সবিনয় নিবেদন, বিগত প্রায় আড়াই সপ্তাহ ধরে আমি এবং আমার পরিবার বেশ কিছু সমস্যার মধ্যে ছিলাম। সমস্যাটা কোভিড সংক্রান্ত। এই সময়টুকুতে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা এবং ডাক্তারদের সাথে কথা বলে যে সমস্ত তথ্য জানতে পেরেছি তার অধিকাংশই আপনারা জানেন। তা সত্বেও কিছু কিছু তথ্য হয়তো অনেকের অজানা। তাই সেগুলো আপনাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার উদ্দেশ্যে এই পোস্ট।
সবার প্রথমে বলি আমার এক দাদা কোভিড পজিটিভ হয়ে বাড়িতেই আইসোলেশনে আছে। এবং আমার ষাটোর্ধা মা ১৪ দিন ধরে জ্বরে ভুগেছেন। RT PCR টেস্ট- যাকে আপনারা কোভিড টেস্ট বলে জানেন, সেটার রিপোর্ট নেগেটিভ আসা সত্ত্বেও ওনার জ্বর কমছিলোনা। সর্বোপরি, কোভিডের সমস্ত লক্ষণ ছিল মায়ের। ডাক্তারের পরামর্শে তার রক্ত পরীক্ষাও করতে হয়। সমস্যা আরো ছিলো। আমার বাড়িতে এছাড়াও এক ৬ বছরের শিশু আর আমার ৯৩ বছরের বৃদ্ধা দিদা আছেন। আমার দুই বৌদির মধ্যে একজনের হাঁপানির সমস্যা আছে এবং আরেকজন বর্তমানে সন্তানসম্ভবা। সুতরাং বুঝতে পারছেন আশা করি যে কি পরিমাণ সতর্ক হয়ে এবং ভয়ের মধ্যে আমাদের এই কটা দিন কাটাতে হয়েছে। আশঙ্কা সত্যি করে কদিন আগে সেই ছয় বছরের শিশু এবং আমার বৌদির রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শুধু তাই নয়, এই একই সময়ে আমার এক বোন এবং ভগ্নিপতি শ্বাসকষ্ট এবং অন্যান্য সমস্যায় গুরুতরভাবে করোনা আক্রান্ত হয়। তবে আশার কথা, ডাক্তারের সমস্ত নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার পরে সকলেই ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে বর্তমানে। আমার অন্যান্য আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে কতজন এবং কে কে এখনো করোনার সাথে লড়াই করছে সে হিসেব আর নাইবা দিলাম। এক্ষেত্রে আমার এক ডাক্তার বন্ধুর কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন, যে আমার দরকারে নিজের সমস্ত কাজের ফাঁকেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করে গেছে অক্লান্তভাবে। তাঁর অনুমতি না নিয়ে পোস্টটি লিখছি বলে তার নাম উল্লেখ করলাম না আর।
এবার দরকারি কথাগুলো বলে নি চট করে।
১. প্রথম কথা মনে রাখতে হবে, এবার ভাইরাসের ইনফেক্টিভিটি রেট প্রায় ৪০ শতাংশ। এর অর্থ হলো ৫ জনের একটি পরিবার থাকলে তার মধ্যে অন্তত দুজনের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। অর্থাৎ আজ হোক বা কাল পরিস্থিতি যদি এরকমই থাকে তাহলে আমার আপনার ঘরে এই ভাইরাস হানা দেবেই দেবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনি ভয়ে সিঁটিয়ে থাকলেন কিংবা ‘করোনা তো হবেই’ ভেবে সমস্ত বিধিনিষেধ শিকেয় তুলে ঊর্ধ্ববাহু হয়ে বগোল নাচিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন। ভয় না পেয়ে যতটা সম্ভব এই ভাইরাসকে ঠেকানোর চেষ্টা করে যেতে হবে আমাদের। একান্ত না পারলে তখন পরের পয়েন্টগুলো দরকার হতে পারে।
২. মনে রাখবেন একটা বিরাট শতাংশ করোনা আক্রান্ত রুগী বাড়িতে থেকে খুব সাধারণ চিকিৎসায় এমনকি বিনা চিকিৎসাতেও সম্পূর্ণরূপে সেরে উঠছেন। অর্থাৎ প্যানিক করার মতো পরিস্থিতি অধিকাংশ ক্ষেত্রে তৈরি হয় না। তবে আপনাকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে যাতে পরিস্থিতি খারাপ দিকে না যায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা মাপা যে কতটা প্রয়োজন তা আপনারা সকলেই জানেন। আর এক্ষেত্রে অক্সিমিটার প্রয়োজনীয়তার কথা শুনে শুনে আপনাদের কান পচে গেছে এতদিনে। সবার ক্ষেত্রে অক্সিমিটার কেনা সম্ভব না হলেও চেষ্টা করবেন আপনার আশে পাশের বাড়িতে কিংবা বন্ধুবান্ধবের মধ্যে যন্ত্রটি আছে কিনা খোঁজ করে রাখতে। যাতে প্রয়োজনে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনি সেটি পেয়ে যেতে পারেন। হ্যাপী হাইপক্সিয়া, মানে আপনার অজান্তেই অক্সিজেন কমে যাওয়া ঠেকাতেও কিন্তু এই যন্ত্রটিই কাজে আসবে।
৩. অক্সিমিটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে। জল হাতে বা স্যানিটাইজার না শুকানো অবস্থায় বা মোটা করে নেলপালিশ পরে অক্সিমিটার ব্যবহার করলে যে ভুলভাল রিডিং আসবে তা বলাই বাহুল্য। আরও কয়েকটা ব্যাপার আছে। অক্সিমিটার ব্যবহার করার সময় শোয়া অবস্থায় এবং বসা অবস্থায় রিডিং কিন্তু ভিন্ন আসবে। ডান হাত এবং বাম হাত এই দুটো হাতেও রিডিং আলাদা আসতে পারে এমনকি আলাদা আলাদা আঙ্গুলেও মিটারের রিডিং ভিন্ন হতে পারে। চিন্তার কিছু নেই। যে রিডিং টি বেশি আসবে সেটাই সঠিক রিডিং। আর হ্যাঁ, বুকের লেভেলে হাত এনে না ঝুলিয়ে কোথাও রেখে রিডিং নেওয়ার চেষ্টা করবেন। অক্সিমিটার ব্যবহার করার সময় সেখানে পালস রেট দেখা যায়। সাধারণ জ্বর কিংবা করোনা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে পালস রেট কিন্তু স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি থাকবে। আমার মায়ের পালস রেট প্রায় 10 দিন ধরে একশো কুড়ি থেকে একশো পঁয়ত্রিশ এর মধ্যে ছিল। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই পরিস্থিতিতে এটাই স্বাভাবিক।
৪. হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা এতদিনে জেনে গেছেন যে 94 এর নিচে অক্সিজেনের মাত্রা নামলে সেটা চিন্তার কারণ। কিন্তু সত্যি কথা বলতে 94 এর নিচে অক্সিজেনের মাত্রা নামলেই সেটা সবসময় চিন্তার কারন হয়না। এক্ষেত্রে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে অবশ্যই। কিন্তু তখনই রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় না। ডাক্তাররা এই অবস্থায় 6 minute walk test বা 2 chair test সাজেস্ট করেন। এটা নিয়ে আশা করি আপনারা এতদিনে জেনে গেছেন। না জানলে জানাবেন। আমি বিশদে বলে দেব পরে। এই টেস্ট দুটোর আগে এবং পরে অক্সিজেনের মাত্রা মাপতে হয়। টেস্টের পরে যদি অক্সিজেনের মাত্রা আগের থেকে অনেকটা কমে যায়, মানে প্রায় 3 থেকে 5 শতাংশ কমে যায় তাহলে বুঝতে হবে সত্যি করেই রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন হতে পারে। আর যদি বেড়ে যায় (স্বাভাবিক অবস্থায় এটাই হওয়া উচিত), একই থাকে কিংবা খুব সামান্য কমে তাহলে তক্ষুনি চিন্তার কারণ নেই। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে প্রোনিং একটি প্রমাণিত পদ্ধতি। এটা নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়েছে। তাই আশা করি আপনারা এ সম্বন্ধে ইতিমধ্যে জেনে গেছেন।
৫. যে সমস্ত রোগীর বয়স বেশি কিংবা শরীরে অন্যান্য সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ডাক্তাররা স্টেরয়েড প্রয়োগ করেন। এতে পরবর্তীকালে মারাত্মক কিছু পরিণতির সম্ভাবনা কমানো যায় অনেকটাই। তবে মনে রাখবেন স্টেরয়েডের সাইড এফেক্ট হিসেবে ব্লাড প্রেসার এবং সুগার কিছুটা বাড়তে পারে। তাই রোগী সুস্থ হয়ে গেলে এই দুটো একবার পরীক্ষা করিয়ে নেবেন। আবার সাইড এফেক্টএর ভয়ে ডাক্তার বলা সত্বেও স্টেরয়েড যদি এড়িয়ে যান, তবে কিন্তু বিপদের ঝুঁকি বেড়ে যাবে অনেকটাই। কিন্তু কি স্টেরয়েড কতটা পরিমাণে খাবে তা আপনি, পাড়াতুতো self proclaimed সিধু জ্যাঠা কিংবা ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ এর কোন ফরওয়ার্ড করা পোস্ট নয়, ঠিক করবেন ডাক্তার।
৬. এখন ঘরে ঘরে জ্বর হচ্ছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে তারাও কোভিড লাইক সিম্পটমে আক্রান্ত। মনে রাখবেন রিপোর্ট নেগেটিভ আসা মানেই আপনার করোনা হয়নি - একথা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। যারা তর্ক করবেন তাদের জন্য পাশের বেড়োনোর গেট খোলা রাখলাম। কারন এটা বোঝার জন্য প্রচুর কিছু বলা প্রয়োজন। অতোটা জটিলতায় না গিয়ে বলি, রিপোর্ট ভুল করে নেগেটিভ আসার মূলত তিনটি কারণ- প্রথমত, ভাইরাসের মিউটেশন। নতুন মিউট্যান্ট ভাইরাস অনেক সময়ই ধরা পড়ছে না টেস্টে। দ্বিতীয়ত, টেস্ট কিটের এফিশিয়েন্সি। তৃতীয়ত, প্রত্যেকদিন লাখে লাখে টেস্ট হওয়ার জন্য কিছু ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃত ভুলের সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরেও যারা সুস্থ হচ্ছেন না তাদের ক্ষেত্রে CRP, D-dimer, IL-6 ইত্যাদি রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। কিংবা প্রয়োজনে সিটি স্ক্যান। তবে সবটাই ডাক্তারের নির্দেশ মেনে।
৭. RT PCR টেস্টে CT ভ্যালু বলে একটি সংখ্যার উল্লেখ থাকে। বাস্তবিক ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটি ভাইরাল লোডের বা আমাদের শরীরে উপস্থিত ভাইরাসের পরিমাণের ব্যস্তানুপাতিক। অর্থাৎ 26 CT ভ্যালুর মানুষের চাইতে 16 CT ভ্যালুর মানুষের শরীরে ভাইরাস এর সংখ্যা বেশি। কিন্তু এই সংখ্যাটি সব সময় ভাইরাল লোডের সঠিক পরিমাপ দেয় না। ধরুন আপনি যেদিন টেস্ট করাচ্ছেন সেদিন আপনার শরীরে যে পরিমাণ ভাইরাস রয়েছে, টেস্ট রিপোর্ট পেতে পেতে ততদিনে আপনার শরীরে ভাইরাস নিজেদের সংখ্যা বহুগুণে বাড়িয়ে ফেলেছে অথবা আপনার শরীরের ইমিউনিটি ততদিনে ভাইরাস এর সাথে লড়ে তার সংখ্যা কমিয়ে ফেলেছে অনেকটাই। তাই CT ভ্যালু নিয়ে খুব বাড়াবাড়ি রকমের প্যানিক বা উল্লাস না করা ভালো। তার থেকে আপনার শরীর কি বলছে সেটা বোঝা অনেক বেশি প্রয়োজনীয়।
৮. বাড়িতে কেউ আক্রান্ত হলে অনেকে কোভিড টেস্ট করাতে দেরি করে ফেলছেন। সেটা কিছুটা নিজের গাফিলতির জন্য, কিছুটা বা ভয় - দুশ্চিন্তায়। মনে রাখবেন বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতে কিন্তু আপনি আজকে বুক করলে এক থেকে দু দিন সময় লাগবে আপনার বাড়িতে টেস্ট করার লোক পৌছাতে। তার পরেও কম করে দুই থেকে তিন দিন লাগবে রিপোর্ট হাতে পেতে। অতএব বুঝতে পারছেন এই চার পাঁচ দিন সময় অনেক ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। যদিও এখন পজিটিভ রিপোর্ট ছাড়াও হাসপাতলে ভর্তি করা যাচ্ছে। তা হলেও ডাক্তার বললে আর্থিক সামর্থ্য থাকলে টেস্ট করাতে দেরি করবেন না। আর ডাক্তার না বললে বা অপ্রয়োজনে টেস্ট করে দরকারি কিট নষ্ট করবেন না।
৯. সোরাইসিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ইত্যাদি রোগে যারা নিয়মিত ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ (অর্থাৎ যে ওষুধ শরীরের স্বাভাবিক ইমিউনিটি ক্ষমতা কমিয়ে দেয়) খান, তারা একবার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেবেন। কারণ এই অবস্থায় অনেক ডাক্তার ইমিউনিটি না কমিয়ে বাড়ানোর পক্ষপাতী। তবে ওই দরকারি ওষুধ গুলো বন্ধ করা প্রয়োজন কিনা সেটা ওনাদের ঠিক করতে দিন।
১০. ICU, ভেন্টিলেটর, বেড কিংবা অক্সিজেনের ঘাটতি নিয়ে গোটা দেশে কি পরিস্থিতি চলছে তা নিয়ে আর নাই বা লিখলাম। তবে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু সেগুলো গ্রাউন্ড লেভেলে বা বাস্তব ক্ষেত্রে আমাদের কাছে সহজলভ্য হতে এখনও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। তাই ততদিন যারা অসুস্থ হন নি তারা যতটা সম্ভব সতর্ক থাকুন। কারণ আপনার সতর্কতার জন্য হয়তো একটি বেড কিম্বা একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার আরেকজন মৃতপ্রায় মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ বাঁচাতে পারে। এক্ষেত্রে না বললেই নয়, আমার আপনার মত সাধারণ ঘরের প্রচুর মানুষ এই সংকটের সময়ে স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন। অক্সিজেন, ওষুধ, দৈনন্দিন সামগ্রী তারা পৌঁছে দিচ্ছেন ঘরে ঘরে। এমনকি কোথায় কোন হাসপাতালে একটি বেড খালি হয়েছে সেই খবর নিঃস্বার্থে দিয়ে চলেছেন ঘন্টায় ঘন্টায়। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, কিছু রাজনৈতিক সংগঠন উল্লেখযোগ্য কাজ করে চলেছেন এখন। আপনাদের কাছে অনুরোধ এই মানুষগুলোকে পাড়ার বখাটে, বেকার, অকর্মণ্য বিশু, কেষ্ট, ছোটু কিংবা রিমলি, ঝিন্টিদের থেকে একটু আলাদা চোখে দেখবেন এরপর থেকে। মেডিকেল প্রফেসনে যুক্ত যে সব মানুষেরা এতগুলো মাস ধরে অমানবিক পরিশ্রম করে চলেছেন, তাদের সাথে এই ছেলে মেয়েগুলোকেই পাশে পাবেন বিপদে। আপনার পাশের বাড়ির সফিস্টিকেটেড, ডেস্টিনেশন ওয়েডিং করা, আন্ডারওয়ার কিনতে বিদেশ যাওয়া মানুষটিকে নয় কিন্তু।
১১. এখনো পর্যন্ত করোনার কোনরকম অব্যর্থ ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। যা চলছে তা সবটাই সাপোর্টিভ মেডিকেশন। করোনা ঠেকাতে এক এবং একমাত্র উপায় আপনার নিজস্ব ইমিউনিটি শক্তি। তাই ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য যা যা ঘরোয়া টোটকা আছে ব্যবহার করুন আপত্তি নেই। কিন্তু প্রয়োজনে ওষুধগুলো কেউ অবহেলা করবেন না। আপনারা জানেন এই সময়ে প্রোটিন বেশি করে খাওয়া প্রয়োজন। তবে হাই প্রেসারের রোগীদের ক্ষেত্রে একটু সতর্ক হয়ে প্রোটিন খাওয়াবেন। কবে থেকে উপসর্গ দেখা দিচ্ছে সেটা খেয়াল রাখুন। যদি কোনরকম কম্প্লিকেশন না দেখা যায় তাহলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ 10-12 দিনের মধ্যে আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। হ্যাঁ আপনার দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে আরো কিছুটা সময় যাবে সত্যি। কিন্তু সারাক্ষণ ভয়ের মধ্যে আর থাকতে হবে না আপনাকে।
১২. আপনার একটি বা দুটি ভ্যাকসিন নেওয়া হয়ে যাওয়ার মানেই আপনি নিরাপদ নন। হ্যাঁ আপনার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি রকমের অসুস্থতা হবে না সত্যি। কিন্তু আপনি আগের মতই আক্রান্ত হতে বা করতে পারেন। মনে রাখবেন, ভ্যাকসিন নেওয়ার 18-19 দিন পর থেকে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া শুরু হয় শরীরে। পুরোপুরি ভাবে তৈরি হতে আরো কিছুদিন লাগে। ততদিন কিন্তু আপনি ভাইরাসের কাছে আগের মতোই উলঙ্গ। তাই ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে আনন্দের চোটে জামা কাপড়, থুরি মাস্ক খুলে রাস্তায় দৌড় মারলে আর কেউ না হোক, ভাইরাস টুং করে যখন তখন আপনার ঘন্টা বাজিয়ে যেতে পারে কিন্তু।
তাই কষ্ট হলেও মাস্ক ব্যবহার করুন। নিজে বাঁচুন। বাকিদের বাঁচান। অনেক ধন্যবাদ।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।