এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  রাজনীতি

  • লাভ জিহাদ আইনঃ কিছু গল্প, কিছু প্রশ্ন

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ১৫ জানুয়ারি ২০২১ | ২৬৫২ বার পঠিত
  • [ সেদিন 4thpillars.com এর সুপ্রীম কোর্ট দ্বারা তিনটে কৃষি আইনে স্থগিতাদেশ জারী করা নিয়ে একটি ভিডিও আলোচনায় প্রখ্যাত আইনজীবি এবং কোলকাতার প্রাক্তন মেয়র শ্রীবিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, (বর্তমানে সিপিএম দলের রাজ্যসভা সাংসদ) বলেছিলেন যে এখন সুপ্রীম কোর্ট অনেক সাংবিধানিক প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কিছু কিছু হাইকোর্ট বরং সেই সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে অসাংবিধানিক আইনের দিকে সোজাসুজি আঙুল তুলছে। গত ১৪ জানুয়ারিতে স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট নিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের একটি রায় আমাদের মতে উত্তর প্রদেশ সরকারের কথিত ‘লাভ ম্যারেজ’ অর্ডিনান্সের দিকে প্রকারান্তরে আঙুল তুলেছে। ]

    গত ২৪ নভেম্বর, ২০২০ তারিখে উত্তর প্রদেশ সরকারের মন্ত্রীসভা উত্তর প্রদেশ বিধিবিরুদ্ধ ধর্ম সম্পরিবর্তন প্রতিষেধ অধ্যাদেশ ২০২০ বা বেআইনি ধর্মপরিবর্তন প্রতিকার অর্ডিন্যান্স পাশ করে এবং তাতে রাজ্যপালের মোহর লাগে ২৮ তারিখে।

    একমাসের মধ্যে উত্তর প্রদেশ পুলিশ এই আইন ভাঙার অপরাধে ১৪টি অভিযোগে ৫১ জনকে গ্রেফতার করেছে যার মধ্যে ৪৯ জন জেলে রয়েছে। [2]

    ভাবতেই পারেন যে ধর্মান্তরণ বিরোধী আইন তো এখন অনেক রাজ্যে, বিশেষ করে যেখানে বিজেপি’র সরকার, রয়েছে। তাহলে আবার ধর্ম পরিবর্তন আটকাতে আরেকটি আইন এবং তার জন্য সাততাড়াতাড়ি একটা অর্ডিন্যান্সের কিসের দরকার?

    আইনটির শব্দজাল পেরিয়ে উঁকি মারলেই দেখা যাবে এটার উদ্দেশ্য কথিত ‘লাভ জিহাদ’ বা প্রেমের ফাঁদ পেতে সাদাসিধে হিন্দু মেয়েদের মুসলমান করার এবং তারপর একগাদা সন্তান পয়দা করিয়ে ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি করার ‘চক্রান্ত’ ঠেকানো!

    আইনটির মোদ্দা কথা হল— জোর করে বা লোভ দেখিয়ে ধর্মান্তরণ করা চলবে না। এটি ‘কগ্নিজিবল’ এবং ‘নন- বেইলেবল’ অপরাধ। অর্থাৎ এই অভিযোগে যদি পুলিশ গ্রেফতার করে তাহলে মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে জামিন হবে না। শুধু আদালত উচিত মনে করলে জামিন দিতে পারে। আর অপরাধ প্রমাণিত হলে দোষী ব্যক্তি বা সাহায্যকারীর ১০ বছর অব্দি জেল হবে। সম্বন্ধিত সংস্থার রেজিস্ট্রেশন খারিজ হবে ইত্যাদি।

    কাজেই

    ক) বিয়ের ঠিক আগে বা পরে ধর্মপরিবর্তন চলবে না। বুঝতে হবে এখানে বিয়ে করার লোভ দেখানো হয়েছে।

    খ) ধর্ম পরিবর্তনের জন্যে বিয়ে ছাড়াও অন্য কোন প্রলোভন দেয়াও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রলোভন অনেক রকমের হতে পারে—যেমন, টাকাপয়সা, উপহার, চাকরি দেয়া, নামজাদা স্কুল বা কলেজে ভর্তি, ভাল লাইফস্টাইল, এমনকি “ভগবান রাগ করতে পারেন” ইত্যাদি।

    গ) কেউ ধর্ম বদলাতে চাইলে তাকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দু’মাস আগে আবেদন করতে হবে। তিনি খুঁটিয়ে দেখবেন— এখানে কোন প্রলোভন বা জোরাজুরি কাজ করছে কিনা। তারপর উনি নিঃসন্দেহ হলে তবে অনুমতি দেবেন।

    বাস্তবে ওই আবেদন ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টের নোটিশ-বোর্ডে টাঙানো থাকে দু’মাস ধরে এবং ওই দু’মাসের মধ্যে হিন্দু যুবা বাহিনী বা বিভিন্ন সেলফ স্টাইল্ড সংগঠন খবরটি পেয়ে আবেদক এবং নতুন ধর্মের সংস্থাকে প্রেশার দিয়ে মতপরিবর্তন করতে বাধ্য করায়।

    কিন্তু মানুষ তো নামকরা মিশনারি স্কুল-কলেজে ভর্তি হতেই পারে , সামাজিক সম্পর্ক বা বন্ধুত্বের কারণে ‘উপহার’ নিতে পারে। অন্য ধর্মের স্কুল কলেজ বা এনজিওতে চাকরি করতে পারে। এসব করেও ধর্ম পরিবর্তন নাও করতে পারে। আবার নিজের ভেতরের তাগিদে ধর্ম পরিবর্তন করতে পারে। কী করে বোঝা যাবে যে ধর্মান্তরণ ওই সব প্রলোভন বা জোরাজুরিতে হয়েছে?

    এই অর্ডিন্যান্স কাজটা খুব সহ্জ করে দিয়েছে। ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোড বা অপরাধের শাস্তি দেয়ার বিচার পদ্ধতির মূল নীতি হল অভিযুক্ত যে অপরাধটি করেছে সেটা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ করার দায়িত্ব হল অভিযোগকারীর , এখানে পুলিশ বা সরকারপক্ষের।

    কিন্তু এই অর্ডিন্যান্স ব্যাপারটা উলটে পুরো হেঁটমুন্ড উর্দ্ধপদ করে দিয়েছে । এই আইনে প্রমাণ করার দায় অভিযোগকারীর নয়, বরং অভিযুক্তকেই প্রমাণ করতে হবে যে সে জোর করে বা প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তরণ করায়নি।

    মজাটা দেখুন। পুলিশের কোন দায় নেই ধর্মান্তরণের অপরাধ প্রমাণ করার। কেউ অভিযোগ করলেই পুলিশ গিয়ে সন্দেহের বশে একজনকে গ্রেফতার করবে এবং সেই বন্দীকে সাক্ষী সাবুদ এনে কোর্টে প্রমাণ দিতে হবে।

    দুই ধর্মের পাত্রপাত্রীর মধ্যে বিয়ে হলে জোর করে বা লোভ দেখিয়ে ধর্মান্তরণের অভিযোগ ‘অফিসিয়ালি’ পাত্রপাত্রীর বাবা-মা, দূর সম্পর্কের আত্মীয়স্বজন আনতে পারে। বাস্তবে এই অভিযোগ পাড়ার বা গাঁয়ের লোকজন অথবা হিন্দু যুবাবাহিনী বা যে কেউ করতে পারে। এই আইনে যার ধর্মান্তরণ হয়েছে (পাত্র বা পাত্রী) তার কথা বা তার মতামতকে কোন গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। তার বক্তব্য নিয়ে এই আইনে একটি শব্দও বলা হয়নি। কেন? বুঝতে হলে এই আইনের আগের দুটো কেস দেখুন।

    ১) “লাভ জিহাদ” বলে বিখ্যাত কেরালার হাদিয়া কেসঃ

    ৬ জানুয়ারি ২০১৬। হোমিওপ্যাথির ছাত্রী অখিলা অশোকন কলেজ থেকে নিখোঁজ। কেরালার বাইকম নিবাসী কে এম অশোকন প্রথমে পুলিশে অভিযোগ, তারপর হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাসের রিট দাখিল করলেন যে তাঁর ২৪ বছর বয়েসি মেয়েকে পুলিশ খুঁজে দিক।পুলিশ তাকে হাইকোর্টে পেশ করলে মেয়েটি জানায় সে এখন হাদিয়া জেহান, স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হয়েছে।বিয়ে করেছে শফিন জেহান বলে এক মুসলিম যুবককে। ঘর ছেড়েছিল বাবার প্রতাড়ণায়। বাবা তাকে তার পছন্দের ধর্ম ইসলাম অনুযায়ী আচরণ করতে দিচ্ছেন না।

    ওর পরিবারের বক্তব্যঃ মেয়েটার ‘ব্রেন ওয়াশ’ করে একরকম জোর করে মুসলিম যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেয়েটি এসব অস্বীকার করে বলে ও স্বেচ্ছায় জেনবুঝে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে এবং শফিনকে বিয়ে করেছে।

    মে ২০১৭। ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির সুপ্রীম কোর্টে দাখিল একটি রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে কেরালা হাইকোর্ট হাদিয়া বা অখিলার বিয়ে খারিজ করে জানায় যে অখিলা ধার্মিক প্রচার এবং ‘মনস্তাত্বিক কিডন্যাপিং’ এর শিকার। তারপর হাইকোর্ট অখিলাকে তার বাবামায়ের হাতে এই বলে সঁপে দেয় যে ভারতীয় ট্র্যাডিশন অনুযায়ী ঠিকমত বিয়ে না হওয়া পর্য্যন্ত কুমারী মেয়ের রক্ষার দায়িত্ব তার বাবা-মা’র।

    শফিন জেহান এই ফয়সালার বিরুদ্ধে নভেম্বর ২০১৭তে সুপ্রীম কোর্টে রিট দাখিল করে। সুপ্রীম কোর্ট প্রথমে প্রাপ্তবয়স্ক হাদিয়াকে ওর কলেজে ফিরে গিয়ে পড়াশুনো শুরু করতে বলে এবং জানিয়ে দেয় যে ও স্বাধীন, এবং ইচ্ছেমত যার সঙ্গে চায় দেখা করতে পারে। ২০১৮ সালে সুপ্রীম কোর্ট হাইকোর্টের রায় বাতিল করে হাদিয়া ও শফিনের বিয়েকে আইন সম্মত বৈধ বিয়ে বলে রায় দেয়।

    সুপ্রীম কোর্টের মতে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে কার সঙ্গে মিশবে, কাকে বিয়ে করবে এবং কোন ধর্মপালন করবে –সেটা তার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অধিকার। বাবা-মা বা রাষ্ট্র এর মধ্যে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

    ২) উত্তর প্রদেশের ‘এটা’ জেলার কেসটিঃ

    গত সেপ্টেম্বরে এটা জেলার ‘দেহাতী’ থানা সলমান ওরফে করণের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩৬৬ অনুযায়ী একটি এফ আই আর বা প্রথম সূচনা রিপোর্ট নেয় । অভিযোগ ওই মুসলিম যুবকটি শিখা নামের হিন্দু যুবতীকে ‘অপহরণ’ করে জোর করে বিয়ে করেছে। তারপর ৭ ডিসেম্বর তারিখে এটা’র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিখাকে নারী নিকেতনে পাঠানোর আদেশ দেন। নারী নিকেতন শিখাকে তার বাবা-মায়ের কাছে পাঠিয়ে দেয়। গত ১৮ই ডিসেম্বরে এলাহাবাদ হাইকোর্ট্রে শিখাকে কোর্টে হাজির করতে একটি হেবিয়াস কর্পাস রিট ( ব্যক্তিকে সশরীরে আদালতে পেশ করা) দাখিল করা হয়। আদালতে শিখা জানায় সে নিজের ইচ্ছায় সলমানকে বিয়ে করেছে এবং কোন জোর-জবরদস্তির গল্প নেই।আদালত স্কুল পাশের সার্টিফিকেট দেখে সন্তুষ্ট হন যে শিখা পূর্ণবয়স্ক এবং দুই জজের বেঞ্চ রায় দেন যে ম্যাজিস্ট্রেটের এবং নারী নিকেতনের কাজগুলো আইনসম্মত নয়। শিখার অধিকার রয়েছে নিজের ইচ্ছেমত যেকোন ধর্মের লোককে বিয়ে করার।

    আসল চাবিকাঠিটি হল মেয়েটির ইচ্ছেঃ

    সম্ভবতঃ খেয়াল করেছেন যে ওপরের দুটো কেসেই (আরও অনেক কেসে)বাবা-মা ও পুলিশের গল্প ফেঁসে যাচ্ছে মেয়েটির স্টেটমেন্টে। তাই যোগী আদিত্যনাথের আইনটিতে যার বিয়ে বা যার ধর্ম পরিবর্তন সেই মেয়েটির কথা শোনার বা তার স্টেটমেন্ট নেয়ার কোন ব্যবস্থাই নেই। মেয়েটি কাকে জীবনসাথী করবে সেটা ঠিক করবেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যিনি একজন সরকারী আমলা। আর এঁরা এবং পুলিশ যে হরদম সরকারের ইচ্ছায় চালিত হয় এটা ভারতের সব রাজ্যেই সত্যি। এ প্রসঙ্গে কোলকাতায় প্রায় বারো বছর আগের রিজবানুর ও তোদি পরিবারের মেয়েটির মমর্ন্তুদ ঘটনা অনেকেরই মনে পড়বে।

    খামোকাই রবীন্দ্রনাথ ঈশ্বরের কাছে অভিযোগ করেছিলেনঃ

    নারীকে আপনভাগ্য জয় করিবার
    কেন নাহি দিবে অধিকার
    হে বিধাতা!


    আমরা এখন রবীন্দ্রনাথকে তাকে তুলে রেখে মনুসংহিতার ধুলো ঝেড়ে টেবিলে নামিয়ে এনেছি। মনু বলছেনঃ

    স্ত্রীলোক বাল্যে পিতার, যৌবনে স্বামীর এবং বার্ধক্যে পুত্রের অধীন। স্ত্রীজাতির স্বাধীনতা নেই। (৫/১৪৮) এবং “ ন স্ত্রী স্বাতন্ত্র্যমর্হতি” (৯/৩)।

    গৃহে বালিকা, যুবতী ও বৃদ্ধা নারী স্বাধীনভাবে কিছু করবেন না।(৫/১৪৭)।

    পতি দুশ্চরিত্র, কামুক এবং গুণহীন হলেও সাধ্বী স্ত্রী কর্তৃক দেবতার ন্যায় সেব্য। (৫/১৫৪)।

    রবীন্দ্রনাথ ‘স্ত্রীর পত্র’ গল্পে মৃণালের মুখে সতী অনুসূয়ার কুষ্ঠরোগী স্বামীর ‘ইচ্ছেপূরণ’ করতে ওকে পিঠে করে বেশ্যাবাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাহিনীটিকে তুলোধোনা করেছিলেন।

    ‘লাভ জিহাদ’ বলে আদৌ কিছু আছে কি?

    প্রায় একশ’ বছর আগে উইমেন প্রটেকশন লীগ বা নারী সুরক্ষা সমিতি বলে একটি সংস্থা এই ধুয়ো তুলেছিল যে মুসলমান “গুন্ডা”র দল সমানে হিন্দু মেয়েদের অপহরণ করে জোর করে বিয়ে করছে। এই প্রচারে কিছু অপহরণের বিক্ষিপ্ত ঘটনার সঙ্গে দু’পক্ষের সহমতিতে বিয়ের ঘটনাগুলো গুলিয়ে দেয়া হয় এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েটির স্টেটমেন্ট অভিযোগের বিরুদ্ধে যায় । তাতে দাঙ্গা হয়নি, কিন্তু দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি নষ্ট হয়ে তিক্ততা বৃদ্ধি পায়।

    গত ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০তে সংসদে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিষেন রেড্ডি একটি প্রশ্নের উত্তরে জানান যে দেশের কোন আইনে ‘লাভ জিহাদ’ বলে কিছু বলা নেই।এবং গৃহ মন্ত্রালয়ের কাছে সংগঠিত লাভ জিহাদ চক্রান্তের কোন তথ্য নেই বা কোন কেসের খবর নেই। [3]

    মজার ব্যাপার হল যোগী আদিত্যনাথ নিজে উত্তর প্রদেশে ‘লাভ জিহাদ’ চক্রান্তের পর্দাফাঁস করতে গত সেপ্টেম্বর মাসে একটি স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (SIT) গঠন করেছিলেন। তারা ১৪টি এইধরণের কেসের তদন্ত করে রিপোর্ট দেয় যে কোন কেসেই আন্তর্জাতিক চক্রান্ত বা হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করা মুসলিম যুবকেরা বিদেশ থেকে টাকা পেয়েছে এমন প্রমাণ পাওয়া যায় নি।[4]

    তাহলে? দুই ধর্মের ছেলেমেয়েরা যদি ধার্মিক আইনে বিয়ে না করে স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্ট বা চালু শব্দে ‘সিভিল ম্যারেজ’ করে? ওতে তো পাত্র-পাত্রীর ধর্ম নিয়ে কোন ধারা-উপধারা নেই। ঠিক কথা, কিন্তু বাস্তবে সম্ভব নয়। কারণ, এই আইনে একমাস আগে ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের অফিসে নোটিস দিতে হয়। এবং সেই নোটিস অফিসের নোটিশ বোর্ডে টাঙানো হয় । আর সেটা পড়ে যেকোন লোক, স্থানীয় বা পাতি পাবলিক, এতে আপত্তি পেশ করতে পারে যে আবেদক পাত্রপাত্রী যে তথ্য দিয়েছে তাতে গলদ রয়েছে। ব্যস, সেই বিভিন্ন যুবাবাহিনীর নাকগলানোর রাস্তা পরিষ্কার।

    নন্দিনী প্রবীণ বলে কেরালার একজন আইনের ছাত্র সুপ্রীম কোর্টে পিটিশন করেছে যে স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আবেদকের ব্যক্তিগত তথ্য পাব্লিকের গোচরে রাখার ধারাটি নাগরিকের প্রাইভেসির পরিপন্থী, কাজেই খারিজ করা হোক। ওর বক্তব্য, ম্যারেজ রেজিস্ট্রার তথ্যগুলো ‘ভেরিফাই’ করুন, কিন্তু পাতি পাবলিক কেন করবে? সুপ্রীম কোর্ট বিবেচনা করছে।[5]

    ভারত সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদে কাজ করা ১০৪ জন প্রাক্তন আই এ এস অফিসার এবং ব্যুরোক্র্যাট যোগী আদিত্যনাথের কাছে খোলা চিঠি লিখে এই লাভ জেহাদ আইনের প্রতিবাদ করেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন শিবশংকর মেনন, বজাহত হবিবুল্লা, টি কে এস নায়ার, সুজাতা রাও, দুলাতের মত পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা দপ্তরের অভিজ্ঞরা।[6]

    সুপ্রীম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন লোকুর বলছেন এই আইন সংবিধানের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও প্রাইভেসির অধিকারের বিরোধী, কাজেই ধোপে টিকবে না।

    সুপ্রীম কোর্ট এই লাভ জিহাদ এবং ধর্মপরিবর্তন আইনের সাংবিধানিকতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করা পিটিশনগুলো শুনতে রাজি হয়ে উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখন্ড সরকারকে নোটিশ পাঠিয়েছে।[7] সেসব একমাস পরের কথা। আসুন, আপাততঃ

    আমরা প্রথম বলির গল্পটি শুনি।

    নতুন আইনে প্রথম গ্রেফতারঃ

    অর্রডিন্যান্স পাশ হওয়ার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে ইউপি পুলিশ অ্যাকশনে নেমে পড়ে। প্রথম কেস খেল বরেলি শহরের ২১ বছরের মুসলিম যুবক উবেইশ আহমদ।[8]

    নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখে দেওরানিয়া থানার পুলিশ ওকে শরিফনগর নিবাসী টিকারাম রাঠোরের অভিযোগে উত্তর প্রদেশ বিধিবিরুদ্ধ ধর্ম সম্পরিবর্তন প্রতিষেধ অধ্যাদেশ ২০২০ এর ৩ ও ৫ ধারায় গ্রেফতার করে। বলা হয় যে ও এক বিবাহিত হিন্দুমেয়েকে, যে ওর সঙ্গে ছোটবেলায় স্কুলে পড়ত—ধর্ম বদলে ওকে বিয়ে করার জন্যে চাপ দিচ্ছে।

    অভিযোগকর্তা মেয়ের বাবা টিকারাম, স্বামী বা শ্বশুর নয়। অভিযোগকর্তা আরও বলে যে উবেইশ আহমদ অনেক বোঝালেও মানছে না। আমাদের ধমকাচ্ছে, চাপ সৃষ্টি করছে।

    আহমদ জানায় যে ও নির্দোষ। মেয়েটির সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল বটে, কিন্তু গত বছর একটা ঘটনা ঘটে। অক্টোবর ২০১৯শে মেয়েটি বাড়ি থেকে না জানিয়ে কোথাও চলে যায় ।মেয়ের বাবা টিকারাম তখন উবেইশ ওর মেয়েকে ইলোপ করেছে বলে এফ আই আর করে।কিন্তু উবেইশ তখন একই গ্রামে নিজের বাড়িতেই ছিল । পুলিশ মেয়েটিকে ফিরিয়ে আনলে সে জানায় যে ও নিজের ইচ্ছেয় ব্যক্তিগত কারণে ঘর ছেড়েছিল। তারপর ২০২০ সালের মে মাসে মেয়েটির অন্য গাঁয়ে বিয়ে হয়ে যায়।উবেইশ জানায় যে ওই আদালতের ঘটনার পর ওদের দুজনের ভাব-ভালবাসা সব চুকেবুকে গেছে। উবেইশ বিএসসি বায়োলজির পড়া ছেড়ে দিল্লি এসে একটা ছোটখাটো চাকরি করতে থাকে। ওর কথা – মেয়েটির কোন গ্রামে বিয়ে হয়েছে তাও জানা নেই। ওকে যখন গ্রেফতার করে তখন ও ভগ্নীপতির বাড়িতে ছিল। মেয়েটির ভাই উবেইশের বক্তব্যের সমর্থন করে।

    ওর কথা হল-মেয়ে বা ওর স্বামী কারও অভিযোগ নেই। ও গাঁয়ে ফেরেনি, কীভাবে মেয়ের বাবাকে ধমকাবে, ঝগড়া করবে? একটা গাঁয়ের লোক বলুক এমন কিছু হয়েছে?

    মেয়ের ভাই বলে যে একটা ঘটনা গত বছর হয়েছিল বটে, সেতো আদালতে মিটমাট হয়েছিল।

    কোর্টে কোন প্রমাণের অভাবে ও তিনসপ্তাহ পরে জামিনে ছাড়া পেয়েছে। কিন্তু ওর আফশোস, একবার ক্রিমিনাল কেসে জেলে ঢুকেছে—কোন সরকারি চাকরি বা মিলিটারিতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন জীবনের মত অধরা রয়ে গেল।

    কেন আমাকে মিথ্যে মামলায় গ্রেফতার করল, বদনাম করল—আমি মুসলিম বলে?

    এর উত্তর আমাদের জানা নেই।

    কিন্তু প্রাক্তন মেয়র ও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সেদিন বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইনের প্রয়োগে সুপ্রীম কোর্টের স্থগিতাদেশ নিয়ে 4thpillars.com আয়োজিত ভিডিও আলোচনাচক্রে বলেছিলেন – সাংবিধানিক প্রশ্নে সুপ্রীম কোর্ট ইদানীং অনেক সময় নীরব থাকলেও দেশের কিছু হাইকোর্ট মুখ খুলছে। আর পরশু দিনই এলাহাবাদ হাইকোর্ট মুখ খুলল এবং তার প্রভাব খোলাখুলি লাভ জিহাদ আইনের উপর দেখা যাচ্ছে।

    তিন বছর আগে উত্তর প্রদেশের আমেঠি জেলার কামরৌলি থানায় চাঁদনির পরিবার ওই গ্রামের পড়শি মুসলিম ছেলের বিরুদ্ধে ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ধারা ৩৬৩ ও ৩৬৬র অন্তর্গত অভিযোগ দায়ের করে। দুটো ধারার মানে অভিভাবকের কাছ থেকে কোন মেয়েকে জোর করে অপহরণ করে বিয়ে বা সহবাসের জন্যে বাধ্য করা। এই দুটো ধারার অপরাধ জামিনযোগ্য নয় , এবং নিজেদের মধ্যে মিটমাট করেও মেটানো যায় না। অপরাধ প্রমাণিত হলে সাত থেকে দশ বছর সশ্রম কারাদন্ড।

    ওরা অনেক দিন ওই গাঁ থেকে সরে গেছে। তিনবছর ধরে শান্তিতে ঘরকন্যা করছে। ওদের একটি দেড় বছরের সন্তান আছে। কিন্তু এখন ওরা এলাহাবাদ হাইকোর্টের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চের কাছে প্রটেকশন চেয়ে পিটিশন দিয়েছে যে ওরা প্রাপ্তবয়স্ক এবং স্বেচ্ছায় সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্টে বিয়ে করেছিল। কিন্তু আমেঠি পুলিশ এখন নভেম্বরে পাশ হওয়া নতুন বে-আইনি ধর্মান্তরণ প্রতিরোধ আইনের বাহানায় ওদের জ্বালাতন করছে , ভয় দেখাচ্ছে।

    হাইকোর্ট উ প্র সরকারের কাছে জবাব চেয়ে পাঠিয়েছে। কিন্তু আমেঠি থানাকে নির্দেশ দিয়েছে যে চাঁদনি ও তার স্বামীকে যেন কোনভাবেই জ্বালাতন না করে। কারণ দুজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীপুরুষ কার বা কোন ধর্মের লোকের সঙ্গে ঘর বাঁধবে সেটা তার ব্যক্তিগত অধিকার। এ ব্যাপারে সরকারের নাক গলানো মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপের আওতায় পরে।

    আমরা আপাততঃ সুপ্রীম কোর্টের রায়ের প্রতীক্ষায়।

    ----------------------------------------------
    [1] 4thpillars.com; 14th January
    [2] ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০।
    [3] ইন্ডিয়া টুডে, ১৮ নভেম্বর, ২০২০।
    [4] ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ২৪ নভেম্বর, ২০২০।
    [5] ইন্ডিয়া লীগাল, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০।
    [6] ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০।
    [7] ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ৭ জানুয়ারি, ২০২০।
    [8] দি হিন্দু, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০।
    [9] ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ডিজিটাল, ১৫ই জানুয়ারি, ২০২০।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অরিন | ১৬ জানুয়ারি ২০২১ ১০:২৭733509
  • সবই তো হল, তা কেউ যদি বলে আমার কোন ধর্ম নেই, তখন কি হবে?


    সেটাও এক প্রকার ধর্মান্তরীকরণ কি না? সে ব্যাপার কি এই আইনের আওতায় আসবে?

  • Ranjan Roy | ১৬ জানুয়ারি ২০২১ ১৩:৫৭733510
  • মনে হয় আসবে না।ঃ)) কারণ, এই আইনের লক্ষ্য দুটো স্পেসিফিক আব্রাহামিক ধর্ম-- ইসলাম ও ক্রিশিয়ানিটি।


             গুরুজী  গোলওয়ালকরের  বইয়ে দেখেছি একটা চ্যাপটার আছে--আওয়ার এনিমিজ। তাতে তিনটে সাব চ্যাপটার-- মুসলিম, খ্রীস্টান ও কম্যুনিস্ট।


     আমার যদি ধর্ম না থাকে তাহলে আমি কোন ধার্মিক অনুষ্ঠান করছি না এবং কাউকে কোন 'অনুষ্ঠান' করে নিজের ধর্মহীন ধর্মে বা 'চতুরঙ্গের "না-ঈশ্বরে" কনভার্ট করছি না।


    আমার ধর্মহীন ঈশ্বরহীন ধর্ম তো মননে এবং হৃদয়ে। ওরা দেখতে পাবেনা।


    "আমার চলা যায়না বলা" ইত্যাদি।ঃ))

  • :|: | 174.254.***.*** | ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৩:০৫733514
  • ঘরকন্না। কন্যা না। 

  • হিজি -বিজ -বিজ | 2603:8000:b101:f400:84b0:8008:1e37:***:*** | ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:১৬733515
  • @Ranjan রায় "রবীন্দ্রনাথ নিয়ে আটটা আপাতঃ মুসলিম বিরধী কোটেশন (হোয়াতে ঘুরছে) বংগে শুরু হয়েছে।


    আমার লক্ষ্য একের পর এক সেগুলোকে তুলে ধরা।"


    যতদূর মনে পরে ​​​​​​​আপনি ​​​​​​​এটা ​​​​​​​লিখেছিলেন ।সেটা ​​​​​​​পাওয়া যাবে ​​​​​​​কি?

  • Ranjan Roy | ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:২৫733516
  • হিজি বিজ বিজ,


    পাওয়া যাবে। একদিনের সময় দিন। বছর দুই আগের  কথা।


    তবে এগিয়ে চারনম্বর প্ল্যাটফর্ম ভালই কাজ করেছেন বলে মনে পড়ছে।


    প্রতিভা সরকার এবং এলেবেলে সঠিক বলতে পারবেন। 


    আমি দেখছি।

  • Ranjan Roy | ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:২৫733521
  • হিজবিজবিজ,


     টই দেখুন।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন