেছিলেন কথাটা। সম্মানের সাথে আপোষ করেন নি বলে লোভনীয় চাকরী ছেড়েছেন একাধিক বার। এমন কি ভাই এর বিয়েতে আসবার সময় ছুটি পেতে অসুবিধা হচ্ছিল, কিন্তু মা ডেকেছেন, বিদ্যাসাগর জানিয়ে দেন ছুটি না পেলে চাকরি ছেড়ে দেবেন কিন্তু মা যখন ডেকেছেন, তখন বীরসিংহে তিনি যাবেনই। শেষ অবধি তাঁকে ছুটি দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। উত্তাল দামোদর সাঁতরে পার হয়ে বিদ্যাসাগর গ্রামে ভাই এর বিয়েতে আসেন।
     
    হিন্দু কলেজের অধ্যক্ষ কার সাহেব বিদ্যাসাগরকে বসতে না দিয়ে টেবিলের উপর পা তুলে অভ্যর্থনা করলে কয়েক দিন পরে কার সাহেবকে ঠিক এক ভাবে টেবিলে পা তুলে অভ্যর্থনা করে, বসতে না দিয়ে পাল্টা জবাব ফিরিয়ে দেন বিদ্যাসাগর।
     
    নীলদর্পণ নাটকের অভিনয় দেখতে বসে নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরূদ্ধে বিদ্যাসাগরের রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটে যায় যখন তিনি নীলকর সাহেবের ভূমিকায় অভিনয় করা অর্ধেন্দুশেখরের উদ্দেশ্য নিজের জুতো ছুঁড়ে মারেন। সাথে সাথে অভিনয় থামিয়ে বিদ্যাসাগরের উদ্দেশ্যে প্রনাম করে অর্ধেন্দুশেখর জানান - এ তাঁর অভিনয়ের সেরা পুরস্কার, এ জুতো তিনি সারাজীবন নিজের কাছে রেখে দেবেন।
     
    বাংলা ভাষা ও বিদ্যাসাগর
     
    বাংলা গদ্য সাহিত্যের জনক তাঁকে পুরোপুরি বলা যাবে না। কারণ মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালংকার, রামমোহন রায় এঁরা বিদ্যাসাগরের আগেই বাংলা গদ্যের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছেন। বিদ্যাসাগরের কৃতিত্ব তিনি গ্রাম্য পাণ্ডিত্য, গ্রাম্য বর্বরতা থেকে বাংলা ভাষাকে মুক্ত করে বাংলা ভাষাকে পৃথিবীর এক অতীব সন্মানীয়, ভদ্র ভাষায় পরিণত করেছেন। বিদ্যাসাগরের পরম বিরোধী মানসিকতার মানুষ সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র বলেছেন বিদ্যাসাগরের ভাষা অতি সুমধুর ও মনোহর। তাঁহার পূর্বে ও পরে এমন সুমধুর বাংলা গদ্য আর কেউ লিখতে পারেন নি। কমা, সেমিকোলন এসব যতিচিহ্ন বাংলা সাহিত্যে এনেছেন বিদ্যাসাগর। আমাদের সবার অক্ষর পরিচয়, ভাষা শিক্ষার হাতেখড়ি আজও করান বিদ্যাসাগর।
     
    তাঁর জীবনে এত অবিস্মরণীয় ঘটনা, অনেক লিখলেও কিছুই লেখা হয় না।
     
    একবার সাহেবদের একটি অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসাবে ধুতি, চটি পড়ে আসায় তাঁকে দারোয়ান আটকে দেয়। এরপর অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা তাঁর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান পোশাক না মানুষ - আপনারা কাকে আমন্ত্রণ করেছেন?
     
    কার্মাটারে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে তিনি যখন ট্রেন থেকে নামেন, দেখেন এক বাঙালী সামান্য কিছু মালপত্র নিয়ে কুলির খোঁজ করছেন। নিজের পরিচয় না দিয়ে বিদ্যাসাগর তাঁর মালপত্র নিজে বহন করেন এবং শোনেন বিদ্যাসাগরের বক্তব্য শোনার জন্য তিনি এসেছেন। পরের দিন বিদ্যাসাগরের বক্তব্য শুনতে গিয়ে ঐ বাঙালী বোঝেন যে তিনি বিদ্যাসাগরকে দিয়ে কুলির কাজ করিয়েছিলেন। অনুতপ্ত হয়ে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন, তাঁকে সস্নেহে বিদ্যাসাগর বলেন
    নিজের মালপত্র নিজে বইতে কিসের লজ্জা?
     
    এমন মহাসাগর তুল্য মানুষটিকে নিয়ে অনেক পাতা লিখে গেলেও কিছুই লেখা হয় না।
     
    ১৮৬৬ সালে একটি বালিকা বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ফেরার সময় ঘোড়ার গাড়ি উল্টে বিদ্যাসাগর ভীষন আহত হন। তাঁর লিভারে ভয়ংকর আঘাত লাগে। অনেকের ধারণা এই আঘাতই তাঁর মৃত্যু ত্বরান্বিত করে।
     
    ভারতের ইতিহাসে, মনুষ্য জাতির ইতিহাসে প্রতিভাসম্পন্ন মানুষ অনেক এসেছেন। কিন্তু এত বেশী মনুষ্যত্ববোধসম্পন্ন কোনও মানুষ ইতিহাসে আর বোধ হয় কেউ আসেন নি। বিরলের মধ্যে বিরলতম এমন মানুষ হাজার হাজার বছর পরে জন্ম নেন। তাঁকে কোটি কোটি প্রণাম জানাই।
     
    তাঁর কথা লিখতে লিখতে মনের অজান্তে চোখের পাতা জলে ভিজে এল আমার। যাঁরা তাঁকে দর্শন করবার, প্রণাম করবার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন, তাঁদের মানব জন্ম সার্থক।
     
    আজ তাঁর ১৩১তম মহাপ্রয়াণ দিবস।
     
    স্বামীজির একটি কবিতা শুধু বিদ্যাসাগর সম্পর্কে সবচেয়ে বেশী প্রযোজ্য -
    বহুরূপে সন্মুখে তোমার
    ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর
    জীবে প্রেম করে যেই জন
    সেই জন সেবিছে ঈশ্বর
     
    *******
    দেবশঙ্কর সমাজদার
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ০৭ আগস্ট ২০২১ ১৭:২০734826
  • চমৎকার স্কুলপাঠ্য শিশুতোষ প্রবন্ধ।

  • দীপ | 2402:3a80:198f:e1d9:878:5634:1232:***:*** | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:০৯743745
  • "সেইজন্য বিদ্যাসাগর এই বঙ্গদেশে একক ছিলেন। এখানে যেন তাঁহার স্বজাতি-সোদর কেহ ছিল না। এ দেশে তিনি তাঁহার সমযোগ্য সহযোগীর অভাবে আমৃত্যুকাল নির্বাসন ভোগ করিয়া গিয়াছেন। তিনি সুখী ছিলেন না। তিনি নিজের মধ্যে যে এক অকৃত্রিম মনুষ্যত্ব সর্বদাই অনুভব করিতেন চারি দিকের জনমণ্ডলীর মধ্যে তাহার অভাস দেখিতে পান নাই। তিনি উপকার করিয়া কৃতঘ্নতা পাইয়াছেন, কার্যকালে সহায়তা প্রাপ্ত হন নাই। তিনি প্রতিদিন দেখিয়াছেন-- আমরা আরম্ভ করি, শেষ করি না; আড়ম্বর করি, কাজ করি না; যাহা অনুষ্ঠান করি তাহা বিশ্বাস করি না; যাহা বিশ্বাস করি তাহা পালন করি না; ভূরিপরিমাণ বাক্যরচনা করিতে পারি, তিলপরিমাণ আত্মত্যাগ করিতে পারি না; আমরা অহংকার দেখাইয়া পরিতৃপ্ত থাকি, যোগ্যতালাভের চেষ্টা করি না; আমরা সকল কাজেই পরের প্রত্যাশা করি, অথচ পরের ত্রুটি লইয়া আকাশ বিদীর্ণ করিতে থাকি; পরের অনুকরণে আমাদের গর্ব, পরের অনুগ্রহে আমাদের সম্মান, পরের চক্ষে ধূলিনিক্ষেপ করিয়া আমাদের পলিটিকস্‌, এবং নিজের বাক্‌চাতুর্যে নিজের প্রতি ভক্তিবিহ্বল হইয়া উঠাই আমাদের জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য। এই দুর্বল, ক্ষুদ্র, হৃদয়হীন, কর্মহীন, দাম্ভিক, তার্কিক জাতির প্রতি বিদ্যাসাগরের এক সুগভীর ধিক্‌কার ছিল। কারণ, তিনি সর্ববিষয়েই ইহাদের বিপরীত ছিলেন। বৃহৎ বনস্পতি যেমন ক্ষুদ্র বনজঙ্গলের পরিবেষ্টন হইতে ক্রমেই শূন্য আকাশে মস্তক তুলিয়া উঠে বিদ্যাসাগর সেইরূপ বয়োবৃদ্ধি-সহকারে বঙ্গসমাজের সমস্ত অস্বাস্থ্যকর ক্ষুদ্রতাজাল হইতে ক্রমশই শব্দহীন সুদূর নির্জনে উত্থান করিয়াছিলেন, সেখান হইতে তিনি তাপিতকে ছায়া এবং ক্ষুধিতকে ফল দান করিতেন, কিন্তু আমাদের শতসহস্র ক্ষণজীবী সভাসমিতির ঝিল্লিঝংকার হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ছিলেন। ক্ষুধিত পীড়িত অনাথ-অসহায়দের জন্য আজ তিনি বর্তমান নাই, কিন্তু তাঁহার মহৎচরিত্রের যে অক্ষয়বট তিনি বঙ্গভূমিতে রোপণ করিয়া গিয়াছেন তাহার তলদেশ সমস্ত বাঙালিজাতির তীর্থস্থান হইয়াছে। আমরা সেইখানে আসিয়া আমাদের তুচ্ছতা, ক্ষুদ্রতা, নিস্ফল আড়ম্বর ভুলিয়া, সূক্ষ্মতম তর্ক-জাল এবং স্থূলতম জড়ত্ব বিচ্ছিন্ন করিয়া, সরল সবল অটল মাহাত্ম্যের শিক্ষা লাভ করিয়া যাইব। আজ আমরা বিদ্যাসাগরকে কেবল বিদ্যা ও দয়ার আধার বলিয়া জানি-- এই বৃহৎ পৃথিবীর সংস্রবে আসিয়া যতই আমরা মানুষ হইয়া উঠিব, যতই আমরা পুরুষের মতো দুর্গমবিস্তীর্ণ কর্মক্ষেত্রে অগ্রসর হইতে থাকিব, বিচিত্র শৌর্য-বীর্য-মহত্ত্বের সহিত যতই আমাদের প্রত্যক্ষ সন্নিহিত ভাবে পরিচয় হইবে, ততই আমরা নিজের অন্তরের মধ্যে অনুভব করিতে থাকিব যে, দয়া নহে, বিদ্যা নহে, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের চরিত্রে প্রধান গৌরব তাঁহার অজেয় পৌরুষ, তাঁহার অক্ষয় মনুষ্যত্ব; এবং যতই তাহা অনুভব করিব ততই আমাদের শিক্ষা সম্পূর্ণ ও বিধাতার উদ্দেশ্য সফল হইবে, এবং বিদ্যাসাগরের চরিত্র বাঙালির জাতীয় জীবনে চিরদিনের জন্য প্রতিষ্ঠিত হইয়া থাকিবে।"
     
    মহাকবির সাগরতর্পণ।
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন